মুসলিম বিশ্বে মার্কিনী সন্ত্রাস: প্রতিরোধ কীরূপে?
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on January 17, 2021
- Bangla Articles, মুসলিম জাহান
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
তান্ডব মার্কিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের
নিরাপত্তা নিয়ে বাঁচার স্বার্থে আশেপাশের হিংস্র জন্তু-জানোয়ারদের চিনতে হয়। জানতে হয় তাদের বিচরনের ক্ষেত্রগুলোকেও। গড়ে তুলতে হয় হিংস্র পশুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের সামর্থ্য। নইলে প্রাণ বাঁচে না। তেমনি যে বিশ্বে বসবাস, জানতে হয় সে বিশ্বের হিংস্র দানবদেরও। গড়ে তুলতে হয় সে দানবদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের স্ট্রাটেজী। এ পৃথিবী পৃষ্টে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাজির হয়েছ মানব ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী দানব রূপে। তার নাশকতার সামর্থ্য তূলনাহীন। দেশটি ইতিমধ্যেই বহু দেশে বহু বীভৎস নাশকতা ঘটিয়েছে। তাছাড়া দেশটির ভান্ডার এখনো রয়েছে নাশকতার বিপুল সামর্থ্য। সে সাথে রয়েছে সে নাশকতার নেশাও। মানব জাতির জন্য তাই এটি বিপদজনক পরিস্থিতি। এ নিবন্ধ লেখার মূল উদ্দেশ্য তেমনি একটি পরিস্থিতির বাস্তবতাকে তুলে ধরা।
ত্রাস বা ভয় সৃষ্টিই যদি সন্ত্রাস হয়, তবে সে সন্ত্রাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তূলনা নাই। সে সন্তাসের শিকার বিশ্বের দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোই শুধু নয়, খোদ জাতিসংঘ এবং তার সবল ও দুর্বল সদস্য রাষ্ট্রগুলোও। নৃশংস মার্কিন সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে আফগানিস্তান ও ইরাক। এ দুটি দেশের বহু লক্ষ মানুষ যেমন নিহত হয়েছে, তেমনি লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরবাড়ী হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে। এ বর্বরতার একটি করুণ ইতিহাস আছে। মাকিন সন্ত্রাসীদের চরিত্রকে জানতে হলে সে ইতিহাসকেও জানতে হবে। মানব জাতির জন্য বিশেষ করে মুসলিমদের জন্য তাতে রয়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় দিক। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে মোকাবেলায় সেগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ।
ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের উপর চাপ দিচ্ছিল, তাদের পরিকল্পিত আগ্রাসী যুদ্ধকে বৈধতা দিতে। এজন্য ২৪ ঘন্টা সময়ও বেঁধে দিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা, যুদ্ধ তারা করবেই, জাতিসংঘের কাজ সেটিকে জায়েজ ঘোষণা দেওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী শাসক চক্র বিশ্ববাসীকে যে কতটা বেওকুপ ও দুর্বল ভাবে -এটি হলো তারই প্রমান। ফ্রান্সসহ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্র সে মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করেনি। আর সেটিই মার্কিনীদের কাছে অপরাধ গণ্য হয়েছে। সমর্থণ লাভে ব্যর্থ হয়ে তারা বলেছে নতুন প্রস্তাব পাশের কোন প্রয়োজনই নেই। বহু প্রতিক্ষিত যুদ্ধের প্রস্তুতি স্বরূপ প্রেসিডেন্ট বুশ ২০০৩ সালের ১৭ই মার্চে সাদ্দামকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দেশ ছেড়ে পলায়ন অথবা যুদ্ধ -এ দুটির যে কোন একটিকে বেছে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। সাদ্দাম এ হুমকি প্রত্যাখান করেছিল। অতএব হামলা শুরু হয়। হাজার হাজার বোমা, ক্ষেপনাস্ত্র ও ভারী কামানের গোলা ইরাকের নীরস্ত্র মানুষের মাথায় নিক্ষিপ্ত হলো। নিহত ও আহত হলো দেশটির অসংখ্য মানুষ। প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ যে ক্রুসেডের হুশিয়ারি বার বার শুনিয়ে আসছিলেন -সেটিই হলো অতি বীভৎস রূপে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় খৃষ্টানদের মধ্যযুগীয় ক্রসেডের গণহত্যা অতি বর্বর ও নৃশংস ছিল। কিন্তু, বুশের আধুনিক ক্রসেডটি সে ক্ষেত্রে আরো বর্বরতর। কারণ মার্কিন যুদ্ধাস্ত্রে এসেছে চরম নাশকতা।
ফিলিস্তিনের ন্যায় ইরাকও অধিকৃত হলো ইসরাইলের মিত্র ও রক্ষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের জন্য, বিশেষ করে মুসলিমদের জন্য এটি যেমন অপমানকর, তেমনি দুঃখজনক। মার্কিনীদের কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতার সামান্যতম মূল্য থাকলে জাতিসংঘে উত্থাপিত অধিকাংশ দেশের শান্তির প্রস্তাবকে তারা মেনে নিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনই জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে ইরাককে বিভক্ত করে, সেখানে প্রতিষ্ঠা করে নো-ফ্লাই জোন। চাপিয়ে দেয় নির্মম বাণিজ্যিক অবরোধ -যার ফলে বিনাচিকিৎসায় ও অপুষ্টিতে মারা যায় দেশটির ৫ লাখ ইরাকী শিশু। যে তথ্য দিয়েছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট। সন্ত্রাস করতে গণ-সমর্থণ বা ভোট লাগে না, লাগে অস্ত্রের সামর্থ্য। আর মার্কিনীদের সামর্থ্য সেক্ষেত্রে বিশাল। ফলে পরওয়া কিসে? বিশ্বজনমত ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অসম্মতি -কোনটাই তাদের এ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বরং প্রকাশ পেয়েছে জাতিসংঘের নিজের অসহায় অবস্থা। প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ যে কতটা গোঁয়ার ও উদ্ধত এবং বিশ্বজনমতের বিরুদ্ধে কতটা অবজ্ঞাপূর্ণ -সেটিই প্রকাশ পেয়েছে তার বক্তৃতায়। তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকের উপর হামলায় কারো অনুমতির ধার ধারে না। বোঝাতে চেয়েছেন, জাতিসংঘ বা বিশ্বজনমত তার কাছে অপ্রাসঙ্গিক। এরপরও কি বুঝতে বাঁকি থাকে কতটা বিপর্যের মুখে আজ বিশ্বশান্তি?
মার্কিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে অসম্ভব হয়েছে বিশ্বের বহুদেশে গণতন্ত্র চর্চা। মুসলিম দেশগুলোতে গণগন্ত্র চর্চার পথে সবচেয়ে বড় বাঁধাটি হলো মার্কিনীদের স্বৈরাচার প্রতিপালনের নীতি। সৌদি আরব, আমিরাত, জর্দান, বাহরাইন, ইত্যাদি আরব দেশগুলোতে বর্বরতম স্বৈরাচার বেঁচে আছে মার্কিন সাহায্য নিয়ে। সেটিরই আরেক উদাহরণ হলো মিশর। সেখানে সামরিক বাহিনী নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মহম্মদ মুরসীকে শক্তির বলে সরিয়ে নিজেরা ক্ষমতা দখল করে। মার্কন যুক্তরাষ্ট্র সে সামরিক স্বৈরাচারকে সমর্থণ দেয়। পঞ্চাশের দশকে একই ভাবে মহম্মদ রেজা শাহর স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল ইরানে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পে ঘোষণা, বিশ্বের কোথাও ইসলামী খলিফার নামে রাষ্ট্র গড়া হলে মার্কিন সেনাবাহিনী সেটিকে মাটিকে মিটিয়ে দিবে। মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে এটি চরম ঔদ্ধত্য। খেলাফাভিত্তিক রাষ্ট্র হলো মুসলিম উম্মাহর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। খেলাফা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি মুসলিম উম্মাহর নিজস্ব বিষয়, মার্কিনীদের বিষয় নয়। গণতন্ত্র বিরোধী মার্কিন নীতির আরেক উদাহরণ হলো তুরস্ক। ইরাকের উপর হামলার বিরুদ্ধে তুরস্কের প্রায় শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষ । জনগণ চায় না তুরস্কের এক ইঞ্চি ভুমিও মার্কিনী সৈন্যদের দ্বারা ব্যবহৃত হোক। সে দেশের নব নির্বাচিত পার্লামেন্টেও সে গণরায়ের প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোঁ ধরেছিল, তুরস্কের উপর দিয়ে তার ৬০ হাজার সৈন্যের চলাচলের সুযোগ দিতেই হবে। ইরাকের উত্তরভাগে হামলার জন্য এটিকে তারা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিল। কুটনৈতিকভাবে চাপ দিয়েছে, প্রলোভন দিয়েছে অর্থ সাহায্যের, এমনকি চাপ দিয়েছে সে দেশের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের দিয়েও। কথা হলো, এটিই কি গণতন্ত্র চর্চার মার্কিন মডেল? এমন গণতন্ত্রচর্চাই কি তারা চায় ইরাকে ও অন্যান্য দেশে?
নজিরহীন ধোকাবাজি
ইরাকের উপর হামলাকে জায়েজ করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে বিশ্ব-শান্তির দোহাই দিচ্ছে -সেটি নিছক ধোকাবাজী। নিরেট দস্যুরাও ভাল মানুষ সাজে; সেটি ধোকাবাজির মাধ্যমে। বিশ্ববাসীর কাছে গোপন নয় মার্কিনীদের এ ধোকাবাজী। তার প্রমাণ, একমাত্র ইসরাইল ছাড়া বিশ্বের দ্বিতীয় কোন রাষ্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণই ইরাকের উপর হামলাকে জায়েজ গণ্য করেনি। জনমত জরিপে প্রকাশ পেয়েছে, জার্মান, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ইতালী, স্পেন, গ্রীস, রাশিয়াসহ সকল ইউরোপীয় দেশের আপামর জনগণ ইরাকের উপর এ হামলার প্রচণ্ড বিরোধী। বিরোধীতা প্রকাশ করেছে চীন সরকার। জাতিসংঘের তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারি কফি আনান বলেছেন, জাতিসংঘ সনদ মোতাবেক এ যুদ্ধ অবৈধ। অবৈধ বলেছে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন। এমনকি যে ইরাককে মার্কিন প্রশাসন তার প্রতিবেশী আরব দেশগুলীরি জন্য বিপদজনক বলছে তারাও এ হামলার বিরোধীতা করছে। আরব লীগের সাম্প্রতিক শীর্ষ সম্মেলনে এ হামলার বিরুদ্ধে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
মার্কিন প্রশাসনের রাগ গিয়ে পড়েছে তাদের এতো কালের ঘনিষ্ট মিত্র ফ্রান্সের উপরও। যেন ফ্রান্স তাদের পাকা ধানে মই দিয়েছে। মার্কিনীদের অভিযোগ, ইরাকে হামলার বিরুদ্ধে, ফ্রান্স ভেটোর হুমকি দিয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ ভুলে গেছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ২০০৩ সাল অবধি ৭২ বার ভেটো প্রয়োগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজে -যা অন্য যে কোন দেশের চেয়ে অধিক। তাদের ভেটোর দাপটে ইসরাইলের বর্বর নৃশংসতার প্রতিরোধ দূরে থাক তার নিন্দা করাও সম্ভব হয়নি। ফলে সে ইসরাইলী নৃশংশতা থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি হাজার হাজার অসহায় ফিলিস্তিনী নারীপুরুষ ও শিশুকে। মার্কিনীদের সক্রীয় সমর্থনেই ইসরাইল সমগ্র ফিলিস্তিনকে পরিণত করেছে একটি মৃত্যুপুরীতে। অথচ ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন ভেটোর হুমকী দিয়েছিল ইরাকের বিরুদ্ধে একটি প্রকান্ড যুদ্ধ রুখতে। ভেটো দিয়ে যদি এ যুদ্ধটি থামানো যেত তবে সেটিই হতো জাতিসংঘের ইতিহাসে সবচেয়ে কল্যাণকর ভেটো -যা ঘটেনি। কারণ এ যুদ্ধে ইরাকের বহু লক্ষ বেসামরিক নাগরিক নিহত বা চিরকালের জন্য পঙ্গু হবে –সে অভিমতটি ছিল বহু মার্কিনী বিশেষজ্ঞগণেরও। ইরাকের লক্ষ লক্ষ সন্তানহারা পরিবারে যে বহুকাল হাসিই ফুটবে না -সেটি সবারই জানা ছিল। মানবতার কল্যাণ তো এমন একটি ভয়ানক যুদ্ধ শুরুর মধ্যে নয়, বরং সেটি বন্ধের মধ্যে। কিন্তু সে সত্যটি অনুধাবনের সামর্থ্য মার্কিন নেতৃত্ব দেখায়নি।
২০০৩ সালে ইরাকের বিরুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধের শুরুটি হয় হাজার হাজার বোমা ফেলে। যুদ্ধ বিমান থেকে সে বোমাগুলো পাহাড় পর্বত বা মরুভূমিতে ফেলা হয়নি, বরং হয়েছে বড় বড় শহরের আবাসিক এলাকায়। তবে বেসামরিক নাগরিক হত্যায় মার্কিনী নৃশংসতা ও বিবেকহীনতা যে নজিরহীন –সে প্রমাণ ইতিহাসে প্রচুর। জাপানের হিরোসীমা ও নাগাসাকীতে তারা পারমানবিক বোমা ফেলেছে। নাপাম বোমায় জীবন্তদের জ্বালিয়ে মেরেছে ভিয়েতনামে। ১৯৯১ সালের যুদ্ধে ইরাকীদের উপর নিক্ষেপ করেছে বহু ডিপ্লিটিড ইউরোনিয়াম বোমা। যার ফলে ইরাকীদের মাঝে বাড়ছে ক্যান্সার। রণাঙ্গণ থেকে পশ্চাতপদ ইরাকী সৈন্যদের উপর বিমান থেকে ভারী বোমা ফেলেছে। এবং মৃত সৈন্যদের বুলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিয়েছে। আবু গারিব জেলে বন্দী ইরাকীদের উলঙ্গ করে তাদের দেহ দিয়ে পিরামিড গড়ে উৎসব করেছে। ইরাক ও সিরিয়ার বহু শহরকে তারা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এ হলো মার্কিনীদের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের রূপ।
নীতি প্রতারণার
প্রতিটি আগ্রাসনে বহুল ব্যবহৃত হাতিয়ারটি হলো প্রতারণা। হিংস্র পশু প্রতরণা করে না, সাম্রাজ্যবাদীরা এ কাজে সেয়ানা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতরণামূলক আচরন করেছে বিশ্ববাসীর সাথে। সেটির প্রমাণ, ইরাককের অস্ত্রবিলুপ্তি ও অস্ত্রপরিদর্শক নিয়ে জাতিসংঘে প্রদত্ত তাদের বয়ান। ইরাকের উপর হামলার মার্কিন সিদ্ধান্তটি যে জাতিসংঘে উঠায় বহু পূর্বেই গৃহীত হয়েছির –সেটি বুঝা যায় তা ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি দেখে। যুদ্ধ শুরুর বহু আগেই প্রায় তিন লক্ষ মার্কিন সৈন্যকে উপসাগরীয় এলাকায় মোতায়েন করা হয়। জমা করা হয় বিশাল নৌ-বহর। এ বিশাল রণ-প্রস্তুতি ইরাক সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে ছিল না, বরং সেটি ছিল একটি প্রকান্ড য্দ্ধু ও যুদ্ধশেষে জবরদখলের প্রস্তুতি। ইরাকের উপর জাতিসংঘে আলোচনা শুরুর বহু পূর্বেই প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ক্রসেডের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এমনকি তারও বহু পূর্বে -যখন তিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন না, তিনি ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চিনি এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ডোনাল্ড রাম্সফিল্ড ও তাঁর অন্যান্য কর্মকর্তাগণ প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনকে ইরাকের উপর হামলার আহবান জানিয়েছিলেন। ফলে এটি সহজেই বোধগম্য, ইরাক দখলের সিদ্ধান্ত যেহেতু বহু পূর্বেই গৃহীত হয়েছে, কোন আপত্তিকর অস্ত্র নাই সেটি প্রমানিত হলেও ইরাকের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত যুদ্ধটি পরিত্যক্ত হতো না। এবং সে যুদ্ধকে জায়েজ করার স্বার্থেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জেনে বুঝে জাতিসংঘ অস্ত্র পরিদর্শক দলের রিপোর্টকেও মিথ্যা বলছে। এটি নিরেট প্রতারণা।
জাতিসংঘ অস্ত্র পরিদর্শক দলের নেতা হ্যান্স ব্লিক্স সে সময় বলেছিলেন, ইরাকে কোন আপত্তিকর অস্ত্রের সন্ধান তারা পাননি। এবং আরো বলেছেন ইরাক সরকার সকল প্রকার সহযোগিতা করছে এবং অস্ত্র পরিদর্শন কাজে অবস্থার সন্তোষজনক উন্নতি ঘটেছে। যে কাজে বিগত ১২ বছরে হয়নি, গত ১২ সপ্তাহে তার চেয়ে বেশী অগ্রগতি হয়েছে সেটি তিনি বুঝিয়েছেন। ফ্রান্স, জার্মানী, রাশিয়া ও চীনসহ নিরাপত্তাপরিষদের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ এ প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে চায়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তা মানতে রাজী নয়। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য যদি ইরাকের অস্ত্রবিনাশ হতো, তবে তারাও সে রিপোর্টটি মেনে নিত। তাদের এজেন্ডাই তো ভিন্ন। কিন্তু তাদের লক্ষ্য ছিল ইরাক দখল। ফলে অস্ত্র পরিদর্শক দল যতই অব্স্থার সন্তোষজনক অগ্রগতির রিপোর্ট দিয়েছে, ততই মারমুখী হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র গ্রেট বৃটেন। এমন অস্ত্রপরিদর্শনে পরিকল্পিত হামলার মূল টাইম টেবিলে ব্যাঘাত ঘটছে দেখে বাড়ছিল তাদের অস্থিরতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সে হামলায় ধৈর্য ধরতে রাজী ছিল না, ফলে শুরু হয় আগ্রাসন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের লক্ষ্য শুধু ইরাকের সম্পদ লুন্ঠনই ছিল না। বরং সেটি ছিল মুসলিমদের শক্তি অর্জনের সকল প্রচেষ্ঠার বিনাশ। ইরাকের অপরাধ, দেশটি সামরিক শক্তি বাড়ানো চেষ্টা করছিল। সেটিকে মার্কন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করতে। কোন দস্যুই চায় না যে ঘরে সে হানা দিবে সে ঘরের গৃহস্বামীর প্রতিরক্ষার সামর্থ্য থাকুক। ধনবান গৃহস্বামী নিরস্ত্র, পঙ্গু ও বন্ধুহীন হলেই সে খুশি। কারণ অবাধ লুন্ঠনে তখন আর শক্তি ব্যয় হয় না। একই কৌশল প্রয়োগ করছে তারা ইরাকের বিরুদ্ধে। তাই নিজেদের ভান্ডারে সকল প্রকার বিধ্বংসী অস্ত্র থাকলেও অন্যরা বিশেষ করে মুসলিমগণ সেটির অধিকারি হোক সেটিতে তাদের প্রচণ্ড আপত্তি। তাই ইরাকের স্বল্প রেঞ্জের মিজাইল বা চালকহীন বিমানও তাদের কাছে বিপদজনক মনে হয়েছে। ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্র রয়েছে -এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বময় তোলপাড় করছে। অথচ তাদের হাতেই এ অস্ত্রটি সবচেয়ে বেশী। দৈনিক গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে ১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা অনুযায়ী তাদের ভান্ডারে ১৫,৬৩৭ টন মাস্টার্ড গ্যাস, ৭,৪৬৪ টন স্যারিন নার্ভ গ্যাস, ৪, ০৩২ টন ভি এক্স নার্ভ গ্যাস ও আরো বহুবিধ রাসায়নিক অস্ত্রের মওজুদ রয়েছে। অতএব ইরাকের অস্তু নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাথা ঘামানোর কোন নৈতিক ভিত্তি থাকে কি?
লক্ষ্য লুন্ঠন
ইরাকের উপর আগ্রাসনের লক্ষ্য অর্থনৈতিকও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধু সামরিক আধিপত্য নিয়ে তারা খুশি থাকতে চায় না, ইচ্ছামত শোষনও করতে চাই। কারণ, বিশ্বব্যাপী আধিপত্য প্রতিষ্ঠার কাজটি অতি ব্যয়বহুল। সে খরচ মার্কিনীদের পক্ষে নায্য উপার্জনের মাধ্যমে অসম্ভব। এ জন্যই লুটপাটের অবাধ ক্ষেত্র তাদের জন্য অপরিহার্য। তাদের লক্ষ্য, ছলে-বলে ও কলে-কৌশলে মধ্যপ্রাচ্যের অঢেল সম্পদকে তাদের দখলে নিতেই হবে। সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও বাইরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ প্রায় সবদেশগুলী দেশ এখন তাদের দখলে। তবে শোষনের যে সুযোগ এদেশগুলীতে তারা যা পাচ্ছে সেটিতে তারা খুশী নয়। এক গ্রামে ডাকাতী করে দস্যুরা তৃপ্ত হয় না। চায় গ্রামে গ্রামে ডাকাতির সুযোগ। তাদের ক্ষুধা সীমাহীন। আসন্ন হামলায় ইরাক এবং পরবর্তীতে ইরানেও যে মার্কিন দস্যুবৃতি প্রসারিত হবে। এ দস্যুবৃত্তিকে তারা নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও অপরিহার্য মনে করে।
মার্কিনীগণ নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থটি নিজ সীমান্তের মাঝে দেখে না, দেখে সমগ্র বিশ্বজুড়ে। এটি যেমন আফগানিস্তান ও ইরাক, তেমনি কোরিয়া, ফিলিপাইন, উযবেকিস্তান, সোমালিয়া ও জিবুতিতে। ২০০৩ সালের হিসাব মতে যুক্তরাষ্ট্র ১০.৪ মিলিযন ব্যারেল জ্বালানী তেল আমদানী করে। ২০২০ সাল নাগাদ তাদের আমদানীর পরিমাণ দাঁড়াবে ১৬.৭ মিলিয়ন। ইরাক দখলে সহজ হবে তেল সংগ্রহ। বিজয়ের পর যুদ্ধে সকল খরচও তারা পুষিয়ে নিবে। যেমনটি ১৯৯১ সালের ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সকল খরচ সৌদি আরব আর কুয়েত থেকে আদায় করে নিয়েছে। কুয়েত, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন ও ওমান জুড়ে মার্কিনীদের আজ যে সামরিক দখলদারিত্ব সেটির প্রতিষ্ঠায় নিজ পকেট থেকে তাদের একটি ডলারও ব্যয় হয়নি। তেমন প্রাণ হানীও হয়নি। কৈয়ের তেল কৈ ভেজেছে তারা। ইরাকেও তেমনটিই হতে যাচ্ছে। ইরাকের প্রতিরোধের সকল সামর্থ্য যুদ্ধ শুরুর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে। ফলে ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিনীদের সামান্যতম প্রাণহানীরও সম্ভাবনা ছিল না। অথচ জয়ের সামর্থ্যটি ছিল বিশাল। ফলে এমন একটি যুদ্ধ থেকে মার্কিনীদের মত সাম্রাজ্যলিপ্সু একটি দেশকে কেউ কি যুদ্ধ থেকে ফেরাতে পারে?
খুনীকে খুনী, দুর্বৃত্তকে দুর্বৃত্ত এবং সন্ত্রাসীকে সন্ত্রাসী বলার জন্য বিশাল মাপের মানবতা বা বিবেকবোধ লাগে না। নিরক্ষরেরও সেটি থাকে। কিন্তু সে সামর্থ্য কি মার্কিনীদের আছে? থাকলে সে প্রমাণ কই? মার্কিনীরা যে কতটা মানবতাশূর্ণ -সেটি ইসরাইলী নৃশংসতার প্রতি তাদের নিঃশর্ত সমর্থন ও সর্ববিধ সাহায্যই কি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় না? যে মানদন্ডে সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ এককালে ভারতের তাবত সম্পদকে নিজেদের রাজকীয় সম্পদ মনে করতো -সেরূপ একটি মানদন্ডে মার্কিনীরাও ইরাকের, এমনকি মুসলিম বিশ্বের তেল সম্পদকে নিজেদের জাতীয় সম্পদ মনে করে। কারণ, যুগ পাল্টালেও সাম্রাজাবাদ প্রতি যুগে অভিন্ন লুন্ঠন-সুলভ মানসকতারই জন্ম দেয়।
কি হবে প্রতিরোধের স্ট্রাটেজী?
প্রশ্ন হলো, মার্কিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কীরূপ হবে প্রতিরোধের স্ট্রাটেজি? আত্মসমর্পণে যেমন মর্যাদা বাড়ে না, তেমনি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয় না। সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাইরাইন, মিশর, ওমানের ন্যায় দেশগুলো যে ভাবে মার্কন এজেন্ডার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে তাতে তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা কোনটিই বাড়েনি। কোন গৃহে ডাকাত পড়লে যে গ্রামের প্রতিবেশী অন্য বাসিন্দারা যদি নিজ গৃহে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকে -সে গ্রামের কারোই ইজ্জত বাঁচে না। ডাকাতেরা একে একে সবারই ঘাড় মটকায়। ইংরেজদের হাতে বাংলা যখন পরাধীন হলো তখন প্রতিবেশী কেউ এগিয়ে আসেনি। জনগণের কাতার থেকে দেশটিতে স্বাধীনতার যুদ্ধও হয়নি। ফলে স্বাধীনতা শুধু বাংলাই হারায়নি, ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোও একই ভাবে স্বাধীনতা হারিয়েছে। অথচ ভিয়েতনামী যোদ্ধাদের রক্তত্যাগে দেশটি পরাধীনতা থেকে বেঁচেছিল। আগ্রাসী শত্রুর হামলার মুখে কে নামাজী আর কে বেনামাজী, কে ডানপন্থি আর কে বামপন্থি -সে বিবেচনায় কল্যাণ নাই।
মার্কিন সন্ত্রাসের মুখে আজ শুধু ইরাক নয়, সমগ্র বিশ্ব। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অপ্রতিহত থাকলে স্বাধীন ভাবে বাঁচাটিই অসম্ভব হবে। সবচেয়ে অসম্ভব হবে ঈমান নিয়ে বাঁচাটি। তখন মুসলিম গণহত্যা শুধু ইরাক, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া বা আফগানিস্তানে সীমিত থাকবে না, ছড়িয়ে পড়বে অন্যান্য মুসলিম দেশেও। কারণ, ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এটি হলো স্বঘোষিত ধর্মযুদ্ধ তথা ক্রুসেড। এবং ক্রুসেডের একটি ঐতিহাসিক পরিচয় আছে। সে পরিচয়টি খৃষ্টানদের পরিচালিত মুসলিম নির্মূলের বর্বরতম এবং নৃশংসতম যুদ্ধের।
যে দায়িত্ব প্রতিটি মুসলিমের
ইরাক আগ্রাসনের নায়ক সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ যেমন তার লক্ষ্য নিয়ে অস্পষ্টতা রাখেননি, তেমনি কোন মুসলিমের অস্পষ্টতা থাকা উচিত নয় মার্কিন ঘোষিত ক্রুসেডের উদ্দেশ্য নিয়ে। এরূপ হামলার লক্ষ্যই হলো মুসলিমদের মুসলিম রূপে শান্তিতে বাঁচাটি অসম্ভব করে তোলা। আফগান ও ইরাকীগণ মার্কিন হামলার শিকার হওয়ার কারণটি আফগান ও ইরাকী হওয়া নয়, বরং সেটি হলো তাদের মুসলিম পরিচিতি। ফলে তাদের সমস্যা শুধু তাদের নিজেদের সমস্যা নয়, বরং সেটি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সমস্যা। মহান আল্লাহতায়ালা ইসলামের এ শত্রুদের সম্মদ্ধেই হুশিয়ারী শুনিয়েছেন এবং বলেছেন, “এবং তোমাদের উপর হামলা থেকে তারা কখনোই বিরত হবে না -যতক্ষণ না তোমরা নিজেদেরকে ইসলাম থেকে সরিয়ে নাও।” -(সূরা বাকারা, আয়াত ২১৭)। কোন একক জাতি বা দেশের পক্ষে এ বিশাল বিশ্বশক্তির রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। সবার ঐক্য এখানে গুরুত্বপূর্ণ। চাই “ওয়া লা তাফাররাকু” (অর্থ: এবং তোমরা বিভক্ত হয়ো না) -মহান আল্লাহতায়ালার এ কোর’আনী ফরমানের আনুগত্য।
মুসলিম ভূমিতে শত্রুর হামলা শুরু হলে এগিয়ে আসতে হয় প্রতিটি মুসলিমকে। কারণ মুসলিমকে বাঁচতে উম্মাহর ধারণা নিয়ে। উম্মাহ কাজ করে একটি জনগোষ্ঠির একটি অভিন্ন দেহ রূপে। দেহের এক অংশে আঘাত হানলে, অন্য অঙ্গ বেদনা পায় এবং প্রতিরোধ করে। সেটি না হলে বুঝতে হবে সে বেদনাশূণ্য অংশটি দেহ থেকে খন্ডিত হয়েছে। তাছাড়া মুসলিম ভূমিতে মার্কিন সন্ত্রাসের কান্ডটি আদৌ গোপন বিষয় নয়। দেশটিতে সরকার পরিবরর্তন হয়, কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী নীতির পরিবর্তন হয় না। তাই হামলা যেমন প্রেসিডেন্ট বুশের আমলে হয়েছে, তেমনি প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলেও হয়েছে। ইসরাইলের আগ্রাসী নীতিই তাদের নীতি। নেকড়ে যেমন চরিত্র পাল্টায় না, তেমনি মার্কিনীরাও পাল্টায় না।
তাই এ মার্কিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ও প্রতিরোধে যার যা সামর্থ্য আছে -তা নিয়েই ময়দানে নামাটি প্রত্যেকের উপর ফরজ। সন্ত্রাসের যেমন ভৌগলিক সীমান্ত নাই, তেমনি নেই প্রতিরোধেরও। সন্ত্রাসবিরোধী সচেনতা গড়তে হবে ঘরে ঘরে। মার্কিন সামর্থ্যে বৃদ্ধি ঘটে -এমন প্রতিটি কর্মই হারাম। হামলার বিরুদ্ধে জিহাদ নিয়ে বাঁচাটাই ইবাদত। কারণ সে জিহাদে থাকে মহান আল্লাহতায়ালার হুকুমের প্রতি আনুগত্য। থাকে তাঁর দ্বীনকে বিজয়ী করার প্রেরণা। থাকে মুসলিম স্বার্থের প্রতিরক্ষার চেতনা। জিহাদের দায়িত্বটি সবার। মহান আল্লাহতায়ালা দায়িত্ব পালনের সে সামর্থ্য দিয়েছেন প্রতিটি নাগরিককে। দিয়েছেন বিপুল বুদ্ধিবৃত্তিক বল ও প্রতিবাদের ভাষা। ঈমানী দায়ভার হলো, সে সামর্থ্যের বিনিয়োগ। তখন শত্রুর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি কর্ম, প্রতিটি কোরবানী এবং প্রতিটি প্রয়াসই মহান আল্লাহতায়ার দরবারে মাগফেরাত লাভে সহায়ক হয়। চলমান ক্রুসেডের বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধ গড়ে উঠতে পারে বস্তুত এ ভাবেই। শত্রুকে গালীগালাজ করে পরকালে পরিত্রাণ মিলবে না। নিছক দোয়া পড়েও দায়িত্ব পালন হয়না। সে আগ্রাসী শত্রুর মোকাবিলায় নিজ নিজ প্রচেষ্ঠা বা কোরবানী কি ছিল -সে হিসাব মহান আল্লাহর দরবারে অবশ্যই দিতে হবে। ১ম সংস্করণ ১৮/০৩/২০০৩; ২য় সংস্করণ ১৭/০১/২০২১।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- ভারতীয় ষড়যন্ত্র রুখতে হবে
- সম্প্রতি বাংলাদেশে যা দেখলাম
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018