অধ্যায় সাত: ইতিহাসে প্রতিহিংসা
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on December 29, 2018
- ই-বুকস
- No Comments.
সহিংস মানস
কোন সভ্য আদালতই এমন কি নৃশংস খুনির বিরুদ্ধেও মিথ্যা বলার অধিকার দেয় না। কারণ আদালতে মিথ্যা বলা শুরু হলে মৃত্যু ঘটে ন্যায়-বিচারের। তখন অসম্ভব হয়ে পড়ে সামাজিক শান্তি ও সভ্য সমাজের নির্মাণ। একই কারণে মিথ্যা চলে না ইতিহাসের আদালতেও। এখানে বিচার বসে ইতিহাসের ঘটনাবলি ও তার মূল নায়কদের। ইতিহাস লেখার কাজ তো বিচারকের কাজ। প্রতিটি যুদ্ধেই পক্ষ ও বিপক্ষের মাঝে রক্তাত্ব সংঘাত থাকে; নৃশংস অপরাধও ঘটে। উভয় পক্ষের নেতা-নেত্রী ও যোদ্ধাদের মনে প্রচণ্ড সহিংসতাও থাকে। সে সহিংস মানস নিয়ে কেউ কি নিরপেক্ষ ইতিহাস লিখতে পারে? তাদের লেখনিতে বরং যা ফুটে উঠে তা হলো তাদের প্রতিহিংসা-পরায়ণ মানস। আগুণের কাজ আশেপাশে আগুণ লাগানো; সহিংস লেখনিও তেমনি রাষ্ট্র জুড়ে সংহিসতা ছড়ায় ও যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে। তাই মানব সমাজের অতি ভয়ংকর অনাসৃষ্টি হলো সহিংস ইতিহাস ও সাহিত্য। এরূপ ইতিহাস ও সাহিত্য জাতিকে আত্মবিনাশী করে। ইতিহাস রচনার বাংলাদেশে বস্তুত সেটিই হয়েছে।
নিরপেক্ষ বিচারের ন্যায় নিরপেক্ষ ইতিহাস রচনার কাজটি কখনোই পক্ষপাতদুষ্ট চাটুকর বা মোসাহেবদের দ্বারা হয় না। বিচারক যেমন আদালতে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষের কথা শোনেন, তেমনি ইতিহাসের লেখককেও দুই পক্ষের কথাই লিপিবদ্ধ করতে হয়। অথচ বাংলাদেশে সে কাজটি হয়নি। দেশে যারা ইসলামের পক্ষের শক্তি এবং যারা ১৯৭১’য়ে বাংলাদেশের সৃষ্টির বিরোধীতা করল -তাদের কোন কথাকেই ইতিহাসের বইয়ে স্থান দেয়া হয়নি। এটা ঠিক, একাত্তরের যুদ্ধে পাকিস্তানপন্থীগণ পরাজিত শক্তি। কিন্তু পরাজিত হওয়ার অর্থ তো ভ্রান্ত, দুর্বৃত্ত বা অপরাধী হওয়া নয়। হাজার হাজার পয়গম্বরও পরাজিত হয়েছেন; দেশত্যাগী বা নিহতও হয়েছেন। তেমনি বিজয়ী হওয়ার অর্থ সঠিক, সত্যপন্থী বা নিরপরাধ হওয়া নয়। হালাকু-চেঙ্গিজের ন্যায় বহু নৃশংস দুর্বৃত্তও বার বার বিজয়ী হয়েছে। ইতিহাসে তাই শুধু বিজয়ীদের স্থান দিলে চলে না, বিজয়ীদের পাশাপাশি যারা পরাজিত ও নিহত হলো তাদেরও তো স্থান দিতে হয়। তাদের দর্শন, স্বপ্ন ও চরিত্রকেও তুলে ধরতে হয়। নইলে সে ইতিহাস গ্রহণযোগ্য হয় না। তাছাড়া যারা একাত্তরে বাংলাদেশের বিরোধীতা করলো তারা কি স্বৈরাচারী বা ভোট ডাকাত ছিল?
ইতিহাস কোন দলের নয়, কোন বিজিত পক্ষেরও নয়। এটি সর্বদলের ও সর্বজনের। আর সেটি না হলে সে ইতিহাসের বই স্থান পায় আবর্জনার স্তূপে। যেমনটি ঘটে আদালতে মিথ্যা সাক্ষীদের বেলায়। অথচ বাংলাদেশের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে মিথ্যাদূষণের কাজটিই বেশী বেশী ঘটেছে। বিপক্ষ পক্ষের লোকেরাও যে দেশপ্রেমিক নাগরিক, তাদের অভিমত এবং তাদের চিন্তাচেতনারও যে ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে সেটি তাদের রচিত ইতিহাসে স্বীকার করা হয়নি। বরং তাদের চিত্রিত করা হয়েছে ঘাতক,দুষমন ও যুদ্ধাপরাধী রূপে। অভিধান খুঁজে খুঁজে সবচেয়ে ঘৃণাপূর্ণ শব্দগুলো তাদের চরিত্রহননের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। এভাবে জাতীয় জীবনে বিভক্তি ও রক্তঝরা ক্ষতগুলোকে স্থায়ী রূপ দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা হয়েছে। সে ক্ষতে বরং নিয়মিত মরিচ লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে একাত্তরকে ঘিরে কার্যতঃ দেশ বিভক্ত হয়েছে ইসলামের পক্ষ ও বিপক্ষ –এ দ্বি-জাতিতে। এবং সে বিভক্তি দূরের কোন উদ্যোগই নেই। বরং উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে দিন দিন সে বিভক্তিকে গভীরতর ও রক্তাত্ব করার লক্ষ্যে। এমন অব্যাহত বিভক্তিতে একমাত্র শত্রুই খুশি হতে পারে। ফলে বাংলাদেশের এরূপ বিভক্ত অবস্থায় ভারতের ন্যায় সুযোগ সন্ধানীদের উৎসবের দিন -যেমন উৎসব মুখর হয়েছিল একাত্তরের বিজয়ে। জাতির এ বিভক্ত অবস্থাকে কাজে লাগাতে এবং সেটিকে আরো প্রবলতর করতে ভারতের মদদপুষ্টরা আরেকটি রক্তাত্ব লড়াইয়ের ডাক দিচ্ছে। ভাবছে, ইসলামপন্থী ও প্রাক্তন পাকিস্তানপন্থীদের নির্মূল করা এবং তাদের রক্তে আবার প্লাবন সৃষ্টির এখনই মোক্ষম সময়। আর এ বীভৎস রক্তপিপাসাকে তারা বলছে একাত্তরের চেতনা। বিদ্বেষ, ঘৃনা, বিভক্তি,সহিংসতা ও রক্তক্ষয় বাড়িয়ে কি জাতীয় জীবনকে সুশৃঙ্খল ও শান্তিময় করা যায়? এমন ঘৃনার মাঝে কারো জীবনে কি নিরাপত্তা বাড়ে? ঘৃনা কেবল ঘৃনাই জন্ম দেয়। শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগ অতীতে সে পথেই চলেছিল। কিন্তু সে নীতি তাদের জীবনেও মহা বিপর্যয় এনেছে। ১৫ই আগস্টের জন্ম তো এভাবেই হয়েছে।
প্রতিহিংসার বীজ
জাতীয় জীবনে যখনই কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আসে, দেশের সব নাগরিক তখন একই রূপ সিদ্ধান্ত নেয় না। কারণ ভবিষ্যৎ নিয়ে সবার ভাবনা যেমন এক নয়, সবার সিদ্ধান্তও তেমনি এক নয়। ব্যক্তির সিদ্ধান্তে প্রতিফলন ঘটে তার ভবিষ্যতের স্বপ্ন, দর্শন, বিশ্বাস ও কাণ্ডজ্ঞানের। কিন্তু সে ভিন্ন অভিমত ও ভিন্ন বিশ্বাসের কারণে কাউকে কি ঘাতক, দেশের বা জনগণের শত্রু বলা যায়? প্রক্তন মুখ্যমন্ত্রী জনাব নুরুল আমীন, সাবেক গভর্নর ডাঃ আব্দুল মোত্তালেব মালেক, শাহ আজিজুর রহমান, আব্দুর রহমান বিশ্বাস, খান আব্দুস সবুর, ফজলুল কাদের চৌধুরী,মাহমূদ আলী, মৌলভী ফরিদ আহমেদের ন্যায় বহু নেতা ১৯৭১’য়ে প্রেক্ষাপটে ভিন্ন মত রাখতেন। বাঙালী মুসলিমদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা ভিন্নরূপ স্বপ্ন দেখতেন। মুজিব ও তার অনুসারিদের থেকে সে স্বপ্ন ভিন্নতর ছিল। সে অভিন্ন স্বপ্ন নিয়ে তারা রাজনীতি করেছেন ১৯৪৭ সালের পূর্ব থেকেই। মুসলিম লীগ, পিডিপি, জামায়াতে ইসলামী,নেজামে ইসলামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, কৃষক-শ্রমিক পার্টি, আব্দুল হকের নেতৃত্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের কম্যুনিষ্ট পাটির ন্যায় বহু দল এবং বহু নির্দলীয় আলেম-উলামা, ইমাম, কবি-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, আইনজীবী এবং সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি তখন শেখ মুজিব ও তার দল থেকে ভিন্নতর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সে জন্য কি তাদেরকে ঘাতক বলা যায়? মুজিবের অনুসারিগণ যেমন অস্ত্র তুলে নিয়েছিল, পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার্থে তারাও অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। কারণ, তাদের বিরুদ্ধে হামলাটিও নিরস্ত্র ভাবে হয়নি, বরং অতি সশস্ত্র ভাবেই হয়েছিল। তাদের কাছে পাকিস্তান ছিল তাদের নিজেদের দেশ; যেমনটি ছিল পাঞ্জাবী, সিন্ধি, পাঠান, বেলুচ এবং ভারত থেকে আগত মোহাজিরদের। নিজেদের দেশ বাঁচাতে যে ব্যক্তি জীবন দিতে রাজি, তাকে কি অন্যদের দালাল বলা যায়? পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র তুলে নেয়ার কারণে কাউকে ঘাতক বলা হলে যারা বাংলাদেশের জন্য অস্ত্র তুলে নিল তাদেরকেও তো ঘাতক বলতে হয়।
একাত্তরের ইতিহাসের রচনাকারিগণ শুধু পক্ষপাতদুষ্টই নয়, প্রচণ্ড প্রতিহিংসা-পরায়নও। অথচ ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর কায়দে আযমসহ মুসলিম লীগ নেতাদের মানবিক গুণটি চোখে পড়ার মত। সেদিন শ্রী মনোরঞ্জন ধরের মত কংগ্রেসের যেসব শত শত নেতা-কর্মী সর্বশক্তি দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করেছিল -তাদের কাউকেই জেলে পাঠানো হয়নি। কাউকে দালাল বলা হয়নি। তাদের নাগরিগকত্বও হরণ করা হয়নি। তাদের ঘরবাড়ী লুটতরাজ ও দখল করা হয়নি। বরং তারা সংসদে সন্মানের সাথে বসা এবং সে সাথে মন্ত্রী হওয়ার মর্যাদা পেয়েছিলেন। অথচ পাকিস্তানে ভাঙ্গার বিরোধীতাকারিদের হয় নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে অথবা কারাবন্দী করা হয়েছে। শেখ মুজিব পাকিস্তানের জেল থেকে জীবন্ত ও অক্ষত অবস্থায় ফেরত আসলেও বহু পাকিস্তানপন্থী নেতা-কর্মীগণ মুজিব ও মুজিবভক্তদের হাত থেকে জান্ত ফিরে আসতে পারিনি। মুজিবের শাসনামলে নিখিল পাকিস্তান মুসলিম লীগ সভাপতি জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী কে প্রাণ দিতে হয়েছে ঢাকার কারাগারে। নিজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জনাব এ্যাডভোকেট ফরিদ আহম্মদকে অতি নিষ্ঠুর ভাবে প্রান দিতে হয়েছে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে। নির্মম ভাবে হত্যা করার পর গুম করা হয়েছে তার লাশকে। বহু নিরীহ আলেম, মসজিদের বহু ইমাম, মাদ্রাসার বহু শিক্ষক ও ছাত্র এবং হাজার হাজার রাজাকারদের অতি নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদের ঘরবাড়িও লুট করা হয়েছে। হনন করা হয়েছে অনেকের নাগিরকত্ব।এভাবে লুন্ঠন করা হয়েছিল বাংলাদেশের মাটিতে তাদের বসবাসের অধিকার। নাগরিকত্ব একজন ব্যক্তি জন্মসূত্রে অর্জন করে।এজন্য কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য বা সে দেশের ভৌগলিক বা রাজনৈতিক মানচিত্রের সমর্থক হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তাই ১৯৪৭’য়ের পর পূর্বপাকিস্তানে বসবাসকারি হিন্দুগণ অখণ্ড ভারতের বিশ্বাস নিয়েও পাকিস্তানের বৈধ নাগরিক হতে পেরেছিলেন। এটাই যে কোন সভ্য দেশের নীতি। কিন্তু সে নীতি কবরস্থ হয়েছিল মুজিব আমলে। বহুলক্ষ আইরিশ নাগরিক আয়ারল্যান্ডের বিট্রিশভুক্ত হওয়ারই ঘোরতর বিরোধী। তারা আয়ারল্যান্ডকে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীন করতে চায়। এজন্য তারা বহুযুগ ধরে লড়াই করেছে, প্রাণও দিয়েছে। কিন্তু তারপরও তাদেরকে ব্রিটিশ নাগরিকত্বকে হরণ করা হয়নি। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরী জনগণ পাকিস্তানের যোগ দিতে চায়। কিন্তু তাই বলে তাদের হাত থেকে ভারতের পাসপোর্ট কি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে? পৃথিবী জুড়ে এরূপ অসংখ্য উদাহরণ। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসটি ভিন্ন। স্রেফ রাজনৈতিক কারণে শেখ মুজিব বহু বাঙালী মুসলিমের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা যে কতটা বিবেকশূন্য, মানবতাশূন্য ও প্রতিহিংসা পরায়ন -এসব হল তার দলিল।
সন্ত্রাসের হাতিয়ার
শেখ মুজিবের মাঝে একাত্তরে যেটি প্রবল ভাবে কাজ করছিল সেটি হল তাঁর অযোগ্যতা-জনীত ভীতি। যে ব্যক্তি সাঁতার জানে না,সে সমুদ্রে বা নদীতে নামতে ভয় পায়। সে খোঁজে হাঁটু পানির খাদ। শেখ মুজিবের যোগ্যতা ছিল না বাংলাদেশের মত একটি ছোট দেশ পরিচালনার। ক্ষমতায় আসীন হওয়া মাত্রই সে অযোগ্যতার প্রমাণটি তিনি দিয়েছেন। দেশবাসী এবং সে সাথে বিশ্ববাসী স্বচক্ষে দেখেছে তার সে সীমাহীন অযোগ্যতা। বাংলাদেশের বহু হাজার বছরের ইতিহাসে যা ঘটেনি তিনি দেশটিকে সেটিই উপহার দিয়েছেন। তার কথিত সোনার বাংলাকে তিনি নিজ হাতে ‘তলাহীন ভিক্ষার ঝুলি’তে পরিণত করেছেন। সুজলা সুফলা বাংলার মানুষকে তখন খাদ্যের জন্য কুকুর বিড়ালের সাথে আস্তাকুরে লড়াই করতে হয়েছে। মহিলাদের কাপড়ের অভাবে জাল পড়তে হয়েছে।
নিতান্ত উম্মাদ না হলে নিজের অক্ষমতা কারোই অজানা থাকে না। তাই অন্যরা না জানলেও মুজিব ঠিকই জানতেন, পাকিস্তানের মত বিভিন্ন ভাষাভাষি নিয়ে গঠিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম রাষ্ট্রটির শাসনভার চালানোর যোগ্যতা তাঁর নাই। তাই সেটিকে ভেঙে নিজ সামর্থ্যের উপযোগী করা তাঁর রাজনীতির বড় উদ্দেশ্য ছিল। দেশ বা দেশবাসীর অধিকার নিয়ে তার কোন আগ্রহ ছিল না। অন্যের অধিকারের প্রতি সামান্য শ্রদ্ধা থাকলে কি তিনি একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতেন? অধিকার বা সার্বভৌমত্ব বলতে তিনি যা বলতেন সেটি তাঁর নিজের, নিজ পরিবারের ও নিজ দলের। জনগণের নয়। দেশেরও নয়। তাঁর চেতনার মানচিত্র ছিল অতিক্ষুদ্র। তাই পাকিস্তানের বিশাল মানচিত্র তার কাছে অসহ্য ছিল। ক্ষুদ্র কীট যেমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খাদ্য কণাকে খুঁজে, এবং বড় টুকরো পেলে সেটিকে যেমন ক্ষুদ্রতর করে মুখে পুরে, তেমনি দশা ক্ষুদ্রমাপের এসব মানুষদেরও। গড়া নয়, ভাঙ্গাতেই তাদের অহংকার।
মুসলিম বিশ্ব আজ যেরূপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশে বিভক্ত, শক্তিহীন ও ইজ্জতহীন -তা তো এসব ছোট চেতনার ছোট ছোট ব্যক্তিদের জন্যই। এদের শক্তির মুল উৎসটি নিজের যোগ্যতা নয়, বরং অপরের চরিত্রহনন। অপরের নির্মূলের মাঝেই এরা নিজেদের প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে।এদের কারণেই বাংলাদেশের রাজনীতি, বুদ্ধিবৃত্তি ও ইতিহাস রচনায় ইসলামপন্থীদের চরিত্রে কালিমা লেপনের এতো আয়োজন। সৃষ্টি হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নির্মূল, ফাঁসি বা সহিংস হামলার প্রেক্ষাপট। কাউকে খুনি বা যুদ্ধাপরাধী আখ্যায়ীত করে আদালতের নিয়ে ফাঁসীর আয়োজন করা হলে -তাতে দেশে-বিদেশে প্রতিবাদ না হওয়ারই কথা। দেশে মিথ্যাপূর্ণ ইতিহাসের বই, পত্র-পত্রিকা ও মিড়িয়া তো সে কাজটিই করে। ইতিহাসের বইগুলো তখন পূর্ণ হয় প্রতিহিংসার বীজে; পরিণত হয় সন্ত্রাসের হাতিয়ারে। ইতিহাস চর্চায় তখন জ্ঞানে বৃদ্ধি ঘটে না, প্রজ্ঞাও জন্ম নেয় না; বরং ছাত্রদের প্রচণ্ড প্রতিহিংসা পরায়ণ করে। বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চা এভাবেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফাঁসিতে ঝুলানোর পেক্ষাপট তৈরীতে ব্যবহৃত হয়।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018