শেখ হাসিনার মা-দুর্গা ও পৌত্তলিক নাশকতা
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on October 27, 2020
- Bangla Articles, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
শেখ হাসিনার মা-দুর্গা ও পৌত্তলিকতা
বিগত ২০১১ সালের ৫ই অক্টোবর রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গা পূজা উপলক্ষে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে গিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা জানি এবং শুনেছি মা দুর্গা প্রত্যেক বছর কোনো না কোনো বাহন চড়ে আমাদের এ বসুন্ধরায় আসেন। এবার আমাদের দেবী এসেছেন গজে চড়ে। জানি, গজে চড়ে এলে এ পৃথিবী ধন-ধান্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে—তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি। এবার ফসল ভালো হয়েছে। মানুষ সুখেই-শান্তিতে আছে। দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়ে ৭ ভাগে দাঁড়িয়েছে।”-(দৈনিক আমার দেশ, ৬ই অক্টোবর, ২০১১)।
এ কথাগুলো শেখ হাসিনা কোনরুপ নেশার ঘোরে বলেননি। জ্বরের প্রকোপে বিকার গ্রস্ততায়ও বলেননি।কোন দৈত্যদানবের ভয়ে বা র্যাব-পুলিশের রিমাণ্ডে গিয়েও বলেননি। তিনি সুস্থ্য মাথায় “জানেন এবং শুনেছেন” এমন দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলেছেন। দুর্গাকে তিনি আমাদের দেবী বলেছেন। “পৃথিবী ধন-ধান্যে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং জিডিপি বেড়েছে” এতে দুর্গা যে গজে চড়ে এসেছে সে বিশ্বাসটি আরো মজবুত হয়েছে -সেটিও বলেছেন। শেখ হাসিনা এ কথাগুলো বলেছেন মনের মাধুরি মিশিয়ে, এবং পুজা মণ্ডপে দাঁড়িয়ে।এমন অবস্থায় মানুষ যখন কথা বলে তখন সে অন্যের শেখানো কথা বলে না, একান্ত নিজের মনের কথাগুলোই অতি নির্ভয়ে বলে।
মানুষের অন্তরে কি আছে সেটি দেখা যায় না। তবে দেখা না গেলেও সেটি গোপন থাকে না। কারণ চেতনারও ভাষা আাছে। প্রকাশের জন্য তারও প্রচণ্ড আকুতি আছে। তাই সুযোগ পেলেই মুখের কথায় সেটি ফুঠে উঠে। মানুষে ভিতরের রূপটি এভাবেই বাইরে চলে আসে। তাই ঈমানদারের ঈমানদারি যেমন গোপন থাকে না,তেমনি গোপন থাকে মুনাফিকের মুনাফেকি, মিথ্যুকের মিথ্যাচার এবং পৌত্তলিকের পৌত্তলিকতাও। সেটির প্রকাশ ঘটে যেমন কথায়, তেমনি কর্ম ও আচরণে। উচ্চতর মারেফত এবং প্রগাড় প্রজ্ঞার অধিকারি ছিলেন হযরত আলী (রাঃ)। তিনে অতি মূল্যবান একটি কথা বলেছেন মানুষের ব্যক্তিত্ব নিয়ে। বলেছেন,“মানুষের ব্যক্তিত্ব তার জিহবাতে।” ব্যক্তিত্বের মধ্যেই প্রকাশ পায় মো’মেনের ঈমানদারি, আর সে ঈমানদারির প্রবল প্রকাশটি ঘটে তাঁর জিহবাতে। ঈমান আনার সাথে সাথে সে ঈমান বাইরে বেরিয়ে আসে কালেমায়ে শাহাদত পাঠের মধ্য দিয়ে। ব্যক্তির ঈমানপূর্ণ ভিতরের রূপটি এভাবেই বাইরে প্রকাশ পায়। অপর দিকে কাফেরের বেঈমানিটাও জাহির হয় তার কথায়। এখানে জিহবা সে বেঈমানিরই সাক্ষ্য দেয়। সেটি পৌত্তলিকতা বা গায়রুল্লাহ তথা শয়তানের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার মধ্য দিয়ে। নবীজীর হাদীস, “যে দুটি অঙ্গের ব্যবহারের জন্য বেশীর ভাগ মানুষ জাহান্নামে যাবে তার একটি হল তার জিহ্ববা, অপরটি যৌনাঙ্গ।” নবীজী (সাঃ) এ হাদীসে বুঝাতে চেয়েছেন, মানুষের অধিকাংশ পাপকর্ম হয় এ দুটি অঙ্গের দ্বারা। জিহবা থেকে নেক আমলের যেমন শুরু, তেমনি পাপকর্মেরও। জিহবা দ্বারাই ঈমানদার ব্যক্তি জীবনভর মহান আল্লাহ ও তাঁর দ্বীনের পক্ষে সাক্ষি দেয়। অন্যদের ডাকে ইসলামের দিকে, এবং বাঁচায় জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে। অপর দিকে এ জিহ্ববা দিয়েই কাফেরগণ বিদ্রোহ আনে আল্লাহর বিরুদ্ধে। প্রচার এবং প্রতিষ্ঠা দেয় কুফরির।
শেখ হাসিনা কোন পক্ষে?
কালেমা পাঠ শুধু মুসলমানই করে না, অমুসলমানেরা করে। কালেমা পাঠের অর্থ কোন কিছু বলা বা ঘোষণা দেয়া। কথা বলা বা বক্তৃতা দেয়ার অর্থ কিছু শব্দ, কিছু আওয়াজ বা কিছু বাক্য তৈরি নয়। বরং তাতে প্রকাশ পায় ব্যক্তির চিন্তা-চেতনা,জীবন-দর্শন, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় ও ধর্ম-অধর্ম নিয়ে তার বিশ্বাসটি। ধরা পড়ে তার ঈমান। কথা বা বক্তৃতার মধ্য দিয়েই সে সাক্ষ্য দেয় তার কাছে কোন ধর্ম বা বিশ্বাসটি সত্য এবং কোনটি অসত্য। তখন জনসম্মুখে প্রকাশ পায় সে কোন পক্ষের। ইসলামে এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পৃথিবীতে পক্ষ মাত্র দুটিঃ একটি আল্লাহর, অপরটি গায়রুল্লাহ বা শয়তানের। তাকে যে কোন একটি পক্ষ নিতে হয়, সুযোগ নেই উভয় পক্ষে থাকার। আল্লাহতায়ালা প্রতিটি ব্যক্তি থেকে জানতে চায় সে কোন পক্ষের। তিনি চান,সে পরিচয়টি সমাজের অন্যরাও জানুক। তাই ব্যক্তির ধর্মীয় এ পরিচয়টি ইসলামে গোপন রাখার বিধান নেই। কালেমায়ে শাহাদাত পাঠের মধ্য দিয়ে ইসলাম কবুলের যে ঘটনাটি ঘটে সেটির ঘোষণা প্রথম দিনেই জনসম্মুখে দিতে হয়। যে ব্যক্তি সে সাক্ষ্য দেয়নি,সে মুসলমানও হয়নি। আল্লাহর কাছে মুসলমান বা অমুসলমান হিসাবে পরিচয় পায় মূলত এ সাক্ষ্যদানের ভিত্তিতেই। তবে সে সাক্ষ্যদানেই তার দায়িত্ব শেষ হয় না, শেষ হয় না ৫ ওয়াক্ত নামায ও একমাস রোযা আদায়েও। বরং তাকে মুসলমান রূপে বাঁচতে হয় প্রতিদিন, প্রতি মুহুর্ত। ফলে শুরু হয় আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) এবং তার নাযিলকৃত ইসলামি বিধানের পক্ষে আজীবন সাক্ষ্যদানের কাজটি, মো’মেনের জীবনে সেটিই প্রকৃত ঈমানদারি।
“শাহাদাহ” আরবী শব্দ, অর্থ সাক্ষ্যদান। আর “কালেমায়ে শাহাদত”র অর্থ “সাক্ষ্যদান মূলক বাক্য”। কালেমা পাঠের মধ্য দিয়ে তাকে এ জগতের সবচেয়ে বড় সত্যটির পক্ষ নিতে হয়। আর সেটি “লা-শরিক আল্লাহ” যে একমাত্র মাবুদ বা উপাস্য এবং হযরত মুহাম্মদ যে তাঁর দাস ও রাসূল -সে সত্যটির।সাক্ষ্যদানের সে কাজটি প্রতিটি ঈমানদারকে আমৃত্যু জারি রাখতে হয়। সেটি যেমন নামায-রোযা-হজ-যাকাত ও জিহাদে লাগাতর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে, তেমনি ঘর-সংসার, কর্মস্থল, ইবাদতগাহ, রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষালয়, বিচারালয়সহ জীবনের সর্বক্ষেত্রে। এবং সেটি পবিত্র কোর’আনে বর্নিত আল্লাহর প্রতিটি হুকুমের অনুসরণের মধ্য দিয়ে। সে হুকুমের বিরুদ্ধে যেখানেই বিদ্রোহ বা অবাধ্যতা সেখানেই কুফরি। তাই কুফুরি শুধু মুর্তিপুজা নয়, বরং আল্লাহর বিরুদ্ধে প্রতিটি বিদ্রোহ ও অবাধ্যতা। রাজনীতিতে সে প্রবল বিদ্রোহটি ঘটে ইসলামের শরিয়ত বিধানকে প্রতিষ্ঠা না করার মধ্য দিয়ে। এবং সে সাথে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের বদলে শাসক, দল বা জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশে তো সেটি ঘটেছে।
ইসলাম কবুলের মূল চাবিটি হল “কালেমায়ে শাহাদত”। কালেমা পাঠে সর্বপ্রথম ‘লা ইলাহা’ বলতে হয়।‘লা ইলাহা’ র অর্থঃ “নাই কোন উপাস্য”,এবং এর পর আসে “ইল্লাল্লাহ” যার অর্থ “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া”। ইসলাম কবুলের সর্বপ্রথম শর্তটি তাই একমাত্র আল্লাহ ছাড়া সকল উপাস্যের অস্বীকৃতি। মুসলমান হওয়ার পথে এটি এক অলংঘনীয় বাধ্যবাধকতা। অন্তরে কোন দেবদেবী বা উপাস্যের প্রতি সামান্য বিশ্বাস অবশিষ্ঠ রেখে আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনের কোন সুযোগ “কালেমায়ে শাহাদত” এ রাখা হয়নি। মা-দুর্গা বলে কোন উপাস্য আছে, সে গজে চড়ে আসে এবং তার মর্তে নামাতে ভাল ফসল ফলে –এসব স্বীকার করে নিলে কালেমায়ে শাহাদত পাঠ অর্থহীন হয়ে যায়। এমন কথা বলার অর্থ কালেমায়ে শাহাদতের সুস্পষ্ট বিরুদ্ধাচরন। নামায-রোযা পালনের বিষয়টি তো আসে এর পরে। প্রশ্ন হল, কোন মুসলমান কি এমন কুফরি বাক্য মুখে আনতে পারে? এটি তো পৌত্তলিকতার পক্ষে সাফাই বা সাক্ষ্যদান। অথচ মুসলিম হওয়ার দায়বদ্ধতা হলো, তাকে আজীবন সাক্ষ্য দিতে হয় পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে। তাকে সযত্নে বাঁচতে হয় অসত্য, অন্যায়ের পক্ষে সাক্ষ্যদান থেকেও। নইলে ঈমান বাঁচে না। ঈমান বাঁচাতে তাই শুধু হারাম খাদ্য-পানীয় ও হারাম কর্ম থেকে বাঁচলে চলে না, এমন হারাম উচ্চারণ থেকেও বাঁচতে হয়।
আঘাত ইসলামের মূল খুঁটিতে
পূজা মন্ডপের সামনে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা যা বলেছেন -সেটি অতি ভয়ানক। যেমন আখেরাতে তাঁর নিজের জন্য, তেমনি বাংলাদেশের জন্যও। সজ্ঞানে ও স্বেচ্ছায় তিনি এক প্রকাণ্ড সাক্ষ্য দিয়েছেন। এমন কথা উচ্চারণে ঈমান বাঁচার কথা নয়। অন্তরে শরিষার দানা পরিমান ঈমান থাকলেও কেউ এমন কথা বলতে পারে না। তিনি যা বলেছেন তা তো পৌত্তলিক কাফেরদের কথা, কোন ঈমানদারের কথা কখনোই হতে পারেনা। সাক্ষ্যদানের সে পর্ব ও আয়োজনটিও লক্ষণীয়। সেটি ছিল ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামণ্ডপ। টিভি ও পত্র-পত্রিকায় তাঁর সে সাক্ষ্যদানের পর্বটি বিপুল প্রচার পেয়েছে, কোটি কোটি মানুষের কাছে তা পৌঁছেও গেছে। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, ফলে তার সে সাক্ষ্যদানে কোটি কোটি মানুষ যে প্রভাবিত হবে সেটিই স্বাভাবিক। ইসলামের বিরুদ্ধে নাশকতা এখানেই। একজন সাধারণ মানুষের সাক্ষ্যদানেও আদালতের বিচারকগণও প্রভাবিত হয় এবং আসামীকে ফাঁসীতে ঝুলিয়ে দেয়। সঠিক সাক্ষ্যদান তাই মানুষ জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সে সাক্ষদানটি হল আল্লাহ এ তার রাসূলের পক্ষে সাক্ষ্যদান। ইসলামের পাঁচটি খুঁটির মাঝে এটিই সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি। এরূপ সাক্ষ্যদানের মধ্য দিয়েই সে মহান আল্লাহতায়ালার খাতায় নিজেকে মুসলিম রূপে নথিভুক্ত করে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও সারা জগত জুড়ে প্রতিটি মুসলিমকে লাগাতর সে সাক্ষ্যটি দিতে হয়। তাদের সে সাক্ষ্যদানের ফলেই ইসলাম জনগণের আদালতে বিজয়ী হয়। ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার শুরু তো এখান থেকেই। ইসলামের পুরা ঘরটি ধ্বসানোর জন্য তার সবগুলি খুটি ধ্বংসের প্রয়োজন পড়েনা, কালেমায়ে শাহাদতের ন্যায় এই একটি মাত্র খুঁটির বিনাশই যথেষ্ট। নামায-রোযা বেঁচে থাকলেও তখন ইসলাম কখোনই বিজয়ী শক্তি রূপে প্রতিষ্ঠা পায় না। এবং শরিয়তও প্রতিষ্ঠা পায় না। আর সে খুঁটিতেই আঘাত হানলেন শেখ হাসিনা। ইসলামের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের সবচেয়ে বড় নাশকতা তো এটাই। “দুর্গাকে মা বলে এবং তার গজে আসাতে দেশে ফসলের উৎপাদন বেড়েছে” বলে পৌত্তলিকতার যে সাফাই তিনি গাইলেন -তাতে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের বিবেকের আদালতগুলি কি প্রভাবিত হবে না? এখানে তিনি পক্ষ নিয়েছেন সুস্পষ্ট কুফরির। রেডি ও টিভিতে তার সে কুফরি বাক্যের প্রচার করা হলো দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের রাজস্বের অর্থে। মুসলিমদের অর্থে এভাবেই তিনি ও তার সরকার নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছেন ইসলামের বিরুদ্ধে।
মুর্তিপূজকেরা দুর্গাকে মা বলে, তার পদতলে মাথা নুয়ায়,এবং পূজা দেয়। বাংলাদেশের মাটিতে সেটি নতুন কিছু নয়। এসবই বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি হিন্দুর ধর্মীয় বিশ্বাস। কিন্তু কোন মুসলিম মুর্তিকে মা বলবে এবং সে মুর্তিটি হাতিতে চড়ে প্রতিবছর আসে এবং তার আসার কারণে ফসলের উৎপাদন বাড়ে – সেটি নতুন। এটি শতভাগ পৌত্তলিকতা। অথচ শেখ হাসিনা সেটিরই প্রচার করছেন। দুর্গা পূজা এতকাল বাঙালী হিন্দুদের নিজস্ব পূজা ছিল, আর হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার সেটিকে বাঙালীর সার্বজনীন পূজাতে পরিনত করতে চাচ্ছে। নবীজীর আমলে মূর্তির অভাব ছিল না, খোদ কা’বার মধ্যে ছিল ৩৬০টি মুর্তি। নবীজীর সূন্নত তো কা’বা থেকে মুর্তি সরানোর, সেগুলিকে শ্রদ্ধাভরা “মা” বলা নয়। অথচ শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় সেটিই বলেছেন। আল্লাহতায়ালা ও তার দ্বীনের বিরুদ্ধে এটি এক ভয়ংকর বিদ্রোহ। মাটিতে বীজ গজানো,সেটির বেড়ে উঠে এবং ফসল দেয়া নতুন ঘটনা নয়। এসব চিরকালই ঘটছে মহান আল্লাহর রহমতের বরকতে, দুর্গা বা কোন দেব-দেবীর গজে চড়ে আসা-যাওয়ার কারণে নয়। তাছাড়া গজে চড়ে সেরূপ আসা-যাওয়ার ক্ষমতা কি এসব মুর্তিদের আছে? এরূপ বিশ্বাস করা তো মহান আল্লাহতায়ালার হুকুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। ইচ্ছা করলে দয়াময় মহান আল্লাহ তাঁর ঈমানদার বান্দার সব গুনাহ মাফ করে দেন, কিন্তু এরূপ শিরকের গুনাহ মাফ করেন না। নবীজীর এ ঘোষণাটি তো হাদীসে বহুবার এসেছে।
নামাযী কি কখনো মহান আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়?
শেখ হাসিনা ১২ই অক্টোবর,২০১১-এ নিলফামারীর এক জনসভায় দাবী করেছেন, তিনি ৫ ওয়াক্ত নামায পড়েন। কথা হলো, তিনি কত ওয়াক্ত নামায পড়েন সেটি দেখার বিষয় নয়। তেমনি জনসভায় প্রচারেরর বিষয়ও নয়। বরং দেখার বিষয় হলো, তিনি বাস্তবে কি করছেন সেটি। নামায-রোযা পালনের ফলে মহান আল্লাহতায়ালা ও তাঁর দ্বীনের প্রতি আস্থা গভীরতর হবে এবং তাঁর শরিয়তী বিধান প্রতিষ্ঠায় অঙ্গিকার বাড়বে -সেটিই তো স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার অঙ্গিকার তো ইসলামী বিধানের বিনাশে। এবং ইসলামপন্থিদের কোমর ভাঙ্গায়। তারই প্রমাণ, সংবিধান থেকে তিনি আল্লাহর উপর আস্থার বাণী বিলুপ্ত করেছেন। শরিয়তী বিধানের প্রতিষ্ঠাকে তিনি মৌলবাদ বলছেন এবং ইসলামের পবিত্র জিহাদকে বলছেন জঙ্গিবাদ। অথচ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণাটি হল, “যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী বিচার-আচারে ফয়সালা দেয় না তারা কাফের, …তারা যালিম, … এবং ..তারাই ফাসিক।” সুরা মায়েদা, আয়াত ৪৪, ৪৫,৪৭)। মুসলিম তাই যখন রাষ্ট্র ক্ষমতা হাতে পায় তখন নামায-রোযার ন্যায় আল্লাহর কোর’আনী বিধান তথা শরিয়তেরও প্রতিষ্ঠা দেয়। ভারতে মুসলিম শাসনের শেষ দিন পর্যন্ত আদালতে যে বিধানটি কায়েম ছিল সেটি তো এই শরিয়তি বিধান। কিন্তু ঔপনিবেশিক কাফেরগণ সেটি উৎখাত করে, এবং প্রতিষ্ঠা করে কুফরভিত্তিক ব্রিটিশ পেনাল কোড। আর বাংলাদেশের সেক্যুলারিস্টগণ সযত্নে সে ধারাটিই অব্যাহত রেখেছে। এবং শেখ হাসিনা সে ধারারই নেত্রী। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও পৌত্তলিক ভারত ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে তাঁর নীতিও তো সেটিই।
বার বার হজ-উমরাহ করে এবং ৫ ওয়াক্ত নামায পড়েও মানুষ যে ভয়ানক অপরাধী ও ইসলামের পরম শত্রু হতে পারে সে প্রমান তো প্রচুর।তাদের সংখ্যা এমন কি নবীজী (সাঃ)র যুগেও কি কম ছিল? হাসিনা প্রমাণ করছেন, তিনি তাদেরই একজন। নামায-রোযা পালন করা যায়, মাথায় রুমাল বেঁধে নির্বাচনের সময় পর্দা-নশীন সাজাও কঠিন নয়,কিন্তু তাতে কি ঈমানদারি বা ইসলামে অঙ্গিকার বাড়ে? নির্মিত হয় কি ইসলামি ব্যক্তিত্ব? ইসলামি ব্যক্তিত্ব তো নির্মিত হয় অন্তরে আল্লাহতায়ালার ভয় এবং ইসলামের বিজয় ও শরিয়তী বিধান প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন অঙ্গিকার থেকে। তাই খোদ নবীজী (সাঃ)র পিছনে বহুবছর নামায পড়েও মুনাফিকগণ তাই ঈমানদার হতে পারেনি। সুস্থ্য ব্যক্তিত্বের অধিকারিও হতে পারিনি। মুসলিমদের বেশ ধরলেও তারা বেড়ে উঠেছে ভয়ানক অপরাধী এবং ইসলামের ঘোরতর শত্রু রূপে। এরাই ইসলামের বিনাশে মক্কার কাফের আর মদিনার ইহুদীর সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিল। আজও যারা নামায-রোযা-হজ-ওমরাহ পালন করে তাদের অনেকের অপরাধ শুধু দুর্গাকে মা বলার মধ্যে সীমিত নয়। এরা জোট বেঁধেছে তাদের সাথে যারা ইসলামের বিনাশ চায়। তারা মদদ নিচ্ছে তাদের থেকে যারা কাশ্মীর, গুজরাত, বোম্বাইয়ে মুসলিম নিধন, অযোধ্যায় মসজিদ ধ্বংস, বাংলাদেশের সীমান্তে কাটাতার দেয়া ও বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা এবং পদ্মা-মেঘনা-তিস্তার পানি তুলে নেয়াকে জাতীয় নীতি বানিয়েছে।
শেখ হাসিনার কথাবার্তা থেকে মনে হয়, তিনি যে বাংলাদেশের মত একটি মুসলিম দেশের প্রধানমন্ত্রী সে বোধটি তার নেই। নিজেকে একটি মুসলিম দেশের প্রধানমন্ত্রী ভাবলে তার কথাবার্তা,ধর্মীয় বিশ্বাস, আচরণ ও রাজনীতিতে ইসলামী চেতনার প্রতিফলনটি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু কার্যতঃ সেটি হয়নি। বরং সুস্পষ্ট বুঝা যায়, ইসলামী আক্বীদা-বিশ্বাস থেকে তিনি কতটা বিচ্ছিন্ন। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ইসলামী আক্বীদা-বিশ্বাস থেকে তিনি কতটা বিচ্ছিন্ন সম্প্রতি সেটির প্রবল প্রকাশ ঘটেছে তার বক্তৃতায়। পূজামণ্ডপে গিয়ে যা বলেছেন সেটি কোন মুসলিমের মুখে উচ্চারিত হওয়ার কথা নয়। এটি যেমন অস্বাভাবিক, তেমনি অকল্পনীয়। তিনি যেন প্রধানমন্ত্রী কোন পুতুলপূজারী দেশের।
জিহাদ কি জঙ্গিবাদ?
মুসলিমের পুরস্কার যেমন বিশাল, তেমনি বিশাল তার দায়বদ্ধতাও। সে দায়বদ্ধতা শয়তানের সাথে লড়াই করে আজীবন মহান আল্লাহতায়ালার পথে চলার। এ লড়াই থেকে কোন মুসলিমের নিস্তার নেই। যে কাজে প্রমোশন ও পুরস্কার আছে, সে কাজে কঠিন পরীক্ষাও আছে। আর মুসলিমের জন্য তো রয়েছে এমন এক অভাবনীয় পুরস্কার দুনিয়ায় বসে যার ধারণা করাও অসম্ভব। সেটি জান্নাতপ্রাপ্তির। জান্নাতের এক ইঞ্চি ভূমিও কি হিমালয় সমান স্বর্ণ দিয়ে কেনা যায়? জান্নাতের নিয়ামত বিক্রয় হয় ভিন্ন মুদ্রায়,সেটি ঈমান ও আমিলুস সালেহ তথা নেক আমলের। সে নেক আমলটি শুধু পথের কাঁটা সরানো নয়। কাউকে দান-সাদকা দেয়াও নয়। সেটি স্রেফ নামায-রোযা-হজ-যাকাত পালনও নয়। বরং সবচেয়ে বড় আমিলুস সালেহ বা নেক আমল হল অসত্য,অন্যায় ও কুফরির বিরুদ্ধে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জিহাদ। সে জিহাদের অর্থদান, শ্রমদান এবং প্রাণদান। নামায-রোযা-হজ-যাকাতসহ সকল ইবাদত-বন্দেগীর কাজ তো সর্বশ্রেষ্ঠ সে নেক আমলে সামর্থ সৃষ্টি। কিন্তু যে ব্যক্তির নামায-রোযা-হজ-ওমরাহ মা-দুর্গার প্রতি আস্থা বাড়ায় তাকে কি আদৌ কোন ইবাদত? যিনি প্রকৃত ঈমানদার তার ইবাদতে শুধু ব্যক্তির ঈমান-আখলাক ও কর্মই পাল্টে যায় না,পাল্টে যায় সমাজ,রাষ্ট্র ও সভ্যতাও। প্রচণ্ড ভাবে বাড়ে জিহাদের জজবা। সে নেক-আমলের বরকতেই প্রাথমিক যুগের মুসলমানগণ ইসলামের বিজয় এনেছিলেন,এবং জন্ম দিতে পেরেছিলেন মানব-ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতার। সে নেক-আমলে নবীজী (সাঃ)র শতকরা ৬০ ভাগের বেশী সাহাবা শহিদ হয়েছিলেন। অন্য কোন আমলে বা ইসলামের অন্য কোন বিধান পালনে মুসলমানদের এত রক্তক্ষয় হয়নি। ঈমানের চুড়ান্ত পরীক্ষা হয় মূলত এ ক্ষেত্রটিতে। আজও যার মধ্যে ঈমান আছে,তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এ নেকআমলটিও আছে। ইহকালে ইসলামের বিজয় ও পরকালে জান্নাতপ্রাপ্তির এ ছাড়া ভিন্ন পথ নেই। ভিন্ন পথ নেই জাহান্নামের ভয়ানক আযাব থেকে বাঁচারও। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা সে নেক আমলের তাগিদ দিয়েছেন এভাবেঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমাদেরকে কি এমন এক ব্যবসার কথা বলে দিব যা তোমাদের কঠিন আযাব থেকে রক্ষা করবে? সেটি হল, তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর ঈমান আনো এবং জিহাদ কর আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের জান ও মাল দিয়ে, এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে।” –সুরা সাফ, আয়াত ১০-১১। জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার এটিই মহান আল্লাহর প্রদর্শিত পথ। সে পথটি বেছে নিয়েছিল নবী করীম (সাঃ) এবং তাঁর সাহাবাগণ।কিছু পঙ্গু ও বধির ছাড়া এমন কোন সাহাবা কি ছিল যিনি সে জিহাদে অংশ নেননি? অথচ শেখ হাসিনা সে পবিত্র জিহাদকে বলছেন জঙ্গিবাদ। মহান আল্লাহতায়ালা ও তাঁর বিধানের বিরুদ্ধে এর চেয়ে বড় ধৃষ্টতা আর কি হতে পারে?
বিজয়ী হলো শয়তান ও তার পৌত্তলিক শিরক
তাগুত তথা শয়তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আল্লাহর বাহিনীর লড়াইটি সর্বকালের। আল্লাহতায়ালা চান,ঈমানদারের জীবনে সে লড়াইয়ে অংশগ্রহণের তাড়নাটি তীব্রতর হোক। সে লড়াই তীব্রতর ও অনিবার্য করার স্বার্থেই মহান আল্লাহতায়ালা প্রতিটি ঈমানদারের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ রূপে শয়তানকে খাড়া করে দিয়েছেন। শয়তানকে নিয়োজিত করেছেন এমন কি নবী-রাসূলগণেরও পিছনেও। কারণ ঈমানের পরীক্ষায় তাদেরও পাশ করতে হয়। পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামীনের সে পরিকল্পনাটি ব্যক্ত হয়েছে এভাবেঃ “এবং এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর বিরুদ্ধে মানুষ ও জিনরূপী শয়তানদের শত্রু রূপে নিয়োজিত করেছি” –(সুরা আনয়াম, আয়াত ১১২)। এ প্রসঙ্গে নবীজী (সাঃ)র প্রসিদ্ধ হাদীস হলো, প্রতিটি মানুষের উপরই একজন শয়তান আছে। একজন সাহাবী তখন জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উপরও কি শয়তান আছে?” তিনি জবাব দিলেন, “হাঁ আমার উপরও শয়তান আছে। তবে আমি সে শয়তানকে মুসলিম তথা আত্মসমর্পিত করে রেখেছি।”
শয়তানের মূল কাজটি, ঈমানদারকে লাগাতর পরীক্ষায় ফেলা। আল্লাহর পথে পথচলায় পদে পদে বাধা সৃষ্টি করা।শুধু নামায-রোযা-হজ-যাকাতের ন্যায় ইবাদতে নয়,ব্যবসা-বাণিজ্য,রাজনীতি,শিক্ষা-সংস্কৃতি,বিচার-আচার,প্রশাসনে এমনকি নির্জন জঙ্গল বা বিজন মরুভূমিতেও ঈমানদার ব্যক্তির পক্ষে নিরাপদে ধর্ম পালনের সুযোগ নেই। প্রতি স্থানে ও প্রতি মুহুর্তে তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করে শয়তান। লাগাতর চেষ্টা চালায় প্রতি পদে তাকে পথভ্রষ্ট করায়। এভাবে ঈমানদারের পরীক্ষা হয় প্রতি মুহুর্তে। জিহাদ তাই মো’মেনের জীবনে প্রতি দিন ও প্রতি মুহুর্তে। ঈমানদারের প্রকৃত বিজয় এবং সে সাথে জান্নাত লাভের মহা পুরস্কার সে পরীক্ষায় পাশ করায়। শয়তানের লাগাতর হামলা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিপদে বিজয়ী হওয়াতেই ঈমানদারের প্রকৃত সাফল্য, স্রেফ নামাযী বা রোযাদার, হাজী বা সুফী সাজাতে নয়। তবে শয়তানের হাতে পরাজয় কখনও গোপন থাকে না। গাড়ী যখন খাদে পড়ে তখন যেমন সবাই সেটি টের পায়,তেমনি কোন ব্যক্তি যখন পথভ্রষ্ট বা বেঈমান হয় সেটিও ধরা পড়ে। আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে প্রতিটি বিদ্রোহ বা অবাধ্যতাই পথভ্রষ্টতা। সেটি প্রকাশ পায় তার কথাবার্তা, ধর্মকর্ম, আচরণ, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে। ঈমানদারের দায়বদ্ধতা শুধু ইবাদত-বন্দেগী নয়,বরং আল্লাহ প্রদত্ত শরিয়তি বিধান পালনে। কিন্তু আল্লাহর অবাধ্যরা সে শরিয়ত মানতে রাজি নয়। একই অবস্থা শেখ হাসিনা ও তাঁর দলের। তারা শরিয়তের প্রতিষ্ঠাতে তাই রাজী নয়। এক্ষেত্রে দলটির অবস্থান ইসলামের বিপক্ষে। ‘মা দুর্গা’ গজে চড়ে এসেছে বলে দেশে ফসল বেড়েছে,-এ থেকে কি বলা যায় যে দলটির নেত্রীর মুখ দিয়ে ইসলামের শিক্ষা ও দর্শন বেরুচ্ছে? শয়তান যে তাঁর উপর প্রবল ভাবে বিজয়ী তা নিয়ে কি এর পরও সন্দেহ থাকে? এমন ব্যক্তিরা ক্ষমতায় গেলে আল্লাহর দ্বীনের প্রতিষ্ঠাকে অসম্ভব করে এবং বিজয় আনে শয়তানী শক্তির। শয়তানের বিজয় বাড়াতেই বাংলাদেশে স্কুলছাত্রীদের হাতে হরামনিয়াম ও ডুগি-তবলা তুলে দিচ্ছে এবং মেয়েদের ফুট বল খেলায় নামাচ্ছে। এই যখন সরকারের নীতি তখন জনসভায় ‘৫ ওয়াক্ত নামায পড়ি’ এ কথা বলার অর্থ কি? এর লক্ষ্য কি জনগণকে স্রেফ ধোকা দেয়া নয়?
শেখ হাসিনা ও তার সরকারের চরিত্র এবং বাংলাদেশের বিপদ নিয়ে আরেকটু গভীরে যাওয়া যাক। মহান আল্লাহতায়ালার উপর আস্থা হল ঈমানের নির্যাস। ঈমানদার মাত্রই তাই প্রতিকর্মে ও প্রতি অবস্থায় মহান আল্লাহতায়ালার উপর আস্থার প্রকাশ ঘটায়। ঈমান যে আছে তারই প্রমাণ হলো এই আস্থা। ঈমানদারগণের মুখে তাই উচ্চারিত হয়,“ওয়া মা তাওফিক ইল্লাহ বিল্লাহ” অর্থঃ আল্লাহর দেয়া সামর্থ ছাড়া কারোই কোন সামর্থ নাই। এক্ষেত্রে আপোষ হলে এবং আস্থা কোন দেব-দেবীর উপর গড়ালে তার ঈমান থাকে না। অথচ শেখ হাসিনার আস্থা এখানে দুর্গার উপর গড়িয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,“ওয়া মা তাশাউনা ইল্লা আঁই ইয়াশাল্লাহু রাব্বুল আলামীন” অর্থঃ “এবং তোমরা যা ইচ্ছা করো তা হয় না,যদি না জগতসমূহের মহাপ্রভু আল্লাহ ইচ্ছা করেন”।–সুরা তাকবির, আয়াত ২৯)। অর্থাৎ মানুষের কোন ইচ্ছাই আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া পূরণ হয় না। তাই ব্যক্তির জীবনে যতই ঈমান বাড়ে, ততই বাড়ে মহান আল্লাহর উপর আস্থা। মার্কিনীরা এতটা ধর্মভীরু নয়,বরং তাদের পরিচিতি আধুনিক ও সেক্যুলার রূপে। কিন্তু ডলারের নোটের উপর “We trust in God” লিখেছে। যার অর্থ “আমরা আল্লাহর উপর আস্থা রাখি”। এ বাক্যটি লিখতে তাদের সে সেক্যুলারিজমে বা আধুনিকতায় বাঁধেনি। কোন নাস্তিক প্রেসিডেন্ট হলেও আল্লাহর উপর আস্থার সে ঘোষণাটি বিলুপ্ত করে না। সেটি করে না সংখ্যাগরিষ্ঠ মার্কিন জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাসের দিকে নজর রেখে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাণ্ডটি ভিন্ন। তিনি নির্বাচনকালে হাতে তসবিহ নেন, মাজারে যান, রাস্তায় মিছিল থামিয়ে নামাযেও দাঁড়িয়ে যান। তাবলিগ জামায়াতের ইজতেমা হলে সেখানে দোয়ার মজলিসে গিয়ে হাজির হন এবং মাথায় পটিও বাঁধেন। কিন্তু তিনিই দেশের সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর আস্থার বাণীটি উচ্ছেদ করে ছেড়েছেন। শয়তানের কাজে শুধু ঈমানশূন্য করা নয়, আল্লাহই উপর আস্থা শুণ্য করাও। ফলে আল্লাহর উপর আস্থার যে বানীটি বাংলাদেশের সংবিধানে ছিল সেটি শয়তানে কাছে পছন্দনীয় ছিল না। অসহ্য ছিল শয়তানের পক্ষের শক্তিরও। শয়তানের সে সাধটি পূরণ হচ্ছে শেখ হাসিনার হাত দিয়ে। কোন ঈমানদার কি এটি সহ্য করতে পারে? ১ম সংস্করণ ১৬/১০/২০১১; ২য় সংস্করণ ২৭/১০/২০২০
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018