অসভ্য আওয়ামী রাজনীতির তান্ডব ও বাংলাদেশের ব্যর্থ জনগণ
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on August 19, 2022
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
তান্ডব আওয়ামী অসভ্যতার
আওয়ামী রাজনীতির চরিত্র আজ আর কোন গোপন বিষয় নয়। সূর্যের আলোর ন্যায় সেটি সুস্পষ্ট। যে কোন সুস্থ ও সভ্য ব্যক্তি সেটি সহজেই বুঝতে পারে। দলটি কোন সভ্য মানুষের দল নয়। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে দিয়েছে নিরেট অসভ্যতা। এ অসভ্যতা চুরিডাকাতি, ব্যাংক ডাকাতি, গুম, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও অপহরণের। এ অসভ্যতা ভোটের আগের রাতে দেশজুড়ে ভোট ডাকাতির। এ অসভ্যতা গণতন্ত্র হত্যার ও একদলীয় বাকশালী স্বৈরাচারের। এ অসভ্যতা যাত্রীভর্তি বাসে আগুন দেয়া ও নিরীহ মানুষ হত্যার। এ অসভ্যতা পিটিয়ে বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ ও বিশ্বজিৎ রায়ের ন্যায় নিরীহ মানব হত্যার। তবে এরূপ অসভ্য নৃশংসতার জন্ম আজ নয়, এর জন্ম শেখ মুজিবের হাতে।
মুজিবের আগে বাংলার রাজনীতিতে কখনোই এরূপ নৃশংস অসভ্যতা ছিল না। খুন, ধর্ষণ, চুরিডাকাতি ও ব্যাংকডাকাতির ন্যায় গুরুতর অপরাধের বিচার না করার সংস্কৃতি সর্বপ্রথম মুজিবই চালু করে।পাকিস্তান আমলে, এমন কি ব্রিটিশ আমলেও এ অসভ্যতা ছিল না। খুন, ধর্ষণ, চুরিডাকাতি ও ব্যাংকডাকাতির করলে তার তদন্ত হতো এবং তার শাস্তি হতো। শেখ মুজিবের শাসনামলে ১৯৭৩ সালে ছাত্র লীগ খুনিদের হাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের মহসিন হলের ৬ জন ছাত্রকে এক সাথে খুন করা হয়। হাসিনার শাসনামলে জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরী উৎসব হয়েছে। কিন্তু হাসিনার সরকার সে ধর্ষণের বিচার করেনি। বরং অপরাধীকে বিদেশে পাড়ি দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।
হাসিনার আমলেই পদ্মা ব্রিজ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের বরাদ্দকৃত অর্থের উপর লুটের ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সে অপরাধে জড়িত থাকায় সড়ক-যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব গেলেও সে অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি পেত হয়নি। হাসিনা সরকারের অসৎ মতিগতি দেখে বিশ্বব্যাংক হাত গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়। এরই ফলে পদ্মাব্রিজ নির্মাণের কাজ বহুবছর পিছিয়ে যায়। অধিক সূদে ঋণের জন্য শেখ হাসিনা চীনের দরজায় ধর্ণা দিতে বাধ্য হন। অবশেষে চীনা অর্থে ১০ হাজার কোটি টাকার জায়গায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা ব্রিজ নির্মিত হলো।
সভ্য দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলামতটি হলো, আইনের শাসন। সভ্য দেশে প্রতিটি অপরাধেরই বিচার হয়। অপরাধের বিচার না করাই হলো সবচেয়ে বড় অসভ্যতা। অসভ্য দেশে তাই আইনের শাসনকে সর্বপ্রথম অচল করা হয়। তখন ফুলে ফেঁপে বেড়ে উঠতে দেয়া হয় শক্তিধর দুর্বৃত্তদের। এটিই হলো জঙ্গলের পশু সংস্কৃতি। জঙ্গলে যে পশুর শক্তি বেশী, সেই রাজা। সেখানে আইন চলে না। অসভ্য দেশেও শাসন চলে শক্তিধর দুর্বৃত্তদের। এমন দেশে ভোটডাকাতি করলেও শাস্তি হয়না। তখন জোয়ার আসে চুরি-ডাকাতি, খুন, গুম, ধর্ষণ, অর্থপাচার ও নানা রূপ দুর্বৃত্তির। বাংলাদেশে এরূপ অসভ্যতার জনক আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী মানে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও পৌত্তলিক জাহিলিয়াত
আওয়ামী লীগ মানে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। আওয়ামী লীগ মানে আলেমদের গ্রেফতার, কুর’আনের তাফসির মহফিলের উপর হামলা, ইসলামী টিভি চ্যানেলে তালা ঝুলানো। আওয়ামী লীগ মানে হিফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ গণজমায়েতে নৃশংস গণহত্যা। আওয়ামী লীগ মানে জামায়াতের শীর্ষ নেতা ও ভারতবিরোধী বিনিপি নেতাদের গুম ও ফাঁসি। আওয়ামী লীগ মানে হিন্দুত্ববাদী ভারতকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে মুসলিম দেশভাঙ্গা। আওয়ামী লীগ মানে গণতন্ত্রের কবর ও নিরেট ফ্যাসিবাদ। আওয়ামী লীগ মানে মুসলিম রাষ্ট্রের সংহতির পক্ষে অবস্থান নেয়াটি যুদ্ধাপরাধ এবং তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
আওয়ামী লীগ মানে পৌত্তলিক জাহিলিয়াত। এ জাহেলিয়াত মুজিবের মূর্তি গড়া ও মূর্তির পদদলে ফুল দেয়ার শিরক। এ জাহেলিয়াত বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বাদ দেয়ার। এ জাহিলিয়াত দোয়ার বদলে তথাকথিত মঙ্গল প্রদীপ হাতে নিয়ে শোভাযাত্রার। এ জাহিলিয়াত মোনাজাতের বদলে এক মিনিট নীরবতার। এ জাহিলিয়াত “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” স্লোগানের আড়ালে পূজার উৎসবকে বাঙালি মুসলিমের উৎসবে পরিণত করার।
আওয়ামী লীগ মানে হিন্দুত্বের তোষণ
আওয়ামী লীগ মানে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের তোষণ। হিন্দুস্থানে মুসলিম বিরোধী গণহত্যা হয়, মুসলিম নারীরা ধর্ষিতা হয়, মসজিদ-মাদ্রাসা ভাঙ্গা হয়, বিজিপী নেতাদের পক্ষ থেকে নবীজী (সা)’র বিরুদ্ধ অশালীন মন্তব্য করা হয়। বিশ্ববাসী এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়। কিন্তু ভারতীয় এ হিন্দুত্বাবাদের বিরুদ্ধে নীরব থাকাই শেখ হাসিনার নীতি। কাশ্মীরের চলছে বহু বছর ধরে চলছে গণহত্যা। সেখানে অধিকৃতি জমাতে মোতায়েন রয়েছে ৬ লাখের বেশী ভারতীয় সৈন্য। এক লাখের বেশী মুসলিম সেখানে হত্যা করা হয়ছে। বহু হাজার কাশ্মীরী মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। কাশ্মীরের ভোটের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে ২০ লাখের বেশী ভারতীয়কে অন্য প্রদেশ থেকে আমদানী করে ভোটার বানানো হয়েছে। কিন্তু ভারতের এই মুসলিমদলন নীতির বিরুদ্ধে হাসিনা নিশ্চুপ। হাসিনা হিন্দুত্ববাদের পক্ষ নিতে ব্যস্ত, তার মুখে মুসলিমদের পক্ষে কোন বক্তব্য নাই। মুসলিম প্রসঙ্গে বিজিপির যা নীতি, সে নীতি হাসিনারও।
আওয়ামী লীগ মানে হিন্দুস্থান যা চায় তা ত্বরিৎ দিয়ে দেয়া এবং বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনার কথা পুরোপুরি ভূলে যাওয়া। হাসিনা তাই করিডোর দিয়েছে, সমুদ্রবন্দরের উপর ভারতের অধিকার দিয়েছে, ভারতীয় পণ্যের জন্য বাংলাদেশের বাজারও দিয়েছে। হাসিনা শুধু ভারতকে দেয়া নিয়েই ব্যস্ত। তাই পদ্মা ও তিস্তার পানির উপর বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনার দাবী হাসিনা করে না। এই হলো ভারতের প্রতি দায়বদ্ধতার আওয়ামী রাজনীতি। এই ভারতসেবী রাজনীতির জনক হলো শেখ মুজিব। শেখ হাসিনা বলেন, ভারতকে যা দিয়েছি, তা ভারত কোনদিন ভূলতে পারবে না। কিন্তু ভারত থেকে কি অর্জন করেছে, শেখ হাসিনা সে হিসাব দেয় না। পররাষ্ট্র আব্দুল মোমেনের ভাষায় ভারতে সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর ন্যায়। স্বামীর কাছে স্ত্রীর স্বাধীনতা থাকে না। বাংলাদেশেরও স্বাধীনতা নাই। বস্তুত এটিই একাত্তরের অর্জন।
আওয়ামী লীগ মানে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের রাজনীতি
আওয়ামী লীগ মানে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। এ ষড়যন্ত্র যেমন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়ার, তেমনি ইসলাম ও মুসলিমের স্বার্থহানীর। এ ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের স্বার্থ রক্ষা ও আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতার নিশ্চিতকরণ। এ রাজনীতি যেমন শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আগরতলা ষড়যন্ত্রের, তেমনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে ক্ষমতাদখলের। ষড়যন্ত্র যেমন গণহত্যাকারী এরশাদের পাতানো নির্বাচনে অংশ নেয়ার, তেমনি ২০১৮ সালের ভোটডাকাতির। শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, তাকে সরানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অথচ সে নিজে ক্ষমতায় এসেছে ভোট ডাকাতির ষড়যন্ত্র করে। সুষ্ঠু গণতন্ত্রের পথ খোলা রাখলে তাকে সরাতে ষড়যন্ত্র লাগবে কেন? গণতন্ত্রের পথ বন্ধ করলেই নৃশংস অঘটন ঘটে –যেমনটি ঘটেছে শেখ হাসিনার পিতা এবং বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ মানেই নির্ভেজাল মিথ্যাচার। সে মিথ্যাচার শেখ মুজিবের ৮ আনা সের চাউল, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা, পার্লামেন্টারী গণতন্ত্র ও স্বায়ত্বশাসনের ধোকা দিয়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ভোট নেয়ার। অথচ মুজিব বাস্তবে উপহার দিয়েছেন যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও ভিক্ষার ঝুলির বাংলাদেশ। গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়ে প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন নিরেট স্বৈরাচারের। শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, ভোটচুরি করে সে ক্ষমতায় আসে না। অথচ ২০১৮ সালে সে দেশজুড়ে ডাকাতি করেছে। ৩০০ সিটের মাঝে ২৯৩ সিট দখল করেছে। আম চুরি করতে গেল দুই চারটে আম যেমন থলির বাইরে পড়ে, তেমনি মাত্র ৭টি সিট ডাকাতির বাইরে পড়েছে। নির্বাচনে দুর্বৃত্তি করেছে ২০১৪ সালের নির্বাচনে। সে নির্বাচনে ১৫৩ সিটে কোন ভোটই হয়নি। পুরো দেশে শতকরা ৫ জনও ভোট দেয়নি। হাসিনা কথা দিয়েছিল, আবার নির্বাচন দিবে। বরং না দিয়ে জোর পূর্বক ৫ বছর ক্ষমতায় থেকেছে। শেখ হাসিনা বলে, ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে একটি গুলীও চলেনি এবং কোন লাশও পড়েনি। এবং সেখানে নাকি একজনও মারা যায়নি। কি সীমাহীন মিথ্যাচার! অথচ সে রাতে সেখানে মেশিন গানের গুলী চলেছে অসংখ্য লাশ পড়েছে। লাশ ময়লার গাড়িতে তুলে গায়েব করা হয়েছে। বহু লাশের ছবিতে দেখা গেছে। ইন্টারনেট থেকে সে ছবি এখনো গায়েব হয়নি।
আওয়ামী লীগ মানে ক্ষমতার লোভ
আওয়ামী লীগ মানে যে কোন ভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিজেদের কবজায় রাখা। এমন কি সেটি ভারতের ন্যায় শত্রুদেশের দাসত্ব কবুল করে হলেও। এমন এক ক্ষমতালোভী রাজনীতির জনক হলো শেখ মুজিব। শেখ মুজিব গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের বড় বড় বুলি শুনিয়েছে শুধু জনগণকে ধোকা দেয়ার জন্য। ক্ষমতায় গিয়ে চড়াও হয়েছে জনগণের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদী জনগণকে দমন করতে শেখ মুজিব রক্ষিবাহিনীকে ব্যবহার করেছিলেন। শেখ হাসিনা সে একই লক্ষ্যে পুরো পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে রক্ষিবাহিনীতে পরিণত করেছে। ধ্বংস করেছে বিচার ব্যবস্থা। বিচারকদের পরিণত করেছে নিজের চাকরবাকরে। হাসিনা যে রায় চায়, সে রায় লিখতে বিচারকগণ বাধ্য করা হয়। তাই জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার কারাদণ্ডকে ফাঁসিতে রূপান্তরিত করা হলো।
শেখ হাসিনা ও তার অনুসারীগণ নির্বাচনে হারতে রাজী নয়। তারা শুধু বিজয়কেই মেনে নিতে রাজী, পরাজয়কে নয়। ১৯৯১ ও ২০০১য়ের নির্বাচনে হেরে গিয়ে সে নির্বাচনী ফলাফল মানতে রাজী হয়নি। সে নির্বাচনকে কারচুপির নির্বাচন বলেছে। যে নির্বাচনে তাদের বিজয়ের সম্ভাবনা নাই –সে নির্বাচন তারা হতে দিতে রাজী নয়। এজন্যই হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথাকে বিলুপ্ত করেছে। কারণ তাতে ভোটডাকাতি করে বিজয় সম্ভব নয়।
শেখ হাসিনা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। চায়, তারা সন্তানেরাও আজীবন ক্ষমতায় থাক। তবে সেটি জনগণের ভোটে নয়, বরং ভোটডাকাতির মাধ্যমে। শেখ হাসিনা তাই আবার ফন্দি করছে কি করে ভোটডাকাতি করা যায়। হাসিনা জানে, ভোটডাকাতি ছাড়লে তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। আর ক্ষমতায় না থাকলে পিঠের চামড়া থাকবে না –সে ভয় শুধু শেখ হাসিনার একার নয় বরং তার দলের সকল নেতাকর্মী এবং ডাকাতসহযোগী সকল পুলিশ কর্মকর্তা, সেনাকর্মকর্তা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরও। সে কথা তারা প্রকাশ্যে বলেও। ডাকাতের কখনোই ডাকাতি ছাড়তে পারেনা। কারণ তাতেই তাদের রু্টি-রুজী। তেমনি ভোটডাকাতেরা ভোটডাকাতি ছাড়তে পারে না। ডাকাতির মধ্যেই তারা নিজেদের নিরাপত্তা ভাবে। এরা তাই জনগণের চিরশত্রু। ডাকাতদের যেভাবে তাড়াতে হয়, ভোটডাকাতদেরও সে ভাবেই তাড়াতে হয়।
মুক্তির একমাত্র পথ এবং বাঙালি মুসলিমের ব্যর্থতা
হিংস্র পশুর নখরে পড়লে মুক্তি এতোটা সহজ নয়। মুক্তি পেতে হলে লড়াইয়ে নেমে ক্ষত-বিক্ষত হতে হয়। নইলে হিংস্র পশুর পেটে যেতে হয়। বিষয়টি অবিকল অভিন্ন হলো ফ্যাসিবাদী সরকারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া নিয়ে। হিংস্র পশুর চেয়েও এরা নিষ্ঠুর ও নৃশংস। ফলে বাংলাদেশের জনগণের সহজে নিস্তার নাই। মুক্তির একটাই পথ, সেটি আমৃত্যু লড়াই। পৃথিবী পৃষ্ঠে এটিই সবচেয়ে পবিত্র ইবাদত। ইসলামে এ কাজটি পবিত্র জিহাদ। সভ্য ও শান্তিময় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এটিই একমাত্র হাতিয়ার। সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহতায়ালা একাজের বিপদ বুঝেন, গুরুত্বও বুঝেন। তাই সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি তিনি নামাজ-রোজা ও হ্জ্জ-যাকাতে রাখেননি। রেখেছেন জালেম শাসকের বিরুদ্ধে জিহাদে। একাজে নিহত হলে বিনা হিসাবে জান্নাত। তার সমস্ত গুনাহকে নেকীতে বদল করে দেয়া হয় –সে ওয়াদা এসেছে পবিত্র কুর’আনে। তাই সাহাবাদের শতকরা ৬০ ভাগ একাজে শহীদ হয়েছে। ফলে নির্মিত হয়েছ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা। মুসলিমগণ জন্ম দিয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে বিস্তৃত সবচেয়ে শক্তিশালী বিশ্বশক্তির। তবে বাংলাদেশীদের বিপদের কারণ হলো, মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতটি বাংলাদেশী মুসলিমদের জীবনে সবচেয়ে উপেক্ষিত।
জনগণ যদি সর্বশ্রেষ্ঠ এই ইবাদতটির কদর বুঝতো তবে শেখ হাসিনা ও তার দলবলের নির্মূলের কাজটি কোন কঠিন কাজ ছিলনা। শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ সোভিয়েত রাশিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী নয়। কিন্তু আফগান মুজাহিদগণ তাদের পরাজিত করেছে। অথচ আফগানিস্তানে মুসলিমদের সংখ্যা বাঙালি মুসলিমদের সিকি ভাগও নয়। তাদের বিজয়ের কারণ, সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতকে আফগান মুজাহিদগণ সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে হচ্ছে উল্টোটি। তাদের জীবনে এই সর্বশ্রেষ্ঠ এবাদতের কোন কদর নেই। তারা জালেম শাসক নির্মূলের লড়াইকে জিহাদে পরিণত করতে পারিনি।
হিংস্র পশু না তাড়ালে যেমন মহল্লায় শান্তিতে ঘুমানো যায়না, তেমনি অসভ্য ও নৃশংস শাসক না তাড়ালে সভ্য ও শান্তিময় জীবনের স্বাদ জুটে না। পৃথিবী পৃষ্টে সবচেয়ে মূল্যবান হলো সভ্য, নিরাপদ ও শান্তিময় জীবন। সে জীবনের আনন্দ কখনোই বিনামূলে মেলে না। সেটি পেতে হলে মূল্য পরিশোধ করতে হয় মেধা, শ্রম, অর্থ ও রক্তের কুরবানী পেশ করে। যে জাতি সেটি দিতে পারে একমাত্র তারাই ইজ্জত ও নিরাপত্তা নিয়ে বাঁচার মর্যাদা পায়। ইউরোপীয়রা জান ও মালের সে কুরবানী পেশ করেছে বহু শত বছর আগেই। নিজেদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে তারা বহু লড়াই করেছে, বাস্তিল দুর্গের ন্যায় বহু দুর্গের পতন ঘটিয়েছে এবং বহু স্বৈরাচারী রাজার গর্দান কেটেছে। এটিই হলো সভ্য ভাবে বাঁচার খরচ। এবং এটিই একমাত্র পথ।
হিংস্র নেকড়ের সামনে আপোষ চলে না। স্রেফ দোয়া-দরুদ তখন কাজ দেয় না। সে মুহুর্তে আত্মসমর্পণের অর্থ নেকড়ের পেটে যাওয়া। তেমনি অসভ্য সরকারের নৃশংস দুর্বৃত্তির কাছে আত্মসমর্পণ নিয়ে কখনোই শান্তি ও ইজ্জত মেলে না। এবং সেটি হলো অসভ্যতার পথ। তখন মৃত্যু ঘটে গুম, খুন, অপহরণ, ফাঁসি ও ধর্ষিতা হয়ে। যাদের জীবনে সভ্য ভাবে বাঁচার জিহাদ নাই, বুঝতে হবে তারা বেছে নিয়েছে অসভ্যতার পথটিকে। তখন শুধু অসভ্য সরকারের কদর্য চরিত্রই প্রকাশ পায় না, প্রকাশ পায় জনগণের অসভ্য ও কদর্য চরিত্রটিও। বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই দুই পক্ষের কদর্য চরিত্রই তুলে ধরেছে। একদিকে যেমন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের নৃশংস চরিত্র, তেমনি জনগণের কদর্য কাপুরুষতা। তাছাড়া মহান আল্লাহতায়ালার ঘোষণা, “আল্লাহ কখনোই তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে না, যারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরা পরিবর্তন করে না।” তাই ভাগ্য পরিবর্তনের চাবিটি জনগণের হাতে। কিন্তু বাংলাদেশীদের জীবনে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের সে চাবিটির প্রয়োগ কই? ১৯/০৮/২০২২।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018