দিল্লিতে সরকারি উদ্যোগে মুসলিম গণহত্যা
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on March 1, 2020
- Bangla Articles, আর্ন্তজাতিক
- 1 Comment.
প্রকল্পটি সরকারি ও পরিকল্পিত
নরেন্দ্র মোদি সরকারের ন্যাশনাল রেজিষ্টার অব সিটিজেন (এন.আর.সি.) এবং সিটিজেনশিপ এ্যামেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট (সি.এ. এ.)’য়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে প্রায় দুইমাস যাবত। থামবার নাম নিচ্ছে না। সেটি শুরু হয়েছিল দিল্লির শাহিন বাগে মুসলিম নারী-পুরুষদের দিনরাত অবস্থান ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে। প্রতিবাদের সে মডেল ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। একই রূপ মডেলের অবস্থান ধর্মঘট চলছে কলকাতার পার্ক সার্কাসেও। শুরু হয়েছে ভারতের অন্যান্য বড় বড় শহরে। আন্দোলনকারিদের ঘোষণা, সি.এ. এ. এবং এন.আর.সি এ বাতিল না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন তারা চালিয়ে যাবে। তাদের কথা, এটি তাদের নিজ জন্মভূমিত বাঁচা-মরার অধিকার আদায়ের লড়াই। আন্দোলন থামলে বিপন্ন হবে তাদের নাগরিক অধিকার। আন্দোলনের ফলে পশ্চিম বাংলা, পাঞ্জাব, বিহার, কেরালা, তামিল নাড়ুসহ বেশ কিছু প্রদেশের সংসদ এ মর্মে প্রস্তাব পাশ করেছে যে তারা এ আইন বাস্তবায়ন করবে না। এ আন্দোলন কি করে থামানো যায় সেটিই হলো নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় বিজিপি সরকারের সবচেয়ে বড় মাথা ব্যাথা। শাহিন বাগে যখন ধর্না চলছে তখনই শুরু হয় দিল্লির প্রাদেশিক সংসদের নির্বাচন। বিজিপি নির্বাচন লড়ে শাহিন বাগের ধর্না নির্মূলের এজেন্ডা দিয়ে। কিন্তু নির্বাচনে বিজিপি’র ভরা ডুবি ঘটে। নির্বাচনে জিতলে ধর্না নির্মূলে পুলিশ নামানোর পক্ষে যুক্তি পেশ করতো। সে লক্ষ্য অর্জিত না হওয়ায় মোদি রাস্তায় দলীয় গুন্ডা নামিয়েছে এবং শুরু করেছে নির্মম গণহত্যা এবং মুসলিমদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে আগুন দেয়ার কাজ। এটি যে মোদি সরকারের নিজ হাতের কাজ -সে যুক্তিতেই কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগের দাবি তুলেছে।
অপরদিকে সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার অপপ্রচারটিও লক্ষ্যণীয়। এরা সরকারি দলের গুন্ডাদের একতরফা মুসলিম নির্মূলের হত্যাকান্ডকে এন.আর.সি’র পক্ষ ও বিপক্ষের মাঝে সংঘাতের পরিণতি বলে চিত্রিত করছে। অথচ মুসলিম প্রতিবাদকারিগণ দুইমাস যাবত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে কারো উপর কোন রূপ হামলা না করেই। বরং বার বার হামলা হয়েছে তাদের উপরই। কখনো সেটি পুলিশের পক্ষ থেকে, কখনো বা হিন্দুত্ববাদী গুন্ডাদের পক্ষ থেকে। উল্লেখ্য হলো, মুসলিমদের দুর্বল ও নির্মূলের লক্ষ্যে ১৯৪৭ সাল থেকে মুসলিম মহল্লার উপর হিন্দুদের পক্ষ থেকে বহু হাজার হামলা হয়েছে। কিন্তু লক্ষণীয় হলো, হামলাকারিদের গুরুতর অপরাধকে লঘু করার দায়িত্ব নিয়েছে মিডিয়া। এবং সেটি করছে এক পক্ষের নিরেট হামলাকে দুই পক্ষের দাঙ্গা রূপে জাহির করে।
মুসলিমদের উপর এরূপ হামলার হেতু বুঝতে হলে শাসকদল বিজেপি’র জন্ম কাহিনী, দর্শন ও নীতি বুঝতে হবে। বিজিপি কোন স্বয়ংসৃষ্ট রাজনৈতিক দল নয়। এটি মূলতঃ ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ (আর.এস.এস)’য়ের রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। আর.এস.এস’য়ের প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৫ সালে মারাঠীদের রাজ্য মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরে। এর প্রতিষ্ঠাতা হলো, উগ্র হিন্দুত্ববাদী মারাঠী হেডগিয়ার। হেডগিয়ারের মগজে ছিল প্রচণ্ড মুসলিম ভীতি। তার ধারণা ছিল, ব্রিটিশের দিন ঘনিয়ে এসেছে। তাদের চলে যাওয়ার পর ভারত জুড়ে অস্তিত্বের মূল লড়াইটি হবে মুসলিমদের সাথে। সংখ্যা লঘু হয়েও ভারতে ৬ শত বছরেরও অধীক কাল মুসলিম শাসন তাদের সে ভয়কে আরো তীব্রতর করেছে। বস্তুতঃ মুসলিম নির্মূলের সে লড়াইয়ে মানসিক ও সামরিক দিক দিয়ে হিন্দুদের সদা প্রস্তুত রাখাই হলো আর.এস.এস প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য। ফলে শুরু থেকেই আর.এস.এস গড়ে উঠেছে একটি উগ্র জঙ্গি সংগঠন রূপে। ভারত জুড়ে মুসলিমদর উপর উপর্যপরি হামলা হলো সে জঙ্গি চেতনারই প্রকাশ। দিল্লিতে সেটিই সম্প্রতি দেখা গেল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ আজকের শত শত বিজিপি নেতাকর্মীগণ হলো মূলতঃ সে জঙ্গি চেতনা নিয়ে বেড়ে উঠা আর.এস.এস’এর ফসল।
লক্ষ্য হিন্দু রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা
নরেন্দ মোদি ও অমিত শাহের ন্যায় আর.এস.এস নেতাকর্মীদের মুসলিম বিরোধী হিংস্র রূপটি অতীতে বার বার ধরা পড়ছে মুসলিম নির্মূলের নৃশংস গণহত্যা গুলিতে। সেটি যেমন ১৯৯২ সালে মোম্বাইতে, তেমনি ২০০২ সালে গুজরাতে, ২০১৩ সালে মোজাফ্ফর নগরে এবং ২০২০ সালে দিল্লিতে। সাভারকার আর.এস.এসের প্রতিষ্ঠাতা হেডগিয়ারের বুদ্ধিবৃত্তিক গুরু। সাভারকার নিজে হিন্দুত্বের মূল শিক্ষাটি পেয়েছিল বাঙালী সাম্প্রদায়িক সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চ্যাটার্জি থেকে। বঙ্কিমচন্দ্র চ্যাটার্জি তার আনন্দমঠ উপন্যাসে হিন্দুত্ব শব্দটির প্রথম প্রয়োগ করেন। আনন্দমঠের কবিতার একটি প্যারা থেকেই ভারতের জাতীয় সঙ্গিতের উদ্ভব। তখন কলকাতা ছিল হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির মূল উৎস। শুধু বঙ্কিম চ্যাটার্জি নয়, হিন্দু মহাসভার সভাপতি ও বিজিপির পৈতিক সংগঠন জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিও কলকাতার। উল্লেখ্য হলো, সে কলকাতাতেই বেশ কিছু বছর কেটেছিল হেডগিয়ারের। সেটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে লেখাপড়া করার লক্ষ্যে।
সাভারকার ও হেডগিয়ার –এ দুই জনই ভারতে মুসলিমদের হিন্দুদের সমান নাগরিক রূপে গ্রহণ করার বিপক্ষে। ১৯৪০’য়ে আর.এস.এস’য়ের সভাপতি হয় গোলওয়ালকার। ভারতে তখন ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন।গোলওয়ালকারের যুক্তি ছিল, হিন্দুদের মূল দুষমন ইংরেজগণ নয়, সেটি ভারতবাসী মুসলিম। এমন একটি চেতনার কারণেই আর.এস.এস. কখনোই ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশ নেয়নি, বরং সুযোগ নিয়েছে ইংরেজদের ছত্রছায়ায় শক্তি বৃদ্ধির। তাদের সে চরিত্র সুস্পষ্ট ধরা পড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কালে। তখন গোলওয়ালকার ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ভারতীয় হিন্দুদের ভর্তির কাজে লেগে যায়।
১৯৪৮ সালে নাথুরাম গডসে নামক এক আর.এস.এস কর্মী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলেনর প্রধান হিন্দু নেতা গান্ধিকে হত্যা করে। নাথুরাম গডসে মনে করতো, গান্ধির কারণেই পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছে। সে ধারণাটি অধিকাংশ আর.এস.এস কর্মীর। আর.এস.এস’য়ের উদ্দেশ্য, ভারতকে একটি হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করা। তাদের ধারণা, সে কাজে বাধাটি শুধু মুসলিমগণ নয়। বাধা গান্ধি ও তাঁর অনুসারিগণও। শুরুতে এ দলের নেতাকর্মীগণ ভারতীয় সংবিধানকেও মেনে নিতে অস্বীকার করে। কারণ সংবিধান রচনায় হাত ছিল দলিত নেতা ভিম অম্বিদকারের। তাতে রয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষিতা এবং সকল ধর্মমতের মানুষের সম-অধিকারের কথা। তাদের বিরোধ ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়েও। এবং সে বিরোধের কারণেই ১৯৪৭ সাল থেকে ২০০২ সাল অবধি ৫২ বছর আর.এস.এস তার কেন্দ্রীয় অফিসে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেনি। তাদের দাবী, ভারতের পতাকাটি হবে গৈরিক।
সংগঠন রূপে আর.এস.এস’এর বিস্তৃতি সমগ্র ভারত জুড়ে। ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী আর.এস.এস’য়ের শাখার সংখ্যা ৮৪,৮৭৭। সন্ত্রাসী কর্মের জন্য এ অবধি আর.এস.এস ৪ বার নিষিদ্ধ হয়েছে; সেটি ১৯৪৭, ১৯৪৮, ১৯৭৫ এবং ১৯৯২ সালে। ১৯৪৮ সালে নিষিদ্ধ হয়েছিল গান্ধিকে হত্যার কারণে এবং ১৯৯২ সালে নিষিদ্ধ হয়েছিল ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার অপরাধে। আর এস এসের মূল এজেন্ডা যে ভারত থেকে মুসলিম নির্মূল -সেটি প্রকাশ পায় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার শুরুতেই। আর.এস.এস’য়ের প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৫ সালে। প্রতিষ্ঠার দুই বছরের মাথায় এর জন্মস্থান নাগপুর থেকে মুসলিম নির্মূলের লক্ষ্যে হত্যাকান্ড শুরু করে। হামলার তিন দিনের মুখে সকল মুসলিমকে নাগপুর ছাড়তে বাধ্য হয়। ইংরেজ শাসকগণ তাতে বাধা দেয়নি। মুসলিম নির্মূলে নামে কাশ্মিরেও। শ্রীনগরের ন্যায় কাশ্মিরের জম্মু এলাকাটিও ছিল মুসলিম সংখ্যাগুরু। কিন্তু কাশ্মিরের শেষ হিন্দু ডোগরা রাজা তার শাসনের শেষ দিনগুলিতে এ স্ট্রাটেজিক এলাকাটিকে মুসলিম শূণ্য করতে সেনা বাহিনী নিয়োগ করে। সে কাজে সহায়তা দিতে ডাক পড়ে আর এস এস’এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গুণ্ডাদের। তখন সেখানে হাজির হয় ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত আর.এস.এস কর্মী। ১৯৪৮ সালে মুসলিম নিধন শুরু হয় নিজাম শাসিত হায়দারাবাদে। সে কাজেও ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করে আর.এস.এস।
গণহত্যার গুজরাতি মডেল
মুসলিম নির্মূলের কাজটি আর এস এস তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বার বার করেছে ক্ষমতার বাইরে থেকে। সে কাজটি অতি সহজ হয় বিজিপির হাতে ক্ষমতায় আসার পর। নাথুরাম গডসে মাত্র একজন ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। কিন্তু তার সতীর্থ আর এস এস ক্যাডার নরেন্দ্র মোদি হত্যা করেছে বহু হাজার মানুষকে। কারণ, মোদি সে হত্যাকান্ডে সমগ্র রাষ্ট্রীয় পুলিশ ও প্রশাসন থেকে সাহায্য পেয়েছে। নাথুরাম গডসে সে সহায়তা পায়নি। নরেন্দ্র মোদি মুসলিম হত্যার যে প্রকল্পটি দিল্লিতে প্রয়োগ করলো সেটি মূলতঃ তার নিজ হাতে রচিত গুজরাতি মডেল। সে মডেলটির মূল বৈশিষ্ট্য হলো, মুসলিম হত্যা, মুসলিম নারী ধর্ষন এবং তাদের ঘরাবাড়ি ও দোকানপাটে আগুণ দেয়ার কাজে আর এস এস গুণ্ডাদের নামানো। এবং সে কাজে পূর্ণ সুযোগ দিতে পুলিশ ও সরকারি প্রশাসনকে পুরাপুরি নিষ্ক্রীয় রাখা। ফলে যে নৃশংসতা ২০০২ সালে গুজরাতে দেখা গিয়েছিল সেটিই দিল্লিতে ঘটলো।
সভ্য দেশে কোন গৃহে ডাকাত বা খুনিদের হামলার সংবাদ পেলে ৫/১০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ হাজির হয়। ডাকাত বা খুনিরা যাতে পালাতে না পারে সে জন্য পুরা এলাকা ঘিরে ফেরা হয়। জনগণ সে নিরাপত্তাটুকু পেতেই পুলিশ পালতে রাজস্ব দেয়। কিন্তু পুলিশের সেরূপ সভ্য কর্ম যেমন গুজরাতে হতে দেয়া হয়নি, তেমনি দিল্লিতেও হয়নি। ফলে গুজরাতে পুলিশের অনুপস্থিতিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে খুনি ও গুন্ডারা ইচ্ছামত মুসলিমদের হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে আগুন দিয়েছে। পুলিশ বাধা দেয়নি। সে পুলিশ নিষ্ক্রীয়তার নজির বহু। একটি দৃষ্টান্ত দেয়া যাক। গুজরাতে একজন মুসলিম নেতা ছিলন এহসান জাফরি। তিনি কংগ্রেস দলের স্থানীয় এমপিও ছিলেন। তার ঘরে অআশ্রয় নিয়েছিল প্রায় তিন শত মুসলিম নারী, পুরুষ ও শিশু। জনাব জাফরি মোদির কাছে পুলিশ সাহায্য চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পুলিশের নিরাপত্ত পাননি। তিনি গৃহের বাইরে এসে হামলাকারীদের বলেন, তোমরা সাথে যা ইচ্ছা করো তবে অআমার গৃহে যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের হত্যা করো না।” কিন্তু গুন্ডাগণ জনাব জাফরি হাতপা কেটে আগুনে জ্বালিয়েছে। এবং যারা তার গৃহে আশ্রয় নিয়েছিল তাদের অধিকাংশকেও হত্যা করেছে। যেসব পুলিশ অফিসার সে বীভৎস অপরাধকর্ম থামানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে মোদি সরকার তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ অন্যত্র বদলী করেছে।
পুলিশের যে নিষ্ক্রিয়তা দিল্লিতে
দিল্লিতে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিররণ দিয়েছে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা। পত্রিকাটি ২৯/২/২০২০ তারিখে ছাপে, “দিল্লিতে চার দিনব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালীন দিল্লি পুলিশের কাছে ১৩ হাজার ২০০টি ফোন গিয়েছিল। কোথাও গুলি চলছে, কোথাও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ আসছিল। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফোনে বার বার অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” ফলে গুণ্ডাদের হাতে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চলা হত্যাকান্ডে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে শত শত –যাদের মাঝে অনেকেই এখনো মৃত্যুর সাথে লড়ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা যে আরো বাড়বে সে সম্ভাবনাই অধীক। সে সাথে পেট্রোল ঢেলে শত শত ঘরবাড়ি ও দোকানপাটও জ্বালানো হয়েছে।
২৯/২/২০২০ তারিখে আনন্দবাজারের আরো রিপোর্টঃ “পুলিশ কন্ট্রোল রুমের কল লগ খতিয়ে দেখা গিয়েছে, ২৩ তারিখ, রবিবার বিক্ষোভের প্রথম দিন সন্ধ্যাতেই ৭০০ ফোন গিয়েছিল পুলিশের কাছে। ২৪ তারিখে একধাক্কায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫০০। ২৫ ফেব্রুয়ারি ৭ হাজার ৫০০ ফোন পায় পুলিশ। তার পর দিন অর্থাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ৫০০টি ফোন পায় পুলিশ। শুধুমাত্র যমুনা বিহার থেকেই ভজনপুরা থানায় ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফোন এসেছিল বলে জানিয়েছে ওই সংবাদমাধ্যম। ভজনপুরা থানার আট পাতার কল রেজিস্টার খতিয়ে দেখে তারা জানিয়েছে, কোন নম্বর থেকে ফোন আসছে, কী অভিযোগ এবং তার প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার জন্য রেজিস্টারের পাতায় আলাদা আলাদা কলাম থাকলেও, শুধুমাত্র কোথা থেকে ফোন এসেছিল, কী অভিযোগ তা-ই লেখা রয়েছে। এমনকি গুলি চলা এবং আগুন লাগানোর অভিযোগও লেখা রয়েছে তাতে। কিন্তু অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার উল্লেখ নেই সে ভাবে। অর্থাৎ অভিযোগ পেয়েও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।”
নৃশংস সন্ত্রাসে পুলিশ
মুসলিম বিরোধী সন্ত্রাসের কাজটি শুধু বিজিপি ও আর.এস.এসের দলীয় গুন্ডাদের কাজই নয়, সে নৃশংস কাজে নামে খোদ পুলিশকেও। সে ঘটনা যেমন পূর্বেও বহুবার দেখা গেছে, তেমনি এবারও দেখা গেল রাজধানী শহর দিল্লিতে। আহত ও আধমরা মুসলিমদের হাসপাতাল না নিয়ে পুলিশ তাদের মাথায় আঘাত দিয়েছে এবং জয় শ্রীরাম ও বন্দে মাতরম গাইতে চাপ দিয়েছে। এমন কি ঘটনাস্থলে এ্যামবুলেন্সও পৌঁছতে দেয়নি। তারা যেন আহতদের মৃত্যুই কামনা করছিল। এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজারের ২৯/২/২০২০ তারিখের রিপোর্টঃ “সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল ভিডিয়োটি। তাতে আধমরা অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকা পাঁচ যুবকের উপর নৃশংস অত্যাচার চালাতে দেখা গিয়েছিল পুলিশকে। জোর করে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ানো হচ্ছিল তাঁদের দিয়ে। না গাইলে চুলের মুঠি ধরে রাস্তায় মাথাও ঠুকে দেওয়া হচ্ছিল। জানতে চাওয়া হচ্ছিল, ‘‘আর আজাদি চাই!’’ নৃশংস অত্যাচারের শিকার সেই পাঁচ যুবকের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ওই যুবককে ফয়জান (২৪) বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক কিশোর সিংহ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে ওই যুবককে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওঁর শরীরে গুলি লাগে। অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক ছিল। ভিডিয়োতে ফুটপাতের পাশে নীল জামা পরা এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। তিনিই ফয়জান বলে জানা গিয়েছে।’’
“নাগরিকত্ব চাই? দিচ্ছি, দাঁড়া!”
২৯/২/২০২০ তারিখে আনন্দ বাজার আরো রিপোর্ট করেছে, “মৌজপুরে মহম্মদ ইব্রাহিমের বাড়ির গেট ভেঙে ঢুকে এক দল লোক যখন পেট্রল ছড়াচ্ছে, তাদের মুখে একটাই শাসানি। বিএসএফ জওয়ান মহম্মদ আনিসের বাড়িতে তাণ্ডব শুরুর সময় একই সুরে গালিগালাজ— ‘ইধার আ পাকিস্তানি! তুঝে নাগরিকতা দেতে হ্যায়।’ প্রথমে বাড়ির বাইরে গাড়িতে আগুন লাগানো হয়, তার পরে আনিসের বাড়িতে ঢুকে গ্যাস সিলিন্ডার খুলে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা, ২০০২ সালে গুজরাতের মতোই। বাবা, কাকা, খুড়তুতো বোনকে নিয়ে কোনও ক্রমে পালান আনিস। তাঁর আর বোনের বিয়ের জন্য টাকা, গয়না রাখা ছিল বাড়িতেই। সব পুড়ে ছাই। মৌজপুর-বাবরপুর চক থেকে বাঁ দিকে বাঁক নিলেই সারি সারি দোকানের ধ্বংসস্তূপ কালো ছাই মেখে দাঁড়িয়ে। দোকানের সামনে আবিদ হুসেন বলছিলেন, ‘‘আগুন লাগানোর সময় বাধা দিয়ে বললাম, কী দোষ করেছি? মারতে মারতে বলল, তোদের বড্ড বাড় বেড়েছে। গোটা দেশকে শাহিন বাগ বানাতে চাইছিস!’’ মঙ্গলবার রাতে ভজনপুরায় পাঁচ যুবককে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। কারখানার কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের এক জন, বছর কুড়ির হাবিবের মাথায় ব্যান্ডেজ। মুখ ফেটেছে। হাবিব বলেন, ‘‘উইকেট দিয়ে পেটাচ্ছিল আর বলছিল, তোদের নাকি আজাদি চাই? এই নে আজাদি।’’
“গুজরাতের দাওয়াই”
২৯/২/২০২০ আনন্দবাজার আর ছেপেছে, “জাফরাবাদের রাস্তার পাশের মাঠে শাহিন বাগের মতোই দু’মাস ধরে সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে ধর্না চলছিল। সীলমপুর থেকে জাফরাবাদ পর্যন্ত দু’কিলোমিটার রাস্তায় বন্ধ দোকানের শাটারে কালো কালিতে লেখা: ‘নো সিএএ, নো এনআরসি’। জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের হলুদ রঙের দেওয়াল, রাস্তার মধ্যে মেট্রো লাইনের স্তম্ভের গায়েও একই স্লোগান। জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের নীচের রাস্তায় ধর্না শুরুর পরেই বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র তিন দিনের মধ্যে রাস্তা খালি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বুধবার পুলিশ-আধাসেনা জাফরাবাদের রাস্তা খালি করার পরে কপিল ঘোষণা করেন, ‘‘আর কোনও শাহিন বাগ হবে না।’’ গোকুলপুরীর ছাই হয়ে যাওয়া টায়ার মার্কেটের ব্যবসায়ী ইউসুফ হারুন বলেন, ‘‘সোমবার বিকেল থেকে ওরা একের পর এক দোকানে আগুন লাগিয়েছে। আর বলেছে, গোটা দিল্লিটাকে শাহিন বাগ করতে দেব না।’’ ব্যবসাদার জামিল সিদ্দিকির কথায়, ‘‘ওরা বলছিল, তোরা গোটা দেশে সিএএ-এনআরসি নিয়ে অশান্তি পাকাচ্ছিস। গুজরাতের মতো আর একটা দাওয়াই না-দিলে চলবে না।’’বধ্যভূমি উত্তর-পূর্ব দিল্লির এ-সব আলাদা ঘটনার একটাই যেন যোগসূত্র— সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-আন্দোলনের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা। দিল্লির উদাহরণ দেখিয়ে শাহিন বাগের মতো আন্দোলন আর কোথাও দানা বাঁধার আগেই শেষ করে দেওয়া।
দিল্লির ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডিজ় অব ডেভেলপিং সোসাইটিজ়’-এর অধ্যাপক হিলাল আহমেদের মন্তব্য, ‘‘বার্তা স্পষ্ট। রাষ্ট্রের ব্যর্থতা নিয়ে মত প্রকাশের অধিকার নেই। বিশেষত আপনি যদি গরিব, চাষি, মহিলা, দলিত, আদিবাসী বা মুসলিম হন।’’ ২০১১-র জনগণনা বলছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির প্রায় ২২.৪ লক্ষ মানুষের ৬৮.২ শতাংশ হিন্দু। যেখানে দুই সম্প্রদায় মিলেমিশে বাস করছিল, সেখানেই সংঘর্ষ হয়েছে। নারায়ণ বলছেন, ‘‘মুসলিমরা এ বার নিজেদের মহল্লার মধ্যেই থাকবে। ভাইচারা শব্দটাই শিকেয় উঠে গেল। ভেদাভেদ এখন আরও স্পষ্ট।’’
পরিকল্পিত গণহত্যা
দেশের কোন নিভৃত গ্রামগঞ্জে নয়, গণহত্যা এবং জ্বালাও পোড়াও ঘটেছে দিল্লির ন্যায় রাজধানী শহরে। এবং ৪ দিন ধরে। এমন গণহত্যা কখনোই হঠাৎ করে হয় না। কোন দৈবাৎ দুর্ঘটনার কারণেও হয়না। তাছাড়া এমন প্রকাণ্ড ধ্বংস কান্ড বা গণহত্যা কখনোই রাষ্ট্রের কর্ণধারদের অনুমতি ছাড়া ও সহযোগিতা ছাড়া ঘটেনা। বরং রাজধানীর বুকে এমন বিশাল হত্যাকান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ হয় প্রশাসনের পরিকল্পনা মাফিক। সেটি যেমন ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে গুজরাতে হয়েছে, সেটিই হলো মোদির ছত্রছায়ায় দিল্লিতেও। দাঙ্গার জন্য চাই চিহ্নিত শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে গভীর ঘৃণা। এখানে সরকারের শত্রুপক্ষ হলো তারাই যারা সরকারি নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছে। প্রতিবাদী পক্ষের বিরুদ্ধে ঘৃণা সৃষ্টির কাজটিই করা হয়েছে সরকারি মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে। ২০১৯ সালের নির্বাচন কাল থেকেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ মুসলিমদের দেশের শত্রু তথা ভেতরের “উঁইপোকা” রূপে অভিহিত করে আসছে। কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী বিজিপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর ২৭/১/২০২০ তারিখে দিল্লির শাহিন বাগের আন্দোলনকারিদের দেশদ্রোহী রূপে চিত্রিত করেছে এবং বলেছে, “দেশ কো গাদ্দারকো গোলি মারো শালোকো”। কতবড় কুৎসিত ও উস্কানিমূলক কথা! বস্তির গুন্ডার গালি একজন মন্ত্রীর মুখে! এটি কি তবে অসভ্য গুন্ডারাজ? বিজিপি এমপি প্রবেশ বর্মা বিকাশপুরী জনসভায় শাহিন বাগের আন্দোলনকারিদের লক্ষ্য করেছে বলেছে, “এরা এবার ঘরে ঘরে ঢুকে মা-বোনদের ধর্ষণ করবে”। এমন কথা বলার উদ্দেশ্য যেমন ঘৃণা সৃস্টি, তেমনি শাহিন বাগের আন্দোলনকারিদের বিরুদ্ধে হামলায় উস্কানি দেয়া।
অপরদিকে সন্ত্রাস দমনে পুলিশের নিরবতা কতটা তীব্র -সেটিও ধরা পড়ে ৩০/১/২০২০ তারিখে। সেদিন সারিবদ্ধ পুলিশের সামনে এক যুবক জামে মিল্লির প্রতিবাদী ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে গুলি ছুঁড়ে এই বলে, “তোম আজাদি চাহতে হো, এ লও আজাদী।” কিন্তু তাকে গ্রেফতার বা থামাতে পুলিশের মাঝে কোন নড়াচড়া নজরেপড়েনি। যে কোন সভ্য দেশেই সন্ত্রাসের লক্ষ্যে মানুষের মাঝে ঘৃণা ছড়ানো গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। সে অপরাধে মন্ত্রী বা পুলিশকে আদালতে তোলা হয়, তাদের চাকুরিও যায়। কিন্তু ভারতে সে সব কিছু হয় না, বরং প্রমোশন হয়। নরেন্দ্র মোদি চা বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী পদ অবধি পৌঁছেছে লাগাতর ঘৃণাপূর্ণ বক্তৃতা ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে। মোদির সবচেয়ে বড় ও সফল সন্ত্রাসটি ছিল মোঘল আমলে গড়া ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসে। সে সফল সন্ত্রাসের জন্য বিজিপি নেতা প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী তাকে রাজপথ থেকে তুলে নিয়ে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেয়। নিয়োগপ্রাপ্তির ২ মাসের মধ্যে গুজরাতে আরেক বীভৎস বর্বরতা ঘটায়। সেটি মুসলিম নির্মূলের গণহত্যা, গণধর্ষণ ও ধ্বংসকান্ড। তাতে মোদির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও তার নিজদেশে প্রকাণ্ড প্রমোশন মেলে। কিছুকালের মধ্যে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদটি দেয়া হয়। ফ্যাসিবাদী রাজনীতির এটিই নিয়ম।যে যত বর্বর, সেই ততো বড় নেতা। বিজিপির অন্য নেতারাও সে পথ ধরেছে। অপর দিকে যারাই তাদের বিরুদ্ধে দাড়ায় তারাই শাস্তি পায়। তাই শাস্তি পেল দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস. মুরলিধর। তাঁর অপরাধ, দিল্লির পুলিশকর্তাকে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেসব নেতাগণ ঘৃনাপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে। আর তাতেই তাঁকে সে পদ থেকে সরিয়ে রাতারাতি পাঞ্জাবে বদলি করা হয়।
ভারতে ভয়ানক দুর্দিন শুধু মুসলিমদের জন্যই নয়, প্রতিটি সভ্য ও বিবেকবান মানুষের জন্যও। এরূপ অসভ্যতা কখনোই কোন দেশের সীমানায় সীমিত থাকে না। করোনা ভাইরাসের ন্যায় ফ্যাসিবাদের ভাইরাসও সীমানা পেরিয়ে দ্রুত প্রতিবেশী দেশেও ছড়ায়। বাংলাদেশে মোদি-ভক্ত হাসিনার প্রচন্ড ফ্যাসিবাদী তান্ডব তো তারই আলামত। ডাকাত কখনোই একাকী ডাকাতিতে নামে না, বরং অন্য ডাকাতদের সাথে নিয়ে বিশাল দল গড়ে। সেরূপ নীতি ফ্যাসিবাদীদেরও। তাদের সে বন্ধনটি শুধু দেশীয় রাজনীতির অঙ্গনেও দেখা যায় না, দেখা যায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। জার্মানীর হিটলার, ইটালীর মোসোলিনী ও স্পেনের ফ্রাংকোর ফ্যাসিবাদীদের মাঝে তাই গভীর বন্ধুত্বের বন্ধন গড়ে তুলতে পেরেছিল। একই কারণে হাসিনার সাথে নরেন্দ্র মোদির সম্পর্কও অতি গভীর।নিজ পিতার জন্ম শতবার্ষিকীর ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে মোদিকে সন্মানিত অতিথি রূপে দাওয়াত দিয়ে হাসিনা প্রমাণ করলো মোদি তার কত আপন। কোন ভদ্রজন কি খুনিকে নিজ গৃহে দাওয়াত দেয়? তাতে ধরা পড়ে চরিত্র, চেতনা ও রাজনীতিও। তাই বিপদ শুধু ভারতীয় মুসলিমদের নয়, গুরুতর বিপদ বাংলাদেশের মুসলিমদেরও। ০১/০৩/২০২০
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018
You are to believe that India participated in 1971 war against east Pakistan not to help Bengalis cause but to loot & plunder the then east Pakistan . They have done it successfully ..Bangadeshis must realise it.May be said as they have eaten the mango leaving the Asti.Muslim rule in India has done a great mistake not marking all Hindus as Muslims .British rule has divided India wrongly as well. It should have been in halves either longitudinally or vertically.Anyway you can not go back but try to combine West Bengal ,Bangladesh ,Bihar &Urissha as Bongodesh as was before to live in peace.