বাংলাদেশে মিথ্যাচারিদের শাসন এবং শেখ মুজিব ও হাসিনার প্রাপ্য শাস্তি
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on July 21, 2019
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
শেখ মুজিবের মিথ্যাচার
২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্ত্বরে নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পর মানবাধিকার সংস্থা “অধিকার” এর প্রধান আদিলুর রহমান খানকে সরকার গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল,শাপলা চত্ত্বরে সরকারি বাহিনীর হাতে শাহাদতপ্রাপ্ত হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের বিষয়ে সংস্থাটি নাকি মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল। “অধিকার” য়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাদের হাতে ৬১জন শহীদের নামধাম আছে যাদের সেদিন হত্যা করা হয়েছিল।আওয়ামী লীগ সরকার বলছে,“অধিকার” বিকৃত তথ্য দিয়েছে এবং সেটি বাংলাদেশের “তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০৬” অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই আইন মোতাবেক ভূল তথ্য প্রচারের শাস্তি পূর্বে ১০ বছর জেলের বিধান ছিল। কিন্তু সরকার সেটি সম্প্রতি বাড়িয়ে ন্যূনতম শাস্তি ৭ বছর এবং সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর করেছে। ফলে এ অপরাধে আদিলুর রহমানকে শেখ হাসিনার সরকার আদালতে শাস্তির ব্যবস্থা করেছিল।
কথা হলো, মিথ্যা কথা বলাটি সেদিন শাস্তি যোগ্য অপরাধ রূপে চিহ্নত হয়েছিল। কিন্তু মিথ্যা বলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের যে জুরি নাই সে প্রমাণ তো প্রচুর। মিথ্যা তথ্য দেয়া যদি বাংলাদেশের আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়, তবে সে অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত শেখ মুজিব ও তার কন্যা শেখ হাসিনার। কারণ,বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মিথ্যা তথ্যটি যিনি দিয়েছেন তিনি অন্য কেউ নন, সে ব্যক্তিটি খোদ শেখ মুজিব।তেমনি মুজিবের ন্যায় বহু বিকট মিথ্যার জন্ম দিয়েছেন শেখ হাসিনা। মুজিবের প্রকান্ড মিথ্যাচারটি হলো একাত্তরে ৩০ লাখ মানুষের নিহত হওয়ার তথ্যটি। আর হাসিনার মিথ্যাচারটি হলো শাপলা চত্ত্বরে নৃশংস হত্যাকান্ডের পরও ৫ই মে কোন গোলাগোলি হয়নি,কেউ নিহত হয়নি এবং হেফাজত কর্মীদের গায়ে রঙ মেখে মৃতের অভিনয় বলার তথ্যটি। বাংলার সমগ্র ইতিহাসে এতবড় মিথ্যা কথা কেউ কি কখনো বলেছে? মিথ্যা উচ্চারণ সব সময়ই পাপ, সবসময়ই সেটি শাস্তি যোগ্য অপরাধ। মজলুমের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলা যেমন অপরাধ, তেমনি অপরাধ হলো জালেমের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলাও।আর সবচেয়ে বড় শাস্তি তো তার প্রাপ্য যে সবচেয়ে বড় মিথ্যাটি বলে।
মিথ্যাচারিদের আরেক অপরাধ,জনগণকে তারা বিবেকহীন করে।সেটি জনগণের মনে মিথ্যার আবাদ বাড়িয়ে। আগাছার আবাদ বৃদ্ধিতে জমির উর্বরতা যেমন বিলুপ্ত হয়,তেমনি মিথ্যার প্রকোপে অসম্ভব হয় মানব মনে সত্যের বীজ বেড়ে উঠার।এমন মিথ্যুকদের আল্লাহতায়ালা হেদায়েত দেননা। মিথ্যাচারিরা তাই বঞ্চিত হয় ইসলামের বরকত থেকে। বিবেকহীন ও দুর্বৃত্ত হওয়াটাই তাদের রীতি। তাই সত্যকে কবুল করার ক্ষেত্রে তারা সামর্থহীন হয়। একারণেই ঈমানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে নাশকতাটি ঘটায় মিথ্যাচারিতা। শয়তানের এটিই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। শুধু ফিরাউন বা নমরুদ নয়,সাপ-শকুন, গরুছাগল ও মুর্তিরাও কোটি কোটি মানুষের কাছে ভগবান রূপে গণ্য হয়েছে তো এরূপ মিথ্যাচারিদের প্রচারের কারণে। একই ভাবে শেখ মুজিব ও তার দল আওয়ামী লীগও কোটি কোটি মানুষকে বিবেকহীন করেছে। আওয়ামী বড় অপরাধটি তাই শুধু ভারতের দাসত্ব প্রতিষ্ঠা নয়, স্বৈরাচারি শাসনও নয়। বরং সেটি মিথ্যার প্রতিষ্ঠা। দেশে তিরিশ লাখের মিথ্যা তথ্যটির প্রচার তো সে কারণে এতটা বলবান।
মুজিবের তিরিশ লাখের মিথ্যাচার
তিরিশ লাখের অর্থ তিন মিলিয়ন। একাত্তরে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি অর্থাৎ ৭৫ মিলিয়ন। যে কোন স্কুল ছাত্রও হিসাব করে বের করতে পারে,সাড়ে ৭ কোটির (৭৫ মিলিয়ন)মাঝে তিরিশ লাখ (তিন মিলিয়ন) মানুষের মৃত্যু হলে প্রতি ২৫ জনের মাঝে একজনকে মারা যেতে হয়। যে গ্রামে ১ হাজার মানুষের বাস সে গ্রামে মারা যেতে হয় ৪০ জনকে। ঘটনাক্রমে সে গ্রামে সেনাবাহিনীর প্রবেশ না ঘটলে এবং তাদের হাতে কেউ মারা না গেলে পরবর্তী গ্রামটি যদি হয় ১ হাজার মানুষের তবে সেখান থেকে মারা যেতে হবে কমপক্ষে ৮০ জনকে। যে থানায় ১ লাখ মানুষের বাস সেখানে মারা যেতে হবে ৪ হাজার মানুষকে। প্রতি থানায় ও প্রতি গ্রামে মৃত্যুর সংখ্যা এ হারে না হলে ৩০ লাখের সংখ্যা পূরণ হবে না। তাছাড়া ৯ মাসে তিরিশ লাখ মানুষকে হত্যা করতে হলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রতিদিন গড়ে ১১,১১১ জনকে হত্যা করতে হয়। সে সংখ্যাটি কোন একটি দিন পূরণ করতে ব্যর্থ হলে পরের দিন বেশী করে হত্যা করে তা পূরণ করতে হতো। সে সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাক-বাহিনীর প্রকৃত সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৫ হাজার। -(সূত্রঃ জেনারেল নিয়াজী রচিত বিট্রায়াল অব ইস্ট পাকিস্তান নামক বই,২০০১)।যুদ্ধবন্ধী রূপে যেসব পাকিস্তানীদের ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের মধ্যে অনেকে ছিল বেসামরিক অবাঙালী ও তাদের পরিবারের সদস্য।
প্রশ্ন হলো,৪৫ হাজার পাকিস্তানী সৈন্যের পক্ষে কি সম্ভব ছিল বিল-হাওর,নদী-নালা,দ্বীপ ও চরাভূমিতে পরিপূর্ণ একটি দেশের প্রায় ৭০ হাজার গ্রামে পৌছানো? প্রায় ৭০ হাজার গ্রামের মাঝে ১০ হাজার গ্রামেও কি সেনা বাহিনী পৌঁছতে পেরেছে? প্রতিটি গ্রাম দূরে থাক প্রতিটি ইউনিয়নেও কি তারা যেতে পেরেছিল? অধিকাংশ গ্রামে তখন গাড়ী চলার মত রাস্তা ছিল না।অধিকাংশ গ্রামের অবস্থান নদীর পাড়েও নয় যে তারা লঞ্চ বা নৌকা যোগে সেখানে পৌঁছতে পারতো। ফলে তিরিশ লাখ নিহতের হিসাব মিটাতে হলে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা পড়তে হয় জেলা ও উপজেলা শহরে। কিন্তু কোন জেলা বা উপজেলা শহরে ১০ হাজার বাঙালী কি মারা গেছে? তাই মুজিবের তিরিশ লাখ যে গাঁজাখোরী মিথ্যা সেটি প্রমান করা কি এতই কঠিন? সে মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য বাংলাদেশের মাটিতে সর্বপ্রথম যে ব্যক্তির বিচার হওয়া উচিত এবং সে বিচারে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত তিনি হলেন শেখ মুজিব। মুজিবের অপরাধ শুধু এ নয় যে তিনি মিথ্যাচারি ছিলেন। বরং বহু কোটি মানুষকে তিনি মিথ্যাচারি বানিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে একাত্তরে তিরিখ নিহত হওয়ার তথ্যটি বাজার পেয়েছে তার কারণেই। তাছাড়া মিথ্যাচারিতা শুধু শয়তানের জন্য দরজাই খুলে দেয় না।সে সাথে আল্লাহর আযাবও ডেকে আনে। তাই বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি আইন মোতাবেক সর্বপ্রথম তারই মরণোত্তর শাস্তি হওয়া উচিত। এতবড় মিথ্যা তথ্য দেয়ার পরও যদি শাস্তি না হয় তবে মিথ্যা বলা যে শাস্তি যোগ্য অপরাধ সেটি প্রমাণ হয় কি করে? তখন এরূপ অপরাধে অন্য কাউকে আদালতে তোলার কি আদৌ কোন যৌক্তিকতা থাকে?
হাসিনার লাশের দৌড় মারার কিচ্ছা
একই রূপ ভয়ংকর মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে কাঠগড়ায় তোলা উচিত শেখ হাসিনার। সে মিথ্যা তথ্যটি তিনি দিয়েছেন ১৯শে জুন সংসদে দাঁড়িয়ে। আজ এটি প্রমাণিত সত্য যে,গত ৫ মে, ২০১৩ তারিখে রাতে হেফাজতে ইসলামের লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে শাপলা চত্ত্বর থেকে সরানোর সময়ে নৃশংস গোলাগোলি হয়েছিল। তাতে হাজার হাজার মানুষ হতাহত হয়েছিল, এবং রক্তের স্রোতে ভেসে গিয়েছিল মতিঝিলের রাজপথ। সে নৃশংসতার অসংখ্য ভিডিও চিত্র আজ দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে আছে। কিন্তু শেখ হাসিনা বলেছেন,“সেই (৫ মে) দিন কোনো গোলাগুলি বা সেরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তারা সেখানে গায়ে লাল রঙ মেখে পড়ে ছিল। পরে পুলিশ যখন তাদের ধরে টান দেয়, দেখা গেল উঠে দৌড়াচ্ছে। দেখা গেল লাশ দৌড় মারল।” -(দৈনিক আমার দেশ ২০/০৬/১৩)। ৫ মে’র রাতের নৃশংসতা নিয়ে এ অবধি সরকারি দল, র্যাব,পুলিশ ও বিজিবীর পক্ষ থেকে বহু ব্যক্তি বহু মিথ্যা ভাষণ রেখেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, হাসিনা যে মিথ্যাচার করলেন এতবড় মিথ্যা কথা কি আজ অবধি কেউ কি বলেছে?
সে কালো রাতে যে নৃশংস বর্বরতাটি ঘটেছে তার ভূক্তভোগী ও সাক্ষি শুধু হেফাজতে ইসলামের লক্ষাধিক নেতাকর্মীই নন, বরং প্রত্যক্ষদর্শী হলো শত শত মিডিয়া কর্মী ও সাধারণ মানুষ। তাছাড়া এ নৃশংসতার শত শত ভিডিও চিত্রও রয়েছে। এবং বিশ্বব্যাপী তা ছড়িয়ে পড়েছে। কোন সজ্ঞান ও সুস্থ্য মানুষ কি সে সচিত্র প্রমাণগুলো অস্বীকার করতে পারে? একাত্তরের ২৫ মার্চের ঘটনা নিয়ে লাগামহীন গুজব সৃষ্টি করা চলে, কারণ তার কোন ভিডিও প্রমাণ চিত্র নেই। কিন্তু সে অবকাশ ৫ মে’র ঘটনা নিয়ে নেই। অথচ শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীগণ সে রাতের বর্বরতার ধারণকৃত ভিডিও চিত্রগুলো অস্বীকার করে চলছেন। শেখ হাসিনার এরূপ বিষোদগার কি কেবল মিথ্যাচার? বরং নিহত ও আহত হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষের সাথে এক নিষ্ঠুর বিদ্রুপও। একমাত্র মানসিক ভাবে অসুস্থ্য মানুষই এমন মিথ্যচারি ও বিদ্রুপকারি হতে পারে। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনা উল্টো মিথ্যাচারিতার গুরুতর অভিযোগ এনেছেন বিরোধী দলের বিরুদ্ধে। মিথ্যাচারি ও অপরাধী প্রমাণের চেষ্টা করেছেন হেফাজতে ইসলামের ধর্মপ্রাণ নেতাকর্মীদের। তাদের চরিত্রহনন করতে গিয়ে তিনি ধর্মের দোহাইও দিয়েছেন। মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ ও ধর্মবিরোধী – উলামাদের প্রতি সে নসিহতও করেছেন। শেখ হাসিনা বলেছেন,“অথচ তারা (বিরোধী দল) ১ লাখ ২ হাজার গুলি,হাজার হাজার লাশের কথা বলে বেড়াচ্ছে।এ ধরনের আজেবাজে মিথ্যাচার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ধর্মের নামে এই অসত্য কথা বলে কোন ধরনের ইসলাম পালন তা আমি জানি না।” -(দৈনিক আমার দেশ ২০/০৬/১৩)।
হাসিনা যে শাপলা চত্ত্বরের হত্যাকান্ড নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে সেটি সরকারি প্রেসনোটও প্রমাণ করেছে। হতাহতের প্রকৃত সংখ্যাটি প্রেসনোটে গোপন করার চেষ্টা করা হলেও প্রেসনোট এতটুকু বলতে বাধ্য হয়েছে যে,সেখানে হত্যাকান্ড ঘটেছে এবং বলেছে,ঐদিন ১১ জনের মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং লাশ দেখা গেছে শাপলা চত্ত্বরের মঞ্চের পাশে। ফলে প্রেসনোটেই প্রমাণিত হয়েছে হাসিনা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। হাসিনার দেয়া ভাষ্য মতে “সেই (৫ মে) দিন কোনো গোলাগুলি বা সেরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তারা সেখানে গায়ে লাল রঙ মেখে পড়ে ছিল। পরে পুলিশ যখন তাদের ধরে টান দেয়,দেখা গেল উঠে দৌড়াচ্ছে।দেখা গেল লাশ দৌড় মারল”- এ তথ্যটি ডাহা মিথ্যা ও বানাওয়াট। বরং প্রকৃত সত্যটি হলো,সেদিন প্রচন্ড গোলাগোলি হয়েছিল। গোলাগোলিতে হাজার হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে। শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের লাশগুলো সেদিন হাসিনার কথা মত দৌড় মারেনি,বরং সেখানেই রক্তাত্ব নিথর দেহ নিয়ে পড়ে ছিল। সরকারি প্রেসনোট দাতারাও সে লাশগুলো দেখেছে। অনেক দেখেছে সে লাশগুলোকে ময়লার গাড়িতে তুলতে। অতএব এরূপ উদ্ভট মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির আইনে বিচার ও সে বিচারে সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
হামলা ৭ হাজার ৫ শত ৮৮ জন সৈনিকের
শেখ হাসিনা যে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে সে প্রমাণটি শুধু হেফাজতকর্মীরা দেইনি। দিয়েছে বহু সাংবাদিকও। ১২ই মে তারিখে দৈনিক যুগান্তর রিপোর্ট করে,পুলিশ, র্যাব ও বিজিবীর ৭ হাজার ৫ শত ৮৮ জন এ হামলায় অংশ নিয়েছিল। হামলাকারিদের মধ্যে ১৩০০ জন এসেছিল র্যাব থেকে। ৫,৭১২ জন এসেছিল পুলিশ বাহিনী থেকে এবং ৫৭৬ জন এসেছিল বিজিবী থেকে। তখন শাপলা চত্ত্বরের আশেপাশে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান নিয়ে বসে ছিল লক্ষাধিক মুসল্লি। যাদের অনেকে সে সময় তাহাজ্জুদের নামায পড়ছিলেন, কেউ বা যিকির করছিলেন, কেউ বা সারাদিন সরকারি গুন্ডা বাহিনীর হামলা মোকাবেলা করে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। হামলা শুরু হয় রাত আড়াইটার সময় এবং তিন দিক দিয়ে। দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, সমগ্র এলাকাটি সে সময় বন্দুকের গুলি, টিয়ারগ্যাসের শেল ও ধোয়াতে পূর্ণ হয়ে যায়। পত্রিকাটি বিবরণ দিয়েছে, হামলাকারি এ বিশাল বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় র্যাবের ইন্টেলিজেন্স প্রধান লে.কর্নেল জিয়াউল হাসান, র্যাব-১০ এর কমান্ডার লে.কর্নেল ইমরান, র্যাব-৩ এর কমান্ডার মেজর শাব্বির এবং র্যাব ডাইরেক্টর লে.কর্নেল কিসমত হায়াত, র্যাব ডাইরেক্টর কামরুল আহসান এবং বিজিবী অফিসার কর্নেল ইয়াহিয়া আযম।। সেপাইদের পাশে হামলাতে অংশ নেয় ৫জন কমান্ডো অফিসার। শত্রু দেশের বিরুদ্ধে পরিচালিত কোন প্রকান্ড সীমান্ত যুদ্ধের যেমন কোড নাম থাকে তেমনি কোড নাম ছিল জনগণের বিরুদ্ধে পরিচালিত এ সেনা যুদ্ধেরও। তবে একটি নয়,একাধিক। র্যাব এ যুদ্ধের নাম দিয়েছিল “অপারেশন ফ্লাশআউট”। আর বিজিবী নাম দিয়েছিল “ক্যাপচার শাপলা”।
একাত্তরের ৯ মাসের যুদ্ধের ভারত ও পাকিস্তানের কোন পক্ষই সীমান্ত যুদ্ধের কোন একটি একক সেক্টরে ৭ হাজার ৫ শত ৮৮ জন সৈন্য নিয়ে হামলা করেনি। অথচ এক শাপলা চত্তরের ন্যায় আধা মাইলের কম জায়গায় সৈন্য নামানো হয়েছিল ৭ হাজার ৫ শত ৮৮ জন। বাংলাদেশের বিগত হাজার বছরের ইতিহাসে এতবড় হামলা এবং এক রাতে এত মৃত্যু কোন কালেই হয়নি। ইখতিয়ার মহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির হাতে যখন আজকের বাংলাদেশের চেয়ে বৃহত্তর বাংলা বিজিত হয় তখনও এতবড় হামলা এবং এত মৃত্যু হয়নি।সে হামলাটি হয়েছিল মাত্র ১৭ জন সৈনিক নিয়ে। প্রশ্ন হলো, হাসিনার কথা মত শাপলা চত্ত্বরে যদি কোন কিছু না হয়ে থাকে তবে কেন এত সৈন্য,এত পুলিশ,এত র্যাব ও এত অফিসার সেখানে হাজির হয়েছিল? তবে কি তারা শাপলা চত্ত্বরে ঘোড়ার ঘাস কাটতে জমা হয়েছিল?
গত ২৯ই আগষ্ট চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি শুধু আপনাদের জন্য কাজ করি। আমার বাবা এ দেশের দুঃখী মানুষের জন্য সারা জীবন কাজ করেছেন।” এটি কি কম মিথ্যাচার? চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই বলার পর একই জনসভায় তিনি জনগণের কাছে নৌকায় ভোট চেয়েছেন।চাতুরি আর কাকে বলে? হাসিনা চান নিরংকুশ ক্ষমতা। চান লুটপাটের নিরংকুশ স্বাধীনতা। তার পিতাও চাইতেন নিরংকুশ ক্ষমতা। নিছক ক্ষমতা লাভের স্বার্থেই তিনি একাত্তরে ভয়ানক যুদ্ধ ডেকে এনেছিলেন। জনগণকে তিনি গণতন্ত্র, অর্থনৈতীক উন্নয়ন, স্বাধীনতার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ মুজিবের কাছে কোন কালেই এসব গুরুত্ব পায়নি। গুরুত্ব পেয়েছে শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিজ হাতে নেয়ার বিষয়টি। সে লক্ষ্যে তিনি এমনকি ভারতের ন্যায় বিদেশী শক্তির সাথে হাত মিলিয়েছেন। এবং ভারতীয় সেনা বাহিনীকে বাংলাদেশের মাটিতে ডেকে আনেন।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আজীবন নিজ হাতে রাখার স্বার্থেই মুজিব গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়ে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এবং বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিলেন জনগণের মুখ থেকে। গড়ে তুলেছিলেন নিজের সাঙ্গপাঙ্গদের দূর্নীতির রাজত্ব। সে দূর্নীতির কারণেই তার শাসনামলে নেমে এসেছিল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। কয়েক লাখ দুঃখী মানুষকে তিনি মৃত্যুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সৃষ্টি হয়েছিল অসংখ্য জাল পড়া বাসন্তি। বাংলাদেশের গরীব মানুষদের জন্য এই ছিল মুজিবের দান। শেখ হাসিনাও চান তার পিতার ন্যায় নিরংকুশ প্রশাসনিক ক্ষমতা। চান লুটপাটের নিরংকুশ অধিকার। তারা শাসনামলে ইতিমধ্যেই রাষ্টীয় ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে। বহু হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে দেশের শেয়ার মার্কেট থেকে। লুটপাট হচ্ছে রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের বাজেট থেকে। লুটপাটের সে রাজত্ব নিজ হাতে রাখার স্বার্থেই তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথাকে বিলুপ্ত করে নির্বাচন পরিচালনার দায়দায়িত্ব নিজ হাতে রাখার ব্যবস্থা করেছেন। অথচ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুটি ছিল বহু আন্দোলনের পর একটি মীমাংসিত বিষয়। সে ইস্যুকে আবার বিতর্কিত করে দেশকে তিনি এক রক্তাক্ষয়ী সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এমন একটি আন্দোলনে জনগণের জানমালের কোরবানীর সাথে দেশের অর্থনৈতীক ক্ষয়ক্ষতি কি কম। তিনি নিজে জানেন¸বাংলাদেশের মত দেশে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা কোন দলীয় সরকারের হাতে থাকলে সে দলকে নির্বাচনে পরাজিত করা দুরুহ। সে কারণেই নির্বাচনে পরাজিত করা সম্ভব হয়নি এমনকি স্বৈরাচারি এরশাদের ন্যায় জনপ্রিয়তাহীন এক চিহ্নিত দুর্বৃত্তকেও।শেখ হাসিনা নিজেও সেটি বুঝতেন। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে তিনি নিজেও আন্দোলন করেছিলেন। অথচ আজ নিজের বিজয়কে সুনিশ্চিত করার স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথাকে তিনি বিলুপ্ত করলেন এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্তৃত্ব নিজ হাতে নিলেন।বিরোধী দল কি এতই বোকা যে তার এ কুটকৌশল তারা বুঝে না? তিনি নিজে যখন দলীয় সরকারকে অতীতে মেনে নেননি, অন্যরাই বা কেন মেনে নিবে? লুটের লোভ তার মাঝে এতই অধিক যে,১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিদায়পর্বে তিনি প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত বাসভবনকে নিজ নামে লিখে নেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। অথচ আজ বলছেন তিনি পাওয়ার জন্য রাজনীতি করেন না। এসব মিথ্যাচারিতা নিয়েও তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত।
মিথ্যাচারিতায় বাংলাদেশের বিচারকগণ
শুধু মুজিব বা হাসিনার বিরুদ্ধে নয়, তথ্য প্রযুক্তি আইনে বিচার হওয়া উচিত এবং সে বিচারে শাস্তি হওয়া উচিত বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের বিচারকদেরও। মিথ্যাচারিতায় তারা নতুন মাত্রার সংযোগ ঘটিয়েছেন। উদাহরণ দেয়া যাক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারকগণ মাওলানা আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত রায়ের তৃতীয় পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর্মি ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। তারা আরো লিখেছেন, পাক আর্মির হাতে ৪ লাখ নারী ধর্ষিতা হয়েছে। তিরিশ লাখের মিথ্যাচার নিয়ে এ নিবন্ধে পূর্বে আলোচনা হয়েছে। প্রশ্ন ৪ লাখ ধর্ষণের সংখ্যা নিয়ে। তাদের দেয়া এ তথ্যটিও যে কতটা মিথ্যাপূর্ণ সেটি কি প্রমাণ করা এতই কঠিন? একাত্তরে বাংলাদেশের পরিবারগুলোতে গড় সদ্স্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৪জন। ফলে সাড়ে সাত কোটি মানুষের দেশে প্রায় ১ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার পরিবার ছিল। এদের মাঝে ৪ লাখ ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে গড়ে প্রতি ৪৭টি পরিবারের মাঝে অন্তত একটি পরিবারে ধর্ষিতা মহিলা থাকার কথা।যে গ্রামে ২০০টি পরিবারে বাস সে গ্রামে কমপক্ষে ৪টি পরিবারে ধর্ষিতা নারী থাকতে হবে। সে গ্রামে আর্মির প্রবেশ না ঘটলে পাশের গ্রাম থেকে কমপক্ষে ৮ টি পরিবারে ধর্ষিতা নারী থাকতে হবে, নইলে ৪ লাখ ধর্ষিতার সংখ্যা পুরণ হবে না। একাত্তরে বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই গ্রামে বাস করতো। আর সেনা বাহিনীর পক্ষে প্রায় ৭০ হাজার গ্রামের মাঝে ১০ হাজার গ্রামেও কি পৌছা সম্ভব হয়েছে? ফলে সহজেই ধারণা করা যায়, দেশের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ পরিবারের জীবনের পাক বাহিনীর সাক্ষাৎ মেলেনি। তাই ৪ লাখ ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে হলে সেগুলো বেশী বেশী হতে হবে জেলা ও উপজেলা শহরে বা সীমান্তবর্তি গ্রামগুলোতে –যেখানে সেনাবাহিনীর লোকদের অবস্থান ছিল বেশী।ফলে ধর্ষিতা পরিবারের সংখ্যা সেখানে প্রতি ৪৭য়ে একজন নয়, বরং অনেক বেশী হারে হওয়ার কথা। প্রতি ১০ বা ২০টি পরিবারে কমপক্ষে একজন ধর্ষিতা নারী থাকার কথা। কিন্তু সেটি কি বিশ্বাসযোগ্য?
প্রশ্ন হলো, যুদ্ধের ময়দানে যারা শত্রুর সামনে দাঁড়িয়ে প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করে তাদের মনে কি ধর্ষণের কামনা জাগে? তাদের প্রতিটি মুহুর্তের ব্যস্ততা তো প্রাণ বাঁচিয়ে শত্রুকে ঘায়েল করার। সে ব্যস্ততার মাঝে মনের গভীরে বার বার উঁকি মারে পরিবারের আপনজনদের স্মৃতি। একাত্তরের ৯ মাসে ৪ লাখ ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে প্রতিদিন গড়ে ২৭৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে হয়। এটি কি বিশ্বাসযোগ্য? দেশে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেই তো সেটি বিশাল খবর হয়। ধর্ষণ নিয়ে এমন ধারণা একমাত্র তাদের মগজেই আসে যারা জীবনে কোন দিনই কোন রণাঙ্গনে যুদ্ধে নামেনি। অথচ সে বিশাল মিথ্যা তথ্যটি নিজেদের রায়ে সংযোজিত করলো ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারকগণ। প্রশ্ন হলো, এটি কি কম শাস্তিযোগ্য অপরাধ? বিচারদের শপথ নিতে হয়,তারা সদা সত্য কথা বলবেন ও ন্যায়ের পক্ষে থাকবেন এবং কখনোই মিথ্যা বলবেন না। তাই বিচারের রায়ে যে কোন মিথ্যা বলাটি শপথভঙ্গ করার মত গুরুতর অপরাধ। এমন অপরাধে বিচার-আচার অবিচারে পূর্ণ হয়। আওয়ামী বাকশালীদের পক্ষে থেকে প্রচারিত মিথ্যার পক্ষে কলম ধরা বা লাঠি ধরার সামর্থ এসব বিচারকদের বিশাল। কিন্তু সত্যের পক্ষ নেয়ার সামর্থও কি তাদের আছে? কারণ সে জন্য তো সত্য-মিথ্যার তারতম্য করার ন্যূনতম সামর্থটুকু থাকতে হয়। ন্যায়-অন্যায় নিয়ে বিবেচনার সামর্থ একজন সাধারণ মানুষের যতটা থাকে তাদের তো সে সামর্থটি অনেক বেশী থাকতে হয়। কিন্তু তারা নিজেরাই যদি মিথ্যার স্রোতে ভেসে যান তবে তারা ন্যায় বিচার করবেন কীরূপে? কিন্তু সে সামর্থ থাকলে কি তারা একাত্তরে ৩০ লাখ খুন আর ৪ লাখে ধর্ষণের মিথ্যা তথ্যটি নিজেদের রায়ে উল্লেখ করতে পারেন? বাংলাদেশের আদালতগুলো কাদের দ্বারা অধিকৃত সেটি কি এরপরও বুঝতে বাঁকি থাকে?
শাস্তি হোক সকল মিথ্যাচারির
মিথ্যাই সব পাপের মূল। মিথ্যা পরিত্যাগ করলে অন্যসব পাপ পরিত্যাগ করাও তখন সহজ হয়ে যায়। নবীজী (সাঃ) এটিকে সর্বপাপের মা বলে আখ্যায়ীত করেছেন। পাপ ও দুর্বৃত্তির জন্ম হয় মিথ্যার গর্ভ থেকেই। মিথ্যাচারিদের কারণেই সত্যবাদী সৎ লোকদের রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ধর্মকর্ম কঠিন হয়ে পড়ে। তখন পরাজিত হয় আল্লাহর শরিয়তি বিধান। মিথ্যাবাদীদের লড়াই তো শয়তানের রাজনীতির বিজয় আনার। শয়তান তো তাদের ঘাড়েই সওয়ার হয়ে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ পরিচালনা করে। মুজিব ও হাসিনার রাজনীতির প্রতি দেশী-বিদেশী কাফেরদের এজন্যই তো এত সমর্থন। অথচ নবীজী (সাঃ)র জীবনে লাগাতর জিহাদটি ছিল আল্লাহর জমিনকে মিথ্যাচারিদের দখলদারি থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে। রাজনীতি, সংস্কৃতি, প্রশাসন ও বিচার-আচারের উপর মিথ্যাচারিদের যে দেশে যত বেশী দখলদারি,সে দেশ দুর্বৃত্তিতে ততই বিশ্বরেকর্ড গড়ে। বাংলাদেশ যে দুর্বৃত্তিতে বিশ্বে ৫ বার প্রথম হওয়ার রেকর্ড গড়েছে সেটি দেশের ভূপ্রকৃতি বা জলবায়ুর কারণে নয়, বরং দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, ব্যাবসা-বাণিজ্য ও আইন-অদালত মিথ্যাচারিদের হাতে অধিকৃত হওয়ায়।তাই দুর্বৃত্তি ও অপরাধ দমনের স্বার্থে প্রতিটি সভ্য দেশেই মিথ্যাকথন শাস্তি যোগ্য অপরাধ রূপে গণ্য হয়। কিন্তু বাংলাদেশে আজ অবধি কাউকে কি শুধু মিথ্যা বলার জন্য আদালতে তোলা হয়েছে? কারো কি একদিনের জন্যও জেল হয়েছে? কোন মন্ত্রী বা এমপিগণ কি তাদের চাকুরি বা পদমর্যাদা হারিয়েছে? বরং ঘটেছে উল্টোটি। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর মিথ্যাচারিকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী রূপে প্রতিষ্ঠা দেয়া হচ্ছে। এভাবে কি দেশ থেকে মিথ্যার নির্মূল হয়? নির্মূল হয় কি দুর্বৃত্তি?
জনাব আদিলুর রহমান খানকে হাজতে তোলা হয়েছে এজন্য নয় যে,তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। বরং এ জন্য যে,”অধিকার”এর দেয়া তথ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে,হাসিনা ভয়ানক মিথ্যাচারি।এতে ক্রোধ গিয়ে পড়েছে আদিলুর রহমানের উপর। জনাব আদিলুর রহমান খান যদি সরকারের হাসিনার সাথে সুর মিলিয়ে বলতেন,শাপলা চত্ত্বরে কোনরূপ গুলি চলেনি এবং সেখানে কেউ মারাও যায়নি তবে তাকে যে পুরস্কৃত করা হতো -তা নিয়ে কি সন্দেহ আছে? বাংলাদেশে এরূপ মিথ্যাচারিদের বিচরন শুধু দেশের রাজনীতি ও প্রশাসন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে নয়,বরং সেটি দেশের আদলতগুলোতেও। দেশের কল্যাণ তাই শুধু চোর-ডাকাত ও খুনি-লম্পটদের শাস্তি দেয়াতে নয়, বরং এৃসব মিথ্যাচারিদের শাস্তি দেয়াতেও। বাংলাদেশে সে কাজটি যত দ্রুত শুরু হয় ততই দেশের মঙ্গল। এবং সেটির শুরু হওয়া উচিত শেখ মুজিব ও হাসিনাকে আদালতের কাঠগড়ায় খাড়া করার মধ্য দিয়ে। তাতে অন্যরাও তখন উচিত শিক্ষা পেত। মিথ্যাবলাও যে শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ সেৃটি সাধারণ মানুষও তখন বুঝতে পারতো। ৩১/০৮/২০১৩
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018