দুষ্ট মতবাদের সংক্রমণ, নিহত বিবেক এবং সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণে ব্যর্থতা

ফিরোজ মাহবুব কামাল

নাশকতাটি বিবেক হত্যার                          

প্রাণনাশী শুধু রোগ-জীবাণু ও হিংস্র জন্তু-জানোয়ারই নয়। ভয়ংকর নাশকতা ঘটায় বিষাক্ত মতবাদ এবং তাতে আক্রান্ত বুদ্ধিজীবী, মিডিয়া কর্মী, কলামিস্ট, সাংস্কৃতিক কর্মী ও রাজনীতিবিদগণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানী, রাশিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশে বহু কোটি মানুষের জীবনে মৃত্যু ও নির্যাতন উপহার দিয়েছে বর্ণবাদ, ফ্যাসিবাদ ও কম্যুনিজমের ন্যায় হিংস্র মতবাদগুলি। রোগজীবাণু কিছু লোকের জীবননাশ ঘটায়; কিন্তু সেগুলি গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল ঘটায় না। অথচ দুষ্ট মতবাদে আক্রান্ত বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের হাতে ভয়ানক গণহত্যা ঘটে। সেটি ঘটে বিবেক হত্যার মধ্য দিয়ে। বিবেকের মৃত্যু হলে দুর্বল দেশ ও জনগণের উপর সামরিক অধিকৃতি, যুদ্ধ, বিশ্বযুদ্ধ, বর্ণবাদী নির্মূল, এবং রাসায়নিতক বোমা ও পারমানবিক বোমা নিক্ষেপের ন্যায় নৃশংস বর্বরতাগুলিও শক্তিশালী দেশগুলির বৈধ অধিকার গণ্য হয়। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে যুক্তিতে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াতে ধ্বংসযজ্ঞ চালালো, সে অভিন্ন যুক্তিতে রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধে নেমেছে।

বিবেক হত্যার কাজটি ব্যাপক ভাবে ও গভীর ভাবে না হলে দুর্বৃত্ত শাসকগণ জনগণের কাতার থেকে সমর্থণ পায়না। বিবেক হত্যার কাজটি সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়াতেইজার্মান জনগণের কাছে হিটলারের ন্যায় ফ্যাসিবাদি খুনিও নেতা রূপে গৃহীত হয়েছিল। একই কারণে আফগানিস্তান ও ইরাকে ধ্বংসযজ্ঞ এবং ১০ লক্ষের বেশী মানব হত্যার পরও জর্জ বুশ ও টনি ব্লেয়ার বিপুল ভোটে পুণরায় নির্বাচিত হয়েছিল। একই কারণে ইউক্রেনের খুনি ভ্লাদিমির পুটিন প্রশংসা পায় রাশিয়ায়। তেমনি রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সে দেশের সেনাবাহিনী-পরিচালিত গণহত্যা, গণনির্মূল ও নিন্দনীয় গণধর্ষণও বার্মিজ নেত্রী অং সাং সুকীর কাছে অপরাধ গণ্য হয়নি। অং সাং সুকী রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে এবং মায়ানমার সেনা বাহিনীর গণহত্যার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন হেগ’এর আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ বিরোধী আদালতে। একই রূপ বিবেকহীনতার শিকার ফিলিস্তিনীগণ। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ ইসরাইলের দখলদারী, জুলুমবাজী ও বর্বরতাও পাশ্চাত্য বিশ্বের রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, কলামিস্টদের থেকে সমর্থণ পায়। বিষাক্ত মতবাদগুলি এভাবেই দেশে দেশে বিপুল সংখ্যক মানুষকে নাশকতার নায়ক ও সমর্থকে পরিণত করে।

দুর্বৃত্তদের কাছে অসহনীয় হলো ঈমানদারদের বিবেক। ঈমানদারের অপরাধ, তাদের বিবেক দুর্বৃত্তকে শুধু ঘৃণা করতে নয়, নির্মূল করতে শেখায়। যুগে যুগে নমরুদ-ফিরাউনগণ তাই জনগণকে সুস্থ বিবেক নিয়ে বেড়ে উঠতে দেয়নি। শ্বাশত সত্যের অহিংস ও নিরস্ত্র প্রচারক হযরত ইব্রাহীম (আ:)কে নমরুদ তাই আগুনে নিক্ষেপ করেছিল। ফিরাউন ধাওয়া করেছিল হযরত মূসা (আ:) এবং তাঁর অনুসারীদের পিছনে। স্বৈরাচারের জেলে যেতে হয়েছে ইমাম আবু হানিফা (রহ:), ইমাম মালেক (রহ:), ইমাম হাম্বলী (রহ:)’র ন্যায় মুসলিম ইতিহাসের নেতৃস্থানীয় মহান ব্যক্তিদের। মহান আল্লাহতায়ালার দ্বীনের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী শাসকেরা এভাবেই যুগে যুগে চ্যালেঞ্জ খাড়া করেছে। ইসলাম নিয়ে বাঁচতে হলে স্বৈরাচার নির্মূল একারণেই অনিবার্য হয়ে পড়ে। শাসন ক্ষমতায় অধিষ্টিত  জালেমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের খাতটি নিরেট ব্যয়ের খাত। এখানে কোন লাভ জুটে না বরং ঝুঁকি রয়েছে জান ও মাল হারানোর এবং নির্যাতনের মুখে পড়ার। ফলে যারা নিজের ও নিজ পরিবারের জন্য বাঁচে, তাদের মাঝে এমন কাজে কোন আগ্রহ থাকে না। নির্যাতন ভোগ এবং জান-মাল হারানোর ভয়ে এমন লড়াইয়ের ধারে-কাছেও তারা যায় না। তাদের কাছে এমন কর্ম “নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো”র ন্যায় অনর্থক মনে হয়। অথচ জালেম নির্মূলের এ কাজটি না হলে রাষ্ট্রের বুকে অন্যায়ের নির্মূল এবং সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজটি অসম্ভব হয়। তখন ব্যর্থ হয় মহান আল্লাতায়ালার এজেন্ডা এবং বিজয়ী হয় অভিশপ্ত শয়তান ও তার অনুসারী দুর্বৃত্তগণ। অথচ নবী-রাসূল প্রেরণ ও তাদের সাথে কিতাব নাযিলের মূল উদ্দেশ্য হলো অন্যায়ের নির্মূল এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা। যেমন সুরা হাদিদের ২৫ নম্বব আয়াতে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই আমরা সুস্পষ্ট প্রমানসহ রাসূল প্রেরণ করেছি এবং নাজিল করেছি তাদের সাথে কিতাব ও দাড়িপাল্লা যাতে মানুষ প্রতিষ্ঠা দিতে পারে সুবিচার।” সুবিচার প্রতিষ্ঠা না পেলে মহান আল্লাহতায়ালার মূল এজেন্ডাই ব্যর্থ হয়। তখন পৃথিবীপৃষ্ঠ পূর্ণ হয় অসভ্যতায়। সভ্য সমাজের নির্মূলে দুর্বৃত্তের নির্মূল যেহেতু সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ, সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহতায়ালা সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি রেখেছেন দুর্বৃত্ত নির্মূলের লড়াইয়ে অংশ নেয়ার জন্য। এ লড়াইকে তিনি জিহাদ তথা সবচেয়ে বড় ইবাদতের মর্যাদা দিয়েছেন। এ জিহাদে প্রাণ গেলে নিহত ব্যক্তিকে শহীদের মর্যাদা দেন এবং বিনা হিসাবে সত্বর মৃত্যুহীন জান্নাত দিয়ে পুরস্কৃত করেন। অন্য কোন ইবাদতে এরূপ মর্যাদা নাই।

সুস্থ দেহে রোগজীবানুর অনুপ্রবেশ ঘটলে গায়ে জ্বর উঠে। শরীরে তখন রোগ দেখা দেয়। তেমনি রোগাক্রান্ত হতে পারে রাষ্ট্রও।রাষ্ট্রের দেহে ভয়ানক রোগের সূচনা করে নৈতিক রোগে আক্রান্ত বুদ্ধিজীবী, প্রশাসক, সামরিক অফিসার, বিচারক ও রাজনীতিবিদগণ। তখন দেশে জোয়ার আসে চুরিডাকাতি, গুম, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও নৃশংস স্বৈরাচারের। সে বুদ্ধিবৃত্তিক রোগের প্রকোপে যেমন গৃহযুদ্ধ হতে পারে, তেমনি আঞ্চলিক যুদ্ধ, এমন কি বিশ্বযুদ্ধও শুরু হতে পারে। দুটি বিশ্বযুদ্ধে সাড়ে সাত কোটি মানুষ নিহত হয়েছিল তো নষ্ট চরিত্রের বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের সৃষ্ট নৈতিক রোগের কারণে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবসৃষ্ঠ এরূপ রোগের কারণে বহু লক্ষ মানুষ এথনিক ক্লিনজিং’য়ের শিকার হয়েছে। সে অভিন্ন রোগে বাংলাদেশে প্রতিদিন বহু মানুষ গুম হচ্ছে, লাশ হচ্ছে ও ধর্ষিতা হচ্ছে ।

চেতনাগত রোগে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউরোপবাসী। এ রোগের কারণে রাজনীতির ময়দানে জন্ম নিয়েছে উগ্রবর্ণবাদ, জাতীয়তাবাদ, উপনিবেশবাদ, ফ্যাসিবাদ, নাযীবাদ, কম্যুনিজমের ন্যায় ভয়ংকর মানবতাবিনাশী রোগ। তাতে ইউরোপীয়দের ঘাড়ে চেপে বসে দুইটি ভয়ানক বিশ্বযুদ্ধ। মানব হত্যা হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে; সেটিকে দ্রুততর করতে নির্মিত হয় গ্যাস চেম্বার। সে ভয়ংকর দিনগুলির স্মৃতি ইউরোপ বাসীর বিবেকে নাড়া দেয়। তারা উদ্যোগ নেয় সেরূপ যুদ্ধ যেন ইউরোপের মাটিতে আবার ফিরে না এসে। সেটি নিশ্চিত করতেই ইউরোপের ২৭টি দেশ তাদের সীমান্ত বিলুপ্ত করে জন্ম দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের। কিন্তু সে পুরনো রোগগুলি দমে থাকলেও ইউরোপ থেকে বিলুপ্ত হয়নি। রোগজীবাণু যেমন সুযোগ পেলেই হামলা শুরু করে, চেতনার ভূবনে তেমনি বার বার হামলা করছে রুগ্ন চেতনার বিষাক্ত ধারণাগুলি। তাই ন্যাশনালিজম আবার ফিরে এসেছে ইউরোপেও। অর্ধেকের বেশী ব্রিটিশ ভোটার তাই ভোট দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে। ন্যাশনালিজম-ফ্যাসিজমের হাওয়া বইতে শুরু করেছে ইতালী, ফ্রান্স, হাঙ্গেরী এবং জার্মানীতেও। ফলে শুরু হয়েছে ন্যাশনালিজম-ভীতিও। ফলে আবার শুরু হয়েছে এসব মতবাদের নাশকতা থেকে বাঁচার লড়াই। জাতিগত ভীতি ও ঘৃণা থেকেই জন্ম নিয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ।

জাতীয়তাবাদের ভয়ানক বিপদ নিয়ে কিছু কাল আগে অতি সত্য কথাটি বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাকরন। ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর প্যারিসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শতবছর পুর্তি পালনকালে বিশ্বের বড় বড় নেতাদের সামনে তিনি বলেন, “জাতীয়তাবাদ হলো দেশপ্রেমের বিপরীত”। বুঝাতে চেয়েছেন, জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেম এক সাথে চলতে পারে না। তার কথা, জাতীয়তাবাদীগণ যেখানেই বিজয়ী হয়েছে সেখানেই ভয়নাক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশ ও দেশবাসীর স্বার্থ। তখন বিলুপ্ত হয় জনগণের স্বাধীনতা এবং জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে ক্ষমতালোভী দুর্বৃত্তদের স্বৈরাচারী শাসন। তখন পরাধীন হয় জনগণ এবং দেশ ও দেশের রাজনীতি জিম্মি হয় ভয়ানক অপরাধীদের হাতে। এবং ভাষা, বর্ণ ও গোত্রের নাম ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাছিল করে কিছু নৃশংস দুর্বৃত্ত জার্মানীর হিটলার, ইটালীর মুসোলিনী, স্পেনের ফ্রাংকো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প তো জাতীয়তাবাদী রাজনীতিরই ফসল। জাতীয়তাবাদ বীভৎস নাশকতা ঘটেছে বাংলাদেশেও। বাঙালী জাতীয়তার নামে শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়েছে কিছু স্বার্থপর দুর্বৃত্তদের হাতে। গণতন্ত্রকে কবরে পাঠানো হয়েছে, দেশবাসী পরাধীন হয়েছে এবং যা ইচ্ছে তাই করার পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়েছে শেখ মুজিব ও তার অনুসারীগণ। প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন। শেখ মুজিব বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্থানে প্রতিষ্ঠা দেন একদলীয় বাকশালী ফ্যাসিবাদকে। তার আমলে ৬ লাখের বেশী বিহারীদের গৃহহীন করা হয়েছে। তাদের চাকুরী-বাকুরা ও ব্যবসা-বাণিজ্য কেড়ে নিয়ে তাদেরকে বস্তিতে নামানো হয়েছে এবং হাজার হাজার বিহারী নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। রক্ষিবাহিনী দিয়ে মুজিব বহু হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে এবং দেশকে তলাহীন ভিক্ষার ঝুলিতে পরিণত করেছে। এই হলো বাংলাদেশের বুকে জাতীয়তাবাদের মানবতা-বিধ্বংসী নৃশংস রূপ। বঙ্গীয় এই ব-দ্বীপে মানব ইতিহাসর কোন কালেই এরূপ অসভ্য ও নৃশংস শাসন প্রতিষ্ঠা পায়নি –যা প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিস্টদের হাতে।

লক্ষণীয় হলো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন সম্প্রতি যে কথাটি বলেছেন, ইসলাম সে কথাটি বলেছে সাড়ে ১৪ শত বছর আগেই। ইসলাম বিভক্তির সীমারেখাটি টানে কারা ন্যায়ের পক্ষে তথা ইসলামের দলে এবং কারা অন্যায়ের পক্ষে তথা শয়তানের দলে -সেটির ভিত্তিতে। বিভাজনটি এখানে মাত্র দুটি দলে: হিযবুল্লাহ এবং হিযবুশ শায়তান। অর্থাৎ মহান আল্লাহতায়ালার দল ও শয়তানের দল এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণাটি এসেছে পবিত্র কুর’আনের সুরা মুজাদিলায়। ভাষা, বর্ণ, অঞ্চল বা গোত্রের নামে মানব জাতিকে বিভক্ত করা এবং সে বিভক্তির ভিত্তিতে যুদ্ধ ও গণহত্যা শুরু করা ইসলামে শুধু হারামই নয়, বরং সেটি গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। মানবজাতিকে ভাষা, বর্ণ, গোত্র ও অঞ্চলের নামে এভাবে বিভক্ত করা ও পরস্পরে সহিংস করা শয়তানের কৌশল। তাই জাতীয়তাবাদীদের বিজয়ের অর্থ শয়তানের বিজয়। বাঙালিরা শয়তানের অনুসারীদের নৃশংস রূপটি দেখে আসছে মুজিবের বিজয়ের পর থেকেই।

ভাষা ও ভূগোলের নামে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি কোন রূপ সিদ্ধ ও সভ্য রাজনীতি নয়, এটি গুরুতর অপরাধ। রাজনীতির নামে এটি হলো ভয়ানক অপরাধীদের অপরাধ কর্মের পেশা। মানব ইতিহাসে এদের অপরাধ-কর্মে পূর্ণ।ইসলামে এরূপ অপরাধের বিরুদ্ধে শরিয়তের আইনে রয়েছে কঠোর শাস্তি। রয়েছে জনসম্মুখে পিঠে চাবুক মারার শাস্তি। নবীজী (সা:)’র জামানায় এমন ভাতৃঘাতী নাশকতার রাজনীতির প্রতিষ্ঠা দিতে চেষ্টা করেছিল মুনাফিকগণ। তাদের ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য ছিল, তৎকালীন মুসলিম উম্মাহকে মোহাজির ও আনসার –এ দুইভাগে বিভক্ত করা। নবীজী (সা:) কঠোর হস্তে সে বিভেদের রাজনীতিকে দমন করেন। পরবর্তীকালে মুসলিমগণ যখনই ইসলাম থেকে দূরে সরেছে তখনই তাদের মাঝে ফিরে এসেছে জাহিলিয়াত যুগের গোত্র, বর্ণ, ফেরকা ও আঞ্চলিকতা ভিত্তিক বিভক্তির নাশকতা। ফলে বিভক্ত হয়েছে মুসলিম ভূমি এবং সে বিভক্তির দেয়াল বাঁচাতে শুরু হয়েছে রক্তাক্ত যুদ্ধ। পবিত্র কুর’আনে এমন বিভক্তিকে বলা হয়েছে ফিতনা।

প্রশ্ন হলো ফিতনা কাকে বলে? যা কিছু বিপন্ন করে পূর্ণ ইসলাম পালন ও মুসলিমদের নিরাপত্তা সেটিই ফিতনা। পবিত্র কুর’আনে ফিতনাকে বলা হয়েছে মানব হত্যার চেয়েও জঘন্য। কারণ ফিতনার নাশকতায় বিভক্ত হয় উম্মাহ, নিরাপত্তা হারায় মুসলিম এবং নিহত হয় রাষ্ট্র। রাষ্ট্র অস্তিত্ব হারালে তখন প্রাণ হারায় লক্ষ লক্ষ মানুষ। মুসলিম উম্মাহ তখন শক্তিহীন ও ইজ্জতহীন হয়। তখন মুসলিম ভূমিতে শুরু হয় হত্যা, ধ্বংস, ধর্ষণ, দেশ থেকে মুসলিমদের বহিস্কারের তাণ্ডব। বাঙালি মুসলিম জীবনে এমন ফিতনার জনক হলো শেখ মুজিব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজও চলছে সহিংস ফিতনা সৃষ্টির রাজনীতি। তাতে যেমন যাতনা বেড়েছে মুসলিমদের, তেমনি আনন্দ বেড়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদীদের। উসমানিয়া খেলাফার বিনাশের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদীগণ তেমন এক  নৃশংস তাণ্ডব উপহার দিয়েছে মুসলিম উম্মাহর জীবনে।আরব বিশ্বের বিভক্ত মানচিত্র এবং ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন ও অন্যান্য দেশে যেরূপ চলছে বিরামহীন হানাহানী –তার উৎপত্তি তো জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিস্টদের হাতে। সুনামী, ঘুর্ণিঝড়, ভূমিকম্প ও মহামারিতেও মুসলিমদের এতো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি, যা হয়েছে জাতীয়তাবাদীদের সৃষ্ট এই ফেতনার কারণে। মুসলিমগণ হারিয়েছে ইজ্জত-আবরু ও জান-মালের নিরাপত্তা। এবং হারিয়েছে মৌলিক মানবাধিকার।   

 

অপরাধীদের রাজনীতি

বাংলাদেশের অপরাধীগণ অন্য যে কনো পেশার লোকদের চেয়ে অধিক সংঘবদ্ধ। তারা যোগ দিয়েছে  রাজনীতিতে। রাজনীতি এখন আর অন্যায়ের নির্মূল ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জিহাদ নয়। বরং পরিনত হয়েছে অপরাধের হাতিয়ারে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভয়ানক চরিত্রের অপরাধী মানুষগুলো এসেছে জাতীয়তাবাদী শিবির থেকে। তারা প্রতিষ্ঠা দিয়েছে ফ্যাসিবাদী নৃশংসতার। তাদের হাতে রাজনীতি পরিণত হয়েছে ইচ্ছামত গুম, খুন, নির্যাতন, অপহরণ ও স্বৈরাচারের হাতিয়ারে। শেখ মুজিবের শাসনামলে ভয়ানক এই অপরাধীগণ গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়ে একদলীয় বাকশালী শাসনের প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন। এরা নিজেদেরকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকারী দল বলে। অথচ স্বাধীনতার বদলে জনগণকে দিয়েছে নিষ্ঠুর পরাধীনতা। শেখ মুজিব কেড়ে নিয়েছিল স্বাধীন ভাবে কথা বলা, দল গড়া ও মিটিং-মিছিল ও পত্রিকা প্রকাশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সংজ্ঞাই মুজিব পাল্টে দেন। তাঁর কাছে স্বাধীনতা ছিল নিজের ও নিজ দলের নেতাকর্মীদের স্বেচ্ছাচারের স্বাধীনতা। সেখানে অন্যদলের লোকদের কোন স্থান ছিল না। স্বৈরাচার বাঁচাতে মুজিবের রক্ষিবাহিনী প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে নির্মম ভাবে বিনা বিচারে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের মাটিতে বিচার বহিঃর্ভুত হত্যাকান্ডের শুরু মুজিবের হাতে। সে ধারা অব্যাহত রেখেছে হাসিনা। ১৯৭১’য়ে এ পক্ষটিই বাংলার মাটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য লুটতরাজের সুযোগ করে দেয়। সে লুটতরাজে পাকিস্তান সেনাবাহিনীয় বহু হাজার কোটি টাকার অস্ত্রই শুধু লুট হয়নি, লুট হয়ে গেছে সকল ক্যান্টনমনেন্টের গাড়ি, ফ্রিজ, টিভি, ফ্যানসহ বিপুল পরিমাণ আসবাবপত্র। সে লুট থামাতে আওয়ামী লীগের সরকার কোন উদ্যোগই নেয়নি, বরং চোখ বন্ধ করে রাখে। লুটের প্রতিরোধে খাড়া হওয়াতে মেজর আব্দুল জলিল সেনা বাহিনীতে তাঁর চাকুরী হারিয়েছিলেন। এই ভয়ংকর অপরাধীগণই বিহারীদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা-বাণিজ্যর উপর ডাকাতি করা, তাদেকে হত্যা করা এবং অবাঙালি রমনীদের ধর্ষণ করা অবাধ করেছিল। ডায়রিয়া-কোভিড-কলেরার ন্যায় রোগগুলি প্রতি দেশে একই রূপ সিম্পটম দেয়। জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিবাদও তেমনি প্রতি দেশে একই রূপ নৃশংস অপরাধের জন্ম দেয়। বাংলার সমগ্র ইতিহাসে কখনোই কি এমন অসভ্য কর্ম হয়েছে –যা হয়েছে একাত্তরে বাঙালি জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিস্টদের হাতে? ফ্যাসিবাদের যে বীজ শেখ মুজিব রোপন করেছিলেন, শেখ হাসিনার আমলে তা বিশাল বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। অপরাধী রাজনীতিবিদদের কারণেই নৈতিক রোগের জোয়ার বইছে বাংলাদেশের প্রশাসন, পুলিশ ও আদালতে ফলে ৭০ বছর আগে বাংলার রাজনীতি, আদালত, প্রশাসন ও পুলিশে যতটা বিবেকবোধ দেখা যেত -সেটি আজ কল্পনাও করা যায় না। নীচে নামার গতি বেগবান হওয়ার কারণেই দুর্নীতিতে বিশ্বে ৫ বার প্রথম হওয়াও সহজ হয়ে যায়। সুস্থ্য বিবেক নিয়ে কোন জাতিই এ পর্যায়ে পৌঁছে না।

ভয়ানক বিবেকহীনতার কারণেই পুলিশ, RAB ও বিজিবি এখন আর মিছিল থামাতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে না। লাঠিচার্জও করে না। বরং সরাসরি গুলি চালায়। লাঠিচার্জ বা গ্রেফতারে নয়, লাশ ফেলাতেই তাদের আনন্দ। ফলে আইনের শাসনের নামে বেশুমার মানুষ যত্রতত্র লাশ হচ্ছে। বাংলাদেশের পুলিশ ও RAB পরিণত হয়েছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ খুনি বাহিনীতে। একমাত্র মিশর ও সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও পুলিশের সাথেই তাদের তুলনা চলে। পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরে পুলিশের গুলিতে ২৩ জন মানুষও নিহত হয়নি। ১৯৫২ সালের ২১ই ফেব্রেয়ারিতে মাত্র ৫ জন মারা গিয়েছিল। অথচ সেটিই ইতিহাস হয়। তাতেই সরকার পরিবর্তন হয়। ৫জনের হত্যার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে সেদিন থেকে “আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রেয়ারি, আমি কি ভূলিতে পারি” বলে গান গাওয়া শুরু হয়েছিল। এখনো সে গান গাওয়া শেষ হয়নি। অথচ আজ বাংলাদেশের বুকে এক দিনে ৫ জন নয়, বহুগুণ অধিক মানুষ খুন হয়। শাপলা চত্বরের গণহত্যাও হয়। কিন্তু তা নিয়ে আজ আর বেদনাসিক্ত গান লেখা হয়না। কারণ এখন সেই পাকিস্তান ভাঙ্গার রাজনৈতিক এজেন্ডা নাই। 

 

বিপন্ন গণতন্ত্র

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রেয়ারিতে মাত্র ৫ জন মারা যাওয়ার পর তৎকালীন পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী জনাব নুরুল আমীন নিহত পরিবারের কাছে মাফ চেয়ে দুঃখ ভারাক্রান্ত গলায় বেতার ভাষণ দিয়েছিলেন। তিনি নিজে যে পুলিশকে গুলি চালনোর হুকুম দেননি এবং সে খুনের সাথে যে তিনি নিজে জড়িত ছিলেন না, সে কৈফিয়তটিও জনগণের সামনে বার বার দিয়েছিলেন। সেদিন পুলিশ গুলি চালিয়েছিল ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল নিয়ে প্রাদেশিক পরিষদে চলমান বৈঠকের উপর হামলা থামাতে। পুলিশের লাঠিচার্জ সে ধাওয়া থামাতে ব্যর্থ হয়েছিল। অথচ আজ  পুলিশ, RAB ও বিজিবি’র হাতে শত শত মানুষ খুন হচ্ছে। যেরূপ খুন করেছে ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে ধর্না দেয়া হিফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ মুসল্লীদের। মুসল্লীগণ সেদিন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেনি। প্রধানমন্ত্রীর ভবন বা সংসদের উপরও তারা ধাওয়া করেনি। তারা লগি বৈঠা নিয়েও সেখানে হাজির হয়নি। কিন্তু সে নিরপরাধ মুসল্লীদের খুন নিয়ে সরকার প্রধানের মুখে কোন অনুশোচনা নেই। কোন কৈফিয়তও নাই। বরং আছে আত্মতৃপ্তি। সে আত্মতৃপ্তি নিয়ে শেখ হাসিনা মস্করা করেছেন, “হেফাজতের লোকেরা রং মেখে রাস্তায়শুয়েছিল।” “লাশরা পুলিশের তাড়া খেড়ে উঠে দৌড়িয়েছে” সে কৌতুকও তিনি শোনান। জনসভায় শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা ব্রিজ থেকে ঠুস করে ফেলে দেয়া এবং প্রফেসর মুহম্মদ ইউনুসকে পদ্মার পানিতে চুবানোর হুকুমও দেন। বাংলাদেশে রাজনীতি কতবড় নৃশংস, বীভৎস ও কুৎসিত চরিত্রের ব্যক্তিদের হাতে জিম্মি –সেটি বুঝতে কি এখনো কিছু বাকি থাকে?  

হাসিনা এক খুনের বদলে তিনি ১০ খুনের হুমকি দেন। তেমনি এক অপরাধী চেতনা নিয়ে শাপলা চত্বরের শহীদদের লাশ ময়লার গাড়িতে তোলা হয়ছে। গণতন্ত্রের হায়াত মওত নিয়ে শেখ হাসিনার সামান্যতম ভাবনা নেই। সে ভাবনা হাসিনার পিতা শেখ মুজিবেরও ছিল না। মুজিবের ন্যায় হাসিনার একমাত্র ভাবনা তার নিজ শাসনের আয়ু নিয়ে। মুজিব তাই নিজের গদি বাঁচাতে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। সকল বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ ও সকল বেসরকারি পত্রপত্রিকার অফিসে তালা ঝুলিয়েছিলেন। দেহের মৃত্যুর ন্যায় বিবেকের মৃত্যুও গোপন থাকে না। সেদিন শেখ মুজিবের রাজনীতিতে তার নিজের বিবেকের মৃত্যুটি ধরা পড়েছিল, আজ সেটি ধরা পড়ছে হাসিনার রাজনীতিতেও।কথা হলো, এমন মৃত বিবেকের মানুষগণ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা দিবে, প্রতিষ্ঠা করবে আইনের শাসন এবং রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত করবে সন্ত্রাস -সেটি কি আশা করা যায়? রোগাগ্রস্ত মানুষ স্রেফ রোগেরই বিস্তার ঘটায়, স্বাস্থ্যের নয়। বাংলাদেশেও এসব অপরাধীদের থেকে কি ভিন্নতর কিছু আশা করা যায়?

পশুর ন্যায় স্রেফ দৈহিক ভাবে বাঁচাতে তেমন বাড়তি খরচ নাই। সে খরচ গরু-ছাগল ও কুকুর-বিড়ালও মেটাতে পারে। কিন্তু দ্বীন পালনের স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচার খরচটি বিশাল। সে স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচতে হলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠে। তখন জান ও মালের কুরবানীও দিতে হয়। কারণ স্বাধীনতার সশস্ত্র শত্রুদের উপস্থিতি সর্বত্র। এরা শুধু স্বাধীনতার শত্রুই নয়, শত্রু ইসলামেরও। ইসলামের এই শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে বলা হয় পবিত্র জিহাদ। এ জিহাদ মানুষকে মানবিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে শেখায়। যারা পশুর ন্যায় পানাহারে বাঁচাতেই খুশী, স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচায় তাদের রুচি থাকে না। যে দেশে গণতন্ত্র নাই এবং গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠায় তীব্র লড়াই নাই –বুঝতে হবে সে দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে বাঁচায় রুচি আছে এমন লোকের সংখ্যা অতি নগণ্য। সংখ্যাটি যথেষ্ট হলে সেখানে যুদ্ধ শুরু হতো।

স্বৈরাচারী সরকারের বড় নাশকতা শুধু মানবহত্যা ও জনগণের উপর নির্যাতন নয়। এই অসভ্য শাসকগণ জনগণের স্বাধীন, সভ্য ও ভদ্র জীবন-যাপনের রুচিও হত্যা করে। তাই একটি দেশে স্বৈর শাসন দীর্ঘকাল থাকলে সেদেশে গণতান্ত্রিক শাসন অসম্ভব হয়ে উঠে। বনের সিংহকে ২০ বছর খাঁচায় আটকে রাখার পর খাঁচার দরজা খুলে দিলেও সে আর  বনের স্বাধীন জীবনে ফিরে যায়না। কারণ, দীর্ঘ কারা বাসে স্বাধীন ভাবে বাঁচার রুচিই বিলুপ্ত হয়। বিলুপ্ত হয় আত্মবিশ্বাস। তেমনটি ঘটে মানুষের জীবনেও। শেখ হাসিনার দীর্ঘ দিনের স্বৈর শাসন তেমনি রুচি বিলুপ্তি ঘটিয়েছে বাংলাদেশীদের জীবন থেকে। জনগণ অভ্যস্ত হয়ে গেছে গোলামী ও অপমান নিয়ে বাঁচায়। ফলে কঠিন হচ্ছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চা ও গণতান্ত্রিক আন্দলনকে বিজয়ী করার লড়াই। তাই ৮০ লাখ মানুষের শহর হংকং’য়ে গণতন্ত্রের দাবীতে ২০ লাখ মানুষ রাস্তায় নামলেও দেড় কোটি মানুষের শহর ঢাকায় ২০ হাজারও রাস্তায় নামে না। কারণ হংকংয়ের জনগণ দীর্ঘ দিন স্বাধীন জীবনের ইজ্জত নিয়ে বেঁচে আসছে। বেইজিং সরকারের স্বৈর শাসন হংকংবাসীর কাছে এজন্যই অসহ্য। স্বৈর শাসনের নাশকতা তাই ভয়াবহ। অপরাধ এখানে বিবেক হত্যার। ফলে বিপুল সংখ্যক বেঁচে আছে নিহত বিবেক নিয়ে এরূপ নিহত বিবেকের মানুষেরাই ভোটডাকাত দস্যুরাণীকেও শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে। কোন সুস্থ, সভ্য ও বিবেকমান মানুষ কি কখনো সেটি করে? ১ম সংস্করণ ১৫/১১/২০১৮; ২য় সংস্করণ ১২/১২/২০২১; ৩য় সংস্করণ ১১/০৭/২০২২

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *