বাঙালী মুসলিমের বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যর্থতা
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on December 28, 2020
- Bangla Articles, শিক্ষা ও সংস্কৃতি
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
রোগ ভাবনাশূণ্যতার
তোমরা কেন ভাবোনা (আ’ফালাতাফাক্কারুন), কেন আক্বলকে কাজে লাগাও না (আ’ফালা তাক্বীলুন), কেন মনকে গভীর ভাবে নিবিষ্ট করোনা (আ’ফালা তাদাব্বারুন)-পবিত্র কোর’আনে এ সিরিয়াস প্রশ্নগুলো খোদ মহান আল্লাহতায়ালার। মহান স্রষ্টার এ প্রশ্নগুলো তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব জাতিকে উদ্দেশ্য করে। মহাজ্ঞানীর সে প্রশ্নগুলো কি মুসলিম মনেও নাড়া দিচ্ছে? পবিত্র কোর’আনে এ প্রশ্নগুলো আমরা বার বার পড়ি। পড়ার পর বেহুশের মত আবার ঘুমিয়ে পড়ি। পশুপাখি ও গাছপালাকে উদ্দেশ্য করে এ প্রশ্নগুলো করা হলে আছড় হতো না। কারণ চিন্তা-ভাবনার সামর্থ্য পশুপাখি ও গাছপালাকে দেয়া হয়নি্। কিন্তু মুসলিমদের বিশেষ করে বাঙালী মুসলিমদের অবস্থা কি তা থেকে ভিন্নতর? অথচ ঘুমন্ত বিবেককে জাগ্রত করাই ছিল এ প্রশ্নগুলোর মূল উদ্দেশ্য। মহান আল্লাহতায়ালার এ প্রশ্নাবলীকে মুসলিমগণ যতটা মুখস্থ করেছে -তা নিয়ে ততটা চিন্তা করেনি। সেগুলোকে আমলেও নেয়নি। আমলে নিলে বাঙালী মুসলিমদের মনে বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লব আসতো। কিন্তু সেরূপ বিপ্লব দূরে থাক, তার ধারে-কাছেও নাই। ফলে বাংলাদেশের মত ১৭ কোটি মুসলিমের দেশে বহু লক্ষ হাফেজ ও ক্বারী সৃষ্টি হলেও ফকিহ, মোজতাহিদ বা চিন্তাবিদ তেমন গড়ে উঠেনি। ১৭ কোটির মুসলিমের মধ্য থেকে ক’জন ক’খানা তাফসির বা ইসলামের উপর মৌলিক বই লিখেছেন? জনবহুল এ মুসলিম দেশটিতে দ্বীনী মাদ্রাসায় যে তাফসির গ্রন্থগুলো পড়া হয় তার প্রায় অধিকাংশই অন্যান্য ভাষা থেকে অনুদিত। দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান, ইতিহাস বা জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্য শাখাতেই বা ক’জন ক’খানা গ্রন্থ রচনা করেছেন? বাঙালী মুসলিমের বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যর্থতার বড় দলিল হলো এগুলো।
তবে বাঙালী মুসলিমের বুদ্ধিবৃত্তিক এ পশ্চাৎপদতা আজকের নয়, বহু শত বছরের। বাংলাদেশে ইসলামের প্রবেশ বঙ্গবিজয়েরও বহু পূর্বে। মুসলিমদের হাতে বঙ্গবিজয় হয়েছে প্রায় আটশত বছর আগে। এ দীর্ঘ সময়ে জাতির চিন্তা-চেতনায় বিপ্লব আসতে পারতো। সৃষ্টি হতে পারতো বহু লক্ষ বইয়ের বিশাল ভূবন। যেমন হয়েছে আরবী, ফার্সী ও উর্দুতে। ইসলামের আগমনের মাত্র একশত বছরের মধ্যেই আরবে ও ইরানে বিস্ময়কর বিপ্লব এসেছিল বুদ্ধিবৃত্তিতে। অথচ সে আমলে তাদের সমুদয় লোকসংখ্যা আজকের ঢাকা শহরের চেয়ে বেশী ছিল না। এমনকি আফগানরাও ছিল সংখ্যায় অতি নগন্য। অথচ একমাত্র সুলতান মাহমুদের সাম্রাজ্যে যতজন বিজ্ঞানীর বসবাস ঘটেছিল, আমরা বিগত এক হাজার বছরেও ততজন বিজ্ঞানী গড়তে পারিনি। উল্লেখ্য, ইবনে সীনা, ইবনে ফারাবী, আল বেরুনীসহ সমকালীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবী তাঁর সাম্রাজ্যে বসবাস করতো।
ইসলাম আক্বল তথা বুদ্ধিবৃত্তির ধর্ম। কোরআনের প্রতিটি আয়াত ব্যক্তিকে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে। একমাত্র চিন্তা-ভাবনাই মানুষকে পশুর স্তর থেকে ফেরেশতার পর্যায়ে উঠায়। অন্যসব ধর্ম থেকে ইসলামের পার্থক্যটি এক্ষেত্রে বিশাল। একমাত্র ইসলামই চিন্তা-ভাবনাকে ইবাদতের মর্যাদা দিয়েছে। নবীজী (সা:)’র হাদীস: ‘‘আফযালুল ইবাদাহ তাফাক্কু’’। অর্থ: উত্তম ইবাদত হল চিন্তা ভাবনা করা। এক মহুর্তের চিন্তা-ভাবনাকে নবীজী (সা:) সারা রাতের নফল ইবাদতের চেয়ে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। চিন্তা-ভাবনাই সংযোগ গড়ে মহান আল্লাহতায়ালার সাথে; তাতে ওজন বাড়ে আমলের। অন্যথায় নামায-রোযার ন্যায় ইবাদত নিছক আনুষ্ঠিকতায় পরিণত হয়। যার মধ্যে চিন্তাভাবনা নাই, তার মধ্যে আল্লাহভীতিও নেই। কারণ, মহান আল্লাহতায়ালার ভয় তো আসে পরকালের ভয় থেকে। আর ভয় তো মনের বিষয়, এবং সেটি আসে নিজ পরিণতি নিয়ে গভীর ভাবনা থেকে। ভাবনাশূণ্যতা তাই পরকালের ভয়শূণ্যতার কারণ। চিন্তাশূণ্য ব্যক্তি পশু তূল্য। পশুর জীবনে যেমন ভাবনা থাকে না, তেমনি পরকালের ভয়ও থাকে না। পশুর ন্যায় এমন চিন্তাশূণ্য ব্যক্তির পক্ষে অন্য কিছু হওয়া সম্ভব হলেও কঠিন হয় মুসলিম হওয়া। এমন ভয়শূণ্যদের সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, এদের চোখ আছে – কিন্তু তা দিয়ে এরা দেখে না, কান আছে -কিন্তু তা দিয়ে এরা শুনে না, ক্বালব আছে – কিন্তু তা দিয়ে এরা ভাবে না। অথচ ভাবনার প্রক্রিয়া চালু রাখতে হলে চোখ, কান ও ক্বালবের দরজাকে সব সময় খোলা রাখতে হয়। মানব মনে সে ভাবনা প্রক্রিয়াকেই তীব্রতর করে পবিত্র কোর’আন। বিশ্বচরাচরে মহান আল্লাহতায়ালার যে নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে -সেগুলো যেমন দেখতে বলে তেমনি তা নিয়ে ভাবতেও বল। ইসলামের গৌরব কালে বুদ্ধিবৃত্তিকে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ যেমন এবাদত ভাবতো, তেমনি শাসকেরাও একাজে সহায়তা দানকে দায়িত্ব মনে করতো। ফলে বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সে সাথে রাজনৈতিক বিজয়ও এসছিল অতি দ্রুত। সমগ্র মানব ইতিহাসে সেটি তূলনাহীন।
অজ্ঞতা অসম্ভব করে মুসলিম হওয়া
বুদ্ধিবৃত্তির গুরুত্ব যে কত গুরুত্বপূর্ণ -সেটি বুঝা যায় পবিত্র কোর’আন পাকে ঘোষিত মহান আল্লাহতায়ালার একটি বয়ান থেকে। সে ঘোষণাটি হলো, ‘‘ইন্না মা ইয়াখশাল্লাহ মিন ইবাদিহিল উলামা।’’ অর্থ: সমগ্র সৃষ্টিকূলের মধ্যে একমাত্র জ্ঞানীরাই আমাকে ভয় করে। উপরুক্ত আয়াতে যে সত্যটি তুলে ধরা হয়েছে তা হলো, হৃদয়ে মহান আল্লাহর ভয় নিয়ে বাঁচা ও প্রকৃত মুসলিম হওয়ার জন্য যা অপরিহার্য -তা হলো পবিত্র কোর’আনের জ্ঞান। এর বিকল্প নেই। শূণ্যে প্রাসাদ গড়া যায় না। তেমনি মহান আল্লাহতায়ালার ভয় ও ঈমানের সৌধ কখনোই অজ্ঞতার উপর নির্মিত হয় না। নামাজ পড়েও অনেকে ঘুষ খায়, সূদ খায় এবং মিথ্যা কথা বলে। বেপর্দাও হয়। এর কারণ অজ্ঞতা। যে ব্যক্তি জ্ঞানচক্ষুতে পরকাল চোখের সামনে দেখতে পায়, সেটিকে পাপাচারে নষ্ট করতে ভয় পায়। শিশু আগুনে হাত দেয় আগুনের দাহ্য ক্ষমতা না জানার কারণে। নামাজীও তেমনি ঘুষ খায় বা মিথ্যা কথা বলে পরকালের জ্ঞান না থাকার কারণে। অজ্ঞতা নিয়েও নামাযী হওয়া যায়, রোযা বা হজ্বও কারা যায়। কিন্তু পরিপক্ক ঈমানদার ও আল্লাহভীরু যে হওয়া যায় না –সে সাক্ষ্যটি অন্য কারো নয় বরং মহাজ্ঞানী ও মহাপ্রভু মহান আল্লাহতায়ালার।
অজ্ঞতার ইসলামী পরিভাষা হলো জাহিলিয়াত, যার মধ্যে এটি বিদ্যমান তাকে বলা হয় জাহেল। আর এর বিপরীত শব্দ হলো মা’রেফাত। যিনি এর অধিকারী তিনিই আরেফ। মৃত্যুর এপারে বসে ওপারে কি হবে তা উপলব্ধি করার সামর্থ্যই হলো মা’রেফাত। এ সামর্থ্যটি চোখের নয়, এটি অন্তরের। এবং সেটি একমাত্র কোর’আন-লব্ধ জ্ঞানেই সৃষ্ঠি হয়। এমন জ্ঞানই মানুষকে পাপাচারের থেকে দূরে রাখে। অপর দিকে জাহেল শুধু নাস্তিকেরা নয়, বহু আস্তিকও। যুগে যুগে ইসলামের সর্বনাশ হয়েছে মুসলিম বেশধারী এসব জাহিল আস্তিকদের কারণে। ইবাদতের নামে এসব অজ্ঞরা স্বাস্থ্যপতন ঘটালেও তাদের মনে মহান আল্লাহতায়ালার ভয়ের চেয়ে এজিদদের ন্যায় দুর্বৃত্তদের ভয়ই অধিক ছিল। সে যুগে এজিদের বাহিনীতে যারা যুদ্ধে খেটেছে তারা কাফের ছিল না। অথচ এদের হাতে ইমাম হোসেন (রা) শুধু নিহতই হননি, তাঁর লাশকে তারা ঘোড়ার পায়ের নীচে দলিত-মথিতও করেছে। এটিও সম্ভব হয়েছিল তাদের অজ্ঞতার কারণে। একজন জ্ঞানবান ব্যক্তির কাছে এমন জঘন্য কাজ অচিন্তনীয়। অজ্ঞতার কারণেই তারা ব্যর্থ হয়েছিল ইমাম হোসেন ও তাঁর ইসলামকে চিনতে। আজও এরূপ অজ্ঞ জাহেলদের কারণে ৯০% মুসলমানের দেশে ইসলামের প্রয়োগ সম্ভব হচ্ছে না। এদের কারণে আদালত থেকে শরিয়তী আইন বিলুপ্ত। এককালে ইমাম হোসেনকে যারা হত্যা করেছিল তারাই একালে ভোট দিয়ে শরিয়তের প্রতিষ্ঠাকে রুখছে। তুরস্কে শতকরা ৯৮ভাগ মুসলমান। অথচ বেশী দিন আগের কথা নয়, মুসলিমদের ভোটেই সেদেশে জনগণকে বাধ্য করা হয়েছিল হারাম কাজে। এমনকি বাধা দেয়া হয়েছে বিদ্যালয়ে, অফিস-আদালতে ও পার্লামেন্টে মহিলাদের হিজাব পরিধানে। তাদের অজ্ঞতা শুধু নিজেকে নিয়ে নয়, বরং আল্লাহতায়ালা, আখেরাত, রোজহাশর তথা সমগ্র ইসলামকে নিয়ে।
আরো মুশকিল হলো, এরূপ অজ্ঞ বা জাহেল থাকাকে মুসলিমগণ আজ আর পাপ ভাবে না। অজ্ঞ থাকাটাই যে ইসলামে সবচেয়ে বড় পাপ –সে হুশও তাদের নাই। অথচ সব পাপের জন্ম তো এখান থেকেই। এ পাপাচার রুখতেই ইসলাম সকল নরনারীর উপর জ্ঞানার্জনকে সর্বপ্রথম ফরজ করা হয়েছে। কোর’আনের প্রথম ওহি “ইকারা” বা “পড়” হওয়ার তাৎপর্য তো এটিই। “ইকরা” বা “পাঠ করা” হলো জ্ঞানার্জনের চাবী। এ চাবী ছাড়া জ্ঞানার্জনে সামনে এগোনো অসম্ভব। কোর’আন-হাদীসের জ্ঞান নয়, নিছক অক্ষরজ্ঞানের বিনিময়ে মহান নবীজী (সা:) বদর যুদ্ধের হত্যাযোগ্য যুদ্ধবন্দীদের মুক্তি দিয়েছিলেন। বিদ্যার্জন ইসলামে কতটা গুরুত্বপূর্ণ -এটি হলো তারই উদাহরন। জ্ঞানার্জনকে অত্যাধিক গুরুত্ব দেওয়ার কারণেই সেকালে মুসলিমগণ স্বল্পসময়ে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছিলেন। অথচ আজকের মুসলিমগণ ইতিহাস গড়েছে অজ্ঞতায়। অন্য ধর্মের লোকেরা যেখানে অন্ধ, বধির ও বোবাদের জন্যও জ্ঞানার্জনের ব্যবস্থা করেছে -সেখানে বাংলাদেশের ন্যায় বহু মুসলিম দেশের অর্ধেকেরও বেশী সুস্থ্য নর-নারী আজ নিরক্ষর।
সত্য-অসত্য, ন্যায়-অন্যায়ের উপলব্ধিতে অতিশয় জরুরী হলো ব্যক্তির চিন্তার সামর্থ্য। বিবেকমান হওয়ার পথে এটিই সেরা অবলম্বন। চিন্তার সামর্থ্য একমাত্র চিন্তাতেই বৃদ্ধি পায়। চিন্তার অনভ্যাসে সুস্থ্য মানুষও আহম্মকে পরিণত হয়। তখন পঙ্গুত্ব আসে বুদ্ধিবৃত্তিতে। যেমন দীর্ঘকাল ব্যবহার না করায় রোগীর সুস্থ্য হাত-পা-গুলোও শক্তিহীন হয়। অথচ ব্যবহারে শুধু সুস্থ্যই থাকে না, সবলও হয়। নবীজী (সা:)’র আগমনে যে আরবভূমি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তানায়কদের জন্ম দিল -তা কয়েক বছর পূর্বেও দুর্বৃত্তদের লালনভূমি রূপে পরিচিত ছিল। কারণ, সে আমলে আরব জনগণ সুচিন্তা থেকে নিবৃত ছিল। তাতে মৃত্যু ঘটেছিল তাদের বিবেকের। ফলে ব্যাভিচার, দস্যুবৃত্তি, উলঙ্গতা বা নিজ কণ্যার জীবন্ত দাফনেও সে বিবেকে দংশন হতো না। এমন বিবেকহীনদেরকে সুচিন্তায় অভ্যস্থ করে কোর’আন বস্তুত তাদের মৃত বিবেককেই জীবিত করেছিল। অভ্যস্থ করেছিল এ আমৃত্যু ভাবনায় ও প্রচেষ্ঠায় যে কি করে আরো সভ্যতর হওয়া যায়। এভাবেই শুরু হয়েছিল তাদের অবিরাম উপরে উঠার প্রক্রিয়া। এর ফলেই তাঁরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা গড়তে সমর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু যখনই চিন্তা-ভাবনায় ইস্তাফা দিয়েছে -তখনই শুরু হয়েছে তাদের পতনযাত্র।
বিকল বুদ্ধিবৃত্তির ইঞ্জিন
মগজই দেহের ইঞ্জিন। এটি রুগ্ন হলে দেহ বেহুশ হয়। শক্তি হারায় হাত-পা ও দেহ। তেমনি জাতির মগজ হলো আলেম বা বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়। জাতির পতনের শুরু তাদের পচন বা অসুস্থ্যতা থেকে। এজন্যই পতনশীল একটি জাতিকে দেখে অন্ততঃ এটুকু সঠিকভাবেই বলা যায়, সে জাতির আলেমরা যথাযথ দায়িত্বপালন করেনি। বনি ইসরাইলের পতনের বড় কারণ ছিল তাদের আলেমগণ। মহান আল্লাহতায়ালা সুরা জুম্মা’তে তাদেরকে ভারবাহী গাধার সাথে তুলনা করেছেন। গাধা বই বহন করতে পারে কিন্তু সে বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে ভাবতে পারেনা। সে ইহুদী আলেমদের অনুসারি কি মুসলিমদের মাঝে কম?
বুদ্ধিবৃত্তি বা ইলমচর্চা মানুষকে ব্যক্তিস্বার্থের উর্দ্ধে উঠে সমাজ, রাষ্ট্র ও সমগ্র বিশ্বকে নিয়ে ভাবতে ও ত্যাগে উৎসাহিত করে। এগুণটি ছাড়া সমাজে উচ্চতর ও সভ্যতর বিবর্তন অসম্ভব। তখন জাতির কাঁধে ভর করে ক্ষুদ্রতা, স্বার্থপরতা ও হানাহানি। সৃষ্টিশীলতার মাঝে যে অনাবিল আনন্দ -সেটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ব্যক্তিকে ক্ষুদ্র স্বার্থ থেকে দূরে রাখতে। তখন জাগে আরো মহত্তর হওয়ার প্রেরণা। ইবনে সীনা বা ফারাবীদের ন্যায় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠশীল মানবগণ এজন্যই কখনই কোন দুর্বৃত্ত শাসকের গোলামে পরিণত হয়নি। অথচ যে সমাজে সৃষ্টিশীল মানুষের অভাব- সে সমাজে মিরজাফরদের সংখ্যাও অধিক। এ কারণেই অতীতে উপনবেশিক বৃটিশের পক্ষে শাতিল আরবে বা অন্যান্য মুসলিম ভুমিতে মুসলিম নিধনে যুদ্ধ করা বা তাদের জাহাজে কয়লা ঢালার জন্য বাংলাদেশ থেকে ভাড়াটিয়া সৈন্য পেতে বেগ পেতে হয়নি। এমন কি গোলামের সে খাতায় বাংলাদেশের জাতীয় কবি ও জাতীয় বীরও নাম লেখিয়েছে। আজও সেবাদাস পেতে অসুবিধা হচ্ছে না বহুজাতিক সাম্রাজ্যবাদীদের।
জনগণের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ হলো জ্ঞান। পানাহারে দেহের বল বাড়লেও তাতে মনের বল বাড়ে না। অথচ অন্যের গোলাম না হয়ে স্বাধীন ভাবে বাঁচার জন্য মনের বলই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। বরং দেহের বল নিয়ে অনেকেই বাজার খোঁঝে অন্যের গোলাম হওয়ার জন্য। বিশ্বে রাজনৈতিক বিপ্লব কম হয়নি, কিন্তু তাতে মানব জাতির সভ্যতর উত্তরণ ততটা হয়নি। রাজা বদল সহস্রবার হলেও এতে দাস ও ভাগ্যাহতদের ভাগ্য বদলায়নি। অথচ মানব জাতির ইতিহাসের মোড় পাল্টে দেয় ইসলাম। কারণ জ্ঞানচর্চাকে ইসলাম জনগণের স্তরে নামিয়ে আনে। পেশাদারীর স্থলে এটিকে ইবাদতে পরিনত করে। এতে বুদ্ধিবৃত্তি পরিণত হয় ব্যক্তির সার্বক্ষণিক অভ্যাসে। ফলে সুচিন্তায় তথা বুদ্ধিবৃত্তিতে অভ্যস্থ্য হয় কৃষক, শ্রমিক, তাঁতী, ব্যবসায়ীসহ সর্ব-শ্রেনীর মানুষ। পাঠশালায় পরিণত হয় সমগ্র দেশ, সকল জনপদ ও প্রতিটি ঘর। ফলে এতে গর্জে উঠে ব্যক্তির মাঝে ঘুমিয়ে থাকা শক্তিশালী ইঞ্জিন। ফলে গতি পায় সমগ্র জাতি। এভাবে ইসলাম শুধু একটি জাতির ধর্মই পাল্টে দেয়নি, পাল্টে দিয়েছে তার রুচিবোধ, মূল্যবোধ, রাজনীতি ও সংস্কৃতি। কৃষক পরিনত হয় বিচারক বা প্রশাসকে। ক্রীতদাস পরিনত হয়েছে জেনারেলে। সেদিন কয়েক লক্ষ আরবদের মাঝে সেদিন যে মাপের ও যে সংখ্যায় চিন্তানায়কের জন্ম হয়েছিল তা আজকের মুসলিম বিশ্বের প্রায় দেড় শত কোটি মুসলিমও পারছে না। এ ব্যর্থতা মূলত তাদের শিক্ষাব্যবস্থার। কারণ এটি ব্যর্থ হচ্ছে জীবনের মূল পাঠটি শেখাতে। ব্যর্থ হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তিকে ইবাদতে পরিণত করতে। ফলে ব্যর্থ হচেছ ব্যক্তির সবচেয়ে শক্তিশালী ইঞ্জিন তথা বিবেককে চালিত করতে। বাংলাদেশ যেভাবে দূর্নীতিতে বিশ্বে ৫ বার প্রথম হয়েছে সেটি মূর্খতার কারণে নয়, বরং সেটি কুশিক্ষা দানকারী শিক্ষানীতির কারণে।
বিজয়ী শত্রুপক্ষ
মুসলিমগণ বুদ্ধিবৃত্তিকে পরিহার করেছে দীর্ঘকাল আগেই। আক্বলের প্রয়োগ ছেড়ে নকলকে তারা ইলমচর্চা মনে করেছে। ফলে গুরুত্ব হারিয়েছে সৃষ্টিশীল জ্ঞানচর্চা। বাংলাদেশের বিগত আটশত বছরের মুসলিম ইতিহাসে ইসলামের উপর যে কয়খানী বই লেখা হয়েছে তার শতকরা নিরানব্বই ভাগ সম্ভবতঃ লেখা হয়েছে বিগত ৫০ বছরে। প্রশ্ন হলো বাঁকি সাড়ে সাতশত বছর আমরা কি করেছি? এখনও যা হচ্ছে সেটিও কি আশাব্যঞ্জক? বুদ্ধিচর্চার ময়দানে সেক্যুলার পক্ষ তথা ইসলামের শত্রুপক্ষ এখনও বিজয়ী। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বইয়ের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগের লিখক সম্ভবতঃ তারাই। ইসলামপন্থিরা এদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়েই দায়িত্ব সেরেছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং এভাবে নিজেদের ভাবমূর্তিকে তারা বিনষ্ট করেছে। নিজেরা যে বুদ্ধিবিমুখ সেটিই জনসম্মুখে প্রমানিত করেছে। ইসলামপন্থিদের দায়িত্ব ছিল, বিপক্ষের যুক্তিকে খন্ডন করে অন্ততঃ বুদ্ধিবৃত্তির ময়দানে ইসলামকে বিজয়ী করা। এজন্য প্রয়োজন ছিল দুয়েক জন নয়, বহুহাজার উঁচু মাপের জ্ঞানী বা বুদ্ধিজীবী তৈরী করা। শত্রুপক্ষের জবাবে ইসলাম যা বলতে চায় তা সুন্দরভাবে গুছিয়ে বলা। কিন্তু সে কাজ হয়নি। ফলে চেতনার রাজ্যে সুচিন্তার চাষাবাদ বাড়েনি, কোর’আন যা বলতে চায় বা যুক্তি দেখায় সে গুলোকেও মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছানো হয়নি। ফলে কোরআন সবচেয়ে অধিক পঠিত কিতাব হওয়া সত্ত্বেও তাতে সমাজের অন্ধকার দুর হয়নি। অথচ ইসলামের আলো বিতরণের কাজে প্রতিটি মুসলিমই দায়বদ্ধ।
আল্লাহতায়ার নাযিলকৃত সর্বশ্রেষ্ট এ গ্রন্থটির সাথে যে জুলুম হয়েছে সম্ভবতঃ কোন কেচ্ছাকাহিনীর বইয়ের সাথেও তা হয়নি। কারণ, কেচ্ছাকাহিনীর বই যাতে শিশুরা বুঝতে সে চেষ্টা করা হয়। ভিন্ন ভাষায় হলে সেটির অনুবাদ করা হয়। অথচ বাংলাদেশে সাতশত বছর ধরে কোর’আন পঠিত হয়েছে অনুবাদ ছাড়াই। জ্ঞানের সর্বোচ্চ উৎস্যের সাথে এমন কান্ডজ্ঞানহীন আচরন একমাত্র বিবেকের পঙ্গুত্বেই সম্ভব, সুস্থ্যতায় নয়। বুদ্ধিবৃত্তি এ যাবতকাল এদেশটিতে কতটা গুরুত্বহীন ছিল -সেটি এ থেকেই বুঝা যায়। অনেকে বলেন, কোরআন বুঝা নিছক আলেমদের কাজ। কথাটি অসত্য। সমগ্র কোর’আন ও হাদিসে এর স্বপক্ষে একটি প্রমাণও নেই। একজনের খাদ্যগ্রহণে আরেকজন বাঁচেনা। খেতে হয় সবাইকেই। তেমনি কোর’আন থেকে এক জনের জ্ঞানার্জনে অন্যের ঈমান পুষ্টি পায় না। ফলে তার জন্য মুসলমান থাকাই তখন অসম্ভব হয়ে পড়ে। রোজহাশরের বিচার দিনে কোন আলেম কারো পক্ষে দাঁড়াবে না। অজ্ঞ থাকায় যে মহাপাপ –সে পাপের জন্য সবাইকে নিজের হিসাব নিজে দিতে হবে। আহারের ন্যায় জ্ঞানার্জনের দায়িত্বও সবার। নবীজীর (সা) আমলে কোর’আনকে বুঝার চেষ্টা করেছেন ক্ষেত-খামারের সাধারণ মানুষ। নামায-রোযার পাশাপাশি জ্ঞানার্জের ইবাদতেও তাদের সমান ভাবে দেখা গেছে। জ্ঞানচর্চা সেদিন তাই প্রচন্ড গণমুখীতা পেয়েছিল। এ কারণেই ঘরে ঘরে সেদিন আলেম ও শহিদ সুষ্টি হয়েছিল। ফলে মদিনার ক্ষুদ জনপদটিতে সেদিন যত মুজাহিদ ও মুজতাহিদ ফকিহর জন্ম হয়েছিল -বাংলাদেশে বিগত হাজার বছরে তার শত ভাগের এক ভাগও হয়নি। অথচ সে আমলে মদিনার জনসংখ্যা বাংলাদেশের আজকের একটি থানার সমানও ছিল না।
বিভ্রান্তি ইলমচর্চা ও আমল নিয়ে
অনেকে বলেন, মুসলিমদের সমস্যা ইলমে নয়, সেটি তাদের আমলে। তাদের ধারণা ইলমচর্চা যথেষ্ট হয়েছে এখন আমল প্রয়োজন। অথচ তারা ভূলে যান, আমল ইলমেরই ফসল। ব্যক্তির কদর্য আমল দেখেই বুঝা যায় সে ব্যক্তির ইলমচর্চা হয়নি। গাছ ছাড়া যেমন ফল আশা করা যায় না, তেমনি ইলম ছাড়া আমলও আশা করা যায় না। ইলমের আগে আমলে পরিশুদ্ধি চাওয়া অনেকটা ঘোড়ার আগে আগে গাড়ি জোড়ার মত। আমলে সমস্যা সৃষ্টি হয় ইলমে সমস্যা থাকার কারণে। ইলম অর্থ সার্টিফিকেট লাভ নয়, এটি হলো ব্যক্তির আত্ম-উপলব্ধি, আত্ম-আবিস্কার ও আত্ম-পরিশুদ্ধির সামর্থ্য। এ সামর্থ্য অর্জনের পরই পরিবর্তন আসে আমলে, পূর্বে নয়। ইলমই চিন্তা-ভাবনা তথা বুদ্ধিবৃত্তিকে সক্রিয় করে। চিন্তাশীল বিবেক তখন সৎকাজে উৎসাহ এবং অসৎকাজে নিষেধ করে। এজন্য ইসলামে ইলম লাভকে প্রথম ফরজ করা হয়েছিল, অন্যান্য ইবাদত এসেছে অনেক পরে।
ঔষধের নামে বিষপান সমাজে কম হয় না। তেমনি কম হয় না শিক্ষার নামে কুশিক্ষা এবং জ্ঞানের নামে অজ্ঞতার বিতরন। এজন্যই মাদ্রাসাতে নকল হয়, বিশ্ববিদ্যালয়েও ধর্ষণে উৎসব হয়। হাজা, মজা, চড়াজাগা নদীতে যে সামান্য পানি থাকে -তাতে নৌকা চলে না, প্লাবনও আসে না, এমন কি তা দিয়ে কৃষিকাজও হয় না। তেমনি জ্ঞানের ক্ষেত্রেও। জীবনের মোড় পাল্টাতে হলে গভীরতর জ্ঞানের প্রয়োজন। গভীর জ্ঞানেরই ফলেই আসে ব্যক্তির ঈমান, আমল ও চিন্তার মডেলে পরিবর্তন। যে কোন সমাজ বিপ্লবের জন্য এরূপ জ্ঞানের বিপ্লব শুধু জরুরী নয়, অপরিহার্যও। শুধু তেলাওয়াতে সেটি সম্ভব না। সম্ভব হলে মুসলিমরাই হতো জ্ঞান-বিজ্ঞানে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি, কারণ জ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাবের এতো তেলোয়াত আর কোন দেশে কোন কালেই হয়নি –যা বাংলাদেশের ন্যায় মুসলিম দেশগুলোতে হয়।
সমস্যা হলো, অজ্ঞতাই যে আমাদের সকল দুরাবস্থার কারণ -সেটির উপলব্ধি নিয়েও রয়েছে ব্যর্থতা। সঠিক পথের সন্ধান লাভের পর কোন সুস্থ্যব্যক্তি ভ্রান্ত পথে দৌঁড়ায় না। তেমন একটি পথে শত শত বছর চলার পরও যদি সাফল্য না আসে তবে বুঝতে হবে পথটি সঠিক নয়। আমাদের ব্যর্থতাই প্রমান করে, সঠিক পথটি আমাদের চেনাই হয়নি। জাহান্নামের আযাব এতই কঠিন যে সে আযাবের সামান্য উপলব্ধিও ব্যক্তির জীবনে মহত্তর বিপ্লব আনতে বাধ্য। সে বিপ্লব না আসলে বুঝতে হবে, সে আযাবের জ্ঞানলাভই ঘটেনি। নিজের অজ্ঞতা তখন সুস্পষ্ট রূপে ধরা পড়ে। নবীজী (সা) তাঁর ১৩ বছরের মক্কীজীবনে মুসলিমদের মাঝে পরকালের ভীতি তথা আখেরাতের জ্ঞানকেই মজবুত করেছিলেন। তার পিছনে ছিল কোর’আনের জ্ঞান। মক্কায় নাযিলকৃত সুরাগুলির আলোচ্য বিষয় ছিল এগুলো। সে সময়ে মুসলিমদের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু সে নির্যাতন বরং তাদের কোর’আন-লব্ধ জ্ঞান ও চেতনাকে আরো শানিত করেছিল। ধারালো করেছিল তাদের ঈমান ও উপলব্ধিকে।
মৃত্যুর মুখোমুখী দাঁড়িয়ে সত্যের সম্যক উপলব্ধির যে সামর্থ্য আসে -তা বক্তৃতায় বা ওয়াজে সৃষ্টি হয় না। ফলে মক্কায় যে কোর’আনী জ্ঞানের ভান্ডার গড়ে উঠেছিল সেটি আজও অতুলনীয়। মদিনার বুকে ইসলামী রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল মক্কীজ্ঞানের সে শক্ত বুনিয়াদের উপর ভিত্তি করেই। জ্ঞানের গভীরতম স্তরে পৌঁছার এ মারেফাত পীরের খানকাতে সৃষ্টি হয় না। ওয়াজের মাহফিলেও নয়। বাংলাদেশে যেরূপ লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে ওয়াজ বা ইজতেমা হয় নবীজীর (সা) আমলে সেটি হয়নি। কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বক্তৃতায় নবীজী (সা) যেভাবে মানুষকে চিন্তায় আগ্রহী ও অভ্যস্থ করেছেন সেটিই বরং আত্ম-উপলব্ধির সামর্থ্য বাড়িয়েছে। এটিই হলে প্রকৃত বুদ্ধিবৃত্তি তথা বুদ্ধির প্রয়োগ। ইসলামি পরিভাষায় এটিই হলো তাদাব্বুর, তাওয়াক্কুল ও তাফাক্কুর। অথচ বাংলাদেশে এটিরই মহা সংকট। দেশে মাদ্রাসা বাড়ছে, মসজিদও বাড়ছে। বাড়ছে নামাযীর সংখ্যাও। কিন্তু যা বাড়েনি বা বাড়ছে না -তা হলো বুদ্ধিবৃত্তি তথা বিবেককে কাজে লাগানোর সামর্থ্য। দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, ধর্ম-কর্ম বা ব্যবসাবাণিজ্য জুড়ে আজ যে বিবেকহীনতা -সেটিই প্রমান করে সমাজকে সভ্যতর করার কাজে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চেতনার রাজ্যে যেভাবে আগাছা বাড়ছে তাতেই প্রমানিত হয়, জ্ঞানের বীজ সেখানে যথার্থভাবে ছিটানোই হয়নি। অথচ একাজের দায়িত্বটি বিশেষ কোন নেতা বা দলের নয়, প্রতিটি মুসলিমের। কারণ, আল্লাহতায়ালার কাছে তারাই এজন্য দায়বদ্ধ। ব্যর্থতার জবাব সবাইকে আলাদা ভাবে দিতে হবে। বুদ্ধিবৃত্তির ময়দানে এভাবে পিছিয়ে থাকলে সভ্যতর সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণ যে অসম্ভব -সে হুশই বা ক’জনের? বরং তাতে ব্যর্থতাই দিন দিন নতুন গভীরতা পাবে। বাংলাদেশের মত মুসলিম দেশগুলিতে তো সে ইতিহাসই নির্মিত হচ্ছে। ১ম সংস্কণ ২৩/০২/২০০৭; ২য় সংস্করণ ২৮/১২/২০২০।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018