বিবিধ ভাবনা-৭

ফিরোজ মাহবুব কামাল

১.

বাক-স্বাধীনতার অর্থ কাউকে ব্যঙ্গ করা বা গালি-গালাজের স্বাধীনতা নয়। সেটি হলে সমাজে সংঘাত ও অশান্তি অনিবার্য হয়ে উঠে। অন্যকে গালি-গালাজ করা যে কোন সভ্য সমাজে এবং যে কোন সভ্য বিচারেই অতি অসভ্য কাজ। অথচ সে অসভ্যতার প্রবল চর্চা হচ্ছে ফ্রান্সে। সে অসভ্যতাকে নোংরা আর্ট বা কার্টুনে পরিনত করা হয়েছে। এবং সেটি ব্যবহৃত হচ্ছে মহান নবীজী (সাঃ)’র চরিত্রে কালিমা লেপনের কাজে। সে অসভ্যতাকে সমর্থন দিচ্ছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। অথচ ফ্রান্সে সে দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করলে মোটা অংকের জরিমানা দিতে হয়।

অসভ্য মানুষদের সমস্যা হলো, তারা সভ্য আচরন জানে না। ফ্রান্সবাসীর চেতনায় সে অসভ্যতা যে কতটা গভীর –কার্টুন নিয়ে নোংরামী হলো তারই নজির। বিশ্বকে অশান্ত ও যুদ্ধময় করার জন্য পারমানবিক বোমা লাগে না। এমন অসভ্য  মানসিকাতাই যথেষ্ট। সে অসভ্য চেতনা নিয়েই ফান্সের সেনাবাহনী ১৫ লাখ আলজিরিয়ানকে হত্যা করেছিল। আলজিরিয়ানদের অপরাধ, তারা স্বাধীনতা চেয়েছিল। স্বাধীনতার সে যুদ্ধকে তখন সন্ত্রাস বলেছিল। আলজিরিয়ার বুকে সে অসভ্য গণহত্যা চালাতে পারমানবিক বোমার প্রয়োজন পরেনি। প্রয়োজন পড়েছিল অসভ্য মনের। সে অসভ্য মন ফ্রান্সবাসীর জীবনে আজও যে কতটা প্রবল ভাবে বেঁচে আছে -সেটি বুঝা যায় নবীজী (সাঃ)’র ন্যায় মানব সভ্যতার সর্বশ্রেষ্ঠ মানবটির বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কার্টুন নির্মান থেকে। এরূপ অসভ্যতা বিশ্বের সভ্য মানুষদের গায়ে বিশেষ করে মুসলিমদের গায়ে যে আগুন লাগাবে -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? বিক্ষুব্ধ মুসলিমদের সন্ত্রাসী বললে কি বিক্ষুব্ধ মুসলিম বিশ্ব শান্ত হবে। সে জন্য তো চাই ফ্রান্সবাসীর অসভ্য মনকে সভ্যতর করা।

২.

বিশ্বের কোথাও কোন অসভ্য বর্বরতা ঘটলে সেটির নিন্দা না করাটি আরেক অসভ্যতা। ফ্রান্সে মহান নবীজী (সা)’কে নিয়ে কার্টুন এঁকে যে অসভ্যতার প্রকাশ ঘটলো -সেটির নিন্দা না করে বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ করলো তার নিজ অসভ্যতাকে। অসভ্য কর্মের নিন্দা জানানোর জন্য চাই সভ্য মন। কিন্তু সে সভ্য মন নেই বাংলাদেশের আওয়ামী ঘরানার নেতাকর্মীদের মাঝে। এটি তাদের অতি পুরানো ব্যাধি। ফলে ভারতে যখন ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদকে ধ্বংস করা হয় এবং গুজরাতে হত্যা করা হয় বহু হাজার মুসলিমকে, তখনও শেখ হাসিনা ও সাথীরা সে বর্বর কর্মের নিন্দা করেনি। ভারতে চলছে মুসলিমদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র, কাশ্মিরে চলছে গণতন্ত্র -সেটিকেও তারা নিন্দা করেনি। এরপরও কি বুঝতে বাঁকি থাকে হাসিনা ও তার সাথীরা বেঁচে আছে কতটা অসভ্য মন নিয়ে। এরূপ অসভ্য মন নিয়ে ভোট-ডাকাতি করা যায়, গুম-খুনের রাজনীতিকে বলবান করা যায়,শাপলা চত্ত্বরে গণহত্যাও চালানো যায়, কিন্তু অসভ্য কর্মকে নিন্দা করা যায় না।   

৩.

Right of free speech doesn’t give license to anyone to abuse others. It is pure evil. The French cartoonist is practising such evil against the Prophet Muhammad (peace be upon him) and the French President is supporting it. Such support makes French President complicit in the crime. Such mocking of the Prophet of Islam through cartoon is enough to ignite Muslims’ anger. Thus the French cartoonists are playing with fire. But it is very sad that French President Macron is not containing his mad dogs, but blaming Islam for the Muslims’ outburst. He is indeed adding fuel to the fire.                                                                  

৪.

বাংলাদেশে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর লোকদের নিজ নিজ অভিভাবক আছে। তাদের গায়ে হাত দিলে বাহিনীর লোকেরা ছুটে আসে। সরকারি দলের কোন নেতা-কর্মীর গায়ে হাত পড়লে সমগ্র প্রশাসন ময়দানে নামে। কিন্ত দুঃখের বিষয় হলো, অভিভাবক নেই দেশের জনগণের যারা রাজস্ব দেয় ঐসব বাহিনীর প্রতিপালনে। ফলে জনগণের মধ্য থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ গুম, খুন ও ধর্ষণের শিকার হলেও তাদেরকে সে যাতনা থেকে মুক্তি দেয়ার কেউ নাই। পুলিশ, প্রশাসন ও আদালতের কাজ হয়েছে তাদের পকেট হাতড়িয়ে নেয়া। রাজনৈতিক নেতাদের  কাজ হয়েছে স্রেফ নিজের গদি পাহারা দেয়া্।

এ অবস্থা থেকে মু্ক্তি পেতে হলে জনগণকে নিজের অভিভাবক নিজে হতে হবে। শুধু তাই নয়, নিজের অধিকার নিজে আদায় করে নিতে হবে। এছাড়া গুম, খুন ও ধর্ষণ থেকে বাঁচার বিকল্প পথ নেই। এ লক্ষ্যে প্রতিটি মানুষকে যোদ্ধা হওয়া ছাড়া উপায় নাই। এটি এক অতিশয় গুরু দায়িত্ব। সে সাথে পবিত্র দায়িত্বও। ইসলামে এটি জিহাদ। নামায-রোযার ন্যায় জিহাদকে ফরজ করা হয়েছে দুর্বৃত্ত নির্মূলের এ পবিত্র লড়াইয়ে সকল মানুষের সংশ্লিষ্টতা বাড়াতে। দুর্বৃত্তি থেকে মুক্তি এবং সভ্যতর সমাজ নির্মাণে এছাড়া বিকল্প পথ আছে কি?

 ৫.

The Europeans have the ugly legacy of cleansing the Muslims from Spain, the Jews from German, the Red Indians from America, the Aborigines from Australia, and the Maoris from New Zealand. Now they are going back to their own legacy and turning against the Muslims. The Muslims must be aware of the situation on the ground and unitedly plan to face the reality. Inaction like a lame-duck only adds to their sufferings.

৬.

নবীজী (সা:)কে যদি কেউ অবমাননা করে, আর তাতে যদি কারো মনে ব্যথা না জাগে -তবে বুঝতে হবে সে ব্যক্তি পুরা বেঈমান। সে নিজেকে মু্সলিম রূপে দাবী করলে বুঝতে হবে সে মুনাফিক। কারণ, ঈমানদার হওয়ার শর্ত হলো, তাকে নিজ প্রাণের চেয়েও ভাল বাসতে হয় নবীজী(সাঃ)কে। তাই নবী (সাঃ)র অবমাননা হলে প্রতিবাদী হওয়াটি  সন্ত্রাস বা রেডিক্যালিজম নয়, সেটি স্বাভাবিক ঈমানের প্রকাশ মাত্র।

৭.

The US Supreme Court has 9 judges. Of them, 6 are republican & 3 are a democrat. If politics enter into court, how impartial justice can be served. So it is not unusual that the US judiciary gets easily biased on race, religion and partisan issues.It is indeed a tribal practice.

৮.

যারা শয়তানের সৈনিক তাদের সামরিক বিনিয়োগ হাজার হাজার বিলিয়ন ডলারের। মার্কিনীদের বিনিয়োগ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশী। তারা বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ করে এবং হাজারে হাজার প্রাণও দেয়। মুসলিম তো  আল্লাহর সৈনিক। কিন্তু তাদের বিনিয়োগ কতটুকু? অথচ পরকালে মুক্তির জন্য যেমন ঈমান থাকাটি জরুরী, তেমনি জরুরী হলো আল্লাহার রাস্তায় অর্থদান। অর্থদান যে শুধু অস্ত্র কেনার জন্য জরুরী –তা নয়। জরুরী হলো বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইকে তীব্রতর করতেও। নইলে শত্রুর সামরিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক হামলা থেকে প্রতিরক্ষা মেলে।

নবীজী (সাঃ)’র সাহাবাগণ জিহাদে অর্থদানে ইতিহাস গড়েছেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) তাঁর ঘরের সবকিছু নবীজী (সাঃ)’র সামনে পেশ করেছেন যাতে তা জিহাদে লাগানো যায়। মহান আল্লাহতায়ালা আজকের মুসলিমদের সম্পদ কম দেননি। কিন্তু সে বিপুল সম্পদ ব্যয় হচ্ছে নিজেদের জৌলুস বাড়াতে। বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে এবং উন্নত অস্ত্রের নির্মাণে সে অর্থের বিনিয়োগ সামান্যই। ফলে বাড়ছে মুসলিমদের পরাজয় ও নিরাপত্তহীনতা। ৩১/১০/২০২০   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *