মুসলিমদের মূল ব্যর্থতাটি ঈমানদার হওয়ায়

ফিরোজ মাহবুব কামাল

 আজকের মুসলিম জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতাটি নামাজী, রোজাদার, অর্থদানকারী বা হাজী হওয়ায় নয়,বরং সেটি সত্যিকার ঈমানদার হওয়ায়। সে ব্যর্থতাটি সুস্পষ্ট বুঝা হয় মুসলিমদের কর্ম, আচরণ, রাষ্ট্র, রাজনীতি ও আইন-আদালতের দিকে নজর দিলে।  মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো তার ঈমান ঈমানদার হওয়াই হলো মানব জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। ঈমানদার হতে ব্যর্খ হওয়ার অর্থ এ জীবনকে জাহান্নামের আগুনে হাজির করা। তখন এ জীবনে বাঁচাটিই আযাবের কারণ হয়। ঈমানই হলো জান্নাতে চাবি। করুণাময় মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে জান্নাতের সকল আনন্দময় আয়োজন মূলত ঈমানদারদের জন্যই। ঈমানের গুরুত্ব নিয়ে পবিত্র কুর’আনে মহান আল্লাহ তায়ালার বার বার ঘোষণা দিয়েছেন। যেমন সুরা হাদীদের ১৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:

وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦٓ أُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلصِّدِّيقُونَ ۖ وَٱلشُّهَدَآءُ عِندَ رَبِّهِمْ لَهُمْ أَجْرُهُمْ وَنُورُهُمْ ۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَآ أُو۟لَـٰٓئِكَ أَصْحَـٰبُ ٱلْجَحِيمِ

অর্থ: “এবং যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনলো -তারাই হলো সিদ্দিক এবং শহীদ। আল্লাহর কাছে তাদের জন্য রয়েছে প্রতিদান এবং তাদের জন্য রয়েছে নূর। এবং যারা আমার আয়াতকে অবিশ্বাস করলো এবং মিথ্যা বললো, তারাই হলো জাহান্নামের বাসিন্দা।” এ আয়াতটিতে নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতের ন্যায় কোন ইবাদতের উল্লেখ নাই। বরং ঈমানের বরকতে একজন ব্যক্তি আখেরাতে শুধু জান্নাতই পাবে না, বরং সিদ্দিক এবং শহীদের মর্যাদাও পাবে।  বিষয়টি অতি ভাববার বিষয়। ঈমানের গুরুত্ব বুঝার জন্য এ আয়াতটিই যথেষ্ট। অনেকটা একই রূপ বর্ণনা এসেছে সুরা আনকাবুতে ৭ নম্বর আয়াত:   

وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَنُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَيِّـَٔاتِهِمْ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَحْسَنَ ٱلَّذِى كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ

অর্থ: “এবং যারা ঈমানদার এবং নেক আমলকারী -তাদের পাপগুলিকে আমি মিটিয়ে দিব, এবং তারা যা করেছে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দিব।” সুরা কাহাফের ১০৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّـٰتُ ٱلْفِرْدَوْسِ نُزُلًا

অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তাদের আবাসস্থল হলো জান্নাতুল ফেরদৌস।”।উপরিউক্ত দুটি আয়াতে ঈমানের সাথে ব্যক্তির নেক আমলকেও সাফল্যের শর্ত রাখা হয়েছে।  

আগুনের সাথে অবশ্য উত্তাপ থাকে; উত্তাপ না থাকলে সেটিকে আগুন বলা হয় না। তেমনি ব্যক্তির ঈমানের সাথে অবশ্যই থাকে তাঁর ইবাদত, নেক আমল ও জিহাদ। আগুনের পরিচয় পেশে সেটিকে শুধু আগুন বললেই চলে, সাথে উত্তাপের কথাটি উল্লেখ না করলেও চলে। তাই কাউকে ঈমানদার বললে তাকে নামাজী, রোজাদার, হাজী, যাকাত দানকারী ও জিহাদপালনকারী বলার প্রয়োজন পড়ে না। সেগুলি ছাড়া কারো পক্ষে ঈমানদার হওয়াই অসম্ভব। যেমন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরের সাথে জিহাদ না থাকলে যে সত্যিকার ঈমানদার হওয়া যায় না -সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা হুজরাতের ১৫ নম্বর আয়াতে। তেমনি নামাজ-রোজা না থাকলেও কাউকে ঈমানদার বলা যায় না। উপরিউক্ত আয়াতে তাই গুরুত্ব পেয়েছে সত্যিকার ঈমানদার হওয়াটি। মাথা টানলে কান, নাক ও চোখকে আলাদা ভাবে টানতে হয় না, সবগুলি তখন একত্রে আসে। তেমনি ঈমানের সাথে থাকে মুমিনের জীবনের সবগুলি গুণাবলি।

ঈমান হলো ব্যক্তির জীবনে নৈতিক, আদর্শিক ও আধ্যাত্মিক বিপ্লবের মূল পাউয়ার-হাউস। ঈমান বিপ্লব আনে ব্যক্তির চেতনা, চরিত্র, কর্ম  ও আচরণে; সেরূপ বিপ্লব কখনোই বেঈমানের জীবনে ঘটে না। যে সমাজে সমাজে বিপ্লব নাই এবং নির্মিত হয়নি কোন সভ্য রাষ্ট্র, বুঝতে হবে সে সমাজে ঈমানদারদের সংখ্যাটি অতি নগন্য। সংখ্যাগরিষ্ঠতা সেখানে বেঈমানদের। কারণ, প্রকৃত ঈমানদারগণ শুধু নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত নিয়ে খুশি থাকে না; বরং পূর্ণ ভাবে একাত্ম হয় মহান আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডার সাথে। সে জিহাদে অর্থ, মেধা, রক্তের বিনিয়োগ করে সে এজেন্ডার পূর্ণ বিজয়ে। একমাত্র এ পথেই মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রিয় হয় এবং নিজেকে তার মাগফিরাত লাভ ও জান্নাত লাভের যোগ্য রূপে প্রমাণ করে।

পবিত্র কুর’আনে ঘোষিত মহান আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডাটি হলো শয়তানী শক্তির শিকড় কাটা তথা নির্মূল করা। কারণ, সেটি না হলে তাঁর নিজের এজেন্ডা কখনোই বিজয়ী হয় না। মহান আল্লাহ তায়ালার সে এজেন্ডাটির ঘোষণা এসেছে সুরা আনফালের ৭ নম্বর আয়াতে। বলা হয়েছে:وَيُرِيدُ ٱللَّهُ أَن يُحِقَّ ٱلْحَقَّ بِكَلِمَـٰتِهِۦ وَيَقْطَعَ دَابِرَ ٱلْكَـٰفِرِينَ   অর্থ: “এবং আল্লাহ চান তিনি তার কালিমা (কুর’আন) সত্যকে সত্য রূপে প্রতিষ্ঠা দিতে এবং চান কাফিরদের শিকড় কাটতে।” সুরা আনফালের ৮ নম্বর আয়াতে সে এজেন্ডা পুনঃব্যক্ত হয়েছে এভাবে:

لِيُحِقَّ ٱلْحَقَّ وَيُبْطِلَ ٱلْبَـٰطِلَ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُجْرِمُونَ

অর্থ: “তিনি চান হককে হক এবং বাতিলকে বাতিল প্রতিপন্ন করতে -যদিও অপরাধীদের কাছে সেটি অপছন্দের।” প্রকৃত ঈমানদার মাত্রই শয়তানী শক্তির শিকড় কাটার কাজে সে তখন মহান আল্লাহ তায়ালার হাতিয়ারে পরিণত হয়।

শয়তানী শক্তির শিকড় কাটার কাজে প্রতিটি মুসলিম ময়দানে নামবে -সেটিই তাই কাঙ্খিত। সেজন্য প্রতিটি ঈমানদারের উপর ফরজ করা হয়েছে মহান আল্লাহতায়ালার আনসার হওয়া। সে ঘোষণা এসেছে সুরা সাফ’য়ের ১৪ নম্বর আয়াতে: يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُونُوٓا۟ أَنصَارَ ٱللَّهِ كَمَا   অর্থ: “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও।”  কাফিরদের শিকড় কাটার কাজটি না হলে রাষ্ট্রের উপর থেকে তাদের দখলদারী নির্মূলের কাজটি হয়নি। তখন মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্ব, তাঁর শরিয়তী আইন, দুর্বৃত্তির নির্মূল এবং সুবিচার প্রতিষ্ঠার ন্যায় কুর‌’আনে ঘোষিত এজেন্ডা শুধু কুর’আনেই থেকে যায়। বস্তুত বাংলাদেশের মুসলিম দেশগুলিতে সে কাজটিই হয়নি। তাই মুসলিমগণ বিপুল সংখ্যায় নামাজী ও রোজাদার হলেও ব্যর্থ হয়েছে প্রকৃত ঈমানদার হতে।

নবীজী (সা:) তাই তাঁর কাজের শুরুটি মসজিদ নির্মাণ দিয়ে শুরু করেননি; শুরু করছেন ঈমানদার মানুষ গড়ার মধ্য দিয়ে। ঈমানদার মানুষ গড়ার মূল হাতিয়ারটি হলো পবিত্র কুর’আন। এজন্যই মহান আল্লাহ তায়ালা নামাজ-রোজা ফরজ করার আগে কুর’আন বুঝা ফরজ করেছেন। তাই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জীবনে পরিশুদ্ধি আনতে হলে নবীজী (সা:)’র সে সূন্নতটি অনুসরণ করতে হয়; অর্থাৎ প্রথমে ঈমানদার মানুষের সংখ্যা বাড়াতে হয়। ব্যক্তির ঈমান শক্তি জোগায় মহান আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যে। শক্তি জোগায় নামাজ-রোজা, হজ্জ-যাকাতের ন্যায় ইবাদতে। ঈমান হাজির করে যেমন মসজিদের নামাজে, তেমনি জ্ঞানের মজলিসে ও জিহাদের ময়দানে। যে ঈমান ব্যক্তির জীবনে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য গড়ে না, আগ্রহ গড়ে না ইবাদতে এবং হাজির করে না জ্ঞান ও জিহাদের ময়দানে – বুঝতে হবে তার ঈমান আদৌ কোন ঈমানই নয়। সেটি নিরেট বেঈমানী। বেঈমানী এখানে মহান আল্লাহতায়ালার হুকুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নিয়ে বাঁচার। এরূপ বেঈমানী যায় দেখা কোটি কোটি এমন মানুষের জীবনেও যারা নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত পালন। বস্তুত সে বেঈমানীর কারণে বাংলাদেশের মত মুসলিম দেশে পরিশুদ্ধ ব্যক্তি যেমন গড়ে উঠেনি, তেমনি গড়ে উঠেনি পরিশুদ্ধি সমাজ ও রাষ্ট্র। বরং জোয়ার এসেছে দুর্বৃত্তির।  ফলে মহান আল্লাহ তায়ালার সার্বভৌমত্ব, তাঁর শরিয়তী আইন এবং তার রাজনৈতিক, অর্থনৈক ও সামাজিক এজেন্ডা স্রেফ কিতাবে রয়ে গেছে।

অথচ মুমিনগণ যখন বাঁচে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের প্রতি আনুগত্য নিয়ে, তখন মুসলিম দেশে মহান আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডাই শুধু বিজয়ী হয়না, বরং সে আমল মুমিন ব্যক্তিকে জান্নাতে নবী, সিদ্দিক, শহীদ, সৎকর্মশীলদের সঙ্গীতে পরিণত করবে। মুমিনের সে বিশেষ মর্যাদার কথাটি বলা হয়েছে সুরা নিসার ৬৯ নম্বর আয়াতে:

وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّـٰلِحِينَ ۚ وَحَسُنَ أُو۟لَـٰٓئِكَ رَفِيقًۭا

                                                                         

অর্থ: “যারা আনুগত্য করলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের, তারা হবে নবী, সিদ্দিক. শহীদ এবং সৎকর্মশীল লোকদের সহচর -যাদের উপর আল্লাহ বর্ষণ করেছেন নিয়ামত। তারাই তো হলো উত্তম সহচর।”

 

কিন্তু প্রশ্ন হলো, মুসলিম জীবনে কোথায় সে মহান আল্লাহ তায়ালা ও তার রাসূলের প্রতি আনুগত্য? আনুগত্য থাকলে তো আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডার সাথে তারা একাত্ম হতো এবং তাঁর সার্বভৌমত্ব ও আইনকে প্রতিষ্ঠা দিত। জিহাদে নামতো দুর্বৃত্তির নির্মূলে এবং সুবিচারে প্রতিষ্ঠায়। তখন প্রতিষ্ঠা পেত ইসলামী রাষ্ট্র। ঈমানদার ওয়ার অর্থ শুধু মহান আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস নয়; বরং তাঁর সার্বভৌমত্ব, তাঁর শরিয়তী আইন এবং তাঁর এজেন্ডার উপর বিশ্বাস। তাছাড়া মুমিনের ঈমানকে শুধু মহান আল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাসে সীমিত থাকলে চলে না, থাকতে হয় সে আইন ও এজেন্ডাকে বিজয়ী করার তাড়নাসে সাথে থাকতে হয় মহান আল্লাহ তায়ালার দ্বীনের শত্রুদের নির্মূলের তাড়নাসে ঈমান ও তাড়না নিয়েই তো মুমিনের বাঁচা-মরা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাঙালি মুসলিমদের মাঝে মহান আল্লাহ তায়ালার আইন ও তাঁর কুর’আনে ঘোষিত এজেন্ডাকে বিজয়ী করার কোথায় সে তাড়না? শয়তানের অনুসারীদের দখলদারী নির্মূলে কোথায় সে আগ্রহ? জন চায় তাদের নির্মূল? তাছাড়া ক’জন জানে কুর’আনে ঘোষিত মহান আল্লাহতায়ালার সে এজেন্ডার কথা?

 

মহান আল্লাহতায়ালার সে এজেন্ডা তো একমাত্র তারাই জানে যারা তাঁর নাযিলকৃত কিতাব অর্থ বুঝে অধ্যয়ন করে। যারা না বুঝে শুধু তেলাওয়াত করে, তাদের পক্ষে অসম্ভব হয় মহান আল্লাহতায়ালার সে এজেন্ডার সাথে পরিচিত হওয়া। ফলে অসম্ভব হয় তার এজেন্ডার সাথে একাত্ম হওয়া। একারণেই বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে কোটি কোটি নামাজী আছে যারা ধর্ম পালন করে  মহান আল্লাহতায়ালার সে এজেন্ডা পালনে সামান্যতম আগ্রহ ও সংশ্লিষ্টতা না রেখে। বরং তাদের সকল সামর্থ্য ব্যয় তাদের নিজেদের এজেন্ডা ও তাদের দলীয় নেতা বা দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে। অথচ মহান রাব্বুল আলামিন শুধু বান্দার নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত দেখেন না, দেখেন কোন এজেন্ডা নিয়ে সে বাঁচে ও লড়াই করে -সেটি। মানব জীবনে এটিই তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি গাড়ি কত দ্রুত যাচ্ছে -সেটিই শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং অধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো, কোন দিকে সেটি যাচ্ছে -সেটি। তাই এ জীবনে নিছক বাঁচার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো কি এজেন্ডা নিয়ে বাঁচা হলো -সেটি।

 

নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত পালন করেও কেউ যদি শয়তানের এজেন্ডা নিয়ে বাঁচে, তবে সেরূপ বাঁচার কারণে তাকে জাহান্নামে যেতে হবে। পবিত্র কুর’আন এবং নবীজী (সা:)’র জীবনী তো মানবের সামনে বাঁচার সে এজেন্ডার কথা বলে এবং কিভাবে সে এজেন্ডা নিয়ে বাঁচতে হয় -সেটি শেখায়। অথচ কুর’আন না বুঝা এবং নবীজী জীবনী থেকে শিক্ষা না নেওয়ার কারণে মুসলিমগণ ব্যর্থ হচ্ছে সত্যিকার মুসলিম রূপে বাঁচতে। তারা বাঁচছে গায়রুল্লাহ তথা শয়তানী শক্তির এজেন্ডা নিয়ে। এমন মুসলিমদের কারণেই মুসলিম দেশে প্রতিষ্ঠা পায়নি মহান আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডা, বরং প্রতিষ্ঠা পেয়েছে শয়তানের এজেন্ডা। সেটি স্পষ্ট বুঝা যায় মুসলিম ভূমিতে সেক্যুলারিজম, জাতীয়তাবাদ, দলবাদ, রাজতন্ত্র ও নানা রূপ মতবাদী রাজনীতির প্রতিষ্ঠা দেখে। অথচ মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডাটি পবিত্র কুর’আনে বার বার বর্ণনা করা হয়েছে। সুরা সাফ, সুরা তাওবা ও সুরা ফাতাহতে ঘোষিত সে এজেন্ডাটি হলো: “লি’ইউয হিরাহু আলা দ্বীনে কুল্লিহি।” অর্থ: সকল দ্বীন, সকল ধর্ম ও সকল মতাদর্শের উপর ইসলামের পূর্ণ বিজয়। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা চান, তাঁর দ্বীন প্লাবিত করুক প্রতিটি দেশ এবং প্রতিটি জনপদকে। এবং প্রতিটি মুসলিম হোক সে প্লাবন আনার কাছে বিরামহীন সৈনিকে।  নবীজী (সা:) ও সাহাবীদের যুগে মুসলিম জীবনে তো সেটিই দেখা গেছে। অথচ আজ সে ইসলাম মুসলিমদের মাঝে বেঁচে নাই। সে বিশাল ব্যর্থতাই মূলত মুসলিমদের সকল ব্যর্থতার জনক। ২১/০৩/২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *