দেশের শিক্ষাঙ্গণ ও শিক্ষানীতির নাশকতা

ইন্ডাস্ট্রি দুর্বৃত্ত উৎপাদনের

শিক্ষাঙ্গণ শুধু জ্ঞানের বিকাশই ঘটায় না; জন্ম দেয় অসত্য-অজ্ঞতা, ঘৃণা-বিদ্বেষ এবং মানবতাধ্বংসী ভয়ানক রুগ্ন ধারণারও। এগুলি পরিণত হতে পারে দুর্বৃত্ত উৎপাদনের বিশাল বিশাল ইন্ডাস্ট্রিতে। স্বৈরাচার, ফ্যসিবাদ, বর্ণবাদ, জাতিয়তাবাদ, উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এবং কম্যুনিজমের ন্যায় মানবতা-নাশক মতবাদগুলির জন্ম কোন কালেই বনজঙ্গলে হয়নি, বরং হয়েছে শিক্ষাঙ্গনে। এবং এ মতবাদগুলির নাশকতা বিষাক্ত রোগ-জীবাণু ও সুনামী-ভূমিকম্পের চেয়েও অধীক। মানব জাতির সমগ্র ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী লোকক্ষয় রোগজীবাণু বা সুনামী-ভূমিকম্পের হাতে হয়নি। সেটি হয়েছে শিক্ষাঙ্গণে বেড়ে উঠা মানবরূপী ভয়ানক দানবদের হাতে। বিগত দুটি বিশ্বযুদ্ধেই তারা সাড়ে সাত কোটি মানুষকে হত্যা করেছে এবং শত শত নগর-বন্দরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী শাসনকে প্রতিষ্ঠা দিতে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে যারা গতহত্যা ও গণনির্মূলে নেতৃত্ব দিয়েছে তারাও কোন গুহাবাসী ছিল না; তারা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পেয়েছে অক্সফোর্ড, কেম্ব্রিজ ও হার্ভাডের ন্যায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। ভারতের বুকে যে কোটি কোটি মানুষ গরুছাগল, শাপ-পেঁচা, পাহাড়-পর্বত ও মুর্তিকে দেবতা মনে করে, তারা কি কোন বন-জঙ্গলের বাসিন্দা? তাদের অনেকে তো কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। ডিগ্রি নেয়া এবং জ্ঞানী ও বিবেকমান হওয়া যে এক নয় –তার প্রমাণ তো এ নৃশংসতার ইতিহাস।

 

বা্ংলাদেশের ইতিহাসেও এরূপ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাশকতা কি কম? যারা শাপলা চত্ত্বরে মুসল্লিদের উপর গণহত্যা ঘটালো -এরা কি বনে জঙ্গলে বেড়ে উঠেছে? এরাও বেড়ে উঠেছে দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সামরিক ও পুলিশ এ্যাকাডেমিগুলিতে। ক’মাস আগে এদেরই দলবদ্ধ ভাবে দেখা গেছে নিরাপদ সড়কের দাবীতে রাস্তায় নামা যায় কিশোরীদের উপর যৌন সন্ত্রাসে। এরাই থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাস্তায় নারীদের বিবস্ত্র করে লালসা পূরণ করে। এদেরই একজন নব্বইয়ের দশকে জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণে সেঞ্চুরীর উৎসব করেছিল। তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। একজন নারী সাংবাদিককে চরিত্রহীন বলায় ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে জেলে ঢুকানো হয়েছে। এবং সেটি নারীর সম্ভ্রম রক্ষার নামে। অথচ হাসিনা ধর্ষণে সেঞ্চুরীকারি ছাত্রলীগ নেতাকে শাস্তি না দিয়ে নিরাপদে বিদেশে পাড়ি জমাতে দিয়েছিল।

নাশকতা ঐক্য বিনাশে

ইসলামের মৌলিক চেতনা বিনাশেও কি সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার নাশকতা কি কম? ইসলাম অতি মৌলিক শিক্ষাটি স্রেফ মহান আল্লাহতায়ালা ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনা নয়; বরং ভাষা, বর্ণ, ভূগোল বা অঞ্চলের উর্দ্ধে উঠে মুসলিমদের মাঝে ভাতৃত্বের বন্ধন গড়া। সে সাথে বাধ্যতামূলক হলো মুসলিমদের মাঝে অনৈক্যকে ঘৃণা করা এবং পরিহার করা। নামায-রোযার ন্যায় এটিও ফরজ। পবিত্র কোরআনে মুসলিমদের মাঝে সীসাঢালা অটুল দেয়াল গড়ার হুকুমটি এসেছে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে। সেটি সুরা সাফের ৪ নম্বর আয়াতে। আর যেখানে মহান আল্লাহতায়ালার হুকুম, সেটি অমান্য করলে কি ঈমান থাকে? তাই ভাষা,বর্ণ, অঞ্চলের নামে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি গড়াটি মদপান, জ্বিনা ও মানব হত্যার ন্যায় হারাম। মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি গড়লে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে আযাব যে অনিবার্য হয় –সে হুশিয়ারিটিও শোনানো হয়েছে। সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা ইমরানের ১০৫ নম্বর আয়াতে। মুসলিমদের উপর আযাবের সে আলামত কি আজ কম?

অথচ ভাষার নামে শুধু বিভক্তি গড়া নয়, বরং খুনোখুনি ও অবাঙালীদের নির্মূল করাটি হলো বাঙালী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির মূল কথা। এদিক দিয়ে তাদের ঘনিষ্ট আদর্শিক আত্মীয় হলো মায়ানমারের অসভ্য বার্মীজগণ। জাতীয়তাবাদী এ নৃশংস বর্বরগণ রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বর্ণবাদী নির্মূলে নেমেছে। একই রূপ জাতীয়তাবাদী বর্বরতায় বাংলার মাটিতে সবচেয়ে অসভ্য কর্মটি ঘটেছে একাত্তরে। তখন হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের শিকার হয়েছিল কয়েক লক্ষ বিহারী মুসলিম। তারা ভারত থেকে প্রাণ বাঁচাতে পূর্ব পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল। ব্যক্তির দৈহিক দুর্বলতা জানিয়ে দেয়, তার খাদ্যে পুষ্টির মান ভাল নয়। তেমনি ব্যক্তির চরিত্রহীনতা জানিয়ে দেয়, তার শিক্ষায় রয়েছে প্রচুর কুশিক্ষা। বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বে ৫ বার শীর্ষ স্থান পেয়েছে তো কুশিক্ষার কারণেই।

বাংলাদেশে সেক্যুলার শিক্ষা নীতির মূল নাশকতাটি স্রেফ এ নয়, এটি বিলুপ্ত করতে পেরেছে মুসলিম মগজ থেকে প্যান-ইসলামিক চেতনা। বরং কেড়ে নিয়েছে নৃশংস বর্বরতাকে ঘৃণা করার সামর্থ্য। কেড়ে নিয়েছে সুনীতি নিয়ে বেড়ে উঠার ঈমানী বল। এজন্যই বাংলা সাহিত্যে বিহারীদের বিরুদ্ধে সংগঠিত নৃশংসতার কোন বিবরণ নেই। লেখা হচ্ছে না শাপলা চত্ত্বরের গণহত্যার বিরুদ্ধেও। একই কারণে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গণে ধর্ষণে সেঞ্চুরি করার বিষয়টিও ইতিহাস থেকে হারিয়ে গেছে। দেহে একবার রোগ দেখা দিলে বুদ্ধিমান ব্যক্তি তা সারা জীবন মনে রাখে এবং তা থেকে বাঁচার জন্য সব সময় সতর্ক থাকে। বিবেকমান জনগোষ্ঠিও তেমনি নিজদের ইতিহাসের কালো অধ্যায়গুলি ভুলে যায় না, বরং বাঁচিয়ে রাখে তা থেকে ভবিষ্যতে বাঁচার আশায়। নইলে আত্মভোলা সে জনগণের জীবনে বাকশালী স্বৈরাচার ও শাপলা চত্ত্বরের গণহত্যার ন্যায় নৃশংসতাগুলো নিত্যনৈমিত্তিক হয় দাঁড়ায়।

সুশিক্ষা শুধু ঈমানই বাড়ায় না, ঈমানদারদের মাঝে সিমেন্টও লাগায়। ফলে গড়ে উঠে অটুট ঐক্য। অপর দিকে কুশিক্ষা বাড়ায় বিভেদ ও অনৈক্য। গড়ে তোলে বিভক্তির দেয়াল। মুসলিমদের মাঝে অনৈক্য দেখে অন্ততঃ এ বিষয়টি নিশ্চিত বলা যায়, তাদের মাঝে সুশিক্ষা নাই। অথচ সুশিক্ষার কারণেই ইসলামের গৌরবকালে আরব, কুর্দী, তুর্কী, ইরানী ও আফ্রিকান মুসলিমগণ নিজেদের ভাষা ও বর্ণের কথা ভূলে একতাবদ্ধ উম্মাহর জন্ম দিয়েছিল। কিন্ত ইসলামি শিক্ষা থেকে যখনই তারা দূরে সরেছে, তখন শুধু বিভক্তিই বাড়েনি, পরাজয় এবং অপমানও বেড়েছে। একতা ছাড়া অসম্ভব, ইসলামি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। অসম্ভব হয়, শরিয়ত, হুদুদ, একতা ও খেলাফার ন্যায় ইসলামের মূল বিধানগুলির প্রতিষ্ঠা। ব্যর্থ হয়, ইসলামের মূল এজেন্ডার বাস্তবায়ন। যাদের মধ্যে ঈমান আছে তারা শুধু ভিন্ ভাষা, ভিন্ বর্ণ ও ভিন্ এলাকার ঈমানদার মানুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক জামাতে শুধু নামাযই পড়ে না; তারা রাষ্ট্র গড়ে এবং একই রণাঙ্গনে যুদ্ধও করে। এটিই তো ঈমানের লক্ষণ। সে ঈমানের কারণে বাঙালী, পাঞ্জাবী, বিহারী, সিন্ধি, পাঠান, গুজরাতি ও অন্যান্য ভাষার মুসলিমগণ একত্রে মিলে ১৯৪৭’য়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল। সে অভিন্ন চেতনার কারণেই ১৯৭১’য়ে কোন আলেম, পীর বা কোন ইসলামী দল পাকিস্তান ভাঙ্গাকে সমর্থণ করেনি। তাদের কেউ ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণও নেয়নি।

ঈমান ও একতার প্রতি আগ্রহ সব সময়ই একত্রে চলে। ঈমান বিলুপ্ত হলে একতাও বিলুপ্ত হয়। তখন ভাষা,বর্ণ ও ভূগোলের নামে বিভক্তির অসংখ্য দেয়াল গড়ে উঠে। জাতীয় রাষ্ট্রের নামে সে বিভক্তির দেয়ালকে সুরক্ষা দেয়া তখন দেশপ্রেম গণ্য হয়। প্রশ্ন হলো, বিভক্তির দেয়াল এবং সে বিভক্তি নিয়ে উৎসব কি ঈমানের লক্ষণ? বরং প্রকৃত ঈমানদারের মনে এরূপ বিভক্তি নিয়ে মাতম উঠবে -সেটিই তো স্বাভাবিক। কিন্তু আজ সে মাতম নাই, বিভক্তি নিয়ে দুঃখবোধও নাই। অথচ মুসলিম জাহানে যখন কোন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, তখনও একজন নিরক্ষর মুসলিম একতার গুরুত্ব বুঝতো। তাই তখন আরব,ইরানী, তুর্কী, কুর্দী, আফ্রিকান মুসলিম একত্রে যুদ্ধ করেছে। অথচ আজ সেটি অসম্ভব। শিক্ষাব্যবস্থা সিরাতুল মুস্তাকীম থেকে যে কতটা দূরে সরিয়েছে –এ হলো তার প্রমাণ।

নাশকতা চিন্তাশূণ্যতার

জ্ঞানের অর্থ শুধু তথ্য,তত্ত্ব,উপাত্ত,গদ্যপদ্য,পরিসংখ্যান বা কিসসা-কাহিনী জানা নয়,বরং নানা বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা এবং সে চিন্তা-ভাবনা থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সামর্থ্য। কোরআনের নানা স্থানে নানা ভাবে মহান আল্লাহতায়ালা মানুষকে চিন্তা-ভাবনায় উৎসাহিত করেছেন। প্রতিটি জীবজন্তু,প্রতিটি উদ্ভিদ,প্রতিটি পাহাড়-পর্বত,প্রতিটি নদীনালা,আকাশের প্রতিটি নক্ষত্র,প্রকৃতির প্রতিটি দৃশ্যপটই মহান আল্লাহর মূল্যবান আয়াত। কোরআনের ভাষায় তা হলো “আয়াতিল লি উলিল আলবাব” অর্থ চিন্তাশীল মানুষের জন্য নিদর্শন। বিদ্যাশিক্ষার কাজ মূলতঃ মহান আল্লাহর সে আয়াতগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণের সামর্থ্য সৃষ্টি। মানুষের মনে সে আয়াতগুলি বহুভাবে বহুকথা বলে। কোনটি সরব ভাবে,কোনটি নীরব ভাবে। ব্যক্তির চক্ষু,কর্ণ,বিবেকের সামনে এগুলো লাগাতর সাক্ষ্য দেয় সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর অপার অসীম কুদরতের। বিদ্যাশিক্ষার কাজ হলো সে সাক্ষ্য বুঝতে ও আল্লাহর পক্ষে সাক্ষ্যদানে সামর্থ্য সৃষ্টি করা। সে সামর্থ্য অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাগে না। সেজন্য যা জরুরী তা হলো চিন্তার সামর্থ্য। ইসলামে চিন্তাকে তাই শ্রেষ্ঠ ইবাদত বলা হয়েছে। চিন্তাশিল মনই হলো জ্ঞানের সবচেয়ে বড় পাওয়ার হাউস। চিন্তার বলে আল্লাহর অসংখ্য আয়াত থেকে শিক্ষা নেয়ার যে সামর্থ্য গড়ে উঠে তার গুণে মানব ইতিহাসের বহু নিরক্ষর ব্যক্তিও বিখ্যাত দার্শনিকে পরিণত হয়েছে। অথচ সে সামর্থ্য না থাকায় বহু পিএইচডি ধারিও প্রচণ্ড আহম্মকে পরিণত হয়।বাংলাদেশে তো এমন আহম্মকদের কাছে গরুছাগল ও শাপশকুন যেমন ভগবান মনে হয় তেমনি বঙ্গশত্রু,গণশত্রু এবং অতি স্বৈরাচারি দুর্বৃত্তরাও মহমানব বন্ধু মনে হয়। চিন্তাশূণ্যতার এটিই হলো নাশকতা।

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় শুধু এমন আহম্মকের সংখ্যাই বাড়েনি, ভয়ানক দুর্বৃত্তের সংখ্যাও বেড়েছে। এ শিক্ষার কাজ হয়েছে,শুধু চিন্তার সামর্থ্য কেড়ে নেয়া নয়,কোরআনের সাথে সম্পর্ককে ছিন্ন করারও। পারিবারিক বা সাংস্কৃতিক সূত্রে কোরআনের সাথে যদি কোনরূপ সম্পর্ক গড়েও উঠে,বাংলাদেশের শিক্ষার কাজ হয়েছে সে সম্পর্ক বহাল রাখাকে কঠিন করে দেয়া। শিক্ষাব্যবস্থার কাজ হয়েছে ছাত্রদের ইবাদতের সামর্থ্য কেড়ে নেয়া,এবং সে সামর্থ্য যাতে গড়ে না উঠে তার ব্যবস্থা করা। মুসলিম শিশুর জীবনে ভ্যালু এ্যাড বা মূল্য সংযোজন না করে বরং পারিবারিক বা সাংস্কৃতিক সূত্রে সংযোজিত মূল্যও কেড়ে নিচেছ। ফলে কৃষকের সুবোধ পুত্রটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ব্যাভিচারি,ধর্ষক,চোরডাকাত ও সন্ত্রাসী খুনি হয়ে বের হচ্ছে। এবং এরাই রাজপথে আল্লাহর শরিয়তী বিধানের বিরুদ্ধে সৈনিক রূপে নামছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামের বিপক্ষে আজ যে বিপুল বাহিনী এবং পথেঘাটে,অফিস-আদালত,ব্যবসা-বাণিজ্যে যে অসংখ্যক দুর্বৃত্ত -তারা কি কাফেরদের ঘরে, মন্দিরে বা বনেজঙ্গেলে বেড়ে উঠেছে? তারা তো বেড়ে উঠেছে দেশী স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

দুর্গ ইসলামের শত্রুপক্ষের

অজ্ঞ লোকদের সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়। কিন্তু জ্ঞানী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কি সেটি অসম্ভব। বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধীদের শক্তির মূল উৎসটি হলো, কোরআন থেকে জ্ঞানলাভে অসমর্থ জনগণ। তারা চায়, জনগণের ইসলাম নিয়ে অজ্ঞতা দীর্ঘায়ু পাক। চায়, সেটি আরো গভীরতর হোক। কোরআনী জ্ঞানের এজন্যই তারা মহাশত্রু। পবিত্র কোরআনের জ্ঞান বাড়লে সে জ্ঞান শক্তি জোগায় ঈমান নিয়ে বেড়ে উঠায়। তারা ইসলামের বিজয়ে তখন আপোষহীন হয়। শরিয়ত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন তখন বিপুল সংখ্যায় আপোষহীন মোজাহিদ পায়। এখানেই ইসলামের শত্রু পক্ষের ভয়। সে ভয় নিয়েই য়ভয়। ভয়। আরবী ভাষা এবং সে সাথে কোরআনের চর্চা রুখা হচ্ছে ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি কৌশল রূপে।

দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরিণত হয়েছে ইসলামের শত্রু পক্ষের মূল দুর্গে। মহান আল্লাহতায়ালার দেয়া শরিয়তি আইন প্রতিষ্ঠা নিয়ে রাজপথে নামলে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে যারা হামলা করে তারা কোন মন্দির,গীর্জা বা বনজঙ্গল থেকে আসে না। বরং আসে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রাঙ্গণ থেকেই। অথচ এগুলির নির্মানে ব্যয় ধর্মপ্রাণ মুসলিম নাগরিকদের দেয়া রাজস্বের অর্থ। প্রশ্ন হলো, শিক্ষার নামে মুসলিমগণ কি এভাবে নিজ ধর্ম,নিজ ঈমান,সর্বোপরি মহান আল্লাহতায়ালার শত্রু পালনে অর্থ জোগাতে থাকবে? মেনে চলবে কি শিক্ষাঙ্গণের উপর ইসলামের শত্রুপক্ষের এ দখলদারি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *