বাংলাদেশে চোরতন্ত্রের দৌরাত্ম্য এবং আত্মসমর্পিত জনগণ
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on November 27, 2022
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
চলছে চোরতন্ত্র
দেশের শাসন-ক্ষমতা যখন জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে থাকে এবং সরকার পরিচালিত হয় জনগণের স্বার্থে ও সংবিধান অনুযায়ী–সেটিকেই বলা হয় গণতন্ত্র। কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্র কবরে। বাংলাদেশে শাসন ক্ষমতা তাদের হাতে -যারা ক্ষমতায় এসেছে ভোটচুরি করে। এবং দেশ পরিচালিত হচ্ছে চোরদের দ্বারা এবং চোরদের স্বার্থে। অতএব প্রতিষ্ঠা পেয়েছে নিরেট চোরতন্ত্র।
চোরতন্ত্র বলতে আমরা কি বুঝি? এটি রাষ্ট্র বিজ্ঞানের এক নতুন পরিভাষা। বাংলাদেশের ন্যায় বিশ্বের আর কোন দেশেই চোরেরা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে নিতে পারিনি। এর কারণ, চোরেরা আর কোন দেশে এতোটা লোকবল ও রাজনৈতিক বল সঞ্চয় করতে পারিনি যে তারা একটি দেশকে দখলে নিবে। পুরা একটি দেশ দূরে থাক, বিশ্বের আর কোথাও চোরেরা একটি শহর বা গ্রামও দখলে নিতে পারিনি। চোরেরা দখলে নিয়েছে একমাত্র বাংলাদেশকেই। সমগ্র মানব ইতিহাসে চোরদের এটিই হলো সবচেয়ে বড় বিজয়।
তবে চোরতন্ত্রের পাশাপাশি আরেকটি কদর্যের ইতিহাস নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশে। সেটি হলো, দেশটির ১৭ কোটি জনগণ দীর্ঘ ১৪টি বছরে ধরে চোরদের কাছে আত্মসমর্পণ নিয়ে বাঁচছে। এ ইতিহাসটিও একমাত্র বাংলাদেশের জনগণের। বিশ্বের কোন সভ্য দেশের নাগরিকর একটি দিন বা একটি ঘন্টার জন্যও কি চোরদের শাসনও কখনো মেনে নিয়েছে? সেরূপ চেষ্টা হলে চোরদের মাজায় রশি বেঁধে তারা হাজতে তুলতো। কিন্তু কি বিস্ময়! বাংলাদেশই হলো বিশ্বের একমাত্র দেশ যে দেশে চোরের সর্দারনীকে হাজতে না তুলে মাননীয় ও শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী বলা হয়। অবশ্য এমন কদর্য কর্মটি একমাত্র সে দেশেই সম্ভব যে দেশের মানুষ দুর্বৃত্তিতে ৫ বার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।
প্রাচীন কালে বা মধ্য যুগে শাসক হতে হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করে শত্রুকে পরাজিত করতে হতো। ফলে যুদ্ধ লড়ার যোগ্যতা ও অপরিমেয় সাহস থাকতে হতো। রাজতন্ত্রে শাসক হতে হলে ভাগ্যবান হতে হয় রাজপুত্র বা রাজকন্যা হওয়ার। সামরিক ক্যু করে ক্ষমতায় আসতে হলে সামরিক বাহিনীর প্রধান হতে হয়। আর গণতন্ত্রে ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচনে জনগণের ভোট পেয়ে বিজয়ী হতে হয়। কিন্তু হাসিনা এরূপ ঐতিহাসিক পথগুলির কোনটিই বেছে নেয়নি। সে বেছে নিয়েছে ভোটচুরির পথ। এখানে যুদ্ধজয়ের সাহস লাগে না। সামরিক জেনারেল বা রাজকন্যা হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। জনগণের ভোটও লাগেনা। চাই স্রেফ দেশের সকল নৃশংস চোরদের দিয়ে বিশাল দল গড়ার সামর্থ্য ও তাদের দিয়ে ভোটচুরিতে নেতৃত্ব দেয়ার সামর্থ্য। সে সাথে চাই সে ভোটচুরিকে সুষ্ঠ ও বৈধ বলে আখ্যায়ীত করবে এমন একটি বিচারক দল। এটিই হলো চোরতন্ত্র। যেহেতু মানব ইতিহাসে পূর্বে কখনো এরূপ ভোটচুরির মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নেয়ার কান্ড ঘটেনি, তাই চোরতন্ত্র হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি নতুন পরিভাষা। চোরতন্ত্র বলতে বুঝায়, চোরদের ফ্যাসিবাদী শাসন। বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশ হলো তারই মডেল।
বাংলাদেশের শিশুরাও জানে, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছে ভোটচুরি করে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদের ৩০০সিটের মাঝে মাত্র ৭টি সিট বাদে সকল সিট দখলে নিয়েছে হাসিনা ও তাঁর সঙ্গিরা। নেশাখোর যেমন নেশা ছাড়তে পারে না, তেমনি চোরও কখনো চুরি ছাড়তে পারে না। তাই ভোট চুরির পর তার চুরিকর্ম শেষ হয়নি্। লাগাতর চুরি করে চলেছে জনগণের অর্থের উপর। হামলা হচ্ছে রাষ্ট্রের রিজার্ভ ভান্ডার এবং সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক গুলির উপর। লাগাতর চুরি করে যাচ্ছে জনগণের পকেটের উপরও। সেটি তেলের দাম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের মূল্য বাড়িয়ে। কিছু কাল আগে বিশ্ববাজারে তেলের দাম যখন কমে যায় তখনও হাসিনা সরকার দেশীয় বাজারে তেলের মূ্ল্য কমায়নি। ফলে বিদেশ থেকে কম দামে তেল কিনে বেশী দামে বিক্রি করেছে। এতে সুযোগ পায় জনগণের পকেটি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করার।
চোর-ডাকাতগণ জানে, দেশের শাসনক্ষমতা হাতে পেল চুরিডাকাতির কাজটি সহজ হয়ে যায়। তখন পুলিশ তাদের ধরতে পিছে পিছে দৌড়ায় না, বরং স্যালুট দেয় এবং চুরির কাজটি নিজেরা করে দেয়। সেটি দেখা গেছে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে। দেশব্যাপ পুলিশ বাহিনী জনগণের ব্যালট চুরি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের অনুকূলে ব্যালট বক্স ভরে বিজয়ী করেছে। এরপর যারাই রাজপথে ভোটচোরকে চোর বলেছে, তাদের পা ডান্ডাবেড়ি পড়িয়ে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে তুলেছে।
এজন্যই রাজনীতিতে বাংলাদেশের চোরডাকাতদের প্রচণ্ড আগ্রহ। এদের কারণেই আওয়ামী লীগ আজ আর কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটি এখন চোর-ডাকাত বাহিনী। সেটি যেমন মুজিবের আমলে দেখা গেছে, এখন দেখা যাচ্ছে হাসিনার আমলেও। অপর দিকে ভারতের ন্যায় বিদেশী শক্তির দালালীতেও তাদের প্রচুর নেশা। কারণ তাতে প্রচুর অর্থ মেলে, ক্ষমতালাভে রাজনৈতিক সাহায্যও মেলে। এমন কি প্রয়োজন দেখা দিলে যুদ্ধও করে দেয়। যেমনটি একাত্তরে দেখা গেছে। এজন্যই এরা যেমন দেশপ্রমশূণ্য হয়, তেমনি দলে দলে বিদেশী শক্তির দালালও হয়। এরূপ দালালেরা বিদেশী প্রভুকে খুশি করতে আবরার ফাহাদের ন্যায় দেশপ্রেমিক হত্যা করে। সামান্যতম দেশপ্রেম থাকলে এরা কি নিজ দেশের বুক চিরে ভারতের করিডোর দিত? দিত কি বন্দরের সুবিধা? চোর-ডাকাতের স্বভাব হলো, চুরি-ডাকাতির স্বার্থে এরা গুম, খুন ও অপহরণ করে। শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আসাতে তাই গুম, খুন ও অপহরণের জোয়ার এসেছে।
চলছে নৃশংস ফ্যাসিবাদ
ফ্যাসিবাদ মানে গণতন্ত্র ও মৌলিক মানবাধিকারের কবর। তখন কবরে যায় সুশাসন এবং ন্যায় বিচার। প্রতিষ্ঠা পায় নৃশংস স্বৈরাচার। ফ্যাসিবাদে স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা হারায় বিচার ব্যবস্থা, পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনী এবং মিডিয়া। এগুলিকে পরিণত করা হয় চোর-ডাকাত সরকারের আজ্ঞাবহ চাটুকর ও চৌকিদারে। আদালতে তাই রায় দেয়া হয় -যা সরকার চা্য়। সত্য কথাও তখন শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয় –যদি সেটি সরকারের বিপক্ষে যায়। অবাধ স্বাধীনতা থাকে শুধু সরকারের গুণকীর্তনে।
ফ্যাসিবাদ ৪ প্রকার: ১). রাজতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদ। যেমন ছিল ইরানের শাহ। যেমন আজকের সৌদি বাদশাহ ও আরব আমিরাতে আমির। ২).সামরিক ফ্যাসিবাদ। যেমন মিশরের আব্দুল ফাতাহ সিসি এবং সিরিয়ার বাশার আল আসাদ। ৩). রাজনৈতিক দলের ফ্যাসিবাদ। যেমন ছিল জার্মানীতে হিটলারের ন্যাশনালিস্ট সোসালিস্ট পার্টির এবং ইটালীতে নাযী পার্টির ৪). চোর-ডাকাতের ফ্যাসিবাদ। যেমন বাংলাদেশ।
পরিকল্পিত ব্যাংক লুট্
হাসিনার সরকারের চোর-ডাকাত বাহিনী আগেই সরকারি ব্যাংকগুলির অর্থ চুরি করে নিছে। এরপর হাত পড়েছে বেসরকারি ব্যাংকের উপর। হাতে পড়েছে সবচেয় বড় বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের উপর। ডাকাতির সে লক্ষ্যকে সামনে রেখেই কিছু বছর আগে ইসলামী ব্যাংকের উপর দখলদারি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাহানা দেখানো হয়, ইসলামী ব্যাংক মৌলবাদী রাজনীতিতে অর্থ জোগায়।
চলতি বছেরর গত ২৪শে নভেম্বর বাম ঘরানার পত্রিকা দৈনিক প্রথম আলো খবর ছেপেছে একমাত্র ইসলামী ব্যাংক থেকে ৭,২৫০ কোটি টাকা ভূয়া কোম্পানীর নামে ঋণ নিয়ে লুট করেছে; শুধু চলতি বছরের নভেম্বরে লুট করেছে ২,৪৬০ কোটি। পত্রিকাটি আরো লিখেছে সাড়ে ৯ শত কোটি লুট হয়েছে তিনটি ব্যাংক থেকে। এটি অর্থ লুটের এক বিশাল ঘটনা। বাংলাদেশ যতদিন এই চোরদের দখলে থাকবে ততদিন এরূপ চুরি শুধু বাড়তেই থাকবে। আর চুরি অব্যাহত থাকলে জনগণের ঘরে আকাল শুরু হয়। তখন ধেয়ে আসে দুর্ভিক্ষ। শেখ মুজিবের আমলে একই ভাবে দুর্ভিক্ষ ডেকে আনা হয়েছিল -যাতে ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। হাসিনা সে অভিন্ন পথই ধরেছে।
বাঙালি মুসলিমের কেন এতো ব্যর্থতা?
প্রশ্ন হলো, প্রতিবেশী ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল বা পাকিস্তানে কেউ কি কখনো ভোটডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে? কিন্তু কি বিস্ময়! সেটি ঘটেছে বাংলাদেশে। বিশ্বের অন্য কোন দেশে কি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যায়? সেটিও হয় বাংলাদেশে। প্রতি দেশেই ব্যাংক হলো অর্থের নিরাপদ স্থান। কিন্তু বাংলাদেশে ব্যাংকগুলি হলো চোর-ডাকাতের অধিকৃত ভূমি। বিশ্বের কোন দেশ কি পর পর ৫ বার দুর্বৃত্তিতে প্রথম হয়েছে? অথচ বাংলাদেশ হয়েছে। এবং সেটি এ চলতি শতাব্দীর শুরুর বছরগুলিতে।
বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী ও আলেমগণ কি কখনো এ নিয়ে ভেবে দেখেছেন, এরূপ ব্যর্থতা কেন শুধু বাংলাদেশীদের? অথচ দেশটি শতকরা ৯০ ভাগ জনগণ মুসলিম। কোটি কোটি মানুষ নামাজ পড়ে ও মাহে রমজানের রোজা রাখে। ইসলাম তো মানুষকে শুধু সৎ হতে শেখায় না, বরং ন্যায় ও সুবিচারের প্রতিষ্ঠায় বিরামহীন সৈনিকে পরিণত করে। কিন্তু কেন এ ব্যর্থতা? রোগের যেমন কারণ ও প্যাথোলিজি থাকে, তেমনি কারণ ও প্যাথোলজি রয়েছে বাঙালি মুসলিমের এ সীমাহীন ব্যর্থতারও।
বাঙালি মুসলিমের মূল ব্যর্থতাটি হলো প্রকৃত মুসলিম রূপে বেড়ে উঠায়। এ ব্যর্থতা থেকেই তাদের মাঝে অন্য সকল ব্যর্থতার জন্ম। তারা শুধু নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতকে ইসলাম মনে করে বসে আছে। মুসলিম হওয়ার অর্থই হলো ন্যায় ও সুবিচারকে ভালবাসা এবং দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে খাড়া হওয়া। ঈমানের প্রকাশ তো এই যুদ্ধের মাঝে। এটিই ইসলামে জিহাদ। মুসলিমদের এটিই হলো সর্বোচ্চ ইবাদত। কিন্তু বাঙালি মুসলিমের মাঝে কোথায় সে জিহাদ? কোথায় সে ইবাদত।
আবর্জনা নির্মূলের কাজটি না হলে রাষ্ট্রের বুকে আবর্জনা জমে উঠবে –সেটি স্বাভাবিক। তেমনি দুর্বৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ না হলে দুর্বৃত্তির প্লাবন আসে। বাংলাদেশে সেটিই হয়েছে। তাই ঈমানদারদের শুধু নামাজ-রোজা এবং হজ্জ-যাকাত পালন করলে চলে না। জিহাদও করতে হয়। কিন্তু বাঙালি মুসলিমদের জীবনে দুর্বৃত্ত নির্মূলের সে জিহাদটি হয়নি। তারা ইসলামের এই সর্বোচ্চ ইবাদতে নাই।
হাসিনা সরকারের চুরি-ডাকাতির কাহিনী তো আজকের নয়। শুরু থেকেই। তার বাহিনী ৬ শতের বেশী মানুষকে গুম করেছে। বহু মানুষ খুন হয়েছে। জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেয়ার ব্যবস্থা করা হলো। হিফাজতের উপর চালালো গণহত্যা। দলটির শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করে তাদের লাশ গুম করা হলো। এতো বড় অপরাধী সরকারকে সভ্য মানুষ কি কখনো সহ্য করে? গরুছাগলের সামনে কেউ খুন বা ধর্ষিত হলে প্রতিবাদ করে না। বাংলাদেশে ভোটডাকাতি ও ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা তো লাখো লাখো মানুষের চোখের সামনে হচ্ছে। ১৪ বছরের বেশী কাল ধরে চলছে এ দুঃশাসন। কিন্তু জনগণের মাঝে এ দুর্বৃত্ত শাসনের নির্মূলে লড়াই কই?
প্রখ্যাত ইসলামী বক্তা জাকির নায়েক তাঁর কোন বক্তৃতাতে সন্ত্রাসের পক্ষে কথা বলেছেন –সে প্রমান নাই। তাঁর “পিস টিভি” সন্ত্রাসের পক্ষ কথা বলেছে -সে প্রমাণও নাই। অথচ জাকের নায়েককে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে ভারতের মোদি সরকারের ন্যায় হাসিনা সরকারও তাঁর পিস টিভিকে বন্ধ করে দিল। এখানে মোদি ও হাসিনার ঘোষিত যুদ্ধটি ইসলামের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের কোন আলেম সন্ত্রাসে উৎসাহ দিয়ে ওয়াজ করেছেন –সে প্রমাণ নাই। অথচ সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বহু আলেমকে বহুকাল যাবত জেলে রাখ হয়েছে।
অথচ শেখ হাসিনা গুম-খুনে উৎসাহ দিয়েছেন -সে প্রমাণ তো অনেক। জনসভায় তিনি এক লাশের বদলে ১০ লাশ ফেলতে বলেছেন। পুলিশের পরিবার ক্যান্টনমেন্টে থাকে না –এ যুক্তিতে পুলিশের পরিবারের উপর হামলার উসকানি দিয়ে চট্রগ্রামে বক্তৃতা দিয়েছেন এবং তা নিয়ে বইও লিখেছেন। হাসিনা যে নৃশংস ফ্যাসিবাদী -তার প্রমাণ তো তিনি নিজেই। অথচ সভ্য দেশে ফ্যাসিবাদের ন্যায় মানবতা বিরোধী মতবাদের পক্ষে কথা বলা নিষিদ্ধ ও সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোন ফ্যাসিবাদীর রাজনৈতিক অধিকার থাকতে পারে না। অথচ বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সে মতবাদ নিয়ে রাজনীতি করছেন।
মহান আল্লাহতায়ালা সুরা আল ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে মুসলিমদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতির মর্যাদা দিয়েছেন। সেটি এজন্য নয় যে তারা বেশী বেশী নামাজ-রোজা-হজ্জ পালন করে। বরং এজন্য যে তারা অন্যায় ও দুর্বৃত্তির নির্মূলে এবং ন্যায় ও সুবিচারের প্রতিষ্ঠায় জিহাদ করে। পরিতাপের বিষয় হলো, বাঙালি মুসলিমদের জীবনে নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত কিছুটা গুরুত্ব পেলেও জিহাদ আদৌ গুরুত্ব পায়নি। ফলে চোর-ডাকাতের নির্মূলের কাজটিও হয়নি। ফলে সহজ বিজয় পেয়েছে চোরতন্ত্র।
ঘরে আগুন লাগলে সে আগুন দ্রুত থামাতে হয়। সেটি না করে স্রেফ দোয়া-দরুদ নিয়ে বসে থাকলে চলে না। তেমনি দেশে চোরতন্ত্র তথা চোরদের শাসন প্রতিষ্ঠা পেলে স্রেফ নামাজ-রোজা পালন করে সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণের কাজ হয়না। এরূপ নিষ্ক্রিয়তাও মহান আল্লাহতায়ালাও খুশি হন না। মহান নবীজী (সা:) ও তার সাহাবাগণ তাই জিহাদ করেছেন। জিহাদই মু’মিনের রাজনীতি। অর্ধেকের বেশী সাহাবা সে মহৎ কাজে শহীদ হয়ে গেছেন। সভ্য ভাবে বাঁচা ও সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণের সেটিই হলো কাঙ্খিত খরচ। এটি জান্নাতের পথে চলার খরচও। জিহাদের সে পথটি না ধরলে বাঁচতে হয় চোর-ডাকাতের কাছে আত্মসমর্পণ নিয়ে। পরিতাপের বিষয় হলো, বাঙালি মুসলিমগণ আত্মসমর্পণের সে পথটিই বেছে নিয়েছে। তাই বাংলাদেশের বুকে চোর-ডাকাতদের এ দখলদারীর মূল কারণ, মুসলিমদের মাঝে এই জিহাদশূণ্যতা। তবে এটি শুধু জিহাদশূণ্যতা নয়, সুস্পষ্ট আলামত ঈমানশূণ্যতারও। ২৬/১১/২০২২
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018