স্বাধীনতার বসন্ত কীরূপে সম্ভব বাংলাদেশে?
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on September 19, 2021
- Bangla Articles, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
অধিকৃতি অসভ্য শক্তির
বাংলাদেশের জন-জীবনে চলছে দুর্বৃত্ত শাসনের নৃশংস বর্বরতা। চলছে চুরি-ডাকাতি, ভোটডাকাতি, গুম, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও ফাঁসীর রাজনীতি। চলছে ভারতের প্রতি আত্মসমর্পিত গোলামী। বাঙালী জনগণ এরূপ অসভ্য শাসন কোন কালেই দেখেনি। এমন কি ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ আমলেও নয়। হাসিনার সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো সে তার নিজের, তার নিজ পিতার ও তাদের প্রভু ভারতের কদর্য চেহারাকে অতি উলঙ্গ রূপে বাংলাদেশের জনগণের সামনে তুলে ধরেছে। হাসিনা ও তার সঙ্গিরা যে কতটা নৃশংস দুর্বৃত্ত -সেটি বুঝানোর জন্য কোন রাজাকারের বই বা বক্তৃতা দেয়ার প্রয়োজন নাই। হাসিনা নিজেই সেটি তার কর্ম ও আচরণের মধ্য দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। এতো কুখ্যাতি স্বৈরাচারি আইয়ুব বা এরশাদেরও ছিল না। তাদের রাজনীতিতে এরূপ গুম, খুন, ধর্ষণ ও ফাঁসি ছিল না। মুজিবকে ভারতের চর জেনেও পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ তার গায়ে একটি আঁচড়ও দেয়নি। বরং মাসিক ভাতা দিয়েছে তার পরিবারকে।
মানুষকে চেনার শ্রেষ্ঠ উপায়টি হলো তার বন্ধুদের চেনা। কারণ বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সবাই নিজের চেতনা ও চরিত্রের সাথে সম্ভাব্য বন্ধুর মনের ও চরিত্রের মিলটা দেখে। মদখোর ব্যক্তি তাই মদখোরকে বন্ধু রূপে বেছে নেয়। ডাকাত বন্ধুত্ব করে ডাকাতের সাথে। তেমনি ইসলামের দুশমন বেছে নেয় ইসলামের জঘন্যতম দুশমনকে। মনের ও চরিত্রের সে গভীর মিলটার কারণেই হাসিনার ঘনিষ্ট বন্ধু হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নরেন্দ্র মোদীর ৭১তম জন্ম দিনে ৭১টি গোলাপ দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে হাসিনা সে বন্ধুত্বের প্রমাণ রেখেছে। তাই খুনি নরেন্দ্র মোদির চরিত্র দেখে বুঝা যায় হাসিনার আসল চরিত্র। মনের এ মিলের জন্যই ইসলাম ও মুসলিমদের দমিয়ে রাখার যুদ্ধে নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ট পার্টনার হলো ভোটডাকাত হাসিনা।
নরেন্দ্র মোদীর হাতে হাজার হাজার মুসলিমের রক্ত। মোদী যখন গুজরাতের মুখ্য মন্ত্রী ছিল তখন প্রায় ৩-৫ হাজার মুসলিম নারী, পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করা হয়। মোদী সে মুসলিম নিধন বন্ধ করতে পুলিশ পাঠায়নি। মুসলিমদের ঘরে আগুন দিয়ে সে আগুনে জীবন্ত শিশুদের নিক্ষেপ করা হয়। শত শত মুসলিম মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়। ভারতীয় পত্রিকাতেও সে খবর ছাড়া হয়েছে। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে দাড়ি রাখা বা মাথায় টুপি দেয়ার জন্য পথে ঘাটে মুসলিমদের উপর নির্যাতন করা হয়। বাবরী মসজিদ ধ্বংসের নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং গুন্ডা সংগ্রহ করেছিল মোদী। এখন নাগরিকত্ব রেজিস্ট্রীভূক্ত করার নামে ষড়যন্ত্র করছে লক্ষ লক্ষ মুসলিমদের বাংলাদেশী বহিরাগতের লেবেল লাগিয়ে ভারত থেকে বহিস্কারের।
দায়িত্ব দুর্বুত্তদের ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখার
সমাজকে সভ্যতর ও নিরাপদ করার স্বার্থে শুধু ভাল মানুষদের চিনলে চলে না, মানবরূপী হিংস্র পশুদেরও চিনতে হয়। চিনিয়ে দেয়ার কাজটি বুদ্ধিজীবীদের। এটি নিশ্চিত করা, মানবরূপী দানবগণ যে কতটা অমানুষ, নৃশংস ও দুর্বৃত্ত হতে পারে ইতিহাসের পাঠকগণ যেন হাসিনার কাহিনী পড়ে যেন জানতে পারে। বর্বরতার এরূপ ইতিহাস তুলে ধরাটি মহাজ্ঞানী মহান আল্লাহতায়ালার সূন্নত। মহান আল্লাহতায়ালা ফিরাউনের নৃশংসতার ইতিহাস পবিত্র কুর’আনে লিপিবদ্ধ করে তা ক্বিয়ামত অবধি বাঁচিয়ে রাখার ব্যবস্থা করেছেন। এখানে লক্ষ্য, মানুষ যাতে হিংস্র পশুদের চেনার সাথে নৃশংস দুর্বৃত্তদের চিনতেও ভূল না করে। তাই মহান আল্লাহতায়ালার পবিত্র সূন্নত হলো এসব দুর্বৃত্তদের নৃশংসতার বিবরণগুলি ইতিহাস থেকে কখনোই হারিয়ে না যেতে দেয়া।
ইতিহাসে শেখ হাসিনা শত শত বছর বেঁচে থাকবে তার পিতার ন্যায় নৃশংস বর্বরতার কাহিনী নিয়ে। আজ থেকে বহু শত বছর পর বাঙালী প্রজন্ম যখন ইতিহাসের বই পড়বে তখন তারা বিস্মিত হবে ও ধিক্কার দিবে একথা ভেবে, বাংলার মাটি এমন বর্বর, অসভ্য ও নৃশংস অমানুষও জন্ম দিতে পারে! এবং বিব্রত হবে এ দেখে, হাসিনার ন্যায় এ অমানুষগণ গুম, খুন, ধর্ষণ, ফাঁসি ও মিথ্যচারকেও রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়েছিল! এরাই গণ্য হবে দুর্বৃত্ত মানুষদের আইকন রূপে। তাই দায়িত্ব হলো, শেখ হাসিনার বর্বরতার এ কাহিনীগুলোক ইতিহাসে বাঁচিয়ে রাখা।
কাশ্মির ও ভারতের মজলুম মুসলিমদের দুঃখ-বেদনা হাসিনা মনে সামান্যতম সহানুভূতি সৃষ্টি করেনি। বরং সেগুলি অভিন্ন মিশনে ঘনিষ্টতর করেছে খুনি নরেন্দ্র মোদীর সাথে হাসিনার বন্ধুত্বকে। এ কলংক বাংলাদেশীদের জন্যও। হাসিনার কারণেই বাংলাদেশের নাগরিকগণ ভারতীয় নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে দাঁড়াতে পারছে না। তাদের পক্ষে কথা বলা ও রাস্তায় মিছিল করাও হাসিনা নিষিদ্ধ করেছে। কথা বললে আবরার ফাহাদের ন্যায় তার দলীয় গুন্ডাদের হাতে লাশ হতে হয়। নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর কালে হাজার হাজার পুলিশ রাস্তায় নামানো হয় মোদী বিরোধী মিছিল বানচাল করতে।
মুসলিম ইতিহাস ও বাঙালী মুসলিমের ইতিহাস
মুসলিমদের ইতিহাস তো বড় বড় সাম্রাজ্য ও বিশ্বশক্তি নির্মূলের ইতিহাস। ইতিহাসটি সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা নির্মাণের। রোমান সাম্রাজ্য, পারসিক সাম্রাজ্য, সোভিয়েত সাম্রাজ্য ও মার্কিন সাম্রাজ্য –এরূপ বড় বড় বিশ্বশক্তিকে পরাজিত করতে পেরেছে একমাত্র মুসলিমগণই। সমগ্র বাংলাকে জয় করেছে মাত্র ১৭ জন মুসলিম সৈনিক। এসবই ইতিহাস। এসব বিজয় এসেছে একমা্ত্র মহান আল্লাহতায়ালার সাহায্যের ফলে। যারাই মহান আল্লাহতায়ালার দ্বীনের বিজয় ও মুসলিমদের ইজ্জত বাড়াতে খাড়া হয়, তাদের বিজয় বাড়াতে তিনিও নিজের বাহিনী দিয়ে সাহায্য করতে সদা প্রস্তুত। সে প্রতিশ্রুতির কথা তো পবিত্র কুর’আনে বার বার এসেছে। তাই ভারত কেন, বিশ্বের ৫০টি দেশের সন্মিলিত বাহিনী পরাজিত করাও তখন সহজ হয়ে যায়। সম্প্রতি তালেবানগণ তো সে ঐতিহাসিক সত্যটিই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। তারা যে শুধু মার্কিনীদের হাতে গড়া ৩ লাখ সৈন্যের আফগান বাহিনীকে পরাজিত করেছে -তা নয়। তারা পরাজিত করেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ৫০টি বেশী দেশের সেনা বাহিনীকেও। ফলে ২০ বছর যুদ্ধ করেও তারা জিততে পারিনি।
অথচ পরিতাপের বিষয় হলো বাঙালী মুসলিমগণ ইতিহাস গড়েছে ভিন্ন পথে। বিগত ১৪ শত বছরের মুসলিম ইতিহাসে বাঙালী মুসলিমগণই একমাত্র মুসলিম জনগোষ্ঠি যারা যুদ্ধ করেছে পৌত্তলিক কাফের শক্তির কমান্ড মেনে নিয়ে তাদের অনুগত তাবেদার রূপে। তাদের অর্থে ও খাদ্যে প্রতিপালিত হয়ে। এবং সেটি একটি কাফের শক্তির এজেন্ডা পূরণে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানকে খণ্ডিত করে। সেটি করেছে ১৯৭১’য়ে মুজিবের ন্যায় একজন ইসলাম বিরোধী ভারতীয় গোলামের নেতৃত্বে। এবং ভারতীয় সে দাসকে সন্মানিত করেছে জাতির পিতা ও বঙ্গবন্ধু রূপে। বাঙালী মুসলিমের পৌত্তলিক তোষণের এ জঘন্য পাপ কি মহান আল্লাহতায়ালার খাতায় লিপিবদ্ধ হয়নি?
অথচ মুসলিম জীবনে শুধু উপার্জন ও পানাহার হালাল হলেই চলে না, হালাল হতে হয় তার রাজনীতি, যুদ্ধবিগ্রহ ও জন্ম। রাজনীতি ও যু্দ্ধবিগ্রহে কোনটি হালাল এবং কোনটি হারাম তা সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছেন খোদ মহান আল্লাহতায়ালা। এবং সেটি পবিত্র কুর’আনে। কোন পৌত্তলিক কাফেরদের কমান্ড মেনে নেয়া দূরে থাক তাদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহন করাকে মহান আল্লাহতায়ালা কঠোর ভাবে হারাম করেছেন সুরা মুমতাহিনার ১ নম্বর আয়াতে এবং সুরা আল ইমরানের ২৮ নম্বর আয়াতে। অথচ সে হারাম কাজের মধ্য দিয়েই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম। সে হারাম জন্ম ও ভারতের বিজয় নিয়ে আজ বাঙালী মুসলিমের প্রতি বছরে বিশাল উৎসব। কাফেরদের বিজয়কে তারা নিজেদের বিজয় রূপে দেখে। ১৪ শত মুসলিম ইতিহাসে কখনো কি এমনটি হয়েছে? মুসলিমের মুখে যারা কালিমা লেপন করে এবং পৌত্তলিক কাফেরদের উৎসব বাড়ায়, তাদেরকে কি আল্লাহতায়ালা কখনো সুখ বা আনন্দ দেন। তখন তো তাদের পাওনা হয় শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ন্যায় দুর্বৃত্তদের শাসন। তখন জুটে ভারতের ন্যায় কাফের শক্তির গোলামী। জুটে দুর্ভিক্ষ। এবং জুটে আন্তর্জাতিক অঙ্গণের তলাহীন ভিক্ষার ঝুলির অপমান। বাংলার ইতিহাস এরূপ নৃশংস বর্বর শাসন ও এরূপ বিশ্বজুড়া অপমান কি আর কোন কালে জুটেছে? এসবই তো একাত্তরের অর্জন। এবং তা নিয়েই বাঙালীর অহংকার ও উৎসব।
প্রতিটি হারাম কাজই প্রতিশ্রুত আযাব ডেকে আসে। ভাল ফসলের ন্যায় ভাল নেতাও মহান আল্লাহতায়ালার বিশেষ নেয়ামত। মহান রাব্বুল আলামীন শুধু ভূমিকম্প, ঘুর্ণিঝড়, সুনামী বা মহামারী দিয়ে আযাব দেন না, আযাব দেন জালেম শাসককে ঘাড়ে চাপিয়েও। মহান রাব্বুল আলামীনের অনুমতি ছাড়া গাছের একটি পাতাও পড়েনা। তাই তাঁর অনুমতি ছাড়া এরূপ বিশাল ও ভয়ানক কান্ডগুলি কি কখনো ঘটতে পারে? অবাধ্য ইহুদীদের ঘাড়ে তাই বার বার চাপানো হয়েছে নৃশংস জালেমদের শাসন। সুরা মুমতেহানার ৫ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে হযরত ইব্রাহীম (আ:) জালেম শাসনের সে আযাব থেকে বাঁচতে তিনি কীরূপ দোয়া করেছিলেন। তাই ভারতের গোলামী এবং মুজিব ও হাসিনার নৃশংস শাসন বাঙালী মুসলিমের জীবনে নিয়ামত রূপে আসেনি, এসেছে হারাম রাজনীতির কারণে অর্জিত আযাব রূপে। এরূপ জালেম শাসকগণ নৃশংস শাসন, শোষণ, গণহত্যা, ধর্ষণ, চুরিডাকাতি ও সন্ত্রাস উপহার দিবে -সেটিই কি স্বভাবিক নয়? তাই যতদিন হারাম রাজনীতি বেঁচে থাকবে ততদিন আযাবও আসতে থাকবে। তখন দুর্বৃত্ত মুজিব বা হাসিনার পতন বা মৃত্যু হলে আরেক হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানো হবে প্রাপ্য আযাবকে দীর্ঘায়ীত করা প্রয়োজনে।
বিপ্লবের মোক্ষম লগ্ন
মহান আল্লাহতায়ালা যেমন অর্জিত আযাবগুলি নিশ্চিত করেন, তেমনি পাপ মোচনেরও পথ করে দিন। সুযোগ করে দেন তাওবার ও পবিত্র জিহাদের। মুসলিমের রাজনীতিই মানেই পবিত্র জিহাদ। এটি দুর্বৃত্তির নির্মূল ও সভ্যতর সমাজ নির্মাণের লড়াই। বাংলাদেশীদের সামনে তেমন একটি সুযোগ আবার এসেছে। পোষমানা কিছু কুকুর ছাড়া দুর্বৃত্ত ডাকাতকে কোন ভাল মানুষই পাহারা দেয় না। বরং সবাই চায় তার আসন্ন বিনাশ। তেমনি একটি অবস্থা প্রতিটি দুর্বৃত্ত শাসকের। তাই হাসিনার পাশে একমাত্র কিছু মানবরূপী পোষা পশু ছাড়া কেউ নাই। হাসিনার পিতা শেখ মুজিবকেও কেউ নিরাপত্তা দেয়নি। হাসিনার ভিতটি তাই আজ নড়বড়ে। বাংলাদেশীদের জীবনে সেই দিনটি হবে দারুন খুশির, যখন ক্ষমতা থেকে হাসিনার পতন হবে। সাথে সাথে তখন জনগণের জীবনে দারুন উৎসব নেমে আসবে -যেমন এসেছিল হাসিনার ফ্যাসিস্ট পিতা শেখ মুজিবের মৃত্যুতে। তখন জনগণ পাবে ফিরাউনের জেলের দুর্দিন থেকে মুক্তি পাওয়ার বিশাল আনন্দ। ঘরে ঘরে তখন আসবে ঈদের খুশি। দেশবাসী তেমন একটি খুশির দিনের জন্য অপেক্ষা করছে।
বিপদের মুখে পড়েছে হাসিনার প্রভু ভারত। হাসিনার জন্য তাই এখন আরো দুর্বল মুহুর্ত। ভারতীয় নেতাদের মনে এখন প্রচণ্ড তালেবান ভীতি। কাশ্মিরে তালেবান ঢুকবে -সেটি এখন নিশ্চিত। কারণ জালেম কাফেরদের নির্যাতন থেকে কাশ্মিরের মজলুম মুসলিমদের মুক্তি দেয়া তো প্রতিটি মুসলিমের ঈমানী দায়িত্ব। মুসলিম কি সে দায় এড়াতে পারে? ঈমানের বলে বলীয়ান তালেবানগণ যে সে কাজে নিশ্চিত এগিয়ে আসবে -ভারত সেটি জানে। ইসলামের গৌরব কালে জিহাদ যেমন আরবে সীমিত থাকেনি, তেমন আজ সীমিত থাকবে না আফগানিস্তানে। এখানেই ভারতের আসন্ন পরাজয়ের ভয়। তাছাড়া ভারত যদি নিজ এজেন্ডা নিয়ে ১৯৭১’য়ে পূর্ব পাকিস্তানে ঢুকতে পারে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আফগানিস্তান ও ইরাকে ঢুকতে পারে তবে তালেবান কেন ভারতে ঢুকতে পারবে না?
ভারতের তালেবান ভীতির কারণ: তালিবানদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার ৫০টির বেশী মিত্র দেশ যুদ্ধেশোচনীয় ভাবে হেরে গেছে। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটের চেয়ে শক্তিশালী নয়। এবং ভারত বলতে গেলে একা। হাসিনা ছাড়া তার পাশে আর কেউ নাই। হাসিনার সামর্থ্য নাই যে সে অস্ত্র নিয়ে তার বন্ধু মোদীর পাশে খাড়া হবে। ফলে কাশ্মিরে ভারতের পরাজয় সুনিশ্চিত। কাশ্মিরে মোতায়েনকৃত ৬ লাখ ভারতীয় সৈন্য শুধু তাদের ক্ষয়ক্ষতিই বাড়াবে। পরাজয়ের সাথে ধ্বস নামবে ভারতের অর্থনীতিতে। কারণ যুদ্ধ মানেই রক্তপাত; সেটি যেমন দেহে, তেমনি অর্থনীতিতে।
নিজ দেশের বিপদের কারণে মোদী কি পাবে হাসিনার পাশে দাঁড়ানোর শক্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপালিত আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি ও তার সৈনিকগণ যেমন অস্ত্র ছেড়ে পালিয়েছে তেমনি পালাবে হাসিনা ও তার পোষা রক্ষীরা। দুর্দিনে স্বৈর শাসকের কোন বন্ধু থাকে না। তাই হাসিনার পিতাকে বাঁচাতে কেউ এগুয়নি, হাসিনাকে বাঁচাতেও কেউ এগুবে না। এমন কি মুজিবের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মালিক উকিল বলেছিলেন, “ফিরাউনের পতন হয়েছে।” ইতিহাসের সেটিই শিক্ষা। বাংলার দোয়ারে তাই বসন্তের সুবাতাসের যথেষ্ট সম্ভাবনা। কিন্তু বাংলাদেশীগণ কি পারবে এই অনুকুল পরিস্থিতি থেকে ফায়দা নিতে? সে প্রস্তুতিটা কই?
হাসিনার বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ -সেটিই শুধু হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়, সেটি ভারতের মুসলিম হত্যাকারী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধও। তাই এ যুদ্ধ কোন সাধারণ যুদ্ধ নয়, এটি হলো শতভাগ জিহাদ। বাংলাদেশকে হাসিনার পরিণত করেছে আরেক কাশ্মিরে। তাই বাংলাদেশীদের যুদ্ধটি হলো ভারতের দখলদারী থেকে মুক্তির পবিত্র লড়াই। আর কোন লড়াই পবিত্র জিহাদে পরিণত হলে সে যুদ্ধের পরাজয় অসম্ভব হয়। কারণ জিহাদের মালিকানা তখন জনগণের থাকে না, সেটির মালিকানা মহান আল্লাহতায়ালার নিজে নিয়ে নেন। জনগণের দায়িত্ব হলো এ জিহাদের নিজেদের জান ও মালের বিনিয়োগ বাড়ানো। আর বান্দার সে বিনিয়োগ দেখে মহান আল্লাহতায়ালার বাড়ান তাঁর নিজের বিনিয়োগ। তখন বিজয় নিশ্চিত করতে ফিরিশতাগণ রণাঙ্গণে নেমে আসে। অতএব বাঙালী মুসলিমদের সফলতা শতভাগ নির্ভর করছে, তাদের লড়াইকে তারা কতটা নির্ভেজাল জিহাদে পরিণত করতে পারলো -তার উপর।
সামনে দুটি পথ
প্রশ্ন হলো, বাঙালী মুসলিমগণ কি হাসিনার ন্যায় ভারতের এক পুতুলকেও সরাতে পারবে না? ৩ কোটি ৮০ লাখ আফগানের তুলনায় ১৬ কোটি মুসলিম কি এতোই শক্তিহীন। অথচ কাজটি অতি সহজ। স্রেফ শর্ত হলো, সে কাজের জন্য বাঙালী মুসলিমদের প্রথমে সত্যিকার মুসলিম হতে হবে। কারণ মহান আল্লাহতায়ালার সাহায্য পাওয়ার জন্য এটিই হলো পূর্বশর্ত। আর মহান আল্লাহতায়ালার সাহায্য ছাড়া কোন বিজয় আসে না। মুজিবের ন্যায় ইসলাম বিরোধী দুর্বৃত্ত ও ভারতের দালালকে যারা জাতির পিতা ও বঙ্গবন্ধুর আসনে বসিয়ে জপ করে তারা কি মহান আল্লাহতায়ালার সাহায্য পাওয়া যোগ্য বিবেচিত হয়? তখন তা জুটে তা তো আযাব। তখন শেখ হাসিনার ন্যায় নৃশংস জালেমকে শাসক রূপে চাপানো হয় প্রতিশ্রুত আযাব প্রদানের হাতিয়ার রূপে।
মুসলিম হতে হলে প্রথমে বিশ্বাস ও কেবলা পাল্টাতে হয়। পূজার পুতুলগুলি সরাতে হয় মনের ভূমি থেকেও। চেতনার ভূমিতে সেক্যুলারিজম, জাতীয়তাবাদ ও লিবারিলাজিমের আবর্জনা বাড়িয়ে কি মুসলিম হওয়া যায়? মুসলিমকে চেতনার ভূমিকে শতভাগ সুরক্ষিত রাখতে একমাত্র মহান আল্লাহতায়ালা ও তাঁর দ্বীন ইসলামের জন্য। বাঙালী মুসলিমের এখানেই নিদারুন ব্যর্থতা। সে ব্যর্থতার কারণে যে বিজয় তালেবানগণ অর্জন করলো তা অসাধ্য ও অকল্পনীয় থেকে যাচ্ছে ১৬ কোটি বাঙালী মুসলিমের জীবনে। বাঙালী মুসলিমদের সামনে দুটি পথ। একটি একটি বিজয় ও স্বাধীনতার পথ। অপরটি পরাজয়, গোলামী ও আযাবের পথ। বিজয়ের পথটি হলো সত্যিকার মুসলিম রূপে নিজেদের গড়ে তোলা এবং ঈমানী দায়িত্ব পালনে নিজের জান ও মাল নিয়ে ময়দানে নেমে পড়ার পথ। এ পথটিই পবিত্র জিহাদের। এ পথেই মহান আল্লাহতায়ালার সাহা্য্য জুটে এবং বিজয় জুটে। যারা বিজয়ের পথ পরিহার করে তাদের জন্য যা অনিবার্য হয় তা হলো ভয়ানক আযাবের পথ। সে পথটি ভারত ও হাসিনার ন্যায় ভারতীয় সেবাদাসদের নৃশংস শাসন প্রাপ্তির পথ। কোন পথটি বেছে নিবে -সে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তটি নিতে হবে বাংলাদেশীদেরই। ১৯/০৯/২০২১।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018