ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ এবং মালা ও মালাউন চক্রের ষড়যন্ত্র (১ম পর্ব)
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on December 30, 2023
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, সমাজ ও রাজনীতি
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
কারা মালা এবং কারা মালাউন?
প্রতিটি রাষ্ট্র বা সমাজ মোটা দাগে তিন শ্রেণীর লোক নিয়ে গঠিত। এক). শাসক শ্রেণী। পবিত্র কুর’আনে এদেরকে মুস্তাকবেরীন বলা হয়েছে। মুস্তাকবেরীন বলতে বুঝায় অহংকারী, গর্বিত এবং শক্তিধর শ্রেণী। দু্ই). প্রজা বা শাসিতের শ্রেণী। পবিত্র কুর’আনে এদেরকে মুস্তাজ’আফিন তথা দুর্বল বলা হয়েছে। তিন). স্বার্থন্বেষী স্তাবক শক্তি। এদের অবস্থান শাসক শ্রেণীর আশে পাশে। পবিত্র কুর’আনে এদেরকে “মালা” বলা হয়েছে এবং মহান আল্লাহতায়ালা তাদের দুর্বৃত্তির কাহিনী বার বার উল্লেখ করেছেন। এরা সত্য দ্বীন ও সুবিচারের দুশমন। যারা মিথ্যা ও দুর্বৃত্তির নির্মূল চায় এবং প্রতিষ্ঠা চায় সত্য ও সুবিচারের -তাদের জন্য এ দুর্বৃত্তদের চেনা জরুরি। কারণ, তাদের বিরামহীন জিহাদটি তো এদের বিরুদ্ধেই। অতীতে যখনই কোন সমাজে নবী-রাসূলের আগমণ ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে শাসকশ্রেণী ও মালা শ্রেণী একত্রে বিরোধীতায় নেমেছে। অপর দিকে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং নবী-রাসূলদের সাথী হয়েছে -সাধারণতঃ তারা ছিল দুর্বল তথা মুস্তাজ’আফিন শ্রেণীর মানুষ।
প্রশিদ্ধ আরবী-ইংরাজী অভিধান “কামুসে ইলিয়াস আল-আছরী” অনুসারে মালা’ শব্দের অর্থ সামন্ত প্রধান, গোত্রীয় প্রধান ও অভিজাত। আধুনিক যুগে এদেরকে রাষ্ট্রের deep state বা vested interest groups বলা হয়ে থাকে। এমন একটি চক্র যে শুধু হযরত মূসা (আ:)’র সময় ফিরাউনকে ঘিরে ছিল -তা নয়; প্রতি যুগে প্রতিটি স্বৈরাচারী শাসককে ঘিরেই এমন এক অপশক্তিকে দেখা যায। আজকের মুসলিম বিশ্বেও এ দুর্বৃত্ত চক্রের প্রভাব অতি প্রবল। এদের যুদ্ধ শুধু ইসলামের বিরুদ্ধে নয়, বরং গণতন্ত্র ও মানবের মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধেও। এ দুর্বৃত্ত চক্রই মিশরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডক্টর মহম্মদ মুরসী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারকে অপসারিত করে। এরা যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পদের উপর ডাকাতি করে, তেমনি ডাকাতি করে জনগণের অধিকারের উপর। বাংলাদেশে এরাই ভোট ডাকাতী করে।
বাংলা ভাষায় “মালাউন” বলে যে শব্দটি প্রচলিত আছে -সেটি পবিত্র কুর’আনে ব্যবহৃত “মালা” শব্দ থেকে ভিন্ন। মালাউন শব্দটির উৎপত্তি “লানত” থেকে। মালাউন শব্দের অর্থ অভিশপ্ত বা লানতপ্রাপ্ত। বাংলাদেশের মালাউন বলতে সাধারণতঃ হিন্দুদের বুঝানো হয়। মালাউন শব্দটির এটি সঠিক প্রয়োগ নয়। পবিত্র কুর’আনে মানব জাতিক দুই দলে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি দল হলো হিদায়েত-প্রাপ্ত তথা সিরাতাল মুস্তাকীম-প্রাপ্তদের। সিরাতাল মুস্তাকীম বলতে বুঝায় পবিত্র কুর’আনের দেখানো পথ। এপথের অনুসারীরাই হলো রহমতপ্রাপ্তদের দল। একমাত্র এ পথের পথিকরাই জান্নাত পাবে। এ দলের বাইরে যারা -তারা সবাই পথভ্রষ্ট তথা লানতপ্রাপ্ত। ইসলাম ভিন্ন অন্য সকল ধর্ম ও সকল মতবাদের অনুসারীরাও এ দলের মধ্যে এসে যায়। ফলে এদের মধ্যে যেমন হিন্দু আছে, তেমনি অহিন্দুও আছে। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে একমাত্র স্বীকৃত ধর্ম হলো ইসলাম। পবিত্র কুর’আনে সে ঘোষণাটি এসেছে এভাবে: “ইন্নাদ্বীনা ইন্দাল্লাহিল ইসলাম”। অর্থ: “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকটে একমাত্র স্বীকৃত দ্বীন বা ধর্ম হলো ইসলাম”।
হিদায়েত পাওয়াটিই হলো মানব জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। যারা হিদায়েত পায়, একমাত্র তারাই জান্নাতের যোগ্য বিবেচিত হয়। এজন্যই সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া হলো: “ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম” -যা প্রতিটি নামাজী প্রতি রাকাতে পাঠ করে। তাই হিদায়েত পাওয়ার অর্থ, মহান আল্লাহতায়ালার সবচেয়ে বড় রহমতটি পাওয়া। এরাই হলো মুসলিম, মু’মিন, মুত্তাকী তথা জান্নাতীদের দল। অপর পক্ষটি হলো, পথভ্রষ্টদের তথা জাহান্নামীদের। সকল প্রকারের অমুসলিম, বেঈমান, কাফির ও মুনাফিক হলো এ দলের সদস্য। তাই শুধু হিন্দুদের মালাউন বলা ঠিক নয় -তাতে সমাজের অন্য মালাউনরা বাদ পড়ে যায়। মানব জাতির মধ্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রকারের মালাউনের জন্ম কোন অমুসলিমের ঘরে নয়, বরং তাদের জন্ম মুসলিমের ঘরে। এরাই হলো মুনাফিক। এরা নিজেদের মুসলিম রূপে পরিচয় দেয়, অথচ এরাই হলো ইসলামের ঘোরতর শত্রু। প্রতিটি মুসলিম দেশে এরাই ইসলামের প্রতিষ্ঠাকে অসম্ভব করে রেখেছে। তাদের যুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে। শাপলা চত্বরের গণহত্যা, ইসলামপন্থী নেতাদের ফাঁসিতে চড়ানো, আলেমদের কারাবন্দী করা, কুর’আনের তাফসিরকে নিয়ন্ত্রিত করা এবং জিহাদ বিষয়ক বই বাজেয়াপ্ত করা -এসবই তো ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রমাণ। বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র থেকে যে ব্যক্তি “আল্লাহর উপর আস্থা”র ঘোষণাটি অপসারণ করলো -সে কি অমুসলিম ছিল? সে তো শেখ হাসিনা। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের মনোগ্রাম যে ব্যক্তি “রাব্বি জিদনি ইলমান” বিলুপ্ত করলো -সে কি হিন্দু ছিল? সে তো শেখ মুজিব।
সিরাতাল মুস্তাকীমে চলাকে এরা মৌলবাদ ও সন্ত্রাস বলে। এদের যুদ্ধ নবীজী (সা:)’র ইসলামের বিরুদ্ধে। নবীজী (সা:)’র ইসলাম বলতে বুঝায় এমন এক ইসলাম যাতে রয়েছে ইসলামী রাষ্ট্র এবং মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্বের প্রতিষ্ঠা। যাতে আছে শরিয়তের প্রয়োগ, দুর্বৃত্তির নির্মূল এবং সুবিচার। সে সাথে আছে ভাষা, বর্ণ ও আঞ্চলিকতার উর্দ্ধে উঠে প্যান-ইসলামিক মুসলিম ভাতৃত্বের চেতনা নিয়ে বাঁচার তাড়না। যারা এগুলি নিয়ে বাঁচে একমাত্র তারাই পায় মহান আল্লাহতায়ালার রহমত। সিরাতাল মুস্তাকীম থেকে বিচ্যুৎ হওয়ার অর্থই হলো, মহান আল্লাহতায়ালার রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং জাহান্নামের পথে চলা। এবং যারা তাঁর রহমত পায়না, বরং পায় তাঁর অভিসম্পাত -তারাই হলো লানতপ্রাপ্ত তথা মালাউন। কিন্তু যেসব ব্যক্তি নামে-মাত্র মুসলিম এবং দূরে সরেছে ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে এবং বাঁচে সেক্যুলারিস্ট, ন্যাশনালিস্ট, কম্যুনিস্ট ও নাস্তিকের পরিচয় নিয়ে -তারা যে নবীজী (সা:)’র ইসলামের উপর নাই, সেটি তো সুস্পষ্ট। এরাই হলো মুসলিম নামধারী মালাউন। মুসলিম দেশগুলি তো এই মালাউনদের হাতেই অধিকৃত।
যারা রাষ্ট্রকে পাল্টাতে চায় এবং নির্মাণ করতে চায় ইসলামী রাষ্ট্রের -তাদেরকে অবশ্যই সে রাষ্ট্রে বসবাসকারী নানা ধর্ম, নানা বিশ্বাস ও নানা চরিত্রের মানুষকে চিনতে হয়। চিনতে হয় ঘরের শত্রুদের। রোগীকে না জেনে চিকিৎসা দেয়া যায় না। তেমনি সমাজের নানা প্রকারের মানুষকে না চিনে কাঙ্খিত রাষ্ট্র নির্মাণের কাজটি হয়না। সমাজ বিজ্ঞানের এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা কম্যুনিজমের প্রতিষ্ঠা চায়, তাদের জানতে হয়, কারা প্রলেতারিয়েত, কারা পুঁজিপতি, কারা বুর্জোয়া এবং কারা শ্রেণীশত্রু। সেসব জেনেই রাজনৈতিক লড়াইয়ের কৌশল ঠিক করতে হয়। তেমনি ইসলামের শত্রু ও মিত্রদের সঠিক ভাবে চিনে রণনীতি প্রণয়ন করতে হয় ঈমানদারদের। সেসব বিচিত্র বিশ্বাস ও বিচিত্র এজেন্ডার মানুষদের সবচেয়ে নিখুঁত পরিচয়টি তুলে ধরেছেন সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর নিজের কিতাবে। তাদের চরিত্র তুলে ধরতে পবিত্র কুর’আনের ছত্রে ছত্রে তিনি পেশ করেছেন তাঁর নিজের ন্যারাটিভ তথা বয়ান। সে বয়ানে যেমন মু’মিন, মুত্তাকী, কাফির, মুনাফিক ও ফাসেকের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি তুলে ধরা হয়েছে মালা’দের পরিচিতিও। আছে মুস্তাকবেরীন ও মুস্তাজ’আফিনের বর্ণনা। এসবই হলো নৃতত্ত্ব ও সমাজ বিজ্ঞানের কথা। তাই যারা ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ চায়, তাদেরকে শুধু মু’মিন, মুত্তাকী, কাফির, ফাসিক ও মুনাফিকের পরিচয় জানলে চলে না, জানতে হয় মালা ও মালাউনের পরিচিতিও।
পবিত্র কুর’আনে মালা প্রসঙ্গ
“মালা” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে সুরা বাকারার ২৪৬ নম্বর আয়াতে, সুরা আরাফার ৬০, ৬৬, ৭৫, ৮৮, ৯০, ১০৯ ও ১২৭ নম্বর আয়াতে, সুরা হুদের ২৭ ও ৩৮ নম্বর আয়াতে, সুরা নামলের ২৯, ৩২ ও ৩৮ নম্বর আয়াতে, সুরা কাসাসের ২০ ও ৩৮ নম্বর আয়াতে, সুরা ইউসুফের ৪৩ নম্বর আয়াতে, সুরা মু’মিনুনের ৩৩ নম্বর আয়াতে, সুরা সাফ্ফাতের ৮ নম্বর আয়াতে এবং সুরা সাদ’য়ের ৬ নম্বর আয়াতে। সত্য, ন্যায় ও ইসলামের বিরুদ্ধে এসব মালাদের কিরূপ ভূমিকা ছিল, উপরিউক্ত আয়াতগুলিতে তা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতি দেশে এবং প্রতি যুগে এ অপরাধী চক্র অভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে কাজ করে। এরা স্বার্থন্বেষী, নৃশংস ও দুর্বৃত্ত। তাদের থাকে প্রচন্ড রাজনৈতিক অভিলাষ, থাকে কায়েমি স্বার্থ সংরক্ষণের তাড়না। কিন্তু সে অভিলাষ পূরণে তাদের থাকে না নিজ শক্তি ও সমর্থ্য। ফলে প্রতি যুগেই এরা নমরুদ-ফিরাউন খোঁজে এবং তাদের ঘড়ে ভর করে। যেখানেই স্বৈরাচারী জালেম শাসক আছে, সেখানেই সে শাসককে ঘিরে থাকে বিশাল মালা ও মালাউনদের চক্র। এরা জালেম শাসকের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, বিচারক, প্রশাসক, পুলিশ প্রধান, সামরিক বাহিনীর প্রধান হয়। হযরত মূসা (আ:)’র যুগে এরাই ফিরাউনের দরবারে ভিড় করেছিল এবং ফিরাউনকে ভগবান রূপে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল। শেখ মুজিবের ন্যায় গণতন্ত্রের খুনি এক ফাসিস্টকে নেতা, পিতা ও বন্ধুর আসনে বসিয়েছে। স্বৈরাচারী এরশাদকে দিয়েছে পল্লীবন্ধুর খেতাব। নিজেদের স্বার্থ বাঁচাতে তাদের এজেন্ডা হয় জালেম শাসককে বাঁচানো। জালেমের পক্ষে তারা যুদ্ধও করে। এরা হযরত মূসা (আ:)ও তাঁর অনুসারীদের হত্যাযোগ্য দুর্বৃত্ত রূপে চিত্রিত করেছিল। হযরত মূসা (আ:) ও তাঁর অনুসারীদের নির্মূলে তারা ফিরাউনের বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছে। এরূপ মালাদের দেখা গেছে ইহুদীদের মাঝেও। এরাই হযরত ঈসা (আ:)কে শূলে চড়িয়ে হত্যা করার জন্য জেরুজালেমের রোমান গভর্নরের কাছে সুপারিশ করেছিল।
মালা’দের দুর্বৃত্তির নমুনা হলো, তারা দুর্বৃত্ত শাসককে সত্য বর্জনে উৎসাহ জুগায়। এবং সাক্ষী দেয় মিথ্যাচারের পক্ষে। ফিরাউনের রাজ দরবারের হযরত মুসা (আ:) তাঁর ভাই হযরত হারুন (আ:) হাজির হয়েছিলেন ইসলামের দাওয়াত নিয়ে। জবাবে ফিরাউন হযরত মুসা (আ:)কে তাঁর দাবীর স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করতে বলেছিল। হযরত মুসা (আ:)’র কাছে তাঁর নবুয়তের প্রমাণ ছিল দুটি মোজেজা। এক). তাঁর হাতের লাঠিটি মাটিতে ফেলা মাত্রই সাপ হয়ে নড়াচড়া শুরু করে। দুই). তাঁর হাত বগল থেকে বের করা মাত্রই ধপ ধপে সাদা হয়ে যায়। কিন্তু ফিরাউনের সামনে দরবারী মালাগণ সাক্ষী দেয়, হযরত মুসা (আ:)’র মোজেজাগুলি বড় রকমের যাদু মাত্র। সে বর্ণনা এসেছে সুরা আরাফের ১০৯ নম্বর আয়াতে। বলা হয়েছে,
قَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِ فِرْعَوْنَ إِنَّ هَـٰذَا لَسَـٰحِرٌ عَلِيمٌۭ
অর্থ: “ফিরাউনের কওমের মালা’রা বললো, নিশ্চয়ই এটি বিশাল যাদু।” অথচ তারা জানতো মুসা (আ:) কোন যাদুকর নন। কারণ মুসা (আ:) তো বেড়ে উঠেছিলেন তাদের মাঝেই। তাঁর সাথে প্রতিযোগিতার জন্য মিশরের যেসব শ্রেষ্ঠ যাদুকরদের ডেকে আনা হয়েছিল, তারাও সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, মুসা (আ:) আদৌ কোন যাদুকর নন। তাঁরা বিশ্বাস করেছিলেন যে, তিনি যথার্থই একজন রাসূল। সে বিশ্বাস নিয়ে তারা ঈমানও এনেছিলেন। এরূপ মালা’দের বর্ণনা এসেছে সুরা আরাফের ১২৭ নম্বর আয়াতে। উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে,
وَقَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِ فِرْعَوْنَ أَتَذَرُ مُوسَىٰ وَقَوْمَهُۥ لِيُفْسِدُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ وَيَذَرَكَ وَءَالِهَتَكَ ۚ قَالَ سَنُقَتِّلُ أَبْنَآءَهُمْ وَنَسْتَحْىِۦ نِسَآءَهُمْ وَإِنَّا فَوْقَهُمْ قَـٰهِرُونَ
অর্থ: “এবং ফিরাউনের কওমের মালা’রা ফিরাউনকে বললো, আপনি কি মূসা ও তার সাথীদের জমিনের উপর বিপর্যয় সৃষ্টি করতে এবং আপনাকে এবং আপনার দেবতাদের বর্জন করতে দিবেন? ফিরাউন বললো, আমরা তাদের পুত্র সন্তানদের হত্যা কররো এবং বাঁচিয়ে রাখবো তাদের মহিলাদের। এবং আমরা তো তাদের উপর প্রবল।” ফিরাউন নিজে স্বৈরাচারী দুর্বৃত্ত ছিল। কিন্তু মালাগণ চাইতো, সে দুর্বৃত্তি থেকে ফিরাউন যেন পিছু না হটে। তারা বরং মুসা (আ:)’য়ের ন্যায় শান্তিবাদী রাসূলের বিরুদ্ধে বিপর্যয় সৃষ্টির অভিযোগ আনে। প্রতি দেশে এবং প্রতি যুগে দুর্বৃত্ত শক্তির স্ট্রাটেজী একই রূপ। অতিশয় জালেমও নিজেকে শান্তিবাদী রূপে জাহির করে এবং যারা প্রকৃত শান্তিবাদী তাদের চরিত্র হনন করে। বিচারের নামে নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করে।
মালাগণ যে ফিরাউনের অতি কাছের লোক ছিল এবং তাদের কাজ ছিল ফিরাউনকে সুরক্ষা দেয়া এবং সে লক্ষ্যে তাদের দায়িত্ব ছিল তার শত্রুদের হত্যা করা -সেটি বুঝা যায় নিম্নের আয়াত থেকে। বলা হয়েছে:
وَجَآءَ رَجُلٌۭ مِّنْ أَقْصَا ٱلْمَدِينَةِ يَسْعَىٰ قَالَ يَـٰمُوسَىٰٓ إِنَّ ٱلْمَلَأَ يَأْتَمِرُونَ بِكَ لِيَقْتُلُوكَ فَٱخْرُجْ إِنِّى لَكَ مِنَ ٱلنَّـٰصِحِينَ ٢٠
অর্থ: “নগরীর দূর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি ছুটে আসলো এবং সে বললো, “হে মূসা! মালাগণ তোমাকে হত্যা করার জন্য পরামর্শ করছে, অতএব তুমি বের হয়ে যাও, আমি তোমার জন্য নসিহত দিচ্ছি মাত্র।” –(সুরা কাসাস, আয়াত ২০)। এ আয়াত থেকে বুঝা যায় হয়রত মূসা (আ:)’য়ের হত্যা জন্য পরামর্শ হয়েছিল এবং তাতে অংশ নিয়েছিল মালাগণ।
মালাদের দায়িত্ব ও কাজকর্মের পরিচয় মেলে নিম্নের আয়াত থেকে। বলা হয়েছে:
وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَأُ مَا عَلِمْتُ لَكُم مِّنْ إِلَـٰهٍ غَيْرِى فَأَوْقِدْ لِى يَـٰهَـٰمَـٰنُ عَلَى ٱلطِّينِ فَٱجْعَل لِّى صَرْحًۭا لَّعَلِّىٓ أَطَّلِعُ إِلَىٰٓ إِلَـٰهِ مُوسَىٰ وَإِنِّى لَأَظُنُّهُۥ مِنَ ٱلْكَـٰذِبِينَ ٣٨
অর্থ: “এবং ফিরাউন বললো, হে মালাগণ, আমি ব্যতীত তোমাদের জন্য অন্য কোন ইলাহ আছে -তা আমার জানা নাই। হে হামান, তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও এবং একটি সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ করো, হয়তো তাতে উঠে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পারি। তবে আমি অবশ্যই মনে করি সে মিথ্যাবাদী। -(সুরা কাসাস, আয়াত ৩৮)। এ আয়াত থেকে বুঝা যায়, ফিরাউন নিজেকে খোদা মনে করতো। এবং বুঝা যায়, মালারা ছিল ফিরাউনের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য। তাদের মধ্য একজন ছিল হামান। এদের কাজ ছিল ফিরাউনের ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করা। উপরিউক্ত আয়াতে হামানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে একটি সুউচ্চ ভবন নির্মাণের। ফিরাউন সে ভবনে উঠে মূসা (আ:)’র আল্লাহকে দেখতে চায়।
মালা ও মালাউনদের ষড়যন্ত্র ও নাশকতা
প্রতিদেশেই রোগ-জীবাণুর ন্যায় স্বার্থান্বেষী দুর্বৃত্ত চক্রও থাকে। এরা মানবজীবাণু। এরা রাষ্ট্র ও সমাজের দেহে রোগের জন্ম দেয়। প্রতিটি মুহুর্তে এ মানবজীবাণুগণ সুযোগের সন্ধানে থাকে। জালেম শাসকের শাাসনে তাদের কদর যেমন বাড়ে, তেমনি বাড়ে স্বার্থ হাছিলের সুযোগও। তখন বাড়ে চুরি-ডাকাতি ও লুণ্ঠনের কাজে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে ব্যবহার করার সুযোগ। সে সুযোগ লাভে তারা নৃশংস জালেম শাসকদের কলাবোরেটর হতেও রাজী। এদের কারণেই ফিরাউন, নমরুদ ও এজিদের ন্যায় জালেম শাসকদের লোকবলের অভাব হয়না। অভাব হয়নি শেখ মুজিব, জেনারেল এরশাদ ও শেখ হাসিনার ন্যায় স্বৈরাচারী শাসকদেরও। নইলে কি কোন জালেম শাসকের একার পক্ষে সম্ভব লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘরে হামলা করা, হত্যা করা, ধর্ষণ করা এবং তাদের ঘর-বাড়ী ধ্বংস করা? শেখ হাসিনার ন্যায় দুর্দান্ত ভোটডাকাতের পক্ষেও কি সম্ভব ছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে সকল দেশবাসীর ভোট এক রাতে ডাকাতি করে নেয়া? এরূপ প্রতিটি অপরাধী শাসকের অপরাধের পিছনে থাকে স্বার্থান্বেষী বিশাল অপরাধী চক্র। যে দেশেই রয়েছে দুর্বৃত্ত জালেম শাসক -সে দেশেই তাদের সহায়তা দেয়ার জন্য থাকে এই স্বার্থান্বেষী মালা ও মালাউন চক্র। এমন দেশ দুর্বৃত্তি রাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত হয়। ফলে দুর্বৃত্তিতে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে। এদের কারণেই বাংলাদেশ দুর্বৃত্তিতে বিশ্বে ৫ বার প্রথম হয়েছে।
বাংলাদেশে আজ চলছে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস দুঃশাসন। চলছে গুম, খুন, অপহরণ ও সন্ত্রাসের প্লাবন। হাসিনার ন্যায় এ নব্য ফিরাউনের দরবার পূর্ণ হয়ে আছে অতি দুর্বৃত্ত ও অতি নৃশংস স্বার্থান্বেষী মালাদের দিয়ে। এদের অবস্থান মন্ত্রী পরিষদ, পুলিশ বাহিনী, সেনা বাহিনী, গুপ্তচর বাহিনী, বিচারক বাহিনী, রাজনৈতিক দল, মিডিয়া ও বুদ্ধিবৃত্তিতে। জালেম শাসকের এরাই অতি অনুগত কলাবোরেটর। জনগণের শত্রু শুধু অপরাধী শাসকই নয়, বরং ভয়ানক শত্রু হলো এই স্বার্থান্বেষী মালা ও মালাউন চক্র। দুর্বৃত্ত শাসকগণ মারা যায়, কিন্তু এ স্বার্থান্বেষী চক্র বেঁচে থাকে পরবর্তী জালেম শাসকের চাকর-বাকর হওয়ার জন্য। তাই শুধু জালেম শাসককে চিনলে চলে না, চিনতে হয় এই স্বার্থান্বেষী মালা ও মালাউন চক্রকেও।
তবে স্বার্থান্বেষী এ দুর্বৃত্ত চক্রের মাঝে প্রকারভেদ আছে। তাদের কেউ রামপন্থী, কেউ বামপন্থী, কেউ জাতীয়তাবাদী, কেউ ফ্যাসিবাদী, কেউ পুঁজিবাদী। তবে তাদের সবার লক্ষ্য এক ও অভিন্ন; সেটি ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণের যে কোন উদ্যোগকে প্রতিহত করতে। একাত্তরে তাদের সবাইকে একত্রে দেখা গেছে আগ্রাসী হিন্দুত্ববাদীদের বিজয়ী করতে। তারা সবাই মিলে যুদ্ধ করেছে পাকিস্তান ভাঙ্গতে। এরাই মুজিবের ন্যায় গণতন্ত্রের খুনি, ভারতের দালাল ও একদলীয় বাকশালের জন্মদাতা এক ফ্যাসিস্ট দুর্বৃত্তকে নেতা, পিতা, বন্ধু ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি আখ্যায়ীত করে উপাস্যে পরিণত করেছে। তাদের কারণেই ধুম পড়েছে পথে ঘাটে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অঙ্গণে মুজিবের মুর্তি গড়ার। অথচ বাংলার প্রায় ৮ শত বছরের মুসলিম ইতিহাসে মুসলিমদের হাতে মুর্তি গড়ার কোন ইতিহাস নাই। একাজ ছিল মুর্তিপূজারী হিন্দুদের। মুর্তি মন্দিরে শোভা পেত, রাজপথে বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নয়। মুজিবভক্তদের ধারণা, ফিরাউনকে যদি ভগবান রূপে প্রতিষ্ঠা দেয়া যায়, তবে মুজিব কম কিসে? মুজিবের তো ফিরাউন হওয়ার সকল সামর্থ্যই আছে। এদের কারণেই যুগে যুগে মুর্তিপূজার পাশাপাশি মানব পূজার প্রচলন হয়েছে। এবং চক্রান্ত হয়েছে মহান আল্লাহতায়ালার দ্বীনের নির্মূলে। ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণের কথা শুনলে হিস্টেরিয়ার রোগীর মত এরা কান্ডজ্ঞান-শূণ্য হয়। এরূপ সুযোগ-সন্ধানীদের উস্কানি ও সহযোগিতাতে হাসিনা নেমেছে ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের নির্মূলের যুদ্ধে। একাজে হাসিনার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসকগোষ্ঠি।
ইসলাম প্রতিরোধের নতুন কৌশল
মুসলিম নামধারী ইসলামের শত্রুগণ ভারতীয় হিন্দুদের ন্যায় ইসলামের উপর প্রকাশ্যে হামলা করে না। ইসলামের থেকে মানুষকে দূরে সরানোর কাজে তাদের কৌশলটি ভিন্নতর। তারা হামলা করে শরিয়ত, খেলাফত, জিহাদ, হুদুদের ন্যায় ইসলামের বুনিয়াদী প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর। তারা মসজিদ-মাদ্রাসার নির্মাণ এবং তাবলিগ জামাতের কাজে বাধা দেয় না, বাধা দেয় ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণের কাজে। রাষ্ট্রের উপর ইসলামপন্থীদের অধিকার জমানোকে তারা শাসনতান্ত্রিক ভাবে নিষিদ্ধ করে। পরিবর্তন আনে শাসনতন্ত্রে। কাজে লাগায় একান্ত অনুগত আদালতকে। নিষিদ্ধ করে ইসলামপন্থীদের রাজনীতিকে। ইসলামের শরিয়তী বিধানগুলিকে তারা মধ্যযুগীয় বর্বরতা বলে। ষাটের দশকে তৎকালীন বামপন্থীগণ জামায়াতে ইসলামী ও ইখওয়ানুল মুসলিমুনের মতো বিভিন্ন ইসলামপন্থী দলগুলোকে চিত্রিত করতো মার্কিনী প্রজেক্ট রূপে। এখনো তাদের মুখে একই সুর। বিশ্বের কোথাও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হলে সেটিকেও তারা মার্কিন প্রজেক্ট বলে। এমন ইসলামী রাষ্ট্রের উপর মার্কিনীদের হাজার বার বিমান হামলাও তাদের ভূল ভাঙ্গে না।
ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত এ শত্রুদের মনে মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্বের ধারণা যেমন নেই, তেমনি ধারণা নেই ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে মু’মিনদের যে বিশুদ্ধ নিয়েত থাকতে পারে এবং সে নিয়তের সাথে নিজস্ব জানমালের বিনিয়োগ থাকতে পারে -তা নিয়ে। এটি হলো তাদের চেতনায় প্যাথোলজিকাল বিকলাঙ্গতা বা embedded incompetence। মু’মিনদের তাই শুধু হিংস্র জীবজন্তু ও প্রাচীন নমরুদ-ফিরাউনদের চিনলে চলে না, ইসলামের শত্রু এই মালা ও মালাউনদেরও চিনতে হয়। কারণ রাজনীতি, সংস্কৃতি ও বুদ্ধিবৃত্তির ময়দানে মু’মিনদের আমৃত্যু যুদ্ধটি তো এদের বিরুদ্ধে। প্রতিদেশে ও প্রতিযুগে ফিরাউনদের মাঠ-সৈনিক তো তারাই। তারা কখনোই জনগণের পক্ষ নেয় না। স্বৈারাচারী শাসকের স্বার্থের মাঝেই তারা নিজেদের স্বার্থ দেখে। তারা জানে, শাসকের আসনে বসার ক্ষমতা তাদের নাই। রাজার ভোগের আয়োজন থেকে ভাগ নিতে তারা রাজা বা স্বৈরাচারী শাসকের সেবকে পরিণত হয়। এরা জালেম শাসকদের উচ্ছিষ্টভোগী। স্বৈরাচারি স্বার্থের সাথে তারা নিজেদের স্বার্থকে একত্রিত করে দেখে। তারা ভাবে, স্বৈরাচারী শাসক বাঁচলেই তাদের স্বার্থ বাঁচে। এজন্যই স্বৈরাচার বাঁচাতে তারা নিজেদের সর্ব সামর্থের নিয়োগ করে। তাই বাংলাদেশে ভোটডাকাতি করতে শেখ হাসিনাকে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নামতে হয়নি। সে ডাকাতির কাজটি তাঁর পাশে থাকা মালা ও মালাউনগণ নিজেরাই সুচারু ভাবে করে দিয়েছেণ। এই মালা ও মালাউনদের যেমন স্বৈরাচারী শেখ মুজিবের পাশে দেখা গেছে, তেমনি জেনারেল এরশাদের পাশে এবং আজ শেখ হাসিনার পাশেও দেখা যাচ্ছে।
মালা ও মালাউন প্রতিপালন ও স্বৈরশাসন
স্বৈারাচার মানেই ফ্যাসিবাদ। স্বৈারাচার মানেই গণতন্ত্রের কবর। এবং স্বৈারাচার মানেই জনগণের মৌলিক অধিকারের উপর ডাকাতি। প্রতিটি স্বৈরাচারী শাসকই আবির্ভুত হয় নৃশংস জালেম রূপে। তাদের শাসনে জনগণ পরিণত হয় ক্ষমতাহীন, অধিকারহীন ও ইজ্জতহীন প্রজায়। প্রজাদের মত প্রকাশ ও মিটিং-মিছিলের অধিকার থাকে না। স্বৈরশাসন কোন দেশেই একাকী আসে না। সাথে আনে বিশাল এক পাল মালা ও মালাউন শ্রেণী। এই মোসাহেব স্তাবক শ্রেণী ছাড়া জালেমের স্বৈরশাসন কখনো বাঁচে না। স্বৈরশাসনে তাই গুরুত্ব পায় মালা ও মালাউন প্রতিপালন। ঔপনিবেশিক ব্রিটিশগণ বাংলার বুকে বিশাল এক পাল মালাউন শ্রেণী গড়ে তোলে। তারা ছিল হিন্দু জমিদার শ্রেণী। তাদের গড়ে তোলা হয়েছিল মসজিদ-মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দকৃত ওয়াকফের জমি ছিনিয়ে নিয়ে। এই মালাউন শ্রেণীর কলাবরেশনের কারণেই ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন ১৯০ বছর স্থায়ী হয়। তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বটি ছিল, নিজ নিজ এলাকায় স্বাধীনতাকামীদের নির্মূল করা। উল্লেখ্য যে, হাজী তিতুমীর ও তাঁর মুজাহিদ বাহিনীর নির্মুলে প্রথম যুদ্ধটি করেছে স্থানীয় জমিদার মালাউন। হাজী শরিয়তুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এই মালাউন শ্রেণী।
আজকের বাংলাদেশে মালা ও মালাউনদের সংখ্যাটি বিশাল। এদের কাজ, বাংলাদেশের বুকে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থকে প্রতিরক্ষা দেয়া। এ কাজটি এরা করে জাতীয়তাবাদী, সেক্যুলারিস্ট ও বামপন্থী রাজনৈতিক নেতাকর্মী রূপে। এদের আনন্দ বাড়ে ইসলামপন্থীদের ফাঁসিতে ঝুলালে এবং কারাবন্দী করে নির্যাতন করলে। তাদের দেখা যায় বুদ্ধিজীবী, মিডিয়াকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষাবিদ রূপেও। এরা যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রু, তেমনি গণতন্ত্রের শত্রু। অতীতে এরাই মুজিবের বাকশালী ফ্যাসিবাদ সমর্থন করেছে। আজ সমর্থন করছে শেখ হাসিনার ভোটডাকাতি ও নৃশংস ফ্যাসিবাদকে। এরা আগামী দিনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে কোন আগ্রাসনকে শুধু সমর্থনই করবে না, বরং ভারতীয় বাহিনীর পাশে কলাবরেটর রূপে কাজও করবে -যেমনটি করেছে একাত্তরে ।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018