বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের তান্ডব: মুক্তি কীরূপে?
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on March 31, 2022
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- 1 Comment.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
ফ্যাসিবাদ কী?
সমগ্র মানব ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংসতম ও বর্বরতম দুঃশাসনটি হলো ফ্যাসিবাদের। জনগণের উপর এটি ভয়ানক আযাব নিয়ে হাজির হয়। এ শাসনে মানুষ তার মৌলিক অধিকার হারায়, ইজ্জত হারায়, সভ্য ভাবে বেঁচে থাকার স্বাধীনতা হারায়। ফ্যাসিবাদের নমুনা হলো, এখানে আইনের শাসন চলে না। এখানে কোন নিরপেক্ষ পুলিশ, নিরপেক্ষ প্রশাসন ও নিরপেক্ষ আদালত বলে কিছু থাকে না। রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় শাসক চক্রের খেয়াল খুশি মোতাবেক। জনগণ এখানে অধিকারহীন হয়। জনগণের সামনে শুধু একটি পথই খোলা থাকে সেটি হলো শাসকচক্রের প্রতি নিঃশর্ত গোলামীর।
ফ্যাসিবাদী শাসকচক্র একটি দলীয় এজেন্ডা নিয়ে ছলে-বলে-কৌশলে রাষ্ট্রী ক্ষমতা দখলে নেয়। কখনো সেটি সামরিক শক্তির বলে, কখনো বা ভোটচুরি ও ভোটডাকাতির মাধ্যমে, এবং কখনো বা বিদেশী শক্তির মদদ নিয়ে। তাই ফ্যাসিবাদী যেমন সামরিক হতে পারে, তেমনি বেসামরিকও হতে পারে। কখনো রাজতান্ত্রিকও হতে পারে। সকল প্রকার ফ্যাসিবাদেই পেশী শক্তিই হলো এদের শক্তির মূল উৎস, জনগণের ভোট বা জনসমর্থন নয়। যে কোন ভাবে ক্ষমতা একবার হাতে পেলে সেখান থেকে নামানোর সকল প্রকার গণতান্ত্রিক ও আইনগণ পথগুলি তারা বন্ধ করে দেয়। গণতন্ত্রকে এরা কবরে পাঠায়। রাস্তায় মিটিং-মিছিলের অধিকারও কেড়ে নেয়। কেড়ে নেয় জনগণের সংগঠিত হওয়ার অধিকার। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ কি চায় -সেটি ফ্যাসিস্টদের কাছে গুরুত্ব পায় না। তাদের কাছে সেটিই গুরুত্ব পায় যা তাদের দলীয় নেতা বা নেত্রী চায়। রাষ্ট্রের স্বার্থের বদলে গুরুত্ব পায় শুধু দলীয় স্বার্থ। জনগণ শুধু দর্শকে পরিণত হয়।
ফ্যাসিবাদী চক্রের আরেক আলামত হলো, ক্ষমতা হাছিলের লক্ষ্যে এবং নিজেদের দলীয় শাসন বাঁচাতে জনগণের বদলে তারা বিদেশী শক্তির উপর নির্ভর করে। তাদের সাথে চুক্তি করে এবং প্রয়োজনে বিদেশী সেনাবাহিনীকে দেশের মধ্যেও ডেকে আনে। এভাবে দেশের উপর দখলদারী বাড়ে বিদেশীদের। শেখ মুজিব ও তার দল তাই ভারতীয় বাহিনীকে নিজ দেশের অভ্যন্তরে ডেকে এনেছিলেন। সেদিন থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ভারতের দখলদারী। সিরিয়ার ফ্যাসিবাদী শাসক খুনি বাশার আল আসাদ তেমনি রাশিয়ার বর্বর সেনাবাহিনীকে নিজ দেশে ডেকে এনেছে। রাশিয়াকে অনুমতি দিয়েছে ঐতিহাসিক আলেপ্পো শহরসহ বহু শহর ধ্বংসের। একই ভাবে ফ্যাসিবাদী আরব শাসকগণ নিজেদের শাসন বাঁচাতে মার্কিন বাহিনীকে নিজ দেশে ঘাঁটি বানানোর অনুমতি দিয়েছে। বাংলাদেশও ফ্যাসিবাদী হাসিনা ভারতকে করিডোর দিয়েছে এবং দেশের সমুদ্র বন্দরগুলি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।
ফ্যাসিবাদী শক্তি সব সময়ই দেশের প্রচলিত আইন, সংবিধান, নিরপেক্ষ প্রশাসন ও দায়িত্বশীল পুলিশকে নিজেদের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথে তারা বাধা মনে করে। ফলে ক্ষমতায় এসে সর্বপ্রথম এগুলিকে তারা ধ্বংস করে। পুলিশের সেপাই-অফিসার, সেনাবাহিনীর সদস্য, আদালতের বিচারক ও প্রশাসনের কর্মচারীদেরকে এরা অনুগত চাকর-বাকরে পরিণত করে। কর্মচারীদের মাঝে যারাই মেরুদন্ড দেখায় তারাই চাকুরি হারায়। তাদের হামলার লক্ষ্য হয় দেশের সিভিল সোসাইটিগুলিও। কারণ, সেখানে জনগণ কথা বলার সুযোগ পায় এবং সরকারের বিরুদ্ধে সেগুলিতে জনগণ সংগঠিত হয়। বাংলাদেশের এসবগুলি প্রতিষ্ঠানগুলি হয় ধ্বংসপ্রাপ্ত, অথবা শৃঙ্খলিত।
যুদ্ধ জনগণের বিরুদ্ধে
ফ্যাসিবাদীরা দেশের প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী, আদালতের বিচারক ও সেনাবাহিনীর অফিসারদের হাত থেকে আইনমাফিক দায়িত্ব পালনের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। সেগুলি তাদের অনুগত গোলামে পরিণত করে। তেমনি গোলামে পরিণত করে দেশের জনগণকেও। ফ্যাসিবাদীগণ দেশের মধ্য নির্মূলমুখী একটি যুদ্ধ-যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তাদের কাছে শত্রু গণ্য হয় দেশের জনগণ। তাদের মধ্য কাজ করে চরম জনভীতি। কারণ তারা জানে জনগণ রাস্তায় নামলে তাদের ক্ষমতার ভিত ধ্বসিয়ে দিতে পারে। তাই ফ্যাসিবাদীদের মূল যুদ্ধটি শুধু বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে নয়, জনগণের বিরুদ্ধেও। জনগণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা সমগ্র দেশকে একটি জেলখানায় পরিণত। জনপদে হাজার হাজার গুপ্তচর নামায় জনগণের উপর নজরদারী করতে। বাংলাদেশে জনগণের উপর নজরদারীর কাজে হাসিনা সরকারকে সর্বাত্মক ভাবে সাহায্য করছে ভারতীয় গুপ্তচর RAW। ভারতের জন্য বাংলাদেশ হলো অতি কম ব্যয়ের সহজ প্রকল্প। এক কোটি কাশ্মিরীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৬ লাখ সৈন্য নামিয়েও ভারত হিমসিম খাচ্ছে। অথচ ভারত বাংলাদেশকে নিজ পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখছে মাত্র কিছু হাজার RAW’য়ের গুপ্তচর পাঠিয়ে। তাছাড়া নানা দেশের রাজধানীতে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী সরকার ও তার ভোটডাকাতির পক্ষে সাফাই পেশ করে আসছে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মচারিগণ।
ফ্যাসিবাদীগণ একমাত্র তাদের নিজ দলীয় নেতা বা নেত্রীকে মান্যতা ও সম্মান দেয়। সে দলীয় নেতা ও নেত্রী যত নৃশংস ও দুর্বৃত্তই হোক -তাকে এরা পূজনীয় করে গড়ে তোলে। ফ্যাসিবাদী চক্রের বাইরের ব্যক্তি যদি পয়গম্বরও হয় তারা শুধু তার ইজ্জতহানীই করে না, তার প্রাণনাশেও চেষ্টা করে। ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রাচীনতম মডেল হলো ফেরাউনের শাসন। নিজে অতিশয় নৃশংস ও বর্বর হলেও ফিরাউন নিজেকে ভগবান রূপে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল। জনগণকে বাধ্য করেছিল তাকে ভগবান বলতে। যারাই তার বিরুদ্ধে খাড়া হতো তাদের হতো মৃত্যুদণ্ড। হযরত মূসা (আ:) ও হযরত হারুন (আ:)’র মত মহান নবীগণও ফিরাউন ও তার অনুচরদের হাত থেকে রেহাই পাননি। তাদেরকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আর আধুনিক যুগে ফ্যাসিবাদী শাসকের নমুনা হলো জার্মানীর হিটলার। সেখানে লক্ষ লক্ষ ইহুদীদের বিনা বিচারে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রক্ষা পায়নি বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীগণও। সে দেশটিতে বিচার ব্যবস্থাকে সম্পুর্ন নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল। সেই একই অসভ্য ও বর্বর শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বাংলাদেশে।
বর্বর নৃশংসতায় ফ্যাসিবাদী সরকার সম্পূর্ণ লাগামহীন। যা ইচ্ছা তারা তাই করে। তাদের নির্মম শাসনের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলাই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকারের জুলুম নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে প্রাননাশ হয়। স্বাধীনভাবে কথা বলা, মিটিং-মিছিল করা ও লেখালেখী করার অধিকার ফ্যাসিবাদীরা জনগণকে দেয় না। সে অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে বাংলাদেশের বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংস ভাবে লাশ হতে হয়েছে। সরকারের সমালোচনা করায় বহু সাংবাদিককে জেলে যেতে হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে গুম ও খুনের শিকার হতে হয়েছে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ই মে নিরস্ত্র ও নিরপরাধ মানুষের হত্যায় সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অসংখ্য মানুষকে হত্যার পর তাদের লাশ গায়েব করা হয়েছিল। অথচ রাস্তায় শান্তিপূর্ণ ধর্ণা ছাড়া তাদের কোন অপরাধই ছিল না।
ফ্যাসিবাদের অর্থ দেশবাসীর পরাধীনতা
ফ্যাসিবাদী শাসনে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা বাঁচে না। সেগুলিকে কবরে পাঠানো হয়। জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় নিষ্ঠুর পরাধীনতা। স্বাধীনতা এখানে একমাত্র দুর্বৃত্ত শাসক ও তার অনুচরদের। জনগণ পরিণত হয় অধিকারহীন গোলাম প্রজাতে। ইচ্ছামত কথা বলা, লেখালেখী ও বক্তৃতা-বিবৃতির স্বাধীনতাও একমাত্র শাসকচক্রের। তারা অনর্গল মিথ্যা বললেও সেটির প্রতিবাদ করা যায়না। প্রতিবাদ করলে দেশের শত্রু রূপে আখ্যায়ীত হতে হয়। এমন কি বিদেশের এজেন্ট বা দালাল রূপে চিত্রিত করা হয়। তাতে প্রাণনাশের সম্ভাবনা বাড়ে। ফ্যাসিবাদ মানেই তাই নিষ্ঠুর পরাধীনতা। পরিতাপের বিষয় হলো, সে পরাধীনতাই উপহার দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অথচ এই পরাধীনতাকে তারা ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করে স্বাধীনতা রূপে। তবে এ পরাধীনতার জনক আজকের ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনা নয় বরং সত্তরের দশকের আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ মুজিব। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে কবরে পাঠিয়ে শেখ মুজিব একদলীয় স্বৈরাচারী বাকশাল উপহার দিয়েছিলেন। জনগণের গলায় তিনিই পড়িয়েছিলেন পরাধীনতার শিকল।
মুজিবের শাসনামলে বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতা বাঁচেনি। শেখ মুজিব কেড়ে নিয়েছিলেন রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা, পত্রিকা প্রকাশের স্বাধীনতা, মিটিং-মিছিলের স্বাধীনতা এবং কথা বলার স্বাধীনতা। এমন কি কেড়ে নেয়া হয় বিরোধীদের বেঁচে থাকার স্বাধীনতাও। বিচারবহির্ভূত হত্যাই ফ্যাসিবাদের প্রধানতম চরিত্র। বিরোধীরা অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক সেটি ফ্যাসিবাদীরা চায় না। মুজিব আমলে তাই হত্যার শিকার হন হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী। বস্তুত বাংলাদেশের মাটিতে বিচার-বহির্ভূত হত্যার শুরু হয়েছিল শেখ মুজিবের হাত দিয়েই। শেখ হাসিনার হাতে সেটি বহুগুণ বেড়েছে। শেখ মুজিবের সময় বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়েছিল বিরোধীদলীয় নেতা সিরাজ শিকদারকে। পুলিশের হাতে বন্দী সিরাজ শিকদারের হত্যার পর সংসদে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিব দম্ভভরে বলেছিলেন, কোথায় আজ সিরাজ শিকদার? ফ্যাসিবাদী শাসকগণ এভাবেই পরাধীন জনগণের সামনে নিজেদের বিজয়-উল্লাস জাহির করে।
ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি কীরূপে?
বাংলাদেশীদের জন্য বড়ই দুর্ভাগ্য হলো, তাদের ঘাড়ের উপর চেপে বসেছে দেশটি ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস ও বর্বরতম দুর্বৃত্ত শাসন। এ শাসন অসম্ভব করেছে সভ্য ভাবে বাঁচা। কিন্তু প্রশ্ন হলো এ শাসন থেকে মুক্তি কীরূপে? জঙ্গলের বাঘ-ভালুক তাড়ানো যতটা সহজ, ফ্যাসিবাদী শাসককে নির্মূল করা তত সহজ নয়। কারণ বনের হিংস্র পশুদের হাতে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও RAB‘য়ের ন্যায় প্রতিষ্ঠান থাকে না। কিন্তু সেগুলি থাকে ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে।
ইতিহাসের সাক্ষ্য হলো, স্বৈরশাসনকে কখনোই অতীতে নির্বাচনে পরাজিত করা যায়নি। কারণ নির্বাচন যারা পরিচালনা করে তারা সবাই ফ্যাসিবাদী সরকারের চাকর-বাকর। নিরপেক্ষ নির্বাচনী কমিশনার বলে কোন কিছু ফ্যাসিবাদী শাসনে থাকে না। ফ্যাসিবাদী সরকারে সকল বড় বড় আমলারাই সরকারী পক্ষের লোক। সেখানে নিরপেক্ষ বা নির্দলীয় বলে কিছু নাই। এই চাকর-বাকরগণ কখনোই নিজেদের ফ্যাসিবাদী মনিবকে পরাজিত হতে দেয় না। তারা বরং ফ্যাসিবাদী সরকারের পক্ষে ভোটচুরি ও ভোটডাকাতি করে স্বৈরশাসকের সুনজরে থাকতে চায় এবং ফায়দা লুটতে চায় । সেটিই বাংলাদেশ দেখা গেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে। বিচারকগণও সরকারের পক্ষ নেয়। তারাও সরকার বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ মেয়াদী জেল দেয় বা ফাঁসিতে ঝুলায়। প্রতিদানে সরকার থেকে সুবিধা আদায় করে।
নিরেট বাস্তবতা হলো, ফ্যাসিবাদী সরকার গণহত্যা করলে যেমন বিচার হয় না, তেমনি জনগণের ভোটের উপর চুরি-ডাকাতি করলেও আদালতে তার বিচার হয় না। ফলে ডাকাতদের শাস্তিও হয় না। বিচারকগণও ফ্যাসিবাদীদের সেবকে পরিণত হয়। তাদের কাজ সরকার শুধু বিরোধীদের শাস্তি দেয়া, সরকারকে নয়। ফ্যাসিবাদী শাসনের অধীনে আদালত সেটিই রায় দেয় -যা ফ্যাসিবাদী সরকার চায়। তাই ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের গণহত্যায় একজনেরও শাস্তি হয়নি। শত শত মানুষ গুম ও খুন হচ্ছে তারও কোন বিচার হচ্ছে না। ২০১৮ সালে দেশ জুড়ে ভোটডাকাতির বিশাল ঘটনা ঘটলেও সে অপরাধে এক জনেরও শাস্তি হয়নি। অবিচার করা এবং সুবিচার না করাই ফ্যাসিবাদী সরকারের নীতি। ফলে ভোটডাকাতগণ আগামীতে ভোটডাকাতি থেকে বিরত থাকবে কোন ভয়ে? এজন্যই ফ্যাসিবাদী সরকারকে ভোটে হারানো অসম্ভব।
সমস্যার মূলে জনগণও
বাংলাদেশের মূল সংকটটি শুধু অসভ্য ও নৃশংস ফ্যাসিবাদী শাসকদের কারণে নয়। সমস্যার মূলে জনগণও। সভ্য ও স্বাধীনভাবে বাঁচার খরচটি বিশাল। সে জন্য জনগণকে যেমন যোগ্যতর হতে হয়, তেমনি মূল্যও পরিশোধ করতে হয়। দোয়া-দরুদে স্বাধীনতা জুটে না। বিদেশী শক্তির দয়া-দাক্ষিণ্যেও সেটি মেলে না। বিদেশীরা তো নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তারে যুদ্ধ করে, অন্যদের স্বাধীনতা দিতে না। যেমনটি ভারত করেছে ১৯৭১’য়ে। স্বাধীনতার যুদ্ধ নিজেদের করতে হয়। এবং সে যুদ্ধে নিজেদের জান-মাল ও মেধার বিনিয়োগ করতে হয়। এছাড়া সভ্য জীবনযাপনের অধিকার জুটে না। কিন্তু স্বাধীনতার মূল্য পরিশোধের সে সামর্থ্য বাংলাদেশের জনগণের মাঝে সৃষ্টি হয়নি। সেটিই হলো নিরেট বাস্তবতা।
মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুর’আনে কিছু মানুষকে গবাদী পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট বলেছেন। গবাদী পশুর ন্যায় তারাও বোধশূণ্য ও বিবেকশূণ্য। তাদের কাছে স্রেফ পানাহারে বাঁচটি গুরুত্ব পায়, স্বাধীনতা ও ইজ্জত নিয়ে বাঁচা নয়। যে দেশে সেরূপ মানুষের সংখ্যাটি বিশাল, সে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায় না। কারণ গণতন্ত্র মানবতায় সমৃদ্ধ মানুষদের জন্য। বোধশূণ্য ও বিবেকশূণ্য মানুষদের জন্য নয়। এ কারণেই যে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলংকায় বেঁচে আছে তা বাংলাদেশে বেঁচে নাই। এ ব্যর্থতার জন্য বাংলাদেশের ভূমি ও জলবায়ু দায়ী নয়, দায়ী বাংলাদেশের জনগণ।
যারা গরু-ছাগলের ন্যায় স্রেফ পানাহারে বাঁচতে চায় তারা স্বাধীনতা নিয়ে মাথা ঘামায় না। সামনে ঘাস পেলেই গরু খুশি হয় -সে তার গলার রশিটি নিয়ে আপত্তি করে না। যেদেশে এরূপ গরু চরিত্রের মানুষের সংখ্যা বেশী -সেদেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা অসম্ভব। তাই ৮০ লাখ মানুষের শহরে হংকংয়ে ২০ লাখ মানুষ গণতন্ত্রের দাবীতে রাস্তায় নামলেও ২ কোটি মানুষের শহর ঢাকাতে ২০ হাজার মানুষও রাস্তায় নামে না। এরপরও কি বুঝতে বাঁকি বাংলাদেশের সমস্যা কোথায়? এমন দেশে ভোটডাকাতির সর্দারনী শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রূপে ভূষিত হবে -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়। সভ্য দেশে তো এমন অপরাধীকে আদালতের কাঠগড়ায় উঠতে হয় এবং নিশ্চিত কারাবাসী হতে হয়।
জিহাদই একমাত্র পথ
স্বাধীনতা সভ্য মানুষের জন্য অপরিহার্য। স্বাধীনতা আরো অপরিহার্য হলো মুসলিম রূপে বাঁচার জন্য। কারণ ফ্যাসিবাদী সরকারের অপরাধ তারা পূর্ণ মুসলিম রূপে বাঁচাকেও অসম্ভব করে। কারণ, পূর্ণ মুসলিম হতে হলে শুধু নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত পালন করলে চলে না। দেশের আদালতে ইসলামের শরীয়তী বিধানসহ সকল বিধানগুলো পুরোপুরি মেনে চলতে হয়। পবিত্র কুর’আন যেমন নিজে বুঝতে ও শিখতে হয়, তেমনি অন্যকেও শেখাতে হয়। কিন্তু সেটি অসম্ভব করে ফ্যাসিবাদী সরকার। তাদের মধ্যে কাজ করে ইসলামভীতি। ফ্যাসিবাদী সরকার তাই কুর’আনের তাফসিরের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এবং তারা জিহাদ বিষয়ক বই বাজেয়াপ্ত করে –যেমনটি করেছিল ঔপনিবেশিক কাফেরগণ।
ইসলাম ও ফ্যাসিবাদ কখনোই একত্র চলে না। ফ্যাসিবাদ হলো নমরুদ-ফিরাউনের ধর্ম। আর ইসলাম হলো মানবিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচার ধর্ম। ইসলাম দেয় প্রতিটি নাগরিকের সম অধিকার। জনগণের রায়কে দেয় ইজ্জত। বিলুপ্ত করে রাজতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র। তাই হযরত আবুবকর (রা:), হযরত উমর (রা:), হযরত ওসমান (রা:) ও হযরত আলী (রা:)কে শাসন ক্ষমতায় বসতে রাজপুত্র হতে হয়নি। এটি ছিল মানব ইতিহাসে প্রথম সফল গণতন্ত্র। তাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইটি নিছক কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়। ইসলামে এটি পবিত্র ইবাদত।। এমন লড়াইয়ের রয়েছে পবিত্র জিহাদের মর্যাদা। ঈমানদারের জীবনে এটি হলো সর্বোচ্চ ইবাদত। এই ইবাদত পালিত না হলে আল্লাহর বিধান শুধু কিতাবেই থেকে যায়। তাই মহান আল্লাহতায়ালার কাছে ফ্যাসিবাদের নির্মূল অতি গুরুত্বপূর্ণ।
ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্মূলে মহান আল্লাহতায়ার রয়েছে নিজস্ব হিকমত। কোন মানুষই মুনাফা না দেখলে বিনিয়োগ করে না। বিষয়টি তেমন রাজনৈতিক লড়াই ও জিহাদের ক্ষেত্রেও। ফ্যাসিবাদ নির্মূলের জিহাদে শুধু অর্থ, সময়, শ্রম, ও মেধা দিলে চলে না। প্রয়োজনে রক্ত ও প্রাণও দিতে হয়। মানব সমাজে এটিই হলো সবচেয়ে ব্যয়বহুল খাত। মহান আল্লাহতায়ালা চান, মানুষ সভ্যতর সমাজ নির্মাণ করুক। এবং সে জন্যই নির্মূল করুক ফ্যাসিবাদী দুর্বৃত্ত শাসক। নতুন একটি গাছ লাগাতে হলেও সেখান থেকে পুরোন গাছটি উপড়ে ফেলতে হয়। তাই দুর্বৃত্তদেরকে ক্ষমতায় রেখে কোন ভাল কাজ সম্ভব নয়। এ পবিত্র মহান কাজে জনগণ যাতে নিজেদের জান ও মালের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ বাড়ায় – মহান আল্লাহতায়ালা সে জন্যই এতে আখেরাতে সবচেয়ে বেশী পুরস্কার রেখেছেন। নিহত হলে জুটে বিনা হিসাবে জান্নাত। অন্য কোন ইবাদতে এরূপ পুরস্কার নাই। সভ্য নির্মাণের কাজে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে এটিই হলো মহান আল্লাহতায়ালার হিকমত।
ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। ইসলাম তাই সকল সমস্যার সমাধান পেশ করে। তাই সমাধান দেয় ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তিরও। ইসলামে নির্মূলের এ কাজটি নিছক আন্দোলন নয়, এটি পবিত্র জিহাদ। তাই ঈমানদারদের দায়িত্ব হলো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে জিহাদে রূপান্তরিত করা। আন্দোলনে কেউ নিহত হলে কেউ শহীদ হয় না। ফলে তাতে বিনা হিসাবে জান্নাত জুটে না। ফলে আন্দোলনে ঈমানদারের যোগদানও বাড়ে না। অথচ সে লড়াইটি জিহাদ হলে, তাতে যোগ দেয়া ঈমানদারের উপর ঈমানী দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। তখন সে পবিত্র মিশনে সাহায্য মিলে মহান আল্লাহতা’আলার। তখন ফ্যাসিবাদী শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠে।
জিহাদ অপরিহার্য বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণে
জিহাদ অপরাজেয়। কারণ লড়াই এখানে আল্লাহতায়ালার দলের সাথে শয়তানের দলের। জিহাদই আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করেছে। এবং এর আগে উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে দুইবার পরাজিত করেছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের। শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ সোভিয়েত রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের চেয়ে শক্তিশালী নয়। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জনগণের সংখ্যাও কম নয়। তাই জিহাদ শুরু হলে বিজয় অনিবার্য। সে বিজয় নিয়ে কি বিন্দু মাত্র সন্দেহ থাকে? তাছাড়া সভ্য ও পুণ্যময় সমাজ নির্মাণে জিহাদ ছাড়া বিকল্প পথ আছে কী? জিহাদই তো মহান আল্লাহতায়ালার দেখানো পথ। ঘরে আগুন লাগলে আগুন থামানো যেমন ফরজ, তেমন ফরজ হলো দেশ থেকে দুর্বৃত্ত শাসন নির্মূলের জিহাদ। নইলে সভ্য জীবন, স্বাধীনতা ও দ্বীন – এসবের কোনটিই সুরক্ষা পায়না।
জিহাদ দুই প্রকারের: সশস্ত্র জিহাদ ও বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদ। তবে অতি গুরুত্বপূর্ণ জিহাদ হলো বুদ্ধিবৃত্তিক। এ বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদই মানুষকে গরুছাগলের স্তর থেকে উঠিয়ে ঈমানদার বানায়। এ জিহাদে হাতিয়ার হলো পবিত্র কুর’আনের তথা ওহীর জ্ঞান। অধিকাংশ নবী-রাসূলগণ এ জিহাদ করেছেন। এখানে জিহাদ হয় চেতনার ভূমিতে শয়তানের দখলদারী নির্মূলে। শয়তানকে চেতনার ভূমিতে পরাজিত না করতে পারলে রাজনৈতিক ও সশস্ত্র জিহাদে সৈনিক মেলে না। বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদ না করে সশস্ত্র জিহাদ করলে সে জিহাদ সফল হয়না। নবীজী (সা:)’র সফলতার কারণ তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদে যেমন সফল হয়েছিলেন, তেমনি সফল হয়েছিলন সশস্ত্র জিহাদেও।
বাংলাদেশে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে জরুরি হলো বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লবের জিহাদ। এ জিহাদ হলো জনগণকে ঈমানদার, জ্ঞাবান ও দায়িত্ববান করার লাগাতর লড়াই। বাংলাদেশে একাজটি অতীতে কখনো হয়নি। এর আগে শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তন পট পরিবর্তন ঘটেছে, কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লব কোন কালেই আসেনি। ফলে জনগণের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকলঙ্গতাও কাটেনি। এরই ফলে গণতন্ত্রের শত্রু ও নৃশংস স্বৈরাচারিকেও দেশের বন্ধু ও পিতার আসনে বসানো হয়। বুদ্ধিবৃত্তিক এ জিহাদে বিজয়ী হলে বাংলাদেশের ইতিহাসই পাল্টে যাবে। তখন লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামবে রাজপথে। যেমনটি ১৯৭৯ সালে ইরানের রাস্তায় দেখা গেছে সেখানকার ফ্যাসিবাদী বাদশাহ মহম্মদ রেজা শাহ পাহলভীর বিরুদ্ধে। রাস্তায় জনতার ঢল দেখে প্রতাপশালী বাদশাহ তখন দেশ ছেড়ে পলায়নে বাধ্য হয়েছে। সামরিক বাহিনী, প্রশাসন ও পুলিশও সেদিন তার পাশে দাঁড়ায়নি। ইরানে সে বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেদেশের জ্ঞানবান আলেম ও বুদ্ধিজীবীগণ। সে অভিন্ন গণবিপ্লবের পথ ধরতে হবে বাংলাদেশীদেরও। ঢাকার রাস্তায় যদি ২০ থেকে ৩০ লাখ লোকের প্লাবন আনা যায় তবে কি গণশত্রু হাসিনা পালাবার রাস্তা পাবে? হাসিনা কি বাদশাহ মহম্মদ রেজা শাহ পাহলভীর চেয়েও শক্তিশালী?
বাংলাদেশে তাই জোরে শোরে শুরু করতে হবে সে বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদটি। গণবিপ্লবের সফলতার লক্ষ্যে এটিই হলো সবচেয়ে পরীক্ষিত পথ। এ জিহাদে সংশ্লিষ্ট হওয়া প্রত্যেক ঈমানদারের ঈমানী দায়বদ্ধতাও। একমাত্র এপথেই একটি সভ্য, ভদ্র, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মিত হতে পারে। নইলে বহুকাল ঘানি টানতে হবে আওয়ামী দুর্বৃত্তদের দুঃশাসনের। ৩১/০৩/২০২২।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018
বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকারকে ফ্যাসিষ্ট বলিলে তাদের প্রতি অন্যায় ভাবে দয়া এবং অনুকম্পা দেখানো হবে, কারন এই সরকার আদৌ কোন সরকার নয় বরং এরা ভারতের নিয়োজিত সাব কন্ট্রাক্টর, অনেকটা প্যালেষ্টাইনের পিএলএর মত। বাংলাদেশ এখন একটা ১০০ পার্সেন্ট অকুপাইড কান্ট্রি। হাছিনা আর আফগানিস্তানের বিতারিত প্রেসিডেন্টর মধ্যে কোন পার্থক্য নাই।