শহীদ আবরারের লিগ্যাসি এবং বন্ধু নির্বাচনে হারাম চর্চা
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on October 15, 2019
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
ইতিহাসে স্থান পেল আবরার
শহীদ আবরার দেশপ্রেম, বিবেকবোধ, দায়িত্ববোধ ও বিচা্রবোধের এক বিরল শিক্ষা রেখে গেল। সে উঠে এসেছিল কুষ্টিয়ার এক গ্রাম থেকে।সে ছিল বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কিন্তু চেতনার যে মান সে দেখিয়ে গেল সেটি যারা বড় মাপের বুদ্ধিজীবী, লেখক, ভিসি, প্রফেসর, বিচারক, রাজনীতিবিদ রূপে গর্ববোধ করেন -তাদের মাঝে কতটুকু? অথচ বীরত্ব ও সাহস নিয়ে তাদের অনেকের বড়াই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সমান। অথচ তারাও সরকারের ফ্যাসিবাদী বর্বরতার বিরুদ্ধে কানে কানে কথা বলতেও ভয় পায়। তারা ভাবে, দেয়ালেরও কান আছে, না জানি সরকারের গোয়েন্দারা গুম না করে দেয়। অথচ দেশজুড়া ভয়ের রাজত্বে সাহসী আবরার সেখানে ফেসবুকে প্রকাশ্যে স্টাটাস দিয়েছে। এরূপ স্টাটাস দেয়ার পরিণতি কি হতে পারে তা কি খুনি কবলিত বিশ্ববিদ্যালয়ে বসবাস করার পরও শহীদ আবরার জানতো না? আবরারের মত মেধাবী ছাত্র সেটি অবশ্যই জানতো। জেনে বুঝেই সে শহীদ হওয়ার পথটি বেছে নিয়েছে।
আবরার শুধু মেধাবী ছিল না, ঈমানদারও ছিল। সে নিয়মিত নামায পড়তো এবং রোযাও রাখতো। সে এটিও জানতো ঈমানদার হতে হলে অবশ্যই সাহসী হতে হয়। কারণ ঈমান ও সাহস একত্রে চলে। এবং ভীরুতার সাথে চলে বেঈমানী। ভীরুগণ ঈমানের দাবী করে বটে, কিন্তু তারা সত্য কথা বলতে ভয়। ফলে কার্যতঃ তারা মুনাফিক হয়। মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর মহা নিয়ামত ভরা জান্নাত ভীরু-কাপুরুষদের দিয়ে ভরবেন –সেটি কি ভাবা যায়? জান্নাতের একটি বিশাল মূল্য আছে। কোরআনের ভাষায় পৃথিবী-পূর্ণ সোনা দিয়েও তা কেনা যায় না। জান্নাত তো তাদের জন্য যারা জান্নাতের মুল্যে মহান অল্লাহতায়ালার কাছে নিজেদের জীবন বিক্রয় করে। এবং একমাত্র সাহসীরাই নিজ জীবন দিয়ে সে মূল্য পরিশোধের সামর্থ্য রাখে। জান্নাত তো তেমন সাহসীদেরই পুরস্কৃত করার জন্য্। আবরার সে সাহসীদেরই একজন। অপরদিকে ভীরুতার শাস্তিটি বিশাল; সেটি অসম্ভব করে্ জান্নাতে পৌঁছা। তাই মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশঃ “তাদের ভয় করো না, আমাকে ভয় করো”। আবরার বিশাল কৃতিত্ব, সে ভীরুতার উর্ধ্বে উঠতে পেরেছিল। বুয়েটের সকল ছাত্রই মেধাবী। বহু হাজার ছাত্র বুয়েট প্রতিষ্ঠার পর থেকে পড়াশুনা করে বেড়িয়ে গেছে। গাছের ঝড়া পাতার ন্যায় অনেকেই পৃথিবী থেকে হারিয়েও গেছে। যারা বেঁচে আছে তারাও কিছু দিনের মধ্যে হারিয়ে যাবে। কিন্তু আবরার ব্যতিক্রম। সে ইতিহাসে বেঁচে থাকার পথ করে নিল। এবং সেটি মেধাবী হওয়ার জন্য নয়, বরং সাহসী ঈমানদার হওয়ার জন্য।
অনন্য শহীদ আবরার
আবরার অনন্য। এবং অনন্য হওয়ার কারণ, সে কোন দলের ক্যাডার নয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলির বড় অপকর্মটি হলোঃ দলীয় কর্মীদের বিবেককে তারা শৃঙ্খলিত করে। শৃঙ্খলিত সে লোকদের যা বলতে বলা হয়, তারা তাই বলে। যেভাবে দেখতে বা শুনতে বলা সেই ভাবেই দেখে বা শুনে। এর বাইরে তারা ভাবতে, শুনতে বা দেখতে রাজী নয়। মানুষ যে স্বাধীন বিবেক নিয়ে বাঁচতে পারে বা স্বাধীন ভাবে মতামত ব্যক্ত করতে পারে -তা এ খাঁচার পাখিরা ভাবতেই পারে না। তাদের বাঁচাটি হলো, তাদের নিজ দলের স্বার্থের সুরক্ষা নিয়ে বাঁচা। কোন দলের সদস্য না হওয়াতে আবরারের পক্ষে সম্ভব হয়েছে দল, দলের নেতা বা দলীয় দর্শনের উর্ধ্বে উঠে ফেসবুকে স্টাটাস দেয়া। সে স্টাটাস দিয়েছে দেশের স্বার্থ্য বাঁচাতে। কথা বলেছে, বাংলাদেশের পানি, গ্যাস ও ভূমির উপর ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাতে।
বাংলাদেশে আবরারের ন্যায় মেধাবী ছাত্র বহুলক্ষ। কিন্তু ক’জনের দৃষ্টিতে ধরা পড়েছে আগ্রাসী ভারতের সে কুটিল ষড়যন্ত্র? ক’জন সে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে বা ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছে? ক’জন তার মত নির্মম ভাবে শহীদ হয়েছে। এসব মেধাবীগণ অতি ব্যস্ত নিজেদের ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে। নিজেদের স্বার্থ নিয়ে তারা এতটাই ব্যস্ত যে, দেশের স্বার্থ্ নিয়ে ভাবার সময় তাদের নাই। অন্যরা যারা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং লেখালেখি করে, তাদেরও আবরারের ন্যায় এতটা নিষ্ঠুর ও বেদনাদায়ক আঘাত সইতে হয়নি।
সংকট আরো গভীরে
আবরারের জীবনে যা ঘটলো, তা কোন সামান্য ঘটনা নয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্ত্বরে চলমান নৃশংস বর্বরতার একটি খন্ড চিত্র মাত্র। এ নৃশংসতা শুধু বিশ্ববিদ্যায়ের চত্ত্বরেও সীমিত নয়, এ নৃশংসতা চলছে সমগ্র দেশ জুড়ে। এ সরকারের শাসনামলে শত শত মানুষ গুম হয়েছে এবং খুন হয়েছে। এবং সে খুন ও গুমের বিচার হয়নি। খুনিগণ থেকেছে বিচারের উর্দ্ধে। আবরারের উপর যে নৃশংস বর্বরতাটি ঘটলো তা চলমান খুন ও গুমের রাজনীতিরই ধারাবাহিকতা। যারা এ ফ্যাসিবাদী রাজনীতির নায়ক, তাদের কাছে নিরপরাধ মানুঁষের জীবনের কোন মূল্য নাই। তারা ন্যায় বিচার পাক সেটিও তারা চায় না। তাই তারা সত্যকে ঢাকতে নানারূপ মিথ্যার জাল বুনছে। ইতিমধ্যেই তারা গুজব রটনা শুরু করেছে, আবরারের গায়ে কোন দাগ নাই। আবরারের থেথলে যাওয়া রক্তাত্ব পিঠের চিত্র যা ইতিমধ্যেই সোসাল মিডিয়াতে ছাপা হয়েছে -সেটিও তারা অস্বীকার করছে। আসামী পক্ষের উকিল বলছে, আবরারের দেহের দাগগুলো আঘাতের বদলে চর্ম রোগের কারণেও হতে পারে। কি বিস্ময়কর মিথ্যা! উভয় পক্ষের উকিলদের দায়িত্ব সুবিচারকে সুনিশ্চিত করা। বাধাগ্রস্ত করা নয়। কিন্তু সেটিই শুরু হয়েছে। অথচ ময়না তদন্তে বলা হয়েছে, আবরার তার দেহে প্রচণ্ড আঘাত ও অসহ্য বেদনার কারণে মারা গেছে। ন্যায় বিচারের শত্রুগণ নানারূপ মিথ্যা রটাচ্ছে আবরার হত্যার বিচারকে ব্যর্থ করা বা অপরাধীদের শাস্তিকে লঘু করার লক্ষ্যে। তারা তাঁকে শিবির কর্মী রূপেও চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে। যেন শিবির কর্মীদের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। যেন তারা মারা যাবে আবরারের ন্যায় অসহ্য বেদনা নিয়ে। একমাত্র ফ্যাসীবাদী বর্বরতাই মানুষকে এতটা অসভ্য ও নৃশংস করতে পারে।
তাছাড়া ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার সামর্থ্য চোর-ডাকাতদের থাকে না। সে সামর্থ্য থাকে না ভোট-ডাকাতীর মাধ্যমে ক্ষমতায় বসা একটি অবৈধ সরকারেরও। দুর্বৃত্ত সরকারের কারণে বাংলাদেশের পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার ব্যর্থতাগুলিও অতি বিশাল। রাজনীতি এখন আর শুধু রাস্তার গুন্ডা ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে সীমিত নেই, সেটি উঠে এসেছে আদালতেও। কাকে রিমান্ডে দেয়া হবে, কে শাস্তি পাবে এবং কে মুক্তি পাবে –বিচারকগণ সে ফয়সালাটি নেয় ভোট-ডাকাত সরকার প্রধানের মুখের দিকে তাকিয়ে। পুলিশও ক্ষমতাসীন দলের অনুমতি না পেলে খুনের তদন্তে নামে না, আসামীদেরও ধরে না। তাই আহত আবরারের দেহ সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও পুলিশ সেখানে তদন্তে যায়নি। তাকে হাসপাতালে নিতে কোন এ্যামবুলেন্সও পাঠায়নি। কারণ, এসব করতে তো পুলিশকে রাজনৈতিক কর্তাদের থেকে অনুমতি নিতে হয়। অপরদিক বিচারকগণ পরিণত হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারে। কাকে শাস্তি দেয়া হবে, কাকে নির্দোষ ঘোষণা দেয়া হবে -সে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা বিচারকদের নাই। তাই বহু খুনের মামলায় আদালতের বিচারকগণ এবং তদন্তকারি পুলিশগণ নিহতদের গায়ে আঘাতের কোন চি্হ্ন খুঁজে পায় না। এবং খুঁজে পায় না খুনিকে। খুনের কোন কারণও তারা খুঁজে পায় না। যেন মৃত ব্যক্তি খুনি ছাড়াই খুন হয়েছে। যেন সে নিজেই নিজেকে হত্যা করেছে! ফলে কারো কোন শাস্তিও হয় না। সরকারি দলের খুনিকে বাঁচাতে নিষেধাজ্ঞা থাকে খুজাখুজির বিরুদ্ধে। ফ্যাসীবাদ প্রতিষ্ঠা পেলে ন্যায্য বিচার ব্যবস্থা এভাবেই কবরস্থ হয়। বাংলাদেশে ন্যায্য বিচার কবরস্থ্ করার সে কাজটি ঘটেছে বহু আগেই।
ঘৃনার সামর্থ্য অপরিহার্য কেন?
সভ্য মানবদের জীবনে শুধু ভালবাসার বল থাকলে চলে না। থাকতে হয় মিথ্যাচার, দুর্বৃত্তি, গুম, হত্যা, জুলুম ও ধর্ষণের ন্যায় অপরাধের বিরুদ্ধে ঘৃণার সামর্থ্য। তাকে শুধু শান্তিবাদী হলে চলে না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও নামতে হয়। দুর্বৃত্ত নির্মূলের যুদ্ধে তাকে প্রাণও দিতে হয়। ইসলামের নবী (সাঃ)তো সেটিই শিখেয়ে গেছেন। পবিত্র কোর’আন দিয়েছে ভালবাসা ও ঘৃণার মানদন্ড। সে মানদন্ডে হারাম শুধু মদ্যপান, সূদ-ঘুষ ও শুকরের গোশত নয়। হারাম হলো দুর্বৃত্তদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো এবং তাদের সাথে মিত্রতা গড়া। তাই দেশজুড়ে শহীদ আবরারের প্রতি যে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসার জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সেটি শুধু আবরার কেন্দ্রীক হলে ভয়ানক ক্ষতি হয়। ফ্যাসীবাদের বিরুদ্ধে লড়াই তাতে ব্যর্থ হয়। ফ্যাসীবাদের নির্মূলে অপরিহার্য হলো, নেক কর্মের প্রতি ভালবাসার সাথে জুলুমের বিরুদ্ধে ঘৃণার সামর্থ্যকে তীব্রতর করা। কারণ, দুর্বৃত্তির বিরুদ্ধে ঘৃনার মাত্রাটি যাদের মাঝে প্রবল একমাত্র তারাই তার নির্মূলে জিহাদে নামে। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে প্রিয় হওয়ার জন্য এ দু’টি গুণই অতি জরুরী।
দুর্বৃত্তির বিরুদ্ধে ঘৃণার ন্যূনতম সামর্থ্য যার আছে, সে কি কখনো এক দুর্বৃত্ত ভোট-ডাকাতকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলতে পারে? এটি যেমন অনৈতীক। তেমনি ধর্মীয় ভাবে হারাম। এটি জঘন্য পাপাচার। সভ্য ও বিবেকবান মানুষ কখনোই লোহার কোদালকে সোনার গহনা বলে না। তাকে কোদালই বলে। নইলে মিথ্যাচার হয়। তেমনি ভোটডাকাতকে ভোটডাকাতই বলতে হয়। তাকে মাননীয় বললে দুর্বৃত্তিকে সন্মান দেখানোর কবীরা গুনাহ হয়। এ দ্বীনের সামান্য বিষয়টুকু বুঝার জন্যও কি সে সব হুজুরদের মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষা নেয়ার প্রয়োজন পড়ে যারা দুর্বৃত্ত ভোট-ডাকাতকেও কওমী জননী বলে? সভ্য মানুষদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যটি হলো, শ্রদ্ধা ভরে তারা স্মরণ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যারা জীবন বিলিয়ে দেয় দেশের স্বার্থকে সুরক্ষা দিতে। সে সাথে মনে প্রাণে ঘৃণা করে সেসব অসভ্যদের যারা গুম-খুন-সন্ত্রাসের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা দেয় এবং আগ্রাসী শত্রুর সাথে জোট বাধে। বাংলাদেশে এ দুটি পক্ষই রয়েছে। এক দিকে রয়েছে শহীদ আবরের মত নিরেট দেশপ্রেমীক। অপরদিকে রয়েছে বাকশালীদের ন্যায় মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের দুষমনেরা।
হারাম হলো ভারতের সেবাদাসকে বাংলাদেশের বন্ধু বলা
তবে নানা রূপ দুর্বৃত্তির সাথে বাংলাদেশে যে হারাম কাজটি অতি ব্যাপক ভাবে হচ্ছে সেটি হলো এক অপরাধীকে বঙ্গবন্ধু বলার মধ্যদিয়ে। মুজিবের সবচেয়ে বড় পরিচয় গণতন্ত্রের হত্যাকারী বাকশালী রূপে। তাছাড়া মুজিবকে বঙ্গবন্ধ খেতাবটি দেশের জনগণ দেয়নি। দিয়েছে মুজিবের বাকশালী ও রক্ষিবাহিনী চেতনার অনুসারিরা। তবে মুজিব শুধু গণতন্ত্র হত্যাকারিই ছিল না। তার হাতে নিহত হয়েছে ৩০ হাজারের বেশী রাজনৈতিক কর্মী। নিহত হয়েছে সিরাজ সিকদারের ন্যায় বহু রাজৈতিক নেতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্থ যদি পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্নতা হয়ে থাকে, তবে সেটি মুজিব আনেনি। মুক্তিবাহিনীও আনেনি। মুক্তিবাহিনী সমগ্র দেশ দূরে থাক একটি জেলাও স্বাধীন করতে পারিনি। একটি যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্নতা এনে দিয়েছে ভারত। তবে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্নতা দিলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা মিলেনি। বরং দিয়েছে ভারতের অধিনস্ত গোলামী। মুজিব ছিল ভারতীয় ষড়যন্ত্রের আজ্ঞাবহ গোলাম মাত্র। তাই বাংলাদেশের আজকের বাস্তবতা বুঝতে হলে ভারতের মুসলিম বিরোধী ষড়যন্ত্রকে অবশ্যই বুঝতে হবে। আবরার সেটি বুঝেছিল বলেই সে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছিল। আর সেটি ভারতের সেবাদাসদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ভারতে নীতিতে কোনকালেই কোন অস্পষ্টতা ছিল না।এখনও নাই। ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলছে লাগাতর যুদ্ধ। চলছে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের রাজনীতি। মুসলিমদের কষ্টকে অতিশয় যন্ত্রনাদায়ক করতে কাশ্মীরে চলছে লাগাত কার্ফিউ। ভারতে মুসলিমদের সংখ্যা শতকরা ১৫ ভাগ। অথচ চাকুরীতে তাদের সংখ্যা শতকার ৫ ভাগেরও কম। গরুর গোশতো খাওয়ার অভিযোগ এনে মুসলিমদের সেখানে রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আসাম থেকে মুসলিম নির্মূলের। মাথার টুপি কেড়ে নিয়ে বাধ্য করা হচ্ছে, জয় শ্রীরাম বলতে। এ অবস্থায় কোন মুসলিম কি ভারতের পক্ষ নিতে পারে? সেটি করলে কি ঈমান থাকে? বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের মূল রক্ষক ও অভিভাবক হলো ভারত। তাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্রতর হলে জড়িয়ে পড়বে ভারত। এবং সে লড়াইয়ে বিজয়ী হতে হলে ভারতের ষড়যন্ত্র নিয়ে জনগণকে অবশ্যই অবহিত করতে হবে।
ভারতের ন্যায় একটি কাফের রাষ্ট্রের সাথে মুসলিমদের সম্পর্ক কীরূপ হবে তা নিয়ে পবিত্র কোর’আনের নির্দেশনাগুলি অতি সুস্পষ্ট। তাদেরকে কখনোই বন্ধু রূপে গ্রহণ করা যেতে পারে না। আর পবিত্র কোর’আনে যা বলা হয়, ইসলামে সেটিই তো হারাম। পবিত্র কোর’আনে নির্দেশনা এসেছে এভাবেঃ “মু’মিনগণ যেন মু’মিনগণ ব্যতীত কাফেরদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যে ব্যক্তি সেরূপ করবে, তার সাথে আল্লাহর কোন সম্পর্ক থাকবে না। …।” –(সুরা আল ইমরান, আয়াত ২৮।) এ বিষয়ে তীব্র ভাবে হুশিয়ার করা হয়েছে নীচের আয়াতেঃ “হে মুমিনগণ! তোমরা আমার শত্রু এবং তোমাদের শত্রুদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না…..।” –সুরা মুমতাহিনা, আয়াত ১)। আরো বলা হয়েছেঃ “(হে নবী) যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শত্রুদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করে -এমন মানুষদের উপস্থিতি আপনি কখনোই তাদের মাঝে পাবেন না যারা আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ঈমান রাখে….।” –সুরা মুজাদেলা, আয়াত ২২)। অর্থাৎ মুসলিম সমাজে কাফেরদের বন্ধুগণ শোভা পাবে সেটি মহান আল্লাহতায়ালার কাম্য নয়। অথচ বাংলাদেশে ভারতীয় কাফেরদের ঘনিষ্ট বন্ধুগণ শুধু শোভাই পায় না, বরং তারাই বাংলাদেশের ন্যায় একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের হর্তাকর্তা।
প্রশ্ন হলো, উপরুক্ত তিনটি কোর’আনী নির্দেশনার মাঝে কি কোন অস্পষ্টতা আছে? যা সুস্পষ্ট তা হলো, ঈমানদার ব্যক্তি কখনোই একই সাথে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ এবং ইসলামে অবিশ্বাসী কাফেরদের পক্ষ নিতে পারে না। তাকে অবশ্যই একটি পক্ষকে বেছে নিতে হয়। শেখ মুজিব এখানে ভারতীয় কাফেরদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করেছে এবং সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে মহান আল্লাহতায়ালা ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে। মহান আল্লাহতায়ালার বিরুদ্ধ অবস্থান নেয়ার কারণে, শেখ মুজিব পবিত্র কোরআনের আয়াত সরিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম থেকে। নিষিদ্ধ করেছে সকল ইসলামী দলগুলিকে এবং সেসব দলের নেতাদের পাঠিয়েছে কারাগারে।। তার আমলে বাংলাদেশ হারিয়েছে বাংলাদেশের ভূমি বেরুবাড়ী, হারিয়েছে পদ্মার পানি। হারিয়েছে স্বাধীনতা। স্বাক্ষর করেছে ২৫ সালা দাসচুক্তি। দেশ পরিণত হয়েছে ভারতের গোলাম রাষ্ট্রে। হাসিনাও তার পিতার পথ ধরেছে। সে সংবিধান থেকে সরিয়েছে মহান আল্লাহতায়ার উপর আস্থার বানিকে। ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে ইসলামী ব্যক্তিদের। সে সাথে লাগাতর সমর্থণ দিয়ে যাচ্ছে কাশ্মীরের চলা ভারতে হত্যা,ধর্ষণ ও গুমের বর্বরতাকে। পদ্মা ও তিস্তার পানি আনতে ব্যর্থ হলে কি হবে, সম্প্রতি হাসিনা চুক্তি স্বাক্ষর করে ফেনি নদীর পানি ভারতকে দিয়ে এসেছে। সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের ভারত অপহরন করে নিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সাহস নাই বাংলাদেশ সরকারের। বাংলাদেশের পরিস্থিতি তাই গুরুতর। অক্টোপাসের ন্যায় ভারত চারদিক থেকে বাংলাদেশকে ঘিরে ধরেছে। তাই স্রেফ আবরার হত্যার বিচার হলেই দেশে শান্তি আসবে না। যারা দেশের স্বাধীনতা নিয়ে যারা ভাবে তাদেরকে আরো গভীরে হাত দিতে হবে। গুম, খুন, ধর্ষন, স্বৈরাচার ও বিচারহীনতার কালচার যারা প্রতিষ্ঠা দিয়েছে নির্মূল করতে হবে তাদেরও । ১৩.১০.২০১৯
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018