অশিক্ষা ও কুশিক্ষার নাশকতা – প্রথম পর্ব
- Posted by ফিরোজ মাহবুব কামাল
- Posted on December 4, 2018
- বাংলাদেশ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি
- No Comments.
শিক্ষার কুফল –
মানব জীবনের মূল সাফল্যটি স্রেফ মনুষ্য প্রাণী রূপে বাঁচায় নয়। সেটি পরিপূর্ণ ঈমানদার রূপে বাঁচায়। আর ঈমানের পুষ্টি কখনোই খাবারের প্লেটে, সম্পদে বা ঔষধে মেলে না। সেটি আসে পবিত্র কোরআনের জ্ঞানে। ফলে কোরআনের জ্ঞানের শূন্যতা নিয়ে যে শিক্ষা তার কুফলটি অতি ভয়ংকর। এমন শিক্ষাই মূলতঃ কুশিক্ষা। এমন কুশিক্ষার ফলেই মানব শিশু অতি হিংস্র ও ইতর দুর্বৃত্তে পরিণত হয়। সে কুশিক্ষা পরকালে জাহান্নামের আগুনেও হাজির করে। মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বড় ক্ষতিগুলো কোন কালেই হিংস্র পশু, রোগজীবাণু, ঘুর্ণিঝড়, ভূমিকম্প বা সুনামীর কারণে হয়নি। সে বীভৎস বর্বরতাগুলো ঘটেছে এমন সব দুর্বৃত্তদের হাতে যারা বেড়ে উঠেছে অশিক্ষা ও কুশিক্ষার মধ্য দিয়ে। তাই মানব সমাজে সবচেয়ে বড় নেক কর্মটি অর্থদান, খাদ্যদান বা চিকিৎসা-দান নয়, সেটি সুশিক্ষা-দান। এবং সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ কর্মটি হলো কুশিক্ষা-দান। কুশিক্ষার কারণে মানব সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়ে যায়। কুশিক্ষিত সে ইতর মানুষটি মহান আল্লাহতায়ালার খলিফা হওয়ার বদলে শয়তানের খলিফায় পরিণত হয়। মুসলিম রূপে বেড়ে উঠা দূরে থাক, সাধারণ মানুষ রূপে বেড়ে উঠাও তার পক্ষে অসম্ভব হয়। কুশিক্ষা এভাবেই মানব জীবনে সবচেয়ে বড় নাশকতাটি ঘটায়। এমন ব্যক্তির দেহের পুষ্টিতে নাশকতা বাড়ে ইসলামের বিরুদ্ধে। অপর দিকে শত কোটি টাকা দানেও কাউকে জাহান্নামের আগুণ থেকে বাঁচানো যায় না। দানের অর্থ গুনাহের কাজে বিনিয়োগ করে সে ব্যক্তি বরং জাহান্নামের বাসিন্দা হতে পারে। এজন্যই মহান আল্লাহর সূন্নত, তিনি যখন কারো সবচেয়ে বড় কল্যানটি করেন, তাকে পবিত্র কোরআনের জ্ঞান দান করেন।
কোরআনী জ্ঞান ব্যক্তিকে যেমন মানব-সৃষ্টির মূল রহস্যটি জানায়, তেমনি জানায় মানব-জীবনের মূল মিশনটি। এভাবে সে জ্ঞান যেমন প্রকৃত মানব রূপে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে, তেমনি পদে পদে জান্নাতের পথও দেখায়। সে জ্ঞানের বরকতেই মানুষ জাহান্নামের পথে ধাবিত হওয়ার মহাবিপদ থেকে বাঁচে। তখন ব্যক্তি পায় মহান আল্লাহতায়ালার প্রিয় বান্দা রূপে বেড়ে উঠার সামর্থ্য। এবং সে জ্ঞানের অভাবে অজানা থেকে যায় জীবনের মূল মিশন, ইবাদতের সঠিক বিধান, শরিয়তী আইন, ন্যায়-অন্য়ায়ের সংজ্ঞা এবং জান্নাত-জাহান্নাম –এরূপ বহু বিষয়। তখন জীবন ভরে উঠে অজ্ঞতার অন্ধকারে ও ব্যর্থতায়। অপরদিকে ওহীর জ্ঞানে যারা সুশিক্ষিত হয় তারা বেড়ে উঠে মহান আল্লাহতায়ালা দায়িত্ববান খলিফা রূপে। শ্রেষ্ঠ এ মানুষদের নিয়ে স্বয়ং মহান আল্লাহতায়ালাও ফেরেশতাদের মাঝে গর্ব করেন। সমগ্র মানব জাতির কল্যাণে মহান আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ দানটি তাই সোনা-রূপা, তেল-গ্যাস বা অঢেল সম্পদ নয়; সেটি হলো আল-কোরআনের জ্ঞান। সে জ্ঞানের বলেই প্রাথমিক যুগের মুসলিমগণ বিশ্বশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন; এবং গড়েছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা।
যে শিক্ষায় ওহীর জ্ঞান নাই, সেখানে সুশিক্ষা ও সুসভ্যতা গড়ার উপকরণও নাই। সেটিই মূলতঃ কুশিক্ষা। সে শিক্ষায় সৃষ্টি হয় না জান্নাতের পথ চেনা ও সে পথে চলার সামর্থ্য। মানব জাতির সকল ব্যর্থতার মূল কারণ হলো এ কুশিক্ষা। এতে মানব শিশু বেড়ে উঠে হিংস্র পশুর চেয়ে বহুগুণ হিংস্র জীব রূপে। পশুর হাতে পারমানবিক বোমা, রাসায়নিক বোমা, ক্লাস্টার বোমা, মিজাইল, ও ড্রোন থাকে না। কিন্তু মানব রূপী এ হিংস্র জীবদের থাকে। তাদের হাতে রক্ত ঝরে কোটি কোটি মানুষের। এবং বিধ্বস্ত হয় শত শত নগর-বন্দর। তখন উদ্বাস্তু হয় লক্ষ লক্ষ মানুষ। সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, আরাকান, কাশ্মিরসহ পৃথিবীর নানা দেশে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে তো এসব হিংস্র জীবদের হাতেই। মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা তাই কৃষি ও শিল্প খাতে নয়, সেটি শিক্ষা খাতে। শিক্ষা খাতের এ ব্যর্থতার কারণেই মানব ব্যর্থ হচ্ছে উচ্চতর মানবিক গুণ নিয়ে বেড়ে উঠতে। সে কুশিক্ষার কারণেই সৃষ্টি হয়েছে পূজিবাদ, উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, জাতীয়তাবাদ, কম্যুনিজম, বর্ণবাদ, বর্ণবাদী নির্মূলীকরণ, বিশ্বযুদ্ধ ও পারমানবিক অস্ত্রের ন্যায় নানাবিধ ঘাতক মতবাদ ও নাশকতার উপকরণ।
সুশিক্ষার প্রধান উপকরণটি হলো, ওহীর জ্ঞান। সে জ্ঞান ভিন্ন মুসলিম হওয়া অসম্ভব। ওহীর জ্ঞানার্জন এজন্যই সর্বপ্রথম ফরজ ঘোষিত হয়েছে। তাই “ইকরা” তথা পড়ো এবং পবিত্র কোরআন থেকে জ্ঞানার্জন করো -সেটি মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে নবীজী (সাঃ)র উপর নাযিলকৃত প্রথম নির্দেশ। নামায-রোযা, হজ-যাকাত ফরজ হয়েছে প্রায় এক যুগ পর। ব্যক্তির ঈমান মজবুত হয় এবং ইবাদত যথার্থ হয় তো ওহীর জ্ঞানে। অথচ আজকের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতাটি হলো পবিত্র কোরআনের জ্ঞানার্জনে। তারা যেন মুসলিম রূপে বাঁচতে চায় ও মহান আল্লাহতায়ালাকে খুশি করতে চায় তাঁর দেয়া গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশাবলি না পড়ে ও না বুঝেই!
অক্ষরজ্ঞান, লিখনির জ্ঞান বা গণিতের জ্ঞানে নিরক্ষতা দূর হয় বটে, তবে তাতে অশিক্ষা ও কুশিক্ষা দূর হয় না। বরং অশিক্ষা ও কুশিক্ষার হিংস্র নাশকতা তাতে আরো ভয়ংকর ও রক্তাক্ত হয়। দুইটি বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে যারা সাড়ে সাত কোটি মানুষকে হত্যা করলো, ধ্বংস করলো হাজার হাজার নগর-বন্দর এবং ধুলিস্যাৎ করলো বহু কোটি ঘর-বাড়ি ও কল-কারখানা -তাদের কেউ কি নিরক্ষর ছিল? এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিশাল ভু-ভাগকে যেসব ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদীগণ জবর-দখল করলো, লুন্ঠন করলো এবং সেসব দেশের বহু কোটি আদিবাসীকে হত্যা করলো বা দাসরূপে কেনাবেচা করলো –তাদের কেউ কি নিরক্ষর ছিল? আজও যেসব আগ্রাসীদের হাতে ফিলিস্তিন, ইরাক, সিরিয়া, কাশ্মির, আরাকান ও আফগানিস্তানের বহু লক্ষ মানুষ নির্যাতিত ও নিহত হচ্ছে এবং হাজার হাজার নারী ধর্ষিতা হচ্ছে তাদের কেউ কি নিরক্ষর? হিটলারের মত নৃশংস স্বৈরাচারি বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ন্যায় বর্ণবাদি ও মিথ্যাবাদী দুর্বৃত্তকে যারা নির্বাচনে বিজয়ী করেছে তারাও কি নিরক্ষর? শুধু তাই নয়। এমন কি বাংলাদেশের ন্যায় একটি মুসলিম দেশকে দূর্নীতিতে যারা বিশ্বে ৫ বার প্রথম স্থানে পৌঁছে দিল এবং মৌলিক মানবিক অধিকার হনন করে বাকশালী স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা দিল -তারাও কি দেশটির নিরক্ষর সাধারণ মানুষ? বরং দুর্বৃত্তির এ নায়কগণ তো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী নেতানেত্রী, পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মচারি। নিরক্ষরতা দূর হলেও অশিক্ষা ও কুশিক্ষার নাশকতা যে দূর হয় না -এটি তো তারই প্রমাণ। অশিক্ষা ও কুশিক্ষার কারণে মানুষ শুধু পশু নয়, পশুর চেয়েও ভয়ংকর জীবে পরিণত হয় –সে প্রমাণ তো অসংখ্য। সে ঐতিহাসিক সত্য নিয়ে মহান আল্লাহতায়ালার নিজের ঘোষণাটি হলোঃ “উলা’য়িকা কা’আল আনয়াম, বাল হুম আদাল”। অর্থঃ তারাই হলো পশু, বরং পশুদের চেয়েও নিকৃষ্ট।
শয়তানি শক্তির নাশকতা
কোন দেশ যখন মানবরূপী হিংস্র জীবদের হাতে অধিকৃত হয় তখন ভয়ংকর বিপদ ঘনিয়ে আসে গণ-জীবনে। সে দেশে মহান আল্লাহতায়ালার নাযিলকৃত ওহীর জ্ঞানচর্চা যেমন নিষিদ্ধ হয়, তেমনি শরিয়তি আইনের বদলে প্রতিষ্ঠা পায় কুফরি আইন। তখন শুধু বর্বর স্বৈরাচার, নৃশংস নির্যাতন, বিনা বিচারে হত্যা, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, দেশের রাজস্ব লুন্ঠন ও মৌলিক অধিকার হননই এজেন্ডায় পরিণত হয় না, বরং সর্বাত্মক চেষ্টা হয় সত্যের বিলুপ্তি ও সমগ্র জনগণকে দ্রুত জাহান্নামের দিকে নেয়ায়। অতীতে সেরূপ দুর্বৃত্তিতে নেমেছিল নমরুদ ও ফিরাউনের ন্যায় স্বৈরাচারি শাসকবর্গ। যুগে যুগে এরাই নবী-রাসূলদের মিশনের প্রবল প্রতিপক্ষ রূপে দাঁড়িয়েছে। এসব নরপশুদের কারণে হযরত ইব্রাহীম (আঃ), হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)র মত মানব ইতিহাসের অতি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদেরও নিজ জন্ম ভূমি ছাড়তে হয়েছে। ইসলামের দুশমনদের হাতে কোন দেশ অধিকৃত হওয়ার মূল বিপদ তো এটিই। যেখানে শরিয়তের প্রতিষ্ঠা নাই এবং শিক্ষাঙ্গণে কোরআনী জ্ঞানের চর্চা নাই, বুঝতে হবে সে দেশের উপর দখলদারিটি মূলতঃ শয়তানী শক্তির। মহান আল্লাহতায়ালা মানব জাতিকে শয়তানী শক্তির হাতে অধিকৃতির এ মহাবিপদ থেকে মুক্তি দিতে চান। সেটি ঈমানদারদের হাত দিয়ে। এজন্যই ঈমানদারদের প্রতি মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশ তাঁর আনসার তথা সাহায্যকারি হওয়ার। সুরা সাফ’য়ের ১৪ নম্বর আয়াতে তাই বলা হয়েছেঃ “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহতায়ালার সাহায্যকারি হও।” সুরা সাফ’য়ের ১০-১১ আয়াতে তাদের জন্য একটি ব্যবসার কথাও বলা হয়েছে -যা মুক্তি দেয় জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে। বলা হয়েছেঃ “হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি এমন এক ব্যবসার কথা বলবো -যা মুক্তি দিবে কঠিন আযাব থেকে? সেটি হলো, তোমরা ঈমান আনো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করো তোমাদের সম্পদ ও জান দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যানকর যদি তোমরা বুঝতে। “তাই মানব জীবনে শ্রেষ্ঠ নেক কর্মটি সন্যাসীদের ন্যায় ধ্যানে বসা নয়, বরং জাহান্নামের আগুনে নেয়ার শয়তানী প্রকল্পের নির্মূলে যুদ্ধে নামা। ইসলামে এটিই পবিত্রতম জিহাদ। একমাত্র এ পথেই সুশিক্ষার প্রতিষ্ঠা ঘটে, এবং মুক্তি ঘটে জাহান্নামের পথ থেকে।
যুগে যুগে মানবরূপী হিংস্র জীবগণ শুধু যে মন্দির বা গির্জা গড়ায় পরিচর্যা দিয়েছে -তা নয়; বরং অসম্ভব করে তুলেছে সুশিক্ষার বিস্তারকে। তারা জানে, শিক্ষার সামর্থ্য বিস্ময়কর। এটি যে শুধু জান্নাতের পথ দেখায় –তা ¬¬¬¬¬নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি অতি ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হতে পারে ইসলাম দিকে দূরে সরানোর কাজে -তথা জাহান্নামের পথে নেয়ায়। তাই প্রতিদেশে ইসলামের বিপক্ষ শক্তির এজেন্ডা হলো, কোরআনী জ্ঞান-ভিত্তিক সুশিক্ষাকে বিলুপ্ত বা নিয়ন্ত্রন করা এবং ওহীর জ্ঞান বিরোধী কুশিক্ষার প্রতিষ্ঠা দেয়া। কম্যুনিস্ট শাসিত দেশগুলিতে এজন্যই মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোকে ঘোড়ার আস্তাবল বানানো হয়েছিল। কুশিক্ষার দেশে তাই যুদ্ধাস্ত্র, কৃষি, শিল্প ও বিজ্ঞানে উন্নয়ন হলেও সে দেশগুলিতে কঠিন হয়ে পড়ে মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশিত পথে বাঁচা। সমগ্র রাষ্ট্রীয় শক্তি ও তার বিশাল অবকাঠামো তখন ব্যবহৃত হয় মিথ্যার প্রসার বাড়াতে ও সত্যের নির্মূলে। মিথ্যা যখন প্রবল ভাবে বিজয়ী হয়, ফিরাউনের ন্যায় দুর্বৃত্তগণও তখন ভগবান রূপে প্রতিষ্ঠা পায়। গণহত্যার নায়কগণও তখন দেশবাসীর নেতা, পিতা ও বন্ধু রূপে প্রতিষ্ঠা হয়।
মহান আল্লাহতায়ালার দ্বীন প্রতিষ্ঠা না পেলে মিথ্যাসেবীদের শক্তি দেশ জুড়ে ভয়ানক নাশকতা ঘটায়। তখন দেশ পরিণত হয় জনগণকে জাহান্নামে পৌছানোর বাহনে। হিংস্র পশু, মহামারি, সুনামী বা ভূমিকম্প সেটি করে না। তাই ইসলামে শ্রেষ্ঠতম কাজটি হিংস্র পশু হত্যা নয়, মশা-মাছি নির্মূলও নয়। বরং সেটি রাষ্ট্রের বুক থেকে মানবরূপী হিংস্র জীবদের নির্মূল। মহান নবীজী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবাগণ আমৃত্যু সেটিই করেছিলেন। সেটি না হলে কোরআন শিক্ষা, প্রকৃত ইসলাম নিয়ে বেড়ে উঠা, সিরাতুল মুস্তাকীমে চলা ও ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা অসম্ভব হতো। মুসলিমগণ তাতে ব্যর্থ হতো ইসলামী সভ্যতার নির্মাণে –যেমনটি আজ হচ্ছে। ইসলামের বিপক্ষ শক্তির নির্মূলের কাজটি না হলে রাষ্ট্র জুড়ে যা প্রতিষ্ঠা পায় সেটি হলো শয়তানী শক্তির এজেন্ডা। ইসলামের বিপক্ষ শক্তি তখন বিজয়ী শক্তি রূপে আবির্ভূত হয়। তাতে বিলুপ্ত হয় মহান আল্লাহর দেয়া শরিয়তি বিধান; এবং নিষিদ্ধ হয় পবিত্র কোরআনের জ্ঞান বিতরণ। কোন ঈমানদার ব্যক্তি কি এমন অধিকৃতির মুখে নীরব বা নিরপক্ষ থাকতে পারে? মানব সভ্যতার অতি গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হলো এরূপ অধিকৃতি থেকে মুক্তি লাভের যুদ্ধ। এমন যুদ্ধ ইসলামে জিহাদ; এ জিহাদে নিহত হলে শহীদ রূপে সরাসরি প্রবেশ ঘটে জান্নাতে। কবরের আযাব, পুলসিরাত ও রোজ হাশরের কঠিন দুর্যোগ থেকে এমন শহীদদের জীবন হবে মুক্ত। এরূপ বিশাল পুরস্কার অন্য কোন নেক কর্মে নেই। অপরদিকে ইসলামের বিপক্ষ শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ ও তাদের সাথে সহযোগিতার শাস্তিটিও ভয়ানক। এবং সেটি অনন্ত কালের। সেটি শুরু দুনিয়ার জীবন থেকেই। দুশমনের অধিকৃ্তির বিরুদ্ধে জিহাদ না থাকায় মুসলিম উম্মাহ বস্তুতঃ আজ সে শাস্তিরই গ্রাসে।
বাঙালী মুসলিম জীবনে কুশিক্ষা ও ব্যর্থতা
বাঙালী মুসলিমের জীবনে আজ যেরূপ শরিয়তের বিলুপ্তি ও ইসলামের বিপক্ষ শক্তির জয়জয়াকার –সেটিও হঠাৎ সৃষ্টি হয়নি। এটি হলো ১৭৫৭ সালে কাফের শক্তির হাতে অধিকৃত ও গোলাম হওয়ারই ধারাবাহিকতা। পাপ এখন এক স্থায়ী আযাবে রূপ নিয়েছে। বাংলার মাটিতে মুসলিমদের এ দুর্দশা ও ইসলামের এ পরাজয়ের পিছনে রয়েছে বাঙালী মুসলিমের দায়িত্ব পালনে প্রচণ্ড ব্যর্থতা। গাদ্দারীর অপরাধ ঘটেছে মহান আল্লাহতায়ালার কোরআনি নির্দেশের বিরুদ্ধে। মুসলিম জীবনে অনিবার্য দায়ভার হলো, কাফের শক্তির আগ্রাসনের মুখে নিজ দেশকে প্রতিরক্ষা দেয়া। নইলে অসম্ভব হয় প্রকৃত ইসলাম-পালন ও প্রকৃত মুসলিম রূপে বেড়ে উঠা। দখলদার কাফের শক্তি মুসলিম ভূমিতে নামায-রোযা নিষিদ্ধ না করলেও বিলুপ্ত করে কোরআনের জ্ঞান-চর্চা। বিদ্যাশিক্ষার নামে তারা চালু করে কুশিক্ষা এবং ইসলামী জ্ঞানের শিকড় কাটার প্রকল্প। এভাবে তারা অসম্ভব করে ঈমানে পুষ্টিলাভ ও ইসলাম নিয়ে বাঁচা। অধিকৃত দেশের পরাধীন মুসলিমগণ তখন অন্য মুসলিমের কল্যাণে আর কি ভূমিকা রাখবে? তারা ব্যর্থ হয় এমন কি নিজেদের পার্থিব ও পরকালীন কল্যাণে অবদান রাখতে। এজন্যই নামায-রোযা, হজ-যাকাতের পাশাপাশি ইসলামে সর্বশ্রেষ্ঠ ফরজ ইবাদতটি হলো, দুশমনের হামলার মুখে মুসলিম ভূমিকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরক্ষা দেয়া। নবীজী (সাঃ)র হাদীসঃ দেশের সীমান্তে এক মুহুর্তের পাহারাদারীর সওয়াব সারা রাত নফল ইবাদতের চেয়ে অধীক।
মু’মিনের সর্বক্ষণের প্রস্তুতিটি তাই শুধু ৫ ওয়াক্ত নামাযের নয়, বরং হানাদার দুশমনদের বিরুদ্ধে জিহাদেরও। সেটিই মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশ। তাই ঈমানদারকে শুধু নামাযী হলে চলে না, আমৃত্যু মুজাহিদও হতে হয়। নইলে মুসলিম দেশের স্বাধীনতা যেমন বাঁচে না, তেমনি ঈমান বাঁচেনা মুসলিম সন্তানদের। পবিত্র কোরআনের ঘোষণাঃ “তোমরা সর্বশক্তি দিয়ে প্রস্তুত হও তাদের (দুশমনদের) বিরুদ্ধে। এবং (যুদ্ধের জন্য) ঘোড়ার লাগামকে শক্তভাবে বাঁধো। এবং ভীত-সন্ত্রস্ত করো তোমাদের এবং আল্লাহর দুশমনদের।”- (সুরা আনফাল, আয়াত ৬০)। তাই দুশমনদের সৃষ্ট সন্ত্রাসে সন্ত্রস্ত হওয়া ঈমানদারের কাজ নয়। বরং ঈমানদার সন্ত্রস্ত করে দুশমনদের। এমন এক চেতনার কারণেই নবীজী (সাঃ)র এমন কোন সাহাবী ছিলেন না যার জীবনে জিহাদের প্রস্তুতি ছিল না। দুশমনের পক্ষ থেকে যখনই হামলা হয়েছে, সাথে সাথে তারা রণাঙ্গনে হাজির হয়েছেন। শতকরা ৭০ ভাগের বেশী সাহাবী শহীদও হয়েছেন। কোন ভীরুতা বা কাপুষতা তাদের মাঝে দেখা দেয়নি। অথচ সে সময় মুসলিমদের সংখ্যা বাংলাদেশের একটি জেলার সমানও ছিল না। বিশ্বশক্তি রূপে মুসলিমদের উত্থানের মূলে ছিল তাদের সে জিহাদী চেতনা ও কোরবানী। সেদিন ঈমানদারদের জান ও মালের কোরবানী মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সাহায্য নামিয়ে এনেছিল। তেমনি এক প্রস্তুতি ও কোরবানীর কারণে সংখ্যায় ক্ষুদ্র হয়েও আফগান মুসলিমগণ ব্রিটিশদের দুই বার পরাজিত করেছে। ব্রিটিশদের তখন ছিল বিশ্বশক্তির মর্যাদা। বিগত শতাব্দীর আশির দশকে পরাজিত করেছে আরেক বিশ্বশক্তি সোভিয়েত রাশিয়াকে। এবং আজ পরাজিত করছে মার্কিনী যুক্তরাষ্ট্রকে। আফগানদের এরূপ বার বার বিজয়ের পিছনে সে দেশের সরকার ও সরকারি সেনাবাহিনী ছিল না, বরং পুরা কৃতিত্বটি সেদেশের মুসলিম জনগণের।
আযাবের গ্রাসে
অশিক্ষা ও কুশিক্ষা থেকেই জন্ম নেয় অজ্ঞতা তথা জাহিলিয়াত। জাহিলিয়াত থেকে জন্ম নেয় পথভ্রষ্টতা। এবং পথভ্রষ্টদের উপর প্রতিশ্রুত আযাব শুধু পরকালেই আসে না; আসে এ পার্থিব জীবনেও। আযাব আসে যেমন ঘুর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, সুনামী, মহামারি, দুর্ভিক্ষ ও প্লাবনের বেশে, তেমনি আসে দুশমন শক্তির হাতে অধিকৃতি, পরাধীনতা, বোমা বর্ষন, গণহত্যা, ধ্বংস ও নানা রূপ নির্যাতনের বেশে। সেরূপ আযাব অতীতে যেমন বার বার এসেছে, তেমনি এখনো আসছে। সে আযাব যেন আজকের মুসলিমদের চারি দিক দিয়ে ঘিরে ধরেছে। আযাবের ন্যায় পথভ্রষ্টতার আলামতগুলিও অদৃশ্য বা বায়বীয় কিছু নয়, খালি চোখেও সেগুলি দেখা যায়। সে পথভ্রষ্টতা হলো মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, শরিয়ত, শুরা, হুদুদ, খেলাফত ও কোরআনী জ্ঞান ছাড়াই জীবন কাটানো এবং সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করা।
তবে আযাবকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলাটাই ইসলামী চেতনাশূন্যদের রীতি। তাদের সেক্য়ুলার দর্শনে আযাব বলে কিছু নাই। তাই আযাবকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে মহান আল্লাহতায়ালার অসীম কুদরতকে অস্বীকার করা। মহান আল্লাহতায়ালার অনুমতি ছাড়া যেখানে গাছের একটা পাতাও পড়ে না, সেখানে দুর্ভিক্ষ, ভূমিকম্প, মহামারি ও ঘুর্ণিঝড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় কি করে? এগুলিকে কি আল্লাহতায়ালার রহমত বলা যায়? প্রকৃতির নিজস্ব কোন সামর্থ্য নাই। প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানই তো মহান আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি। ফলে, সেগুলি যা কিছু করে তা স্রেফ মহান আল্লাহতায়ালার ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করতে। তাই ব্যক্তির ঈমানদারি শুধু মহান আল্লাহতায়ালার উপর বিশ্বাস নয়, বরং তাঁর প্রতিটি আযাবকে আযাব রূপে দেখাতেও। একমাত্র তখনই সে আযাব থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
প্রতিটি রোগ-ভোগই অসুস্থ মানুষকে ভাবিয়ে তোলে। অথচ সে ভাবনাটি মৃত মানুষের থাকে না। তেমনি আযাবের ঘটনাও ভাবিয়ে তোলে প্রতিটি সুস্থ চেতনার মানুষকে। সে ভাবনাটি না থাকাই বরং চেতনার প্রচণ্ড অসুস্থততা। এ প্রেক্ষাপটে বাঙালী মুসলিমদের নিয়ে ভাবনার বিষয় যেমন অনেক; তেমনি শিক্ষার বিষয়ও অনেক। তাদের মূল ব্যর্থতাটি প্রকৃত মুসলিম রূপে বেড়ে উঠা ও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায়। এবং সে ব্যর্থতা তাদের জীবনে হঠাৎ করে আসেনি। তারও একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে। তাই বর্তমানের এ আযাবকে বুঝত হলে অতীতের সে প্রক্ষাপটকে অবশ্যই বুঝতে হবে। কারণ, অতীতের মাঝেই তো বর্তমানের বীজ। তাই যাদের জীবনে সে ইতিহাসে পাঠ নাই, তারা ব্যর্থ হয় চলমান ব্যর্থতা ও বিপর্যয়ের কারণ বুঝতে। এবং ব্যর্থ হয় আযাব থেকে বেরুনোর পথ খুঁজে পেতে। ইতিহাস পাঠের গুরত্ব ইসলামে এজন্য়ই এতো অধীক।
মানব জীবনে দুর্যোগ আসে মূলতঃ দুটি কারণে। কখনো সেটি আসে পরিকল্পিত পরীক্ষা অংশ রূপে। সে পরীক্ষায় যারা সফলকাম হয়, মহান অআল্লাহতায়ালা তাদের জান্নাত দিয়ে পুরস্কৃত করেন। জান্নাত প্রাপ্তির জন্য তেমন একটি পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়াটি অনিবার্য। কখনো বা সে বিপর্যয় আসে পূর্বের পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার আযাব রূপে। এমন কি নবী-রাসূলদের জীবনেও এমন পরীক্ষা বার বার এসেছে। বাঙালী মুসলিমের জীবনে তেমনি একটি পরীক্ষা এবং সে পরীক্ষায় ভয়ানক ব্য়র্থতা এসেছিল ১৭৫৭ সালে। সেদিন কাফের হানদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সে দায়িত্বটি আদৌ পালিত হয়নি। সে সময় সবচেয়ে বড় অপরাধটি ঘটে হানাদার ইংরেজদের বিরুদ্ধে ফরজ জিহাদে অংশ না নেয়ায়। সেটি যেমন রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে, তেমন জনগণের কাতার থেকে।
ইংরেজদের হামলার বিরুদ্ধে দেশ বাঁচানোর দায়িত্বটি স্রেফ নবাব সিরাজুদ্দৌলার একার ছিল না, সে দায়িত্বটি ছিল বাংলার প্রতিটি নাগরিকের। তাই পলাশীর যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অপরাধটি শুধু মীর জাফরের একার নয়। বাংলার জনগণ সেদিন জিহাদ সংগঠিত না করে পরিচয় দিয়েছে প্রচণ্ড ভীরুতা ও কাপুষতার। তাছাড়া জিহাদের ন্যায় ফরজ ইবাদত পালিত না হলে মহান আল্লাহতায়ালার প্রতিশ্রুত আযাব না আসাটাই তো অস্বাভাবিক। বস্তুতঃ বাংলার বুকে সে আযাবটি এসেছিল প্রচণ্ড ভয়াবহতা নিয়েই। সেটি যেমন ১৯০ বছরের গোলামী নিয়ে, তেমন অনাহার, নির্যাতন এবং শোষণে জীবন নাশের মধ্য় দিয়ে। আজও চলছে সে আযাবের ধারাবাহিকতা। অথচ ১৭৫৭ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা আফগানিস্তানের চেয়ে কয়েকগুণ অধিক ছিল। তখন দেশে হাজার হাজার আলেম-উলামাও ছিল। ৮০ হাজারের বেশী মাদ্রাসা ছিল।
বাঙালী মুসলিমগণ ব্রিটিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে বাঁচলেও দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচেনি। এক-তৃতীয়াংশ বাঙালী ( প্রায় এক কোটি) মারা গেছে ব্রিটিশদের শোষণে সৃষ্ট ১৭৬৯ সাল থেকে ১৭৭৩ সাল অবধি চলমান দুর্ভিক্ষে। বাংলার সমগ্র ইতিহাসে এতবড় বিশাল আকারের প্রাণনাশ কোনকালেই ঘটেনি। অথচ ব্রিটিশের হাতে অধিকৃত হওয়ার আগে বাংলাই ছিল সমগ্র এশিয়ার মাঝে সবচেয়ে সম্পদশালী দেশ। খাদ্যে ছিল স্বয়ংসম্পন্ন। বস্ত্র শিল্প উৎপাদনে ছিল বিশ্বে সেরা। বাংলার বস্ত্র বিশেষ করে মসলিন তুরস্ক, মিশর, ইউরোপ, এবং চীনসহ বিশ্বের নানা দেশে যেত। সরকারের ভাণ্ডার ছিল সোনা-রূপায় পরিপূর্ণ। ইতিহাসবিদদের মতে বাংলার উপর বিজয়ের সাথে সাথে সে গচ্ছিত সম্পদ ইংল্যান্ডে নিতে ২০০টির বেশী জাহাজ বাংলার তৎকালীন রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে লন্ডন মুখি রওনা দেয়। সে লুন্ঠনের ফলে লর্ড ক্লাইভের মত ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্ণধারগণ রাতারাতি বিশ্বের ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হয়।
ডাকাতদের লুন্ঠনে অভাব ও অনাহার আসবে -সেটিই তো স্বাভাবিক। তবে পার্থক্য হলো ডাকাতগণ মানুষের ঈমানে হাত দেয় না, জ্ঞানচর্চায়ও ব্যাঘাত ঘটায় না। অথচ কাফের শক্তির হাতে দেশ অধিকৃত হলে সবচেয়ে ভয়ানক ক্ষতিটি হয় ঈমানের ভূবনে। ইংরেজ শাসকদের হাতে সে নাশকতাটি অতি নৃশংস ভাবেই ঘটেছে। রাজস্বভাণ্ডার ও জনগণের অর্থভান্ডার শূন্য করার পাশাপাশি প্রচণ্ড নাশকতা ঘটিয়েছে ইসলামি জ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে। বাংলার মুসলিম জীবনে ইসলাম থেকে আজ যে বিশাল বিচ্য়ুতি এবং সর্বত্র যে দুর্বৃত্তি তার মূলে হলো প্রায় দুই শত বছরের কাফের শক্তির অধিকৃতি। আজও সে নাশকতা অব্যাহত রয়েছে সে শিক্ষানীতিতে বেড়ে উঠা সাম্রাজ্যবাদীদের আদর্শিক খলিফাদের হাতে। সে দীর্ঘকালীন নাশকতার ফলে বাংলার বুকে যে ইসলাম বেঁচে আছে সেটি নবীজী (সাঃ)র আমলের ইসলাম নয়। বেঁচে থাকা এ ইসলামে যেমন পবিত্র কোরআনে নির্দেশিত শরিয়ত, ইসলাম, শুরা, খিলাফত নাই, তেমনি নাই জিহাদের কোন ধারণা। এভাবে
কোরআনী জ্ঞানার্জনে ব্যাঘাত ঘটাতে সমর্থ হলে ইসলামে থেকে দূরে সরাতে মুসলিম সন্তানকে মন্দিরে বা গির্জায় নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। দেশ তখন অমুসলিম দেশের ন্যায় ইসলামশূন্য হয়। কোরআনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রকল্প নিয়েই লর্ড মেকলে ভারতে শিক্ষার নামে কুশিক্ষার নীতি প্রণয়ন করেন। বাংলাদেশে আজও বেঁচে আছে ইসলামশূন্য সে শিক্ষানীতি। ইসলামের প্রতিপক্ষ রূপে আজ যারা দেশের উপর দখল জমিয়েছে তারা তো সে শিক্ষা নীতিরই ফসল। ইসলাম থেকে দূরে সরা এসব কুশিক্ষিত মানুষদের প্রতারণাটিও জঘন্য়। নিজেদের ইসলাম বিরোধী অভিসন্ধি ঢাকতে নিজেদেরকে তারা মুসলিম রূপে পরিচয় দেয়। অথচ তাদের মূল যুদ্ধটি ইসলামের বিরুদ্ধে। এদের কারণেই ইসলামের বিজয় ও শরিয়তের প্রতিষ্ঠা রুখতে বাংলাদেশের ন্যায় মুসলিম দেশগুলিতে বিদেশী কাফেরদের নামতে হচ্ছে না। সে কাজে নিজেরাই যথেষ্ট নৃশংসতার পরিচয় দিচ্ছে। সে বর্বর নৃশংসতা এবং ইসলামের বিরুদ্ধে চরম আপোষহীনতার কারণেই তারা গৃহীত হচ্ছে ইসলামের আন্তর্জাতিক কোয়ালিশনের বিশ্বস্ত পার্টনার রূপে। ৫/২/২০১৮
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- ভারতীয় ষড়যন্ত্র রুখতে হবে
- সম্প্রতি বাংলাদেশে যা দেখলাম
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018