সমগ্র বাংলাদেশ এখন রণাঙ্গন: নৃশংস আগ্রাসন এখন হাসিনার প্রাইভেট সেনাবাহিনীর

ফিরোজ মাহবুব কামাল

সেনাবাহিনী এখন হাসিনার এবং সমগ্র দেশ এখন শাপলা চত্বর 

বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এখন আর বাংলাদেশের সেনাবাহিনী নয়, এটি এখন ভোটডাকাত খুনি হাসিনার প্রাইভেট সেনাবাহিনী। তেমনি বাংলাদেশের পুলিশ এখন আর বাংলাদেশের পুলিশ নয়, সেটিও খুনি হাসিনার প্রাইভেট পুলিশ বাহিনী। তেমনি বিজিবি, RAB এবং DGFI’য়ের উপর পুরা মালিকানাও তার। এমন কি দেশের আদালত এবং প্রশাসনও ভোটডাকাত হাসিনার। ভোটডাকাতির মাধ্যমে হাসিনা যেমন সমগ্র দেশের উপর তার নিজের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছে, তেমনি মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উপরও।

ইরানে ইসলামী বিপ্লবের আগে দেশটির পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনী, গুপ্তচর সংস্থা, আদালত ও প্রশাসনসহ সবগুলির মালিক ছিল সে সময়ের বাদশাহ মহম্মদ রেজা শাহ পাহলবী। সেসব প্রতিষ্ঠানগুলির মূল দায়িত্ব ছিল স্বৈরাচারি বাদশাহকে পাহরা দেয়া। এবং প্রয়োজন দেখা দিলে কামানের মুখ প্রতিবাদী জনগণের দিকে তাক করা। ফলে সেদেশে বার বার গণহত্যা হয়েছে।  সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইনসহ প্রতিটি স্বৈরশাসিত দেশের একই অবস্থা।

বিগত ১৫ বছর যাবত ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশকেও একই অবস্থায় নিয়ে গেছে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ এখন আর প্রজাতন্ত্র নয়, বরং নিরেট রাজতন্ত্র। তাই দেশের সবগুলি সামরিক এ বেসামরিক প্রতিষ্ঠানের উপর নিজের একচ্ছত্র মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছে শেখ হাসিনা। তার ইশারায় আদালতের বিচারকগণ তাই রাতারাতি রায় পাল্টায়, এবং নিষিদ্ধ বিষয়কে সিদ্ধ করে। তারই ইশারায় দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, বিজিবি ও RAB জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যায় নামে। সেটি যেমন ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে দেখা গেছে; এখন দেখা গেছে সমগ্র দেশজুড়ে। এখন সমগ্র দেশ পরিণত হয়েছে শাপলা চত্বরে।

 

সমগ্র দেশ এখন রণক্ষেত্র

সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে এখন  রণক্ষেত্র।‌ প্রতিটি সভ্য দেশে যুদ্ধ হয় দেশের সীমান্তে বিদেশী শত্রুর বিরুদ্ধে। আর বাংলাদেশে যুদ্ধ হয় দেশের ভিতরে; এবং সেটি নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে। এবং সেটি নিজ দেশের সেনাবাহিনীর দ্বারা। সে যুদ্ধটি চলছে বাংলাদেশের প্রতিটি নগর-বন্দরে। ফলে প্রতিটি জনপদে গুলি চলছে, লাশ পড়ছে এবং বারুদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সে সাথে চলছে লাশ গায়েবের ষড়যন্ত্র। স্বাধীনতার শত্রুরা এবং তাদের বিদেশী মিত্ররা এখন সর্বশক্তি নিয়ে ময়দানে নেমেছে।

যুদ্ধক্ষেত্রের ন্যায় এখন বাংলাদেশের ভিতরের রাজপথ দিয়ে ট্যাংক ও সাঁজোয়া গাড়ি চলছে। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে অস্ত্রধারী সেনা সদস্য এবং বিজিবি’র সেপাহীরা। তাদের ছাত্রছায়ায় পুলিশ এবং র‍্যাব ঘরে ঘরে ঢুকে ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। তাদের উপর নির্মম নির্যাতন করছে; অনেককে গুম ও হত্যা করছে।  হাজার হাজার নেতা-কর্মী এখন জেলে। 

বাংলাদেশের আকাশে এখন অসংখ্য হেলিকপ্টার গানশিপ। প্রতিবাদী জনগণের উপর গুলি বর্ষণ করা হচ্ছে হেলিকপ্টার দিয়ে। শেখ হাসিনার সেনাবাহিনী নিজেদের বর্বরতা গোপন করতে বিগত চার দিন যাবত দেশের সকল যোগাযোগ বন্ধ রেখেছিল। বন্ধ রেখেছিল ইন্টারনেট, ইউটিউব, facebook, whatsapp, এবং ফোন যোগাযোগও। সেগুলি বন্ধ রাখায় যেহেতু বন্ধ হয়ে গেছে হাজার হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য, তাই বাধ্য হয়েছে সেগুলি খুলতে। যোগাযোগ চালু হওয়ায় বেরিয়ে আসছে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও  RAB’য়ের নৃশংসতার অসংখ্য বীভৎস ছবি।

সেনা ও পুলিশ হামলার ফলে যারা নিহত হয়েছে তাদের সংখ্যা গায়েব করতে দেশের হাসপাতালগুলি থেকে মৃতদের তালিকা গায়েব করা হয়েছে। এভাবে বিলুপ্ত করা হচ্ছে গণহত্যার আলামত। ঠিক একই ভাবে গণহত্যার আলামত গায়েব করা হয়েছিল  ২০১৩ সালের ৫ই মে সাপলা চত্বরের গণহত্যার সময়। 

যে কোন সভ্য দেশে সেনাবাহিনী পালিত হয় জনগণের রাজস্বের অর্থে; এবং তাদের মূল দায়িত্ব হয় জনগণের জান-মাল ও স্বাধীনতাকে প্রতিরক্ষা দেয়া।‌ কিন্তু সে কাজটি বাংলাদেশে হচ্ছে না; বরং হচ্ছে উল্টোটি। জনগণের অর্থে কেনা বুলেট, কামান, ট্যাংক ও হিলিকপ্টার ব্যবহৃত হচ্ছে জনগণের হত্যায়। অথচ বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষিরা যখন গুলি করে পাখির ন্যায় বাংলাদেশীদের হ্ত্যা করে তখন এ সেনাবাহিনীকে নিস্ক্রিয় দেখা যায়। নিস্ক্রিয় দেখা গেছে তখনও যখন ৫৭ জন সেনা অফিসারকে পিলখানায় হত্যা করা হয়। এ থেকে বুঝা যায়, এ সেনা বাহিনী কার? হাসিনার সেনাবাহিনী যে জনগণের জানমালের সুরক্ষায় নামবে না -এটি হলো তারই প্রমাণ। তারা দায়িত্ব নিয়েছে শুধুা তাদের মালিক হাসিনার গদি পাহারা দেয়ায়।

যে কোন সভ্য দেশে পুলিশের কাজ হয় জনগণের জান-মাল ও ইজ্জতের পাহারা দেয়া। কাজ হয় খুনিদের গ্রেপ্তার করা ও আদালতে পেশ করা। বাংলাদেশের শত শত মানুষ খুন হলো, হাজার হাজার মানুষ আহত হলো -কিন্তু এ অবধি কাউকে গ্রেফতার করা হলো না। এ থেকে বুঝা যায় বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী আসলে কার? জনগণের রাজস্বে প্রতিপালিত এ পুলিশ বাহিনী জনগণে হলে জনগণের জান-মালের প্রতিরক্ষা দিতে তাদের ময়দানে দেখা যেত। খুনিদের গ্রেফতার করতো এবং আদালতে খাড়া করতো। কিন্তু তারা সেটি করিনি। বরং হাসিনার এ পুলিশ বাহিনী পাহারা দিচ্ছে হাসিনার ন্যায় গণহত্যাকারী এক খুনিকে। সে সাথে হাসিনার শাসন বাঁচাতে পুলিশ বাহিনী নিজেই নেমেছে নিরস্ত্র ছাত্রদের বিরুদ্ধে গণহত্যায়। 

ভোট ডাকাত হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছে, পুলিশ নাকি আত্মরক্ষার স্বার্থে গুলি চালিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নিরস্র ছাত্ররা কি করে পুলিশের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ালো? তারা ক’জন পুলিশকে হত্যা করেছে? পুলিশ হত্যায় নিরস্ত্র ছাত্রদের সামর্থ্য থাকলে তো ছাত্রদের হাতে বহু পুলিশের মৃত্যু হতো। কিন্তু সেটি হয়নি। এটি অপরাধী হাসিনা সরকারের আরেক মিথ্যাচার।

 

যুদ্ধে এখন দুটি পক্ষ

যে কোন যুদ্ধের ন্যায় বাংলাদেশের চলমান যুদ্ধেও দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষে রয়েছে দখলদার হাসিনা এবং হাসিনার সেনাবাহিনী, বিজিবি, RAB ও পুলিশ। এরাই এ যুদ্ধের সশস্ত্র পক্ষ। এরা অস্ত্রকে ব্যবহার করছে হাসিনার রাজনৈতিক স্বার্থকে পাহারা দেয়ার কাজে। অতএব সন্ত্রাসের আভিধানিক সংজ্ঞায় এরা সন্ত্রাসী। বাংলাদেশকে তারা সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করেছো। অপরপক্ষে রয়েছে নিরস্ত্র মজলুম ছাত্র-জনগণ। এদের যুদ্ধ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।  

যে কোন রণাঙ্গনে নিরপেক্ষ ও নিষ্ক্রিয় পক্ষ বলে কিছু থাকে না। শত্রুর হামলার মুখে যারা নিষ্ক্রিয় ও নিরপেক্ষ -তারা মূলত শত্রুকেই সাহায্য করে। তাই নিষ্ক্রিয় ও নিরপেক্ষদেরও শত্রুর পক্ষেরই মনে করতে হয়। তাদেরকেও চিনতে হয়। যুদ্ধ করতে হয় তাদের বিরুদ্ধেও। এরূপ নিষ্ক্রিয়দের নবীজী (সা:)’র যুগেও দেখা গেছে। তাদেরকে সে সময় মুনাফিক বলা হয়েছে। পবিত্র কুর’আনে মুনাফিকদের কাফিরদের চেয়েও নিকৃষ্ট বরা হয়েছে। কারণ, তারা ঘরের শত্রু এবং বিজয় বাড়ায় বাইরের শত্রুদের।

 

এ যুদ্ধ বিশুদ্ধ জিহাদ: ফরজ হলো এ জিহাদে লাব্বায়েক বলা

যুদ্ধ নিয়ে ইসলামের বিধান অতি সুস্পষ্ট। হামলাকারী পক্ষ যদি নৃশংস জালেম হয়, ইসলামের শত্রু হয়, খুনি হয়, দুর্বৃত্ত ভোট ডাকাত হয় এবং ভারতের ন্যায় পৌত্তলিক কাফের শক্তির সক্রিয় পার্টনার হয় -তবে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা প্রতিটি মুসলিমের উপর ফরজ। এমন একটা যুদ্ধ কোন সাধারণ যুদ্ধ নয়, এ যুদ্ধ পবিত্র ও বিশুদ্ধ জিহাদ। তখন সে অধিকৃত জনপদের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে প্রতিক্ষণ ধ্বনিত হয় জিহাদের আযান। নামাজের আযানে লাব্বায়েক বলা যেমন ফরজ, তেমনি ফরজ হলো এমন জিহাদের আযানে লাব্বায়েক বলা। অধিকৃত মুসলিম দেশের সব নাগরিককেই তখন সে জিহাদের যোদ্ধা তথা মুজাহিদ হতে হয়। সে জিহাদ থেকে দূরে থাকাটি নিরেট মুনাফিকি। তখন যুদ্ধ করতে হয় অর্থ দিয়ে, মেধা দিয়ে, শ্রম দিয়ে ও রক্ত দিয়ে । এবং যা কিছু হামলারত শত্রুশক্তিকে সহায়তা দেয় এবং তাদের শক্তি বাড়ায় -সেগুলি পরিহার করতে হয়। কারণ, সেটি হারাম।

মুসলিমদের প্রতিটি যুদ্ধই জনগণের যুদ্ধ। মুসলিম ইতিহাসের বদর, ওহুদ, খন্দক, মুতা, হুনায়নের ন্যায় প্রতিটি যুদ্ধে প্রতিটি মুসলিমই মুজাহিদ ছিলেন। কোন মুসলিমই সেদিন নীরব ও নিষ্ক্রিয় ছিলেন না।  সেদিনের জিহাদে যারা নিরব ও নিষ্ক্রিয় ছিল তারা চিহ্নিত হয়েছিল মুনাফিক রূপে। ইলামের এ বিধান সর্বকালের জন্য। তাই বাঙালি মুসলিমদের প্রত্যেকই নিজ নিজ স্থান থেকে নিজ নিজ সামর্থ্য নিয়ে এ জিহাদে অংশ নিতে হবে; নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকার কোন সুযোগ নেই।

 

জনগণ এখন তোপের মুখে

রণাঙ্গনে যাকেই মুখোমুখি দেখা যায় -সেই শত্রু মনে হয়। এবং তাকেই হত্যা করা হয়। রণাঙ্গনের সে নীতি অবলম্বন করে চলেছে হাসিনার সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব এবং পুলিশ বাহিনী। এরা মনে করে, তারা একটি যুদ্ধের মধ্যে আছে। অতএব সামনে যাকেই পাচ্ছে তাকেই তারা শত্রু মনে করছে এবং হত্যা করছে। ফলে ইতিমধ্যেই তাদের হাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। দেশ জুড়ে যে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে সেটি হতাহতের সংখ্যা থেকেই বুঝা যায়। এ যুদ্ধ এখন আর শুধু দখলদার হাসিনার সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে নয়, বরং হাসিনার পার্টনার ভারতের বিরুদ্ধেও। কারণ, ভারতীয় গুপ্ত ঘাতকেরা যে এ যুদ্ধে নেমেছে -সে প্রমানও পাওয়া যাচ্ছে। আর নামবেই বা না কেন? বাংলাদেশকে তো ভারত একাত্তরের যুদ্ধজয়ের গণিমতের মাল মনে করে।

যুদ্ধকালীন সময় প্রতিপক্ষকে যেকোনো ভাবে সাহায্য করা হারাম। হারাম হলো হামলাকারীকে অর্থ দিয়ে, বয়ান দিয়ে, শ্রম দিয়ে, মেধা দিয়ে সাহায্য করা। যুদ্ধে হাসিনার বাহিনী জিতলে বাংলাদেশের বুকে ইসলামের ও মুসলিমদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। তখন বিজয়ী হবে হিন্দুত্ববাদী ভারত ও তার বাংলাদেশী দাসেরা। তখন সভ্যভাবে ও স্বাধীনভাবে বসবাস করা অসম্ভব হবে। দেশ হবে আরেকটি অধিকৃত কাশ্মীর, ফিলিস্তিন বা আরাকান।

 

সামরিক বাহিনী এখন চৌকিদার বাহিনী

কোন একটি রাজনৈতিক সরকারকে একমাত্র রাজনৈতিক শক্তির বলে তথা জনপ্রিয়তার উপর ভর করে ক্ষমতায় থাকতে হয়। সে ক্ষমতা যখন লোপ পায়, তখন বিলুপ্ত হয় ক্ষমতায় থাকার শাসনতান্ত্রিক অধিকার। সভ্য দেশে জনগণ শুধু ভোট দিয়ে নয়, লাখে লাখে রাস্তায় নেমেও সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানায়। গণতান্ত্রিক সরকারকে তখন জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে গদি থেকে নেমে যেতে হয় -যেমন জেনারেল আইয়ুব ও জেনারেল এরশাদ নেমে গিয়েছিলেন। বুঝতে হবে স্বৈরাচারি আইয়ুব ও এরশাদ কোন নির্বাচনে হেরে গিয়ে ক্ষমতা থেকে নামেননি। এ ক্ষেত্রে ঊল্লেখ্য যে, এবারে বাংলাদেশে যে সরকার বিরোধী আন্দোলন হলো এরূপ তীব্র আন্দোলন জেনারেল আইয়ুব ও জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে হয়নি। এমন কি বাংলাদেশের সমগ্র ইতিহাস হয়নি। তাই হাসিনার বিরুদ্ধে সমগ্র দেশ জুড়ে ধ্বনিত হয়েছে বিকট অনাস্থার রায়। জনগণের রায়ের প্রতি সামান্য শ্রদ্ধাবোধ থাকলে হাসিনার উচিত ছিল পদত্যাগ করা। সমস্যা হলো, কোন দুর্বৃত্ত ভোটডাকাত ও খুনির মাঝে সে বিবেকবোধ, মূল্যবোধ ও মানবতা কাজ করে না। তাই হাসিনা আরো নৃশংস অপরাধে নামবে সেটাই স্বাভাবিক। হাসিনা তাই বেছে নিয়েছে গণহত্যার পথ -যে পথ আইয়ুব ও এরশাদ পরিহার করেছিলেন।   

অথচ সভ্য দেশে কোন রাজনৈতিক দলেরই পুলিশ ও সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকার অধিকার নাই। সেটি দেশের শাসনতন্ত্র বিরোধী।  সরকারের কাজ শাসনতন্ত্রকে প্রতিরক্ষা দেয়া, সেটিকে অমান্য করা নয়। যখনই জনগণকে দমন করতে পুলিশ, বিজিবি, RAB ও সামরিক বাহিনীকে ময়দানে নামানো হয়, তখন বুঝতে হবে সরকার শাসনতন্ত্রকে অমান্য করছে। তাই হাসিন সরকার এখানে গুরুতর অপরাধী।   

সামরিক বাহিনীর কাজ দেশের সীমান্তকে প্রতিরক্ষা দেয়া, কোন ব্যক্তির গদিকে সুরক্ষা দেয়া নয়। যখন কোন সামরিক বাহিনী স্বৈরাচারী শাসকের গদি রক্ষায় নিয়োজিত হয়, তখন সেটি আর সামরিক বাহিনী থাকে না; সেটি তখন গদি বাহিনী বা চৌকিদার বাহিনীতে পরিণত হয়। পরিতাপের বিষয় হলো, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী তেমনি এক চৌকিদার বাহিনী পরিণত হয়েছে। পুলিশ বাহিনী পরিণত হয়েছে ছাত্র লীগের বিকল্প আরেক রাজনৈতিক গুন্ডাবাহিনীতে।

 

যে কাফফারা দিতেই হবে

একথা নিশ্চিত বলা যায়, খুনি হাসিনা সহজে যাচ্ছে না। সে জেনো বুঝে গণহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। হাসিনার মনিব ভারতও সেটিই চায়। আর চৌকিদার বাহিনীর চাকর-বাকরেরা সর্বাত্মক চেষ্টা করবে মনিব হাসিনার গদি বাঁচাতে। কারণ, হাসিনার বাঁচার উপর নির্ভর করে তাদের বাঁচা। কারণ, হাসিনার পতন হলে তাদেরও চাকুরি হারাতে হবে।

আর বাঙালি মুসলিমদেরও রক্তাক্ত কাফফরা দিতে হবে তাদের অতীত পাপের। সেটি মুজিবের ন্যায় বাঙালি ফ্যাসিবাদের জনক, গণতন্ত্রের খুনি, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের সেবক এবং ইসলামের শত্রুকে দীর্ঘকাল নেতা, পিতা ও বন্ধুর আসনে বসানোর। এবং সে পাপ একাত্তরে ভারতীয় পৌত্তলিক বাহিনীর বিজয় নিয়ে উৎসব করার।  কারণ, মহান আল্লাহতায়ালা শুধু ফিরাউনকেই শাস্তি দেন না, যারা ফিরাউনকে ভগবানের আসনে বসিয়ে পূজা দেয় তাদেরও শাস্তি দেন। তাছাড়া স্বাধীনতা, ঈমান ও ইজ্জত নিয়ে বাঁচার যে বিশাল খরচ আছে -সে খরচ বাঙালি মুসলিমগণ পূর্বে কখনো পেশ করেনি। এমন কি তখনও পেশ করিনি যখন এ দেশ ইংরেজ কাফিরদের দখলে যায়। এখন সে খরচ অবশ্যই পেশ করতে হবে, নইলে গণহত্যা ও ভারতের গোলামী নিয়েই বাঁচতে হবে। ২৫/০৭/২০২৪     

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *