জিম্মি বাংলাদেশ এবং অসভ্যতার নির্মূল প্রসঙ্গ
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on March 1, 2019
- Bangla Articles, বাংলাদেশ
- No Comments.
তাণ্ডব অসভ্যতার
নিরস্ত্র মানুষের উপর পুলিশের ও সরকারি দলের গুণ্ডাদের হামলাকে সভ্যতা বলা যায় না। সভ্যতা বলা যায় না, খুন, গুম, ধর্ষণ ও রিমান্ডের নামে অত্যাচারকে। সভ্যতা বলা যায় না, বছরে ৮ হাজার মানুষকে রাস্তায় গাড়ির নীচে পিষ্ট করে হত্যাকে। অথচ সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে এখন এরূপ অসভ্যতারই তাণ্ডব।দেশের জনগণ দুই শ্রেণীর ভয়ানক অপরাধীদের হাতে জিম্মি। একটি হলো রাজপথে লাইসেন্সহীন ড্রাইভার। অপরটি হলো রাষ্ট্রের উপর লাইসেন্সহীন সরকার। উভয়ে মিলে মানুষের জীবন থেকে শান্তি ও নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে। লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের কারণে রাস্তার যানবাহন পরিণত হয়েছে মানুষ খুনের হাতিয়ারে। অপরদিকে লাইসেন্সহীন সরকারের কারণে সরকার পরিণত হয়েছে খুন, গুম ও নৃশংস নির্যাতনের হাতিয়ারে। এ অসভ্যদের তাণ্ডবে শান্তিপূর্ণ ভাবে বাঁচার রাস্তা বাংলাদেশে অতি সংকীর্ণই শুধু নয়, বহুলাংশে অসম্ভব হয়ে গেছে।
লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের ধরতে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীগণ যা করছে সেটি অবিশ্বাস্য। মনে হচ্ছে দেশের রক্ষাকর্তা শুধু ছাত্ররাই। তারা রাস্তায় নেমেছে শুধু লাইসেন্সহীন ড্রাইভার ধরতে নয়, রাস্তায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে। বাংলাদেশের প্রবীন পুলিশদেরও তাদের থেকে শেখার আছে। বয়স্করা যেখানে নীরবতা, ভীরুতা ও কাপুরুষতার ইতিহাস গড়েছে, সেখানে ছাত্র-ছাত্রীগণ ইতিহাস গড়ছে প্রচণ্ড সাহসীকতার। এবং সে সাথে দায়িত্বশীলতার। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা। অলিম্পিকে সোনা পাওয়ার চেয়েও এটি হাজার গুণ গৌরবজনক। এটিই তো ঈমানের লক্ষণ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এরূপ রাস্তায় নামাটি ইসলামে জিহাদ। এ কাজে প্রাণ গেলে মর্যাদা শহীদের।
অথচ বাংলাদেশের জনগণের ব্যর্থতাটি বিশাল। তাদের উপর ৫ বছর আগে থেকেই ফরজ ছিল লাইসেন্সহীন শাসকদের ধরা। লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের যে অপরাধ, তার চেয়ে হাজার গুণ অধীক হলো লাইসেন্সহীন সরকারের অপরাধ। সরকারের হাতে মানুষ খুনের ক্ষেত্রটি শুধু সড়ক নয়, রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গণ। বাংলাদেশের জনগণের অপরাধটি হলো, অপরাধীদের শাস্তি না দিয়ে বরং রাজস্ব দিয়ে প্রতিপালন করছে। অথচ লাইসেন্সহীন সরকারকে নির্মূল করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে দেশের রাস্তাঘাট থেকেও লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের নির্মূল করা যেত।
সভ্যদেশে দেশ শাসনের লাইসেন্স নিতে হয় জনগণ থেকে। জনগণ সে লাইসেন্স দেয় ভোট দিয়ে। কিন্তু স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার জনগণ থেকে সে লাইসেন্স না নিয়েই ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন। দেশের ৫ ভাগ মানুষও তাঁকে ভোট নেয়নি। ১৫৩ সিটে কোন ভোটই পড়েনি। অপরাধীদের অপরাধ কর্মে লজ্জাশরম থাকে না। তাই সে লজ্জাশরম যেমন লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের নাই, তেমনি নাই লাইসেন্সহীন শেখ হাসিনারও। সংসদের ৩০০ সিটের মাঝে ১৫৩ সিটে নির্বাচন না করে কেউ ক্ষমতায় গিছে, এমন নজির কি সমগ্র মানব ইতিহাসে আর কোন দেশে ঘটেছে? সে অবিশ্বাস্য কাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে একমাত্র বাংলাদেশে? এবং সেটি লজ্জাশরমহীন শেখ হাসিনার হাতে।
বিচারের উর্দ্ধে অপরাধীরা
অথচ সভ্যদেশের রীতিটা ভিন্ন। সভ্য দেশের জনগণ যেমন লাইসেন্সহীন ড্রাইভারকে কখনোই রাস্তায় গাড়ি চালাতে দেয় না, তেমনি গদিতে বসতে দেয়না লাইসেন্সহীন সরকারকে। দুটিই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ বাংলাদেশে এ নৃশংস অপরাধীদের ধরা ও শাস্তি দেয়ার কাজটি হয়নি। বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে দখল জমিয়েছে যেমন লাইসেন্সহীন ড্রাইভার, তেমনি সরকারের উপর দখল জমিয়েছে লাইসেন্সহীন সরকার। লাইসেন্সহীন ড্রাইভারগণ রাস্তায় মানুষ খুন করলেও সচরাচর তাদের বিচার হয় না। তারা যেন বিচারের উর্দ্ধে। বিচারে দৈবাৎ কোন খুনি ড্রাইভারের শাস্তি হলে সকল ড্রাইভার একত্রে লাগতর ধর্মঘটে নামে এবং সরকারকে বাধ্য করে শাস্তি মাফ করে দিতে। সরকার থেকে সে সুবিধাটি নিতে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহনের ড্রাইভারগণ তাদের নেতা বানিয়েছে সরকারের এক মন্ত্রীকে।
একই ভাবে বিচারের উর্দ্ধে লাইসেন্সহীন সরকারও। হাজার হাজার মানুষকে খুন ও গুম করলেও তাদের বিচার হয়না। কারো সামনে সেজন্য জবাবদেহীতা্ও দিতে হয় না। শাপলা চত্ত্বরে বহু শত মানুষকে সরকারি বাহিনীর লোকেরা খুন ও গুম করলো, কিন্তু কারো কি কোন শাস্তি হয়েছ? যেন কোন অপরাধই ঘটেনি। এর চেয়ে বড় অসভ্যতা একটি দেশে আর কি হতে পারে? জঙ্গলে হিংস্র পশু কোন শিকার ধরলে তার বিচার হয় না। তেমনি বাংলাদেশের সরকারি বাহিনীর লোকেরা মানুষ খুন করলেও তার বিচার হয়না। ফলে বাংলাদেশের জনগণের জিম্মিদশা অসভ্য খুনিদের হাতে। তাই সভ্য মানুষের কাজ শুধু মহল্লা থেকে হিংস্র পশু তাড়ানো নয়। বরং তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, অসভ্যদের নির্মূলে বীরদর্পে রাস্তায় নামা। দেশ কতটা সভ্য ও নিরাপদ দেশ রূপে গড়ে উঠবে সেটি রাস্তাঘাট, দালানকোঠা ও কল-কারখানার উপর নির্ভর করে না। বরং নির্ভর করে নৃশংস অপরাধীদের নির্মূলে দেশবাসী কতটা সফল হলো তার উপর।
দায়ভার কি শুধু ছাত্রদের?
বাংলাদেশে রাস্তায় ছাত্রগণ বীরত্বের সাথে একাকী লড়ে যাচ্ছে। অথচ জনগণকে এখনো তাদের পাশে দেখা যাচ্ছে না। প্রশ্ন হলো, রাস্তায় গাড়ি চাপা পড়ে কি শুধু ছাত্ররা মারা পড়ে? চাপা পড়ে এবং আহত ও নিহত হয় তো সকল বয়সের হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু। ফলে এ লড়াই তো সবার। তাই শুধু ছাত্ররা কেন এ আন্দোলন একাকী লড়বে? অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, একমাত্র ছাত্রগণই জাতির বিবেক ও অভিভাবক! যেন জালেম স্বৈর শাসক ও তার সহযোগী দুর্বৃত্তদের থেকে জনগণকে মুক্তি দেয়ার দায়ভার শুধু ছাত্রদের! এবং অন্যদের কোন দায়-দায়িত্ব নেই। বরং অনেকে তাদের সমর্থণে কিছু না বলে নসিহত দিচ্ছে, রাজপথ ছেড়ে বাসায় ফেরার। অথচ রাস্তা ছেড়ে বাসায় ফিরলে যে আন্দোলন যে পণ্ড হয়ে যাবে -তা নিয়ে কি সন্দেহ আছে? তাছাড়া লড়াইয়ে নেমে ঘরে ফেরা তো কাপুরুষতা।
তাছাড়া ছাত্ররা যে বিষয়টি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে সেটি তো গুরুতর বিষয়। পৃথিবীর আর কোন দেশে কি এতো মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা পড়ে – যা মারা পড়ে বাংলাদেশে? এর জন্য দায়ী শুধু লাইসেন্সহীন ড্রাইভার নয়, বরং বেশী দায়ী লাইসেন্সহীন সরকার। কারণ, সরকারের দায়িত্ব তো ড্রাইভারদের উপর কড়া নজরদারি রাখা। সেটি হলে রাস্তায় ঠিকমত গাড়ি চলতো। এবং তাতে বহু হাজার মানুষের প্রাণও বাঁচতো। কিন্তু সে দায়িত্ব পালনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের জানের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের কোন ভাবনা নেই। সরকার একমাত্র ভাবনা নিজের গদি বাঁচানো নিয়ে। সরকারের মন্ত্রীরা এমনকি বিবেকহীনও। তাই ছাত্রদের করুণ মৃত্যু দেখে পরিবহন মন্ত্রীর মুখে হাসি দেখা গেছে। বরং ড্রাইভার ও সরকার –উভয়েরই একই রোগ। ড্রাইভার যেমন ভূয়া লাইসেন্স নিয়ে গাড়ী চালায়, সরকারও তেমনি ভূয়া নির্বাচনের মাধ্যমে গদিতে বসে। ফলে বিবেক, ন্যায়নীতি ও আইনের শাসন বিদায় নিয়েছে রাষ্ট্র থেকে। ফলে সরকারের এখন আর আন্দোলন সইছে না। হাসিনার ন্যায় স্বৈরশাসকের পক্ষে এরূপ আন্দোলন মেনে নেয়া সম্ভবও নয়। তাই ছাত্রদের আন্দোলন বানচাল করতে রাস্তায় ছাত্রলীগের নৃশংস গুণ্ডাদের নামিয়েছে।
বুঝতে হবে, চলমান এ আন্দোলন স্রেফ ছাত্র-আন্দোলন নয়। এটি কোন অরাজনৈতিক আন্দোলনও নয়। বরং এটি এক জালেম স্বৈর-সরকারের জুলুম ও ব্যর্থতার বিরুদ্ধে অতি ন্যায্য একটি আন্দোলন। এর সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষের বাঁচা-মরার বিষয়। অতীতের ছাত্র-আন্দোলনগুলি যেমন গণআন্দোলনে রূপ নিয়ে স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়েছে -সেটি এ আন্দোলনের ক্ষেত্রেও হতে হবে। তাই এ আন্দোলন সফল করতে সকল দলের নেতাকর্মী ও ছাত্রদের উচিত সংগ্রামরত ছাত্রদের সাথে ত্বরিৎ একাত্ম হওয়া। এবং এখনই সময় সরকারের হেলে পড়া খুটিতে সবাই মিলে শক্ত ধাক্কা দেয়ার। নইলে এ জালেম সরকার দীর্ঘায়ু পেলে জনগণের জীবনে গুম, খুণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনই শুধু বাড়বে। এবং জাতির ইতিহাসে বাড়বে গভীর কলংক।
শ্রেষ্ঠ সময় বিনিয়োগের
বাংলাদেশে এখন বিপ্লবের লগ্ন। এসেছে দিন বদলের সুযোগ। এসেছে ঈমান পরীক্ষার দিনও। পড়ালেখা, রুজি-রোজগার, ঘর-সংসার করার দিন সারা জীবন থাকে। কিন্তু দিন বদলের বিপ্লবে তথা দেশের ভাগ্য বদলে নিজ সামর্থ্যের বিনিয়োগের সুযোগ জীবনেই বার বার আসেনা। সারা জীবনে হয়তো একবার বা দু্ইবার আসে। যেমন বদর-ওহুদ-খন্দকের ন্যায় যুদ্ধে কোরবানী পেশের সুযোগ নবীজী (সাঃ)র সাহাবাদের জীবনে বার বার আসেনি। যারা পরে ঈমান এনেছিল তাদের জীবনে সে সুযোগ কোনদিনই আসেনি। কিন্তু যখন এসেছিল তখন ঈমানদারের অর্থদান, সময়দান, সামর্থ্যদান ও রক্তদানের কারণে মুসলিমগণ কাফেরদের উপর বিজয়ী হয়েছিল। ফলে নির্মিত হয়েছিল মানব-ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা। ইসলামের সে উম্মেষকালে যারা সেদিন কোরবানী পেশ করেছিল, তারাই পরবর্তীতে গণ্য হয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ রূপে। কারণ ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতার মূলে ছিল তাদের কোরবানী ।
বাংলাদেশে এসেছে সভ্যতর রাষ্ট্র নির্মাণের বহু প্রতিক্ষিত দিন। সময় এসেছে চলমান আন্দোলনকে সফল করতে মাঠে নামার সময়। এ মুহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূ্র্ণ কাজটি হলো, স্বৈরশাসনের নির্মূল। শুধু সড়ক নয়, সমগ্র বাংলাদেশ নিরাপদ হতে পারে নৃশংস এ স্বৈরশাসনের নির্মূলের মাধ্যমেই। নইলে যা সুনামীর ন্যায় সমগ্র দেশ ও সমাজকে প্লাবিত করবে তা হলো গুম, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, নির্যাতন ও রাষ্ট্রীয় তহবিলের উপর চুরি-ডাকাতি। ফলে এ দুর্বৃত্ত-শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করার চেয়ে সভ্যতর কাজ বাংলাদেশীদের সামনে আর কি হতে পারে? এ কাজে যারা ময়দানে নামবে এবং অর্থ, শ্রম, মেধা ও রক্তের কোরবানী পেশ করবে তারাই ইতিহাসে বেঁচে থাকবে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণের শ্রেষ্ঠ মোজাহিদ রূপে। এবং যারা বিরোধীতা করবে তারা বেঁচে থাকা দেশবাসীর কুলাঙ্গার শত্রু রূপে।
সময়ের সবচেয়ে বড় গুজব
বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে এবং সভ্য সরকার আছে –এটিই হলো এ সময়ের সবচেয়ে বড় মিথ্যা ও সবচেয়ে বড় গুজব। প্রকৃত সত্যটি হলো, দেশ অধিকৃত হয়ে আছে ভারতের ঘরে প্রতিপালিত এক পাল অসভ্য দাসদের হাতে। তাই এ দাস-শক্তির অধিকৃতি থেকে মুক্ত করার লড়াই হলো প্রকৃত স্বাধীনতার লড়াই। এ লড়াইয়ে জিততে না পারলে বাংলাদেশ যে স্বাধীন দেশ -সেটিই বেঁচে থাকবে আরেক মিথ্যাপূর্ণ গুজব রূপে। আর এ গুজব প্রতিষ্ঠা পেলে তখন শাস্তিযোগ্য অপরাধ রূপ গণ্য হবে প্রকৃত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই। সত্য কথা বলার জন্যও তখন কারাদণ্ড হবে। তখন বাংলাদেশের পুলিশ ও সরকারের গুণ্ডাদের হাতে শত শত ছাত্র-ছাত্রী যে আহত, নিহত, নির্যাতিতা, লাঞ্ছিতা ও ধর্ষিতা হচ্ছে সে কথাটি বলাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য হবে।
দেশ এখন নৃশংস খুনিদের হাতে অধিকৃত -যারা নিরীহ ছাত্রদের শুধু হত্যাই করে না, সে হত্যাকাণ্ডের পর মন খুলে হাসেও। এরা এতটাই মনুষত্বহীন যে বিরোধীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মিষ্টি খায়। এরাই ২০১৩সালের ৫ই মে’তে শাপলা চত্ত্বরে হাজার হাজার নিরীহ মুসল্লিদের হতাহত করেছে এবং হত্যার পর তাদের লাশ ময়লা টানার গাড়ীতে তুলে গায়েব করেছে। সরকারি বাহিনীর এরূপ নৃশংস খুনিদের বিচার না করাই স্বৈর-শাসকের নীতি। এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামাই হলো হত্যাযোগ্য অপরাধ। সে অপরাধেই শাপলা চত্ত্বরে প্রতিবাদী নিরীহ মুসল্লীদের কামান দেগে হত্যা করেছে। এখন তারা একই রূপ নৃশংসতায় নেমেছে নিরাপরাধ ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে। তাদের নৃশংস ভাবে পেঠাতে শুধু পুলিশদের নয়, সরকার নিজ দলের গুণ্ডাদেরও লেলিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগের গুণ্ডাদের হাতে বহু ছাত্রীর নির্যাতিতা ও লাঞ্ছিত হওয়ার খবরও শুনা যাচ্ছে।
বিপদজনক সরকার ও জনগণের দায়ভার
তাছাড়া দেশের সমস্যা কি শুধু বিপদজনক সড়ক পরিবহন নিয়ে? গুরুতর সমস্যা তো প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদ, পুলিশ,RAB, সেনাবাহিনী, বিচারবিভাগ নিয়েও। হাসিনার ন্যায় অত্যাচারি ও স্বৈরাচারিকে গদিতে রেখে কি নিরাপদ সড়ক আশা করা যায়? শেখ হাসিনা লাগাতর ১০ বছর ক্ষমতায় আছে, কিন্তু তাতে কি সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা আদৌ কমেছে? বরং দিন দিন দ্রুত বেড়েই চলেছে; এখন সে সংখ্যা যাত্রীকল্যাণ সমিতির হিসাব মতে প্রতি বছর ৮ হাজারেরও বেশীতে উপনিত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো কয়েকগুণ। স্বৈরশাসকগণ সব সময়ই দায়িত্বহীন হয়, কারণ তাদের জবাবদেহীতার ভয় থাকে না। বেপরোয়া ড্রাইভারের ন্যায় তারাও দেশ চালনায় বেপরোয়া হয়। তাই নিরস্ত্র মানুষ মারতে তারা মেশিন গান ও কামান দাগে। শাপলা চত্ত্বরের গণহত্যায় শেখ হাসিনা তো সেটিই প্রমাণ করেছে।
ফলে স্বৈরশাসক হাসিনাকে তাঁকে ক্ষমতায় রেখে বিপদ শুধু সড়কেই বাড়বে না, ভয়ানক বিপদ বাড়বে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে। হাসিনার ১০ বছর শাসন তো সেটিই প্রমাণ করেছে। স্বৈরাচারি হাসিনার সৃষ্ট আযাব থেকে বাঁচার এ লড়াইটি নিছক গতনাগতিক রাজনীতি নয়, বরং এটি এক পবিত্র জিহাদ। এ পবিত্র জিহাদে জনগণের জান, মাল ও সামর্থ্যের বিনিয়োগই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ কতটা সভ্য ও নিরাপদ দেশ রূপে গড়ে উঠবে। আশাপ্রদ দিক হলো, সে বিনিয়োগে ছাত্রগণ সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের চেয়ে নিজেদের অধীক দায়িত্বশীল ও অগ্রসর রূপে প্রমাণ করেছে। ইতিহাসে এজন্য তাঁরা অবশ্যই স্থান পাবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ কি চায় ইতিহাসে ভীরু ও কাপুরুষ রূপে বাঁচতে? ০৫/০৮/২০১৮ Tweet:@drfmkamal; facebook.com/firozkamal
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018