সংস্কৃতির নির্মাণ ও অপসংস্কৃতির নির্মূল কীরূপে?
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on November 13, 2020
- Bangla Articles, শিক্ষা ও সংস্কৃতি
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
শয়তানের সাংস্কৃতিক হাতিয়ার ও অধিকৃতি
শয়তান শুধু মুর্তিপূজা, অগ্নিপূজা বা জীব-জন্তু পূজার ন্যায় মিথ্যা দিয়ে মানুষকে জাহান্নামে টানে না। নাস্তিক বানিয়েও নয়। টানে নাচ-গান, সিনেমা-নাটক, শিল্প-সাহিত্য, পত্র-পত্রিকা, ক্লাব-ক্যাসিনা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার ন্যায় নানারূপ সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকর্মের মাধ্যমে। ইসলামের বিরুদ্ধে এগুলি ব্যবহৃত হয় শক্তিশালী হাতিয়ার রূপে। বাংলাদেশের ন্যায় মুসলিম দেশগুলিতে খুব কম সংখ্যক লোককেই শয়তান মুর্তিপূজা বা জীব-জন্তু পূজায় দীক্ষা দিতে পেরেছে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়েছে সাংস্কৃতিক ক্রিয়া-কর্মের নামে। মানব সমাজে এটি এক গুরুতর ব্যাধি। মানুষ জাহান্নামে যাবে রোগব্যাধিতে মারা যাওয়ার কারণে নয়, বরং সাংস্কৃতিক ব্যাধির কারণে। এটিই হলো অপসংস্কৃতি। এ ব্যাধিতে দৈহিক মৃত্যু না হলেও মারা পড়ে ব্যক্তির ঈমান-আক্বিদা। শান্তিপূর্ণ বসবাস তাই শুধু চুরি-ডাকাতি, গুম-খুন, সন্ত্রাস ও স্বৈরাচারের কারণে অসম্ভব হয় না, অসম্ভব হয় অপসংস্কৃতির কারণেও। মানব কল্যাণে তাই শুধু শারিরীক রোগব্যাধির চিকিৎসা হলে চলে না, নির্মূল করতে হয় অপসংস্কৃতিকে।
অপসংস্কৃতি জন্ম নেয় ধর্মীয় বিধান না মেনে স্বেচ্ছাচারি জীবন যাপনের অসভ্যতা থেকে। ঈমানদারের জিহাদ তাই শুধু চুরি-ডাকাতি, গুম-খুন, সন্ত্রাস ও স্বৈরাচারির বিরুদ্ধে হলে চলে না। এবং শত্রুর আগ্রাসন শুধু সীমান্তে রুখলে চলে না। আগ্রাসন রুখতে হয় চেতনার ভূমিতেও। নইলে অসম্ভব হয় ঈমান নিয়ে বাঁচা ও বেড়ে উঠা। অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে জিহাদ এজন্যই এতো গুরুত্বপূর্ণ। এ জিহাদে যেমন বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই থাকে, তেমনি থাকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে শরিয়তী আইনের কঠোর প্রয়োগ। মুসলিম জীবনে বিষয়টি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি বুঝা যায় ইসলামের বিধান থেকে। ইসলাম শুধু নামায-রোযা, হজ্ব-যাকাত শেখায় না, শেখায় শ্লিল ও রুচীশীল ভাবে বাঁচার পদ্ধতিও। দেয় সভ্য ও অসভ্য এবং পবিত্রতা ও অপবিত্রতার নিজস্ব সংজ্ঞা। অন্যদের কাছে মদ্যপান, নাচগান, উলঙ্গ মুর্তি ও অশ্লিলতা সংস্কৃতি রূপে গণ্য হলেও মুসলিমদের কাছে সেটি অসভ্যতা ও অপসংস্কৃতি। ব্যক্তির যে কথা, কর্ম, আচরন ও ভাবনার মধ্যে থাকে মহাপ্রভু মহান আল্লাহতায়ালাকে খুশি করার প্রবল ব্যগ্রতা, থাকে নিজের পরিশুদ্ধ করার আগ্রহ -সেটিই পবিত্র। তাই ঈমানদারের নামায-রোযা-হজ্ব-কোরবানী যেমন পবিত্র, তেমনি পবিত্র হলো তার তাসবিহ-তাহলিল, ওয়াজ-নসিহত ও বুদ্ধিবৃত্তি। এরূপ পবিত্র কাজের মধ্য দিয়েই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র সমাজ পবিত্রতর হয়। নির্মিত হয় উচ্চতর মানব সভ্যতা। অপরদিকে যে কথা, কর্ম, আচরণ ও চেতনায় অবাধ্যতা হয় মহান আল্লাহতায়ালার এবং খুশি হয় শয়তান -সেটিই অপবিত্র। এবং সেটিই অপসংস্কৃতি। তখন সমাজে জোয়ার আসে নানারূপ পাপকর্মের। মানুষ তখন পশুর চেয়েও হিংস্র ও অসভ্য জীবে পরিণত হয়। তাই গণহত্যা, গণধর্ষণ ও জাতিগত নির্মূল পশুজগতে না হলেও অপসংস্কৃতির দেশগুলিতে ঘটে।
মানবকে সভ্যতর ও পবিত্রতর করার কাজে ইসলামের প্রকল্পটি বিশাল ও সর্বমুখি। ইসলাম পবিত্রতার প্রতিষ্ঠা চায় শুধু মসজিদে নয়, সমগ্র সমাজ ও রাষ্ট্র জুড়ে। এমনকি আনন্দ-উৎসব ও শোক-দুঃখের আসর গুলোতেও। আনন্দ-উংসব বা সাংস্কৃতিক ক্রীয়াকর্মের নামে সমাজের কোন ক্ষুদ্রতর পরিসরে অশ্লিলতা, নোংরামী বা পাপকর্ম হোক –সেটিও ইসলাম চায় না। কারণ এগুলো চারিত্রিক রোগ; ভয়ানক ভাবে সংক্রামকও। এগুলির শুরু ক্ষুদ্রতর স্থান থেকে হলেও আস্তে আস্তে সেটি মহামারিতে রূপ নেয় এবং গ্রাস করে সমগ্র সমাজ ও রাষ্ট্রকে। তাই যে অশ্লিলতার শুরু নাটকের মঞ্চ, সিনেমা হল, যাত্রা দল, নিষিদ্ধ পল্লী বা ব্যভিচারীর ঘরে -সেটি সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং আগুনের ন্যয় ঘর থেকে ঘর, গ্রাম থেকে গ্রাম এবং শহর থেকে শহরকে গ্রাস করে। তখন ব্যর্থ হয় চারিত্রিক পরিশুদ্ধির সকল আয়োজন। দেশ জুড়ে তখন নেমে আসে অসভ্যতা। সমাজের সর্বস্তর থেকে অসভ্যতার নির্মূলে এজন্যই জিহাদ অপরিহার্য। সমাজকে সভ্য ও পবিত্র করার এছাড়া ভিন্ন পথ থাকে না। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে মুসলিমগণ সর্বশ্রষ্ঠ জাতি রূপে গণ্য হয় তো এরূপ এক পবিত্র জিহাদে সৈনিক হওয়ার কারণে।
সংস্কৃতির নির্মাণ কীরূপে?
বাস্তবতা হলো, শুধু কালেমা পাঠ বা মুর্তিপূজার অবসানের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির কর্ম, চরিত্র ও আচরনে পরিশুদ্ধি আসে না। সে জন্য অপররিহার্য হলো চেতনার পরিশুদ্ধি। ব্যক্তির কর্ম, চরিত্র ও সংস্কৃতি তো ঈমানেরই প্রকাশ। পবিত্র কোর’আনে মহান আল্লাহতায়ালার অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘোষণা হলো, “ক্বুল! কুল্লুই ইয়ামালু আলা শাকিলাতিহি” অর্থঃ “বলুন (হে নবী), প্রত্যেক ব্যক্তি তার চেতনা বা বিশ্বাসের ধরণ তথা মডেল অনুযায়ী কাজ করে।” এটি অতি উচ্চমার্গীয় এক ফিলোসফিকাল কথা। মানুষে মনের সামর্থ্যটি মানব-মনের স্রষ্টা মহান আল্লাহতায়ালার চেয়ে আর কে ভাল জানে? উপরুক্ত আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা জানিয়ে দিয়েছেন দর্শন বা বিশ্বাসের শক্তি। তাই ব্যক্তির ধর্মকর্ম, চরিত্র ও আচরণে পরিবর্তন আনতে হলে তার চেতনার ভূমিতে পরিবর্তন আনতে হয়। পরিবর্তন আনতে হয় চিন্তার মডেলে। এবং সেটি সম্ভব একমাত্র জ্ঞানের মাধ্যমে। সমাজ বিজ্ঞানে এরূপ একটি বিশ্বাসগত বিপ্লবকে বলা হয় প্যারাডাইম শিফ্ট। তাই জাহেল ব্যক্তি সত্যের পক্ষে দাঁড়াবে, দুর্বৃত্তদের নির্মূলের সে জিহাদে নামবে এবং পূণ্যবান চরিত্রের অধিকারি হবে –সেরূপ ধারণাটি নিতান্তই এক অলীক কল্পনা।
দেহ বাঁচাতে পানাহার চাই, তেমনি মহত্তর গুণাবলী ও ঈমান নিয়ে বেড়ে উঠার জন্য চাই সুস্থ্য সংস্কৃতি। আলো-বাতাসের ন্যায় সংস্কৃতির উপস্থিতি সর্বত্র একই রূপ নয়। এটি অটোমেটিক আসে না, নির্মাণ করতে হয়। তাই দেশে দেশে বা জাতিতে জাতিতে তার ভিন্ন ভিন্ন রূপ হয়। মানবের যোগ্যতা গৃহনির্মাণ বা পানাহারের সংগ্রহে ধরা পড়ে না; ধরা পড়ে সংস্কৃতির নির্মাণ। পানাহার পশুরাও সংগ্রহ করতে পারে। ফিরাউনের ন্যায় দুর্বৃত্তরাও সুরম্য প্রাসাদ ও বিস্ময়কর পিরামিড নির্মাণ করতে পারে। কিন্তু মানবতা নিয়ে মানবের বেড়ে উঠার সংস্কৃতি নির্মাণ করতে পারে না। কারণ এজন্য চাই মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে হিদায়েত এবং হিদায়েতলব্ধ জ্ঞান। তাই নবীজী (সাঃ)কে সর্বপ্রথম নামায-রোযার হুকুম দেয়া হয়নি, দেয়া হয়েছে ইকরা তথা জ্ঞানার্জনের। অপসংস্কৃতির নির্মূলে এবং ইসলামী সংস্কৃতির নির্মাণে কাজের শুরুটি করতে হয় কোর’আনী জ্ঞানের ভিত্তিটি মজবুত করে। তখন ব্যক্তির ঈমান পুষ্টি পায় খোদ মহান আল্লাহতায়ালা থেকে। বহু দেশেই বহু মানুষ ইসলাম করেছে। কিন্তু কোর’আনী জ্ঞানের চর্চা সর্বত্র একই ভাবে হয়নি। ফলে ইসলামী সংস্কৃতি নির্মাণের কাজটিও সর্বত্র সমান ভাবে হয়নি। ফলে সহজে নজরে পড়ার মত পার্থক্য রয়ে গেছে বিভিন্ন দেশের মানুষের মুসলিম হওয়া নিয়ে। ভাষা শুধু জ্ঞানের বাহন নয়, সংস্কৃতির বাহনও। ভাষা জ্ঞানসমৃদ্ধ না হলে সে ভাষার জনগণের মাঝে উন্নত সংস্কৃতি গড়ে উঠে না। নিকোবর দ্বীপের আদিবাসীরা সভ্য মানুষ রূপে বেড়ে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে ভাষা না থাকাতে। বিষয়টি উপমহাদেশের মুসলিমদের কাছে গুরুত্ব পেয়েছিল বলেই তারা নিজ নিজ আঞ্চলিক ভাষার বদলে উর্দু ও ফারসিকে সংস্কৃতির ও বুদ্ধিবৃত্তিক পুষ্টির ভাষা রূপে বেছে নিয়েছিল। তেমন একটি প্রয়োজনেই কোন একটি প্রদেশের ভাষা না হওয়া সত্ত্বেও উর্দু আজ পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। এ বিষয়টি অত্যাধিক গুরুত্ব পেয়েছিল প্রাথমিক যুগের মুসলিমদের কাছেও। ফলে মিশর, সিরিয়া, ইরাক, মরক্কো, সূদান, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, আলজিরিয়া ও মালির ন্যায় বহুদেশের জনগণ মুসলিম হওয়ার সাথে সাথে মাতৃভাষাকে দাফন করে কোর’আনের ভাষা আরবীকে গ্রহণ করেছিল। মুর্তি পূজা বর্জনের পাশাপাশি বর্জন করেছিল ভাষা পূজাকেও। এতে সম্ভব হয়েছিল সে সব দেশে দ্রুত ইসলামী সংস্কৃতির নির্মাণ। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি হয়নি। বাংলা ভাষা ব্যর্থ হয়েছে ঘরে ঘরে কোর’আনী জ্ঞান ও দর্শন পৌঁছে দিতে। বঙ্গীয় এ দেশে তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনবসতির বাস হলে কি হবে -আজ থেকে শত বছর আগে বাংলা ভাষায় কোর’আন ও হাদীসের কোন তরজমা ছিল না। বাঙালী মুসলিম মুর্তি পূজা ত্যাগ করলেও ভাষাপূজা ত্যাগ করতে পারিনি। বরং ভাষাপূজাকে বাঙালীর ধর্ম বানাতে দেশ জুড়ে বহু লক্ষ স্তম্ভ বা বেদী গড়া হয়েছে শহীদ মিনার নাম দিয়ে। মুর্তি পূজারীগণ যেমন মন্দিরে দেবীর বেদীতে ফুল দেয়, এসব বেদীমূলেও তেমনি নগ্ন পদে ফুল দেয়া হয়। এভাবেই বাঙালী মুসলিম জীবনে বেড়েছে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির দাপট। বাঙালী মুসলিমদের মন্দিরে নিতে না পারলেও পূজার সংস্কৃতিকে তারা স্কুল-কলেজ ও মুসলিম জনপদে নিয়ে আসতে পেরেছে।
ইসলাম কবুল তথা কালেমায়ে শাহাদত পাঠের মধ্য দিয়ে মুসলিম জীবনে যে বিপ্লবটি শুরু হয় সেটি শুধু তার নিজ জীবনে সীমিত থাকে না। সে বিপ্লব ছড়িয়ে যায় তার পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র জুড়েও। সে বিপ্লবের মডেলটি হলো নবীজী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবাদের জীবনের মডেল। সেটি কোর’আনের আলোকে চিন্তা-চেতনা ও আমল-আখলাক বিশুদ্ধকরণের এক পবিত্র প্রক্রিয়া। বিশুদ্ধকরণের এ প্রক্রিয়াটিই হলো ইসলামি সংস্কৃতি। আরবীতে এটিকে বলা হয় তাহযীব। এ বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়াটি কাজ না করলে সমাজের বুকে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম রূপে বেড়ে উঠার প্রক্রিয়াই বন্ধ হয়ে যায়। তখন প্রতিষ্ঠা পায় চেতনা ও চরিত্রের ভূমিতে দূষিতকরণ প্রক্রিয়া। সেটিও বলবান করা হয় সংস্কৃতির নামে। তখন দেশ মসজিদ-মাদ্রাসায় ভরে উঠলেও জনগণের মাঝে ইসলামী চরিত্রের পূণ্যময় রূপটি দেখা যায় না। নিজেদেরকে মুসলিম রূপে পরিচয় দিলেও কাজ-কর্ম ও আচরণে কাফেরদের থেকে তাদের ভিন্নতাটি অতি সামান্যই। তখন জোয়ার আসে চুরি-ডাকাতি, ভোটডাকাতি, গুম-খুন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও সন্ত্রাসের। এগুলি হলো অপসংস্কৃতির সিম্পটম। তেমন একটি জোয়ারের দেশ হলো বাংলাদেশ। সর্বগ্রাসী এ জোয়ারের কারণেই দেশটি দুর্বৃত্তিতে বিশ্বমাঝে ৫ বার প্রথম হয়েছিল। এটি অতি গুরুতর বিষয়। অতি অপমানের বিষয়ও। দুর্বৃত্তিতে বিশ্বমাঝে ৫ বার প্রথম হওয়াটি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, ঈমান নিয়ে বেড়ে উঠা বা মানব রূপে বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে বাঙালী মুসলিমদের ব্যর্থতাটি কত বিশাল। বরং আরো বিপদ হলো, অপসংস্কৃতির সে জোয়ার দিন দিন আরো তীব্রতর হচ্ছে।
সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতির প্রক্রিয়াটি প্রতি সমাজেই নীরবে কাজ করে। সংস্কৃতির এ পাঠশালাটি কাজ করে প্রতিটি জনপদ, প্রতিটি গৃহ ও প্রতিটি শিক্ষাঙ্গণে। বাস্তবতা হলো, মানুষ বইপত্র বা স্কুল-কলেজ থেকে যা শেখে তার চেয়ে বহুগুণ বেশী শেখে সংস্কৃতি থেকে। মাছ যেমন পানিতে বেড়ে উঠে, মানুষও তেমনি বেড়ে উঠে তার সংস্কৃতির মধ্যে। জীবনের মূলপাঠ সে সেখান থেকেই লাভ করে। তাকে কেন সৎ হতে হবে, কিভাবে সৎ হতে হবে, কেন ধর্মে একনিষ্ট হতে হবে, কেন অপরের দুঃখে দুখী এবং সুখে সুখী হতে হবে, কিভাবে বড়দের সন্মান ও ছোটদের স্নেহ করতে হবে, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন বা মেহমানকেই বা কিভাবে আপ্যায়ীত করবে, জীবনের মূল ফিলোসফি কি -সে গুলি সে শেখে নিজ ঘর ও নিজ সমাজের সংস্কৃতি থেকে। সে সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়াটি যদি ইসলামী হয়, তখন একজন নিরক্ষর মানুষও সভ্য আচরণ করে। সে কখনো অশ্লিল ও অসভ্য হয় না। উলঙ্গতা ও অশ্লিলতাতেও নামে না। তবে শুধু কালেমা পাঠ বা নামায-রোযা পালনে সেটি সম্ভব হলে আজকের মুসলিমগণও প্রাথমিক যুগের মুসলিমদের ন্যায় শ্রষ্ঠ মানব রূপে গড়ে উঠতো। কারণ, কালেমা পাঠ ও নামায-রোযা আজকের মুসলিম সমাজে কম হচ্ছে না। বাস্তবতা হলো, নবীজীর (সা) আমলে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব সৃষ্টির কারণ, নামাজ-রোযার বাইরেও তখন শক্তিশালী এক সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়া ক্রিয়াশীল ছিল। তাদের শিক্ষাদীক্ষা কোন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়নি। তারা বেড়ে উঠেছে ইসলামী রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। হাজার হাজার কলেজ-বিশ্বাবিদ্যালয় ও মসজিদ থাকা সত্ত্বেও আজকের দেড়শত কোটি মুসলিমের অর্জনটি সে তুলনায় শত ভাগের এক ভাগও নয়। কারণ, কলেজ-বিশ্বাবিদ্যালয় ও মসজিদের সংখ্যা বাড়লেও বিনষ্ট হয়েছে বিশুদ্ধকরণের সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়া। স্বৈরাচারি জালেমদের হাতে বা ঔপনিবেশিক কাফেরদের শাসনে যে সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়াটা একবার বিনষ্ট হলো, সেটি আর পুনরায় প্রতিষ্ঠাই পেল না।
বড় নাশকতাটি সংস্কৃতির অঙ্গণে
ইসলামের শত্রুপক্ষের স্ট্রাটেজী স্রেফ মুসলিম দেশের উপর সামরিক অধিকৃতি নয়। শুধু অর্থনৈতিক লুন্ঠনও নয়। বরং সেটি ইসলামের সামাজিক বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া বা সংস্কৃতিকে বিনষ্ট করা। এটিই শত্রু শক্তির সবচেয়ে বড় নাশকতা। বীজকে গজাতে দেওয়ার পর তাকে বেড়ে উঠার সুযোগ না দিলে সেটি নিস্ফল আয়ু পায় মাত্র, ফল দেয় না। ইসলামের শত্রুগণ মুসলিম শিশুদের জন্ম বন্ধ করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে তাদের মুসলিম রূপে বেড়ে উঠাকে। এতে ব্যর্থ হচ্ছে ইসলামী সভ্যতার নির্মাণের কাজ। শত্রুশক্তির সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের এটিই হলো বড় সফলতা। ফলে মুসলিমদের সংখ্যা বাড়লেও সে বিশাল সংখ্যাটি ইসলামের বিজয়ে কোন অবদানই রাখতে পারছে না। বরং বেগবান হয়েছে ইসলাম থেকে দূরে সরানোর কাজ। এরই জ্বাজল্যমান উদাহরণ হলো বাংলাদেশের ১৭ কোটি মুসলমান। দেশটিতে পবিত্র কোরআন অক্ষত থাকলেও দেশের জনগণ পশ্চাদপদতায় লাগাতর বিশ্ব রেকর্ড গড়ছে। বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার বদলে যে দূষিতকরণ প্রক্রিয়া ঔপনিবেশিক শত্রু শক্তি চালু করেছিল -সেটিকে উৎখাত না করে বরং আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। ফলে দেশটি যেমন রেকর্ড গড়ছে চুরি-ডাকাতি ও গণধর্ষণে, তেমনি ভোটডাকাতি ও গুম-খুনের রাজনীতিতে। তাই বাংলাদেশের ন্যায় দেশগুলির মূল সংকটটি কৃষি, শিল্প বা ব্যবসা-বানিজ্যে নয়, বরং সেটি শিক্ষা ও সংস্কৃতির অঙ্গণে।
সংস্কৃতির মাধ্যম বহু। তেমনি অপসংস্কৃতির প্রক্রিয়াও অনেক। ইসলামী সংস্কৃতির মূলকেন্দ্র হলো মসজিদ। এটিই হলো মর্তের বুকে মহান আল্লাহতায়ালার একমাত্র নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। এখান থেকেই দ্বীনের আলো মহল্লার অন্ধকার সরায়। কিন্তু ইসলাম বিরোধী শক্তিবর্গ ইসলামী সংস্কৃতির এ প্রাণকেন্দ্রকে বহুলাংশেই প্রাণহীন ও অকার্যকর করে রেখেছে। আল্লাহর এ পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহৃত হচ্ছে নিছক নামায আদায়ের স্থানরূপে। নামাযের সময় ব্যতীত লক্ষ লক্ষ মসজিদের অঙ্গন অধিকাংশ সময় জনশূণ্য থাকে। তালা ঝুলানো হয় এর দরজায়। শিক্ষাদান, মুসল্লীদের মাঝে ভাতৃত্ব গড়া, সমাজসেবা দেয়া, জ্বিহাদ সংগঠিত করা এবং জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার যে কাজগুলো মসজিদের মিম্বর থেকে হতো -তা আজ বিস্মৃতপ্রায়। অথচ এসব বড় বড় কাজের জন্য সে সময় মসজিদ ভিন্ন অন্য কোন প্রতিষ্ঠানই ছিল না। ক্লাব, পানীয়শালা, যাত্রাদল, সিনেমা ও নাট্যমঞ্চের যে সংস্কৃতি -সেটি অমুসলিমের; মুসলিমের নয়। মসজিদের জায়নামাযের যে পবিত্রতা সেটি অন্যত্র সম্ভব নয়। তাই সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার প্রয়োজনে অন্যরা নানাবিধ সংস্থা গড়লেও পবিত্রতার স্বার্থে মুসলিমগণ শুধু মসজিদই গড়েছে। বস্তুত একজন মুসলিম তাঁর দ্বীনি ভাই বা ঘনিষ্টতম বন্ধু খুঁজে পায় মসজিদের মেঝেতে।
চরিত্র ও চেতনায় পরিশুদ্ধির বিষয়টি কয়েক মিনিটের বিষয় নয। ফলে নিছক কয়েক মিনিটের জন্য জায়নামাযে দাঁড়িয়ে নামায পড়াতে পরিশুদ্ধি আসে না। এটি এক অন্তরঙ্গ নিবিড় প্রক্রিয়া। মসজিদের মেঝেতে এর শুরু হয় মাত্র; সেটিকে অব্যাহত রাখতে হয় পথ-ঘাট, হাট-বাজার, কর্মক্ষেত্র ও গৃহের অঙ্গণেও। নামাযের বাইরেও নবীজী (সা) তাঁর সাহাবাদের নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়েছেন, দ্বীনের আলোয় তাদেরকে আলোকিত করেছেন। জ্ঞানই সংস্কারের মূল উপাদান; চরিত্র ও চেতনায় পরিবর্তনে এর বিকল্প নেই। জ্ঞানের আলোই অমুসলিমকে মুসলিম করে, এবং ব্যক্তির মাঝে সংস্কারপ্রাপ্ত এক আলোকিত মনের জন্ম দেয়। ইসলামী সংস্কৃতির মূল ভিত্তিই হলো এটি। মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআন পাকে বলেছেন, একমাত্র জ্ঞানীরাই আমাকে ভয় করে। এর অর্থ দাঁড়ায়, যেখানে জ্ঞান নেই সেখানে মহান আল্লাহতায়ালার ভয়ও নাই। ব্যক্তি তখন ব্যর্থ হয় ঈমান নিয়ে বেড়ে উঠতে। এবং বেড়ে উঠে মহান আল্লাহতায়ালার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী রূপে। এমন বিদ্রোহীদের কাছে তখন পরিত্যক্ত হয় পবিত্র কোর’আনের শরিয়তি বিধান। তাই দেশে শরিয়তী বিধানের বিলুপ্তি দেখে এ কথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়, দেশবাসী কোর’আনী জ্ঞানে কতটা অজ্ঞ। “আমরা মুসলিম” –এ কথা বলে সে অজ্ঞতা ঢাকা যায় না। তখন বুঝা যায়, অন্ধকার সরানোর কাজে মসজিদ কোন সফলতা দেখাতে পারেনি।
ইসলামী শিক্ষা কেন অপরিহার্য?
দৈহিক ভাবে বাঁচা আর ঈমান নিয়ে বাঁচাটি -এক কথা নয়। পানাহারে দৈহিক বাঁচাটি সম্ভব হলেও মুসলিম রূপে বাঁচার জন্য অপরিহার্য হলো পবিত্র কোর’আনের জ্ঞান। এবং কোর’আনী জ্ঞানের প্রয়োজনটি আরো জরুরী হয়ে পড়ে যদি বসবাসটি কোন অনৈসলামিক দেশে বা পরিবেশে হয়। প্রাণনাশী ভাইরাসের মাঝে বাঁচতে হলে ভ্যাকসিন চাই। তেমনি অনৈসলামিক সংস্কৃতির মাঝে ঈমান নিয়ে বাঁচায় অতিশয় জরুরী হলো কোর’আনের জ্ঞান। মক্কার ১৩ বছরের নবুয়তী জীবনে নবীজী (সাঃ)কে তাই অধিক সময় ব্যয় করতে হয়েছে কোর’আনের জ্ঞান বিতরণে। নামায-রোযা এসেছে বহু বছর পরে। একই কারণে জরুরী হলো মুসলিম শিশুদের জন্য শৈশব থেকেই ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা করা। পলিও রোগে আগের মত এখন সবাই পক্ষাঘাতগ্রস্ত¯হয় না। না হওয়ার কারণ, শৈশবে ভ্যাকসিন দান। শিশুর জীবনে শিক্ষা তেমনি ভ্যাকসিনের কাজ করে। তখন কুফুরীর হামলা থেকে বাঁচে শিশুর ঈমান। তবে শিক্ষাদানের এ কাজটি কখনই অমুসলিম বা মুসলিম নামধারি অনৈসলামিক ব্যক্তির দ্বারা হয় না। কারণ, শিক্ষাদানের অর্থ কিছু গেলানো নয়। বরং ক্লাসরুমে শিক্ষককে অনুকরণীয় মডেল বা মেন্টর রূপে হাজির হতে হয়। ছাত্র-ছাত্রীগণ শুধু শুনে নয়, দেখেও শেখে। চোখের সামনে শিক্ষককে দেখে যা শেখে তাই ছাত্র-ছাত্রীদের মনে বেশী টিকসই হয়।
তবে বাংলাদেশীদের জন্য ভয়ানক বিপদের কারণ, দেশটির শিক্ষাঙ্গণটি অধিকৃত হয়েছে এমন ব্যক্তিদের হাতে যাদের নিজেদের অজ্ঞতা ও ভ্রষ্টতাগুলি অতি বিশাল। তারা নিজেরা শিক্ষা পেয়েছে অনৈসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায়। চাল-চলন, পোষাক-পরিচ্ছদ ও আচরণে যার প্রদর্শন করে -সেটি ইসলামের নয়। তাই প্রশ্ন হলো, তাদের অনৈসলামিক চেতনা ও চরিত্র থেকে মুসলিম ছাত্রের জন্য শিখবার সামগ্রী কতটুকু? তাদের চেতনা ও চরিত্রে প্রকাশ ঘটে তো নিজেদের কুফরি বিশ্বাসের। তাতে থাকে ছাত্রদের মনকে বিষাক্ত করার সামগ্রী। অমুসলিম বা মুসলিম নামধারী বেঈমানকে দিয়ে কৃষিকাজ, সড়ক নির্মাণ, চিকিৎসা বা ইঞ্জিনীয়ারিংয়ের কাজ করিয়ে নেয়া যায়। কিন্তু তাকে দিয়ে কি শিক্ষাদানের কাজ হয়? শিক্ষাদানের কাজ তো জান্নাতের পথ দেখানোর কাজ। কিন্তু যারা নিজেরাই পথভ্রষ্ট তারা সে কাজ করবে কীরূপে?
শিক্ষাদানের দায়িত্বটি তাই ইসলামী জ্ঞান-সমৃদ্ধ মুসলিম শিক্ষকদের। শিশুকালে সে কাজটি নিতান্তই পিতামাতাদের। পিতামাতাদের তাই জ্ঞানবান হওয়াটিও ফরজ। ঈমানদার পিতামাতারা যখন নিজ সন্তানদের শিক্ষার দায়িত্ব নিজেরা নিয়েছেন একমাত্র তখনই তাদের ঈমান, আমল ও সংস্কৃতি সুরক্ষা পেয়েছে। কিন্তু যখনই সে কাজে অবহেলা হয়েছে তখন তাদের জীবনে শুরু হয়েছে ভ্রষ্টতা ও পরাজয়। তুরস্কের খলিফারা এককালে তাদের মেধাবী ছাত্রদের ইউরোপে পাঠাতো শিক্ষা হাসিলে। তারাই মুসলিম বিশ্বে পাশ্চাত্যের সাংস্কৃতিক রোগের বাহনে পরিণত হয়। তারা ফিরে আসে কট্টোর জাতীয়তাবাদী ও সেক্যুলারিস্ট রূপে। তুর্কীদের সে ঈমানবিনাশী বিষ আরব ও কুর্দিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে মৃত্যু ডেকে আনে প্যান-ইসলামিক চেতনার। ফলে বিশাল উসমানিয়া খেলাফত ভেঙ্গে বিশেরও বেশী টুকরোয় বিভক্ত হয়ে পড়ে। অবিকল একই অবস্থা হয়েছে ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর যে সব ছাত্র ও শিক্ষকদের স্কলারশিপ দিয়ে পাশ্চাত্যের দেশে পাঠানো হয়েছিল তাদের বেশী ভাগ ফিরে আসে দেশ ও ধর্মের পরম শত্রু রূপে। তারা পরিণত হয় সেক্যুলারিজম, মার্কসবাদ, জাতীয়তাবাদ ও নাস্তিকতার সৈনিককে। দেশের মিডিয়া, বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তখন দখলে যায় ইসলামের এসব শত্রুদের হাতে। তারা আনন্দ পায় দেশ গড়াতে নয়, বরং দেশকে দুর্বল ও ক্ষুদ্রতর করাতে। ভারতের ন্যায় বিদেশী প্রভুদের সেবাতেই এসব বাঙালী বুদ্ধিজীবীদের তৃপ্তি। ১৯৪৭’য়ের পাকিস্তান তাই টেকেনি। সে ধারা বাংলাদেশসহ বহু মুসলিম দেশে এখনো অব্যাহত রয়েছে। অথচ মুসলিম বিশ্বে এরূপ ফেতনা পূর্বে কখনোই এতটা বেগবান ছিল না। এদের কারণে মুসলিমগণ যে শুধু পরাজিত হচ্ছে তা নয়, অপসংস্কৃতির স্রোতে ভাসছে জঞ্জালের ন্যায়।
মুক্তি কীরূপে?
প্রশ্ন হলো, শত্রুশক্তির এরূপ অধিকৃতি ও স্রোতে ভাসা থেকে মুক্তি কীরূপে? বাঁচার সে পথটিও মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোর’আনে বাতলে দিয়েছেন। সেটি মহান আল্লাহতায়ালার হাতল বা রশিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে। মহান আল্লাহতায়ালার সে হাতলটি হলো পবিত্র কোরআন। যারা সে হাতল বা রশিকে শক্ত ভাবে আঁকড়ে ধরে একমাত্র তারাই বাঁচে অপসংস্কৃতির স্রোতে ভাসা থেকে। একমাত্র তাদের জন্যই রয়েছে পরকালীন মূক্তি। তারা স্থান পাবে জান্নাতে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহর সে প্রতিশ্রুতিটা আসছে এভাবে, “ফা মাই ইয়াকফুর বিত্তাগুত ওয়া ইউমিমবিল্লাহ, ফাকাদিস তামসাকা বিল উরওয়াতিল উসকা লান ফিসামা লাহা” অর্থঃ যে ব্যক্তি তাগুতকে তথা আল্লাহর অবাধ্যতা ও দুষ্কর্মকে পরিহার করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে, সে এমন এক হাতলকে শক্ত ভাবে ধরে -যা থেকে সে কখনো বিচ্ছিন্ন হয় না।” –(সুরা বাকারা, আয়াত ২৫৬)। আর এটিই হলো হিদায়েতের পথ। পথভ্রষ্টতা ও অপসংস্কৃতি বাঁচার এটাই এক মাত্র পথ। এবং এটিই সিরাতাল মুস্তাকীমের পথ। ১ম সংস্করণ, ১৩/০৯/২০০৩; ২য় সংস্করণ ১৩/১১/২০২০।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018