বাংলাদেশের ভোটডাকাতদের শাস্তি দেয়ার দায় কি শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের?
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on May 26, 2023
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
অপরাধীদের শাস্তি না দেয়াই বড় অপরাধ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট (পররাষ্ট্র মন্ত্রী) এ্যান্টনি ব্লিনকেন সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশে যারা সুষ্ঠ নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করবে তাদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ভিসা দেয়া হবে না। এটি এক সুন্দর সিদ্ধান্ত। মানুষের অর্থসম্পদ কেড়ে নেয়াই শুধু অপরাধ নয়। গুরুতর অপরাধ হলো কারো ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া। কারণ ভোটের মূল্য অর্থের মূল্যের চেয়েও অধিক। অর্থ দিয়ে দেশবাসীর ভাগ্য ও দেশের স্বাধীনতা কেনা যায় না। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ আসনে কে বসবে -সেটিও অর্থ দিয়ে নির্ধারণ করা যায় না। সেটি নির্ধারিত হয় ভোট দিয়ে। ভোটের গুরুত্ব তাই অপরিসীম।
এজন্যই যারা সমগ্র দেশের উপর ডাকাতি করতে চায়, তারা দেশবাসীর ভোটের উপর ডাকাতি করে। যারা সবচেয়ে বড় ডাকাত তারা কারো গৃহে বা দোকানে ডাকাতি করে না, বরং নির্বাচনে জনগণের ভোট ডাকাতি করে নেয়। তখন সরকারি জমি, চাকুরির বাজার, ঘুষের বাজার, দেশের রাজস্বভান্ডার, ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রকল্পের অর্থের উপর ডাকাতদের দখলদারি প্রতিষ্ঠা পায়। এ পথে ডাকাতি করে নিতে পারে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা। এ ডাকাতগণ বহু বিলিয়ন ডলার গায়েব করেছে বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে। দেশের ব্যাংকগুলিকে তারা অর্থশূণ্য করেছে।
এজন্যই বাংলাদেশের যারা বড় ডাকাত তারা কখনো রাতের আঁধারে মাঠ-ঘাট পাড়ি দিয়ে কারো গৃহে ডাকাতি করতে নামে না। তারা বরং শেখ হাসিনার বিশাল ডাকাত দল আওয়ামী লীগে যোগ দেয় এবং ভোটডাকাতিতে নামে। তখন দেশের পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিচারক বাহিনী, নির্বাচনি কমিশন এ ডাকাতদের পাহারাদারে পরিণত হয়। এরাই জনগণের ভোট ডাকাতি করে নিয়েছে ২০১৮ সালের নির্বাচনে। এ ডাকাতগণ ফলে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ডাকাতি করে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ নানা দেশে বড় বড় বাড়ির মালিক হয়েছে। তাই ভোটডাকাতি হলো বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে নিরাপদ ডাকাতি। পুলিশ ও আদালত নিয়ন্ত্রণে থাকায় এ ডাকাতিতে কারো জেলে যেতে হয় না। বরং সবচেয়ে বড় ডাকাত এ দেশে মাননীয় ও শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী রূপে সম্মানিত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এসব জঘন্য বাঙালি ডাকাতদের অপরাধ বুঝতে পেরেছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মানবতাবিরোধী এই ঘৃণ্য অপরাধীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঢুকতে দিবে না। কারণ এরূপ ভয়ানক অপরাধীদের স্থান কোন সভ্য দেশে হতে পারে না। কিন্তু কথা হলো, যারা অপরাধী তারা তো সর্বত্রই অপরাধী। যারা ডাকাত তারা সর্বত্রই ডাকাত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকার আছে, নিজ দেশকে এরূপ অপরাধীদের থেকে মুক্ত রাখার। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যেসব অপরাধীগণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর তারা কি বাংলাদেশের জন্য কল্যাণকর হতে পারে? এ ডাকাতগণ জেলের বাইরে থাকলে তারা তো বার বার ডাকাতিই করতে থাকবে। ডাকাতদের ন্যায় ভয়ানক অপরাধীদের কি কখনো মুক্ত ছেড়ে দেয়া যায়? এ অপরাধীদের স্থান কি বাংলাদেশে রাজনীতিতে থাকতে পারে? বাংলাদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকদের বিষয়টি বুঝতে হবে।
তাছাড়া ডাকাতদের শাস্তি কি শুধু এতোটুকু, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা অধিকার কেড়ে নেয়া হবে? কোন একটি গৃহে ডাকাতি করার অপরাধে ডাকাতকে নিশ্চিত জেলে যেতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উপর ডাকাতির অপরাধের শাস্তি কি শুধু ভিসার অধিকার কেড়ে নেয়া? এটি তো অতি লঘু শাস্তি। এরূপ ভয়ানক অপরাধীদের কি দেশের মুক্ত ছেড়ে দেয়া যায়? তাদের স্বাধীনতা দিলে কি দেশের স্বাধীনতা বাঁচে? বুঝতে হবে অপরাধীদের যথার্থ শাস্তি না দেয়াও বড় অপরাধ। অথচ বাংলাদেশে শুধু অপরাধের কান্ডই ঘটে না, বরং অহরহ ঘটে অপরাধীদের শাস্তি না দেয়ার কান্ডটিও। এমন দেশই তো অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয। অথচ সভ্য জনগণ শুধু দেশ থেকে আবর্জনা নির্মূল করে না, অপরাধীদেরও নির্মূল করে না। নইলে অসম্ভব হয় সভ্য রাষ্ট্রে নির্মাণের কাজ। বাংলাদেশের জনগণ তো এক্ষেত্র চরম ভাবে ব্যর্থ।
যে দায় বিশ্ববাসীর
জনগণের মানবিক অধিকার কেড়ে নেয়া এবং তাদের উপর ডাকাতি ও সন্ত্রাস চালানো একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ। এ অপরাধের নায়কগণ কোথাও নিরাপদ আশ্রয় পেতে পারে না। নিজ দেশে তো নয়ই। কোভিডের ন্যায় মানবতার এ শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইটি বিশ্বের সকল সভ্য মানুষের। কিন্তু সে লড়াইয়ের কাজটি এ অবধি যথার্থ ভাবে হয়নি। ভোটডাকাত মাত্রই সন্ত্রাসী। ডাকাতের ডাকাতিতে রাজনীতি থাকে না। কিন্তু ভোটডাকাতির ডাকাতিতে রাজনীতি থাকে। এখানে অস্ত্র বা ত্রাসের প্রয়োগ হয় জনগণের ভোট কেড়ে নেয়ায়। বাংলাদেশে ত্রাস সৃষ্টির সে কাজে পুলিশ, RAB ও সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে নিরস্ত্র জনগণ সসস্ত্র ভোটডাকাতদের হাতে জিম্মি। ফলে ইচ্ছা থাকলেও তারা অপরাধীদের শাস্তি দিতে পারছে না।
কিন্তু জিম্মি নয় মুক্ত বিশ্বের সরকারগণ। তাদের সামর্থ্য রয়েছে হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাত সন্ত্রাসীর হাত থেকে বাংলাদেশের মানুষদের মুক্ত করার।এ দায় শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বরং ভারত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশের। গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটলেও বিশ্বশান্তি বিকশিত হবে। গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটে অধিকারের প্রতি তাদের যদি সামন্যতম দরদ থাকে তবে তাদের উচিত বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। সে সাথে তাদের আরো দায়িত্ব হলো, বাংলাদেশের ভোটডাকাত অপরাধীদের শাস্তি দেয়া। শুধু ভিসা বন্ধ করলে সে শাস্তি দেয়ার কাজটি হয়না। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করায় এদের আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় তোলা উচিত।
অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার কাজটি অতীতে করা হলে বাংলাদেশ আজকের এ অবস্থায় পৌঁছতো না। উপরুক্ত দেশগুলির দূতাবাসের কর্মচারীরা ২০১৪ সালে জনগণের রায় ছাড়া নির্বাচন স্বচোখে দেখেছে। সে নির্বাচন বিরোধী দলগুলি বর্জন করার শতকরা ৫ ভাগ মানুষও ভোট দেয়নি। ১৫৩টি সিটে কোন ভোটদান কেন্দ্রই খোলা হয়নি। শেখ হাসিনার দলীয় প্রার্থিরা সংসদের অর্ধেকের বেশী সিটে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়ে গেল। কোন গণতান্ত্রিক দেশে কি এমনটি ঘটে?
উপরুক্ত দেশের ঢাকাস্থ দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ দেখেছে কি করে ২০১৮ সালে দেশব্যাপী ভোট ডাকাতি হয়ে গেল। কিন্তু সেদিনও উক্ত দেশগুলির নেতাগণ ভোটডাকাতির নিন্দা করেনি। বরং হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাতকে তারা বৈধ প্রধানমন্ত্রী রূপে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি দানের ফলেই বাংলাদেশের জনগণকে হাসিনার ন্যায় এক ডাকাতের অবৈধ শাসনকে দশটি বছরের জন্য সইতে হলো। বরং ভারত ও চীন হাসিনার ভোটডাকাতি অভিনন্দন জানিয়েছে।
ভোটডাকাতদের মিথ্যাচার
প্রতিবেশীর গৃহে আগুন লাগলে সে আগুন থামাতে সহায়তা দানেই মাঝেই তো মানবিক পরিচয়। সে মানবিক কাজকে কখনোই কারো গৃহের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ বলে নিন্দা করা হয় না। তেমনি কোন দেশের জনগণের ভোটের উপর ডাকাতি হলে সে ডাকাতি থেকে বাঁচানোও অন্যদের মানবিক দায়িত্ব। বাংলাদেশের জনগণ ডাকাতি মুক্ত একটি সুষ্ঠ নির্বাচন চায়। দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কে আসবে -জনগণ সেটি নিজেদের ভোট দিয়ে নির্ধারণ করতে চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায় কোন দেশ যদি জনগণের সে দাবীর পক্ষে অবস্থান নেয় তবে কি সেটিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলা যায়? অথচ বাংলাদেশের ভোটডাকাত সরকার সেটিই বলছে। এর কারণ, হাসিনার ডাকাত সরকার চায়, তাকে ভোটডাকাতির অধিকার দিতে হবে। তার কথা, ভোটডাকাতি করাটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কারো অধিকার নাই সেটি নিন্দা করার। তার কথা, কারো অধিকার নাই বাংলাদেশের উপর কোন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ চাপিয়ে দেয়ার। এমন কাজকে হাসিনা বলছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ।
ভোটডাকাত হাসিনা জানে, ডাকাতি-মুক্ত সুষ্ঠ নির্বাচনে তার পরাজয় অনিবার্য। তাই তার কাছে নির্বাচন মানেই ভোটডাকাতির নির্বাচন। এবং সেরূপ ভোটডাকাতিকে বলে সুষ্ঠ নির্বাচন। এমন একটি কারণেই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকেও অভিহিত করে সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন বলে। সরকারের সে চরম মিথ্যাচারটি নতুন ভাবে প্রকাশ পেয়েছে ভিসা-নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের দেয়া বয়ান থেকে। সেখানে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকারের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। বাংলাদেশে কোনো সরকারের ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার নজির নেই। জনগণের ভোটাধিকারকে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা বলে মনে করে। সে রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের জন্য দলটিকে নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। সরকার সব ধরনের বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য শান্তিপূর্ণ সভা ও সমাবেশকে গুরুত্ব দেয়।“
সরকারের কত বড় মিথ্যা কথা! প্রশ্ন হলো, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে কি সুষ্ঠ নির্বাচন হয়েছিল? ২০১৮ সালে কি সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সংসদের ২৯৩ সিটে বিজয়ী হয়েছিল? গুম, খুন, বিনা বিচারে হত্যার এ সরকার নাকি শান্তিপূর্ণ সভা-সমিতির অধিকার দেয়! কি মিথ্যাচার! চক্ষু লজ্জার কোন বালাই নেই।
ডাকাত নির্মূল: যে দায় বাংলাদেশীদের
অপরাধ কর্ম করাই শুধু অপরাধ নয়, চোখের সামনে অপরাধ হতে দেখে নিষ্ক্রিয় থাকাও গুরুতর অপরাধ। গৃহে আগুন লাগলে সে আগুন থামাতে না নেমে যে ব্যক্তি তাতে পেট্রোল ঢালে -সে জঘন্য অপরাধী। যে কোন সভ্য সমাজে এমন ব্যক্তিকে শাস্তি পেতে হয়। তেমনি জনগণের ভোট যখন ডাকাতি হয়ে যায়, সে ডাকাতি যারা থামায় না বরং নিরপেক্ষ নির্বাচন বলে প্রচার করে -তারাও দেশবাসীর শত্রু। তাদের অপরাধও শাস্তিযোগ্য। বাংলাদেশীদের জন্য ভয়ানক বিপদের কারণ হলো, এরূপ অপরাধীরা বসে আছে বাংলাদেশের প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে। তারাই হাসিনার ডাকাত বাহিনীকে সহায়তা দিয়েছে ২০১৮ সালের ভোট ডাকাতিতে। দেশবাসীর ও দেশের স্বাধীনতার এরূপ ঘৃণ্য শত্রুরা বসে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারা সেখানে বসে আছে শিক্ষকের লেবাস পড়ে। অনেকে আছে মিডিয়া জগতে। অনেকে লেখালেখি করে বুদ্ধিজীবীর বেশ ধরে।
লক্ষণীয় হলো, জনগণ, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জঘন্য শত্রুরা তাদের নিজস্ব রং নিয়ে প্রকাশ্যে হাজির হয়েছে। ফলে তাদের চিনতে ভুল হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় এই অপরাধীরা পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছে হাসিনার ভোটডাকাতির পক্ষে সাফাই গেয়ে। তারা বলেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচন সুষ্ঠ ভাবে হয়েছে। বিষাক্ত সাপের ন্যায় তার গর্ত থেকে বেরিয়ে ফনা তুলেছে। এ অপরাধীরা নিজেদের নামগুলি নিজেরাই পত্রিকায় পাতায় তুলে ধরেছে। এসব অপরাধীদের সনাক্ত করার জন্য তাই কোন বাড়তি মেহনতের প্রয়োজন নাই। প্রয়োজন শুধু তাদের শাস্তি দেয়া। বাংলাদেশকে একটি সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে অবশ্যই এই শত্রু নির্মূলের কাজটি প্রথমে করতে হবে। স্বাধীনতা, জনগণ ও গণতন্ত্রের এই শত্রুদের ক্ষমতায় বসিয়ে সেটি কখনোই সম্ভব নয়।
বুঝতে হবে, হাসিনা ও তার সহচর ভোটডাকাত অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার দায়িত্বটি শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়। বিদেশী শক্তি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু দেশ থেকে ডাকাত নির্মূলের কাজটি একান্তই বাংলাদেশের জনগণের। একাজ প্রতিটি সভ্য নাগরিকের। যারা এই অপরাধীদের শাস্তি দিতে আগ্রহী নয় বুঝতে হবে তারা অপরাধীদের সহযোগী। আর অপরাধীদের সহযোগী হওয়াও তো বড় অপরাধ। এরাই দেশের শত্রু ও গাদ্দার। বাংলাদেশের জনগণকে সে অপরাধীদের অবশ্যই সনাক্ত করতে হবে এবং তাদের নির্মূলে নামতে হবে। নির্মূলের একাজটি ইসলামে পবিত্র জিহাদ। এ জিহাদই ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। কোন দেশে এ জিহাদ না হলে সে দেশে কখনোই সভ্য রাষ্ট্র নির্মিত হয় না। তখন দেশ যায় শয়তানী শক্তির দখলে। সে ভয়ানক বিপদ থেকে বাঁচতেই নবীজী (সা:) ও তাঁর সঙ্গিগণ জিহাদ করেছেন এবং অর্ধেকের বেশী সাহাবা সে জিহাদে শহীদ হয়ে গেছেন। অথচ সে পবিত্র জিহাদ বাংলাদেশীদের মাঝে নাই। ফলে বেঁচে নাই বাঙালি মুসলিমের ইজ্জত-আবরু ও স্বাধীনতা। এবং শাসন চলছে ইসলামের শত্রুপক্ষের।
বুঝতে হবে জনগণের নিজ ভোটের উপর পাহারাদারীর সবচেয়ে বড় দায়িত্বটি হলো জনগণের নিজের। এ কাজ বিদেশীরা করে দিবে না। নিজের নামাজ যেমন নিজে পড়তে হয়, তেমনি নিজের জিহাদও নিজে করতে হয়। নিজ গৃহ ও নিজ জান-মাল পাহারা দিতে জনগণ যেমন রাস্তায় নামে, তেমনি রাস্তায় নামতে হবে নিজেদের ভোট পাহারা দিতেও। নইলে ডাকাতদের হাত থেকে ভোটকে বাঁচানো যাবে না। আর ভোটের অধিকার না বাঁচাতে পারলে দেশের স্বাধীনতাও বাঁচানো যাবে না। তখন ভোটের সাথে দেশের স্বাধীনতাও ডাকাতি হয়ে যাবে। ভারতের ন্যায় সেসব আগ্রাসী শক্তি বাংলাদেশকে গোলাম বানিয়ে রাখতে চায়, তারা তো সেটিই চায়। এজন্যই তারা ভোটডাকাত হাসিনাকে সমর্থণ দেয়।
শত্রু পরিবেষ্টিত এ দেশে প্রতিটি নাগরিককে সকল সমর্থ্য নিয়ে তৈরি থাকতে হবে স্বাধীনতা বাঁচানোর জন্য। এ দায়িত্বটি বাংলাদেশের প্রতিটি নারী, পুরুষ, ছাত্র ও-ছাত্রীর। বাংলাদেশীরা এ কাজে অতীতে চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ডাকাতরা সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশের উপর নিজেদের দখলদারি প্রতিষ্ঠা দিতে। এখন সময় ডাকাত তাড়ানোর এবং স্বাধীনতা বাঁচানোর।এটিই জীবনের শ্রষ্ঠতম লড়াই। আর স্বাধীন ভাবে বাঁচার মূল্য দিতে হয় তো লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। নইলে গোলামীই অনিবার্য হয়। কোন সভ্য, ভদ্র ও ঈমানদার মানুষ কি কখনো গোলামী মেনে নিতে পারে? ২৬/০৫/২০২৩
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018