শুধু সরকারকে নয়, জনগণকেও পাল্টাতে হবে

ফিরোজ মাহবুব কামাল

গুরুতর সমস্যা জনগণকে নিয়েও                                                  

বাংলাদেশের সমস্যার মূল কারণটি শুধু ভোটডাকাত হাসিনার দুর্বৃত্ত সরকার ও তার ফ্যাসিরাদী জুলুম নয়। বরং গুরুতর সমস্যা দেশের জনগণকে নিয়েও। মশামাছি ও রোগজীবাণু সর্বত্র জন্মায় না। সে জন্য গলিত আবর্জনায় পূর্ণ নর্দমা দরকার। তেমনি ভোটডাকাতি ও ফ্যাসিবাদের ন্যায় নিরেট অসভ্যতা্ও কোন সভ্য দেশে প্রতিষ্ঠা পায়না। সেজন্য বাংলাদেশের মত অজ্ঞতায় আচ্ছন্ন দেশ দরকার। দরকার, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশের ন্যায় দুর্নীতিপরায়ন সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এবং দরকার, বাংলাদেশের জনগণের ন্যায় বিবেকবর্জিত জনগণ। যে দেশের জনগণ গণতন্ত্রের খুনি, বাকশালী ফ্যাসিবাদের জনক, দুর্নীতির লালন কর্তা এবং ভারতের ন্যায় আগ্রাসী শক্তির সেবাদাসকে নেতা, পিতা ও বন্ধুর সম্মান দেয়, সে দেশে কি সভ্য মানুষ, সভ্য সমাজ ও সভ্য রাষ্ট্রের নির্মাণ সম্ভব? গুরুতর রোগ তো জনগণের বিবেকে। এমন দেশে দুর্বৃত্ত ভোটডাকাতের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে এবং গুম-খুন-ধর্ষণ-সন্ত্রাসের জোয়ার আসবে –সেটিই কি স্বাভাবিক নয়?

শেখ হাসিনাকে অনেকেই শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় বলে। এটি রীতিমতো তাজ্জবের বিষয়। একজন সভ্য মানুষের কাছে ভোটডাকাত শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় হয় কি করে? কে কতটা অসভ্য, অভদ্র ও দুর্বৃত্ত -সেটি বোঝা যায় সে দুর্বৃত্ত চোর-ডাকাতদের কতটা ভাল বাসে, তা থেকে। যে ব্যক্তি হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাত ফ্যাসিস্ট দুর্বৃত্তকে শ্রদ্ধেয় ও মাননীয় বলে –সে ব্যক্তি নিজেও যে অসভ্য ও দুর্বৃত্ত -সেটি বুঝার জন্য কি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাগে? সেটি তো নিরক্ষর ব্যক্তিরও বুঝার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ এমন জনগণদের নিয়ে পরিপূর্ণ। তাই শুধু সরকার পাল্টালে দেশের কল্যাণ আসবে না, জনগণকেও পাল্টাতে হবে।

ভাল ইমারত গড়তে হলে প্রথমে ভাল ইট চাই। তেমনি সভ্য রাষ্ট্রের নির্মাণে সভ্য ও চরিত্রবান মানুষ চাই। শত্রুশক্তির নির্মূলের আগে কাঙ্খিত জনশক্তি গড়ার কাজটি তাই প্রথমে করতে হয়। আরবের বুকে মুসলিমদের হাতে একটি বিশ্ব শক্তির জন্ম হয়েছিল। রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যের ন্যায় তৎকালীন বিশ্বের দুটি বিশ্বশক্তিকে তারা পরাজিত করেছিলেন। তাদের হাতে নির্মিত হয়েছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা। সে  নির্মাণ কাজের শুরুটি হয়েছিল সর্বশ্রেষ্ঠ মানব গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে। এবং সে কাজটি হয়েছিল সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল মহম্মদ (সা:)’ হাতে। কিন্তু বাংলাদেশে সে শুরুর কাজটি দিয়ে দেশ গড়ার কাজের শুরুই হয়নি।

দেহ গড়ে উঠে পানাহারের গুণাগুণ থেকে। তেমনি চরিত্র গড়ে উঠে জ্ঞানের গুণাগুণ থেকে। তাই মাছ-গোশতো-বিরিয়ানী বেশী বেশী খেলে দেহ মোটা হয় বটে, কিন্তু তাতে চরিত্রে পরিবর্তন আসে না। চরিত্র পাল্টাতে হলে জ্ঞানের ভুবনে সমৃদ্ধি আনতে হয়। ইংরাজীতে একটা কথা আছে “garbage in, garbage ou.” অর্থ: কোন যন্ত্রে আর্বজনা ঢুকালে আবর্জনাই বেরিয়ে আসবে। সেটি সত্য ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের বেলাও। দুষ্ট জ্ঞান দানে ভাল চরিত্র গড়ে উঠে না। সে জন্য চাই শ্রেষ্ঠ জ্ঞান দান।

 

মহান আল্লাহতায়ালার সূন্নত

 উন্নত মানব ও রাষ্ট্র গড়ার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহতায়ালার নিজস্ব সূন্নত রয়েছে। এরূপ মহৎ কাজে জ্ঞানার্জন সর্বজ্ঞানী স্রষ্টার কাছে এতোই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছে যে, তিনি নামাজ-রোজা প্রথমে ফরজ না করে প্রথমে জ্ঞানার্জন ফরজ করেছেন। সে জ্ঞানার্জনের কাজটি যাতে যথার্থ রূপে হয় সে জন্য তিনি জ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎস রূপে নাযিল করেছেন পবিত্র কুর’আন। এটিই হলো বিশ্বের সর্বসেরা জ্ঞান-সমৃদ্ধ বই। পবিত্র কুর’আনের জ্ঞানই হলো মানবের আত্মা বা বিবেকের সর্বশ্রেষ্ঠ খাদ্য। এ খাদ্য ছাড়া বিবেকের মৃত্যু অনিবার্য। বড় বড় ডিগ্রিধারীগণও যেরূপ স্বৈরাচারী, ধর্ষক, ভোটচোর, খুনি ও দুর্বৃত্ত হয় –তা তো মরা বিবেকের কারণে। এই মরা বিবেকের কারণেই পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে জন্ম নিয়েছে উপনিবেশবাদ, ফ্যাসিবাদ,নাযীবাদ, বর্ণবাদ, বর্ণবাদী নির্মূল, জাতীয়তাবাদ, সেক্যুলারিজম, কম্যুনিজমের ন্যায় মানবতাধ্বংসী মতবাদ এবং সে সাথে বিশ্বযুদ্ধ। তারা দুটি বিশ্বযুদ্ধে হত্যা করতে পেরেছে সাড়ে সাত কোটি মানুষকে। এসবই হলো মৃত বিবেকের নাশকতা।

পবিত্র কুর’আনের জ্ঞান ছাড়া শ্রেষ্ঠ মানব গড়ার কাজটি সম্ভব –এটি বিশ্বাস করাই মহান আল্লাহতায়ালার সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বেঈমানী। অথচ বাংলাদেশের বুকে সে বেঈমানীই যেমন ঘরে ঘরে বেসরকারী ভাবে হচ্ছে, তেমনি হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে প্রতিটি স্কুল-কলেজে। বাংলাদেশীদের জিদ, তারা কুর’আন ছাড়াই সভ্য ও চরিত্রবান মানুষ রূপে বেড়ে উঠবে। কিন্তু এক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতাটি বিশাল। কুর’আন জ্ঞান থেকে দূরে থাকার কারণেই তারা বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে দুর্বৃত্তিতে। তারা বিশ্বের সকল দেশকে হারিয়ে দুর্নীতিতে ৫ বার প্রথম হয়েছে। বাংলাদেশকে এই স্থানে পৌঁছে দিয়েছে তারা, যারা দেশের সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত।

মানব ইতিহাসের কোন কালেই কোন কিতাব এতো মনযোগ দিয়ে পড়া হয়নি -যেরূপ মনযোগ দিয়ে পবিত্র কুর’আন পড়া হয়েছে। পড়তে পড়তে হাজার হাজার মানুষ সে কুর’আনকে পুরাপুরি মুখস্থ করে ফেলেছে। অথচ সমগ্র মানব ইতিহাসে অন্য কোন বইয়ের সাথে এমনটি ঘটেনি। কুর’আনের বাইরে এমন কোন বই পাওয়া যাবে না, যা একজন মানুষও তার পুরাটা মুখস্থ করেছে। এমন সে ব্ইয়ের লেখকও সেটি পারিনি।  আরো লক্ষ্যণীয় হলো, কুর’আন বুঝার কাজকে সহজ করার লক্ষ্যে ইরাক, সিরিয়া, মিশর, সূদান, মরক্কো, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, আলিজিরিয়া, মৌরতানিয়ার ন্যায় দেশের মানুষ তাদের মাতৃভাষা দাফন করে আরবী ভাষাকে গ্রহণ করেছে। এই হলো কুর’আনের সাথে তাদের ঘনিষ্টতার নমুনা।

 

যাত্রা অসভ্যতার পথে

যা কিছু সভ্য নীতি বিরুদ্ধ সেটিই অসভ্য কর্ম। বাংলাদেশীদের দ্রুত যাত্রা সেই অসভ্যতার পথে। সে পথে তারা ইতিমধ্যেই বহুদূর এগিয়ে গেছে। ছাড়িয়ে গেছে বিশ্বের অন্যান্য জাতিদেরকে। নীচে নামার কারণেই দেশটি বিশ্বমাঝে ভোট ডাকাতিতে রেকর্ড গড়তে পেরেছে। নইলে কি দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করতে পারতো? তলানীতে না নামলে কি দুর্বৃত্তিতে বিশ্বে ৫ বার প্রথম হতো? নইলে কি শাপলা চত্বরের গণহত্যা হতো? হতো কি পীলখানায় ৫৬ জন সামরিক অফিসারের নৃশংস হত্যাকান্ড? সভ্য দেশে কি কখনো গণতন্ত্র কবরে যায়? সেটি তো একমাত্র অসভ্য দেশে ঘটে। এসবই তো আলামত নীচে নামার।

নীচে নামার এ পথটি না পাল্টালে শুধু সরকার পাল্টিয়ে লাভ হবে না। যে পথটি অতীতে মুসলিমদের বিস্ময়কর বিজয় ও গৌরব দিয়েছে –সে পথ থেকে বাঙালি মুসলিমগণ বহু দূরে সরে এসেছে। তারা নামাজ-রোজায় আছে, কিন্তু সিরাতাল মুস্তাকীমে নাই। সিরাতাল মুস্তাকীম হলো দুর্বৃত্তির নির্মূল ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জিহাদের পথ। অসভ্য মানুষদের চেনা যায় ভাল বইয়ের প্রতি তাচ্ছিল্য দেখে। মশামাছি যেমন ফুলের উপর বসে না, অসভ্য মানুষেরা তেমনি জ্ঞানের বইয়ের ধারে কাছে যায় না। এজন্যই বাংলাদেশে সবচেয়ে উপেক্ষিত বই হলো পবিত্র কুর’আন। ভূতের গল্পও শিশুরা বোঝার চেষ্টা করে। কিন্তু কোটি কোটি বাঙালি মুসলিম কুর’আন পড়ে না বুঝে। এটি পবিত্র কুর’আনের প্রতি শুধু অশ্রদ্ধাই নয়, চরম অবমাননাও। এবং সে অবমাননা নিয়েই বাঙালি মুসলিমদের নিত্যদিনের ধর্মচর্চা।

বাংলাদেশে সবচেয়ে উপেক্ষিত হলো মহান নবীজী (সা:)র জীবনচরিত। গণতন্ত্রের খুনি, ফ্যাসিবাদের জনক, হিন্দুত্ববাদী ভারতের সেবাদাস এবং দুর্নীতির লালনকর্তা শেখ মুজিবের জীবনী পাঠ না করলে পরীক্ষায় পাশ জুটে না। পৌত্তলিক রবীন্দ্রনাথের কবিতা না পড়লেও পরীক্ষায় ফেল করতে হয়। কিন্তু স্কুল-কলেজে নবীজী (সা)’র জীবনী পাঠের ব্যবস্থা নাই। পবিত্র কুর’আন ও নবীজী (সা:)’র জীবনচরিতের প্রতি অবহেলাটি শুধু বাংলাদেশের সরকারের নীতিই নয়, জনগণের নীতিও। সরকার যেমন সেগুলি পড়াতে চায় না, জনগণও সেগুলি পড়তে চায়না।

কাউকে বিষাক্ত খাদ্য খেতে দেখে নিশ্চিত বলা যায়, ঐব্যক্তির মৃত্যু অনিবার্য। তেমনি বিষাক্ত গ্রন্থ পাঠ থেকে বুঝা যায় সে জাতির পতন অনিবার্য। বাংলাদেশীদের জন্য ভয়াবহ বিপদের কারণ, জ্ঞানের যে ভাণ্ডার থেকে তারা মনের পুষ্টি সংগ্রহ করে তার শতকরা ৯৮ ভাগ বইয়ের লেখক হচ্ছে পৌত্তলিক হিন্দু, বামপন্থী নাস্তিক ও জাতীয়তাবাদী সেক্যুলারিস্ট। এরাই নিজেরাই পথভ্রষ্ট এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে রোগাগ্রস্ত ও অপরাধী। অথচ এদের বই নিয়েই বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচী।

 

অভাব সৎ তাড়নার

প্রতিটি মানুষই কোন না কোন তাড়না নিয়ে বাঁচে। ইংরাজীতে এই তাড়নাকেই বলা হয় passion। তাড়নার মাঝেই পরিচয় মেলে ব্যক্তির চেতনার ও চরিত্রের। ঈমানদারের সার্বক্ষণিক তাড়নাটি নেক আমলে। কারণ নেক আমল দিয়ে তাকে জান্নাতের মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এবং নিজেকে মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে মাগফিরাতের যোগ্য করতে হয়। ঈমানদার সে তাড়নাটি পায় তাঁর গভীর ঈমান ও জাহান্নামের ভয় থেকে।

অপর দিকে চোরের তাড়নাটি চুরিতে। ধর্ষকের তাড়না ধর্ষণে। এবং শেখ হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাত স্বৈরাচারীর তাড়নাটি ভোটডাকাতিতে। মানুষ কেমন ঈমানদার -সেটি বোঝা যায় হারাম কর্ম থেকে বাঁচার তাড়না দেখে। হারাম কর্ম তথা দুর্বৃত্তি থেকে বাঁচার সে তাড়নাটি কারো মধ্যে না থাকাটাই হলো চরম বেঈমানী। একজন ব্যক্তি কতটা সভ্য, ভদ্র ও ঈমানদার –সেটি কখনোই গোপন থাকে না। সেটি বুঝা যায় শেখ হাসিনার ন্যায় ভোটডাকাত দুর্বৃত্তদের ঘৃনা করার সামর্থ্য দেখে। কিন্তু সে সামর্থ্য বাংলাদেশে ক’জনের?

 

মুক্তি কোন পথে?

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হলো, জনগণের মধ্যে নেক আমলে ও দুর্বৃত্তির নির্মূলে প্রবল তাড়না সৃস্টি করা। এই তাড়নাই মানব জীবনের পাওয়ার হাউসের কাজ করে। সেরূপ তাড়না কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট লাভে, উত্তম পানাহারে ও অর্থসম্পদে গড়ে উঠেনা। সে জন্য চাই কুর’আনী জ্ঞান। সে কাজে কুর’আনের সামর্থ্য বিস্ময়কর। পবিত্র এই কুর’আন ভেড়ার রাখালকে জগতবিখ্যাত দার্শনিক, জেনারেল, প্রশাসক ও বিচারকে পরিণত করেছে। যে কোন রাষ্ট্রে কুর’আনী জ্ঞানে জনগণকে আলোকিত করার দায়িত্বটি দেশের বুদ্ধিজীবী, আলেম, লেখক, কলামিস্ট, শিক্ষক ও সাহিত্যিকদের। এরাই হলো একটি সভ্য সমাজের প্রকৃত নির্মাতা। ইসলামে এ কাজটিও পবিত্র জিহাদ।

রাষ্ট্র নির্মাণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শুরুর কাজটি কখনোই রাজনীতির অঙ্গণে শুরু হয় না। সেটি হয় বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণে। সে কাজটি হয় জ্ঞান বিতরণের মধ্য দিয়ে। অস্ত্রের জিহাদের পূর্বে তাই বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদ শুরু করতে হয়। এই জন্যই মহান আল্লাহতায়ালার হুকুম, “জাহিদুবিহি জিহাদান কবিরা”। অর্থ: কুর’আন দিয়ে বড় জিহাদটি করো। পবিত্র কুর’আন তাই বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদের অস্ত্র। তাই কুর’আন যারা না বুঝে পড়ে -তারা সে অস্ত্র পাবে কীরূপে? কুর’আন দিয়ে যুদ্ধ করা তাই ইসলামের গৌরবযুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষনীয় বিষয়।

পবিত্র কুর’আনের আগে আরবী ভাষায় কোন গ্রন্থ ছিল না। পবিত্র কুর’আন থেকেই বিপ্লবের শুরু। পবিত্র কুর’আন বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণের যে বিপ্লব এনেছিল, তা থেকেই শুরু হয় রাজনীতি, সংস্কৃতি, সমাজনীতি ও অর্থনীতির অঙ্গণে অবিরাম বিপ্লব। অবশ্যই সে উত্থানের সে পরীক্ষিত পথটি ধরতে হবে বাংলাদেশীদেরও। এটিই সিরাতাল মুস্তাকীম। তখন রাজনীতি আর রাজনীতি থাকবে না, সেটি পবিত্র জিহাদে পরিণত হবে। বুঝতে হবে, আন্দোলনে মরলে কেউ শহীদ হয়না। কিন্তু জিহাদে নিহত হলে শহীদ হয়। তাই দুর্বৃত্ত শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইকে জিহাদে পরিণত করার মধ্যেই পরকালে মহাকল্যাণ।

দুর্বৃত্ত শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদের নাশকতাটি বিশাল। কারণ জিহাদে যোগ দেয় সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহতায়ালার ফেরেশতা বাহিনী –যার বর্ণনা এসেছে পবিত্র কুর’আনে। এটি ইসলামের মৌলিক আক্বীদার কথা। এজন্যই মুষ্টিমেয় সংখ্যক মুসলিমদের জিহাদ রোমান ও পারসিক সাম্রাজ্যের পতন ঘটিয়েছে। আফগান মুজাহিদগণ পতন ঘটিয়েছে সোভিয়েত রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায় দুটি বিশ্বশক্তিকে। ভোটডাকাত হাসিনা কি রোমান ও পারসিক সাম্রাজ্য এবং সোভিয়েত রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী? বাঙালি মুসলিমগণ কি মুষ্টিমেয় সংখ্যক সাহাবা বা আফগান মুজাহিদের চেয়ে সংখ্যায় কম? তাই জিহাদ শুরু হলে সকল দুর্বৃত্ত শক্তি অবশ্যই নির্মূল হয়ে যাবে। তখন বাঙালি মুসলিমগণ পাবে বিশ্ব মাঝে গৌরবের আসন। এ বিজয় ও গৌরব শুধু পার্থিব জীবনে নয়, বরং পরকালে পৌঁছাবে জান্নাতে। ২৬/১০/২০২২

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *