আওয়ামী লীগের ঘৃণার রাজনীতি এবং সংঘাতের পথে বাংলাদেশ
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on December 25, 2018
- বাংলাদেশ
- No Comments.
নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্রদের মূল লক্ষ্য ছিল, যেভাবেই হোক নির্বাচনী জয়। এজন্য তারা মিত্রতা গড়েছে সামরিক-বেসামরিক নানা পক্ষের সাথে। বিজয়ের পর এবার তাদের এজেন্ডা নিজেদের রাজনৈতিক দখলদারির স্থায়ী রূপ দেওয়া। সে লক্ষ্যে এখন তারা দখলদারি জমাতে চায় দেশবাসীর মনের ভূবনে। কারণ, একমাত্র চেতনার মানচিত্রের সাথেই স্থায়ী যোগসূত্র হলো রাজনৈতিক মানচিত্রের। এটি পাল্টে গেলে তাই পাল্টে যায় রাজনৈতিক মানচিত্রও। এজন্যই রাজনৈতিক বিজয়ের পর পরই প্রতিটি কৌশলি রাজনৈতিক পক্ষ্যই সাংস্কৃতিক ও আদর্শিক বিজয়ে মনযোগী হয়। ইরানের জাতিয়তাবাদীরা ছিল এক্ষেত্রে অতি ধুরন্ধর। তারাই রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার পর আদর্শিক ও ধর্মীয় বিচ্ছিন্নতাকে পাকাপোক্ত করে। ইতিহাস থেকে তার একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। ইসলামী সভ্যতার নির্মাণে শুরুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ইরান।
এ বিশাল ভূ-খন্ডটি এক সময় মুসলিম উম্মাহর একটি শক্তিশালী অংশ ছিল। খোলাফায়ে রাশেদার পর আরবগণ যথন ভাতৃঘাতি সংঘাতে লিপ্ত হয় তখন কোরআনের বড় বড় মোফাচ্ছের, বিজ্ঞানী, চিকিৎস্যক, কবি-সাহিত্যিক ও দার্শনিক জন্ম নেয় ইরানে। ইমাম আবু হানিফা, আব্দুল কাদের জিলানী, আল ফারাবী, আল রাজি, ইবনে সিনা, ইমাম আল গাজ্জালী, শেখ সাদী, মাওলানা রুমীসহ বহু প্রতিভার জন্ম ইরানে। তারা শুধু ইরানের গৌরব ছিলেন না, গৌরব ছিলেন সমগ্র মুসলিম উম্মাহর। প্রখ্যাত সমাজ-বিজ্ঞানী ইবনে খুলদুনের মতে ইসলামের উদ্ভব আরবে হলেও ইসলামি সভ্যতার নির্মান ঘটে ইরানে। আব্বাসী খলিফার দূর্বল সময়ে সে ইরানই বিচ্ছিন্ন হয় মুসলিম উম্মাহ থেকে। বলা যায় মুসলিম ইতিহাসে ইরানই হলো জাতিয়তাবাদী বিচ্ছিন্নতার গুরু। ইরানী শাসকেরা সে বিচ্ছিন্নতাকে স্থায়ী রূপ দিতেই পাল্টে দিতে হাত দেয় সেদেশের মানুষের ধর্মীয় চেতনায়। জন্ম দেয় শিয়া মতবাদ। সাফাভী শাসকদের সে বলপূর্বক ধর্মীয় পরিবর্তনে লক্ষ লক্ষ সূন্নী মুসলমানকে হত্যা করা হয়। ফলে নিছক এক রাজনৈতিক প্রয়োজনে এককালের সূন্নী ইরান পরিণত হয় শিয়া রাষ্ট্রে। প্রতিবেশী মুসলিম রাষ্ট্র থেকে এভাবেই গড়া হয় ইরান ঘিরে বিভক্তির বিশাল প্রাচীর। মুসলিম উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ থেকে বিভক্তি গড়ে তোলার স্বার্থেই জন্ম দেয়া হয় এবং সে সাথে পরিচর্যা পায় তীব্র ঘৃণাবোধ। শিয়াদের সে ঘৃণা থেকে হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত উমর (রাঃ), হযরত উসমান (রাঃ), হযরত আয়েশা (রাঃ)র ন্যায় নবীজীর অতি প্রিয় ব্যক্তিরাও রেহাই পাননি। ইরানীরা মুখে যাই বলুক আজও তারা সমগ্র মুসলিম উম্মাহ থেকে বিচ্ছিন্ন সে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটেই। এভাবে সুযোগ হারিয়েছে মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্বদানে। কারণ বিচ্ছিন্নতাবাদী চেতনায় আর যাই হোক কোন কালেই কোন বৃহৎ জনগোষ্ঠির নেতা হওয়া সম্ভব নয়। তখন থেকেই ইরানে লোপ পায় প্যান-ইসলামিক চেতনা, এবং বেড়ে উঠে বর্ণবাদী চেতনা। সেসাথে বেড়ে উঠে মুসলিম উম্মাহর ক্ষতি সাধনের চেতনা। ক্ষতিসাধনের সে চেতনাতেই এদেশটির শিয়া শাসকেরা ইউরোপীয় শাসকদের সামরিক সহয়তা নিয়ে বার বার হামলা চালিয়ছে উসমানিয়া খেলাফতের পূর্ব সীমান্তে। মুসলিম সেনাবাহিনী যখন সমগ্র বলকান, গ্রীস, দক্ষিণ রাশিয়া, ক্রিমিয়াসহ বিশাল পূর্ব ইউরোপ দখল করে অস্ট্রিয়ার রাজধানী অবরুদ্ধ করে ফেলে সে সময় ইরান চাকু ঢুকিয়ে দেয় উসমানিয়া খেলাফতের পিঠে। ইতিহাসের সে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে পূর্ব সীমান্তে শুরু হয় শিয়া হামলা। মুসলিম সেনাদল তখন ভিয়েনা থেকে অবরোধ তুলে পিছু হটতে বাধ্য হয়। ইরানের সে হামলা না হলে ইউরোপের ইতিহাসই হয়তো ভিন্নভাবে রচিত হতো। সে সময় থেকেই ইরানের প্রতিভা ও সামর্থ্য নানা ভাবে ব্যয় হয়ে আসছে মুসলমানদের রক্ত ঝরাতে। সম্প্রতি আফগানিস্তান ও ইরাকে যে মার্কিন হামলা হলো তাতে সাহায্য ও সর্বাত্মক সমার্থণ দিয়েছে ইরান। এখন তারা সাহায্য দিচ্ছে ভারত ও পাশ্চাত্যের পাকিস্তান বিরোধী আগ্রাসনে। বাংলাদেশের বাঙ্গালী বর্ণবাদীরা আজ একই ভাবে সে মধ্যযুগীয় ইরানী বর্ণবাদীদের পথ ধরেছে। তারা নিজেরা বিচ্ছিন্ন হয়েছে উপমহাদশের অন্য মুসলমানদের থেকে। এবং সর্বোভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে উপমহাদেশে মুসলিম শক্তির উত্থান রুখবার কাজে। ইসলামি উম্মাহ থেকে তারা যে কতটা বিচ্ছিন্ন এবং ঘৃণা যে তাদের কতটা মজ্জাগত তারই প্রমাণ হলো, আজও পাকিস্তানের খন্ডিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখলে শুধু ভারতীয় কাফের বা ইসরাইলের ইহুদীরাই খুশি হয় না, আনন্দের বন্যা বইতে থাকে আওয়ামী মহলেও। অবাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সে ঘৃণা থেকে আল্লামা ইকবালের ন্যায় মহান কবিও রেহাই পাননি। অথচ আল্লামা ইকবাল ছিলেন মুসলিম উম্মাহর কবি। তিনি ছিলেন প্যান-ইসলামের কবি। মাতৃভাষা পাঞ্জাবী হওয়া সত্ত্বেও তিনি কবিতা লিখেছেন উর্দু ও ফার্সী ভাষায়। তার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের নাম ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার নাম সেখান থেকে মুছে দেয়। অথচ তিনি বাঙ্গালী মুসলমানদের কোন ক্ষতিই করেননি। জাতিয়তাবাদী চেতনা মানুষকে যে কতটা বিদ্বেষপূর্ণ ও বিবেকশূণ্য করে এ হলো তার নমুনা। এমন বিবেক শূণ্যতার কারণেই একজন ভিন্ন ভাষার বা ভিন্ন এলাকার নিরপরাধ মানুষও হত্যা করা বা তাকে তার বসত বাড়ী থেকে বের করে বা তার সম্পদের উপর দখল জমানো জাতিয়তাবাদীদের জন্য আদৌ অপরাধ মনে হয় না।
অথচ প্যান-ইসলামি চেতনা একটি জনগোষ্ঠিকে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে যে কতটা সৃষ্টিমুখি করে তারও প্রমাণ বাংলার মুসলমান। ১৯৪৭এ বাংলাদেশের মুসলমানদের কারণেই জন্ম নিয়েছিল বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ও সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান। মুসলমানদের হাতে দিল্লী বিজয়ের পর এটিই ছিল ভারতের মুসলিম ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ রাষ্ট্রটি গড়ায় যে সংগঠনটি কাজ করেছিল সেটি হলো মুসলিম লীগ। এবং সে মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা ঘটেছিল ঢাকায়। পাকিস্তান প্রস্তাবটিও উত্থাপন করেছিল বাংলার ফজলুল হক। কিন্তু পরবর্তিতে আওয়ামী লীগ আবির্ভুত হয় কাফের শক্তিবর্গের অতিবিশ্বস্ত মিত্ররূপে। তাদের কাছে ইসলাম ও মুসলিম স্বার্থের প্রতি অঙ্গিকারবদ্ধতা চিত্রিত হয় সাম্প্রদায়িকতা রূপে। এজন্যই তাদের প্রতিবারের নির্বাচনী বিজয় ভারতসহ সকল কাফের শক্তির কাছে এতটা উৎসবে পরিণত হয়। এমন একটি ইসলাম বিরোধী চেতনার কারণে প্রতিবেশী দেশে হাজার হাজার মুসলমানকে পুড়িয়ে হত্যা বা সেদেশের মুসজিদ ধ্বংস করা হলেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মুখে কোন প্রতিবাদের ধ্বনি উঠে না, প্রতিবাদে রাজপথেও নামে না। পত্রিকায় বিবৃতিও দেয় না। প্যান-ইসলামি চেতনা থেকে এটি সম্পূর্ণ এক ভিন্নতর চেতনা। এমন চেতনার নির্মান হতে পারে একমাত্র প্যান-ইসলামি চেতনার বিনাশের পথ ধরেই। আওয়ামী লীগ সরকার তার সকল সামর্থ বিণিয়োগ করছে সে ইসলামি চেতনার বিনাশে। তারা এটিকে বলে রাজাকারের চেতনা। ইরানের স্বৈরাচারি শাসকেরা প্যান-ইসলামি চেতনার বিনাশে রাষ্ট্রীয় অর্থে পরিচর্যা দিয়েছিল ইরানী বর্ণবাদ ও শিয়া ধর্মমতের। আর আওয়ামী লীগ শেখাচ্ছে বাঙ্গালী জাতিয়তাবাদ ও ইসলাম-মূক্ত সেকুলার চেতনার। এলক্ষ্যে মুসলিম জনগণের দেওয়া রাজস্বের বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে নাচগান শেখানোর কাজে। অথচ ইসলামে নাচগান হারাম। কারণ, মানুষের এ পার্থিব জীবনকে পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক অভিহিত করেছেন একটি পরীক্ষাকেন্দ্র রূপে। নারীপুরুষ এখানে ব্যস্ত তাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিতে। এ পরীক্ষায় ফেল করলে তারা কোন চাকুরি হারাবে বা ডিগ্রি পেতে ব্যর্থ হবে তা নয়। বরং পরিণতিটি হবে ভয়ংকর। নিক্ষিপ্ত হবে জাহান্নামের আগুনে। পরীক্ষার হলে কি নাচগানের আয়োজন চলে? এমন একটি চেতনার কারণেই মুসলমানদের হাতে ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা নির্মিত হলেও নাচগান পরিচর্যা পায়নি। যখন পেয়েছে তখন মুসলমান আর প্রকৃত মুসলমান থাকেনি। পরিণত হয়েছে শয়তানের একনিষ্ঠ সেবকে। ইসলামের সত্যপথ থেকে মুসলমান তরুন-তরুনীদের বিভ্রান্ত করার কাজে নাচগান সব সময়ই একটি সফল হাতিয়ার। শয়তানী শক্তিবর্গ অতীতের ন্যায় আজও সেটি সর্বত্র প্রয়োগ করছে। এবং বাংলাদেশে আজ সেটি হচ্ছে অতি ব্যাপক ভাবে। কাফেরদের অর্থে এনজিওগুলি এখন নাচগানের চর্চাকে মাঠপর্যায়ে নিয়ে গেছে। অথচ ব্রিটিশদের শাসনামলেও এমনটি হয়নি। পাপচর্চার এ ক্ষেত্রগুলো এখন ইনস্টিটিউশন রূপে গড়ে উঠেছে। এনজিওদের প্রতিষ্ঠিত স্কুলের হাজার হাজার ছেলেমেয়েরা নেচেগেয়ে আনন্দ প্রকাশে এখন আর কোনরূপ সংকোচ বোধ করে না। যে লজ্জাকে ঈমানের অর্ধেক বলা হয়েছে সেটিকেই তারা বিদায় দিয়েছে ছোটদের শিশুমন থেকে। আর যেখানে নাচগান বাড়ে সেখানে মদ্যপান ও ব্যাভিচার বাড়বে সেটিই তো স্বাভাবিক। অনেকটা কান টানলে মাথা আসার মত। আর বাংলাদেশে সেগুলি তাই বাড়ছে অতি সমান তালে। বেশ্যাবৃত্তি তাই এখন আর পতিতাপল্লিতে সীমাবদ্ধ নয়, সেটি উপচিয়ে আবাসিক মহল্লায় ঢুকেছে। ফলে ব্যভিচারে সংক্রামিত হচ্ছে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষকে। প্রায় দশ বছর আগের এক জরীপে প্রকাশ, বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশী যুবক বিবাহের আগেই যৌন কর্মে লিপ্ত হয়। বাংলাদেশের ন্যায় একটি মুসলিম দেশের জন্য এর চেয়ে ভয়াবহ খবর আর কি হতে পারে? অথচ ইসলামের দুষমনদের জন্য এটি এক মহা-উৎসবের বিষয়। ডি-ইসলামাইজেশন যে কতটা সফল ভাবে হচ্ছে এ হলো তার বড় প্রমাণ।
পাশ্চাত্য দেশে কোন কুকর্মই এখন আর হারাম নয়। সেটি ব্যাভিচার হোক, সমকামিতা হোক বা মদ্যপান হোক। জায়েজ বলছে পুরুষের সাথে পুরুষের বিবাহকেও। পতিতাদের বলা হয় সেক্স-ওয়ার্কার। সে অভিন্ন পাশ্চাত্য মূল্যবোধই বিশ্বের কাফের শক্তিবর্গ এখন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। পাশ্চাত্যের ভোগবাদী পাপাচারের কাছে খৃষ্টানধর্মের ধর্মীয় নেতা ও অনুসারিগণ যেমন আত্মসমর্পণ করেছে, তারা চায় ইসলামের অনুসারিগণ সেরূপ আত্মসমর্পণ করুক। এবং আত্মসমর্পণ না করাটাকে বলছে মৌলবাদ। সে মৌলবাদ নির্মূলের লক্ষ্যে তারা একদিকে যেমন শুরু করেছে সোশাল ইঞ্জিনীয়ারিং তেমনি অপরদিকে শুরু করেছে প্রকান্ড যুদ্ধ। ইঞ্জিনীয়াররা এতকাল রাস্তাঘাট, ব্রিজ ও কলকারখানা নির্মাণ করতো, আর এখন সোশাল ইঞ্জিনীয়ারীংয়ের নামে নিজেদের অর্থ, মেধা ও প্রযুক্তির বিণিয়োগ করছে সেকুলার ধাঁচের সমাজ-সংস্কৃতি, চেতনা ও রাষ্ট্র নির্মাণের কাজে। আর তাদের সে লক্ষ্যপুরণে অপরিহার্য গণ্য হচ্ছে, জনগণের চেতনা থেকে ইসলামের অপসারণ। যাকে বলা হয় ডি-ইসলামাইজেশন। বাংলাদেশের বহু টিভি নেটওয়ার্ক, অসংখ্য পত্র-পত্রিকা, শত শত এনজিও কাজ করছে সে সোশাল ইঞ্জিনীয়ারিং প্রজেক্টের আঁওতায়। ইসলামের নবজাগরণ প্রতিরোধের এটিই হলো তাদের মূল স্ট্রাটেজি। একাজে কাফের দেশ থেকে আসছে হাজার হাজার কোটি টাকার পুঁজি। আল্লাহর দ্বীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা রূখতে এটিই এখন কাফের শক্তিবর্গের সম্মিলিত গ্লোবাল স্ট্রাটেজী। এলক্ষ্যে তারা মুসলিম দেশের ইসলামে অঙ্গিকার-শূন্য দলগুলোর সাথে গড়ে তুলেছে নিবিড় কোয়ালিশন। বাংলাদেশের সরকার ও তার সহযোগী সেকুলার এনজিওগুলো হলো সে কোয়ালিশনেরই অংশ। ইসলামি চেতনা বিনাশের কাজ ফলও দিচ্ছে। জনগণের সহযোগিতাও পাচ্ছে। বাংলাদেশে ইসলামি চেতনাধারীদের নানা ভাবে হেয় করা বা নির্যাতন করা এখন তাই গণ্য হচ্ছে উৎসবকর্ম রূপে। রাজপথে লগি-বৈঠা নিয়ে দাড়ি-টুপিধারিদের হত্যা করলেও পত্রিকার পাতায় তাই সেটি নিন্দনীয় না হয়ে বরং প্রশংসনীয় হয়। এরই আরেক সফলতা হলো, বাংলাদেশ এখন বাজার ধরেছে নারী রপ্তানিতেও। দেশেটি এখন থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনের ন্যায় দেশের পথ ধরেছে। বিদেশী দুর্বৃত্তদের গৃহেই শুধু নয়, বাঙ্গালী পতিতাদের ভিড় বেড়ে চলেছে কোলকাতা, বোম্বাই ও করাচীর পতিতাপল্লিতেও। একাজ প্রথম শুরু করেছিল শেখ মুজিব। তিনি গৃহপরিচারিকার কাজ দিয়ে তেহরানে বহু শত মহিলাকে পাঠিয়েছিলেন। কথা হলো, বৃদ্ধ মহিলাকেও যেখানে ইসলামে একাকী হজ্বে যাওয়ার অনুমতি দেয়না সেখানে একজন যুবতি মহিলা অপরিচিত ব্যক্তির ঘরে গৃহপরিচারিকার কাজ নিয়ে বিদেশে যায় কি করে? অর্থের পিছে দৌঁড়াতে থাকলেও সেটি যে কত দ্রুত জাহান্নামের পথে নিয়ে যায এ হলো তার নমুনা। বাংলাদেশের সেকুলারদের মূল এজেন্ডা হলো নর-নারীদের অর্থের পিছে দৌড়াতে শেখানো, সত্যদ্বীন বা ইসলামের পিছে নয়। ইসলামের পিছে দৌড়ানোকে বরং মৌলবাদ বলে সেটিকে নির্মূলযোগ্যও বলছে। মাইক্রোক্রেডিটের ব্যবসায়ী এনজিওগুলো সূদকে ঘরে ঘরে প্রচলিত করেছে। এতবড় জঘন্য হারাম কাজ এমনকি ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ কাফেরদের শাসনামলেও এতটা ব্যপ্তি পায়নি। জনগণের মন থেকে ইসলামি চেতনা বিলুপ্তির লক্ষ্যেই এখন ২১শে ফেব্রেয়ারি, ২৫ শে মার্চ, ১৬ই ডিসেম্বর, পহেলা বৈশাখ, রবীন্দ্র জয়ন্তির ন্যায় দিবসগুলি এখন আর শুধু ঐ বিশেষ দিনে পালিত হয় না, পালিত হচ্ছে মাসাধিক কালব্যাপী।
ইসলামি চেতনা বিনাশের পাঠদানে এ মাসগুলোতে পাঠশালায় পরিণত হয় সারাদেশ। অথচ ইসলামের পরিচিতি বাড়াতে আওয়ামী লীগ একটি আলোচনা সভা বা একটি সেমিনারের আয়োজন করেছে সে নজির নেই। অথচ এরাই জোর গলায় বলে “আমরাও মুসলমান”। বাংলাদেশে ইসলামি চেতনা বিনাশের এ কাজে রাষ্ট্রীয় পুঁজির পাশাপাশি বিপুল পুঁজি বিণিয়োগ হচ্ছে কাফের দেশগুলোরও। সে পুঁজিতে দেশের নগর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জ জুড়ে ফুলে-ফেঁপে উঠছে বহু হাজার এনজিও। ইসলাম-বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নে তারা দেশী-বিদেশীদের সাথে গড়ে তুলেছে এক নিরেট পার্টনারশিপ।
আদর্শিক বা সাংস্কৃতিক আধিপত্যের পথ ধরেই আসে রাজনৈতিক আধিপত্য। একবার আদর্শিক বা সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলে রাজনৈতিক আধিপত্য-স্থাপনে শত্রুপক্ষের কাছে যুদ্ধ-লড়াটা তখন অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। শুরু থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের স্ট্রাটেজী ছিল অন্যদেশের অভ্যন্তরে নিজেদের সাংস্কৃতিক ও আদর্শিক দ্বীপ গড়া। তুরস্ক, মিশর, পাকিস্তানসহ অধিকাংশ মুসলিম দেশে সে দ্বীপগুলো হলো ক্যান্টনমেন্ট, অফিসপাড়া, আদালত, পতিতালয় ও ব্যাংকিং সেক্টর। এগুলোর সীমান্ত পাশ্চাত্য চেতনা ও মূল্যবোধের সাথে একাকার। ইসলামের হারাম-হালালের বিধান এসব জাগায় অচল। তারাই এখন পাশ্চাত্যের কাফের শক্তির একনিষ্ঠ মিত্র। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তাই আজ নিজ দেশে হাজার হাজার মুসলমান হত্যা করছে অতিশয় আনন্দ-চিত্তে। তুরস্কে দেশের সৈনিকরা স্কুলের মেয়েদের মাথায় রুমাল বাধতে দিতেও রাজী নয়। মিশরে এরা রাজী নয় ইসলামপন্থিদের রাজনীতির ময়দানে আসতে দিতে। এখন পাশ্চাত্যের সেকুলারিস্টগণ সেরূপ অভিন্ন দ্বীপ গড়ছে রাজনীতির অঙ্গনেও। আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ হলো তাদের সে অভয় দ্বীপ। একজন পশ্চিমা দুর্বৃত্ত ব্যভিচারি বাংলাদেশের পতিতালয়ে বা মদের আসরে যে সমাদারটি পায় সেটি তো চেতনাগত অভিন্নতার কারণেই। তেমনি এক অভিন্নতার কারণেই ভারতীয় নেতারাও অতি আপনজন রূপে গৃহীত হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের আসরে। আর ভারতের সাথে আওয়ামী লীগের সে গভীর সম্পর্কটি নতুন বিষয় নয়। সেটি গভীরতা পেয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবের আমলেই। ভারতীয় স্বার্থের সেবক রূপে দায়িত্ব-পালনের অঙ্গিকার নিয়ে তিনিই আগড়তলা গিয়েছিলেন। এবং সেটি ষাটের দশকে। ভারতীয় গুপ্তচর চিত্তরঞ্জন সুতোর বা কালিপদ বৈদ্যরা ছিলেন সে আমল থেকেই তার ঘনিষ্ঠ মিত্র। তিনিই ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের “তিন বিঘা” ভূমি । সীমান্ত বাণিজ্যের নামে তিনিই দেশের সীমান্ত তুলে দিয়েছিলেন, এবং এভাবে সুযোগ করে দিয়েছিলেন অবাধ লুণ্ঠনের। যার ফলে দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল বাংলাদেশীদের জীবনে। তিনিই অনুমতি দিয়েছিল ফারাক্কা বাঁধ চালুর। এখন ভারত পরিকল্পনা নিচ্ছে ব্রম্মপুত্র নদীর উজানে “টিপাই বাধ” দেওয়ার। ফারাক্কার কারণে মরুভূমি হতে চলেছে উত্তর বঙ্গের বিশাল ভূ-ভাগ। এখন একই প্রক্রিয়ার শিকার হতে যাচ্ছে সিলেট বিভাগ। দখলে নিচ্ছে বঙ্গপোসাগরে জেগে উঠা তালপট্টি দ্বীপ। ভারত বাংলাদেশের জন্য নেপালে যাওয়ার জন্য ২০-৩০ মাইলের করিডোর দিতে রাজি হচ্ছে না, অথচ বাংলাদেশের মাঝখান দিয়ে ৫০০ মাইলের করিডোর চায়। ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভূটানে যাওয়ার করিডোর বাংলাদেশের যতটা অপরিহার্য সেরূপ অবস্থা ভারতের জন্য নয়। ভারত তার পূর্বাঞ্চলে যেতে পারে তার নিজ ভূমির মধ্য দিয়ে। অথচ এরপরও ভারত চাপ দিচ্ছে সে করিডোর আদায়ে এবং আওয়ামী লীগ সেটি বিবেচনাও করছে।
আওয়ামী লীগের বিজয়ে প্রতিবারেই বিপর্যয় এসেছে নানা ভাবে। প্রচন্ড বিপর্যয় এসেছে সেনাবাহিনীর উপরও। মুজিব আমলে সেনাবাহিনীর চেয়ে বেশী গুরুত্ব পেয়েছিল রক্ষিবাহিনী। আওয়ামী লীগের এবারের বিজয়ে দেশের রাজধানীতে নিহত হলো ৫৭ জন সেনা অফিসার। শত্রুতা সৃষ্টি হলো এবং অবিশ্বাস বাড়লো সেনাবাহিনী ও বিডিআরের মাঝে। পিলখানার রক্ত শুকালেও মনের মাঝে যে বিভক্তি ও ঘৃনা সৃষ্টি হলো সেটি কি দূর হবার? এতে কি দেশের প্রতিরক্ষা দৃঢ়তা পায়? এখন কথা উঠছে বিডিআরের বিলুপ্তির। সরকার ভাবছে, বিডিআরের নাম ও লেবাস পাল্টিয়ে আরেকটি বাহিনী গড়ার। সরকারের ধারণা, সমস্যা শুধু বিডিআর নামটি ও পোষাকটি নিয়ে। ভাবটা যেন, ফাইলপত্র ও অফিস আদালতের গা থেকে ‘বিডিআর’ নামটি বা তাদের লেবাসটি উঠে গিয়ে সেনা-অফিসারদের বুকে গুলি চালিয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ সমাধান খুঁজছে ‘বিডিআর’ নামটি ও তার লেবাসটি বিলূপ্তির মাঝে। কিন্তু যারা গুলি চালালো, যারা সে হত্যাযজ্ঞে নেতৃত্ব দিল তাদের বিচারে অগ্রগতি কোথায়?
দুর্যোগ নেমেছে দেশের শিক্ষাঙ্গনেও। চরদখলের ন্যায় সেখানে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীর। শুধু ভিসি বা প্রিন্সিপালের অফিসেই নয়, দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আবাসিক হলগুলোর সিটগুলোর উপরও। আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীর অনুমতি ছাড়া সেখানে কেউ থাকতে পারবে না। দলীয় নিয়ন্ত্রণ আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও। লাশ হচ্ছে ছাত্ররা। ব্যাপক অবনতি ঘটেছে আইনশৃঙ্খলার। বাড়ছে চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী ও খুনখারাবী। একই রূপে হাত পড়েছে দেশের কৃষি ও শিল্পাঙ্গনেও। সরকারের বাণিজ্যনীতির কারণে ভারত থেকে অবাধে ঢুকছে ভারতীয় নিম্মমানের সস্তা পন্য। ফলে বাজার হারাচ্ছে বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য। কিছুদিন আগে তাই বাংলাদেশের কৃষকরা বাজার না পেয়ে রাস্তার উপর তাদের দুধ ঢেলেছে। সে ছবি টিভিতে দেখানো হয়েছে। দেশে বন্ধ হচ্ছে নিজস্ব সূতা তৈরীর কারখানা। হাত পড়েছে দেশের তাঁতীদের গায়েও। মুজিবামলেও এমনটিই ঘটেছিল। তখনও দেশী কারখানায় তালা লাগানো শুরু হয়েছিল। আগুনে ভস্মিভূত হয়েছিল বহু পাটের গুদাম। বাজারে প্লাবন এসেছিল তখন ভারতীয় পণ্যের। শিল্প-কৃষি-বাণিজ্য এভাবে একের পর এক বিধস্ত বা বেদখল হলে কি সে দেশের জনগণের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া আর কোন রাস্তা খোলা থাকে? কথা হলো এভাবে কি একটি দেশের প্রতিষ্ঠা বাড়ে? বাড়ে কি সম্মান?
দেশের বিপর্যয় বাড়াতে আওয়ামী লীগ আরেকটি আত্মঘাতি পথও বেছে নিয়েছে। আর সেটি হলো রাজনৈতিক বিভক্তি ও ঘৃনার রাজনীতির। ইতিহাস থেকে খুঁজে খুঁজে তারা বিভক্তির সূত্র গুলো রাজনৈতিক ময়দানে নিয়ে আসছে। যুদ্ধ-অপরাধের মত ৩৮ বছরেরও পুরনো বিষয়কে তারা রাজনীতিতে টেনে আনছে। যারা ক’দিন আগে দিনদুপুরে নিহত ৫৭ জন সেনা-অফিসার হত্যার একটি সুষ্ঠ বিচার করতে হিমসিম খাচ্ছে, এবং এখন কোন আশার আলো দেখাতে পারছে না তারা আবার ৩৮ বছর পুরোন অপরাধের বিচার করবে। কান্ডজ্ঞান আছে এমন কোন ব্যক্তি কি সেটি বিশ্বাস করতে পারে? শেখ মুজিবের ২০ টাকা মণ দরে চাল খাওয়ানো বা শেখ হাসিনার প্রতি পরিবারে একজনের চাকুরিদানের ন্যায় নির্বাচনী ওয়াদার মতই এটি এক প্রকান্ড মিথ্যাচার। বিচার শুধু গলাবাজীতে হয় না, চাক্ষুষ প্রমাণ ও সাক্ষী-সাবুদও হাজির করতে হয়। অপরাধী কে অপরাধীরূপে প্রমাণের দায়িত্ব সরকারের। এবং বিচারকে গ্রহণযোগ্য করতে না পারলে নিজেদের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাও যে আস্তাকুড়ে পড়বে সে খেয়াল কি তাদের আছে? ঘৃণার রাজনীতির শিকার হয়েছেন শেখ মুজিব নিজে ও তার পরিবার। সিরাজ সিকদারের হত্যার পর সংসদে তিনি ঘৃনা ও দম্ভভরে বলেছিলেন, “কোথায় আজ সিরাজ সিকদার?” কিন্তু সে কথা বলার পর তিনিও বেশী দিন বাঁচেননি। সিরাজ সিকদারের ন্যায় তিনিও লাশ হয়েছেন। কিন্তু মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ অতীতের ইতিহাসে থেকে কোন শিক্ষাই নেয়নি। তারা রাজনীতিতে জোয়ার দেখেছে ভাটাও দেখেছে। ভাটার সময় মুজিবের লাশ সিড়িতে পড়ে থাকলেও সে লাশ কেউ তুলতে এগুয়নি। ঘৃণা পেট্রোলের চেয়েও বিস্ফোরক। একবার সেটি ছড়িয়ে পড়লে সহজে সেটি থামে না। লক্ষ লক্ষ মানুষকে সেটি সাথে নিয়ে যায়। ইউরোপ এক সময় এ ঘৃণার কারণে দারুন ভাবে বিধ্বস্ত ও জনশুন্য হয়েছিল। তাই তারা নানা জাতিতে বিভক্ত ইউরোপকে এখন এক করতে ব্যস্ত। আরেকটি ধ্বংসযজ্ঞ তারা এড়াতে চায়। ইতিহাস থেকে যারা শিক্ষা নেয় তাদের আচরণটি এমনই হয়। আজকের ইরাক হলো আরেক দৃষ্টান্ত। অতিশয় ঘৃণার কারণে মানুষ সেখানে নিজেই পরিণত হচ্ছে বোমায়। ফেটে পড়ছে রাজপথে, মসজিদে ও বাজারে। পাঁচ লাখেরও বেশী মানুষের সেখানে মৃত্যু ঘটেছে। আরেক উদাহরন আলজেরিয়া।
রাজনীতি হলো একতা ও সম্পৃতি গড়ার নীতি। একমাত্র সে পথেই রাষ্ট্র সামনে এগোয়। দেশবাসীও নিজেদের মধ্যে সংহতি খুঁজে পায়। তাই যেদেশে রাজনীতি পরিপক্কতা পায় সেদেশের রাজনীতিতে একতা ও সম্পৃতি গুরুত্ব পায়। এবং লোপ পায় সংঘাত। হ্রাস পায় দল-উপদলের সংখ্যা। অন্য ভাষা, অন্য এলাকা ও অন্য নগরের মানুষকে রাজনৈতিক কর্মীরা তখন আপন করতে শেখে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা সে পথে চলতে রাজী নয়। শুরু থেকে ঘৃণা ও বিচ্ছিন্নতাই তাদের রাজনীতির মূল পুঁজি। মশামাছি যেমন নর্দমার নোংরা পানিতে বেঁচে থাকে, তেমনি এরাও বাঁচে ঘৃণার স্তুপে শিকড় ঢুকিয়ে। ফলে একতা, সৌহার্দ ও সম্পৃতির চর্চা তাদের হাতে বাড়বেই বা কেমন করে? পাকিস্তান আমলে অবাঙ্গালীদের ঘৃণা করাই ছিল তাদের রাজনীতির মূল পুঁজি, যোগ্যতা নয়। তাদের যোগ্যতা তো আজও ইতিহাস। মানুষ সেটি মুজিব আমলে যেমন স্বচোক্ষে দেখেছে তেমনি আজও দেখছে। তাদের এখনকার ঘৃণা দেশের ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে। তাছাড়া সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিজয় প্রচন্ডভাবে তাদেরকে দাম্ভিকও করেছে। এতে তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। পেট্রোল ছিটানোর ন্যায় তারা শুধু ঘৃণাই ছড়িয়ে যাচ্ছে। লগিবৈঠা নিয়ে রাজপথে মুসল্লি হত্যা, যাত্রীভরা বাসে পেট্রোল বোমা মারা বা ইসলামপন্থিদের নির্মূলের হুমকি দেওয়া-সে ঘৃণার রাজনীতিরই ফসল। কিন্তু ভূলে যাচ্ছে, ঘৃণার যে বীজগুলি তারা অবিরাম ছিটাচ্ছে একসময় তা ফলবান বিশাল বৃক্ষে পরিণত হবে। এবং সে বিষবৃক্ষে শান্তি নয়, একমাত্র ঘৃণার বোমাই ফলবে। আর ঘৃণার সে বোমাগুলি একবার ফাটা শুরু করলে তাদের রাজনীতিই শুধু অসম্ভব হবে না, হাত পড়বে তাদের অস্তিত্বেও। সংঘাতটি আরো রক্তাত্ব হওয়ার নিশ্চিত কারণ হলো, এক পক্ষের কাছে সেটি পবিত্র জিহাদে পরিণত হবে। দেশ তখন আরেক ইরাক, আরেক আফগানিস্তান বা আলজেরিয়ায় পরিণত হবে। আওয়ামী লীগ কি জেনেবুঝে দেশকে সে দিকেই ধাবিত করছে?
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018