বাংলাদেশে দুর্বৃত্তদের দখলদারি এবং দুর্বৃত্তদের সম্মানিত করার অপসংস্কৃতি
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on September 10, 2023
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
চোর-ডাকাতদের দখলদারি ও চোর-ডাকাত প্রতিপালন
বাংলাদেশের উপর চলছে এক নৃশংস ডাকাত দলের দখলদারি। তাদের মুখোশটি রাজনীতির, কিন্তু কাজটি দেশ ও দেশবাসীর উপর অবিরাম চুরি-ডাকাতির। তাদের অপরাধের কাহিনী কারোই অজানা নয়। জীবাণু যেমন রোগের বিস্তার ঘটায়, অপরাধীরা তেমনি অপরাধের বিস্তার ঘটায়। তাদের দখলদারির কারণে বাংলাদেশে চলছে গুম, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, চুরিডাকাতি, ব্যাংকডাকাতি ও ভোটডাকাতির ন্যায় নানারূপ অপরাধের প্লাবন। গণতন্ত্র ও মানবিক অধিকার এখন কবরে শায়ীত। বাংলাদেশের বুকে আর কোন ক্ষেত্রে দুর্বৃত্ত-প্রতারকের এতো ভিড় নেই -যা দেখা যায় দেশটির রাজনীতিতে। এসব দুর্বৃত্তগণ বুঝতে পেরেছে, হাটে বাজারে প্রতারণা করে আর কতই বা কামাই করা যায়? কত ঘরেই বা চুরি-ডাকাতি করা যায়? রাজনীতির বাইরে থেকে গ্রাম-গঞ্জে ও হাট-বাজারে চুরি-ডাকাতি ও প্রতারণা করার ভয়ানক বিপদ রয়েছে। তখন জানের সুরক্ষা দেয়ার কেউ থাকে না। ফলে গণপিটুনিতে মারা পড়ার বিপদ আছে। পয়সা না দিলে পুলিশও ধাওয়া করে। আদালতেও শাস্তি হয়। সভ্য রাষ্ট্রে তাই অপরাধী চরিত্রের দুর্বৃত্তগণও অপরাধে নামতে ভয় পায়। কিন্তু অপরাধীদের সে ভয় বাংলাদেশে নাই। বরং ভয়ে ভয়ে বাঁচছে দেশের সাধারণ মানুষ।
দেশের রাজনীতি চোর-ডাকাত ও ভোটডাকাতদের দখলে যাওয়ায় দেশের চিত্রই পাল্টে দিয়েছে। সভ্য দেশের যে রাজনীতি সমাজ থেকে দুর্বৃ্ত্তির বিলুপ্তি ঘটায় ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয় -সে রাজনীতির অঙ্গণ এখন নৃশংস অপরাধীদের দখলে। সকল সভ্য আচারের ন্যায় অসভ্য আচারের শুরুটিও যে রাজনীতি থেকে -বাংলাদেশ সেটিই প্রমাণ করছে। রাজনীতিতে দখলে নিতে সমর্থ হলে অপরাধীদের আর কোন বিপদের ঝুঁকি থাকে না। নানারূপ অপরাধের দরজা তখন খুলে যায়। দেশের পুলিশ, প্রশাসন, সামরিক বাহিনী, আদালত, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শাসনক্ষমতার কর্তা ব্যক্তি তখন অপরাধীদের রক্ষকে পরিণত হয়। তাদের সবাই তখন অপরাধীর সক্রিয় সহযোগীতে পরিণত হয়। কারণ, তারা সবাই একই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সৈনিক। তখন তাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য হ্য়, দেশের সম্পদের উপর অবাধ ডাকাতি। তখন বাধা দেয়ার কেউ থাকে না। বরং ডাকাতের সংখ্যাবৃদ্ধি ও ডাকাত প্রতিপালন তখন ডাকাত দল প্রধানের মূল এজেন্ডা হয়। দলীয় ডাকাতদের প্রতিপালেনর স্বার্থেই দেশের ব্যাংকগুলি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট ও দেশের রাজস্ব ভান্ডার থেকে বহু বিলিয়ন ডলার চুরি করা সহজ করা হয়েছে। এবং সহজ করে দেয়া হয় দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার আত্মসাৎ । এক পদ্মা ব্রিজ থেকেই লুট হয়ে গেছে বহু হাজার কোটি টাকা। বিশ্ব ব্যাংক ব্রিজটি মাত্র ১০ হাজার কোটি টাকা করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু খরচ দেখানো হয় ৩৪ হাজার কোটি টাকার। অতিরিক্ত খরচের আয়োজনটি ছিল দলীয় চোর-ডাকাতদের পেট ভরার জন্য।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় প্রতারক রূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে ভোট ডাকাত শেখ হাসিনা। তার পূর্বে সে স্থানে ছিল তার পিতা শেখ মুজিব। তারা জনগণকে প্রতরণা করেছে ভোট, ভাত ও গণতন্ত্রের নামে। তারা উভয়েই গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠা দিয়েছে ফ্যাসিবাদকে। ছিনিয়ে নিয়েছে ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকারসহ সকল মানবিক অধিকার। মুজিব সোনা বাংলা গড়ার নামে উপহার দিয়েছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ -যাতে মৃত্যু ঘটেছে ১৫ লাখের বেশী মানুষের। তারাই বাংলাদেশের অপরাধ জগতের ইঞ্জিন। বাংলাদেশ আজ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তার মূল কারণ তারাই। তাদের উভয়ের প্রতারণার শিকার হয়েছে বাংলাদেশের সমগ্র জনগণ। বাংলাদেশে আজ ডাকাতকে ডাকাত বলার ন্যায় সত্য কথা বলাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ; তাতে পুলিশের হামলা, গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
সংস্কৃতিটি চোর-ডাকাতদের সম্মানিত করার
বাংলাদেশের সকল ব্যর্থতার জন্য শুধু কি সরকার দায়ী? জনগণও কি কম অপরাধী? প্রতিটি সভ্য মানুষের জীবনে অবিরাম লড়াই থাকে। সেটি যেমন তাঁর নিজ গৃহ থেকে আবর্জনা নির্মূলের, তেমনি নিজ চেতনার ভূমি থেকে জাহিলিয়াত ও দেশ থেকে দুর্বৃত্তি নির্মূলের। এরূপ লড়াই নিয়ে বাঁচাই হলো ইসলামের সংস্কৃতি। এবং এ লড়াইটি হলো মুসলিম জীবনের সর্বোচ্চ ইবাদত তথা জিহাদ। এ ইবাদত বন্ধ হলে কেউ ঈমানদার থাকে না। তখন শুধু রাষ্ট্রই শয়তানী শক্তির দখলে যায় না, নিজ চেতনার ভূমিও তখন সেক্যুলারিজম, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্রের ন্যায় হারাম মতবাদের দখলে যায়। প্রকৃত ঈমানদারের তাই গৃহে শুধু টুপি, জায়নামাজ ও তাসবিহ থাকে না, থাকে পবিত্র কুর’আনের তাফসির ও ইসলামি বইপুস্তক এবং থাকে যুদ্ধের সর্বাধুনিক হাতিয়ার। তাই অনেকগুলি ঢাল-তলোয়ার নবীজী (সা:)’র ঘরেও ছিল। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার সে নির্দেশটি এসেছে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে। সেটি এসেছে সুরা আনফালের ৬০ নম্বর আয়াতে।
ঈমানদারের জীবনে যুদ্ধের প্রস্তুতি থাকার কারণেই তার জীবনে দুর্বৃত্ত শক্তির গোলামী বা তাদের প্রতি আত্মসমর্পণ থাকে না। অথচ বাঙালি মুসলিমগণ ইতিহাস গড়েছে চোরডাকাত, ভোটডাকাত, ব্যাংকডাকাত, গণতন্ত্রের খুনিদের ন্যায় নৃশংস দুর্বৃত্তদের কাছে আত্মসমর্পণ ও তাদের প্রতি সম্মান-প্রদর্শন নিয়ে। ভোটডাকাত হাসিনাকে তারা মাননীয় ও শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী বলে। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে তো জনগণের ভোট নিতে হয়। যে ব্যক্তি ভোটই নিল না -সে প্রধানমন্ত্রী হয় কি করে? এবং ভোটডাকাত কি করে সম্মানিত ও শ্রদ্ধেয় হয়? প্রতিটি সভ্য দেশে চোর-ডাকাতের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা হয়। তাদের অপরাধের বিচার হয় এবং বিচারে তাদের কারাবন্দী করা হয়। অথচ বাংলাদেশে হয় উল্টোটি। এদেশে ভোটডাকাত অপরাধীকে বরং সম্মানিত করা হয়। তাকে ক্ষমতার শীর্ষে বসানো হয়। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম যে স্বৈরশাসক কথাবলা, ভোটদান, লেখালেখি ও মিছিল-মিটিংয়ের স্বাধীনতা কেড়ে নেয় সে হলো শেখ মুজিব। অথচ বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ গণতন্ত্রের এই খুনি এবং স্বাধীনতার হননকারি এই ফ্যাসিস্টকে বঙ্গবন্ধু ও জাতির পিতা বলে সম্মান করে। এটি কি কম বিস্ময়ের?
দায়িত্বটি দুর্বৃত্তি নির্মূলের
ইসলাম প্রতিটি মুসলিমের উপর কিছু দায়িত্ব দেয় এবং দায়িত্বপালনের কিছু নীতিমালা বেঁধে দেয়। ইসলামের আগমন স্রেফ নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতের ন্যায় ইবাদতের আনুষ্ঠিকতা প্রতিষ্ঠার জন্য আসেনি। বরং এসেছে ন্যায় ও সুবিচারের প্রতিষ্ঠা করতে এবং অন্যায় ও অবিচারের নির্মূল করতে। সে ঘোষণাটি পবিত্র কুর’আন বহুবার এসেছে। যেমন সুরা হাদীদে বলা হয়েছে: لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِٱلْبَيِّنَـٰتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلْقِسْطِ ۖ وَأَنزَلْنَا ٱلْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌۭ شَدِيدٌۭ وَمَنَـٰفِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥ وَرُسُلَهُۥ بِٱلْغَيْبِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌۭ ٢٥
অর্থ: নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি সুস্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের উপর নাজিল করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি -যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠান দিতে পারে। আমি লৌহও দিয়েছি -যাতে রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি এবং রয়েছে মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ। এসব এজন্য যে, (আল্লাহ) প্রকাশ করে দিবেন কে আল্লাহকে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদের সাহায্য করে। আল্লাহ অবশ্যই শক্তিমান ও পরাক্রমশালী। -(সুরা হাদীদ, আয়াত ২৫)। উপরুক্ত আয়াতে রাসূল প্রেরণ ও কুর’আন নাযিলের মধ্যে মহান আল্লাহতায়ালার সুস্পষ্ট এজেন্ডা ধরা পড়ে। সেটি অন্যায় ও অবিচারের নির্মূল এবং ন্যায় ও সুবিচারের প্রতিষ্ঠা। সে লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজন হলো দুর্বৃত্ত ও তাদের দখলদারির নির্মূল। সে নির্মূলের কাজটি নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতে হয়। সেজন্য প্রয়োজন হলো জিহাদের। সে জিহাদে অস্ত্র চাই; এবং সে অস্ত্র নির্মাণের জন্য মহান স্রষ্টার পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে লৌহ। মহান আল্লাহতায়ালা দেখতে চান তাঁর সে ঘোষিত এজেন্ডার সাথে কারা একাত্ম হলো। এ জন্যই প্রশ্ন হলো, যাদের উপর দুর্বৃত্ত নির্মূলের বিশাল দায়ভার, তারা ক্ষমতাসীন দুর্বৃত্তদের কাছে আত্মসমর্পণ করে কীরূপে? তাকে মাননীয়, শ্রদ্ধেয়, পিতা বা বন্ধুই বা বলে কীরূপে? অথচ সেরূপ করাই বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এটি চেতনার অসুস্থতার লক্ষণ। অথচ সে গভীর অসুস্থতা নিয়েই বাঙালি মুসলিমের রাজনীতি, বুদ্ধিবৃত্তি ও সংস্কৃতি।
নবীজী (সা:)’র একটি বিখ্যাত হাদীস: “ঈমানদার যখন কোন অপরাধ সংঘটিত হতে দেখবে তখন সামর্থ্য থাকলে সে অপরাধকে শক্তি দিয়ে রুখবে। যদি শক্তি দিয়ে রুখার সামর্থ্য না থাকে তবে মুখের কথা দিয়ে রুখবে। যদি সে সামর্থ্যও না থাকে তবে মন থেকে তাকে ঘৃণা করবে। আর এটিই হলো ঈমানের সবচেয়ে নিম্মতম স্তর।” উপরুক্ত হাদীস থেকে সহজেই বুঝা যায়, যার মধ্যে ঘৃণার সামর্থ্যটুকুও নাই, বুঝতে হবে তাদের মাঝে ঈমান বলে কিছুই নাই। তাই ঈমাদারকে শুধু নামাজ-রোজা পালনের সামর্থ্য থাকলে চলে না, তাকে দুর্বৃত্তকে ঘৃণা করার সামর্থ্যও অবশ্যই থাকতে হয়। সে ঘৃণার মধ্যেই তার ঈমানদারি। এবং বেঈমানী হলো অপরাধীদের সম্মান করা ও তাদের পক্ষ নেয়া। ফলে যারা শেখ হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাত, গণতন্ত্রের খুনি, স্বাধীনতা হরণকারির ন্যায় নৃশংস অপরাধীকে ঘৃণা না করে তাকে মাননীয় ও শ্রদ্ধেয় বলে তাদেরকে কি ঈমানদার বলা যায়? একই রূপ অপরাধ হলো, শেখ মুজিবের ন্যায় অপরাধীকে সম্মান করা।
পাকিস্তান আমলে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ছিল। তারা ভোট দিতে পারতো। ছাত্র রাজনীতি ছিল। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সংসদ নির্বাচন হত। তখন মিটিং-মিছিল করার স্বাধীনতা ছিল; বহু শত মিটিং করেছে খোদ শেখ মুজিব। কিন্তু ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর শেখ মুজিব কেড়ে নেয় ভোটের অধিকার, কথা বলা ও মিটিং-মিছিলের স্বাধীনতা। সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে একমাত্র তার নিজের দল বাকশাল বাঁচিয়ে রাখে। একই নীতি শেখ হাসিনার। শেখ হাসিনার ন্যায় শেখ মুজিবেরও ছিল ইসলাম-ভীতি। মুজিব ও হাসিনা উভয়ই আলেমদের জেলে ঢুকিয়েছে। হিফাজতে ইসলামের শত শত নিরপরাধ মুসল্লীদের হত্যায় শাপলা চত্বরে গণহত্যা চালিয়েছে। এরূপ গণহত্যাকারিকে সম্মান দেখানো তো হারাম। এটি কবিরা গুনাহ। মুসলিমকে বাঁচতে এরূপ অপরাধীদের নির্মূলের জিহাদ নিয়ে। অথচ বাংলাদেশে সে ইসলাম বেঁচে নাই।
গরু-ছাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট
সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহতায়ালা কিছু মানুষকে গরু-ছাগল তথা গবাদী পশুর ন্যায় পশু বলেছেন। আবার কিছু মানুষকে পশুর চেয়ে অধম তথা নিকৃষ্ট বলেছেন। পবিত্র কুর’আন তাঁর সে বিখ্যাত বয়ানটি হলো: “উলায়িকা কা’আল আনয়াম, বালহুম আদাল”। অর্থ: “ঐ লোকগুলিই হলো গবাদি পশুর ন্যায়, বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট”। মহান আল্লাহতায়ালার সে জ্ঞানসমৃদ্ধ নির্ভূল বানীর সাক্ষাৎ পরিচয় মিলবে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের চরিত্রের দিকে নজর দিলে। গরু-ছাগলের সামনে কেউ খুন হলে, ধর্ষিতা হলে বা ডাকাতির শিকার হলে গরু-ছাগল তাতে বাধা দেয় না, প্রতিবাদও করে। মনের আনন্দে সে ইতর পশুগুলি ঘাস খায়। এটিই পশু চরিত্র। বাংলাদেশেও রয়েছে এমন কোটি কোটি মানবরূপী জীব যাদের সামনে ভোটডাকাতি হলে বা শাপলা চত্বরের গণহত্যার ন্যায় গণহত্যা হলেও তারা নিরব ও নিষ্ক্রিয় থাকে। রাস্তায় নেমে তারা কোন প্রতিবাদ করে না। তবে বহু বাংলাদেশী গবাদি পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। গরু-ছাগলেরা খুন-ধর্ষণের কান্ড দেখে নিরব ও নিষ্ক্রিয় থাকলেও তারা কখনোই অপরাধীদের সম্মানিত করে না। কিন্তু বাংলাদেশে এমন মানুষের সংখ্যা কোটি কোটি যারা গণতন্ত্রের খুনি, স্বাধীনতা-হরনকারি ও হাজার হাজার মানুষের খুনিকে বঙ্গবন্ধ, জাতির পিতা ও মাননীয় বলে সম্মানিত করে। এটি হলো অপসংস্কৃতি। এমন সংস্কৃতি বিপুল ভাবে বেঁচে আছে বাংলাদেশে। তাই বাংলাদেশ পাল্টাতে হলে এরূপ মানুষদের পাল্টাতে হবে। পরিতাপের বিষয় হলো বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনে কাজ বার বার হলেও জনগণকে পাল্টানোর কাজ হচ্ছে না। একাজ দেশের জ্ঞানবান বুদ্ধিজীবীদের। কিন্তু বুদ্ধিজীবীরাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশী রোগাগ্রস্ত। তারা শুধু রোগই ছড়াতে পারে, রোগের আরোগ্য নয়। বাংলাদেশ আজ যে অবস্থায় পৌঁছেছে তার জন্য তারাও কি কম দায়ী?
জনগণ যদি ভীরু, কাপুরুষ ও দুর্বৃ্ত্তদের চাটুকরে পরিণত হয়, তবে কি সেদেশে কখনো গণতন্ত্র, মানবিক অধিকার, সুশাসন ও সুস্থ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পায়? এমন দেশ যে মুজিব-হাসিনার ন্যায় প্রতারকদের দখলে যাবে -তা নিয়ে কি সন্দেহ থাকে? এমন ভীরু মানুষের দেশে চোর-ডাকাতগণ নির্ভয়ে চুরি-ডাকাতি ও ভোটডাকাতি করে। এবং সফল ডাকাতি নিয়ে তারা উৎসবও করে। যেমন সেরূপ উৎসব করতে দেখা গেছে ২০১৮ সালে ভোটডাকাতির পর। প্রশ্ন হলো, আজ যেরূপ হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাতের শাসন বাংলাদেশীদের ঘাড়ে চেপে বসেছে -সেটি কি বিশ্বের আর কোন দেশে আছে? প্রতিবেশী ভারত, নেপাল বা শ্রীলংকাতেও কি এমন ভোটডাকাতের শাসন দেখা যায়? একটি গৃহের কর্তাব্যক্তি যদি চোর-ডাকাত হয় তবে কি সমাজে সে গৃহের বাসিন্দাদের কোন ইজ্জত থাকে? তেমনি কোন দেশের শাসক যদি চোর-ডাকাত হয় তবে বিশ্বের দরবারে কি সে দেশের কোন ইজ্জত থাকে? কারণ কোন সভ্য মানুষই এরূপ অসভ্যদের সম্মান করে না। হাসিনা তাই পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশীদের অপমান বাড়িয়েছে।
ভোটডাকাতির নতুন প্রস্তুতি
চোর-ডাকাতগণ চুরি-ডাকাতি ছাড়া বাঁচে না। তাদের সমস্যা হলো, সভ্য ও ভদ্র ভাবে বাঁচায় তাদের রুচি থাকে না। নির্বাচনে ভোট ডাকাতিতে যেমন বদ্ধপরিকর, তেমনি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংকডাকাতি, শেয়ার মার্কেটের উপর ডাকাতি, প্রকল্পের অর্থ ডাকাতি এবং রিজার্ভের উপর ডাকাতি করা মূল এজেন্ডা হয়ে দাঁড়ায়। সভ্য হতে তারা রাজি নয়। ডাকাতগণ চেষ্টা করে চুরি-ডাকাতির সংজ্ঞাকে পাল্টিয়ে দিতে। দুর্বৃত্তিই তাদের কাছে একমাত্র গৃহীত নীতি। ফলে চুরি-ডাকাতিকে তারা চুরি-ডাকাতি বলতে রাজী নয়। এজন্যই শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ভোটডাকাতিকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলে। ভোটডাকাতিতে হাতে-নাতে ধরা পড়ার পরও হাসিনা জোর গলায় বলে, আওয়ামী লীগ কোন কালেই ভোটচুরি বা ভোটডাকাতি করে ক্ষমতায় আসেনি। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সুষ্ঠ নির্বাচন বলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুশত শিক্ষকও সেটিকে সুষ্ঠ নির্বাচন বলেছে। হাসিনার অভিভাবক দিল্লির শাসকচক্রও সে নির্বাচনকে সুষ্ঠ নির্বাচন বলেছে। অথচ সে নির্বাচনে ভোটডাকাতির প্রমাণগুলি তো সুস্পষ্ট। ৩০০ সিটের সংসদে ২৯৩ সিটে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্রদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এমন বিজয় কি আওয়ামী লীগ অতীতে কখনো পেয়েছে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যখন নির্বাচন হয়েছে শেখ হাসিনা তখন বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও মেজর আব্দুল মান্নানের কাছে ঢাকা শহরে পরাজিত হয়েছে।
ডাকাতগণ যত সতর্কতার সাথে ডাকাতি করুক না কেন, তারা ডাকাতির সুস্পষ্ট স্বাক্ষর রেখে যায়। নির্বাচন কমিশন তথ্য দিয়েছে, ১০৩টি আসনের ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতকরা ১০০ ভাগ ভোট দেয়া হয়। অর্থাৎ যারা মৃত ও প্রবাসী তাদের ভোটও দেয়া হয়। পৃথিবীর কোন দেশেই এরূপ শতকরা শতভাগ ভোটদানের ঘটনা কোন কালেই ঘটেনি। এমনকি শতকার ৮০ ভাগ ভোটদানের ঘটনাও কোন গণতান্ত্রিক দেশে কোন কালে ঘটেনি। এমন কি বাংলাদেশেও এ অবধি কোন নির্বাচনে শতকরা ৭৫ ভাগ ভোটার ভোট দেয়নি। অথচ ভোটডাকাতিতে এরূপ অসম্ভবকেও সম্ভব করা হয়। কারণ, তখন ভোটারগণ ভোট দেয় না। সরকারি ডাকাতগণ তাদের হাতে গচ্ছিত ব্যালটগুলিতে সিল মেরে নিজেরা ভোটবাক্স ভর্তি করে। সিল মারার সময় কোন ব্যালটকেই তারা বাদ রাখেনা। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তথ্য হলো: ১,২০৫টি ভোটকেন্দ্রে ৯৩-৯% ভোট দেয়া হয়। ৬,৪৮৪ কেন্দ্রে ৯০-৯৫% ভাগ ভোট দেয়া হয়। এবং ১৫,৭১৯ কেন্দ্রে ৮০-৮৯% ভোট দেয়া হয়। -(সূত্র: সৈয়দ আবদাল আহমেদ; দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৮/০৯/২০২৩)। এটাই যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তবে তো আগামীতে ভোটডাকাতগণ এরকম ভোট ডাকাতির নির্বাচনই বার বার উপহার দিতে থাকবে। এবং নির্বাচন কমিশনও সেটিকে সুষ্ঠ নির্বাচন রূপে মেনে নিতে বলবে। চোর-ডাকাতেরা ভালো কাজ করতে জানে না, অপরাধ করাই তাদের স্বভাব। তাই শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিবে -সেটি একমাত্র নির্বোধগণই আশা করতে পারে।
হাসিনা ভোটডাকাতির স্বাদ বুঝে গেছে। সে জানে ভোট ডাকাতিতে জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইতে হয় না। মিটিং মিছিলের প্রয়োজন হয় না। বিজয়ী হওয়াটি সহজ। ভোটের আগের দিন পুলিশ, সরকারি কর্মচারি ও নিজ দলের গুন্ডাদের দিয়ে ব্যালটগুলি ছিঁড়ে ব্যালট বক্স ভরলেই চলে। এটিই হলো হাসিনার সুষ্ঠ নির্বাচন। হাসিনা দেখেছে এমন ডাকাতিকে দেশের নির্বাচনী কমিশন ও আদালত সুষ্ঠু নির্বাচন বলে রায় দেয়। দেশের বহুশত বুদ্ধিজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুশত অধ্যাপক এরূপ ভোটডাকাতির নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলে। পুলিশ এবং প্রশাসনও তখন ডাকাতদের সাথে কাজ করে। নিরস্ত্র জনগণের তখন সামর্থ্য থাকে না তাকে হটানোর। অতএব পুণরায় ভোটডাকাতিতে হাসিনার সমস্যা কোথায়? এরূপ অবস্থায় হাসিনা কেন সুষ্ঠু নির্বাচনের ঝুঁকি নিতে যাবে?
হাসিনা জানে, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তার জয়ের কোন আশা নাই। সে তার নিজ কুকর্মের ইতিহাস অন্য যে কোন ব্যক্তির চেয়ে অধিক জানে। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে সে বহু লক্ষ মানুষের উপর নৃশংস নির্যাতন করেছে। শত শত মানুষকে গুম, খুন ও অপহরণ করেছে। বহু হাজার মানুষকে জেলে তুলেছে। বহু নিরপরাধ মানুষকে সে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। হাজার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা সাঁজিয়েছে। এভাবে রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোকে নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। জনগণ ভোট দিয়ে হাসিনার এই অসভ্য ও নৃশংস শাসন থেকে মুক্তি পেতে চাইবে -সেটিই তো স্বাভাবিক। ফলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন মানেই শেখ হাসিনা ও তার ডাকাত দলের রাজনৈতিক কবর। হাসিনা কি কি নিজের কবর নিজে খুড়বে? ফলে এটিই স্বাভাবিক যে, সে আপ্রাণ চেষ্টা করবে আরেকটি ভোটডাকাতির। ভোটডাকাতিকে শেখ হাসিনা তার নিজ গৃহের অভ্যন্তরীণ বিষয় মনে করে। তাই ডাকাতি থামাতে বললে সে সেটিকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে। নতুন ভোটডাকাতির জন্য সে যে কতটা বেপরওয়া সেটি ডাকাতির প্রস্তুতি থেকে বুঝা যাচ্ছে। এ ডাকাতির কাজে সরকারি কর্মচারিদের সহযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে তাদেরকে দামী গাড়ি ও নানারূপ সুযোগ-সুবিধা বিতরণ করা হচ্ছে। শত শত কর্মচারিদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের কারারুদ্ধ করা হচ্ছে। তাই যারা মনে করে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মেনে নিবে এবং দেশে একটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা দিবে -তারা বস্তুত বোকার স্বর্গে বাস করছে।
ডাকাত নির্মূলের দায় কি বিদেশীদের?
প্রশ্ন হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা কি বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে? বুঝতে হবে, বাংলাদেশকে চোর-ডাকাতদের হাত থেকে মুক্ত করার দায়ভারটি যুক্তরাষ্ট্রের নয়। কোন বিদেশীরই নয়। মূল দায়িত্বটি বাংলাদেশের জনগণের। যার গৃহে ডাকাত ঢুকে গৃহস্বামীর প্রথম দায়িত্ব হলো ডাকাত তাড়ানো। ঘরের মালিক যদি ঘুমিয়ে থাকে তবে অন্যরা কি করবে? এ পথিবীর যেখানেই কোন সভ্য রাষ্ট্র নির্মিত হয়েছে, সেখানে সে নির্মাণের কাজটি খোদ জনগণ নিজ হাতে করেছে।
তাছাড়া দুর্বৃত্ত নির্মূলে কাজটি ইসলামে কোন মামূলি বিষয় নয়। এটিই সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত, এটি জিহাদ। এ ইবাদতটি না হলে সভ্য ভাবে বাঁচা ও বেড়ে উঠার কাজটি আদৌ হয়না। ফলে দেশে কত লক্ষ মসজিদ নির্মিত হলো, কত কোটি মানুষ নামাজ-রোজা পালন করলো -তা দিয়ে একটি সভ্য রাষ্ট্র নির্মিত হয়না। বাংলাদেশের মতো এতো মসজিদ দুনিয়া আর কোথায় আছে? এতো কোটি মানুষ কি কোন দেশে নামাজ পড়ে? তাবিলিগ জামায়াতের এত বড় ইজতেমা কি দুনিয়ার আর কোথাও হয়? কিন্তু তাতে কি বাংলাদেশ সভ্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে? সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণের শর্ত হলো অসভ্য, বর্বর ও দুর্বৃত্তদের নির্মূল করতে হয়। গৃহে শান্তিতে বসবাস করতে হলে সে গৃহের আবর্জনা নিয়মিত সাফ করতে হয়। নইলে রোগে ভুগে দ্রুত মারা যেতে হয়। শান্তিতে বসবাস করতে হলে দুর্বৃত্তদের অবশ্যই নির্মূল করতে হয়। নির্মূলের সে অস্ত্রটি হলো জিহাদ। তাই যেখানে জিহাদ নাই সেখানে সভ্য রাষ্ট্রও নাই। সেখানে পুরা দখলদারিটি দুর্বৃত্তদের।
সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণের কাজটি কখনোই শুধু মাত্র মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ এবং নামাজ-রোজা পালনে হয় না। সেটি সম্ভব হলে বাংলাদেশই হতো বিশ্বের সবচেয়ে সভ্য রাষ্ট্র। দেশটি তখন দুর্বৃত্তিতে ৫ বার বিশ্ব রেকর্ড গড়তো না -যেমনটি গড়েছে এ শতাব্দীর শুরুতে। কারণ, বাংলাদেশে যত মসজিদ-মাদ্রাসা ও নামাজী-রোজাদার আছে তা সম্ভবত বিশ্বের আর কোন দেশে নাই। কীভাবে সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হয় সেটি নবীজী (সা:) ও তাঁর সাহাবাগণ হাতে-কলমে শিখিয়ে গেছেন। সে কাজে দখলদার চোরডাকাত, খুনি ও দুর্বৃত্ত জালেমদের নির্মূল করতে হয়। সে নির্মূলে কাজে নবীজী (সা:) ও তাঁর সাহাবাদের তাই জিহাদে নামতে হয়েছে। এবং সে জিহাদে অর্ধেকের বেশী সাহাবাকে শহীদ হতে হয়েছে। একাজে অর্থ, রক্ত, মেধা ও শ্রমের বিপুল কুরবানি আছে। নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতে এতো কুরবানি নাই। সর্বদ্রষ্টা মহান আল্লাহ সুবহানুতায়ালা সেটি জানেন। তাই যে ইবাদতে সর্বাধিক কুরবানী, তাতেই তিনি রেখেছেন সবচেয়ে পুরস্কার। সেটি তাই দুর্বৃত্ত নির্মূলের জিহাদে।
কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ এই ইবাদতে নেই। ফলে দেশটিতে দুর্বৃত্ত নির্মূলের কাজটি আদৌ হয়নি। বরং চলছে দুর্বৃত্তদের মাননীয় ও শ্রদ্ধেয় বলার কাজ। এমন অপসংস্কৃতির কারণেই দেশটি দীর্ঘকাল অসভ্য, বর্বর এবং প্রতারকদের হাতে অধিকৃত। বাংলাদেশী মুসলিমগণ জালেম শাসকের পুলিশ ও RAB’য়ের হাতে যুগ যুগ নির্যাতিত হয়ে রাজি। নির্যাতিত হয়ে মরতেও রাজি। কিন্তু জিহাদের পথে নামতে রাজি নয়। তারা আল্লাহতায়ালার এজেন্ডার কথা ও তাঁর কাছে প্রিয়তর হওয়া নিয়ে ভাবে না। ভাবে দুনিয়া নিয়ে। আল্লাহতায়ালার চেয়ে জালেম শাসককে তারা বেশী ভয় করে। এমন জনগণদের দিয়ে কি কখনো সভ্য রাষ্ট্র নির্মিত হয়? সভ্য রাষ্ট্র নির্মাণের ভাবনা ও তাড়না এমন মানুষদের মাঝে কাজ করে না। তাই বাংলাদেশের মূল বিপটি শুধু ভোটডাকাত ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনাকে নিয়ে নয়, বরং ভয়ানক বিপদটি দেশের ভাবনাশূণ্য ও জিহাদশূণ্য জনগণকে নিয়ে। যারা ভাবনাশূণ্য হয়, তারাই বিবেকশূণ্য হয়। এবং একমাত্র বিবেকশূণ্য ও ইসলামী চেতনাশূণ্য মানুষদের কাছেই গণতন্ত্রের খুনি, স্বাধীনতা হরনকারী, আলেমদের হত্যাকারী এবং ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের সেবাদাসও জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণ্য হয়। ১০/০৯/২০২৩
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018