বাংলাদেশে মুরতাদদের এজেন্ডা ও মুরতাদ-তোষণের রাজনীতি
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on July 7, 2019
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
মুরতাদদের মনকষ্ট
প্রতিটি দেশে যেমন ঈমানদার থাকে, তেমনি কাফের, মুনাফিক ও মুরতাদও থাকে। তাদের যেমন বিভিন্ন বিশ্বাস থাকে, তেমনি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক এজেন্ডাও থাকে। বাংলাদেশও তা থেকে ভিন্নতর নয়। দেশের রাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি, ও সমাজ কোনদিকে এগুবে বা পিছিয়ে যাবে -সেটি নির্ভর করে কাদের হাতে ন্যস্ত রাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রশাসন এবং কি তাদের নীতি। তাই যারা দেশ নিয়ে ভাবে তাদের শুধু দেশের আলো-বাতাস, জলবায়ু, গাছপালা বা পশুপাখি নিয়ে ভাবলে চলে না, ভাবতে হয় বিভিন্ন বিশ্বাস ও এজেন্ডার মানুষদের নিয়েও। এ প্রসঙ্গে মুরতাদগণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। তাদের রয়েছে সুস্পষ্ট চিন্তাভাবনা ও রাজনৈতিক এজেন্ডা।তাদের সংখ্যাটিও কম নয়। কি তাদের চিন্তাভাবনা ও এজেন্ডা -সেটি তাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে শোনা যাক তাদের নিজেদের প্রথমসারির একজনের জবানবন্দি। দৈনিক জনকন্ঠের ১৭ই মার্চ,২০১৩ সংখ্যায় আওয়ামী ঘরানার অন্যতম বুদ্ধিজীবী মুনতাসির মামুন মনের প্রচন্ড ক্ষেদ নিয়ে লিখেছিলেন, তাকে কেন নাস্তিক ও মুরতাদ বলা হয়।তার অভিযোগ,“এ নিয়ে আমাকে কয়েকবার মুরতাদ ঘোষণা করা হলো।..গত দুই দশকে এই ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান আমাদের মুরতাদ ঘোষণা করেছে, জামায়াতীরা বলছে আমরা নাস্তিক।” আল্লামা শফির হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, হেফাজতে ইসলামও তাকে জামায়াতের মত মুরতাদ ও নাস্তিক বলছে। তার কথা,“তা হলে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে জামায়াতের পার্থক্য কী রইল?” তিনি মুরতাদের একটি অর্থ খাড়া করেছেন। বলেছেন, “মুরতাদ মানে কী? ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে ফিরে যাওয়া।” মুরতাদ প্রসঙ্গে উলামাদের মতের ব্যাখা দিতে গিয়ে বলেছেন,“ইসলাম কেউ ত্যাগ করেছে তাকে মুরতাদ বলা ও তার ওপর হামলা করা – এইটি উলেমাদের মত। কোরান বা রাসূলের (স) নয়।” এখানে তিনি আলেমদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ আলেমগণ এমন কিছু বলছেন যা পবিত্র কোরআন-হাদীসে নাই। অর্থাৎ তার ভাষায় আলেমগণ মিথ্যাবাদী। এবং অভিযোগোর সুরে বলেছেন, ‘উলেমাদে’র কাছে আমরা তো দেশ আর ধর্ম ইজারা দিইনি।”
যে কোন আওয়ামী বাকশালীর ন্যায় মুনতাসির মামুনও নিজেকে সেক্যুলার মনে করেন। সেক্যুলারদের প্রতিটি কর্মের মধ্যে থাকে সুস্পষ্ট চেতনা ও এজেন্ডা কাজ করে -সেটি ইহলৌকিক স্বার্থ পূরণ। সে চেতনায় পারলৌকিক স্বার্থপূরণের ইসলাম-সম্মত কোন ভাবনা কাজ করে না। তেমন একটি ভাবনা থাকলে তো তার রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তিতে ইসলামের বিজয় ও এজেন্ডা পূরণে সে সচেষ্ট হতে বাধ্য। তখন সে লক্ষ্যে সে নিজের জানমালের কোরবানীও দেয়। সেক্যুলারিজমের আভিধানিক অর্থ হলো ইহলৌকিকতা। সে ইহলৌকিক ভাবনা নিয়েই তাদের রাজনীতি, এবং তা নিয়েই তাদের সংস্কৃতি ও বুদ্ধিবৃত্তি। প্রতিটি কর্মের মধ্যে সেক্যুলারিস্টগণ এভাবেই নিজেদের দুনিয়াবী স্বার্থসিদ্ধি ও অর্থনৈতীক প্রাপ্তির বিষয়টি দেখেন। আসে তাতে বিনিয়োগ ও মুনাফা তোলার ভাবনা। আসে এ পার্থিব ভূবনে একচ্ছত্র ইজারাদারির ভাবনা। আসে স্বৈরাচারি ও স্বেচ্ছাচারিরূপে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের ভাবনা। স্বার্থলাভ ও অর্থনৈতীক প্রাপ্তি ছাড়া কেউ কোন কাজ কেউ করতে পারে –সেটি তারা ভাবতেও পারে না। শেখ মুজিব নিজেকে সেক্যুলারিস্ট রূপে দাবী করতেন। ফলে রাজনীতিতে তিনি ব্যবাহার করেছেন নিজের সেক্যুলার তথা পার্থিব স্বার্থপূরণের হাতিয়ার রূপে। সে লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশকে তার ইজারাভূক্ত দেশ মনে করতেন। নিজের শাসনামলে সে ইজাদারি তিনি এতটাই প্রবল করতে চেয়েছিলেন যে কাউকে তিনি মাথা তোলার সুযোগ দেননি। ৫ বছরের জন্য সাংসদ নির্বাচিত হয়ে তিনি আজীবনের জন্য প্রেসিডেন্ট থাকার বন্দোবস্ত করেছিলেন। তার অভিলাষ পূরণে সংবিধান পাল্টাতে হয়েছিল, কিন্তু নিজের খায়েশ পাল্টাননি। এক মুহুর্তের জন্যও তিনি গদী ছাড়তে চাননি। আজীবন গদীতে থাকার স্বার্থে অন্য কাউকে তিনি রাজনীতি, লেখালেখি ও মতপ্রকাশের সুযোগ দিতে তিনি রাজী হননি। সকল বিরোধী দলের রাজনীতিকে তিনি নিষিদ্ধ করেন। নিষিদ্ধ করেন তাদের অফিস, পত্র-পত্রিকা ও বই-পুস্তক। বিরোধী দলীয় নেতাদেরও তিনি কারারুদ্ধ করেন। একই রূপ স্বৈরাচারি চেতনা বাসা বেঁধেছে হাসীনার মাথায়। বাসা বেঁধেছে হাসীনার বুদ্ধিবৃত্তিক ফুট-সোলজার মুনতাসির মামুনের মাথায়। তার আফসোস বাংলাদেশে আমার দেশ, সংগ্রাম ও নয়াদিগন্তের মত পত্রিকাগুলা আজও্র কি করে থাকে? এ পত্রিকাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে তিনি দাবীও রেখেছিলেন। কিন্তু সেটি যে সম্ভব নয় সেটি হাসানুল হক ইনু জানিয়ে দেয়ায় তিনি প্রচন্ড মনকষ্ট পেয়েছেন -সেটিও ফুটে উঠেছে তার নিবন্ধে। তিনি ভূলে যান, এটি শেখ মুজিবের বাকশালী আমল নয়। সে আমলে তারা রাজনীতি, প্রশাসন ও বিচার ব্যাবস্থার পাশাপাশি যেভাবে মিডিয়াকে নিজেদের অধিকৃত ভারত-ভূমিতে পরিণত করেছিলেন সেটি এখন আর সম্ভব নয়। তাকে বাঁকি জীবনটি বাঁচতে হবে এ মনকষ্ট নিয়েই।
ইজারাদারি নয়, ফরজ দায়িত্বপালন
জনকন্ঠে প্রকাশিত প্রবন্ধে তার প্রবল অভিযোগ, দেশ ও ধর্ম নিয়ে ভাবার অধিকার আলেমদের কে দিল? তার বিস্ময়পূর্ণ প্রশ্ন, আমরা তো তাদের হাতে দেশ ও ধর্মকে ইজারা দেইনি! মুনতাসির মামুনের কান্ডজ্ঞান নিয়ে এখানেই বিস্ময়। নিজেকে তিনি ইতিহাসের গবেষক মনে করেন। অথচ তার কথায় ফুটে উঠেছে, ইসলামের ইতিহাসে তিনি কতটা অজ্ঞ। মনে হচ্ছে, ইসলামের ইতিহাস থেকে তিনি কোন পাঠই নেননি। হয়তো নিলেও সেটি জোর করে ভূলে থাকতে চেয়েছেন। তারা জানা উচিত, দেশ ও ধর্মের পক্ষে কথা বলার জন্য মুসলমান কারো কাছ থেকে অনুমতি নেয় না। এটা তার ঈমানী দায়বদ্ধতা। সেটিই তার প্রকৃত ধর্ম। সে দায়বদ্ধতা থেকেই শুরু হয় জালেম শাসকের বিরুদ্ধে ঈমানদারের জিহাদ। সে মু’মিনের জীবনে জিহাদ নেই, তার অন্তরে কোন ঈমানও নেই। এজন্যই প্রাথমিক কালের মুসলমানদের প্রত্যেকেই ছিলেন মোজাহিদ। শহীদ পয়দা হয়েছে প্রায় প্রতি ঘর থেকে। মু’মিনের দায়বদ্ধতা শুধু ইসলামের পক্ষে কথা বলা নয়, বরং জালেমের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি ও জানমালের বিনিয়োগ। এবং তাতে সামান্যতম কার্পণ্য হলে সে ব্যক্তি আর মুসলমান হাকে না। প্রকৃত মুসলামান তাই শুধু নামায-রোযা বা হজ-যাকাত পালন করে না। বরং ইসলামের বিপক্ষ শক্তির পূর্ণ পরাজয় ও ইসলামের শরিয়তি হুকুমের পূর্ণ প্রতিষ্ঠার কাজে জানামালেরও পূর্ণ বিনিয়োগ করা। সে বিনিয়োগে আপোষহীন হওয়ার মধ্যেই তাঁর ঈমানদারি।
মুনতাসির মামুন তার প্রবন্ধে বেছে বেছে কিছু কোরআনের আয়াত পেশ করেছেন। দেখাতে চেয়েছেন, ইসলামে কোন যুদ্ধবিগ্রহ নাই। রক্তক্ষয় ও হানাহানি নাই, এক অনাবিল শান্তির ধর্ম। তাঁর কাছে আল্লাহর পথে জিহাদ হলো মহা অশান্তি। ফলে তার ধারণা, ইসলাম অতীতে প্রধান বিশ্বশক্তি রূপে আবির্ভূত হয়েছিল যুদ্ধবিগ্রহ না করেই। অবশ্যই ইসলাম এ পৃথিবীতে একমাত্র শান্তির ধর্ম। তবে সে শান্তির অর্থ, দুর্বৃ্ত্ত শয়তানি শক্তির মুখে চুমু খাওয়া নয়, তাদের কাছে পোষমানা জীবনও নয়। মুসলমান শান্তি আনে দুর্বৃত্তদের অধিকার থেকে রাজনীতি, অর্থনীতি, সং,স্কৃতি ও আইন-আদালত মূক্ত করার মধ্য দিয়ে। এ কাজ বিশাল কাজ। একাজ মু’মিনের অর্থ, শ্রম ও রক্ত চায়। নবীজীর সাহাবীদের শতকরা ৭০ ভাগের বেশী তো শহীদ হয়ে গেছেন একাজে। এবং সে কোরবানী পেশের জন্যই মু’মিন ব্যক্তি মাত্রই আল্লাহর কাছে চুক্তিবদ্ধ। সে চুক্তির কথাটি পবিত্র কোরআনে এসেছে এভাবেঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ ঈমানদারদের থেকে তাদের জানমাল জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে, অতঃপর সে লড়াইয়ে তারা শত্রুদের যেমন হত্যা করে তেমনি নিজেরাও নিহত হয়।”–(সুরা তাওবা, আয়াত ১১১)।পরবর্তী আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর সাথে এমন বিক্রয়চুক্তির সমাধার জন্য ঈমানদারকে খুশি করতে বলেছেন। কারণ এর যে উত্তম চুক্তি কোন ব্যক্তির জীবনে হতে পারে না। মুসলমানের জীবনে মূল মিশনটি এভাবেই আল্লাহতায়ালা নিজে নির্ধারিত করে দিয়েছেন। এক সময় সমগ্র আরবভূমির উপর কাফের শক্তির দখলদারি ছিল। সে দখলদারির অবসান ঘটানো ছাড়া ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা বাড়ানো কি সম্ভব ছিল? ফলে তখন জিহাদ অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল প্রতিটি মুসলমানের উপর। তখন লড়াইটি ছিল শয়তানি শক্তির সে দখলদারি থেকে আরবভূমিকে মূক্ত করার। আল্লাহর দ্বীনের বিজয়ে সে কোরবানির বরকতেই তো তাঁরা সমগ্র মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। আল্লাহতায়ালা তাদের ফেরেশতাকূলে গর্ব করেন। আজও সে পথ ধরেই মুসলমানগণ পুণরায় গৌরব অর্জন করতে পারে। গৌরবের সে পথটি যেমন বেশী বেশী মানব-রপ্তানী বা গার্মেন্টস-উৎপাদন নয়, তেমনি বেশী ধান-মাছ, গরু-ছাগল বা চা-পাট উৎপাদনও নয়। প্রশ্ন হলো, সে জিহাদে নিজেদের অর্থদান, শ্রমদান ও প্রাণদানে মুসলমানগণ আরবের কাফেরদের থেকে কি এজাজত নিয়েছিলেন?
অধিকৃত দেশঃ প্রতিরক্ষা পাচ্ছে পাপীরা
বাংলাদেশ আজ ইসলামের বিপক্ষ শক্তির হাতে অধিকৃত। ইসলামের এ শত্রুদের এ দখলদারির কারণেই আল্লাহর ভূমিতে আল্লাহর শরিয়তি আইনের প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। বরং প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে ব্রিটিশ কাফেরদের প্রণীত আইন। এ আইনে সূদদান ও সূদগ্রহণ যেমন আইনসিদ্ধ, তেমনি আইনসিদ্ধ হলো ব্যাভিচার। তাই জনগণের অর্থে প্রতিপালীত বাংলাদেশের পুলিশ ও প্রশাসনের কাজ যেমন সূদী ব্যাংকগুলোকে প্রহরা দেয়া, তেমনি দায়িত্ব হলো পতিতাপল্লির ব্যাভিচারকে পাহারা দেয়া। ফলে জনগণের অর্থে পরিচর্যা ও প্রতিরক্ষা পাচ্ছে জঘন্যতম পাপ। এটি কি কোন মুসলমান ক্ষণিকের জন্যও মেনে নিতে পারে? দেশের সংবিধানে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার দূরে থাক তার প্রতি আস্থার ঘোষনাটিও বিলুপ্ত হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমের দেশে আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের এমন দখলদারি কি কোন মুসলিম মেনে নিতে পারে? ইসলামপন্থিদের নির্মূলে আল্লাহর শত্রুগণ রাষ্ট্রীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বিচারকদের ব্যবহার করছে। এরা পরিণত হয়েছে সরকারে বিশ্বস্থ লাঠিয়ালে। ফলে বাংলাদেশের মুসলমানদের আজকের লড়াই যেমন ঈমান বাঁচানোর লড়াই, তেমনি ইসলাম বাঁচানোর লড়াই। এ লড়াই ইসলামের বিপক্ষ শক্তির দখলদারি বিনাশের লড়াই। আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সাথে এ লড়াইয়ে কোন ঈমানদার ব্যক্তি কি নীরব ও নিষ্ক্রীয় থাকতে পারে? এবং এ লড়াইয়ে নামার জন্য মুনতাসির মামুনদের মত ব্যক্তিদের থেকে অনুমতি নিতে হবে কেন? দেশকি তাদের ইজারায়? এমন লড়াইয়ের হুকুম তো দিয়েছেন মহান আল্লাহ, যা বর্নিত হয়েছে পবিত্র কোরআনের ছত্রে ছত্রে। নবীজী(সাঃ)র মহান সাহাবাগণ যেভাবে বার বার জিহাদ করেছেন এবং জানমালের বিপুল কোরবানী দিয়েছেন সেটি কি শুধু নামায-রোযা, হজ-যাকাত পালনের জন্য? লক্ষ্য ছিল কি শুধু মসজিদের প্রতিষ্ঠা?
ইসলামের পূর্বে আরবে কাফেরদের একচ্ছত্র ইজারাদারি ছিল। ইসলামের শরিয়তী বিধানের প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠা দুরে থাক, প্রকাশ্যে নামায আদায় করাও তখন কঠিন ছিল। নবীজী (সাঃ) তাদের সে আধিপত্যের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, ফলে তাদের কাছে তিনি চিহ্নিত হন বিদ্রোহী রূপে। কাফেরদের দরবারে এটাই ছিল নবীজী(সাঃ)র বড় অপরাধ। মক্কার কাফেরদের অত্যাচারে নবীজী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবাদের মক্কা ছেড়ে মদিনায় আশ্রয় নেন। অবশেষে সে মদিনাতেও তাঁকে শান্তিতে থাকতে দেয়া হয়নি। খন্দকের যুদ্ধে তো আরবের সকল কাফের গোত্র মহাজোট বেধে মদিনার উপর হামলা করেছিল। অবশেষে ইসলামই বিজয়ী হয়েছে। একই রূপ ঘটনা ঘটেছে হযরত ইব্রাহীম(আঃ) ও হযরত মূসা (আঃ)র সাথে। ফিরাউনের দরবারে হযরত মূসা (আঃ) যখন দ্বীনের দাওয়াত পেশ করেন তখন সে দাওয়াত ফিরাউনের ভাল লাগেনি। হযরত মূসা (আঃ) ও তাঁর অনুসারিদের হত্যায় ফিরাউন সমুদ্র পর্যন্ত ধাওয়া করেছিল। আল্লাহতায়ালা বাঁচিয়ে দেন হযরত মূসা (আঃ) ও তাঁর অনুসারিদের এবং ডুবিয়ে হত্যা করেন ফিরাউন ও তার বাহিনীকে। আজও বাংলাদেশের সেই একই সনতন দ্বন্দ। দ্বন্দ এখানে ইসলামের অনুসারিদের সাথে ইসলামের বিপক্ষশক্তির। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইসলামের সে বিপক্ষশক্তি শুধু অমুসলিম ভারতীয় কাফেরশক্তি নয়, তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে মুনতাসির মামুন, শাহরিয়ার কবির, জাফর ইকবাল, আনোয়ার হোসেন, আনিসুজ্জামানের ন্যায় বহু মুসলমান নামধারি বুদ্ধিজীবীরা। যোগ দিয়েছে সকল ভারতপন্থি রাজনীতিবিদেরা। একাত্তরের প্রজন্মের নামে সম্প্রতি শাহবাগে যে নাটক অনুষ্ঠিত হলো তা কি তাদের সে ইসলামবিরোধী চরিত্রটি প্রকাশ করে দেয়নি? নমরুদ, ফিরাউন ও মক্কার কাফেরদের ন্যায়ও তারা তো ইসলামপন্থিদের রাজনীতি ও ক্ষমতা নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দিয়েছিল। এ জীবগুলো তো ঘোষণা দিয়েছিল ইসলামপন্থি রাজাকারদের রক্তমাংস দিয়ে তারা সকাল বিকাল নাশতা করবে। তবে তাদের আক্রোশ শুধু দেশের ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে ছিল না, মূল আক্রোশ তো ছিল মহান আল্লাহতায়ালা ও তাঁর মহান রাসূলের বিরুদ্ধে। অতি অশ্লিল ও অশ্রাব্য ভাষায় তারা মহানকরুণাময় আল্লাহর বিরুদ্ধে যাচ্ছে লিখেছে। লিখেছে নবীজী (সাঃ)র স্ত্রীদের বিরুদ্ধেও। সুবোধ সন্তান কি তার পিতার বিরুদ্ধে গালিগালাজ সহ্য করতে পারে? সে কি গালিদাতার বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়বে না? নইলে সে যে পিতার সুযোগ্য সন্তান তার প্রমাণ হয় কীরূপে? আর এখানে গালি দেয়া হয়েছে মহান রাব্বুল আ’লামীন ও তাঁর মহান রাসূলের বিরুদ্ধে। ব্লগারদের এমন অপকর্মের কথা শোনার পরও যদি কোন ঈমানদার রাস্তায় প্রতিবাদে না নামে তবে তাঁর মধ্যে যে ঈমান আছে সেটি কীরূপে বোঝা যাবে? অথচ এ নিকৃষ্ট কুৎসিত জীবগুলোকেই মাথায় তুলেছেন শেখ হাসিনা ও তার তল্পিবাহক এক পাল বুদ্ধিজীবী। শেখ হাসিনা তো নিহত ব্লগার রাজীবকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের শহীদ রূপে ঘোষণা দিয়েছেন। ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের দূষমনি এরপরও কি গোপন থাকে? হাজার বার হজ বা তাবলিগ জাময়াতের দোয়ার মজলিসে ধর্না দিয়েও কি শেখ হাসিনা ও তার সরকার আল্লাহর বিরুদ্ধে দুষমনি গোপন রাখতে পারে? মুনতাসির মামুনের অভিযোগ, কেন ব্লগারদের মুরতাদ বলা হয়? প্রশ্ন হলো,তবে কি এমন দুর্বৃত্ত জীবগুলোকে ঈমানদার বলা হবে?
মুনতাসির মামুনের হজ ও লাব্বায়েক
জনকন্ঠে প্রকাশিত প্রবন্ধে মুনতাসির মামূন নিজের হজ করার কাহিনী তুলে ধরেছেন। কিন্তু এটি কি কোন ব্যাপার হলো? হজ তো বহু জালেম, বহু ফাসেক, বহু সূদখোর-মদখোর, বহু স্বৈরাচারি এবং ব্যাভিচারিও বার বার করে। কত ঘুষখোর, মদখোর ব্যাভিচারিও তো মাথায় টুপি লাগায়। দাড়িও রাখে। তাতে কি তার আল্লাহভীতি বা ধর্মপরায়নতা বাড়ে? ঈমানের প্রকৃত যাচাই হয় ব্যক্তির রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে। ঈমান যাচাই হয়, লড়াইয়ের ময়দানে ব্যক্তিটি কোন পক্ষে লাঠি ধরলো তা থেকে। কতো দাড়ি টুপিধারি ব্যক্তিই তো আজ ইসলামের শত্রুদের সাথে মিশে ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কত মুসলিম নামধারি ব্যক্তিই তো অতীতে ব্রিটিশ ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের বাহিনীতে যোগ দিয়ে মুসলিম ভূমিতে মুসলিম হত্যা করছে। প্রশ্ন হলো, মুনতাসির মামুন হজ করে আসার খবর বয়ান করলেও বাংলাদেশে ইসলামের বিপক্ষ শক্তির দখলদারি বিলোপের যে চলমান লড়াই, সে লড়াইয়ে তিনি কি একটি দিনও ইসলামের পক্ষে একটি কথা লিখেছেন বা ময়দানে নেমে একটি বারও আওয়াজ তুলেছেন? হজ তো হযরত ইব্রাহীম (আঃ)র সূন্নত। তাঁর সে মহান সূন্নতটি আল্লাহর প্রতি হুকুমে লাব্বায়েক তথা আমি হাজির বলা। যখন তার একমাত্র শিশু পুত্র ইব্রাহীমকে কোরবানী করার নির্দেশ এলো তখনও তিনি লাব্বায়েক বলেছেন। আজ বাংলাদেশের মাটিতে যারা ইসলামের পক্ষে লড়াই করছেন তারা তো সে লড়াই করছেন আল্লাহর দ্বীনের বিজয় আনার লক্ষ্যে। অথচ মুনতাসির মামুন তো লাব্বায়েক বলছেন ইসলামের প্রতিষ্ঠা রুখার অঙ্গিকার নিয়ে। আনুগত্য এখানে শয়তানের। ফলে একবার নয়, হাজার বার হজ করলেও সে হজের কি সামান্যতম মূল্য থাকে? এমন হজ তো সূদখোর, ঘুষখোর ও ব্যাভিচারির নামায-রোযার ন্যায়। নবীজী (সাঃ) পিছনে কত মুনাফিক বছরের পর বছর নামায পড়েছে। কিন্তু তাতে কি তাদের আদৌ কোন কল্যাণ হয়েছে। কল্যাণ তো তারাই পেয়েছে যারা আল্লাহর দ্বীনের প্রতিষ্ঠায় আল্লাহর সাহায্যকারি হয়ে রণাঙ্গণে নেমেছে এবং কোরবানি পেশ করেছে। পবিত্র কোরআনে তো সুস্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারি হয়ে যাও” –(সুরা সাফ আয়াত ১৪)। লক্ষ্য এখানে আল্লাহর দ্বীনের বিজয়। বলা হয়েছে,“হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদের এমন এক ব্যবসার কথা বলে দিব যা তোমাদেরকে বেদনাদায়ক আযাব থেকে বাঁচাবে। সেটি হলো তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনো এবং আল্লাহর রাস্তায় জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করো, সেটিই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা বুঝতে পারতে।”-(সুরা সাফ আয়াত ১০-১১)। অথচ মুনতাসির মামুন আনসার রূপে কাজ করছেন ইসলামের শত্রু পক্ষের এবং লড়ছেন ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থে।
কারা মুরতাদ?
মুনতাসির মামুন আরেক মিথ্যা বলেছেন মুরতাদ শব্দের ব্যবহার নিয়ে। জনকন্ঠের নিবন্ধে তিনি লিখেছেন,“আমি বিচারপতি হাবিবুর রহমানের ‘কোরানসূত্র’ ঘেঁটে দেখেছি,সেখানে ‘মুরতাদ’ বলে কোন শব্দ নেই।” তিনি লিখেছেন,“পাকিস্তানে (১৯৭১ সালের আগে) জামায়াত নেতা মওদুদী প্রথম মুরতাদ শব্দটি ব্যবহার শুরু করেন। তার প্রতিষ্ঠার জন্য বিরুদ্ধবাদীদের দমনের ক্ষেত্রে মুরতাদ ঘোষণা করা ছিল এক ধরনের হাতিয়ার। মওদুদী ‘মুরতাদ কী সাজা’ নামে একটি বইও লিখে ফেলেন। এবং সেখানে নানাভাবে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড।” মুনতাসির মামুন যে কতটা মিথ্যাচারি ও ইসলামে মৌলিক বিষয়ে তিনি যে কতটা অজ্ঞ -সেটি প্রমাণিত হয় তার এ লেখনিতে। তিনি বিশ্ববিদ্যাদয়ের একজন শিক্ষক, অথচ মুরতাদ শব্দটি তাকে খুঁজতে হয়েছে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের বইতে। অথচ শব্দটির সাথে বাংলাদেশের বহু স্কুলছাত্র ও মাদ্রাসা ছাত্রও পরিচিত। বিশেষ করে সালমান রুশদি ও তসলিমা নাসরীনের কুফরি আচরণের পর। প্রশ্ন হলো, এরূপ বিদ্যাবুদ্ধি নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করেন কীরূপে? তিনি বলতে চেয়েছেন,পাকিস্তানে মুরতাদ শব্দের প্রথম প্রচলন করেছেন মাওলানা মওদুদী। অথচ প্রকৃত সত্য হলো, ইসলামের নামায-রোযা হজ-যাকাত ও জিহাদের ন্যায় মুরতাদ শব্দটিরও প্রচলন ইসলামের প্রথম যুগ থেকেই। নবীজীর জীবদ্দশাতে কেউ কেউ ইসলাম কবুলের পর ইসলাম ত্যাগ করে কাফেরদের দলে শামিল হয়েছে। নবীজীর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডও ঘোষিত হয়েছে। এ শব্দের আবিস্কারক তাই মাওলানা মওদুদী নন।
দেহ জীবিত থাকলে তা থেকে দৈহীক শক্তির ন্যায় বর্জও উংপাদিত হয়। দেহের স্বাস্থ্য বাঁচাতে হলে সে বর্জকে নিয়মিত বর্জন করতে হয়। মলমুত্র বন্ধ হয়ে গেলে কি দেহ বাঁচে। মুরতাদগণ হলো উম্মাহর দেহের বর্জ। যে সমাজ মোজাহিদ তৈরী হয় সে সমাজে মুরতাদও তৈরী হয়। মুরতাদ তারাই যারা মুসলমান সমাজের মাঝে প্রকাশ্যে আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং শত্রুদের দলে গিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। কোন দেশেই জেলে, তাঁতি,কৃষক বা রাখালকে ধরে সামরিক বাহিনী কোর্ট মার্শাল করে না।দেশের বিরুদ্ধে গাদ্দারির অভিযোগে তাদের প্রাণদন্ড দেয়া হয় না।কোর্টমার্শাল তো ঘটে সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেলায়। সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার ব্যাপারে অধিকাংশ দেশেই বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু সেনাবাহিনীতে একবার যোগ দিলে যেমন উচ্চ মান-মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা আছে তেমনি অলংঘ্যনীয় দায়বদ্ধতাও আছে। সে দায়বদ্ধতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কঠোর শাস্তিও আছে। তেমনি ইসলাম কাউকে মুসলিম হতে বাধ্য করে না। ধর্মে জোর-জবরদস্তি নেই – তার ব্যাখা তো এটাই। কিন্তু মুসলিম হওয়ার অর্থই হলো আল্লাহর সৈনিক রূপে নিজেকে শামিল করা এবং শয়তানি শক্তির পক্ষ থেকে যেখানেই হামলা সেখানে গিয়ে হাজির হওয়া। মুরতাদ হলো তারাই যারা আল্লাহর ও মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তার সাথে গাদ্দারি করে। এবং সে গাদ্দারির শাস্তি মৃত্যদন্ড। নানা ফেরকা ও নানা মাজহাবের উলামাদের মাঝে নানা বিষয়ে মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু ইসলামের মৌল বিষয়ের ন্যায় মুরতাদের সংজ্ঞা ও শাস্তি নিয়ে কোন মতভেদ নাই।
মুরতাদের শাস্তিঃ ইসলাম ও অন্যধর্মে
ইংরেজী ভাষায় ব্লাসফেমি একটি বহুল প্রচলিত শব্দ। এর আভিধানিক অর্থঃ খৃষ্টান ধর্মের উপাস্য ইশ্বরের বিরুদ্ধে অমর্যাদাকর, অবজ্ঞামূলক, আক্রমণাত্মক বা শিষ্ঠাচারবহির্ভূত কিছু বলা বা করা। খৃষ্টান এবং ইহুদী – এ উভয় ধর্মেই এমন অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদন্ড। সে শাস্তির কথা এসেছে ওল্ড টেস্টামেন্টে। বলা হয়েছেঃ “এবং যে ব্যক্তি প্রভুর নামের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি তথা অপমানকর, অমর্যাদাকর বা শিষ্ঠাচার বহির্ভূত কোন কথা বলবে বা কিছু করবে তবে তার নিশ্চিত শাস্তি হলো তাকে হত্যা করা। জমায়েতের সকলে তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করবে।” –(বুক অব লেভিটিকাস ২৪:১৬)। অপর দিকে হিন্দুধর্মে ব্লাসফেমি শুধু ইশ্বরের বিরুদ্ধে কিছু বলাই নয় বরং কোন ধর্মগুরু বা পুরোহিতের বিরুদ্ধে বলাও। হিন্দুধর্মের আইন বিষয়ক গ্রন্থ মনুষস্মতিতে বলা হয়েছে, “যদি নিম্মজাতের কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন পুরোহিতকে অবমাননা করে বা তার সাথে খারাপ আচরণ করে তবে রাজার দায়িত্ব হবে দৈহীক শাস্তি বা প্রাণদন্ড দেয়া যাতে সে প্রকম্পিত হয়। -(মনুষস্মতি ২৪:১৬)।
মুনতাসির মামুন কোরআনে বিভিন্ন আয়াতের উদ্ধৃতি তুলে প্রশ্ন তুলেছেন, কোরআনে কোথায় লেখা আছে মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড? বুঝা যায়, মুনতাসির মামুন এখানে ব্যর্থ হয়েছেন কোরআন ও ইসলামের ইতিহাস বুঝতে। ইসলামে মৃত্যুদন্ড রয়েছে খুনীদের জন্য। মৃত্যদন্ড রয়েছে বিবাহিত ব্যভিচারিদের জন্য। কিন্তু এসব অপরাধীদের চেয়েও বড় অপরাধটি সংঘটিত হয় তাদের দ্বারা যারা নিজেদের গলা থেকে আল্লাহর আনুগত্যের রশি দূরে ফেলে দিয়ে বিদ্রোহের পতাকা হাতে তুলে নেয়। এবং লিপ্ত হয় মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তার বিরুদ্ধে। এরাই কাফেরদের সাথে মিলে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। বাংলাদেশে তো তারা তেমন একটি যুদ্ধই শুরু করেছে। সে যুদ্ধকে তারা বলছে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ। সে যুদ্ধে তারা ভারতের সর্ববিধ সহযোগিতাও পাচ্ছে। কোন মুসলিম এমন যুদ্ধাবস্থায় ঘুমাতে পারে? তাছাড়া মুসলিম উম্মাহ কিছুসংখ্যক খুনি বা ব্যাভিচারের পাপে বিপন্ন হয় না। বিপন্ন হয় যখন মুরতাদদের বিদ্রোহ দেখা দেয়। কোন রাজা কি তার রাজ্যে বিদ্রোহীদের ক্ষমা করেন? সেটি হলে কি তার রাজ্য বাঁচে? তাই আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ও সাহাবাগণ এসব বিদ্রোহীদের নির্মূল করেছেন মৃত্যুদন্ড দিয়ে। নবীজীর প্রসিদ্ধ হাদীস, “মান বাদ্দালা দ্বীনাহু, ফাকতুলুহ’। অর্থঃ যে ব্যক্তি তার দ্বীনকে পাল্টিয়ে নিল, তাকে হত্যা কর”। ফলে পাকিস্তানে মাওলানা মওদূদী মুরতাদ ও মুরতাদের শাস্তির ধারণাটি প্রথমে পেশ করেন –মুনতাসির মামুনের এমন মতের কি কোন ভিত্তি থাকে? পাকিস্তানে আজ যে ব্লাসফেমি আইন সেটির প্রবর্তক কি মাওলানা মওদূদী? সালমান রুশদির বিরুদ্ধে হত্যার ফতওয়া দিয়েছিলেন ইমাম খোমিনী। তিনি কি জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ছিলেন? মুরতাদের শাস্তি যে মৃত্যুদন্ড তা নিয়ে হানাফি, শাফেয়ী, মালেকী ও হাম্বলী ফেকাহর মধ্যে যেমন দ্বিমত নেই, তেমনি দ্বিমত নেই শিয়াদের মাঝেও। বাংলাদেশেও তা নিয়ে কোন নানাদল, নানা ফেরকা ও নানা মাদ্রাসার আলেম উলামাদের মাঝে তিলমাত্র বিভেদ নাই। নানা মুনতাসির মামুন সেটি না জানলে সেটি তার অজ্ঞতার দোষ, এজন্য কোরআন-হাদীসকে দায়ী করা যায় না।
যে কঠোরতা শত্রুর বিরুদ্ধে
ইসলাম শুধু দয়া, ক্ষমাশীলতা ও দানশীলতার কথাই শেখায় না। অন্যায় ও দুর্বৃত্তির বিরুদ্ধে কঠোর হতেও শেখায়। মুসলমান তাই ইসলামের শত্রুদের সাথে আপোষ করতে জানে না। পবিত্র কোরআনে মুসলমানদের বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে, “তাঁরা যেমন পরস্পরে রহমশীল, তেমনি অতি কঠোর কাফেরদের বিরুদ্ধে”। -(সুরা ফাতির)। আর আল্লাহ ও তার দ্বীনের সবচেয়ে বড় শত্রু তো ঘরের শত্রু মুরতাদগণ। হযরত আবু বকরের সময় একদল মানুষ খলিফার ভান্ডারে যাকাত দিতে অস্বীকার করে। হযরত আবু বকর তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ শুরু করেন। ইসলামের এ বিদ্রোহীদের শাস্তি ছিল মৃত্যুদন্ড। তিনি ঘোষণা দেন, “নবীজীর আমলে মানুষ শুধু যাকাতের উঠই দিত না, উঠের সাথে রশিটাও দিন। কেউ যদি কেউ সে রশি দিতে অস্বীকার করে তবে তাকেও রেহাই দেয়া হবে না।”
মহান আল্লাহতায়ালা চান, তাঁর অবাধ্যরা যেন মুসলিম উম্মাহর ভিতরে ভন্ড মুসলিমের বেশ ধরে ঘর না বাঁধে। ভিতরের কীটরূপী শত্রুদের বাড়তে দিলে কোন সমাজই সামনে এগুতে পারে না। তাই পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালার ঘোষণা,“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দেশে ফ্যাসাদ সৃষ্টিতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হলো এই যে, তাদের হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে, অথবা তাদের হস্তপদসমুহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিস্কার করা হবে। এটি হলো তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।”- (সুরা মায়েদা আয়াত ৩৩)। পবিত্র কোরআনে আরো বলা হয়েছে,“অবশ্য তারা যদি তওবা করে, নামায কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে তবে তোমাদের দ্বীনী ভাই (অর্থাৎ মুসলমান)। আর আমি বিধানসমুহ জ্ঞানী ব্যক্তিদের জন্য সবিস্তারে বর্ণনা করে থাকি। আর যদি তারা তাদের শপথ প্রতিশ্রুতির পর (অর্থাৎ ইসলাম গ্রহনের পর)ভঙ্গ করে এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে (এসব) কুফর প্রধানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর। কারণ এদের কোন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে।” -(সুরা তাওবাহ, আয়াত ১১-১২)।
শ্রেষ্ঠজাতি যে কারণে
মুনতাসির মামুন লিখেছেন, “আল্লাহ যেখানে তাঁর প্রিয় বান্দা আমাদের প্রিয় রাসূল (স) সম্পর্কে বলছেন,‘ধর্মের ব্যাপারে তাঁকে দারোগা করা হয়নি সেখানে ‘ইসলামপন্থি’ বলে ব্যক্তিরা কীভাবে ধর্মের দারোগা সাজেন?” ইসলামের বিরুদ্ধে মুনতাসির মামুনের এটি ভয়ানক বিষোদগার। এমন মিথ্যা কথা বলার মধ্যে তার রাজনৈতীক মতলব আছে। তবে এক্ষেত্রে তিনি একা নন। তার সাথে রয়েছে আওয়ামী ঘরানার সকল বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতীক নেতাকর্মী। তারা চান, মুসলিম ভূমিতে ইসলামি চেতনা নির্মূলে ও পাপাচারের বিস্তারে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন, রাজনৈতীক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, মিডিয়া ও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সব কিছুকে তারা ইচ্ছামত ব্যবহার করবেন। ইসলামপন্থিদের রক্তমাংস দিয়ে সকাল বিকাল নাশতা করবেন –সেটিও তো তাদের স্বাধীনতা। সে বাসনার কথা তো শাহবাগের সমাবেশে মহাধুমধামে ঘোষণাও করেছেন। তাদের আব্দার, তাদের সে স্বাধীনতায় বাধা দিতে অন্যরা কেন দারোগার ভূমিকায় নামবে? অথচ তিনি জানেন না যে পাপাচারের নির্মূলে মুসলমান তো আল্লাহর সার্বক্ষণিক পুলিশ। আল্লাহর এ পুলিশগণ কোন বেতনের প্রত্যাশায় কাজ করে না। বরং আল্লাহর দ্বীনের পাহারাদারিতে তারা নিজের জানমাল নিয়ে হাজির হয়। একাজে তারা মহান আল্লাহর কাছে নিজেদের জানমাল অনেকে আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন। এমন মোজাহিদদের নিয়েই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “তোমরাই হলে দুনিয়ার সেই শ্রেষ্ঠ উম্মত যাদেরকে গড়ে তোলা হয়েছে সমগ্র মানুষ জাতির হেদায়াত ও সংশোধনের জন্য। তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দিবে এবং অন্যায় থেকে মানুষকে রুখবে। এবং ঈমান রাখো আল্লাহর উপর। -(সুরা আল ইমরান আয়াত ১১০)।কোন মুসলিম দেশে আল্লাহর দ্বীনের এমন অতন্দ্র প্রহরী থাকতে কি কোন বেতন ভোগী দারোগা-পুলিশের প্রয়োজন আছে?
আক্রোশ ঈমানদারের রাজনীতির বিরুদ্ধে
মুনতাসির মামুনরা ইসলামপন্থিদের বিভক্তি দেখে পুলক পান। আনন্দে ডুগডুগি বাজান। কিন্তু আজ উনাদের প্রচন্ড গোস্সা ইসলামপন্থিদের একতা দেখে। ফলে আদাপানি খেয়ে লেগেছেন, কি করে আবার বিভক্তি গড়া যায়। মুসলমানদের বিভক্ত করো এবং শাসন করো –এটাই তো প্রতি মুসলিম দেশে ইসলামের শত্রুপক্ষের সনাতন কৌশল। একাজে সরকার কিছু ভাড়াটে মৌলানাকে লাগিয়েছে সরকার বিরোধী আলেমদের কাফের ঘোষণায়। মুনতাসির মামুন প্রচন্ড দুঃখ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, মসজিদগুলো কেন ব্যবহৃত হচ্ছে রাজনীতির কাজে? লিখেছেন,“মসজিদে রাজনীতি কখনও চলতে পারে না। প্রতি শুক্রবার ইমামদের যুক্তিবাদীদের বিরুদ্ধে বয়ানের রাজনীতি বৈধ নয়। কোরান বা হাদিসের কোথায় সিয়াসতের স্থান আছে?” প্রশ্ন হলো, ইসলামের উপর যার সামান্য জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তি কি এরূপ কথা বলতে পারে? অথচ এরাই আবার নিজেদেরকে জ্ঞানী ও যুক্তিবাদী বলেন। তবে কি তাদের জ্ঞান ও যুক্তির দৌড় কি এটুকু? প্রশ্ন তুলেছেন, কোরআন হাদীসের কোথায় সিয়াসত? ইমামদের রাজনৈতীক বৈয়ানেও তার আপত্তি। তাদের দাবী, দেশের ঘুষখোর, মদখোর, সূদখোর, ব্যাভিচারি ও বিদেশের দালাল –এরা সবাই রাজনীতি করতে পারবে। কিন্তু মসজিদের ইমামের রাজনীতিতে কোন অধিকার থাকে পারে না। দেশে সেটি হচ্ছে না বলেই তাদের আপত্তি।
অথচ ইসলামের মহান নবী শুধু নামায-কালাম, হজ-যাকাত শিখিয়ে যাননি, তিনি রাজনীতি, প্রশাসন, সমাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি, আইনন-আদালত, ব্যবসা-বানিজ্য ও যুদ্ধবিগ্রহও শিখিয়ে গেছেন। তিনি মানবজাতির জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ –কোরআনে ভাষায় উসওয়াতুন হাসানা। তিনি মহান আল্লাহর পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুকরণীয় আদর্শ রেখে কর্মজীবনের প্রতি অঙ্গণে। সেটি না হলে তাঁর নবুয়তই অপূর্ণাঙ্গ থেকে যেত। তাছাড়া জীবনের প্রতিক্ষেত্রে তিনি যদি কোন আদর্শই রেখে না যান তবে তিনি কি উসওয়াতুন হাসানা তথা সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ হওয়ার মর্যাদা রাখেন? মু’মিনের দায়িত্ব হলো তাঁর জীবনের পথচলার প্রতি কর্মে নবীজী (সাঃ)র আদর্শ খোঁজা এবং তা অনুসরণ করা। মদীনার ১০ বছরের জীনের তিনি ছিলেন পুরাপুরি একজন রাষ্ট্রনায়ক। ছিলন প্রশাসক ও জেনারেল। ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি। বহুমুখি সে কাজের জন্য কি তাঁর কোন সেনানীবাস, সেক্রেটারিয়েট, থানা-পুলিশ বা কোর্ট বিল্ডিং ছিল? সবকিছুর কেন্দ্র ছিল মসজিদ। অথচ মুনতাসির মামুনের অভিযোগ, “কওমি, নন-কওমি,আহলে হাদিস,সাধারণ জঙ্গী,মধ্যপন্থী সব ‘ইসলামী’ আজ মসজিদকে বেছে নিয়েছে রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে। শুধু তাই নয়,জামায়াতীরা মসজিদ থেকে যুক্তিবাদীদের ওপর শুধু ঢিল পাটকেল নয় গুলিও চালায়; হত্যা করে,ভাংচুর করে এবং জায়নামাজ পোড়ায়।” তিনি জানেন না, মসজিদই হলো মোজাহিদদের দুর্গ। সে দুর্গের উপর যখন শত্রুপক্ষের বন্দুক ও ক্যাঁদানে গ্যাসের হামলা হয় তখন সে দুর্গে আশ্রয় নেয়া মোজাহিদগণ যদি মসজিদের কার্পেটের কিছু অংশ পুড়িয়ে ক্যাঁদানে গ্যাসের প্রকোপ প্রশমনের চেষ্টা করে তবে তাতে দোষের কি? মু’মিনের জানের চেয়ে কার্পেট কি বেশী গুরুত্বপূর্ণ? এ অবধি কোন সুবোধ আলেম কি তা নিয়ে কোন আপত্তি তুলেছেন? আপত্তি তো তুলেছে মুনতাসির মামুনের ন্যায় ইসলামে অঙ্গিকারহীন ভারতীয় কাফেরপন্থিদের পক্ষ থেকে। ইসলামের বিজয় নিয়ে যাদের ভাবনা নেই তাদের আবার মসজিদের কার্পেটের প্রতি এত দরদ কেন? তাছাড়া ইসলামের দুর্গ মসজিদ থেকে কাফের-মুরতাদদের বিরুদ্ধে শুধু ওয়াজ নয়, হামলাও হবে তাতেই বা বিস্ময়ের কি আছে?
চাই শক্ত ধাক্কা
মুনতাসির মামুন আরো লিখেছেন,“আমাদের এসব বীর ‘মৌলানাদের’ গিয়ে বলব মক্কায় বা মদীনায় গিয়ে রাজনীতির কথা বলতে।” প্রশ্ন হলো তিনি আলেমদের নসিহত করার কে? কোথায় গিয়ে রাজনীতি বা জিহাদ করতে হবে সে ফরমায়েশ দেয়ারই বা কে? তার উচিত তার নিজের চরকায় তেল দেয়া। তিনি কি জানেন না,মুসলিমদের প্রথম কাজ তার নিজ ঘরকে প্রথমে ঠিক করা? তাছাড়া কে কোথায় জন্ম নিবে সেটি তার নিজের আয়ত্ত্বাধীন বিষয় নয়; সে ফয়সালাটি মহান আল্লাহতায়ালার। বাংলাদেশের মাটিতে জন্ম নেয়া প্রতিটি ঈমানদার ব্যাক্তি হলো এ দেশটির বুকে মহান আল্লাহর খলিফা। খলিফা রূপে বাংলাদেশের বুকে তার এ এপোয়েন্টমেন্টটি এসেছে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে। সেটি জন্মসূত্রে। এখান থেকে অন্যদেশে যাওয়ার অর্থ হলো আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে নির্ধারিত কর্মস্থল থেকে পলায়ন করা। তাই সে কেন সৌদি আরবে যাবে? অন্য কোন দেশেই বা যাবে কেন? নবীজী (সাঃ) ও তার সাহাবাগণ প্রথমে আরবভূমিকে কাফেরদের অধিকৃতি থেকে মুক্ত করেছিলেন। তারপর ছুটেছেন অন্যদেশে। একই সূন্নত পালন করতে হবে বাংলাদেশের মুসলমানদেরও। তাছাড়া বাংলাদেশ আজ হিন্দুস্থানের এজেন্টদের হাতে অধিকৃত। ১৯৭২ সালে ভারত সামরিক বাহিনী তুলে নিলেও তাদের এজেন্টদের তুলে নেয়নি। বাংলাদেশের ইসলামপন্থিদের দায়িত্ব তাই সৌদিআরবে যাওয়া নয়। সেখানে বিপ্লব আনাও নয়। বরং প্রথমে বাংলাদেশকে শত্রুমূক্ত করে পরিপূর্ণ ইসলামি করা। বাংলাদেশের ঈমানদার মুসলমানগণ তো সে কাজই শুরু করেছে। আর এতেই গা-জ্বালা শুরু হয়েছে ইসলামের শত্রুপক্ষের। ইমামদের মসজিদ কেন্দ্রীক রাজনীতি নিয়ে এজন্যই মুনতাসির মামুনের এত আপত্তি। কিন্তু মুসলিমের তো এ লড়াই থেকে পিছু হটার উপায় নেই। সেটি হলে তা হবে আল্লাহ ও ইসলামের সাথে প্রচন্ড গাদ্দারি। সে গাদ্দারির জন্য তাকে পরকালে জবাব দিতে হতে হবে। যখন ইসলামি জনতা জেগে উঠে, একমাত্র তখনই জালেম শাসকের কুরসী হেলে পড়ে। ঈমানদারদের কাজ হলো, হেলে পড়া কুরসীতে সবাই মিলে শক্ত ধাক্কা দেয়া। একমাত্র তখনই গুড়িয়ে যাবে মুরতাদ-তোষণকারি ও ভারতীয় রাজনীতির সেবাদাসীর মসনদ। একমাত্র তখনই ভেসে যাবে বহুদিনের জমা শিকড়শূণ্য সকল আবর্জনা। ২৩/০৩/১৩; নতুন সংস্করণ ৭/৭/২০১৯
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018