বাঙালী সেক্যুলারিস্টদের অপরাধনামা

ফিরোজ মাহবুব কামাল                                                                              

যে মহাবিপদ সেক্যুলারিজমে

মুসলিমদের সবচেয়ে বড় বিপদটি এ নয়, দলে দলে তারা হিন্দু, খৃষ্টান বা বৌদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। বরং বিপদের মূল কারণ, মুসলিম দেশগুলিতে রেডিক্যাল সেক্যুলারিস্টদের বিজয়। সেক্যুলারিজমের জোয়ারে জনগণের চেতনা থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে পরকালের স্মরণ। এবং প্রবলতর হচ্ছে পার্থিব বা ইহকালমুখি ভাবনা। সে সাথে গুরুত্ব হারিয়েছে পরকালের কল্যানচিন্তা। পার্থিব জীবন অতি সীমিত; কিন্তু পরকাল অন্তহীন। ফলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে পরকালে সফল হওয়া- সেটিই তো সুস্থ্য বিদ্যাবুদ্ধির কথা। তাই মানব জাতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়ানক অপরাধটি খাদ্যপানীয় কেড়ে নেয়া নয়। ঘরবাড়িতে আগুন দেয়াও নায়। বরং সেটি পরকালে সফল হওয়ার ভাবনাটিকে দমিয়ে রাখা। পানাহারের কমতি বা গৃহহীন হওয়াতে কেউ জাহান্নামের আগুনে পড়ে না। কিন্তু জাহান্নাম অনিবার্য হয় চেতনার ভূমিতে পরকালের সফল হওয়ার ভাবনাটি বিলুপ্ত হলে। সেক্যুলারিস্টগণ সে অপরাধটিই করছে সমগ্র মানব জাতির বিরুদ্ধে। তাই চোর-ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের চেয়েও তাদের অপরাধটি গুরুতর। চোর-ডাকাতগণ মানুষে পকেটে হাত দিলেও সেক্যুলারিস্টদের ন্যায় ঈমান-আক্বিদার ভূমিতে ছোবল মারে না।

মুসলিমের প্রতিটি কথা, কর্ম ও আচরণে থাকে পরকালের ভয়। তার ধর্মকর্ম, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও যুদ্ধ-বিগ্রহসহ সকল কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয় পরকালে জবাব দিতে হবে -সে ভয় থেকে। পার্থিব জীবনকে ভাবে পরকালীন কল্যাণ লাভে বিনিয়োগের ক্ষেত্ররূপে। ফলে পরকালের ভয় লোপ পেলে তখন সে ব্যক্তি ধর্মে অঙ্গিকারশূন্য হতে বাধ্য। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জীবনের অন্যান্য অঙ্গনে তখন প্রকাশ পায় ইহজাগতিকতা। ফলে ধর্মে অঙ্গিকারহীন হয় রাজনীতি। এজন্যই কোন দেশে সেক্যুলারিজম প্রবলতর হলে দেশবাসীর মাঝে পরকাল-সচেতনতার বিনাশ অনিবার্য। তখন মানুষ পরিণত হয় নিছক ভোগবাদী জীবে। এবং দূরে সরে ইসলামের বিধান থেকে। তখন বিজয়ী হয় শয়তানী বিধান। বাংলাদেশের ন্যায় প্রায় প্রতিটি মুসলিম দেশে এভাবেই ইসলামে অঙ্গিকারশূণ্য করার কাজ হচ্ছে অতি পরিকল্পিতভাবে। একাজে তারা বিপুল সফলতাও পাচ্ছে। ফলে মুসলিমদের মাঝে লোপ পাচ্ছে প্যানইসলামি চেতনা এবং ইসলামের বিশ্বভাতৃত্ব ও উম্মাহর ধারণা। বিলুপ্ত হচ্ছে ইসলামি মূল্যবোধ ও ন্যায়নীতি। ফলে সূদ, ঘুষ, ব্যভিচার ও দূর্নীতির ন্যায় জঘন্য অপরাধগুলিও গণ্য হচ্ছে না দন্ডনীয় বা নিন্দনীয় অপরাধ রূপে। এমন কি অপরাধ নিয়ে অপরাধীদের  লজ্জাও বিলুপ্ত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দূর্নীতিগ্রস্ত  দেশ হলে কি হবে তা নিয়ে দেশের নেতা-নেত্রীদের মাঝে তেমন লজ্জাশরম নেই। কারণ, পাপাচার যখন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়, তখন সেটি থাকে না। এমন এক লজ্জাহীনতার কারণেই যারা নিয়মিত ঘুষ খায়, সূদ খায়, চুরিডাকাতি বা ব্যাভিচারি করে তারাও সমাজে বুক ফুলিয়ে চলা ফেরা করে। এমন দুর্বৃত্তরাও তখন নেতা হওয়ার প্রশ্রয় পায়। এমন পাপাচারীরা দেশের হর্তাকর্তা হলে তারা যে পাপাচারকে প্রশ্রয় দিবে -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? তখন পাপকর্ম হয় প্রকাশ্যে। বাংলাদেশের মত দেশে একারণেই দলবদ্ধ ভাবে স্বামী ও সন্তানদের সামনে ধর্ষণ হয়, শতনারী ধর্ষণের উৎসবও হয়। (যেমনটি নব্বইয়ের দশকে জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছিল জনৈক ছাত্রনেতার দ্বারা)। এমন দুর্বৃত্তি ও পাপাচার এতটাই গা’সওয়া হয়ে গেছে যে এর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ নেই। কোন আন্দোলনও নেই। দেশের আদালতে বিচার বা শাস্তিও নেই।

 

নাশকতা ঐক্যের বিরুদ্ধে

বাংলাদেশের ন্যায় দেশে দূর্নীতির কারণ এ নয় যে, দেশে দুর্ভিক্ষ লেগেছে। বরং মূল কারণ, নৈতিক দুর্ভীক্ষ। দেশবাসী নীতিশূণ্য ও চরিত্রশূণ্য হয়েছে ভয়ানক ভাবে। দুর্বত্তদের প্রাধান্য শুধু অফিস-আদালতে নয়, বরং রাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অর্থনীতিসহ সর্বস্তরে। অপর দিকে দারুন ভাবে বিভক্ত হয়েছে সমাজ। এ বিভক্তি যেমন ধনি-দরিদ্যের, তেমনি দলভিত্তিক, জেলাভিত্তিক এবং আদর্শভিত্তিক। ইসলামে অনৈক্য সৃষ্টি বড় রকমের গোনাহ, এবং একতার কাজ হলো অতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কোরআনে শুধু ‘আকিমুস্সালাত’ অর্থঃ ‘নামায কায়েম করো’ই শুধু বলা হয়নি, ‘লা তাফররাকু’ অর্থাৎ ‘বিভক্ত হয়ো না’ সে কথাও বলা হয়েছে। মুসলিমের কাজ এ নয় যে, কোরআনে ঘোষিত শুধু নামায-রোযার হুকুমগুলোই সে পালন করবে এবং অমান্য করবে একতাবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ। মুসলিমের উপর আল্লাহর প্রতিটি হুকুম মেনে চলা ফরয। কারণ, আল্লাহর অবাধ্য ও অভিশপ্ত হওয়ার জন্য ইবলিসের ন্যায় তাঁর একটি মাত্র হুকুমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাই যথেষ্ট। তাই ঐক্যের প্রতিষ্ঠায় মহান  আল্লাহতায়ালার যে কোর’আনী হুকুম – প্রাথমিক যুগের মুসলিমগুণ সেটি সর্বাত্মক ভাবে পালন করেছিলেন। ফলে নানা ভাষাভাষি ও নানা বর্ণের হয়েও তারা জন্ম দিয়েছিলেন ঐক্যবদ্ধ উম্মাহর। মুসলিমগণ পরিণত হয়েছিলেন বিশ্বশক্তিতে।

ভাষাভিত্তিক নেশন স্টেটের যে ধারণা -সেটি নিতান্তই ইউরোপীয়। ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ মুসলিমদের সম্পদই শুধু লুট করেনি, বিনষ্ট করেছে তাদের প্যান-ইসলামিক চেতনাও। সংক্রামক ব্যধি শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির দেহেই সীমাবদ্ধ থাকে না, যেখানে যায় সেখানেই সে রোগ ছড়্য়া। ফলে যে রোগের শুরু ইউরোপে সেটিই ব্যাপক ভাবে প্রসার পেয়েছে মুসলিম দেশগুলিতে। মুসলিম উম্মাহর জীবনে এটি কাজ করেছে অতি ঘাতক ব্যাধিরূপে। অন্য কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগব্যাধি বা যুদ্ধবিগ্রহে মুসলিমদের এতো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সেক্যুলারিজমের প্রসারে অন্য ভাষা, অন্য বর্ণ ও অন্য অঞ্চলের মানুষের সাথে একতা গড়া যে ইবাদত -সে প্রেরণাই বিনষ্ট হয়েছে। বরং গুরুত্ব পেয়েছে ভাষা, বর্ণ ও অঞ্চলভিত্তিক অহংকার নিয়ে পারস্পারিক ঘৃনা। ফলে নিছক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে মুসলিম দেশে আচার বা সংস্কৃতি রূপে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ভিন্ ভাষার মুসলমানদের গালি দেওয়া। তাই আরবভূমিতে তুর্কি বা ইরানীদের বিরুদ্ধে গালি না দিলে রাজনীতিতে টিকে থাকাই অসম্ভব। একই রূপ অবস্থা ইরানে এবং তুরস্কে। একই অবস্থা বাংলাদেশেও। বাংলার ভূমিতে অবাঙ্গালী রূপে একটি শব্দের আবির্ভাব ঘটনা করা হয়েছে  স্রেফ অন্য ভাষী মুসলিমদের প্রতি ঘৃনা, তাদের ঘরবাড়ি দখল ও তাদের পরিবার পরিজনকে বস্তিতে পাঠানোর ন্যায় অপরাধকে জায়েজ করতে। অপরের প্রতি সে প্রবল ঘৃনা নিয়েই এখন বাঙ্গালী সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতির খেসারত দিচ্ছে কয়েক লক্ষ অবাঙ্গালী পরিবার। এরূপ ঘৃণার সংস্কৃতিতে একমাত্র শয়তানই খুশী হতে পারে। অথচ ভারতীয় হিন্দুদের মাঝে অবিহারী, অপাঞ্জাবী, অমারাঠী বা অগুজরাতী –এরূপ অসভ্য শব্দ বাজার পায়নি। বাংলাদেশের বুকে এরূপ অসভ্য অপসংস্কৃতির জন্ম হয়েছে সেক্যুলারিজমের গর্ভে।

ভোগবাদী স্বার্থে অন্যভাষা বা অন্যদেশের মানুষ দূরে থাক নিজ ভাইকেও মানুষ খুণ করে। এরূপ স্বার্থের তাড়নায় আরবের কাফেরগণ নিজ কন্যাকেও জীবন্ত দাফন দিত। সেক্যুলারিজম তথা ইহজাগতিকতা এভাবে জন্ম দেয় মানববিধ্বংসী এক ঘাতক চেতনার। ফলে বাড়ে অনৈক্য ও বিবাদ। এবং অসম্ভব করে সভ্য রূপে বেড়ে উঠা। কোন জাতি কি এমন বিভক্তি নিয়ে বিজয়ী হতে পারে? তেলের খনি, গ্যাসের খনি বা লোকবল দিয়ে কি এ ক্ষতি দূর করা যায়? ঐক্যের বিকল্প একমাত্র ঐক্যই। সেটি সৃষ্টি হতে পারে একমাত্র পরকালমুখি চেতনায়। আল্লাহর কাছে জবাবদেহীতাই যার মূল কথা। কয়েক লক্ষ নবী-রাসূল একত্রে জন্ম নিলেও এমন পরকালমুখি চেতনার কারণে একতাবদ্ধ ভাবে কাজ করতেন। নামায-রোযার ন্যায় সেটি সহজ সত্যিকার মুসলিমদের জন্যও। প্রাথমিক যুগের মুসলিমগণ সেটি দেখিয়েও গেছেন। কিন্তু মুসলিম বিশ্বে সে চেতনাটিকে বিনষ্ট করছে সেক্যুলারিজম। এ মতবাদটির কারণে মুসলমানগণ আজ ভাতৃঘাতি লড়ায়ে লিপ্ত। প্যান-ইসলামিক চেতনা যেখানে নানা বর্ণ, নানা ভাষা ও নানা অঞ্চলের মুসলিমদের মাঝে সিমেন্ট লাগায় এবং গড়ে তোলে সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ উম্মাহ। সে সিমেন্ট সরিয়ে দেয় সেক্যুলারিজম। তখন বিল্প্তু হয় উম্মাহর স্বার্থচিন্তা। ব্যক্তি, সমাজ ও রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হয় তখন পার্থিব স্বার্থচিন্তায়। বাংলাদেশে সেটিই হয়েছে অতি প্রবল ভাবে। ফলে ইসলামি শিক্ষা ও ইসলামি শরিয়ত প্রতিষ্ঠা বা মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে ভূমিকা রাখা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ আর কোন প্রসঙ্গই নয়।

 

ইসলামশূণ্যে বিদেশী বিনিয়োগ

ইসলামি চেতনার বিনাশে বাংলাদেশের ন্যায় প্রায় প্রতিটি দরিদ্র মুসলিম দেশে কাজ করছে বহু হাজার প্রতিষ্ঠান। বিণিয়োগ হচ্ছে শত শত কোটি টাকার দেশী-বিদেশী পুঁজি। এ অর্থে গড়ে উঠেছে বহু হাজার এনজিও। বাংলাদেশে এনজিও প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয় ১৯৪৭য়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই। তখন এগুলোর মূল কাজ ছিল খৃষ্টান বানানো। কিন্তু বহু বছর ধরে বহু কোটি টাকা ব্যয়েও সে সব এনজিও বাংলাদেশের মুসলিমদের মাঝে তেমন সফলতা পায়নি। নিম্ন বর্ণের হিন্দু, গারো, সাঁওতাল ও অন্যান্য উপজাতীয়দের মাঝে খৃষ্টান ধর্মের প্রচারে সফলতা পেলেও মুসলমানদের মাঝে সে কৌশল কাজ দেয়নি। ফলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর তাদের কৌশলে আনা হয় আমূল পরিবর্তন। এবং সেটি মুসলিমদের খৃষ্টান বানানো নয়, বরং ইসলাম থেকে দূরে হটানো বা ডি-ইসলামাইজেশন। এ লক্ষ্যে বহু এনজির কাজই হচ্ছে গ্রামে গঞ্জে নেমে ছেলেমেয়েদের নাচগাণ শেখানো। নাচগানের প্রসারে তাদের অর্থে ও নেতৃত্বে গড়ে তুলেছে অসংখ্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। লেখা হচ্ছে বহু বই, প্রচার পাচ্ছে বহু পত্র-পত্রিকা। গড়া হচ্ছে মকতবের পাশে এনজিও স্কুল। ফলে যে কিশোর একদিন মকতবে গিয়ে কোরআন তেলওয়াত শিখতো, এখন শিখছে নাচ-গান। দারিদ্র্যতাকে পুঁজি করে ব্যাপক ভাবে চলছে সূদের ব্যবসা। গ্রামের যে ধর্মভীরু মানুষটি আগে সূদকে জ্বিনার চেয়েও ভয়ংকর পাপ জেনে সূদ খেতে ও দিতে ভয় পেত -এখন সে নির্ভয়ে সূদ খায় ও দেয়। গ্রামের যে মহিলাটি একাকী রাস্তায় নামাকে গর্হিত কাজ মনে করতো, এখন সে রাস্তায় রাস্তায় এনজিওর গাছ পাহারা দেয়। মাটি কাটছে বা সাইকেলে চড়ে একাকী গ্রাম-গঞ্জ, নদী-নালা বা মেঠো পথ অতিক্রম করছে। সমিতি করে শেখানো হচ্ছে মহান আল্লাহর নানা বিধানের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবাধ্যতা।

প্রশ্ন হলো, ইসলাম থেকে দূরে সরানোর কাজে এত প্রতিষ্ঠান ও এত বিনিয়োগের হেতু কি? এর কারণ, মুসলিমদের সম্পদ যারা লুটতে চায় এবং পদানত রাখতে চায় রাজনৈতিক ভাবে -সে লক্ষ্যে মুসলিমদেরকে তারা দুর্বলও রাখতে চায়। মুসলিমগণ শক্তিশালী হলে সেটি সম্ভব নয়। তারা জানে, মুসলিমদের শক্তির মূল উৎস্য হলো ইসলাম। তাই শক্তির সে উৎস্য থেকেই তাদেরকে সরাতে চায়। ইসলামের মূল কথা, মহান আল্লাহর কাছে পূর্ণ আত্মসমর্পণ। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টায় লেগে থাকাই তার জীবন-সাধনা। এমন চেতনা থেকে সে পায় আমৃত্যু লড়াই ও আত্মত্যাগের প্রেরণা। এ প্রেরণায় আফগানিস্তানে তারা পরাজিত করেছে সোভিযেত রাশিয়াকে। আলজারিয়ায় পরাজিত করেছে ফ্রান্সকে। গাজায় ও দক্ষিণ লেবাননে পরাজিত করেছে ইসরাইলকে। ফলে শত্রু শক্তি বুঝতে পেরেছে নিছক উন্নত যুদ্ধাস্ত্রে তাদের উপর বিজয় সুনিশ্চিত নয়। ফলে ময়দানে নেমেছে শক্তির মূল উৎস্য ইসলাম থেকে সরাতে। একারণে মুসলিমদের যেখানে যত অধিক জনশক্তি সেখানেই তাদের অধিক বিনিয়োগ। বাংলাদেশে সেক্যুলার ও ইসলামি বিরোধী এনজিওদের অর্থভারি হওয়ার মূল কারণ এখানে। তাদের টার্গেট, ইসলাম থেকে মুসলীমদের দূরে  সরানো এবং প্যান-ইসলামি চেতনার বিলুপ্তি। কারণ, এ চেতনার কারণেই নানা দেশের নানা ভাষি মুসলিম ছুটে যায় মজলুল মুসলিম ভাইয়ের পাশে দাঁড়াতে। যেমন গিয়েছিল আফগানিস্তান, বসনিয়া, চেচনিয়া ও সিরিয়ায়।

ইসলামের শত্রু পক্ষ চায় না, আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়ায়ে বিশ্বের মুসলিমগণ আবার একতাবদ্ধ হোক। ভাষা, বর্ণ ও ভূগোলভিত্তিক বিভক্তির চেতনায় সেরূপ একতা অচিন্তনীয়। মুসলিমদের মাঝে ভাষা, বর্ণ ও অঞ্চলভিত্তিক বিভক্তি এজন্যই ইসলামের বিপক্ষ শক্তির কাছে এতো প্রিয়। তারা চায়, মুসলিমদের মাঝে ভাতৃঘাতি অবিরাম লড়াই। চায়, পরস্পরের মাঝে স্থায়ী ঘৃণা। তাই একাত্তরে যে ভ্রাতৃঘাতি লড়াই হলো, সেটিকে এরা উপমহাদেশের বাঙ্গালী ও অবাঙ্গালী মুসলিমদের মাঝে চিরস্থায়ী ঘৃণায় পরিণত করেছে। এরা চায়, বাঙালীর জীবনে একাত্তরের যুদ্ধ আবার ফিরিয়ে আনতে। এ ঘৃণাকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে বাঙালী সেক্যুলার পক্ষটি সর্বপ্রকার আর্থিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা পাচ্ছে অমুসলিম দেশ থেকে –বিশেষ করে ভারত থেকে। যেখানেই ইসলামের বিপক্ষ শক্তির পদচারণা সেখানেই বিভক্ত হয়েছে মুসলিম ভূমি। রক্ত ঝরানো শুরু করেছে মুসলিমের। অখন্ড আরব ভুমি বহু খন্ডে বিভক্ত হয়েছে তো এদের কারণেই। আজ বিভক্ত হতে চলেছে ইরাক। অথচ ইসলামে এমন বিভক্তি হারাম। ইসলামে আছে একতাবদ্ধ উম্মাহর চেতনা। বর্ণবাদ ও জাতীয়তাবাদ এখানে হারাম। উম্মাহ বলতে বোঝায়, নানা ভাষা, নানা বর্ণ এবং নানা দেশের মানুষের মাঝে মহান আল্লাহকে খুশি করার লক্ষ্যে সীসাঢালা প্রাচীরসম ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেতনা। আল্লাহর দ্বীনের প্রতিষ্ঠায় অর্থদান, শ্রমদান এমন কি প্রাণদানেও তারা অগ্রণী হয়। ইসলামের ইতিহাসে এমন কোন সাহাবী পাওয়া যাবে না যিনি এমন লড়ায়ে অংশ নেননি।

নিষিদ্ধ করে ঈমানদারের আত্মবিনিয়োগ

নিজের ও দলের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ধর্মের ব্যবহার ইসলামে হারাম। এবং বিধান হলো, ব্যক্তির মেধা, শ্রম, অর্থ, রক্ত ও তার সমুদয় সামর্থ্য ব্যয় হবে একমাত্র ইসলামের বিজয়ে। ফলে ঈমানদারের একটি পয়সা, একটি মুহুর্ত বা এক ফোটা রক্তও ব্যয় হতে পারে না সেক্যুলার রাজনীতিতে। কারণ, সেক্যুলারিজমে রাজনীতির অঙ্গণে ঢুকতে হয় ইসলামকে বাদ দিয়ে। প্রশ্ন হলো, যেখানে ইসলাম নাই সেখানে মেধা, শ্রম, অর্থ, রক্ত ও সমুদয় সামর্থ্যের বিনিয়োগ হালাল হয় কি করে? এটি তো হারাম। মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার উপর অর্পিত আমানতের এটি খেয়ানত। ইসলাম ভিন্ন অন্য কোন পথে অর্থ ও আত্মবিনিয়োগে ঈমান বাঁচে না। মহান আল্লাহতায়ালার সাথে এটি গাদ্দারি। তাই যে কোন ঈমানদারের কাছে এটি অভাবনীয়। বরং প্রতিটি নর-নারীর উপর ফরয হলো, ইসলামের বিজয়ে সমগ্র সামর্থ্যের বিনিয়োগ। এটিই তার বাঁচবার মিশন। অথচ সেক্যুলার শাসক শক্তি ঈমানদারের সে আত্মবিনিয়োগকেই নিষিদ্ধ করতে চায়। নিষিদ্ধ করতে চায় জিহাদকে। অথচ মুসলিমের রাজনীতিই হলো জিহাদ। এ রাজনীতিতে সে শুধু ভোট দেয় না, অর্থ, মেধা ও রক্তও দেয়। এমন রাজনীতিতে সে ধর্মকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে না, বরং সর্বভাবে নিজে ব্যবহৃত হয় ইসলামী বিধানের প্রতিষ্ঠায়। নবী করীম (সাঃ) এবং তাঁর সাহাবায়ে কেরাম তো এমন রাজনীতিই শিখিয়ে গেছেন।

ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুশক্তির দুষমনিটি গোপন কিছু নয়। যেখানেই ক্ষমতায় গেছে সেখানেই তারা নিষিদ্ধ করেছে ইসলামের পক্ষে খাড়া হওয়াটি। শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য হয়েছে রাজনীতির ময়দানে ধর্মপ্রাণ মানুষের জান ও মালের বিনিয়োগ। এমনটি হয়েছে তুরস্ক, মিশর, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়াসহ বহু মুসলিম দেশে। তুরস্কের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী আদনান মেন্দারেসকে সেক্যুলারিস্ট সেনাবাহিনী শুধু ক্ষমতা থেকেই হটায়নি, তাঁকে ফাসি দিয়ে হত্যা করেছে এ অপরাধে যে তিনি মসজিদে আরবীতে আযান চালু করেছিন। সেক্যুলারিস্ট সেনাবাহিনীর হাতে অপসারিত হলেন এবং নিহত হলেন মিশরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসী। বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের নির্মূলে মুজিব ও হাসিনার নীতিটিও ভিন্নতর নয়। মুজিব সেক্যুলারিজমকে রাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত করেছিল। অথচ সেটি করতে মুজিব জনগণের মতামতের তোয়াক্কা করেনি। মুজিব সেটি করেছিল নিজেকে খুশি করতে, এবং সে সাথে প্রভু রাষ্ট্র ভারতকে খুশি করতে। সে অভিন্ন পথেই চলছে হাসিনা। এরাই হলো মুসলিম ভূমিতে ভিতরের শত্রু। এদের কারণেই খোদ মুসলিম ভূমিতে পরাজিত হচ্ছে ইসলাম। এবং অসম্ভব হচ্ছে শরিয়তের প্রতিষ্ঠা নিয়ে বাঁচা। মুসলিমদের এতো পরাজয়, এতো অসম্মান এবং এতো রক্তক্ষয়ের কারণতো এ ঘরের শত্রুরাই। মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর দ্বীনের প্রতি অঙ্গিকারহীনদের কখনোই বিজয়ী করেন না, সম্মানও দেন না। এরূপ অঙ্গিকারহীন চরিত্রটি মূলতঃ মুনাফিকদের। মুসলিমদের বড় বড় ক্ষতিগুলি হয়েছে তাদের হাতেই।  অথচ মুসলিমগণ যখনই একমাত্র আল্লাহতায়ালাকে খুশি করতে ময়দানে নেমেছে, তাঁদের সাহায্যে তিনি ফেরেশতা পাঠিয়েছেন। তখন বিশাল বিশাল শত্রু বাহিনীর উপর বিজয়ও এসেছে।

 

যে গর্বের ইতিহাস বাঙালী মুসলিমের 

অথচ আজ থেকে শত বছর আগে বাংলার মুসলিমগণ আজকের ন্যায় ধর্মে এতটা অঙ্গিকারশূণ্য ছিল না। অন্য যে কোন ঈমানদারের ন্যায় বাংলার মুসলিমও তখন কাজ-কর্ম, রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে ধর্ম থেকে অনুপ্রেরণা পেত। অনুপ্রেরণা পেত নানা ভাষা ও নানা বর্ণের মানুষের সাথে ইসলাম ও মুসলিমদের কল্যাণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কিছু করার। ধর্মে এমন অঙ্গিকারবদ্ধতার কারণেই বাংলার মুসলিমগণ আজ থেকে শত বছর আগে ঢাকাতে ঘটিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার বুকে অতিশয় যুগান্তকারী ঘটনা। সে ঘটনাটিই পাল্টে দিয়েছিল উপমহাদেশের মানচিত্র। সেটি ছিল ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা -যা জন্ম দেয় বিশ্বের বুকে সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের। ইসলামি চেতনাশূন্য সেক্যুলারিস্টদের কাছে এটি ছিল তাদের পরাজয়ের দিন। অথচ ১৭৫৭’যে পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের পর ভারতবর্ষের সমগ্র মুসলিম ইতিহাসে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বরং বলা যায়, মুসলিমদের হাতে ভারত বিজয়ের পর এটিই ছিল সবচেয়ে বড় বিজয়। শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিমদের ইতিহাসেই নয়, বহুশত বছরের বিশ্ব-মুসলিম ইতিহাসেও এটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

পাকিস্তান যে সময়ে প্রতিষ্ঠা পায়, মুসলিমগণ তখন ইতিহাস গড়ছিল বহুবিধ বিভক্তিতে। তখন অসম্ভব হয়ে উঠেছিল কোন এক বিশেষ ভাষার মুসলিমের পক্ষে অন্য ভাষার মুসলিমদের সাথে এক ভূগোলে বসবাস। মুসলিম দেশগুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে তখন ভাষা ও নানা অঞ্চল ভিক্তিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশে বিভক্ত হচ্ছিল। আরব ভূমি বিভক্ত হয়েছির ২২ টুকরায়। এমন এক প্রেক্ষাপটে ভারতের নানা ভাষী মুসলমানদের পক্ষে একত্রে পাকিস্তানে সৃষ্টি ছিল বিস্ময়কর। সেদিন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠায় প্রচন্ড উৎফুল্ল হয়েছিল সারা বিশ্বের মুসলিম। প্রখ্যাত জার্মান নওমুসলিম মহম্মদ আসাদের ন্যায় অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি তখন ছুটে এসেছিল পাকিস্তানকে শক্তিশালী করার কাজে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর বহুশত বছরের উপর্যপরি পরাজয় এবং বহু ভাতৃঘাতি যুদ্ধবিগ্রহের পর বিশ্বের মুসলিমদের মনে জেগেছিল এক নতুন স্বপ্ন। ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ এবং মুসলিম লীগের হাত দিয়ে ১৯৪৭’য়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা না হলে আফগানিস্তানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিহাদ সফল হওয়াই কঠিন হতো। ফলে বিধ্বস্ত হতো না সোভিয়েট রাশিয়া এবং প্রতিষ্ঠা পেত না ৬টি মুসলিম রাষ্ট্র –যে দেশগুলির সমুদয় আয়তন ভারতের চেয়েও বৃহৎ। কারণ ভারত অবিভক্ত থাকলে দেশটি যে আফগানিস্তানের মুসলিম নিধনে রাশিয়াকেই সমর্থণ দিত -তা নিয়ে কি সন্দেহ আছে? আফগানিস্তানে জিহাদ চলাকালে ভারত সব সময় রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে তার মুসলিম বিরোধী চরিত্রেরই প্রকাশ ঘটিয়েছে।

সমগ্র মুসলিম ইতিহাসে, বিশেষ করে পাকিস্তানীদের কাছে ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা এবং ঢাকা নগরী তাই অবিস্মরণীয়। আজকের যে বাংলাদেশ সেটিরও জন্ম পাকিস্তান সৃষ্টির ধারাবাহিকতায়। বাংলাদেশ তার সৃষ্টির শুরু থেকে এ অবধি বিশ্বের নানা দেশ থেকে হাত পেতে শুধু নিয়েই চলেছে, দিচেছ সামান্যই। মিয়ানমারের আরাকান মুসলমানেরা আজ বর্বরতম নিযার্তনের শিকার। শত শত বছর সেখানে বসবাস করেও সকল প্রকার নাগরিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত। অথচ তাদের কষ্ট লাঘবে ১৩ কোটি মুসলমানের বাংলাদেশ কিছুই করতে পারিনি। এমন এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মুসলিমগণ মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা ও আজকের পারমানবিক শক্তি পাকিস্তানের জন্ম দেয়ার মধ্য দিয়ে মুসলিম উম্মাহর শক্তি বৃদ্ধিতে যে কিছু দিতে পেরেছে -অন্ততঃ তা নিয়ে গর্ববোধ করতে পারে। অথচ সে ইসলামি চেতনার বিনাশ ঘটেছে সেক্যুলারলিষ্টদের হাতে। সেক্যুলারাষ্টিদের কারণেই বাঙালী মুসলিমগণ আর সামনে এগুতে পারিনি। পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠি রূপে বাঙালী মুসলিমগণ বিশ্বের রাজনীতিতে যে গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা রাখতে পারতো -সে সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত করেছে।

 

ভারত কেন সেক্যুলারাষ্টিদের বন্ধু?

সেক্যুলারাষ্টিদের সফলতা শুধু মুসলিম মানচিত্রের খন্ডিত করণেই, এক ইঞ্চি বৃদ্ধিতে নয়। এরাই আরবভূমিকে টুকরো টুকরো করে জন্ম দিয়েছে বিশেরও বেশী রাষ্ট্রের। তাদের বাহাদুরি শুধু ভাঙ্গাতে, গড়াতে নয়। এমন একটি ঘাতক শক্তি মুসলিম দেশের অভ্যন্তরে থাকলে সেদেশর পরাজয়ে কি বিদেশী শত্রুর প্রয়োজন পড়ে? এরাই তখন নিজ দেশের পরাজয়কে নিজ হাতে শত্রুর ঘরে পৌঁছে দেয়। শেখ মুজিব ও তার সহচরগণ সেটিই করেছিল একাত্তরে। এবং মীর জাফর সেটি করেছিল ১৭৫৭ সালে। এদের পিছনে ইসলামের শত্রুশক্তির বিপুল পুঁজি বিণিয়োগের মূল হেতু তো এটিই।

গুজরাতের কসাই ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুসলিমবিরোধী নাশকতাটি গোপন কিছু নয়। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকা কালে প্রদেশটির হাজার হাজার মুসলিম নরনারীকে সে হত্যা করেছে। ধর্ষিতা হতে দিয়েছে শত শত মুসলিম নারীকে। লাগাতর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে কাশ্মিরে। গুড়িয়ে দিয়েছে ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ। ষড়যন্ত্র করছে লক্ষ লক্ষ মুসলিমের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার। প্রশ্ন হলো, ইসলাম ও মুসলিমের এমন পরম শত্রু হাসিনার বন্ধু হয় কি করে? কারণ একটিই। ইসলামের শত্রুগণ নিজেদের বন্ধু চিনতে কখনোই ভূল করে না। ইসলাম ও মুসলিমের প্রবল শত্রু রূপে যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠা দেয় -একমাত্র তাদেকেই তারা নিজেদের বন্ধু রূপে বেছে নেয়। যে কারণে মোদী ইজরাইলের বন্ধু, সে অভিন্ন কারণে পরম বন্ধু হাসিনারও। ইজরাইলের ন্যায় হাসিনাও তার ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী চরিত্রটি কখনোই গোপন করেনি। হাসিনা সেটি প্রমাণ করেছে ইসলামপন্থিদের নির্মূলে গুম, খুন ও নির্যাতনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা দিয়ে। একই ভাবে মুজিব তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির কাছে। ১ম সংস্করণ ২৭/০৫/২০০৬; ২য় সংস্করণ ৬/১১/২০২০।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *