স্যাডিস্ট হাসিনা এবং বাংলাদেশের লুন্ঠিত স্বাধীনতা
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on October 29, 2020
- Bangla Articles, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
মৃত্যুটি বিবেকের
অন্যের বেদনা যতই তীব্র ও হৃদয়বিদারক হোক -তা নিয়ে চোর-ডাকাতদের সামান্যতম অনুভুতি থাকে না। বরং অন্যের বেদনা বাড়িয়ে তারা উৎসব করে। তাদের তৃপ্তি তো অন্যদের খুন করায় ও নিঃস্ব করায়। অনুরূপ তৃপ্তি ভোট-চোর ও ভোট-ডাকাতদেরও। তারাও জনগণের ভোট ডাকাতি করে মহোৎসব করে। ভোট-ডাকাতির নির্বাচন শেষে হাসিনা তাই দাঁতগুলি দেখিয়ে অট্টহাসি দিয়েছিল। সভ্য সমাজে মানুষের বড় সম্পদ শুধু ধনসম্পদ নয়, সেটি ভোট দানের অধিকার। ভোট দিয়ে সে যেমন দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করে, তেমনি পাল্টায় নিজের ভাগ্যও। ভোটের উপর ডাকাতিতে জনগণ ব্যাথিত হবে –সেটি তাই স্বাভাবিক। কিন্তু জনগণের সে বেদনা নিয়ে চোর-ডাকাতদের ন্যায় ভোট-ডাকাতদেরও সামান্যতম অনুভুতি থাকে না। চোর-ডাকাতগণ চুরি-ডাকাতিতে নামে দেহের রোগের কারণে নয়, সেটি মানসিক রোগের কারণে। সেটি হলো স্যাডিজম। এ রোগে মারা পড়ে বিবেকবোধ এবং সুস্থ্য চিন্তা-চেতনা। বিবেকহীনতা ও কুরুচি তখন এতোটাই জঘন্য পর্যায়ে পৌঁছে যে, অন্যের বেদনা নিয়ে এরা আনন্দ-উৎসব করে। এরা কষ্ট পায় অন্যদের সুখ দেখলে। এবং আনন্দ পায় পথে-ঘাটে সরকার-বিরোধীদের লাশ পড়াতে। তখন রাজনীতি লাশের রাজনীতিতে পরিণত হয়।
একই রূপ স্যাডিজম প্রবল কাজ করে ডাকাতদের মাঝে। ফলে ডাকাতি শেষে নিরীহ গৃহস্বামীকে হত্যা করে তারা অট্ট হাঁসি দেয়।এরূপ মস্তৃষ্ক বিকৃত স্যাডিস্টগণই ধর্ষণে সেঞ্চুরি করার পরও নির্যাতিত মহিলাদের চোখের সামনে উৎসব করে। এমন স্যাডিস্টদের প্রচণ্ড ভীড় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুব লীগের মত সরকারি দলের ক্যাডাররদের মাঝে। মল-মুত্র ও গলিত আবর্জনা যেমন মশামাছিকে আকর্ষণ করে, দুর্বৃত্ত কবলিত আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলিও তেমনি দেশের অতি নৃশংস অপরাধীদেরকে টেনে এনেছে রাজনীতিতে। এদের অনেককে ঢুকানো হয়েছে পুলিশ, আদালত, সেনাবাহিনী এবং প্রশাসনিক ক্যাডারে। এভাবে দ্রুত দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে সামরিক ও বেসামরিক অঙ্গণে। রাষ্ট্রের ড্রাইভিং সিট দখলে গেছে বিবেকহীন স্যাডিস্টদের দখলে। বাংলাদেশীদের জন্য মহাবিপদের কারণ এখানেই। এরই আলামত, চুরি-ডাকাতি,গুম-খুন ও ধর্ষণের বর্বরতায় জনজীবন অতিষ্ট হলেও তা থেকে মুক্তি দেয়ার কোন সরকারি উদ্যোগ নেই। বরং দিন দিন সে বর্বরতা আর তীব্রতর হচ্ছে। কারণ, নিজের আনন্দ বাড়াতে হাসিনা নিজেই চায়, আরো বেশী লাশ পড়ুক। হাসিনার মানসিক অসুস্থ্যতা যে কীরূপ প্রকট সেটি বুঝা যায়, তার দলীয় কর্মীদের প্রতি এক লাশের বদলে দশটি লাশ ফেলার নির্দেশ থেকে। এজন্যই তার ক্ষমতায় আসাতে বাংলাদেশের পথেঘাটে বেড়েছে লাশের ছড়াছড়ি। লাশ পড়ছে সরকারি বাহিনীর হাতে। ২৭/১০/২০২০ তারিখে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকা ও সোসাল মিডিয়া ভয়ানক খবর ছেপেছে। খবরটি হলো তদন্তকারি পুলিশ বাহিনী আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য হাজী সলিমের বাসা থেকে হাতবেড়ি এবং ওয়ারলেস যোগাযোগের সামগ্রী ক্রোক করেছে। এরূপ হাতবেড়ি ও ওয়ারলেস সামগ্রী পুলিশ কেন্দ্রে থাকার কথা। এ থেকে বুঝা যায়, এগুলো ব্যবহৃত হয়েছে সাদা পোষাকে অন্যদের ধরে এনে গুম ও খুন করার কাজে। এ অবধি দেশে বহুশত ব্যক্তি গুম ও খুন হয়েছে। তাদের অনেকে যেমন গুম-খুন সরকারি বাহিনীর হাতে হয়েছে, তেমনি হয়েছে হাজী সেলিমের বেসরকারি বাহিনীর হাতেও।
শেখ হাসিনার হাতে লাশ ফেলার আয়োজন কতটা বেড়েছে তার একটি বিবরণ দেয়া যাক। ৩১/১/১৩ তারিখে দৈনিক যুগান্তর খবর ছেপেছিল,“ঢাকার আশেপাশে নির্জন এলাকায় লাশ আর লাশ। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে সাদা পোষাক ও সাদা গাড়ির সাহায্যে অসংখ্য মানুষ গুম হচ্ছে, ঘর থেকে তুলে নেয়ার পর তারা আর ফিরে আসে না। লাশ হয়ে রাতের আঁধারে তারা ডাম্পিং হচ্ছে এবং পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে্ ঢাকার আশের পাশে মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী, মেঘনা ও পদ্মার নির্জন তীরে, মাওয়া সড়কের পাড়ে, নারয়নগঞ্জের সীতালক্ষার তীরে অথবা কাপাসীয়ার গজারী শালবনে। পত্রিকাটি আরো লিখেছে, একমাত্র ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসেই এসব এলাকায় অর্ধশত লাশ পাওয়া গেছে। লাশ পড়ছে প্রতিদিন। দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, নারায়নগঞ্জে এক ডজন খুন হলো সম্প্রতি। সরকার মূলা ঝুলিয়েছে এ বলে যে, বিচার হবে। কিন্তু সরকারের ভূমিকা যেন এ পর্যন্তই। কোন তদন্তু নাই, কোন মামলা নেই, কোন গ্রেফতারিও নাই এবং কোন বিচারও নাই।
শুধু গাজীপুরেই ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ৮ জন খুন হয়েছে। আশুলিয়াতেই খুন হয়েছে ৫ জন। প্রশ্ন হলো, একাত্তরের খুনের চেয়ে আজকের এ খুনগুলো কি কম নৃশংস? যারা খুন হলো তাদের পরিবারের কি সরকারের কাছে চাওয়া পাওয়া নেই? সরকারের কাজ কি শুধু শেখ হাসিনার পিতামাতার হত্যাকারিদের বিচার করা? এ অপরাধগুলি কি মানবাধিকার বিরোধী নয়? খুন শুধু একাত্তরে হলেই অপরাধ।এবং সে অপরাধের বিচারের নামের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ট্রাইবিউনাল গঠিত হবে। অথচ বাহাত্তরে, তেহাত্তরে, চুহাত্তরে বা তার পরে কেউ খুন হলে তার বিচার হবে না -সেটি কি কোন সভ্য সমাজে এবং সভ্য মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য?
ডাকাতির শিকার আদালত
জামায়াত নেতাদের ফাঁসীর দাবী নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও মন্ত্রীদের রাজপথে নামতে দেখা গেছে। আব্দুল কাদের মোল্লাকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদন্ডের শাস্তি দিয়েছিল। কিন্তু এ রায়ে তারা খুশি হয়নি। তাদের দাবী, আদালতকে সে রায়ই দিতে হবে যা তারা রাজপথে দাবী করছে। তাদের দাবী, আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিতে হবে। আদালত তাদের সে দাবী মেনে নিয়ে ফাঁসির হুকুম দিয়েছে। এর কি অর্থ দাঁড়ালো? এর অর্থঃ বিচারের দায়িত্ব এখন আর বিচারকদের হাতে নেই। বিচারকদের সে অধিকার ছিনতাই হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে। ডাকাতি হয়েছে আদালতেও। সেটি এখন রাজপথে দাবী করে আদায়ের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এবং সে দাবী জানানোর অধিকারটিও একমাত্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। অন্যরা ন্যায় বিচারের দাবী নিয়ে রাস্তায় নামলে তাদের উপর গুলি চালানো হয়। এই হলো শেখ হাসিনা সরকারের বিচার ব্যবস্থা।
হাসিনা সরকারের লক্ষ্য, বিচারের নামে রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মূল। দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার ফলে দেশ আজ ছেয়ে গেছে চুরি-ডাকাতি, গুম, খুন ও ধর্ষণে। কিন্তু সেগুলি নির্মূলের দাবী নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজপথে নামতে দেখা যায় না। অথচ তারা রাজপথে আওয়াজ তোলে সরকার-বিরোধীদের ফাঁসির দাবী নিয়ে। অপর দিকে বিচারকগণ পরিণত হয়েছে শেখ হাসিনার জল্লাদে। জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের অপরাধ, তারা বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। ফলে তারা সরকারের নির্মূলের টার্গেট। সরকারের এ ইচ্ছা পূরণে দেশের পুলিশ এবং আদালত খাটছে দলীয় লাঠিয়াল রূপে। এসব সরকারি চাকর-বাকরদের কাজ, নেতার খায়েশ পুরণে বিরোধীদের মাথায় লাঠি মারা। এবং কার মাথায় লাঠি মারতে হবে -সে ইচ্ছাটি লাঠিয়ালের নিজের নয়। সেটি নির্ধারণ করছে সরকার। সে লক্ষ্যে থানা-পুলিশ ও সরকারি প্রসিকিউশন উকিলের কাজ হয়েছে রাজনৈতিক শত্রুদের বেছে বেছে কোর্টে হাজির করা। বিশেষ করে ইসলামপন্থিদের। একাত্তরে খুন,ধর্ষণ ও লুটতরাজের মিথ্যা অভিযোগে এনে তাদের ফাঁসি দেয়াই হলো সরকার নিয়ন্ত্রিত বিচার বিভাগের মূল কাজ।
বিজয় আদিম ট্রাইবালিজমের
আওয়ামী লীগের উপর বিজয়টি আদিম ট্রাইবালিজমের। ফলে নেতার মৃত্যু না হলে এখানে নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়না। নেতা নির্বাচিত হয়, রক্তের উত্তারাধিকার সূত্রে। দলের মাঝে যে ভোট হয় -সেটি নিছক আনুগত্যের মহড়া বৈ নয়। অসভ্য আদিম রীতির প্রভাবে ভোটাভুটি হলেও ট্রাইবাল নেতার নাবালুক শিশু বা পাগল পুত্রও তাতে পরাজিত হয় না। এতে বুঝা যায় ট্রাইবাল সমাজের রীতি কতটা মজবুত। এবং বুঝা যায়, সে সমাজে জ্ঞানী, গুণি ও সভ্য মানুষেরা কতটা মূল্যহীন। একারণেই শেখ হাসিনা যত অযোগ্যই হোক, আওয়ামী লীগে তার কোন প্রতিদ্বন্দী নেই। যেন দলটিতে তার চেয়ে কোন যোগ্যতর ব্যক্তি নাই। তাই নিছক নির্বাচন বা ভোটাভুটিকে গণতন্ত্র বলা যায় না। গণতন্ত্রের জন্য চাই ট্রাইবাল সংস্কৃতিমুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ -যেখানে থাকতে হয় যোগ্যতা বা গুণের খোলামেলা মূল্যায়ন। ট্রাইবাল সংস্কৃতির অসভ্যতায় যে গণতন্ত্র বাঁচে না -তারই উদাহরণ হলো আওয়ামী লীগ। দলটিতে তাই নেতা খুঁজতে হয় শেখ মুজিবের রক্তের সূত্র ধরে, যোগ্যতা এখানে বিবেচনায় আসে না। ১৯৭০’য়ের নির্বাচনে মুজিবের ন্যায় গণতন্ত্রশূণ্য এক ফ্যাসিস্টকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার এ হলো আযাব। জনগণকে তাই শুধু হিংস্র পশুদের চিনলে হয় না, চিনতে হয় মানবরূপী পশুদেরও। এবং সে পশুদের নির্মূলে নিজেদের বিনিয়োগটিও বাড়াতে হয়। নইলে আযাব ঘিরে ধরে। বাংলাদেশ তো সে ব্যর্থতারই নজির।
ট্রাইবালিজমের আরেক বিপদ, এতে নিজ গোত্রের চোর-ডাকাত, খুনি সন্ত্রাসী, লুটেরা বা ধর্ষকদের বিচার হয় না। অথচ অন্য গোত্রের নিরপরাধ মানুষদের লুন্ঠন, হত্যা বা ধর্ষণ করাটি উৎসবের বিষয় গণ্য হয়। এজন্যই শেখ হাসিনার প্রথম বার ক্ষমতায় আসাতে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতার ধর্ষণে সেঞ্চুরীর উৎসবটি তার কাছে অপরাধ গণ্য হয়নি। ফলে বিচারও হয়নি। বরং সে অপরাধীরা তার কাছে প্রিয় গণ্য হয়েছে। নিজ দলের অপরাধীদের গায়ে অন্য কেউ আঁচড় দিক বা পুলিশ রিমান্ডে নিক -শেখ হাসিনার কাছে সেটি গ্রহনযোগ্য নয়। দুর্নীতির কারণে পদ্মসেতুর ন্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক সরে যেতে বাধ্য হলো। এতে সেতু নির্মাণের বহু বছরের জন্য পিছিয়ে গেল। বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার কারণ, দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত দুই সাবেক মন্ত্রী আবুল হোসেন ও আবুল হাসানকে বাঁচাতে বিশ্বব্যাংকের তদন্তের দাবীকে হাসিনা অগ্রাহ্য করেছিল। অথচ বিশ্বব্যাংক তাদের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিচারকদের দিয়েই চেয়েছিল। ট্রাইবাল নেতাদের ন্যায় শেখ হাসিনার কাছে তার দল বা গোত্রটি বড়, দেশ নয়। তাই পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজটি পিছিয়ে যাওয়াতে দেশের ক্ষতি হলেও তার দলের ক্ষতি হয়নি। বরং দলীয় দুই নেতা বিচারের দণ্ড থেকে বেঁচে গেল।
শিখবার বিপুল উপকরণ রয়েছে ইতিহাসে। এককালে রাজারা নিজ ভাই ও নিজ পুত্রদের সাথে নিয়ে যুদ্ধে যেত। প্রতিপক্ষের হাতে তাদের অনেকে মারাও যেত। নিহত রাজার পুত্ররা যখন রাজা হতো তখন রাষ্ট্রের সমগ্র সামর্থ্য নিয়ে নিয়োজিত হতো শত্রুদেশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধকামী যুদ্ধে। তাই এক যুদ্ধে আরেক যুদ্ধের বীজ থেকে যায়। যেমন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর বীজটি রয়ে গিয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে পরাজিত জার্মানকে অপমানিত এবং চিরকাল পরাজিত রাখার সকল প্রকার উদ্যোগ নিয়েছিল বিজয়ী ফ্রান্স ও ব্রিটেন। কিন্তু তাতে পরবর্তীতে ফলাফলটি ফ্রান্স ও ব্রিটেনে জন্যও ভাল হয়নি। বরং পরিণতিটি অতি ভয়াবহ হয়েছে। যুদ্ধ শেষ হতেই জার্মানগণ আরেকটি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। সমগ্র জার্মান জাতি প্রচণ্ড প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে পড়ে। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের বহু নগরী যেমন ধ্বংস হয়, তেমনি বহু লক্ষ নাগরিক মারা যায় হিটলারের বোমা হামলায়। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে বিষয়টি ভিন্নতর হয়। বিজয়ী পক্ষ আর পূর্বের ন্যায় প্রতিশোধে নামেনি। যুদ্ধে যা ঘটেছে সেটিকে পিছনে ফেলে তারা সামনে এগিয়েছে। ফলে হাজার হাজার সামরিক অফিসার ও তাদের লক্ষ লক্ষ সৈন্যের মাঝে মাত্র কয়েকজনকে নুরেমবার্গের ট্রাইবুনালে তুলেছিল। এবং পরাজিত দেশের পুণঃনির্মাণে তারা এগিয়ে এসেছিল। জার্মান ও জাপানের ধ্বংসপ্রাপ্ত ঘরবাড়ী, শিল্পকারখানা ও রাস্তাঘাট মেরামত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেয় বিপুল অর্থ। এর ফলটি শুভ হয়। মার্কিনীদের হামলায় বহু মিলিয়ন লোকের মৃত্যূ ও বহু নগর-বন্দর ধ্বংস হওয়ার পরও জনগণ প্রতিশোধে নামেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধই হলো পাশ্চাত্য জগতে শেষ যুদ্ধ। এবং তার কারণ, যুদ্ধপরবর্তী নেতৃবৃন্দের প্রজ্ঞা ও মহানুভবতা। সে প্রজ্ঞা ও মহানুভবতার বলেই বিজয়ী এবং পরাজিত দেশগুলি সামরিক ও রাজনৈতিক অঙ্গণে পরস্পরের ঘনিষ্ট মিত্রে পরিণত হয়। কিন্তু সে প্রজ্ঞা ও মহানুভবতা কি প্রতিশোধ পরায়ন আওয়ামী লীগ নেতাদের আছে?
কতটুকু শিক্ষা নেয়া হয়েছে একাত্তরের যুদ্ধ থেকে? তখন দুটি পক্ষ ছিল। একটি পক্ষ পাকিস্তান ভাঙ্গার পক্ষে, অপরটি বিপক্ষে। এটি নিতান্তই ঈমান-আক্বিদা ও রাজনৈতিক দর্শনের বিষয়; অপরাধ জগতের বিষয় নয়। মুসলিম দেশ ভাঙ্গা যে হারাম –সেটি তো ঈমানের বিষয়। অন্যথা প্রচণ্ড বেঈমানী হয়। এজন্যই ১৯৭১’য়ে কোন ইসলামী দল, কোন আলেম, কোন পীর-মাশায়েখ এবং মাদ্রাসার কোন ছাত্র পাকিস্তান ভাঙ্গার পক্ষ নেয়নি। একাজটি ছিল ঈমানশূন্য বাঙালী ও বামপন্থি কাপালিকদের। তাছাড়া অখণ্ড এক বৃহৎ পাকিস্তানের প্রদেশ রূপে থাকার মাঝে বাঙালী মুসলিমের যে অধিক নিরাপত্তা -সেটি কি শুধু রাজাকারের ভাবনা? সে একই ভাবনা ছিল শেরে বাংলা ফজলুল হক, শহীদ সহরোয়ার্দি, খাজা নাযিমুদ্দীন ও ১৯৪৬’য়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালী মুসলিমের। অথচ সে বিশ্বাস রাখার কারণেই রাজাকারদের হত্যাযোগ্য অপরাধী বানানো হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এভাবেই শুরু হয় রাজনীতির নামে নির্মূলের রাজনীতি। হাসিনার ক্ষমতায় আসাতে সে রাজনীতি আরো তীব্রতর হয়েছে।
নির্মূলের এ রাজনীতিতে বহু মানুষ যেমন কবরে গেছে; তেমনি বহু মানুষ বেঁচে আছে মনে প্রচণ্ড জখম নিয়ে। আওয়ামী লীগের কাজ হয়েছে বিপক্ষীয়দের সে জখমে লাগাতর মরিচ লাগানো। ইতিহাস থেকে তারা কোন শিক্ষাই নেয়নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী পক্ষটি পরাজিতদের জখমে লাগাতর মরিচ লাগিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য করেছিল। আওয়ামী লীগও তেমন একটি যুদ্ধ অনিবার্য করছে বাংলাদেশে। এটি কি কোন দেশপ্রেমিকের কাজ হতে পারে? তারা ভাবে, যুদ্ধে শুধু একপক্ষেই লাশ পড়বে, এবং সেটি তাদের বিরোধী শিবিরে। শেখ হাসিনা তার পরিবারের বিয়োগান্ত পরিণতি থেকে কোন শিক্ষাই নেয়নি। মুজিবের পরিবার একাত্তরে বাঁচলেও পঁচাত্তরে রেহাই পায়নি। কেন বাঁচেনি -অন্ততঃ আওয়ামী লীগ নেতাদের তা নিয়ে গবেষণা করা উচিত। ফ্যাসিস্ট মুজিবের সবচেয়ে বড় অপরাধটি হলো, সে নির্মম ডাকাতী করেছিল জনগণের রাজনৈতিক অধিকারের উপর। অথচ হিংস্র পশুর ন্যায় সভ্য সমাজে চোর-ডাকাতও কোনদিন নিরাপত্তা পায় না। ফলে তাতে অসম্ভব হয়েছিল মুজিবের নিজের বাঁচাটিও। ফ্যাসিবাদের অসভ্য শাসন কারো জন্যই কোন কল্যাণ দেয় না। অথচ মুজিবের সে ব্যর্থ পথটি ধরেছে হাসিনা। ফলে অন্যদের রাজনীতিই শুধু নয়, দিন দিন সংকটে পড়ছে হাসিনার নিজের রাজনীতিও। জনসমর্থণ হারিয়ে পরগাছার মত সে বেঁচে আছে পুলিশ ও দলীয় গুন্ডাদের উপর ভর করে।
শত্রুর তালিকাটি বিশাল
শেখ হাসিনার কাছে তার শত্রুর তালিকাটি বিশাল। এবং দেশবাসীর মাঝে শুভাকাঙ্খীদের সংখ্যা খুবই কম। সে জানে, দিল্লির শাসকচক্র ছাড়া তার কোন প্রকৃত বন্ধু নাই। হাসিনার মনে কেন এমন ধারণা বদ্ধমূল হলো, তার কারণগুলি বহুবিধ। প্রশ্ন হলো, তার পিতামাতা ও আপনজনদের হত্যার জন্য শুধু কি কিছু সামরিক অফিসার দায়ী? সমগ্র সামরিক বাহিনী তখন কি করছিল? মুজিবের মৃত্যুতে খুশিতে যারা ঢাকার রাস্তায় আনন্দ-মিছিল করলো এবং মিষ্টি খেল -সে সাধারণ জনগণের কথাই বা হাসিনা ভূলে যায় কি করে? তার কাছে অপরাধী তো সে জনগণও যারা সে হত্যার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেনি। অপরাধী তো আব্দুল মালেক উকিলের মত সেসব আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দও যারা মুজিবের মৃত্যুতে মহাখুশিতে বলেছিল,“ফিরাউনের মৃত্যু হয়েছে।” তার ক্ষোভ তো আওয়ামী লীগের সেসব নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধেও যারা তাঁর পিতার রক্তঝরা লাশকে সিঁড়ির উপর ফেলে খোন্দকার মোশতাকের মন্ত্রীসভায় যোগ দিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করেছিল। হাসিনার ক্ষোভ, সে সব আওয়ামী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও যারা তাকে বাদ দিয়ে আব্দুল মালেক উকিলকে দলের সভাপতি বানিয়েছিল। হাসিনার প্রত্যাশা, সমগ্র জাতি তাঁর পিতাকে সর্বাধিক সম্মান দেখাবে। অন্য কোন ব্যক্তি তাঁর পিতার চেয়ে বেশী সম্মান পাবে -সেটি তার আছে অসহ্য। অথচ সে সম্মান ও স্বীকৃতি শেখ মুজিব তার জীবদ্দশাতেই পায়নি। জনগণকে বশে আসতে মুজিবকে রক্ষিবাহিয়ে নামাতে হয়েছে। বামপন্থি নেতাগণ তো মুজিবের পিঠের চামড়া দিয়ে ঢোল বানাতে চেয়েছিল। এমন অপমানজনক কথা কি আইয়ুব খান বা ইয়াহিয়া খানকেও শুনতে হয়েছিল? আপনজনদের মৃত্যু বেদনাদায়ক। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীদের যে বিশ্বাসঘাতকতা -সেটিও কি কম বেদনাদায়ক?
মুজিব পাকিস্তান ধ্বংসের জন্য বছরের পর বছর কাজ করেছে। আগরতলা ষড়যন্ত্রও করেছে ভারতের চর রূপে। পাকিস্তান সরকারের এসব অজনা ছিল না। কিন্তু এরপরও কি মুজিবের গায়ে তারা কি একটি আঁচড়ও দিয়েছে? আঁচড় দিয়েছে কি মুজিব পরিবারের অন্য কোন সদস্যের বিরুদ্ধে? বরং একাত্তরের যুদ্ধকালীন ৯ মাস কালে মুজিব পরিবার ও গর্ভাবতী শেখ হাসিনা পাকিস্তান আর্মি থেকে নিয়মিত সেবা পেয়েছে। মাসোহারাও পেয়েছে। অথচ সে মুজিবকে নিহত হতে হলো বাঙালীদের হাতে? হাসিনার অভিযোগ, মুজিবকে ডিঙ্গিয়ে অনেকে ভাষানীকে মাথায় তুলেছে। কেউবা মাথায় তুলেছে জিয়উর রহমানকে। কেউবা প্রফেসর মহম্মদ ইউনুসকে। তার পিতার হত্যাদিবস ১৫ই আগষ্টের দিনে বহুমানুষ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জন্ম দিবস রূপে উৎসব করে। এসব সহ্য করার সামর্থ্য কি শেখ হাসিনার আছে? তার মনে প্রচণ্ড ক্রোধ এজন্যই জনগণের বিরুদ্ধে। ফলে প্রতিশোধ নিচ্ছে জনগণ থেকেও। ফলে জনগণ চুরি-ডাকাতি, গুম-খুন ও ধর্ষণের শিকার হলে -তাতে হাসিনা মনের আনন্দে যে ডুগডুগি বাজাবে -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? হাসিনার কাছে একমাত্র আপনজন হলো দিল্লীর শাসকচত্রু। মুজিবের মৃত্যুর পর একমাত্র ভারতই তাকে আশ্রয়, প্রশ্রয় ও পরিচর্যা দিয়েছে। কারো কোলে বড় হওয়ার মধ্যে একটি দায়বদ্ধতা আছে। হাসিনার রাজনীতির মূল চরিত্রটি তখন থেকেই নির্ধারিত হয়ে গেছে। সেটি যেমন ইসলামপন্থিদের নির্মূল, তেমনি ভারতের প্রতি পরিপূর্ণ দাসত্বের।
রক্তে প্রতিশোধের নেশা
প্রতিশোধের নেশা মানুষকে পশুর চেয়েও হিংস্র করে। মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী রক্ত ঝরেছে প্রতিশোধ-পরায়ন মানুষদের হাতে। প্রতিশোধ-পরায়ন মানুষের কাছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের ন্যায় নিষ্ঠুরতাও উৎসব রূপে গণ্য হয়। প্রতিশোধের নেশাতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের উপর দুটি আনবিক বোমা ফেলেছিল। নিউয়র্কের টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর মার্কিন সৈন্যরা ধ্বংস করেছে আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ারের বহু নগর-বন্দর ও জনপদ। এমন প্রতিশোধ স্পৃহা নিয়ে মার্কিনীরা ইরাকী বন্দিদের উলঙ্গ করে তাদের দিয়ে পিরামিড বানিয়েছে। ভারত একই নৃশংসতা নিয়ে হত্যা, ধ্বংস ও ধর্ষণে নেমেছে কাশ্মীরে। সেরূপ নৃশংস প্রতিশোধ-পরায়নতা ধরা পড়ে শেখ হাসিনার রাজনীতিতেও। নির্মূলের যে রাজনীতি মুজিব শুরু করেছিল হাসিনা সেটিকে আরো তীব্রতর করেছে। একাত্তরের নয় মাসে -বাঙালী ও অবাঙালী –উভয়েই হিংস্রতার শিকার হয়েছে। সে আগুনে বহুলক্ষ বিহারী ঘরবাড়ি,দোকানপাঠ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। বহু বিহারী রমনি ধর্ষিতাও হয়েছে। এখন বাঙালী-অবাঙালী সংঘাত শেষ হলেও শুরু হয়েছে বাঙালীদের মাঝে আত্মঘাতি সংঘাত। শেখ মুজিব কারারুদ্ধ হলেও নিজের পিতা-মাতা কারো হাতে হারাননি। ভাইবোন এবং সন্তানও হারায়নি। ফলে তার উম্মাদনাটি শেখ হাসিনার মত এতটা প্রকট ছিল না। ফলে একাত্তরে যারা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানোর উদ্যোগ নেয়নি। কিন্তু পিতা-মাতা-ভাই-ভাবী হারা হাসিনা প্রতিপক্ষকে ফাঁসিতে ঝুলাতে চায়। স্যাডিজমের এ হলো প্রকট লক্ষণ।
বিগত সংসদ নির্বাচনগুলিতে যে সত্যটি প্রকাশ পেয়েছে তা হলো, আওয়ামী লীগের প্রাপ্তভোটের পরিমাণ মোট ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশের বেশী নয়। অর্থাৎ দেশে সংখ্যাগরিষ্ট জনগণ আওয়ামী লীগের সাথে নাই। শেখ হাসিনার ক্ষোভ কি তাতে কম? দেশবাসীর বিরুদ্ধে হাসিনার আক্রোশের বড় কারণ হলো এটি। যে দেশের প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিল তার পিতা ও তার দল আওয়ামী লীগ -তার বিরুদ্ধে জনগণের এরূপ অবস্থান হাসিনার কাছে কি সহনীয়? হাসিনার কাছে সেটি গণ্য হচ্ছে তার পিতার বিরুদ্ধে গাদ্দারি রূপে। ফলে জনগণের বিরুদ্ধে প্রতিশোধে হাসিনা নৃশংস হবে -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? হচ্ছে তো সেটিই। দেশের মানুষ আজ পথে ঘাটে লাশ হচ্ছে, নারীরা ধর্ষিতা হচ্ছে, মানুষ গুম ও খুন হচ্ছে –এজন্যই হাসিনার তাতে ভ্রুক্ষেপ নাই। অপরাধীদের ধরা নিয়েও তেমন আগ্রহ নাই। বরং সমগ্র সামর্থ্য দিয়ে পুলিশ ও র্যাব নামিয়েছে তাদের শাস্তি দিতে -যারা তার রাজনীতির বিরোধী।
মুক্তি সহজে মিলছে না
কোন দেশই সুনামী বা মহামারিতে ধ্বংস হয় না। বরং ধ্বংস হয় আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংঘাতে। বাংলাদেশ বিপদ বেড়েছে এজন্য যে, রাজনীতির ময়দানে চলছে প্রচণ্ড সংঘাত। বাংলাদেশের শত্রুপক্ষ তো সেটিই চায়। ভারত চায়, বাংলাদেশ দ্রুত একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হোক। একটি দেশকে দুর্বল ও পদানত রাখার এটিই তো মোক্ষম উপায়। ভারতের সে লক্ষ্য পূরণে শেখ মুজিব দেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়েছিল। অর্থনৈতিক মেরুদ্ণ্ড গুড়িয়ে সে দেশটিকে সে ভিক্ষার ঝুলিতে পরিণত করেছিল। তার হটাৎ মৃত্যুতে দেশ সে যাত্রায় বেঁচে যায়। কিন্তু ভারত তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুৎ হয়নি। দেশধ্বংসী সংঘাতকে আরো তীব্রতর করার দায়ভারটি চাপিয়েছে এবার হাসিনার উপর। সে লক্ষ্যেই মুজিবের মৃত্যুর পর ভারতের রাজধানীতে প্রতিপালিত হাসিনাকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ভারতের শাসক মহল জনগণের ভোটের তোয়াক্কা করে না, তাই বেছে নিয়েছে ভোট ডাকাতির পথ। তারা নির্ভর করে নিজেদের সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তির উপর। ভারতের কারণেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
কথা হলো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের যে দখলদারি -সেটির শুরু তো আজ নয়। এটিই তো বাঙালীর একাত্তরের প্রকৃত অর্জন। ভারতীয় স্বার্থের গোলামেরা শিকল পড়া কুকুরের ন্যায় সেটিকেই পরম স্বাধীনতা বলে এবং প্রভুর পা চাটে। এবং বিপুল ধুমধামে ১৬ই ডিসেম্বরে ভারতীয় বিজয়কে নিজেদের বিজয় রূপে উৎসব করে। শেখ হাসিনা ও তার সহচরদের কাছে ভারতের এ দখলদারি তো পূজনীয় বিষয়। ভারতীয় দখলদারির বিরুদ্ধে যে কোন প্রতিবাদকে তারা গাদ্দারি বলে। আবরার ফাহাদের ন্যায় প্রতিবাদকারিকে লাশেও পরিণত করে। হাসিনাকে হটানোর অর্থ তাই বাংলাদেশের মাটি থেকে ভারতকে হটানো। হাসিনা জানে, সেটি ভারত কখনোই হতে দিবে না। কারণ ভারতের কাছে এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাটেজিক বিষয়। এখানে আপোষ চলে না। ভারত সেটি গোপনও রাখেনি। শেখ মুজিব ও তাজুদ্দীন সেটি জেনেই ভারতীয় গোলামীর রশিটি গলায় পেঁচিয়ে নিয়েছিল। ভারত চায়, বাংলাদেশীদের বাঁচতে হবে ভারতীয় আধিপত্যকে মেনে নিয়েই। একাত্তরের ন্যায় ভারত যে তার দলের জন্য আরেকটি যুদ্ধ লড়ে দিবে –সেটিও হাসিনা জানে। সেটি শুধু হাসিনার স্বার্থে নয়,বরং ভারতের নিজের স্বার্থেও। তাই জনসমর্থণ বিলুপ্ত হলেও হাসিনার দাপট কমছে না। স্বাধীনতার লড়াই তাই কিছু মিটিং-মিছিলে শেষ হবার নয়। এ লড়াই দীর্ঘ ও রক্তত্ব জিহাদ হতে বাধ্য। কিন্তু বাংলাদেশে যারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি -তাদের সে লড়াইয়ে প্রস্তুতি কতটুকু? ১ম সংস্করণ ১০/০২/১৩; ২য় সংস্করণ ২৯/১০/২০২০।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018