ভারতীয় পণ্য কেনা কেন হারাম এবং বর্জন করা কেন ফরজ?
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on February 3, 2024
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
চাপানো যুদ্ধ এবং যুদ্ধের দায়
মুসলিম জীবনে যুদ্ধ অনিবার্য। এবং সেটি শত্রুর চাপানো যুদ্ধ। সেটি যেমন রাজনীতি ও বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণে, তেমনি অর্থনীতি ও সংস্কৃতির অঙ্গণে। অনেক সময় সেটি সশস্ত্র যুদ্ধে রূপ নেয়। শত্রুর সে যুদ্ধটি মুসলিম ভূমি থেকে মুসলিম ও ইসলাম নির্মূলের। মুসলিম ইতিহাসে সেরূপ নির্মূলের যুদ্ধ নতুন নয়। ৬ শত বছরের বেশী কাল শাসন করেও মুসলিমগণ নির্মূল হয়েছে স্পেন ও পর্তুগাল থেকে। মুসলিম নির্মূল হচ্ছে আরাকান থেকে। প্রায় ১৪ শত বছর বসবাস করেও মুসলিমগণ প্রায় নির্মূল হওযার পথে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ ঘেরা ফিলিস্তিন থেকে। প্রায় একশত বছর আগে ইহুদীদের সংখ্যা ফিলিস্তিনের জনসংখ্যার শতকরা ৫ ভাগও ছিল না। এখন ইসরাইলের শতকরা ৭০ ভাগ জনগণই ইহুদী। সেটি সম্ভব হয়েছে ফিলিস্তিন থেকে মূল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।
তেমন এক নির্মূলের মুখে এখন ভারতের মুসলিমগণ। সে নির্মূল প্রক্রিয়া থেকে বাঁচেনি বাবরি মসজিদের ন্যায় ঐতিহাসিক মসজিদসহ বহু মসজিদ। বুঝতে হবে মধ্যপ্রাচ্যে যেমন আগ্রাসী ইসরাইল, দক্ষিণ এশিয়ার বুকে তেমনি হলো আগ্রাসী ভারত। ইহুদীরা নিজেদেরকে ফিলিস্তিনের আদিবাসী মনে করে; ফিলিস্তিনীগণ তাদের কাছে বহিরাগত দখলদার। তেমনি হিন্দুত্ববাদীরা নিজেদের ভারতের আদীবাসী মনে করে; মুসলিমদের বলে বহিরাগত। ইহুদীবাদীগণ যেমন ফিলিস্তিনীদের নির্মূল করে বৃহৎ ইসরাইল নির্মাণ করতে চায়, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীগণও তেমনি মুসলিম নির্মূল করে অখণ্ড ভারত নির্মাণ করতে চায়। বাংলাদেশে বিএনপি ও জামাতে ইসলামীর ন্যায় যেসব সংগঠন ভারতীয় আগ্রাসনের বিরোধী তাদেরকে ভারতীয় মিডিয়াতে হামাস রূপে চিত্রিত করা হচ্ছে। সেরূপ একটি অভিযোগ এনে লেখা একটি নিবন্ধ সম্প্রতি ইসরাইলের Jerusalem Post য়ে ছাপা হয়েছে।
বাংলাদেশের ন্যায় যেসব মুসলিম দেশ থেকে মুসলিম নির্মূলের কাজটি এতোটা সহজ নয়, সেখানে চলছে মুসলিমের জীবন থেকে ইসলাম নির্মূলের যুদ্ধ। এক সময় সে নীতি ছিল কম্যুনিস্টদের শাসিত সোভিয়েত রাশিয়ার। পরিকল্পিত শিক্ষানীতি ও সাংস্কৃতিক ইঞ্জিনীয়ারিংয়ের মাধ্যমে মুসলিম অধ্যুষিত উযবেকিস্তান, কাজাখিস্তান, তাজাকিস্তান, তুর্কমিনিস্তান ও কিরগিজিস্তানের ন্যায় প্রদেশগুলিতে প্রবল চেষ্টা হয় মুসলিমদের ঈমানশূণ্য করার। সে অভিন্ন নীতি নিয়ে চীন উইঘুর মুসলিমদের ঈমানশূণ্য কারার লক্ষ্যে বিশাল বিশাল কারখানা খুলেছে। সেগুলি মূলত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প। মুসলিম শিশুদের পিতামাতার কাছ থেকে তুলে নিয়ে সেসব ক্যাম্পে মগজ ধোলাইয়ের কাজ হচ্ছে। তেমন এক অভিন্ন নীতি নিয়ে কাজ করছে ভারতও। ভারতের সে ইসলাম নির্মূলের যুদ্ধটি যেমন ভারতীয় মুসলিমদের উপর চলছে, তেমনি চলছে বাংলাদেশের মুসলিমদের উপর। ভারতের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত ভারত-অনুগত হাসিনার সরকার পরিণত হয়েছে সে ভারতীয় যুদ্ধের পার্টনারে। সেটি সুস্পষ্ট দেখা যায় বাংলাদেশ সরকারের হিন্দুত্ব তোষণের রাজনীতি, শিক্ষানীতি ও সাংস্কৃতিক নীতির দিকে নজর দিলে। তাই ডাক্তার যাকির নায়েক ও তার পিস টিভিকে ভারতে যেমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেরূপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বাংলাদেশেও।
শত্রুর চাপানো প্রতিটি যুদ্ধ মুসলিমের উপর অবশ্যই কিছু দায়িত্বও চাপিয়ে দেয়। সে দায়িত্বপালনের মধ্যেই মুসলিমের প্রকৃত ঈমানদারী। যার মধ্যে সে দায়িত্বপালনের তাড়না নাই -বুঝতে হবে তার মধ্যে ঈমান বলে কিছু নাই। এমন দায়িত্বশূণ্য ব্যক্তি ঈমানের দাবী করলে বুঝতে হবে সে মুনাফিক। মুসলিম হওয়ার অর্থই হলো মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডাকে বিজয়ী করার কাজে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া। সেটি শুধু কথা, শ্রম, অর্থ ও মেধা দিয়ে নয়, বরং রক্ত ও জীবন দিয়ে। এটিই মুসলিম জীবনের জিহাদ। আগুনের যেমন উত্তাপ থাকে, মু’মিনের জীবনেও তেমনি জিহাদ থাকে। এ কারণেই ঈমানদার মাত্রই শত্রুতে পরিণত হতে হয় শয়তান ও তার অনুসারীদের। শয়তান চায়, মানুষকে জাহান্নামে নিতে। অপর দিকে মহান আল্লাহতায়ালা চান, মানুষকে জান্নাতে নিতে। মুসলিম হওয়ার অর্থ হলো মহান আল্লাহতায়ালার সে এজেন্ডার সাথে একাত্ম হওয়। মুসলিমের প্রকল্প এজন্যই শয়তানের প্রকল্পের সাথে সাংঘর্ষিক। শয়তান ও তার অনুসারীগণ জানে, কোন রাষ্ট্রে ইসলাম বিজয়ী হলে বিলুপ্ত হয় তাদের মিশন। এজন্যই ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে শয়তান ও শয়তানের অনুসারীদের যুদ্ধটি প্রতি মুহুর্তের। তেমন একটি যুদ্ধ থেকে অতি শান্তিপ্রিয় নবীজী (সা:) ও তাঁর অনুসারীগণ বাঁচতে পারেননি। তেমন একটি শয়তানী যুদ্ধ থেকে বাঁচছে না বাংলাদেশের ইসলামের প্রকৃত অনুসারীগণ। যারা বেঁচে যায় সে শয়তানী শক্তির আক্রমণ থেকে, বুঝতে হবে তারা ব্যর্থ হয়েছে প্রকৃত মুসলিম হতে। এমন কি শয়তানও এরূপ জিহাদশূণ্য ব্যক্তিদেরকে মুসলিম রূপে গণ্য করে না; বরং তাদেরকে নিজেদের দলের লোক বলে মনে করে।
শয়তানী শক্তির এক প্রকাণ্ড যুদ্ধ বাংলাদেশকে ঘিরে ধরেছে। এ যুদ্ধটি যেমন ইসলামের বিরুদ্ধে, তেমনি স্বাধীনতা, মানবতা, মানবিক অধিকার ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। তারা বাঙালি মুসলিমের উত্থানকে রুখতে চায়। এ দুষ্ট শক্তির অধিকৃতির মুখে বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্ব, গণতন্ত্র চর্চা, পূর্ণ ইসলাম পালন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন -এর কোনটাই সম্ভব নয়। কারণ, গণতন্ত্র চর্চা ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অর্থই হলো তাদের পরাজয়। সেটিকে তারা মেনে নেয় কি করে? তাদের যুদ্ধটি শুধু জনগণকে জাহান্নামে নেয়ার লক্ষ্যে নয়, বরং খোদ বাংলাদেকে অসভ্য ও বর্বর অপরাধীদের দিয়ে এক জাহান্নামে পরিণত করা। ইতিমধ্যেই তারা এদেশে প্লাবন এনেছে গুম, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, বিনা বিচারে হত্যা, চুরিডাকাতি, ভোটডাকাতি, ব্যাংকডাকাতি ও সন্ত্রাসের ন্যায় অপরাধে।
যে জনপদে ঈমানদার থাকে, সে জনপদে শয়তানের খলিফাও থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার বুকে শয়তানের পক্ষের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো ভারতের হিন্দুত্ববাদীগণ। এদেরই টার্গেট হলো, বাংলাদেশকে দখলে নেয়া এবং এ ভূমিতে হিন্দুত্বের বিজয় আনা। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের চলছে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির যৌথ শাসন। তাই ভারতে যেমন বিশাল বিশাল মুর্তি নির্মাণের জোয়ার বইছে, বাংলাদেশেও তেমনি মোড়ে মোড়ে মুর্তি বসানো হচ্ছে। স্কুলের পাঠ্য বইয়ের কভারেও মুর্তির ছবি। ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের শক্তিশালী হাতিয়ার হলো: দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষাব্যবস্থা, মিডিয়া, আদালত, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তারা এ যুদ্ধে বিজয়ী। এবং পরাজিত হলো ইসলামের পক্ষের শক্তি। এরই পরিণতি হলো, বাংলাদেশের একজন মুসলিম সন্তানের পক্ষে অসম্ভব করা হয়েছে মুসলিম রূপে বেড়ে উঠা ও মুসলিম রূপে বাঁচাকেই। সেটি করছে শিক্ষার নামে কুশিক্ষা, সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি এবং রাজনীতির নামে শয়তানী শক্তির যুদ্ধকে চাপিয়ে দিয়ে। বন্ধুত্ব যেক্ষেত্রে হারাম
মুসলিমের উপর ফরজ করা হয়েছে অন্য মুসলিমের সাথে ভাতৃত্ব সুলভ বন্ধুত্বকে। এবং হারাম করা হয়েছে শত্রুর সাথে বন্ধুত্বকে। শত্রুশক্তির হাতে পরাজয়, অধিকৃতি ও জুলুম থেকে বাঁচতে হলে শত্রুর প্রতিটি কর্মে সর্বদা সতর্ক থাকতে হয়। এমন সব কিছুই হারাম -যা শত্রুকে শক্তিশালী করে। শত্রুর পণ্য কিনলে অর্থনৈতিক ভাবে শত্রু শক্তিশালী হয়, তাই সেটি হারাম। তেমনি হারাম হলো শত্রুর সাথে বন্ধুত্ব করা। কারণ তাতে শত্রুর মর্যাদা বাড়ে ও শত্রু শক্তিশালী হয়। মহান আল্লাহতায়ালা তাই হালাল হারামের বিধান শুধু পানাহার, উপার্জন, লেন-দেন, ব্যবসা-বানিজ্য, কর্ম ও আচরণ ও নারী-পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেননি; বিধান দিয়েছেন শত্রুদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও। প্রতিটি মুসলিমের উপর ফরজ হলো হারাম-হালালের সে বিধানগুলি জানা এবং সেগুলি মেনে চলা। এক্ষেত্রে অজ্ঞ থাকা বা অবহেলা করা কবিরা গুনাহ। এমন গুনাহর কাজে প্রকৃত মুসলিম হওয়াই অসম্ভব হয়। পবিত্র কুর’আন তাই না বুঝে তেলাওয়াতের কিতাব নয়, বরং তা থেকে শিক্ষা নেয়ার কিতাব। পরিতাপের বিষয় হলো, মুসলিমগণ ব্যর্থ হয়েছে পবিত্র কুর’আন থেকে সে শিক্ষা নিতে । ফলে তারা বন্ধু রূপে গ্রহণ করছে চিহ্নিত শত্রুদেরকে। সেটি যেমন শেখ মুজিবের জীবনে দেখা গেছে, তেমনি দেখা যাচ্ছে শেখ হাসিনার জীবনে। তাদের উভয়েই মহান আল্লাহতায়ালাকে খুশি করার বদলে ইসলামের শত্রুদের খুশি করার পথ বেছে নিয়েছে।
মুসলিমের বিজয় চান মহান আল্লাহতায়ালা। এবং কাফিরগণ চায় মুসলিমদের পরাজয় ও ইসলামের বিলুপ্তি। সে এজেন্ডা নিয়েই মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফির শক্তির বিরামহীন যুদ্ধ। এজন্যই মুসলিম হওয়ার অর্থ, ইসলামের শত্রুদের চেনা ও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে বাঁচা। তাই মুসলিম কখনোই কোন যুদ্ধরত কাফিরের বন্ধু হতে পারে না। ইসলামে সেটি হারাম। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশ এসেছে সুরা আল-ইমরানের ২৮ নম্বর আয়াতে। বলা হয়েছে:
لَّا يَتَّخِذِ ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلْكَـٰفِرِينَ أَوْلِيَآءَ مِن دُونِ ٱلْمُؤْمِنِينَ ۖ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَلَيْسَ مِنَ ٱللَّهِ فِى شَىْءٍ إِلَّآ أَن تَتَّقُوا۟ مِنْهُمْ تُقَىٰةًۭ ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفْسَهُۥ ۗ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلْمَصِيرُ ٢٨
অর্থ: “মু’মিনগণ যেন মু’মিনগণ ছাড়া কাফিরদের বন্ধু রূপে গ্রহণ না করে। যে এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহর কোন সম্পর্ক থাকবে না। তবে ব্যতিক্রম হলো যদি তোমরা আত্মরক্ষার জন্য তাদের সাথে সতর্কতা অবলম্বন করো। আল্লাহ তোমাদের সতর্ক করছেন তার নিজের পক্ষ থেকে; এবং তোমাদের প্রত্যাবর্তন তো আল্লাহর দিকেই।”
উপরিউক্ত আয়াত থেকে সুস্পষ্ট যে, একই সাথে কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব এবং মহান আল্লাহতায়ালার সাথে সম্পর্ক কখনোই একত্রে চলে না। যে কোন একটিকে বেছে নিতে হবে। যারা বন্ধু রূপে কাফিরদের বন্ধু রূপে বেছে নেয়, তাদের সাথে মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর নিজ সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটান। প্রশ্ন হলো, মহান আল্লাহতায়ালা যার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন সে কি মুসলিম থাকে? অথচ শেখ মুজিব ভারতের কাফির নেতাদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনের পথকে বেছে নিয়েছিলেন। সে পথ ধরছে শেখ হাসিনা। মু’মিনদের প্রতি একই রূপ নির্দেশ এসেছে সুরা মুমতাহানার প্রথম আয়াতে। বলা হয়েছে:
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ عَدُوِّى وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَآءَ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আমার শত্রুদের ও তোমাদের শত্রুদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করবে না।”
মহান আল্লাহতায়ালার হুকুমের প্রতি যারা আত্মসমর্পণ নিয়ে বাঁচতে চায় এবং জান্নাত চায় -তাদের জন্য উপরিউক্ত দুটি আয়াতে রয়েছে অতি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবানী। মু’মিনের ঈমানদারী নামাজ-রোজা ও হ্জ্জ-যাকাতে ততটা স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ে না। কারণ বহু ঘুষখোর, সূদখোর ও দু্র্বৃত্তও সেরূপ ইবাদত করে। কিন্তু ঈমানদারী বা বেঈমানী প্রকট ভাবে ধরা পড়ে কাকে সে বন্ধু রূপে গ্রহণ করলো -তা থেকে। যে শত্রু শক্তির বিরামহীন ষড়যন্ত্র, যুদ্ধ ও নাশকতা ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে -তাদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করলে কি আল্লাহতায়ালা খুশি হন? এরূপ বন্ধুত্বের মাঝে প্রকাশ পায় মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এরূপ বিদ্রোহ নিয়ে কেউ কি মুসলিম হতে পারে? একটি মাত্র হুকুম অমান্য করে ইবলিস অভিশপ্ত শয়তানে পরিণত হয়েছে। এরূপ বিদ্রোহে একমাত্র শয়তানই খুশি হতে পারে। আমরা প্রতিক্ষণ আছি সর্বদ্রষ্টা মহান আল্লাহতায়ালার নজরে। তিনি প্রতিক্ষণ দেখছেন কাদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব এবং কাদের সাথে আমাদের লেন-দেন ও ব্যবসা-বানিজ্য। যারা ভারতসেবী রাজনীতি করে -তারা বেছে নিয়েছে শয়তানকে খুশি করার নীতিকে। মুসলিমের ইবাদত কখনোই নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, কুরআন পাঠ ও জিকিরে শেষ হয় না, সেগুলি বরং সে শত্রু শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে মাত্র। কিন্তু শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা ও তাদের অনুসারীদের বিদ্রোহ পবিত্র কুর’আনের উপরিউক্ত দুটি আয়াতে ঘোষিত নির্দেশের বিরুদ্ধে। ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের ন্যায় চিহ্নিত শত্রুদের শত্রু রূপে গ্রহণ না করে তাদেরকে প্রভু রূপে গ্রহণ করেছে। ভারতের এজেন্ডাপূরণ ও ভারতকে দেয়া নিয়েই তাদের আনন্দ। তাই হাসিনার উক্তি: “ভারতকে যা দিয়েছি তা ভারত কোন দিন ভূলতে পারবে না।”
যে বিরামহীন যুদ্ধটি হিন্দুত্ববাদী ভারতের
প্রশ্ন হলো, হিন্দুত্ববাদী ভারতের রাজনৈতিক এজেন্ডা কি বাঙালি মুসলিমদের অজানা? ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের যে অবিরাম যুদ্ধ -সেটিও কি অজানা? বাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীদের যুদ্ধটির শুরু বহু পূর্ব থেকেই। সেটি ব্রিটিশ আমল থেকেই। তারা প্রচণ্ড খুশি হয় ভারতের উপর মুসলিম শাসনের বিলুপ্তিতে এবং মনযোগী হয় ইংরেজদের পদেসবায়। পুরস্কার স্বরূপ ইংরেজগণ মুসলিমদের নিঃস্ব করেছে এবং হিন্দুদের জমিদার বানিয়েছে। সে আমলে হিন্দুত্ববাদীগণ মুসলিমদের পিছনে ফেলে একাকী এগিয়ে যেতে চেয়েছিল। মুসলিম প্রজাদের উপর তারা চালিয়েছে নিষ্ঠুর জমিদারী শোষণ।
১৯৪৭’য়ে তারা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করেছে; এবং পাকিস্তান বেঁচে থাকুক সেটিও তারা চায়নি। ১৯৭১ য়ে স্রেফ নিজেদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থপূরণে তারা পাকিস্তান ভেঙ্গেছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর মনযোগী হয়েছে দেশটির নৃশংস লু্ণ্ঠনে। এবং সে লুণ্ঠনের মধ্য দিয়ে উপহার দিয়েছে ভয়ানক দুর্ভিক্ষের। তাতে বহু লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ভারত শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ন্যায় সেবাদাসদের মাধ্যমে দখলদারী প্রতিষ্ঠা করেছে যেমন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে, তেমনি ধর্ম, অর্থনীতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির অঙ্গনে। সর্বক্ষেত্রে তাদের ছিল মুসলিমদের ক্ষতিসাধনের এজেন্ডা। এ অবস্থায় কোন মুসলিম কি কখনো নীরব ও নিষ্ক্রিয় হতে পারে? নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকলে কি তাকে ঈমানদার বলা যায়? হামলার মুখে পশুরাও সর্বসামর্থ্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই পশুদের নীতির চেয়েও নিকৃষ্ট হলো নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকার নীতি ।
ভারতীয় পণ্য বর্জন কেন ফরজ?
মুসলিমকে শুধু তার আশেপাশের হিংস্র পশু, বিষাক্ত সাপ ও কীট-পতঙ্গগুলিকে চিনলে চলে না, দেশী ও বিদেশী শত্রুদেরও চিনতে হয়। এবং ঈমানদারী হলো সে শত্রুদের বিরুদ্ধে অবিরাম যুদ্ধ নিয়ে বাঁচা। কথা হলো, শত্রুদের চেনার কাজটি সঠিক না হলে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কাজটি কিরূপে হবে? বুঝতে হবে, বাংলাদেশীদের জন্য বিদেশী শত্রু হলো ভারত। এবং দেশী শত্রু হলো তারাই যারা বাংলাদেশে ভারতপন্থী এবং ভারতীয় স্বার্থের পাহারাদার। এ দেশী শত্রু শিবিরে রয়েছে শেখ হাসিনার সরকার ও তার দল । ভারতের ন্যায় এদেশী শত্রুদের বিরামহীন যুদ্ধটি শুধু ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়, বরং বাংলাদেশীদের স্বাধীনতা, মৌলিক মানবিক অধিকার ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধেও।
ভারতের যুদ্ধটি যেমন ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে, তেমনি বাংলাদেশী মুসলিমদের বিরুদ্ধেও। কারণ, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী শত্রু বাংলাদেশী মুসলিমদের থেকে ভারতীয় মুসলিমদের থেকে আলাদা ভাবে দেখে না, বরং এক অভিন্ন উম্মাহর অংশ রূপে মনে করে। তারা বাংলাদেশীদের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার, মৌলিক মানবিক অধিকার, ধর্ম, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং দেশীয় ভূ-প্রকৃতির শত্রু। ভারত কখনোই চায় না, বাংলাদেশীরা মুসলিম রূপে বেড়ে উঠুক এবং অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হোক। তারা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছে এজন্য নয় যে, একটা স্বাধীন ও শক্তিশালী বাংলাদেশের সৃষ্টি হোক। বরং এজন্য যে, ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তান ভেঙ্গে যাক এবং সৃষ্টি হোক ভারতের অনুগত এক দুর্বল বাংলাদেশ। ভারত কোন কালেই বাঙালি মুসলিমদের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার চায়নি, এবং এখনো চায়না। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সামান্যতম সদিচ্ছা ও ভালবাসা থাকলে কি ভারত শেখ হাসিনার ভোটডাকাতিকে কি সমর্থণ দিত? সমর্থণ দিত কি স্বৈরাচারি মুজিবের বাকশালী শাসনকে?
ভারত বার বার প্রমাণ করেছে যে তারা বাংলাদেশের মুসলিমদের বন্ধু নয়। তারা বন্ধু ১৯৪৭’য়ের আগেও ছিল না। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ -এ সময়েও ছিল না।এবং ১৯৭১ এর পরেও তারা বন্ধু নয়। একাত্তরে তারা পাকিস্তান ভাঙার কাজে সফল হয়েছে। এখন বাংলাদেশের কোমর ভাঙার পিছনে লেগেছে। একাত্তরে যুদ্ধজয়ের পরে ভারত বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত সকল সমরাস্ত্র ভারতে নিয়ে গেছে। তাদের লুণ্ঠন এতই তীব্র যে ছিল যে একটি ট্যাংক, একটি কামান, একটি সামরিক জানও বাংলাদেশে রেখে যায়নি। এমনকি ক্যান্টনমেন্টের অফিসার মেস ও গৃহ থেকে ফ্রিজ, টেলিভিশন ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রী তুলে নিয়ে গেছে। এরপর মনোযোগী হয়েছে বাংলাদেশের শিল্প ধ্বংসে। পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশ অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান ছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ পাট উৎপাদনকারী দেশ। পাটের সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হতো পূর্ব পাকিস্তান থেকে। কিন্তু ভারত তার সেবাদাস মুজিবকে দিয়ে বাংলাদেশের শিল্প ধ্বংস করে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ পাটকল আদমজী জুট মিলকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান থেকে লোকসানী প্রতিষ্ঠার পরিণত করে। থেকে লোকসানে কিছুদিনের মধ্যেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ পাটকলকে বন্ধ করে দেয়।
ভারত একতরফা ভাবে পদ্মার পানি তুলে নিচ্ছে, বাংলাদেশকে তার ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না। তুলে নিচ্ছে তিস্তার পানিও । বাংলাদেশকে বহু নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না। ভারত বাংলাদেশের বুক চিরে করিডোর নিয়েছে তার পূর্ব সীমান্তের সাতটি প্রদেশে যাওয়ার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশী ট্রাকগুলোকে নেপালে ও ভুটানে যাওয়ার অধিকার দেয় না। বাংলাদেশে ভারত তার পণ্যের বাজার চায় কিন্তু নিজ দেশে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশ বন্ধ করে।
ভারত সরকার যে ইসলামের চরম শত্রু -সেটি তারা বার বার প্রমাণ করেছে। ভারতের শাসক দল বিজেপি, তার অঙ্গ সংগঠন আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ,বজরং দল -এরা সবাই মিলে ১৯৯২ সালে ঐতিহাসিক বাবলি মসজিদকে ধ্বংস করে। এখন সেই মসজিদের জায়গাতে বিশাল রাম মন্দির তৈরি করেছে। ভারতে বার বার মুসলিম নিধনের দাঙ্গা শুরু হয়, কিন্তু পুলিশ সেখানে দাঙ্গা থামায় না। বরং গ্রেপ্তার করে মুসলিমদের। ভারতের মুসলিমদের ইসলামের প্রচারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
/ভারত বাংলাদেশে গণতন্ত্রের চরম শত্রু। ভালো জানে যে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী ও ইসলামপন্থী দল বিজয়ী হবে। এবং পরাজিত হবে ভারতপন্থী আওয়ামী লীগ। এইজন্যই আওয়ামী লীগ বার বার ভোট ডাকাতির পথ বেছে নেয় এবং ভারত সেটিকে সমর্থন করে। ভোট ডাকাতির মাধ্যমে মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে ভারত সাথে সাথে সেটিকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলে সার্টিফিকেট দেয়। এবং বিশ্বের বিভিন্ন সরকারের উপরে চাপ দেয় আওয়ামী লীগের বিজয়কে স্বীকৃতি দিতে। আমরা সেটি যেমন ২০১৪ সাল ২০১৮ সালে দেখেছি, এটি আবার দেখলাম ২০২৪ সালে।
ফিলিস্তিনের গাজা’তে চলছে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা এবং ধ্বংসপ্রক্রিয়া। ২৬ হাজার নিরাপদ মানুষকে সেখানে হত্যা করা হয়েছে। আরো প্রায় সাত হাজার মানুষ পাথর চাপা পড়ে নিখোঁজ হয়েছে। প্রায় ১১ হাজার শিশু পঙ্গু হয়েছে। তাদের কেউ হাত, কেউ পা, কেউ হাত-পা উভয়ই হারিয়েছে। এটি গুরুতর যুদ্ধ-অপরাধ। কিন্তু ইসরাইলের এ ভয়ংকর অপরাধ ভারতকে আনন্দিত করছে। ভারত ইসরাইলকে সমর্থণ দিচ্ছে ও তার পাশে দাঁড়িয়েছে। যেখানেই মুসলিমদের ভয়াবহ বিপর্যয়, ভারত সেটিকে সমর্থন দেয়। ভারতীয় ইহুদীগণ ইসরাইলী বাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করছে এবং ভারতীয় শ্রমিকরা সেখানে গিয়ে ইসরাইলের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখছে। ভারত এভাবে প্রমাণ করছে, এ দেশটি মুসলিমদের শত্রু। এই অবস্থায় কোন ঈমানদার কি এমন কিছু করতে পারে -যাতে ভারতের লাভ হয়? ভারতের লাভ হয় ভারতের পণ্য কিনলে। সেজন্য সেটি ইসলামে হারাম। বরং প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরজ হলো ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া। সে যুদ্ধটি যেমন লেখালিখি ও মিডিয়ার জগতে হতে পারে, তেমনি হতে পারে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। যে কাজের মধ্যে দিয়ে মুসলিমদের ও ইসলামের শত্রু ভারতের লাভ হয় -সেরূপ প্রতিটি কাজই একজন মুসলিমের জন্য হারাম।
বাংলাদেশ হলো ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম বাজার। একটি শত্রুদেরকে কি এরূপ সুযোগ দেয়া যায়? এটা তো কবিরা গুনাহ। যে কাজের মধ্য দিয়ে শত্রুর সহায়তা হয় ও শত্রুর শক্তি বৃদ্ধি হয় -সে কাজ ইসলামে হারাম। কোন ঈমানদার কি এমন হারামে লিপ্ত হতে পারে? বুঝতে হবে, কোন ভারতীয় পণ্য কিনলে সে অর্থ ব্যয় হবে ভারতীয় মুসলিমদের দমন ও হত্যার কাজে। সে অর্থ ব্যয় হবে কাশ্মীরে মুসলিম নিধনের কাজে। সে অর্থ ব্যয় হবে মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণের কাজে। সে অর্থ ব্যয় হবে মুসলমানদের উপর নজরদারি ও নির্যাতনের কাজে। ভারতের বহু লক্ষ শ্রমিক বাংলাদেশে কাজ করে। তারা বহু বিলিয়ন ডলারের বিদেশী মুদ্রা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যায় এবং ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এ যুদ্ধ প্রতিটি বাংলাদেশীর। একটি গুলী না ছুড়ে বাংলাদেশীরা ভারতকে দারুন ভাবে পরাজিত করতে পারে।
বাংলাদেশী আলেমগণ এতো নিষ্ক্রিয় কেন?
শত্রু দেশের পণ্য বয়কট অর্থনৈতিক যুদ্ধের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা সহযোগী দেশগুলি সে অস্ত্র ব্যবহার করছে ইরান, আফগানিস্তান, কোরিয়া ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এতে দেশগুলি যথেষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। যুদ্ধকালে বহু হালাল বিষয়ও হারাম হয়ে যায়। ১৮৯১ সালে ইরানের আয়াতুল্লাহ হাসান সিরাজী তামাক সেবন হারাম বলে ফতোয়া দেন। সেটি ছিল আগ্রাসী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধের অংশ। ইরানের বাদশাহ সে সময় ব্রিটিশদের হাতে ইরানে তামাক ব্যবসার একচেটিয়া মনোপলি তুলে দেয়া নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। সেটি বন্ধ করতেই আয়াতুল্লাহ হাসান সিরাজী তামাক সেবনকে হারাম বলে ঘোষণা দেন। সেটি দারুন সফলতা দেয়। এমন কি রাজ পরিবারেও তামাক সেবন বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিটিশগণ ইরানের বাজার থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এতে বুঝা যায় ইরানী আলেমদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা। সে প্রজ্ঞার বলে তারা বিশ্বের অতি শক্তিশালী স্বৈরশাসকে পরাজিত করতে পেরেছিলেন। এবং এখনো সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বের ষড়যন্ত্রের মুখে টিকে আছে।
অতি পরিতাপের বিষয় হলো, ব্রিটিশ পণ্য বয়কটের ফতোয়া ভারতের উলামায়ে কেরাম কখনোই দেননি। এর কারণ, তারা পরিত্যাগ করেছেন নবীজী (সা:) রাজনৈতিক সূন্নত। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার মাদ্রাসাগুলিতে রাজনীতি পড়ানো হয়না। অথচ রাজনীতি মুসলিমদের কাছে নিছক রাজনীতি নয়, এটি ইসলামকে বিজয়ী করার পবিত্র জিহাদ। সে রাজনীতির জ্ঞান না থাকার কারণে ভারতীয় ও সে সাথে বাংলাদেশী আলেমদের মাঝে অর্থনৈতিক যুদ্ধের গুরুত্ব নিয়ে এতো গভীর অজ্ঞতা। তারা নামাজ পড়ানো, বিবাহ পড়ানো, মৃতের জানাজা পড়ানো ও কবর জিয়ারত নিয়ে ব্যস্ত আছে। কিন্তু তাঁরা ইসলামকে বিজয়ী করা এবং মুসলিম উম্মাহর স্বাধীনতা বাঁচানোর জিহাদে নাই। অথচ অর্ধেকের বেশী সাহাবী রাজনৈতিক জিহাদে শহীদ হয়ে গেছেন। অথচ ব্রিটিশ পণ্য পরিহারের ডাক দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা গান্ধি। বাংলাদেশী আলেমদের উচিত ছিল, ভারতীয় পণ্যের ব্যবহার হারাম ঘোষণা দিয়ে ফতোয়া দেয়া। অস্ত্রের যুদ্ধে না হোক এ অর্থনৈতিক যুদ্ধে তো তারা অংশ নিতে পারে। ভারত যে ভাবে বাংলাদেশের উপর তার অধিকৃতি জমিয়ে বসছে, সেটি এখনই রুখতে না পারলে ভয়ানক বিপদে পড়তে হবে। দেশের বাজার দখলে নেয়ার মধ্য দিয়েই বেনিয়া ব্রিটশগণ সমগ্র দেশ দখলে নিয়েছিল। ভারত সে পথই বেছে নিয়েছে। এই ঔপনিবেশিক আগ্রাসী ভারতকে অবশ্যই রুখতে হবে। এটি রাজনীতি নয়, এটি চিহ্নিত শত্রুর বিরুদ্ধে পবিত্র জিহাদ। ০৩/০২/২০২৪
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018