একাত্তরের গণহত্যা (৬)
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on January 3, 2021
- Bangla Articles, অতিথি লেখক
- No Comments.
যে কাহিনী শুনতে নেই (০৪)
একটি সাধারণ গণহত্যা Kai kaus ০১. “… পাকবাহিনী পাবনায় তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে — ১১ এপ্রিল এই মর্মে এক খবর পাকশীতে পৌঁছতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব অবাঙালিদের বাঁচিয়ে রাখা আর নিরাপদ ভাবলেন না। তাই সমস্ত অবাঙালিকে পাকশীর অবাঙালিদের একমাত্র স্কুল, মুসলিম স্কুলে সমবেত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হ’ল। সকাল থেকেই প্রায় চার-পাঁচ শত অবাঙালি সমবেত হ’ল মুসলিম স্কুলে (বর্তমানে পাকশী রেলওয়ে কলেজ)। তাদেরকে আশ্বাস দেয়া হয়েছিলো এই বলে যে, বাইরের গ্রাম থেকে আসা বাঙালিরা যাতে তাদের জান-মালের ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য তাদেরকে মুসলিম স্কুলে রেখে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। সেই মিথ্যে আশ্বাসে বিশ্বাস করে এরা দলে দলে এসেছিলো বাঁচার নিশ্চয়তার আশায়। এই অবাঙালিদের অধিকাংশই ছিলো খেটে খাওয়া ছাপোষা মানুষ। অসহযোগ আন্দোলনের ফলে তাদের অনেকেই কাজ না পেয়ে দু’তিনদিন অভুক্ত অবস্থায় ছিলো। দুপুর নাগাদ সকল অবাঙালিকে তিনটি লাইনে দাঁড় করিয়ে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হ’ল। একজন ইপিআর-এর নির্দেশে অবশিষ্ট নারী ও শিশুকে একটি কক্ষে বন্দী করে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এর পরই শুরু হয় মুসলিম স্কুলে সমবেত হয়নি, অথচ রেলওয়ে কলোনিতে প্রাণভয়ে আত্মগোপন করে আছে এমন অবশিষ্ট অবাঙালিকে খুঁজে খুঁজে মারার পালা। অবশ্য এ ব্যাপারে প্রতিরোধ বাহিনী বা ইপিআর-রা অংশ নেয়নি। কিছুসংখ্যক সুযোগ সন্ধানী গুন্ডাপান্ডা লুটপাটের আশায় কলোনিতে এ হত্যাকান্ড চালায়। দুপুর একটার দিকে নঈম সাহেবের বাসায় এইসব দুর্বৃত্ত ঢুকে একে একে সবাইকে গুলি করে। তারা বেরিয়ে যাওয়ার পর ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, সবাই মারা গেছে শুধু একটি শিশু তার রক্তাপ্লুত মায়ের বুকে মাথা রেখে কাঁদছে। এ সময় এমন কিছু অবাঙালিকেও হত্যা করা হয়েছিলো যারা একাত্ম হয়ে গিয়েছিলো বাঙালিদের সাথে। এজাজ নামে একজন অবাঙালি যুবক, যার প্রায় সকল বন্ধুই ছিলো বাঙালি, যে সুন্দর বাংলা বলতে পারত, নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয়ও দিত, মুসলিম স্কুল থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এসেও শেষ পর্যন্ত সে বাঁচতে পারেনি। সে তার বন্ধুদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিলো। তাতেও কিছু হয়নি। তার সহপাঠী এক বন্ধুর বুলেটের আঘাতেই তাকে দিতে হয়েছিলো প্রাণ। বোরহান খাঁ, উর্দু কবি, উত্তরবঙ্গের প্রতিটি ‘মুশায়েরা’য় যিনি কবিতা পাঠ করতেন, সেই আত্মভোলা মানুষটিও সেদিন বাঁচতে পারেনি। মুজিব, যে পড়তো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, তাকে তার বন্ধুরাই জামে মসজিদের পাশে এনে হত্যা করে॥” — আবুল কালাম আজাদ / মুক্তিযুদ্ধের কিছু কথা : পাবনা জেলা ॥ [ জাতীয় সাহিত্য প্রকাশনী – জুলাই, ১৯৯১ । পৃ: ২৫ ] ০২. “… ১১ই এপ্রিল সকালেই পাকশীতে বসবাসরত সকল বিহারিকে পরিবার-পরিজনসহ পাকশীর একমাত্র উর্দু মিডিয়াম মুসলিম হাইস্কুলে সমবেত হওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়। তাদেরকে আশ্বাস দেয়া হয় যে, সকল বিহারির নিরাপত্তার জন্যই এটা করা হচ্ছে এবং এখানে জমায়েত হলে তাদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা হবে। এই আশ্বাসের পর প্রায় চার-পাঁচশ বিহারি নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ এসে অল্পক্ষণের মধ্যেই জমায়েত হয়েছিল মুসলিম স্কুল প্রাঙ্গণে। এরপর দুপুর নাগাদ নারী ও শিশুদের স্কুলের একটি বড় কক্ষে ঢোকানো হয় এবং অন্যদের তিন-চার লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে ঘরের ভেতরে বন্দি নারী-শিশুদেরও জানালা দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এদিকে এ সময়ে ঈশ্বরদীর দিক থেকে মর্টার ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গোলাগুলির শব্দ পাকশীর দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসতে শোনা যাচ্ছিল। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে নিহত বিহারিদের লাশ ট্রাকে করে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পদ্মা নদীতে ফেলার কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু দুই ট্রাক লাশ এভাবে ফেলার পর পরই মর্টার শেল ও গুলি ছুড়তে ছুড়তে এবং রাস্তার দু’পাশে বাড়িঘর ও দোকানপাটে আগুন লাগাতে লাগাতে পাকিস্তানি বাহিনী পাকশীর কাছাকাছি চলে আসে। সন্ধ্যার আগেই হানাদার বাহিনী পাকশীতে অবস্থান নেয়॥” — কামাল আহমেদ / ‘৭১ চেতনায় অম্লান ॥ [ র্যামন পাবলিশার্স – ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ । পৃ: ৯২-৯৪ ] ০৩. “… পাকসি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে কেন্দ্র। ১৯৭১ সালের মার্চে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহের আগে এখানে প্রায় এক হাজার অবাঙালি পরিবার বসবাস করতো। মার্চের শুরুতে আওয়ামী লীগ দৃশ্যত এ শহরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। পুলিশ, আধা-সামরিক ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস ও আনসার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এমন কোনো দিন ছিল না যেদিন মিছিল অথবা সমাবেশের মতো কর্মসূচিগুলোর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ শক্তি প্রদর্শন করেনি।সমাবেশগুলোতে অস্ত্রের সমাবেশ ঘটানো হতো। বেশকিছু অবাঙালি যুবক প্রহৃত হয় এবং অবাঙালিদের দোকানপাট লুট করা হয়। মার্চের শেষ সপ্তাহ এবং এপ্রিলের শুরুতে অবাঙালিদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের বিষবাষ্প তুঙ্গে পৌঁছে। রেলওয়ে কলোনিতে বসবাসকারী অবাঙালিরা সন্ত্রাসী হামলার টার্গেট হয়ে দাঁড়ায়। কলোনির বাসিন্দাদের অধিকাংশ ছিল রেলওয়ের কর্মচারী এবং তাদের পরিবার। ১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল এ আবাসিক কলোনিতে সর্বাত্বক হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। কলোনির প্রায় ২ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার ঠিক পূর্বক্ষণে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। একশো বারোতম সাক্ষীর বিবরণ: ৫২ বছরের আবু মোহাম্মদ ছিলেন রেলওয়ের একজন কর্মচারী৷ তিনি রেলওয়ে কলোনিতে বসবাস করতেন। হত্যাযজ্ঞে তার পরিবারের সাত জনকে হত্যা করা হয়। আবু মোহাম্মদকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয় ৷ ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি করাচিতে প্রত্যাবাসন করেন। আবু মোহাম্মদ তার পরিবারের হৃদয়বিদারক হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন : “… ১৯৭১ সালে মার্চের শেষ সপ্তাহে আওয়ামী লীগের উগ্রপন্থী ও বাঙালি বিদ্রোহীরা স্টেনগান ও রাইফেল উচিয়ে পাকসি রেলওয়ে স্টেশন এবং রেলওয়ে কর্মচারীদের আবাসিক কলোনি আক্রমণ করে। তারা রেলওয়ের সকল অবাঙালি কর্মচারীকে পাকসি রেলওয়ে প্রাঙ্গণে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। সে সময় আমি ছিলাম ডিউটিতে৷ আমার বাম পায়ে একটি বুলেট বিদ্ধ হলে আমি আহত হই। বুলেট বিদ্ধ হয়ে আমি মাটিতে পড়ে যাই এবং মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকি। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আমার ক্ষতস্থানে তীব্র ব্যথা করছিল। আক্রমণকারীরা বিকালে রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে আবাসিক কলোনি আক্রমণ করে৷ আমি মেশিনগানের একটানা গুলির আওয়াজ শুনি। … আমার কোয়ার্টার ছিল কিছুটা দূরে। পাশে ছিল একটি মসজিদ। আমি এ মসজিদে নামাজ পড়তাম। মধ্যরাতের পর আমি হামাগুড়ি দিয়ে মসজিদে যেতে সক্ষম হই। কোথাও আলোর কোনো চিহ্ন ছিল না। চুপি চুপি মসজিদে প্রবেশ করে অন্ধকারে মসজিদের মেঝেতে মহিলাদের মতো একদল মানুষ দেখতে পেলাম। তাদের অনেকেই ছিল প্রায় বিবস্ত্র। আমাকে বিদ্রোহীদের একজন মনে করে কে যেন বলে উঠলে, ‘এ নরক যন্ত্রণার চেয়ে আমাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলো।’ ফিসফিস করে আমি আমার পরিচয় দেয়ায় তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এবং কিভাবে বাঙালি বিদ্রোহীরা তাদের পুরুষদের হত্যা, তাদেরকে অপহরণ এবং ধর্ষণ করেছে আমার কাছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেয়। তাদের একজন বললো, “মসজিদে নিক্ষেপ করার আগে আমাদের জামা-কাপড় খুলে নেয়া হয় এবং আমাদেরকে একটি স্কুলে নগ্ন অবস্থায় হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অপহরণকারীরা আমাদের সম্ভ্রমহানি করে। গভীর রাতে আমাদেরকে মসজিদে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়। দু’জন মেয়ে পথে পালানোর দুঃসাহস দেখিয়েছিল। তাদের মৃতদেহ মসজিদ প্রাঙ্গণে পড়ে রয়েছে।’ এসব ধর্ষিতা মহিলা ছিল রেলওয়েতে আমার সহকর্মীদের কন্যা অথবা স্ত্রী।… পরদিন বিদ্রোহীরা পিছু হটে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট পাকসিতে প্রবেশ করে। তারা আমাদের উদ্ধার করে। হাসপাতালে আমার চিকিৎসা করা হয়। হত্যাযজ্ঞে আমার পরিবারের সকল সদস্য নিহত হয়। জীবিত মহিলা ও শিশুদের ঢাকায় একটি ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তর করা হয়।” একশো তেরোতম সাক্ষীর বিবরণ: শামসুজ্জোহা হলেন ১৯৭১ সালে ঈশ্বরদী হত্যাকান্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী। ঈশ্বরদী থেকে ৮ মাইল দূরে তিনি এ হত্যাকান্ড প্রত্যক্ষ করেন। হত্যাকান্ড সম্পর্কে তিনি তার সাক্ষ্যে বলেছেন: “… আমার চাচাতো ভাই জামাল মালিক পাকসিতে পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ের গার্ড হিসেবে চাকরি করতো। তার ১২ সদস্যের পরিবার বাস করতো রেলওয়ে কলোনির একটি কোয়ার্টারে। ১৯৭১ সালে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে জামাল ও তার পরিবারের সবাই নিহত হয়। কয়েকজন পুরুষকে হত্যা করা হয় কোয়ার্টারে গুলি করে। কয়েকজন বৃদ্ধ, যুবতী, মহিলা ও শিশুসহ বাদবাকিদের একটি স্কুল ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে, তাদেরকে সেখানে আশ্রয় দেয়া হবে এবং কোনো ক্ষতি করা হবে না। সেই ভয়াবহ দিনে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলের বিদ্রোহীরা স্কুল প্রাঙ্গণে মেশিনগানের গুলিতে তাদের ঝাঝরা করে দেয়। এ হত্যাকান্ডের এক ঘন্টা আগে আটক যুবতী মহিলাদের বন্দুকের মুখে অন্য একটি স্কুল ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিদ্রোহীরা তাদের শ্লীলতাহানি ঘটায়। পিছু হটার আগে বিদ্রোহীরা এসব ধর্ষিতা যুবতী মহিলার অনেককে একটি মসজিদে ঠেলে দেয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের মুক্ত করে।” একশো চৌদ্দতম সাক্ষীর বিবরণ: ১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল পাকসিতে অবাঙালি হত্যাযজ্ঞের সময় ১৫ বছরের মোহাম্মদ কাইয়ুমের পিতামাতা ও বড় বোনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কাইয়ুম সেই উপাখ্যানের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছে: “…আমরা রেলওয়ে কলোনিতে বসবাস করতাম। খুব ভোরে “জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে একদল লোক রেলওয়ে কলোনি আক্রমণ করে। তারা আমাদের বাড়ি লুট করে এবং বন্দুকের মুখে আমাদেরকে কলোনি থেকে একটু দূরে একটি পুরনো স্কুল ভবনে নিয়ে যায়। আটককৃতদের মধ্যে ছিল রেলওয়ে কলোনির শত শত পুরুষ, মহিলা ও শিশু। আটককারীরা আমাদেরকে ভুল আশ্বাস দিয়েছিল । তারা বলেছিল, আমাদের জীবন রক্ষা করা হবে। শেষ বিকালে বন্দুক, রামদা ও বর্শা উচিয়ে আমাদের আটককারীরা সকল বন্দি পুরুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করায়। দু’জন দু’জন করে বন্দি পুরুষদের কম্পাউন্ডের একটি কোণে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমাদের চোখের সামনে তাদেরকে প্রথমে রামদা দিয়ে কুপিয়ে পরে গুলি করে হত্যা করা হয়। বন্দুকধারীরা আমার পিতাকে হত্যা করার জন্য টানা হ্যাচড়া করে নিয়ে যাবার সময় আমার মা ও বড় বোন নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। সেই ভয়াবহ দৃশ্য এখনো আমার স্পষ্ট মনে পড়ে। দু’জন বন্দুকধারী আমার মা ও বড় বোনকে গুলি করে। রাইফেল দিয়ে গুলি করার আগে রামদা দিয়ে আমার পিতার বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়া হয়। আমার সঙ্গে দাঁড়ানো ছিল আমার ৮ বছরের ছোট বোন। ঠিক তখন কয়েকজন পুরুষ বন্দি খালি হাতে আটককারীদের ওপর হামলা চালালে ছুটোছুটি শুরু হয়। … আমার সামনে ছিল একটি পরিত্যক্ত বাড়ি। বাড়িটির অর্ধেক ছিল ভস্মীভূত। আমি আমার ক্রন্দনরত বোনকে আমার কাঁধে তুলে নেই এবং বাড়িটির দিকে দৌড়ে যাই। রুদ্ধশ্বাসে আমরা ধ্বংসযজ্ঞেপূর্ণ একটি রুমে অগ্নিদগ্ধ একটি তোষকের নিচে লুকাই। আমরা এ ভূতুড়ে বাড়িতে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান করি। ক্ষুধা ও পিপাসায় আমার ছোট বোন কান্নাকাটি শুরু করলে আমরা চুপিচুপি নিকটবর্তী একটি মাঠে যাই। সেখানে আমরা পানি পান করি। রাতে আমরা মাঠের শেষ প্রান্তে একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেই। আমরা বন্য ফলমূল খেতাম। পাতার বিছানায় ঘুমাতাম। পরদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাদের উদ্ধার করে। তারা আমাদেরকে ঈশ্বরদী নিয়ে যায়। সেখানে অন্যান্য এতিম শিশুর সঙ্গে আমরা একটি বাড়িতে বাস করতাম। আমি দিনমজুর হিসেবে কাজ করতাম। তাতে আমাদের দু’ভাই বোনের বেশ চলতো। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় বাহিনীর কাছে ঈশ্বরদীর পতন ঘটলে আমরা নতুন করে দুর্ভোগে পড়ি। ১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে আমরা করাচিতে প্রত্যাবাসন করি॥” — ব্লাড এন্ড টীয়ার্স / কুতুবউদ্দিন আজিজ (মূল: Blood and Tears । অনু: সুশান্ত সাহা) ॥ [ ইউপিপি – ফেব্রুয়ারি, ২০১২ । পৃ: ১৩৫-১৩৭ ] |
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018