অধ্যায় একত্রিশ:বাংলাদেশী পত্রিকায় মুজিব-আমল
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on December 29, 2018
- ই-বুকস
- No Comments.
অপরাধ কথা বলে
ইতিহাস রচনার নামে বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু যে মিথ্যাচার ঢুকানো হয়েছে তা নয়, মুজিব ও তার দলের দুঃশাসনের বিবরণগুলো ইতিহাসের গ্রন্থ থেকে সতর্কতার সাথে বাদ দেয়া হয়েছে। সেটি ছিল আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতি বাঁচানোর স্বার্থে; সত্য ঘটানোগুলো তুলে ধরা এখানে লক্ষ্য ছিল না। কিন্তু অপরাধ কি কখনো লুকানো যায়? অপরাধী তার অপরাধ কর্মগুলো লুকানোর যত চেষ্টাই করুক না কেন, তা নিজেই কথা বলে এবং সাক্ষী রেখে যায়। শেখ মুজিবও তার সহচরদের অপরাধও তাই অসংখ্য সাক্ষী রেখে গেছে। আর সে সাক্ষ্য ধারণ করেছে সে সময়ের দেশী ও বিদেশী পত্র-পত্রিকা। আগামী দিনের ইতিহাস রচনায় মুজিব আমলের সে বিবরণগুলোই গণ্য হবে গুরুত্বপূর্ণ দলিল রূপে। শেখ মুজিব ও তার দল বাংলাদেশকে যে কতটা বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছিল সে পরিচয় পাওয়া যায় সে আমলের ঢাকার পত্রিকাগুলো পড়লে। নিজ ঘরে নিরাপত্তা না পেয়ে বহু মানুষ তখন বনজঙ্গলে লুকিয়েছে। ১৯৭৩ সালের ১৭ আগস্ট দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম ছিল, “নিরাপত্তার আকুতি গ্রাম-বাংলার ঘরে ঘর”। মূল খবরটি ছিল এরূপ, “সমগ্র দেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির ফলে এবং মানুষের জান-মাল ও ইজ্জতের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অভাবে গ্রাম-গঞ্জ ও শহরবাসীর মনে হতাশার মাত্রা দিন দিন বাড়িয়াই চলিয়াছে এবং আইন রক্ষাকারী সংস্থার প্রতি মানুষের আস্থা লোপ পাইতেছে। অবস্থা এমন দাঁড়াইয়াছে যে, চুরি-ডাকাতি, লুটতরাজ তো আছেই, রাজনৈতিক, সামাজিক ও বৈষয়িক কারণে শত্রুতামূলক হত্যাকান্ডের ভয়ে মানুষ বাড়ীঘর ছাড়িয়া অন্যত্র আশ্রয় লইতেছে। যাহারা বিত্তশালী তাহারা শহরের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ীতে এমনকি শহরের আবাসিক হোটেলগুলিতে পর্যন্ত আসিয়া উঠিতেছেন। যাঁহাদের শহরে বাস করিবার সঙ্গতি নাই, তাহার বনে-জঙ্গলে অথবা এখানে-ওখানে রাত্রি কাটাইতেছেন”।
১৯৭৩ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের কিছু খবরের শিরোনাম ছিলঃ “ঝিনাইদহে এক সপ্তাহে আটটি গুপ্তহত্যা” (০১/০৭/৭৩);“ঢাকা-আরিচা সড়কঃ সূর্য ডুবিলেই ডাকাতের ভয়” (০২/০৭/৭৩) “বরিশালে থানা অস্ত্রশালা লুটঃ ৪ ব্যক্তি নিহত” (৪/০৭/৭৩); “পুলিশ ফাঁড়ি আক্রান্তঃ সমুদয় অস্ত্রশস্ত্র লুট” (১২/০৭/৭৩);“লৌহজং থানা ও ব্যাঙ্ক লুট”(২৮/০৭/৭৩);“দুর্বৃত্তের ফ্রি স্টাইল” (০১/০৮/৭৩);“পুলিশ ফাঁড়ি ও বাজার লুটঃ লঞ্চ ও ট্রেনে ডাকাতি” (৩/০৮/৭৩);“এবার পাইকারীহারে ছিনতাইঃ সন্ধা হইলেই শ্মশান”(১১/০৮/৭৩);”চট্টগ্রামে ব্যাংক ডাকাতি, লালদীঘিতে গ্রেনেড চার্জে ১৮ জন আহত, পাথরঘাটায় রেঞ্জার অফিসের অস্ত্র লুট” (১৫/০৮/৭৩);“খুন ডাকাতি রাহাজানিঃ নোয়াখালীর নিত্যকার ঘটনা, জনমনে ভীতি” (১৬/০৮/৭৩);“২০ মাসে জামালপুরে ১৬১৮টি ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ড” (১৭/১১/৭৩);“আরও একটি পুলিশক্যাম্প লুটঃ সুবেদরসহ ৩ জন পুলিশ অপহৃত” (১৩/০৭/৭৩); “যশোরে বাজার লুটঃ দুর্বৃত্তের গুলীতে ২০ জন আহত” (১৮/০৪/৭৪);“রাজশাহীতে ব্যাংক লুট” (২১/৪/৭৪)।
ডাকাতিতে মুজিবপুত্র
মুজিব আমলের পত্রিকাগুলো পড়লে চোখে পড়ে এরূপ শত শত ঘটনা ও বহু বিয়োগান্ত খবর। পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাসে দুর্বৃত্তির যত না ঘটনা ঘটেছে মুজিবের ৪ বছরে তার চেয়ে বহু গুণ বেশী ঘটেছে। বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে “ভিক্ষার ঝুলি”র খেতাব জুটিনি, কিন্তু মুজিব সেটি অর্জন করেছেন। লুণ্ঠিত হয়েছে জানমাল ও ইজ্জত-আবরুর নিরাপত্তা। অথচ কিছু কাল আগেও গ্রামবাংলার অধিকাংশ মানুষের গৃহে কাঠের দরজা-জানালা ছিল না। ঘরের দরজায় চট বা চাটাই টানিয়ে অধিকাংশ মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপদে রাত কাটাতো। মহিলাদের ধর্ষিতা হওয়ার ভয় ছিল না। কিন্তু মুজিব শুধু খাদ্যই নয়, সে নিরাপত্তাটুকুও কেড়ে নেন। নিরাপত্তার খোঁজে তাদেরকে ঘর ছেড়ে বন-জঙ্গলে আশ্রয় খুঁজতে হয়। থানা পুলিশ কি নিরাপত্তা দিবে? তারা নিজেরাই সেদিন ভুগেছিল চরম নিরাপত্তাহীনতায়। দুর্বৃত্তদের হাতে তখন বহু থানা লুট হয়েছিল। বহু পুলিশ অপহৃত এবং নিহতও হয়েছিল।
মুজিবের নিজের দলীয় কর্মীদের সাথে তার নিজের পুত্রও নেমেছিল দুর্বৃত্তিতে। সে সময় দৈনিক পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছিলঃ “স্পেশাল পুলিশের সাথে গুলী বিনিময়ঃ প্রধানমন্ত্রীর তনয়সহ ৫ জন আহত”। মূল খবরটির ছাপা হয়েছিল এভাবেঃ “গত শনিবার রাত সাড়ে এগারোটায় ঢাকার কমলাপুর স্পেশাল পুলিশের সাথে এক সশস্ত্র সংঘর্ষে প্রধানমন্ত্রী তনয় শেখ কামাল, তার ৫ জন সাঙ্গপাঙ্গ ও একজন পুলিশ সার্জেন্ট গুলীবিদ্ধ হয়েছে। শেখ কামাল ও তার সঙ্গীদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের নয়, দশ ও তেত্রিশনম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়েছে। আহত পুলিশ সার্জেন্ট জনাব শামীম কিবরিয়াকে ভর্তি করা হয় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে।”-(দৈনিক গণকন্ঠ;১৯/১২/৭৩)। সে সময়ে প্রকাশিত বহু খবরের মধ্যে এ খবরটিও ছাপা হয়, “ঈশ্বরদীতে ৬ কোটি টাকার তামার তার বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। দু’চার জন যারা ধরা পড়েছে,এবং তারা সবাই মুজিব বাহিনীর লোক। তারা পুলিশ থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী”-(দৈনিক পূর্বদেশ;১১ মে,১৯৭২)। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডারগণ প্রকাশ্য মানুষ খুন করত -সে বিবরণ বহু পত্রিকায় বহু ভাবে এসেছে। যাদেরকে আওয়ামী লীগ ঘরানার বুদ্ধিজীবীগণ বাঙালীর সর্বকালের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী রূপে তুলে ধরছে -এ ছিল তাদের আসল চরিত্র।
মুজিব সরকার সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ
বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ বা মনন্তর এসেছে তিনবার। এর মধ্যে দুই বার এসেছে ব্রিটিশ আমলে। এবং তা ১৭৬১ সালে এবং ১৯৪৩ সালে। তৃতীয়বার এসেছে মুজিব আমলে। পাকিস্তানী আমলে একবারও আসেনি। অথচ এ পাকিস্তান আমলটিকেই আওয়ামী-বাকশালী বুদ্ধিজীবী ও নেতা-কর্মীগণ চিত্রিত করেছে পশ্চিম পাকিস্তানীদের ঔপনিবেশিক শোষণ কাল রূপে। অথচ ১৯৪৭’য়ে পাকিস্তান আমলের শুরুটি হয়েছিল অনেকটা শূন্য থেকে। তখন অফিস আদালত ছিল না, কলকারখানাও ছিল না। সহযোগী কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্রও ছিল না। বরং ছিল ভারত থেকে তাড়া খাওয়া প্রায় ৭০ লক্ষ ছিন্নমূল উদ্বাস্তুর ভিড়। মুজিব আমলের ন্যায় সে সময় বিদেশ থেকে শত শত কোটি টাকার সাহায্যও আসেনি। কিন্তু সে দিন কোন দুর্ভিক্ষ আসেনি। ফলে সেদিন কেউ না খেয়ে মারা যায়নি। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশী সাহায্য সত্ত্বেও দুর্ভিক্ষ এসেছিল মুজিবামলে। দুর্ভিক্ষ এসেছিল শেখ মুজিবের দুর্নীতি পরায়ন প্রশাসন এবং তাঁর দলের নেতাকর্মী ও ভারতীয় সরকারি ও বেসরকারি দুর্বৃত্তদের দ্বারা লুটপাটের কারণে। পাকিস্তানের সে দুর্দিনেও বহু হাজার গৃহ বানানো হয়েছে ভারত থেকে প্রাণ বাঁচাতে আসা গৃহহীনদের জন্য।
পরিস্থিতি কীরূপ ভয়ানক ছিল সেটি বুঝার জন্য মুজিব আমলে ঢাকার পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু খবরই যথেষ্ট। বাংদেশের ৭০ জন বিশিষ্ঠ সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী এক যুক্ত বিবৃতিতে দেশের পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান খাদ্যাভাব ও অর্থনৈতিক সঙ্কট অতীতের সর্বাপেক্ষা জরুরী সঙ্কটকেও দ্রুতগতিতে ছাড়াইয়া যাইতেছে এবং ১৯৪৩ সনের সর্বগ্রাসী মনন্তর পর্যায়ে পৌঁছাইয়া গিয়াছে।” তাঁহারা সরকারের লঙ্গরখানার পরিবেশকে নির্যাতন কেন্দ্রের পরিবেশের শামিল বলিয়া অভিহিত করিয়া বলেন, “দুর্ভিক্ষ মানুষ দ্বারা সৃষ্ট এবং একটি বিশেষ শ্রেণীর অবাধ লুন্ঠন ও সম্পদ-পাচারের পরিণতি”। তাঁরা বলেন, “খাদ্য ঘাটতি কখনও দুর্ভিক্ষের মূল কারণ হইতে পারে না। সামান্যতম খাদ্য ঘাটতির ক্ষেত্রেও শুধু বণ্টন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা যায়। যদি দেশের উৎপাদন ও বণ্টন-ব্যবস্থা নিম্নতম ন্যায়নীতি উপর প্রতিষ্ঠিত থাকিত, দেশের প্রশাসন, ব্যবসা-বাণিজ্য শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সুবিচারকে নিশ্চিত করার সামান্যতম আন্তরিক চেষ্টাও থাকিত তাহা হইলে যুদ্ধের তিন বছর পর এবং দুই হাজার কোটি টাকারও বেশী বৈদেশিক সাহায্যের পর ১৯৭৪ সনের শেষার্ধে আজ বাংলাদেশে অন্তত অনাহারে মৃত্যুর পরিস্থিতি সৃষ্টি হইত না।” -(দৈনিক ইত্তেফাক;অক্টোবর ১,১৯৭৪)। সে সময়ের পত্রিকার কিছু শিরোনাম ছিলঃ “চালের অভাবঃ পেটের জ্বালায় ছেলে মেয়ে বিক্রি”-(দৈনিক গণকন্ঠ;আগস্ট ২৩,১৯৭২);“লাইসেন্স-পারমিটের জমজমাট ব্যবসা; যাঁতাকলে পড়ে মানুষ খাবি খাচ্ছে; সিরাজগঞ্জ, ফেনী, ভৈরব, ইশ্বরগঞ্জ ও নাচোলে তীব্র খাদ্যাভাব, অনাহারী মানুষের আহাজারীঃ শুধু একটি কথা, খাবার দাও”-(দৈনিক গণকণ্ঠ; আগস্ট ২৯,১৯৭২)।“গরীব মানুষ খাদ্য পায় নাঃ টাউটরা মজা লুটছে; গুণবতীতে চাল আটা নিয়ে হরিলুটের কারবার”-(দৈনিক গণকন্ঠ; সেপ্টেম্বর ১৯,১৯৭২);“একদিকে মানুষ অনাহারে দিন যাপন করিতেছেঃ অপরদিকে সরকারি গুদামের গম কালোবাজারে বিক্রয় হইতেছে”-(ইত্তেফাক;এপ্রিল ৭,১৯৭৩);“এখানে ওখানে ডোবায় পুকুরে লাশ।”-(সাপ্তাহিক সোনার বাংলা;এপ্রিল ১৫,১৯৭৩);“চালের অভাবঃ পেটের জ্বালায় ছেলে মেয়ে বিক্রি; হবিগঞ্জে হাহাকারঃ অনাহারে এ পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু”-(দৈনিক গণকন্ঠ;মে ৩,১৯৭৩);“কোন এলাকায় মানুষ আটা গুলিয়া ও শাক-পাতা সিদ্ধ করিয়া জঠর জ্বালা নিবারণ করিতেছে”-(দৈনিক ইত্তেফাক; মে ৩,১৯৭৩);“অনাহারে দশজনের মৃত্যুঃ বিভিন্ন স্থানে আর্ত মানবতার হাহাকার; শুধু একটি ধ্বনিঃ ভাত দাও”-(দৈনিক গণকন্ঠ; মে ১০,১৯৭৩);“লতাপতা, গাছের শিকড়, বাঁশ ও বেতের কচি ডগা, শামুক, ব্যাঙার ছাতা, কচু-ঘেচু পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের প্রধান খাদ্যে পরিণতঃ গ্রামাঞ্চলে লেংটা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি”-(দৈনিক ইত্তফাক;মে ১০,১৯৭৩);“পটুয়াখালীর চিঠিঃ অনাহারে একজনের মৃত্যু; সংসার চালাতে না পেরে আত্মহত্যা”-(দৈনিক গণকন্ঠ;মে ১০,১৯৭৩);“ওরা খাদ্যভাবে জর্জরিতঃ বস্ত্রাভাবে বাহির হইতে পারে না”-(দৈনিক ইত্তেফাক; মে ৩০,১৯৭৩;“আত্মহত্যা ও ইজ্জত বিক্রির করুণ কাহিনী”-(দৈনিক গণকন্ঠ, জুন ১,১৯৭৩);“স্বাধীন বাংলার আরেক রূপঃ জামাই বেড়াতে এলে অর্ধ-উলঙ্গ শ্বাশুরী দরজা বন্ধ করে দেয়”-(সাপ্তহিক সোনার বাংলা, জুলাই ১৫,১৯৭৩);“গ্রামবাংলায় হাহাকার, কচু-ঘেচুই বর্তমানে প্রধান খাদ্য”-(দৈনিক ইত্তেফাক, এপ্রিল, ১৯৭৪);“দুঃখিনী বাংলাকে বাঁচাও”-(দৈনিক ইত্তেফাক আগস্ট ৪,১৯৭৪);“জামালপুরে অনাহারে ১৫০ জনের মৃত্যুর খবর”-(দৈনিক ইত্তেফাক;আগস্ট ১৩,১৯৭৪);“১০দিনে জামালপুর ও ঈশ্বরদীতে অনাহার ও অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে ৭১ জনের মৃত্যু”-(দৈনিক গণকন্ঠ;আগস্ট ২৭,১৯৭৪)।
কন্যা বিক্রি ও মরা গরুর গোশত ভক্ষণ
শেখ মুজিব তার শাসনামলে ইতিহাস গড়েছেন। ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের পর এই প্রথম পেটের দায়ে বহু মা তাদের শিশুদের বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল। কাপড়ের অভাবে মাছধরা জাল পড়তে বাধ্য হয়েছিল মহিলারা। ক্ষুধার তাড়নায় মানুষ খেয়েছিল মরা গরুর গোশতো। অপরদিকে জৌলুস বাড়ছিল তার দলীয় নেতাকর্মীদের। ১৯৭২ সনের ২১ অক্টোবর তারিখে দৈনিক গণকন্ঠে একটি খবর ছিলঃ “পেটের দায়ে কন্যা বিক্রি”। ভিতরে সংবাদটি ছিল এরকমঃ “কিছুদিন পূর্বে কুড়িগ্রাম পৌরসভার সন্নিকটস্থ মন্ডলের হাট নিবাসী রোস্তম উল্লাহর স্ত্রী রাবেয়া খাতুন তার আদরের দুলালী ফাতেমা খাতুনকে (৭ বছর) পৌরসভার জনৈক পিয়ন জমির উদ্দীনের কাছে মাত্র ছয় টাকায় বিক্রি করে দেয়”। ১৯৭৩ সালে ৮ই জুলাই সোনার বাংলা “ফেন চুরি” শিরোনামায় এ খবরটি ছাপেঃ “বাঁচার তাগিদে এক মালসা ফেন। দু’দিন না খেয়ে থাকার পর এক বাড়ীর রান্না ঘর থেকে ফেন চুরি করলো সে। চুরি করে ধরা পড়লো। শুকনো মুখো হাড্ডীসার ছেলেটির গালে ঠাস ঠাস পড়লো সজোরে থাপ্পর। চোখে অন্ধকার দেখলো সে এবং মাথা ঘুরে পড়ে গেল। গ্রামের নাম দরগাপুর, থানা আশাশুনি, জেলা খুলনা। গাজী বাড়ির বাচ্চা। বয়স সাত-আট বছর। গুটি বসন্তে পিতা মারা গেছে। মা কাজ করে যা পায় তাতে কোলের ভাই-বোন দুটোর হলেও বাকী দুই বোন আর বাচ্চার হয় না। বাচ্চা তাই প্রতিদিন একটা ভাঁড়া নিয়ে বের হয়। দ্বারে দ্বারে ফেন মাগে, এই ভাবেই তিন ভাই বোন চলে”।
১৯৭৪ সনের ২৩শে মার্চ ইত্তেফাক খবর ছাপে, “মরা গরুর গোশত খাইয়া ভোলা মহকুমার বোরহানু্দ্দিন থানার ১০ ব্যক্তি মারা গিয়াছে এবং ৬০ জন অসুস্থ্ হইয়া পড়িয়াছে” -এই খবরে বিস্মিত হইবার বা ইহাতে বিশ্বাস স্থাপন না করিবার কিছু নাই। স্বয়ং সরকারদলীয় স্থানীয় এমপি সাংবাদিকদের এই খবর দিয়াছেন। জান বাঁচানোর জন্য মানুষ মরা গরু খাইতে আরম্ভ করিয়াছে, তবু বাঁচিতে পারিতেছে না, বরং মরা গরুর গোশত খাইয়া আরও আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলিয়া পড়িতেছে। এ খবর বড় মর্মান্তিক, বড় সাংঘাতিক”। ১৯৭৪ সালের ৪ আগস্ট সোনার বাংলায় ছাপা হয়, “ঢোল পিটিয়ে মানুষ বিক্রিঃ মানবশিশু আজ নিত্য দিনের কেনা-বেচার পণ্য।” মূল খবরটা ছিল এরূপঃ “হাটের নাম মাদারীগঞ্জ। মহকুমার নাম গাইবান্ধা। সেই মাদারীগঞ্জ হাটে ঘটেছে একটা ঘটনা। একদিন নয়, দু’দিন। ১০ই এবং ১৩ই জুলাই। ১০ই জুলাই এক হাটে এক ব্যক্তি মাত্র একশ টাকার বিনিময়ে তার ৬/৭ বছরের শিশু পুত্রকে বিক্রি করে। দ্বিতীয় দিনে ১৩ জুলাই একই হাটে ৫-৬ বছর বয়সের একটি মেয়ে বিক্রি হয়েছে মাত্র ২৮ টাকায়। প্রথমে বাজারে ঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হয় মেয়ে বিক্রি করার ঘোষণা। ঢোল পিটানোর মেয়ে কিনতে ও দেখতে অনেক লোক জমা হয়। অবশেষে আটাশ টাকা দামে মেয়েটি বিক্রি হয়।”
পটুয়াখালী থানার বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতির হিড়িক পড়ে গেছে। কোন গ্রাম-বন্দরে দিনের বেলা ডাকাতি হয়। পুলিশকে খবর দিলে শেষ করে দেব বলে ভয় দেখায়। ফলে থানায় খুব কমই এজাহার হয়। ডাকাতদের দু’একজন এলএমজি হাতে থানার গেটে মোতায়েন থাকে যাতে দারগা-পুলিশ ডাকাতদের জারিক্রিত কারফিউ লংঘন করতে না পারে। -(দৈনিক পূর্বদেশ, ৩১ মে,১৯৭২)। সম্প্রতি পাবনার সুজানগর থানাধীন ছয়টি গ্রামের ১১৮টি বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। পাবনার পল্লীর লোকগুলো বাড়ি-ঘর ছেড়ে জঙ্গলে রাত কাটায়। -(দৈনিক বাংলা, ৩০ আগস্ট,১৯৭২)। দিনমজুর ছাবেদ আলীর স্ত্রী মাত্র ৫ টাকা দামে পেটের দায়ে তার সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে। -(সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ২০ জুলাই,১৯৭৩)। শেষ পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলের হেদায়েত উল্লাহকে কাফন ছাড়াই কলাপাতার কাফনে কবরখানায় যেতে হলো।-(বঙ্গবার্তা, ৪ অক্টোবর,১৯৭৩)। দেশের ঘরে ঘরে যখন বুভুক্ষু মানুষের হাহাকার তখন বৈদেশিক মুদ্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের তাস আমদানি করা হয়েছে। -(বঙ্গবার্তা, ১২ ডিসেম্বর, ১৯৭৩)। স্বাধীনতা লাভের কয়েক মাসের মধ্যেই ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পদ ভারতে পাচার হয়ে গেছে। -(জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের বক্তৃতা, ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪)। কয়েকদনি আগে জয়পুরহাটের মাংলীপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের কবর থেকে কাফন চুরি হয়ে গেছে। -(সাপ্তাহিক অভিমত, ২৭ মে,১৯৭৪)। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের সচিব বলেছেন, ১৯৭৩ সালের জুন থেকে ১৯৭৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে ঢাকা শহরে তারা ১৪০০ বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে। আর ১৯৭৪ এর জুলাই হতে ১৯৭৫ এর জুলাই পর্যন্ত দাফন করেছে ৬২৮১টি বেওয়ারিশ লাশ। -(ইত্তেফাক, ২১ অক্টোবর,১৯৭৫)। সারা দেশে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। প্রতি ৪৮ ঘণ্টায় একজনের আত্মহ্ত্যা। -(হক কথা, ১৯ মে,১৯৭৪)। গাইবান্ধায় ওয়াগন ভর্তি ৬ শ’মণ চাল লুট। রংপুরে ভুখা মিছিল।-(আমাদের কথা, ১৯ এপ্রিল,১৯৭৪)। ক্ষুধার্ত মানুষের ঢলে ঢাকার রাজপথ নরকতুল্য। -(হলিডে, ২৯ সেপ্টেম্বর,১৯৭৪)।
জঠর জ্বালায় বমিভক্ষণ
১৯৭৪ সালে ৮ই সেপ্টেম্বর সোনার বাংলা আরেকটি ভয়ানক খবর ছাপে। খবরের শিরোনাম ছিল,“রেকর্ড সৃষ্টিকারী খবরঃ জঠর জ্বালায় বমি ভক্ষণ”। খবরে বলা হয়, একজন অসুস্থ্ ব্যক্তি গাইবান্ধার রেলওয়ে স্টেশনে প্রচুর পরিমাণে বমি করে। বমির মধ্যে ছিল ভাত ও গোশত। দু’জন ক্ষুধার্থ মানুষ জঠর জ্বালা সংবরণ করতে না পেয়ে সেগুলো গোগ্রাসে খেয়ে ফেলেছে। ১৯৭৪ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর তারিখে ইত্তেফাকের একটি খবরের শিরোনাম ছিলঃ “রাজধানীর পথে পথে জীবিত কংকাল।” উক্ত শিরোনামে ভিতরের বর্ণনা ছিল,“শীর্নকায় কঙ্কালসার আদম সন্তান। মৃত না জীবিত বুঝিয়া ওঠা দুস্কর। পড়িয়া আছে রাজধানী ঢাকা নগরীর গলি হইতে রাজপথের এখানে সেখানে। হাড় জিরজিরে বক্ষে হাত রাখিয়াই কেবল অনুভব করা যায় ইহারা জীবিত না মৃত।” ১৯৭৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ইত্তেফাক খবরের শিরোনাম দেয়, “ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তচিৎকারে ঘুম ভাংগে”। খবরটি ছিল, “নিরন্ন, অভুক্ত, অর্ধভুক্ত, অর্ধনগ্ন ও কঙ্কালসার অসহায় মানুষের আহাজারি ও ক্ষুধার্ত শিশুর আর্তচিৎকারে এখন রাজধানীর সমস্যা পীড়িত মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। অতি প্রত্যুষে হইতে গভীর রাত্রি পর্যন্ত দ্বারে দ্বারে করুণ আর্তি, “আম্মা! একখানা রুটি দ্যান। গৃহিনীর কখনো বিরক্ত হন, আবার কখনও আদম সন্তানের এহেন দুর্দশা দেখিয়া অশ্রুসজল হইয়া ওঠেন।” এ এক হৃদয়বিদারক চিত্র!
বাংলাদেশের হাজারো বছরের ইতিহাসে বহু শাসক, বহু রাজা-বাদশাহ ক্ষমতায় বসেছে। সুলতানী আমল এসেছে, মোঘল আমল এসেছে, এসেছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল। কিন্তু কোন আমলেও কি মানুষকে বেঁচে থাকার সংগ্রামে এতোটা নীচে নামতে হয়েছে -যা হয়েছে মুজিব আমলে? বাংলা এক কালে সোনার বাংলা রূপে পরিচিত ছিল। দেশটিতে এক সময় প্রচুর প্রাচুর্য ছিল। শেখ মুজিব পাকিস্তান আমলে প্রশ্ন তুলেছেন, “সোনার বাংলা শ্মশান কেন?” পাকিস্তানী শাসকবর্গ সোনার বাংলাকে শ্মশান করেছে -এ অভিযোগ এনে লাখো লাখো পোস্টার ছেপে ১৯৭০’য়ের নির্বাচন কালে দেশ জুড়ে বিতরণ করা হয়েছিল। এভাবে পরিকল্পিত ভাবে মানুষকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষেপানো হয়েছিল। প্রশ্ন হলো, পাকিস্তান আমলে অভাবের তাড়নায় কোন মহিলাকে কি মাছধরা জাল পড়তে হয়েছে? কাউকে কি ক্ষুধার তাড়নায় বমি খেতে হয়েছে? কাউকে কি নিজ সন্তান বিক্রি করতে হয়েছে? এরূপ কোন ঘটনা পাকিস্তান আমলে হয়নি। সে সময় দেশ শ্মশান ছিল না, বরং সেরূপ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে খোদ মুজিবের শাসনামলে। দেশবাসীকে তিনি অসহনীয় যাতনার মাঝে ফেলেছিলেন। সে যাতনার জিন্দান থেকে তিনি মুক্তির কোন রাস্তাও খোলা রাখেননি। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে ক্ষমতা আসলেও সে পথে বিদায়ের নিরাপদ রাস্তাটি নিজের জন্যও তিনি খোলা রাখেননি। ফলে তাকে বিদায় নিতে হয়েছে সহিংসতার মধ্য দিয়ে। এজন্যই মুজিবের মৃত্যুতে ঢাকায় সেদিন শোক মিছল হয়নি। মুজিব ভক্তরাও সেদিন কালো ব্যাজ ধারণ করেনি। বরং তাঁর নিজ দলের প্রথম সারির নেতারাও সেদিন মুজিবের লাশ সিড়িঁর নীচে ফেলে মন্ত্রীত্বের শপথ নিয়েছে।
গুরুতর ঈমানী দায়ভার
মুজিব নিজেই এখন ইতিহাস। সে ইতিহাসটি দারুন ব্যর্থতার। তিনি প্রেসিডেন্টের পদে বসে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেও ব্যর্থ হয়েছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে একদলীয় পথ ধরেছিলেন। সে পথেও ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি যেমন জনগণের জীবনে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, তেমনি ব্যর্থ হয়েছেন নিজের জীবনের নিরাপত্তা দিতেও। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েও নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেননি। নিজের দেশকে তলাহীন ভিক্ষার ঝুলি করে হলেও ভারতের জন্য তিনি বহু কিছু করেছেন। কিন্তু সে ভারত তাকে প্রাণে বাঁচাতে পারিনি। বিদেশী শক্তির সেবাদাসদের জন্য এ হলো বড় শিক্ষা। জনগণকে দুর্ভিক্ষে মারলেও তিন দলীয় ক্যাডারদের জৌলুস বাড়িয়েছেন নানা সুবিধা দিয়ে। তারাও তাকে বাঁচাতে ছুটে আসেনি। তিনি একটি মাত্র ক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছেন। সেটি ভারতের দীর্ঘকালীন স্বপ্ন পূরণে। সেটি পাকিস্তান ভেঙ্গে ভারতকে দক্ষিণ এশিয়ার বুকে অপ্রতিদ্বন্দী শক্তি রূপে প্রতিষ্ঠা দেয়ায়। সম্ভবত সেটিই ছিল তার রাজনীতিতে ভারতের পক্ষ থেকে অর্পিত প্রধানতম দায়ভার –যার জন্য তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্রে জড়িত হয়েছিলেন।
মুজিবের ব্যর্থতার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে জনগণের জন্যও।ব্যক্তির প্রতিভা,মেধা বা যোগ্যতার বড় পরীক্ষাটি হয় কাকে সে পূজণীয় সত্ত্বা বা নেতা রূপে গ্রহণ করলো তা থেকে। মহান আল্লাহতায়ালাকে বাদ দিয়ে গরুপূজা, সূর্যপূজা, দেব-দেবী পূজা বা নাস্তিক হওয়ার ব্যর্থতাটি তাই বিশাল। এটিই মানব জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ও অপরাধ। সে অপরাধে ব্যক্তিকে অনন্ত-অসীম কালের জন্য জাহান্নামের কাটাতে হবে। বাঘ-ভালুকের ন্যায় হিংস্র জন্তু-জানোয়ারগুলিকে চিনতে বেশী যোগ্যতা লাগে না; এমনকি গরুছাগলেরাও চেনে। প্রতিভার পরীক্ষা হয় ফিরাউন,আবু লাহাব, আবু জেহেলদের ন্যায় হিংস্র দুর্বৃত্তদের চিনতে।নিজেদের ভোটে হিটলারের ন্যায় দৃর্বৃত্ত স্বৈরাচারীকে নেতা বানানোর মাঝে ব্যর্থতা যেমন বিশাল, তেমনি শাস্তিও বিশাল। তখন মৃত্যু ও ধ্বংস নেমে আসে দেশজুড়ে। সে ব্যর্থতায় রক্ত ও অর্থ দিয়ে বিশাল একটি বিশ্বযুদ্ধের আযাব বইতে হয়েছে জার্মান জনগণকে। ফিরাউনের সহচরদের সাগরে ডুবে মরতে হয়েছে। এ হলো স্রেফ ইহকালীন আযাব; পরকালে জাহান্নামে পুড়ার আযাব তো আরো কঠিন। তেমনি গুরুতর অপরাধ হলো নিজেদের ভোটে মুজিবের ন্যায় অসৎ, অযোগ্য ও শত্রুশক্তির তাঁবেদার ব্যক্তিকে নেতা বানানোর। সে অপরাধে তখন বিলুপ্ত হয় দেশের স্বাধীনতা;এবং চেপে বসে বাকশালী স্বৈরাচার। তখন দেশ অধিকৃত হয় ইসলামের শত্রুশক্তির হাতে;তাতে অসম্ভব হয় শরিয়ত পালন। কিন্তু শরিয়ত পালন ছাড়া কি ইসলাম পালন হয়? ইসলামের শত্রুশক্তির হাতে দেশ অধিকৃত হওয়ার বিপদটি তাই বিশাল। তখন দণ্ডনীয় অপরাধ গণ্য হয় শরিয়ত পালন ও শরিয়ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠিত হওয়া। শেখ মুজিব ও তার অনুসারিদের শাসনে বাংলাদেশে তো সেটিই হয়েছে। তাই ব্যক্তির জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি হলো যোগ্য ও ঈমানদার ব্যক্তিকে নেতা রূপে গ্রহণ করা। নইলে ব্যর্থতা ও আযাব অনিবার্য হয়ে উঠে। বাঙালী মুসলিমের সে ব্যর্থতাটি প্রকট রূপে পায় উনিশ শ’ সত্তরের নির্বাচনে।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018