আওয়ামীলীগের নির্মূলের রাজনীতি ও রক্তাত্ব পথে বাংলাদেশ
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on February 27, 2019
- Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
রাজনীতিতে যুদ্ধাবস্থা
বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রচণ্ড উত্তপ্ত হাওয়া বইছে। যুদ্ধ যুদ্ধ ভাবই শুধু নয়,বরং যুদ্ধ শুরুও হয়ে গেছে। সরকার বিরোধীদের নির্মূলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একা নয়,বরং ময়দানে নেমেছে এক মহাকোয়ালিশন।সে কোয়ালিশনে রয়েছে যেমন রয়েছে পুলিশ ও সরকারি প্রশাসন,তেমনি যোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগের বামপন্থি মিত্ররা। এ কোয়ালিশনের নেতৃবৃন্দ মুখে জামায়াত শিবির নির্মূলের” কথা বললেও নির্মূল চায় সকল ইসলামপন্থিদের। তাদের দুষমনি বিশেষ কোন ইসলামি দলের নেতা বা কর্মীর বিরুদ্ধে নয়,বরং মূল শত্রুতাটি বাংলাদেশে ইসলামের রাজনৈতীক প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে।বিশ্বের কোনে কোনে ইসলামের পক্ষে আজ যে জাগরণ শুরু হয়েছে সেটিকে এরা বাংলাদেশের মাটিতে যে করে হোক রুখতে চায়।
একাত্তরে কারা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল সেটি ইসলামের বিপক্ষশক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোন সদস্যের বিচার নিয়েও তারা আগ্রহী নয়। বরং তারা দেখছে কারা তাদের বর্তমান শত্রু। ফলে যে শিবির কর্মীটির জম্ম একাত্তরের দশ-বিশ বছর পর,তাকেও তারা হত্যাযোগ্য মনে করে। ফলে তাঁকে তারা নিষ্ঠুর ভাবে নিহত করছে। হিযবুত তাহরিরের মত যেসব দলের জন্ম অতি সাম্প্রতিক,নিষিদ্ধ করছে তাদেরকেও। পুলিশী হামলা ও মামলায় নাজেহাল করা হচ্ছে প্রায় প্রতিটি ইসলামি দলের নেতাকর্মীদের। নিছক বইবিতরণ ও সেমিনার করার অপরাধে জেলে তোলা হচ্ছে ইসলামি দলের কর্মীদের। অপরদিকে পাকিস্তানেও তাদের যোগাযোগ ও দহরম মহরম বাড়ছে ইসলামের শত্রুপক্ষ এবং সেদেশে মার্কিন সাহায্যপুষ্ট সেক্যুলারিস্ট ও এনজিও কর্মীদের সাথে।ইসলামের এ চিহ্নিত বিদেশী দুষমনদের অনেককে শেখ হাসিনা পুরস্কার দিয়ে ভূষিত করেছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিকে যে রক্তাত্ব করতে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা শুধু দলীয় কর্মীদেরই তারা জড়িত করেনি,জড়িত করেছে পুলিশ,র্যাব,এনএসআই ,ডিবিসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে। এগুলো এখন আর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নয়,বরং পরিণত হয়েছে পুরোপুরি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতিষ্ঠানে। আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মীদের চেয়েও এরা যেন বেশী আওয়ামী লীগার। ঢাকার রাজপথে প্রকাশ্যে স্কুলছাত্র গুম হচ্ছে,ব্যবসায়ী খুন হচ্ছে,নারী ধর্ষিতা হচ্ছে,সরকারি ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি লুন্ঠিত হচ্ছে, লুন্ঠিত হচ্ছে শেয়ার বাজার -তা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ বাহিনীর মাথা ব্যাথা নেই। বরং প্রধান এজেণ্ডা হয়ে দাঁড়িয়েছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা। সে সাক্ষ্যটি এসেছে খোদ স্বরাষ্টমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা জনাব মহিউদ্দীন খান আলমগীর। গত ৯/১১/১২ তারিখে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে যুবলীগের আয়োজিত এক সমাবেশে বলেন,সরকার এ পর্যন্ত ১৪০০ জামায়াত-শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তবে চান,জামায়াত-শিবিরের নির্মূলে সরকারের সাথে দায়িত্ব নিক রাজনৈতীক দলগুলোও।তাই তিনি জামায়াত-শিবিরকে স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়ীক শক্তি আখ্যায়ীত করে তাদেরকে বিরুদ্ধে পাড়ায়-পাড়ায় ও মহল্লায়-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে তাদের প্রতিহত করার আহবান জানান। সরকারি দলের চাপে পুলিশ বাহিনী তাই থেমে নেই। থেমে নাই সরকারি দলের ক্যাডারবাহিনীও। ফলে চলছে হত্যা,গুম,গ্রেফতারি ও মামলা। পত্রিকায় প্রকাশ ১১/১১/১২ তারিখ নাগাদ ১২জন শিবির কর্মী গুম হয়ে গেছে। তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।এক তরুন শিবিরকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে। পুলিশ বাদী হয়ে শুধু চাঁদপুরেই ২৫০জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ঢাকার শুধু মিরপুর মডেল থানাতেই মামলা করেছে ২০০-২৫০ জনের বিরুদ্ধে।–(আমার দেশ,১২/১১/১২)।
রাষ্ট্রীয় বাহিনী এখন দলীয় বাহিনী
পুলিশ দ্রুত জামায়াত-শিবিরের ১৪০০ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে –এ ঘোষণা দিয়ে স্বরাষ্টমন্ত্রী ভেবেছিলেন তার উপর তার দলের ক্যাডাগণ খুশি হবে। কিন্তু তাদের প্রত্যাশা তো বিশাল। কয়েক হাজার জামায়াত-শিবির কর্মীর গ্রেফতারে তারা খুশি নয়। তারা চায় নির্মূল। চায় সে নির্মুলের পুরা দায়িত্বটি নিক সরকারি পুলিশ ও র্যাব। তাই বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের সমাবেশে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরির দাবী,জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের আরো ব্যাপক ভাবে গ্রেফতার করা হোক। বলেছেন,পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে জামায়াত-শিবিরকে খোঁজার দায়িত্বটি সরকারের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন,“জামায়াত-শিবিরকে খোঁজেন।যদি না পারেন তাহলে আইজি,ডিআইজি,এসপিকে ধরবো।লাঠিপেটা করবো।”–(আমার দেশ, ১০/১১/১২)। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আইজি,ডিআইজি,এসপি ও পুলিশকে দলীয় চাকর-বাকর বা লাঠিয়ালের চেয়ে বেশী কিছু ভাবে না। তাদের দাবী,চোর-ডাকাত ধরা বাদ দিয়ে পুলিশ জামায়াত ও শিবির কর্মীদের ধরুক। চোর-ডাকাত বা সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের শত্রু নয়,ফলে তাদের ধরা নিয়ে সরকারের কোনরূপ মাথাব্যাথা নেই। চাকর-বাকর হুকুম না মানলে তাকে যেমন লাঠিপেটা করা যায়,জনসম্মুখে চড়তাপ্পড়ও মারা যায়,তেমনি দলীয় ভৃত্য আইজি,ডিআইজি,এসপি ও পুলিশকে লাঠি পেটা করতে বাধা কিসের? যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরি তো সেটিই বুঝাতে চেয়েছেন।
তবে পুলিশ বা প্রশাসন নিয়ে এমন ধারণাটি ওমর ফারুক চৌধুরির একার নয়,বহু আওয়ামী লীগ,ছাত্র লীগ ও যুবলীগ কর্মীরও। ফলে বহু পুলিশ,বহু থানা নির্বাহী অফিসার ও বহু সরকারি কর্মচারি ইতিমধ্যে আওয়ামী ক্যাডারদের থেকে চড়থাপ্পড়ও খেয়েছেন।অনেকে চাকুরিও হারিয়েছেন।চাকর-বাকরদের সামনে জমিদারপুত্র অস্ত্র লুকিয়ে চলাফেরা করে না। ছাত্রলীগের ক্যাডারগণও তাই পুলিশের সামনে অস্ত্র লুকিয়ে চলাফেরা করে না।বরং হাতে অস্ত্র নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি ঘুরে। বহু পত্রিকায় সে ছবি ছাপা হয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করে বরং প্রটেকশন দেয়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে না।বলে, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকার পুলিশের সাথে অভিযুক্ত আসামীটি ঘুরছে সে ছবিও বহু পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কিন্তু এরপরও পুলিশ অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করে না। অথচ খোঁঝে জামাত-শিবির কর্মীদের। পুলিশও যে নিজেদেরকে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের চাকর-বাকরের চেয়ে বেশী কিছু ভাবে না এ হলো তার প্রমাণ। দুর্বৃত্ত মনিব মানুষ খুন করুক,কাউকে চড়থাপ্পড় মারুক বা কারো কন্যা বা বধুকে ধরে ধর্ষণ করুক -তাকে ধরার সাহস কি চাকর-বাকরের থাকে? সে তো বরং সে দুর্বৃত্ত মনিবকে পাহারা দেয়।বাংলাদেশে তো সেটিই ঘটেছে। নইলে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক চৌধুরি পুলিশকে নির্দেশ দেয়ার কে? গণতান্ত্রিক দেশে পুলিশের নিরপেক্ষ হওয়াটি তাদের উপর শাসনতান্ত্রিক দায়ভার।পুলিশ তার নিজের দায়িত্ব নিজে স্বাধীন ভাবে পালন করবে,কোন দলীয় নেতার পক্ষ থেকে তাকে নির্দেশ দেয়ার অর্থ প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ। গণতান্ত্রিক দেশে এমন হস্তক্ষেপ শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ। মন্ত্রী এমন কাজ করলে তার চাকুরি যায়। অপরদিকে পুলিশের অপরাধ হলো,নিরপেক্ষতা পরিহার করে কোন নেতার ফরমায়েশে কাজ করা। সভ্যদেশে এ অপরাধে পুলিশের চাকুরি থাকে না। অথচ পুলিশ ও প্রশাসন আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে সে শাসনতান্ত্রিক বিধানকেই অহরহ লংঘন করছে।
উলঙ্গ ফ্যাসীবাদ
ফ্যাসীবাদীদের চরিত্র,তারা আদালত মানে না। পুলিশ এবং প্রশাসনকেও মানে না। বরং আদালত ও প্রশাসনকে মেনে চলতে হয় তাদের। সম্প্রতি সে আচরণটি জাহির করলেন আওয়ামী লীগের নেতা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। আদালতের প্রতি সম্প্রতি তিনি হুকুমনামা জারি করেছেন। বঙ্গবন্ধূ এ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে আয়োজিত জেল হত্যাদিবসের আলোচনায় সভায় তিনি দাবী করেন,“আগামী জাতীয় বিজয় দিবসের আগেই জেলহত্যার বিচার চাই। যারা খালাসপ্রাপ্ত হয়েছে,যারা লঘুদন্ড দেয়া হয়েছিল তারা শাস্তির আসবে বলে জাতি প্রত্যাশা করে।” -(আমার দেশ, ৬/১১/১২)।
আদালতের কাছে ন্যায্য বিচার দাবী করা যায়।কিন্তু কাকে শাস্তি দিতে হবে,কাকে খালাস দিতে হবে বা কাকে লঘুদন্ড দেয়া যাবে না -কেউ কি সে ফরমায়েশ আদালতকে দিতে পারে? এটি কি আদালত অবমাননা নয়? অথচ মহম্মদ নাসিম সে নির্দেশই দিয়েছেন আদালতকে। আদালতের বিচারপতিগণও যেন তাদের পোষা চাকর-বাকর। কিন্তু জনাব নাসিমের পক্ষ থেকে এরূপ ঘোষণার পরও আদালত নিশ্চুপ।পত্রিকায় তার এ বক্তব্য প্রকাশের পরও আদালত তাকে তলব করেনি।জবাবও চায়নি। জনাব নাসিমের এরূপ আচরণ এই প্রথম নয়। নাসিম যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন তখন আদালতের বিচারকদের বিরুদ্ধে মিছিল করে লাঠি দেখানো হয়েছিল। হাইকোর্টের চত্ত্বরে বস্তি পাঠানো হয়েছিল। তার পিতা যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তখন তিনি ছিলেন পাবনার ছাত্র লীগ নেতা। একটি জিপ নিয়ে তিনি পাবনা শহরে ঘুরতেন। পাবনা শহরের লোকজন সে জিপটাকে আজরাইল জিপ বলতো।তার নেতৃত্বে তখন পাবনায় শুরু হয় বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযান। বামপন্থি নেতা টিপু বিশ্বাসের বহু কর্মীকে সে জিপে তুলে নিয়ে আর ফিরিয়ে দেয়া হয়নি। সে স্মৃতি আজও বেঁচে আছে পাবনার হাজার হাজার মানুষের মনে। এমন ফ্যাসিস্ট চরিত্রের মানুষ আদালতকে তার পছন্দের রায়টি মেনে নিতে নির্দেশ দিবে বা আদালতকে লাঠি দেখাবে সেটিই কি স্বাভাবিক নয়?
তবে মিস্টার নাসিম এমন কথা বলেছেন তার মনের প্রচণ্ড ভয় থেকে। তার দল যে নিজেই নির্মূলের মুখে সেটি হয়তো তিনি টের পেয়েছেন। ফলে সে নির্মূল হওয়া থেকে দলকে বাঁচাতেই এখান দেশের আদালত,পুলিশ ও প্রশাসনকে কাজে লাগাতে চান। চান,দেশের আদালত আওয়ামী লীগের পক্ষ নিক এবং শায়েস্তা করুক দলটির সকল রাজনৈতীক শত্রুদের। তবে দেশের আদালত,পুলিশ ও প্রশাসনকে লাঠিয়াল রূপে ব্যবহারের স্বার্থে তাদেরকে সরকারে থাকতেই হবে। তাদের ফ্যাসিস্ট রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার দ্বিতীয় পথ নেই। তিনি নিজেও উক্ত মিটিংয়ে সে গভীর দুশ্চিন্তার কথাটি ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন,“আগামী ১ বছর কঠিন সময় পার হতে হবে। কারণ, দেশে বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে।” ফ্যাসিস্ট শক্তি মরণের আগে আরো ফ্যাসিস্ট হয়। শেখ মুজিবও তাই তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলিতে বিরোধীদের উপর রক্ষিবাহিনী,লালবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও তার রক্ষা হয়নি। কারণ বসন্ত কারো জীবনেই বারো মাস থাকার জন্য আসে না।
আস্তাকুরে গণতন্ত্র
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ যে কতটা আস্তাকুরে গিয়ে পড়েছে তার কিছু প্রমাণ দেয়া যাক। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ঢাকা যাদুঘরে আলোচনায় সভায় আওয়ামী লীগ নেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সম্প্রতি বলেছেন,“পঁচাত্তরের পর হত্যা,ক্যু,ষড়যনন্ত্রের মাধ্যমে চক্রান্তকারীরা সংবিধানন বার বার কাটছাট করেছে।জাতীয় নেতাদের তৈরি সংবিধান বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনদিন পরিবর্তিত করতে দেয়া হবে না্। -(আমার দেশ, ৬/১১/১২)। প্রশ্ন হলো,এই কি গণতন্ত্র? এ কি কোন সভ্য নীতি? গণতন্ত্রের মূল কথা,দেশ পরিচালিত হবে জনগণের ইচ্ছা মাফিক। আর জনগণ প্রাণহীন পাথর নয়,তারা জীবিত। জীবিত মানুষের ধর্ম যেমন পাল্টায়, তেমনি দিন বদলের সাথে পাল্টে যায় তাদের রাজনৈতীক বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা।যে আরবের মানুষ এককালে পুতুল পুজা করতো সে পুতুলগুলোকেই তারা আবার নিজ হাতে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরে যে চেতনার ধারক ছিল সে চেতনা শত শত বছর ধারণ করে থাকবে তার নিশ্চয়তা কোথায়? তা হলে তো আওয়ামী লীগ যুগ যুগ ধরে প্রতি নির্বাচনে বিজয়ী হতো।
কোন একটি চেতনা ধারণ করার ন্যায় সেটিকে বর্জন করার অধিকারও তো মৌলিক নাগরিক অধিকার। মানুষের ধ্যাণ-ধারণা পাল্টে গেলে সংবিধান পাল্টে যাবে সেটিই তো সভ্য সমাজের রীতি। ফলে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সে পরিবর্তন রুখতে চান কোন যুক্তিতে? একাত্তর একটি মাত্র বছর দ্বারা সীমিত। সে বছরটিতে বাংলাদেশের একটি বিশেষ মহলের উপর বিশেষ কিছু ভাবনা বিজয়ী হয়েছিল। মানুষের মনে প্রতি বছর এরূপ বহু ভাবনার যেমন উদয় হয়,তেমনি সেগুলি আবার অস্তও যায়। এগুলো আল্লাহর ওহী নয় যে আজীবন ধরে রাখতে হবে এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে তবে। একাত্তরের সে ভাবনাকে যুগ যুগ মানুষের মাথার উপর চাপিয়ে রাখার অধিকার আওয়ামী লীগকে কে দিল? নতুন প্রজন্মই বা কেন একাত্তরের ভাবনা নিয়ে পিছনে পড়ে থাকবে? তাছাড়া বাহাত্তরের সংবিধান রচিত হয়েছিল আওয়ামী লীগের হাতে। ফলে এ সংবিধানে প্রাধান্য পেয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতাদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা। কিন্তু জনগণ যদি নির্বাচনে আওয়ামী লীগকেই প্রত্যাখান করে এবং দাবী করে ভিন্ন জাতের সংবিধান,তবে গণতন্ত্র তো জনগণকে সে সংবিধান সংশোধনের অধিকারও দেয়।সে অধিকার রুখাই তো স্বৈরাচার। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী কি দেশের উপর সে স্বৈরাচার চাপিয়ে দিতে চান?
বাহাত্তরের শাসনতন্ত্রে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে সেক্যুলারিজম,জাতিয়তাবাদ,সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রকে। সেক্যুলারিজম,জাতিয়তাবাদ,সমাজতন্ত্র –এ তিনটি মতবাদই ইসলামে হারাম। যারা সূদ ও সূদী ব্যাংককে হালাল মনে করে এবং পতিতাবৃত্তির নায় ব্যভিচারিকে বৈধতা দেয় -একমাত্র সে পাপীরাই এ মতবাদগুলোকে মেনে নিতে পারে। কোন ঈমানদার এগুলী গ্রহণ করতে পারে না। সে সময় একমাত্র গণতন্ত্র নিয়ে দেশবাসীর মাঝে ঐকমত্য ছিল। অথচ সে গণতন্ত্রকে আওয়ামী নিজেই কবরে পাঠিয়ে বাকশালী স্বৈরাচার কায়েম করেছে। তাছাড়া সমাজতন্ত্রকে মুজিব ব্যবহার করেছিল পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত শিল্প করখানাগুলো ধ্বংসের লক্ষ্যে। সে কল-কারাখানাগুলো জাতীয়করণ করে মুজিব নিজদলের কর্মীদের হাতে তুলে দেয়। দলীয় কর্মীদের লুটপাটের ফলে সেগুলো অতিদ্রুত ধ্বংস হয়ে যায়। এমন কি আদমজী জুটমিলের মত লাভজনক পাটকলটিও বাঁচেনি। এভাবে শিল্প ধ্বংসের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয় ভারতীয় পণ্যের বাজার। মুজিব আমলের চার স্তম্ভের মাঝে সেক্যুলারিজম এবং বাঙালী জাতিয়তাবাদকে তারা বাঁচিয়ে রেখেছে নিছক দলীয় প্রয়োজনে। কারণ এ দুটি দিয়ে তারা ইসলাম রুখতে চায়। রুখতে চায় শরিয়তের প্রতিষ্ঠা। বাঙালী জাতিয়তাবাদের অর্থ হয়ে দাঁড়িয়েছে রবীন্দ্র চর্চা এবং রবীন্দ্রপুজা। আর সেক্যুলারিজমের অর্থ দাঁড়িয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষার বাজেট হ্রাস,কোরআন-হাদীস ও ইসলামের পাঠ্য-সংকুচন এবং নাচ-গান ও অশ্লিলতা বাড়িয়ে ইসলাম থেকে মানুষকে দূরে সরানো।
নিধনের সুর বামপন্থিদের মুখে
ফ্যাসীবাদী সন্ত্রাসে আওয়ামী লীগের চেয়ে বামপন্থিগণ কোন অংশেই কম হিংস্র নয়। ইসলামপন্থিদের এরা জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসী বলছে। অথচ নানা জাতের কম্যুনিষ্ট পার্টি, সর্বহারা পার্টি,বিপ্লবী পার্টি ও গণবাহিনীর পরিচালিত গলাকাটা রাজনীতিকে তারা সন্ত্রাস বলতে রাজি নয়। ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে এসব বামপন্থিরা যে কতটা ফ্যাসিস্ট ও নিধনবাদী তার প্রমাণ মেলে রাশেদ খান মেনন,হাসানুল হক ইনু এবং মোজাহিদুল ইসলাম -এ তিন বামপন্থি নেতার সাম্প্রতিক বক্তব্যে। উদাহরণ দেয়া যাক। সম্প্রতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন,“সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তি নির্মূল না হলে বাংলাদেশসহ এর প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিপর্যয় নেমে আসবে।”-(আমার দেশ, ৬/১১/১২)।রাশেদ খান মেননদের কাছে আল্লাহর নাম,আল্লাহর ধর্মের নাম,আল্লাহর শরিয়তী আইন -এসবই হলো সাম্প্রদায়িকতা। তাই এসবের তিনি নির্মূল চান। তার দুশ্চিন্তাটি ইসলামের জাগরণ হলে বাংলাদেশের কি হবে শুধু তা নিয়ে নয়। সে জাগরণের ফলে প্রতিবেশী ভারতেও যে মুসলিম জাগরণ আসতে পারে এবং ভারত তাতে বিপর্যয়ে পড়তে পারে তা নিয়েও। ভারতীয়দের চেয়েও যেন তিনি বেশী ভারতীয়। অতএব তার কথা, ইসলামপন্থিদের নির্মূল করতেই হবে। প্রশ্ন হলো,সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদীর অর্থ বলতে তিনি কি বুঝেন? এর অর্থ যদি আল্লাহর শরিয়তের বিধানের প্রতিষ্ঠা এবং নবীজী (সাঃ)র দ্বীনের দিকে ফিরে যাওয়া বুঝে থাকেন -তবে সেটিই তো প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দায়বদ্ধতা। এখানে তো আপোষ চলে না। আপোষ হলে সে আর মুসলমান থাকে না। মু’মিনের চেতনার মানচিত্রে ইসলাম এখানে অনতিক্রম্য “রেড লাইন” বা নিষিদ্ধ সীমা রেখা এঁকে দেয়। মেননের ন্যায় বামপন্থিরা সে রেড লাইন সজ্ঞানে অতিক্রম করেছেন,কিন্তু কোন ঈমানদারও কি তা জেনেবুঝে অতিক্রম করতে পারে? সেটি তো জাহান্নামের পথ।
বাংলাদেশের কম্যুনিষ্ট পার্টির নেতা মোজাহিদুল ইসলাম সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে যা বলেছেন সেটিই ইসলামের বিরুদ্ধে কম সহিংস নয়। তার কথা হলো,এরশাদের আমলে বাহাত্তরের সংবিধানে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তা না হটালে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। নইলে দেশের ভাবমুর্তিও উদ্ধার হবে না। তার দাবী,এটি হটাতেই হবে। সরকারের সকল ভাল কাজের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন সে সংশোধনী যাতে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম রূপে স্বীকৃত দেয়া হয়। এরশাদের ন্যায় এক স্বৈরাচারিকে জোটে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে তার আপত্তি নেই। অথচ আপত্তি তাঁর আমলের সেই সাংবিধানিক সংশোধনীটি নিয়ে।
অথচ আরেক কম্যুনিষ্ট নুরুল ইসলাম নাহিদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী রূপে। নুরুল ইসলাম নাহিদও একসময় মোজাহিদুল ইসলামের ন্যায় মস্কোপন্থি একসময় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। উভয়ই যে একই রূপ চিন্তা-চেতনার ধারক তা নিয়ে কি কোন সন্দেহ আছে? ফলে বাংলাদেশ যে কতটা বিপদে আছে সেটি বুঝতেও কি বাঁকি থাকে? শিক্ষালাভ নামায রোযার ন্যায় ফরয। শিক্ষার মধ্য দিয়েই শিশু মুসলমান রূপ গড়ে উঠে। নইলে অসম্ভব হয় মুসলমান হওয়া। তাই মুসলিম শিশুর শিক্ষাদানের দায়িত্ব তাই কোন কাফের বা নাস্তিকের উপর দেয়া যায় না। কারণ তাতে শিশুদের মুসলিম রূপে বেড়ে উঠাই অসম্ভব হয়। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে যেমন মুসলমান বানানো যায়,তেমনি কাফেরও বানানো যায়। অথচ কি আশ্চর্য! শতকরা ৯১ ভাগ মুসলমানের দেশে এমন এক ব্যক্তির হাতে দেশের শিক্ষা বিভাগের পুরা দায়িত্ব যার মনে ইসলামের প্রতি বিশ্বাস নাই, বিন্দুমাত্র অঙ্গিকারও নেই। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ধর্মরূপে ইসলামকে মানতেও তিনি রাজী নন।
নুরুল ইসলাম নাহিদের ন্যায় একজন কম্যুনিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের হাতে নিয়েছে বিশেষ একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে। সেটি মুসলমান ছাত্রছাত্রীদের ইসলাম থেকে দূরে সরানোর লক্ষ্যে। তাই তিনি কৃষিমন্ত্রী বা রেলমন্ত্রী হয়নি, হাতে নিয়েছে শিক্ষামন্ত্রনালয়। তসলিমা নাসরিনের চেয়েও সে বড় ক্ষতিটা করছে ইসলামের। তসলিমা নাসরিনের হাতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ন্যায় বিশাল হাতিয়ার ছিল না। হাতে ছিল শুধু কলম। কিন্তু এ কম্যুনিস্টটি হাতে পেয়েছে দেশের হাজার হাজারর স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়। শয়তানের এক চিহ্নিত এজেন্টের হাতে এত বড় বিশাল ও শক্তিশালী অস্ত্র তুলে দেয়ার বিপদ যে ভয়ানক সে হুশ বাংলাদেশে ক’জনের? অথচ সে প্রজেক্টের সমুদয় খরচ বইছে বাংলাদেশের জনগণ। গোখরা শাপকে গোখরা শাপ রূপে না চেনাটি জীবনের বড় মুর্খতা। তেমনি সবচেয়ে বড় মুর্খতা হলো ইসলামের শত্রুকে না চেনা। তখন বিপদে পড়ে নিজের ও নিজ সন্তানের মুসলিম রূপে বাঁচা। বিপদে পড়ে আখেরাত। বাংলাদেশের মুসলমানদের বড় অপরাধটি ঘটেছে মূলত এক্ষেত্রে। তারা ইসলামের এ চিহ্নিত শত্রুকে মন্ত্রী রূপে নিজেদের মাথার উপর বসিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী এবং জাসদ নেতা হাসানূল হক ইনু সম্প্রতি এক সেমিনারে বলেছেন,“জিয়াউর রহমান,এরশাদ ও খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক শক্তি আমদানি করেছিলেন। এ শক্তি সুযোগ পেলেই ছোবল মারবে। তাই এ শক্তির দমন অথবা নিধন করতে হবে।” -(আমার দেশ,৬/১১/১২)। হাসানুল হক ইনুর মুখে এখনও নিধনের সুর। প্রশ্ন হলো,রাজনীতি বলতে কি তার কাছে স্রেফ রাজনৈতীক শত্রু-নিধন ছাড়া অন্য কিছু বোঝায় না? মুজিব আমলে এই ইনু সাহেবেরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও নিধন যোগ্য মনে করতেন। জাসদের গণবাহিনী সে সময় আওয়ামী লীগের বহুহাজার নেতাকর্মীকে নিধন করেছে। একাত্তরের যুদ্ধে আওয়ামী লীগের এত নেতাকর্মী নিহত হয়নি যত হয়েছে জাসদের হাতে। তারা নিধন যোগ্য মনে করতেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর অফিসারদের। সেপাহী বিপ্লবের নামে তারা খুন করেছেন বহু সামরিক অফিসারদের। আর এখন এখন নিধনে নেমেছেন জামায়াত-শিবির কর্মীদের। তবে তিনি তার বক্তব্যে শুধু জামায়াত ও শিবির কর্মীদেরই নিধন চাননি। নিধন করতে চেয়েছেন তাদের সাথে জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার রাজনীতির অনুসারিদের।
বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হলো, দেশটির বুকে জন্ম নিয়েছে হাসানুল হক ইনুর ন্যায় ব্যক্তিবর্গ। নির্মূল ছাড়া রাজনীতিতে অন্য কোন সৃষ্টিশীল কর্ম নিয়ে তারা ভাবেন না। রাজনৈতীক বিরোধীদের শারিরীক অস্তিত্ত্বকে মেনে নেয়ার মত মানসিকতাই তাদের নাই। তাদের এ এক বিশাল মানসিক বিকলাঙ্গতা। মুজিব আমলে তারা জনসভায় শেখ মুজিবের পিঠের চামড়া খুলে ঢোল বানানোর আস্ফালন শুনাতেন। তবে আওয়ামী লীগের সমস্যা হলো তাদের ফ্যাসীবাদী রাজনীতিতে সন্ত্রাসী খুনিদের কদর অনেক বেশী। ফলে তাদের রাজনীতিতে ফেনীর জনয়াল হাজারী,লক্ষিপুরের আবু তাহের ও নারায়নগঞ্জের শামীম ওসমানীর যেমন কদর আছে তেমনি কদর আছে কুষ্টিয়ার ইনুরও।ফলে বহু আওয়ামী নেতাকর্মী নিধনকারি জাসদের নেতা ইনু মন্ত্রী হয় তো সে কারণেই।আর সে সাথে বাংলাদেশের মুসলমানদের বিপদ,তার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে রেডিও-টেলিভিশনসহ সকল সরকারি প্রচার মাধ্যম। প্রচারমাধ্যমের দায়িত্ব হলো জনগণের মাঝে সত্যকে তুলে ধরা। তেমনি শত্রুকে পরিচিত করা। কিন্তু যে ব্যক্তির রক্তে ইসলামপন্থিদের নিধনের নেশা সেকি সত্যের সেবক হতে পারে?
গড়াতে নয় ভাঙ্গাতেই বাহাদুরি
দেশের রাজনীতিতে রক্তাত্ব বিভক্তি ও সংঘাত গড়ায় আওয়ামী লীগের জুড়ি নেই। দলটির বাহাদুরি ভাঙ্গাতে,গড়াতে নয়।পাকিস্তানের রাজনীতিতেও ভাঙ্গন ছাড়া আওয়ামী লীগে কোন গঠনমূলক কাজই করেনি। অথচ দলের নেতা সহরোওয়ার্দী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন। গড়ার রাজনীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতেও করছে না। অথচ মুসলমানদের মাঝে বিভক্তি গড়া কবিরা গুনাহ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা বিভক্তির বিরুদ্ধে বার বার সাবধান করেছেন। আল্লাহর আযাব পাওয়ার জন্য পুতুল পুজারি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মুসলিম দেশ ভাঙ্গা ও মুসলমানদের মাঝে বিভক্তি গড়ার অপরাধই সে জন্য যথেষ্ঠ। সে আযাব থেকে বাঁচার চেতনাটি অতি প্রবল থাকার কারণেই আরব, কুর্দি, ইরানী, তুর্কী এরূপ নানা ভাষাভাষী জনগণের বিশাল ভূগোল জুড়ে অখন্ড মুসলিম রাষ্ট্র হাজার বছর যাবত অটুট ছিল। নইলে সে ভুগোল ভেঙ্গে বহু শত বছর আগেই শতাধিক বাংলাদেশ তৈরী হতে পারতো। অথচ সে বিশাল ভূগোল পাহারা দেয়ার জন্য সে সময় মুসলমানদের হাতে বিশাল সেনাবাহিনী ছিল না। মুসলিম ভূমির কোনে কোনে আজকের মত সেনানীবাসও ছিল না। হাজার বছর ধরে সে ভূগোলের অখন্ডতা পাহারা দিয়েছে তাদের প্যান-ইসলামী চেতনা।মুসলিম উম্মাহর অখন্ড ভুগোলের মানচিত্রটি স্রেফ জমিনে নয়,বরং তাদের চেতনার অঙ্গণে অংকিত হয়ে গিয়েছিল। সে ভূগোল ভাঙ্গা সাধারণ মুসলমানের কাছেও শাস্তিযোগ্য মহা অপরাধ মনে হত। তারা বুঝতো, উত্তাল মহাসমূদ্রে ছোট ডিঙ্গি ভাসানো যায় না। চাই বিশাল জাহাজ। তেমনি সংঘাতময় বিশ্বেও সম্মান ও প্রতিপত্তি নিয়ে বাঁচার জন্য চাই বিশাল রাষ্ট্র। নবীজী(সাঃ)ও তাঁর সাহাবাগণ উত্তরাধিকার সুত্রে কোন বিশাল ভূগোল দূরে থাক কোন রাষ্ট্রই পাননি। শূণ্য থেকে তাঁরা বহু শ্রম ও বহু রক্ত ব্যয়ে রাষ্ট্রগড়া শুরু করেন। নবীজী (সাঃ)র কাছে রাষ্ট্রের বিশাল ভূগোল অতিগুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছিল।তাই রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী কন্সটান্টিনোপল দখলের নসিহত করেছিলেন। ১৯৪৭ য়ে এজন্যই বাংলার বিজ্ঞ মুসলিম নেতাগণ জেনে বুঝে বিশ্বের বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন। তারা তাই ক্ষুদ্র বাংলাদেশ গড়েননি। সে অভিন্ন প্রজ্ঞার কারণেই পশ্চিম বাংলার বাঙালীরা বিহারী,পাঞ্জাবী, গুজরাতি,মারোয়ারি ও নানা ভাষী অবাঙালীদের সাথে অখন্ড ভারতে বাস করছে। অথচ সে প্রজ্ঞা কি মুসলিম নামধারি বাঙালী কাপালিকদের কোন কালেই ছিল? বিশ্বরাজনীতিতে শুধু সংখ্যা দেখা হয় না,হিসাব হয় শক্তির। সে শক্তিটা দারুন ভাবে কমে ভূগোল ছোট হলে। অন্যদের কাছে তখন দেশ গুরুত্ব হারায়। পাকিস্তান সীমান্তে ভারত মানুষ দূরে থাক,গরুছাগলের গায়েও কি গুলি করার সাহস রাখে? অথচ বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত লাশ হচ্ছে মানুষ। অমুসলমানদের কাছে একতা গড়া বা বৃহৎ রাষ্ট্রগড়া হলো তাদের সামরিক ও রাজনৈতীক কৌশল, অথচ মুসলমানদের কাছে সেটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা। বিচ্ছিন্নতা হলো হারাম। একাত্তরে তাই শুধু জামায়াত নয়,কোন ইসলামি দল,কোন হাক্কানী আলেম এবং দ্বীনদার মুসলমান পাকিস্তান ভাঙ্গাকে সমর্থণ করেনি।পাকিস্তান ভাঙ্গাটি ছিল ইসলামে অঙ্গিকার শুণ্য ন্যাশনালিষ্ট,সোসালিষ্ট ও সেক্যুলারিষ্ট একান্ত নিজস্ব প্রজেক্ট। এর পিছনে ছিল ভারতের ন্যায় এমন এক চিহ্নিত শত্রু রাষ্ট্র যারা ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের সৃষ্টিই চায়নি। অথচ ইসলামের সে শত্রুপক্ষের প্রজেক্টে অংশ না নেয়াকে বলা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ!বলা হচ্ছে মানবাধিকার লংঘন। সে অভিযোগে ঘটা করে বিচার বসছে।
মুসলমানদের বিভক্ত করা,শক্তিহীন করা এবং কাফেরদের পদসেবী করাতেই সেক্যুলারিষ্টদের আনন্দ। তাদের হাতে পাকিস্তান যেমন বাঁচেনি,তেমনি বিপদে পড়েছে বাংলাদেশও। তাদের হাতে বাংলাদেশ আজ দ্বিজাতিতে বিভক্ত। এক দিকে ইসলামের পক্ষ,অপর দিকে বিপক্ষ। এ দুই পক্ষের রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ বিপরীত মুখি। দেশের রাজনীতি কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে এ দুই বিপরীত মেরুতে। নাস্তিক,সেক্যুলারিষ্ট,সোসালিস্ট,কম্যুনিষ্টসহ সকল ইসলামবিরোধীগণ আজ আওয়ামী লীগের সাথে একাকার হয়ে গেছে। রাজনৈতীক সংঘাতে রক্তপাত বাড়াতে হলে বিবাদমান পক্ষের মাঝে গভীর ঘৃনা চাই। বিবাদের নানাবিধ উপকরণও চাই। আওয়ামী লীগের সে কাজটি সুচারু ভাবে করেছে। বিবাদ খুঁজতে তাদের নজর শুধু একাত্তরের উপর সীমিত নয়, ১৯৭৫য়ের উপরও নয়। কারা তাদের রচিত বাহাত্তরের সংবিধানে হাত দিল,কারা অতীতে তাদের রাজনীতির বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল -সেগুলোও বিচারে আনছে। দেশের রাজনীতিতে তারা লাগাতর ছিটাচ্ছে ঘৃনার পেট্রোল। সে পেট্রোলে আগুনও দিচ্ছে। ঘৃনা বাড়ালে মানুষ যে নিজেরাই বোমাতে পরিণত হয় তার প্রমাণ আজকের ইরাক ও আফগানিস্তান। অথচ সে ঘৃণার আবাদটি ব্যাপক ভাবে বাড়ানো হচ্ছে বাংলাদেশে। সেটি বাংলাদেশের ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে। ফলে বাংলাদেশ ধেয়ে চলছে ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে। শত্রুরা সে খুশিতে যে ডুগডুগি বাজাবে তাতে কি সন্দেহ আছে?
অথচ দায়িত্ববান রাজনীতিবিদদের মূল কাজটি হলো চলমান সংঘাতকে কমিয়ে আনা। রাজনীতি হলো সংঘাত বা বিভক্তি কমানোর বিজ্ঞান। নানা ভূখন্ডের নানা ভাষাভাষি মানুষ একতা গড়ে, অখন্ড ভূখন্ডে বিশাল রাষ্ট্র গড়ে তোলে সুস্থ্য রাজনীতির মাধ্যমে। ১৯৪৭সালে ১২০০ মাইলের বিভাজন নিয়ে শত্রুদের প্রচন্ড বিরোধীতার মুখে বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র পাকিস্তানে গড়তে তাই কোন যুদ্ধ লড়তে হয়নি। সে সময়ের রাজনৈতীক নেতাদের এটিই সবেচেয়ে বড় কৃতিত্ব। অবুঝ শিশুর হাতে কাঁচের পাত্র যেমন নিরাপদ নয়,তেমনি অবুঝ ও দুর্বৃত্ত নেতাদের হাতে দেশের মানচিত্রও নিরাপদ নয়। দেশকে বিভক্ত ও দুর্বল করতে তখন বাইরের শত্রু লাগে না। বরং ভিতরের শত্রুরাই সে কাজটি সুচারু ভাবে করে। তখন দেশকে তারা বিদেশী শত্রুর পদানত করে ছাড়ে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ তেমনি এক আত্মঘাতি ধারা।
ঘৃনা ও বিভক্তির রাজনীতিতে লড়াই অনিবার্য। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীগণ সেটি জানে। সে লড়াইয়ে পরাজিত পক্ষের রাজনীতি নির্মূল হয় সেটিও আওয়ামী লীগ বুঝে। জেনে বুঝেই আওয়ামী লীগ তেমন তেমন একটি লড়াই দেশের উপর চাপিয়ে দিতে চায়।তাদের ধারণা, যুদ্ধ বাধলে ভারতও আসবে। কারণ, বাংলাদেশের মাটিতে এমন যুদ্ধ তাদের একের নয়,সেটি ভারতেরও। আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করা ছাড়া তাদের সামনে বিকল্প নেই্। ফলে তাদের বিশ্বাস,ভারত ১৯৭১ নিজেদের অর্থ ও রক্ত ব্যয়ে তাদের পক্ষে যেমন যুদ্ধ লড়ে দিয়েছে,এবারও সেটি করবে। “একাত্তরে হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেক বার” –তাদের মুখে এজন্যই তো এ স্লোগান। তারা চায়,সেটি লড়াইটি তাদের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় শুরু হোক। তাতে সুবিধা হবে তারা নিজেদের পক্ষে পাবে দেশের পুলিশ,র্যাব,সেনাবাহিনী,প্রশাসন ও আদালতকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহারের সুযোগ। নির্বাচনের মাধ্যমে পুণরায় ক্ষমতায় যাওয়া যে অসম্ভব সেটি তারা বুঝে। ফলে একটি রক্তাক্ষয়ী যুদ্ধকে অনিবার্য করতেই ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে হামলা শুরুও হয়ে গেছে।
অভিযান নির্মূলের
সরকারের বর্তমান টার্গেট যদিও জামায়াত-শিবির,তবে জামায়াত-শিবির যেমন প্রথম টার্গেট নয়,তেমনি শেষ টার্গেটও নয়।ফলে বিপদ এখানে সমগ্র দেশের। আওয়ামী লীগ চায়,যে কোন মূ্ল্যে তাদের ক্ষমতায় থাকার রাজনীতি নিরাপদ হোক। ফলে যারাই পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে তাদেরই নির্মূলে হাত দিবে। ক্ষুদার্ত নেকড়ে দুটি শিকারকে এক সাথে ধরে না। ধরে একটি একটি করে। আওয়ামী লীগের স্ট্রাটেজীও তাই সব শত্রুকে একসাথে নির্মূল নয়। সে সামর্থও তাদের নাই। সামর্থ থাকলে শেখ হাসিনাও তার পিতা শেখ মুজিবের ন্যায় সকল বিরোধী দলকে এক যোগে নিষিদ্ধ করতো। সামর্থ নাই বলেই ধীরে ধীরে এবং একে একে বিরোধীদের নির্মূলে কাজ শুরু করেছে। তাদের দৃষ্টিতে একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই অপরাধী। জামায়াতে ইসলামির অপরাধ তারা ১৯৭১ য়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। সে অভিযোগ এনে দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের ধুঁয়া তুলে জেলে তুলেছে। অথচ এসব নেতাদের কেউই কোনদিন কোন রণাঙ্গনে যায়নি, যুদ্ধও করেনি। যুদ্ধাপরাধ তো তারাই করে যারা যুদ্ধ করে। অথচ যারা রণাঙ্গনে ছিল সে পাকিস্তানী সৈন্যদের টিকিটাও তারা স্পর্শ করেনি।
কুমতলব থাকলে নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে অসংখ্য অপরাধ আবিস্কার করা যায়,তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীসাবুদও বাজারে কেনা যায়।এবং বিচারে ফাঁসীর আদায় করা যায়।ক্ষমতায় থাকলে সেটি তো বেশী বেশী করা যায়। নমরুদ,ফিরাউন ও আবুজেহেলগণ তো নবীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ আবিস্কার করেছিল। তাছাড়া বহু মানুষকে তো আজ বিচার ছাড়াই খুন ও গুম করা হচ্ছে। ক্রস ফায়ারে দিচ্ছে,পিটিয়েও মেরে ফেলছে। আওয়ামী লীগ কোন দলকে তাদের প্রতিদ্বন্দি হওয়ার অধিকার দিতে রাজী নয়। শেখ মুজিব যেমন দেয়নি, দিতে রাজী নয় শেখ হাসিনাও।তাদের যুক্তি,বাংলাদেশ হলো একমাত্র তাদের সৃষ্ট দেশ,অতএব শাসনের অধিকারও একমাত্র তাদেরই। বিএনপির সবচেয়ে বড় অপরাধ,তারা আওয়ামী লীগের সে অধিকার কেড়ে নেতে চায়। অপরাধ,তারা জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করে। অপরাধ,শেখ মুজিবের হত্যাকারিদের বিচার না করে বাঁচিয়ে রেখেছিল। আরো অপরাধ,তারা বাহাত্তরের সংবিধানে কাটছাট করেছে। অপরদিকে ইসলামি ঐক্যজোট ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর অপরাধ,তারা মৌলবাদী। তারা শরিয়তের প্রতিষ্ঠা চায়।আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নির্মূলযোগ্য হওয়ার জন্য তো এগুলিই গুরুতর অপরাধ।
স্ট্রাটেজী রাজপথ দখলের
সামনে নির্বাচন।তবে নির্বাচনী বিজয়ের পূর্বে তারা রাজপথের বিজয় চায়। তখন নির্বাচনে ইচ্ছামত কারচুপি করলেও তা নিয়ে রাজপথে কার্যকর প্রতিবাদ হবে না। ফলে নিরাপদ হবে ক্ষমতায় থাকা। আওয়ামী লীগের এটিই অতি সনাতন স্ট্রাটেজী। সে স্ট্রাটিজী ছিল ১৯৭০য়ের নির্বাচন কালেও। রাজপথের দখল নিতে তাদের কৌশল সব সময়ই দলীয় গুন্ডাবাহিনী দিয়ে সকল দলের নির্বাচনী জনসভা ভন্ডুল করা। তাদের সে সন্ত্রাসের কারণে ১৯৭০ সালে ঢাকার পল্টন ময়দানে জামায়াতে পক্ষে নির্বাচনি জনসভা করা যেমন সম্ভব হয়নি,তেমনি সম্ভব হয়নি মুসলিম লীগের পক্ষেও। সম্ভব হয়নি জনাব নুরুল আমীন সাহেবের দলের পক্ষেও। আর মাওলানা ভাষানী তো সে নির্বাচনে রণেভঙ্গ দিয়েছিলেন। মুজিব আমলে ১৯৭৩য়ে যে নির্বাচন হয়েছিল সে নির্বাচনেও বিরোধী দলগুলোকে রাজপথে নামতে দেয়া হয়নি। এমনকি বিরোধীদলীয় প্রার্থীকে ঘরে বন্দী রেখে বহু আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। বিরোধীদলীয় প্রার্থীকে নমিশেন পেপারও জমা দিতে দেয়নি। তাই আওয়ামী লীগের কাছে নির্বাচনী জয়ের লক্ষ্যে রাজপথের উপর দখলদারিটি গুরুত্বপূর্ণ। দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে আওয়ামী লীগের একার পক্ষে রাজপথ দখলে নেয়া সম্ভব হয় না। সরকার তখন সবার জন্যই রাস্তা করে দেয়। ফলে তাতে আওয়ামী লীগের বিপদ বাড়ে। এজন্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকেই আওয়ামী লীগ বিদায় করে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রাজপথ দখলের সে স্ট্রাটেজীর কথাটি বেরিয়ে এসেছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর মুখ থেকে। তিনি বলেন,“খালেদা জিয়া (ভারত থেকে ফিরে) দেশের মাটিতে পা রাখতে না রাখতেই তার উস্কানিতে জামায়াত শিবির ও তাদের প্রেতাত্মারা দেশকে নৈরাজ্যকর অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছে। এসব চলতে থাকলে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বসে থাকবে না। তারা মাঠে নামলে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা পালানোর জায়গা পাবে না।” তিনি বলেন,“আপনারা তৈরী হোন,রাজপথ দখলে নিন।” –(বাংলাদেশ নিউজ, ৬/১১/১২)। সে দখলটি আগামী নির্বাচন অবধি রাখতে হবে সে ঘোষণাটিও আসছে।আওয়ামী লীগের সৌভাগ্য হলো,তাদের এ দুরভিসন্ধি নিয়ে বিরোধী দলগুলোর হুশ নেই। ভাবনাও নাই। এক পাল খাসীর মধ্য থেকে একটি ধরে নিয়ে জবাই করলে অন্যগুলো তখনও মনের তৃপ্তিতে ঘাস খায় বা জাবর কাটে। তেমনি অবস্থা এ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের। ফলে জামায়াত-শিবিরের নেতাদের আজ একাকী আওয়ামী জুলুমের মোকাবেলা করতে হচ্ছে।অন্যান্য বিরোধী দলগুলো সে নির্যাতনের দৃশ্য নিরাপদ দূরত্বে বসে দেখছে। বিএনপির উপর যখন নির্মূল অভিযান শুরু হবে তখন অন্যদের আচরণও কি ভিন্নতর হবে? ১৪/১১/১২
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018