ফ্যাসিবাদের তান্ডব এবং নিহত গণতন্ত্র ও সুবিচার
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on February 17, 2022
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
সংস্কৃতি রাজনৈতিক শত্রুনিধনের
বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে নিরেট ফ্যাসিবাদ। সমগ্র মানব ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে নৃশংস, অসভ্য ও বর্বর মতবাদ। এটি মানুষকে হিংস্র পশুর চেয়েও হিংস্রতর সন্ত্রাসীতে পরিণত করে। এটি বহুগুণ নৃশংস ও বর্বর সামরিক স্বৈরাচার ও রাজতন্ত্রের চেয়েও। ফ্যাসিবাদের মূল এজেন্ডা শুধু রাজনৈতিক ও আদর্শিক প্রতিপক্ষকে পরাজিত করা নয়, বরং তাদের সমূলে নির্মূল। তাদের রাজনীতির মূল কথাই হলো প্রতিপক্ষের নির্মূল। তাই লক্ষ লক্ষ ইহুদী নির্মূলে হিটলারের কাছে যেমন গ্যাস চেম্বার গুরুত্ব পেয়েছে, হাসিনার কাছে তেমনি গুরুত্ব পেয়েছে শাপলা চত্বরের গণহত্যা, পিল খানায় সেনা-অফিসার হত্যা, গুম-খুন-অপহরনের রাজনীতি এবং পুলিশী রিমান্ডে নিয়ে নৃশংস অত্যাচার। এরা কখনোই বিচারকদের থেকে বিচার চায় না, চায় প্রতিপক্ষ নেতা-কর্মীদের ফাঁসি। ফ্যাসিবাদীদের মুখে সেরূপ অসভ্য স্লোগান শোনা গেছে ঢাকার রাজপথে শাহবাগ আন্দোলেনের সময়। তারা রাজপথের মিছিল থেকেই জানিয়ে দেয়, ইসলামপন্থী নেতাদের বিরুদ্ধে ফাঁসি ভিন্ন অন্য কোন রায় মেনে নিতে তারা রাজী নয়।
ফ্যাসিবাদী শাসনে আদালতের বিচারকগণ যে ফ্যাসিস্টদের চাকর-বাকর ভিন্ন অন্য কিছু নয় -সেটিও বার বার প্রমাণিত হয়েছে। চাকর-বাকর যেমন মনিবের হুকুম বিনা প্রতিবাদে মাথা পেতে মেনে নেয়, বিচারকগণও সেদিন ফাঁসির দাবি মেনে নিয়ে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার শাস্তি যাবজ্জীবন জেল থেকে ফাঁসিতে রূপান্তরিত করে। তারা যে বিচারকদের কতটা নিকৃষ্ট চাকর-বাকর মনে করে তারই প্রমাণ, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রকাশ্যে বলেছেন, শেখ হাসিনা তাকে লাথি মেরেছে। ফ্যাসিবাদীদের কাছে অন্যদের স্বাধীনতা অসহ্য। তাই তারা শুধু সাধারণ নাগরিক ও বিচারকদের স্বাধীনতাই কেড়ে নেয় না, কেড়ে নেয় মিডিয়া কর্মী, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ কর্মী এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মীদের স্বাধীনতাও। তারাও তখন শাসকদলের চাকার-বাকরে পরিণত হয়। তারাও তখন ফ্যাসিস্ট শাসকের তুষ্ট করতে গণহত্যায় নামে। ফলে শাপলা চত্বরের গণহত্যায় শেখ হাসিনাকে নিজে নামতে হয়। তার সেকাজটি দেশের সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং RAB’ই করে দিয়েছে। চোখের সামনে ভোটডাকাতি হলেও এরা বলে, নির্বাচন অতি সুষ্ঠ হয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনে এভাবে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ও তার লোকলস্কর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নির্মূলের হাতিয়ারে পরিণত হয়। সন্ত্রাস তখন আর কিছু চোরডাকাত ও সন্ত্রাসের হাতে থাকে না, সেটি রাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত হয়। এমন এক প্রেক্ষাপটে দেশে বার বার শাপলা চত্বরের নৃশংস গণহত্যা ঘটে।
অন্যরা বেঁচে থাকুক ও রাজনৈতিক করুক –সেটি ফ্যাসিবাদীদের কাছে অসহ্য। তাদের কাছে অসহ্য হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রও। মুজিব আমলে তাই স্লোগান উঠেছি “এক দেশ, এক নেতা ও এক দল”এর দাবী নিয়ে। সে স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দেন শেখ মুজিব। তিন দেশের সকল দলকে নিষিদ্ধ হয়েছে। যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে ছিল তখন প্রতিপক্ষ নির্মূলে আওয়ামী লীগের কৌশল ছিল অস্ত্র হাতে দলীয় কর্মীদের রাস্তায় নামানো। তাদের এ দলীয় সংস্কৃতি যে শুধু বাংলাদেশ আমলের -তা নয়, সেটি দেখা গেছে পাকিস্তান আমলেও। পাকিস্তান আমল আওয়ামী গুণ্ডাদের হামলায় বহু নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষ লাশ হয়েছেন। প্রমান, ১৯৭০’য়ের ১৮ই জানুয়ারিতে পল্টনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী জনসভায় আওয়ামী লীগের হামলা। সেদিনে মুজিবপন্থীদের হামলায় জামায়াতের দুই কর্মী শহীদ হন এবং বহু শত আহত হন। উল্লেখ্য যে, শুধু জামায়াত কেন, মুসলিম লীগ, নূরুল আমীন সাহেবের পিডিপিসহ কোন দলকেই আওয়ামী লীগ পল্টনে জনসভা করতে দেয়নি। সে ফ্যাসিবাদী গুণ্ডামী সেদিন প্রশংসিত হয়েছে। এমন কি পঞ্চাশের দশকে আওয়াম লীগ ছেড়ে মাওলানা ভাষানী যখন ঢাকার রূপমহল সিনেমা হলে নতুন দল ন্যাপের প্রথম দলীয় কনভেনশন করেন -সেটিও আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের হামলার মুখে পড়ে। এমন কি আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সংসদের বৈঠকে মারাত্মক ভাবে আহত এবং পরবরর্তীতে হাসপাতালে নিহত হন সংসদের ডিপুটি স্পীকার জনাব শাহেদ আলী। এসবই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ইতিহাস।
বাংলাদেশ সৃষ্টির পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক ক্ষমতাই শুধু বাড়েনি, প্রবল ভাবে বেড়েছে সন্ত্রাসের ক্ষমতাও। মুজিবের আমলেই রাষ্ট্র পরিণত হয় সন্ত্রাসে হাতিয়ারে। শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা যাওয়ায় পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, RAB, প্রশাসন ও বিচারকগণ পরিণত হয় তার লাঠিয়ালে। ফলে বেড়েছে বিরোধী পক্ষের কোমর ভাঙ্গার সামর্থ্য। দলীয় লাঠিয়াল দিয়ে কিছু লোককে হত্যা বা পঙ্গু করা যায়। কিন্তু তাদের দিয়ে সকল বিরোধী শক্তিকে নির্মূল করা যায় না। তখন বিরোধীদের আন্দোলনকে পুরাপুরি দমানোও যায় না। সে জন্য চাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা। চাই রাষ্ট্রের বিশাল পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। ক্ষমতাসীন হওয়ার কারণে এখন সব কিছুই শেখ হাসিনা ও তার দলের হাতে। ফলে বিপুল ভাবে বেড়েছে ফ্যাসিবাদী শক্তির হাতে নিহত ও নির্যাতিতের সংখ্যাও। বহুনারী ধর্ষিতা হয়েছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাম্পাসে ধর্ষণে সেঞ্চুরিও হয়েছে। কবরে গেছে গণতন্ত্র এবং প্রতিষ্ঠা পেয়েছে দলীয় গুণ্ডাতন্ত্র। একমাত্র মুজিব আমলেই প্রায় ৩০ হাজার বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী মুজিবের গড়া রক্ষি বাহিনীর হাতে খুন হয়েছে। হাসিনার আমলে গুম ও খুনের শিকার হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। বহু হাজার মানুষের উপর ঝুলছে হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলা। পুলিশ, সরকারী উকিল এবং আদালতের কাজ হয়েছে বিরোধীদের ত্রাস ও চাপের মুখেরাখা। হাজার হাজার মানুষ প্রান বাঁচাতে বা নির্যাতন থেকে পরিত্রাণ পেতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। অনেকে আত্মগোপন করে আছে দেশে মধ্যে।
ফ্যাসিবাদে গণতন্ত্রের সাথে কবরে শায়ীত হয় সুবিচার। তখন সরকারী দলের সদস্যগণ অপরাধে অবাধ স্বাধীনতা পায়। এজন্য কেউ খুন হলে -সে খুনের বিচার না করাই আওয়ামী লীগ সরকারের সংস্কৃতি। মুজিবের শাসনামলে যে ৩০ হাজারের বেশী মানুষকে হত্যা করা হলো, কিন্তু কোন একটি হত্যারও কি বিচার হয়েছে? রক্ষিবাহিনীর সদস্যদের মধ্য থেকে কারা সে সব খুনের সাথে জড়িত এবং কারা সেসব খুনের হুকুম দিয়েছিল –সে বিষয়টি কি তদন্ত হয়েছে? অথচ খুনের বিচার চাওয়াটি প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র কতটা সভ্য -সেটি তো বুঝা যায় সেখানে সুবিচার কতটা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তা দেখে। মুজিব যে অসভ্য ও নৃশংস সংস্কৃতিকে প্রতিষ্ঠা দেয়, শেখ হাসীনা সেটিকে বহুগুণ অসভ্যতর ও নৃশংসতর করেছে। হাসিনার শাসনামলে শত শত মানুষ ক্রস ফ্যায়ারে বিনা বিচারে হত্যার শিকার হয়েছে। ২০১৩ সালে ৫মে যেরূপ শত শত মুসল্লীকে হত্যা করা হলো, তাদের নামের তালিকাও কি প্রকাশ করা হয়েছে? সভ্য দেশে কোন দুর্যোগে গরু-ছাগল মারা গেলেও তার হিসাব রাখা হয়। মানুষ মারা গেলে তাদের পোষ্টমর্টেম হয়। কিন্তু বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার আমলে হত্যা করা হয়। কিন্তু কারা নিহত হলো এবং কেন ও কিভাবে তাদের হত্যা করা হলো -তার কোন তদন্ত হয়নি। নিহত হওয়ার মধ্যেই যেন সব কিছুর পরিসমাপ্তি।
সর্বনিকৃষ্ট অপরাধ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত
আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের হাতে এ যাবত বহু নিরীহ মানুষ লাশ হয়েছে, বহু বিরোধী দলীয় কর্মী গুম হয়েছে। অসংখং মানুষ পুলিশ ও দলীয় ক্যাডারদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে। দলটির হাতে ক্ষমতা যাওয়ায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী দিয়ে যুদ্ধ শুরু করা হয়েছে জনগণের বিরুদ্ধে। এরূপ ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি কি অন্য কোন ভাবে হয়েছে। ইতিহাসের বড় সত্যটি হলো, মানব সমাজের সবচেয়ে বড় ক্ষতিগুলো রোগজীবাণু, ভূমিকম্প ও সুনামীর কারণে হয় না, সেটি হয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ফ্যাসিবাদীদের হাতে কুক্ষিগত হলে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হাতে পাওয়ার কারণে শেখ মুজিব সকল বিরোধী দলকে রাতারাতি বিলু্প্ত করতে পেরেছিল। ভারতের জন্য খুলে দিতে পেরেছিল দেশের সীমান্ত। এবং দ্রুত নামিয়ে আনতে পেরেছিল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই মুজিবী চেতনা। হাসিনা সে অভিন্ন চেতনা নিয়ে নেমেছে তার রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মূলে। হাত দিয়েছে জামায়াতের নির্মূলে। হাত পড়েছে বিএনপি ও হিফাজতে ইসলামের উপরও। এভাবেই প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে মুজিবের একদলীয় বাকশালী চেতনা। তাছাড়া যাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বলে বছরের পর বছর প্রতিদিন ও প্রতিঘণ্টা মাতামাতি করা হয় তাঁকে এবং তাঁর চেতনাকে আবর্জনার স্তুপে ফেলবেই বা কেমনে? বাংলাদেশের বিপদ তাই সহজে দূর হওয়ার নয়।
বিনা বিচারে যে কোন হত্যাই গুরুতর অপরাধ এবং সেটি হলো জঘন্য সন্ত্রাস। প্রতিটি হত্যার বিচার করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। অথচ আওয়ামী শাসনামলে সেটি হয়নি। বরং রাষ্ট্র পরিণত হয়েছে সবচেয়ে বৃহৎ সন্ত্রাসী ও অপরাধী প্রতিষ্ঠানে। অন্য কোন কারণে না হোক, অন্ততঃ এই নৃশংস বর্বরতার কারণে শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা ও তাদের দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগ যুগ বেঁচে থাকবে। মানুষ মারা যায়, কিন্তু তাদের বর্বর নৃশংসতাগুলো বেঁচে থাকে শত শত বছর। বহু শত বছর পর নতুন প্রজন্ম এ নৃশংস হত্যা ও হত্যার পর বিচারহীনতার ইতিহাস পড়ে ধিক্কার দিবে এই বলে, আমাদের পূর্বপুরুষ এতোই অসভ্য ছিল যে ফ্যাসিবাদী দুর্বৃত্তদের শাসন মাথা পেতে মেনে নিয়েছিল! যে কোন সভ্য জনপদে হিংস্র পশু ঢুকলে সেটিকে বধ করা হয়। নইলে সে জনপদও জঙ্গলে পরিণত হয়। তেমনি রাষ্ট্রকে সভ্য রাখতে হলে অসভ্য ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে রাষ্ট্রকে মুক্ত রাখতে হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশীদের ব্যর্থতাটি বিশাল।
রাষ্ট্রের ন্যায় পৃথিবী পৃষ্টের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানকে অপরাধ কর্মের হাতিয়ারে পরিণত করাই হলো সবচেয়ে বড় অপরাধ। তখন লক্ষ লক্ষ চোরডাকাত ও খুনি যা করতে পারে না, রাষ্ট্র তা একাই করে। এবং বাংলাদেশে এই জঘন্য অপরাধে লিপ্ত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টরা। এ ঘৃণ্য ও নৃশংস অপরাধীদের হাত থেকে রাষ্ট্রকে মুক্ত করে সেটিকে অন্যায়ের নির্মূল ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ারে পরিণত করাই হলো সবচেয়ে বড় নেক আমল। অন্যদের কাছে এ কাজটি নিজক রাজনীতি বা জনসেবা। কিন্তু ইসলামে এটিই সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। এটিই হলো পবিত্র জিহাদ। এ জিহাদে নিহত হলে সে পায় বিনা হিসাবে জান্নাত। অন্য কোন ইবাদতে এরূপ পুরস্কার রাখা হয়নি। কারণ নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতে ন্যায় ইবাদতে ব্যক্তির পরিশুদ্ধি ঘটলেও তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণ বা পরিশুদ্ধি হয় না -যা হয় ইসলামী রাষ্ট্র নির্মাণে। একমাত্র তখনই বিজয়ী হয় মহান আল্লাহতায়ালার দ্বীন এবং প্রতিষ্ঠা পায় তাঁর সার্বভৌমত্ব ও শরিয়ত। এজন্যই মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে এটিই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ পথ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ হলেও সে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতে লোক নাই। ফলে দেশটিতে ইসলাম পরাজিত। এবং সংবিধান থেকে নির্বাসিত মহান আল্লাহতায়ালার সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি এবং আদালতে বিলুপ্ত হয়েছে শরিয়তের আইন। মহান আল্লাহতায়ালার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী কাফের হওয়ার জন্য কি এর চেয়ে বেশী কিছু লাগে? এ বিদ্রোহের কারণেই দিন দিন বাড়ছে ফ্যাসিবাদের অসভ্যতা।
সব মানুষই স্বার্থপর। যারা ক্ষুদ্র মাপের মানুষ তারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ, পারিবারিক স্বার্থ ও দলীয় স্বার্থ নিয়ে বাঁচে। কিন্তু আল্লাহতায়ালা চান মানুষ বাঁচুক সবচেয়ে বড় স্বার্থটি নিয়ে। আর সেটি হলো কোটি কোটি বছরে শেষ হবার নয় সেই অনন্ত-অসীম কালের জান্নাত পাওয়ার স্বার্থ। আর ঈমানদারের জীবনে সে স্বার্থসিদ্ধির রাজনীতি হলো দুর্বৃত্ত শাসনের নির্মূলে জিহাদ। যারা পরকালে জান্নাত চায় তারা সে জান্নাতে পেতে পারে দুর্বৃত্তির নির্মূল ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জিহাদে আত্মনিয়োগ করে। নবীজী (সা:)’র সাহাবাগণ সেই অন্তহীন জান্নাতপ্রাপ্তির স্বার্থ নিয়ে বেঁচেছেন এবং তাই অর্ধেকের বেশী সাহাবা শহীদ হয়েছেন। অথচ বাংলাদেশে এক লাখে একজনও আল্লাহর পথে শহীদ হয় না। এর কারণ, সাহাবাগণ যে ইসলামী চেতনা নিয়ে জিহাদ করেছিলেন সে ইসলাম বাংলাদেশে বেঁচে নাই। বেঁচে আছে তাদের মনগড়া ইসলাম। যেখানে নামায-রোযা, হজ্জ-যাকাত, তাসবিহ-তাহলিল, কুর’আন পাঠ, মিলাদ পাঠ, পীরের দরবারে উপস্থিত হওয়ার চেয়ে বড় কোন ইবাদত নাই। রাজনীতির লড়াই তথা আল্লাহতায়ালার দ্বীনকে বিজয়ী করার জিহাদ গণ্য হয় দুনিয়াদারী রূপে। ফলে ১৭ কোটি মানুষের দেশে বিপুল সংখ্যক নামাযী ও রোযাদার মিললেও ইসলামকে বিজয়ী করার লোক নাই। ফলে বিজয়ী হয়েছে ফ্যাসিবাদের ন্যায় একটি অসভ্য ও নৃশংস মতবাদ। বাংলাদেশে শয়তানী শক্তির এই বিজয় যে তাদের নিজের ব্যর্থতার দলিল –তা নিয়ে সন্দেহ চলে। শয়তানী শক্তির হাতে বিজয় তুলে দিয়ে কি পরকালে পুরস্কার মিলবে?
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের সংকটের শুরু কিরূপে?
- রাজনীতিতে কবিরা গুনাহ ও দুর্বৃত্তকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আযাব
- আল্লাহর আনসার এবং শয়তানের আনসার
- নবীজী (সা:)’র সফল রাজনীতি এবং আজকের মুসলিমদের ব্যর্থ রাজনীতি
- মুসলিম দেশে বিজয় শয়তানের এবং পরাজয় নবীজী (সা:)’র ইসলামের
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- December 2024
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018