বাঙালি মুসলিমের রবীন্দ্রাসক্তি ও আত্মঘাত
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on May 10, 2023
- Bangla Articles, Bangla বাংলা, সমাজ ও রাজনীতি
- No Comments.
ফিরোজ মাহবুব কামাল
বাঙালি মুসলিমের চারিত্রিক পচন
দেহে রোগ দেখা দিলে সাথে সাথে রোগের কারণ খুঁজতে হয় এবং দ্রুত চিকিৎসাও শুরু করতে হয়। রোগটি দৈহিক না হয়ে নৈতিকও হতে পারে। দৈহিক রোগের ন্যায় নৈতিক রোগের আলামতগুলিও গোপন থাকে না। দেহের রোগে হাত-পা ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শক্তিহীন হয়। নৈতিক রোগে মৃত্যু ঘটে বিবেকের। তাতে বিলুপ্ত হয় নীতি, নৈতিকতা ও চরিত্র। চুরি-ডাকাতি, ভোট-ডাকাতি, সন্ত্রাস, গুম, খুন, গণহত্যা, ধর্ষণ, ধর্ষণে উৎসব, লগি-বৈঠা নিয়ে রাজপথে হত্যা, পুলিশী রিম্যান্ডে হত্যা, ফাঁসিতে হত্যা, ক্রসফায়ারে হত্যা–এরূপ নানা রকম হত্যা ও নিষ্ঠুরতা তখন নিত্তনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সেটি তখন শাসকচক্রের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়। তখন অতি নির্মম ও নৃশংস কাজেও বিবেকের পক্ষ থেকে কোন রূপ বাধা থাকে না। এরই ফলে রাস্তাঘাটে শুধু অর্থকড়ি, গহনা ও গাড়ি ছিনতাই হয় না, নারী ছিনতাইও শুরু হয়। শুধু ধর্ষণই হয়, দলবদ্ধ ধর্ষণও হয়। সব ধর্ষিতাই যে থানায় এসে নিজের ধর্ষিতা হওয়ার খবরটি জানায় -তা নয়। কারণ পুলিশের কাছে বা আদালতে ধর্ণা দিলেও অপরাধীর শাস্তি মেলে না বরং তাতে সমাজে ধর্ষিতা রূপে প্রচার পাওয়ায় অপমান বাড়ে। অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনা তাই গোপনই থেকে যায়। ফলে ধর্ষিতা নারীদের আসল সংখ্যা যে বহুগুণ বেশী –তা নিয়ে সন্দেহ থাকার কথা নয়।
চুরিডাকাতি, ভোটডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসের ন্যায় নানারূপ পাপ কর্ম বস্তুত একটি অসুস্থ চেতনার সিম্পটম। রোগ-জীবাণু দৈহিক রোগ ঘটায়, কিন্তু অপরাধ কর্ম ঘটে অসুস্থ চেতনার কারণে। চেতনাকে অসুস্থ করে বিবেকনাশক দর্শন। তাই জনগণের মাঝে দৈহিক রোগের মহামারি শুরু হলে দেহের মাঝে লুকানো রোগ-জীবাণুর যেমন তালাশ করতে হয়, তেমনি রাষ্ট্রে দুর্বৃত্তির প্লাবন বাড়লে বিষাক্ত দর্শনটির খুঁজে বের করতে হয়। মানুষের প্রতিটি কর্ম, আচরণ ও অপরাধের পিছনে একটি দর্শন কাজ করে। দর্শনই চরিত্র ও কর্মের নিয়ন্ত্রক। মানব সন্তানেরা জন্মসূত্রেই অসভ্য, দুর্বৃত্ত ও অপরাধী হয় না। গরুপূজারী, সর্পপূজারী বা লিঙ্গপূজারী রূপেও তাদের জন্ম হয় না। তারা অসভ্য, দুর্বৃত্ত ও অপরাধী হয় এবং ধর্মে পৌত্তলিক হয় সেই সব দর্শন ও ধ্যান-ধারণার কারণে -যা তাদের মগজে লাগাতর ঢুকানো হয় জন্মের পর তাদের নিজ গৃহে, নিজ মহল্লায়, নিজ স্কুল-কলেজে এবং নিজের আশেপাশের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনে। তাই দৈহিক রোগের মহামারিতে যেমন সংশ্লিষ্ট জীবাণুর তালাশ করতে হয়, তেমনি নৈতিক মড়ক লাগলে রোগাগ্রস্ত মানুষের মনের দর্শনটি খুঁজতে হয়। এবং চিকিৎসা সেখান থেকেই শুরু করতে হয়ে।
মানব সন্তানদের জান্নাতের উপযোগী বানানোর কাজটিই হলো এ পৃথিবী পৃষ্ঠে সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্প। এ শিল্পই নির্ধারণ করে জনগণ জান্নাতে যাবে, না জাহান্নামে যাবে। এবং নির্ধারণ করে, সেদেশে সভ্য সমাজ নির্মিত হবে, না অসভ্য সমাজ নির্মিত হবে। এই মহান শিল্পটি প্রতি যুগেই ছিল নবী-রাসূলদের। কোন দেশে এ শিল্প গুরুত্ব না পেলে জনগণ তখন জাহান্নামের যোগ্য হয়ে গড়ে উঠে। দেশ ও সমাজ তখন সভ্য জীবন-যাপনের অযোগ্য হয়ে উঠে। নবী-রাসূলদের এই পথটি তাদের নিজেদের আবিস্কৃত পথ নয়। এটি ছিল মহাজ্ঞানী মহান আল্লাহতায়ালার দেখানো পথ। লক্ষণীয় হলো, তাদের কাজের শুরুটি পানাহার, বাসস্থান, পোষাক, কৃষি বা শিল্পে বিপ্লব দিয়ে হয়নি। বরং শুরু করেছিলেন জনগণের বিশ্বাস, দর্শন, আক্বীদার ভূমিতে পরিশুদ্ধি সাধনের মধ্য দিয়ে। এ শিল্পের মূল হাতিয়ারটি হলো ওহীর জ্ঞান। পবিত্র কুর’আন হলো ওহীর জ্ঞানের সর্বশেষ গ্রন্থ। মানব মনে বিপ্লব সাধনে পবিত্র কুর’আনের সামর্থ্য বিস্ময়কর। একাজে কুর’আন নিজেই মোজেজা। আরবের অসভ্য মানুষগুলো যে দর্শনের বলে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবে পরিণত হয়েছিলেন –তা হলো এই কুর’আনের দর্শন। মানব ইতিহাসের এটিই হলো সবচেয়ে পরীক্ষিত ও সবচেয়ে শিক্ষণীয় বিষয়। অথচ সে শিক্ষাটি বাংলাদেশে আজ উপেক্ষিত। এখানে গাদ্দারী যেমন মহান আল্লাহতায়ালা সাথে, তেমনি তাঁর দ্বীন ইসলামের সাথে।
নতুন চৈতন্য দেব
বাংলাদেশে যে দর্শনটিকে স্কুল-কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের মগজে প্রবেশ করানো হয় -সেটি আদৌ ইসলামের নয়। বরং সেটি রবীন্দ্রনাথের এবং রাবীন্দ্রিক গোত্রের লেখক-লেখিকাদের। বাঙালি হিন্দুদের হাজারো দেব-দেবীর মাঝে রবীন্দ্রনাথ হলো আরেক দেব। আধুনিক যুগে সেই হলো তাদের শ্রেষ্ঠ দেব। হিন্দুরা তাকে গুরুদেব বলে। বাঙালি হিন্দুদের অধিকাংশই তাই রবীন্দ্রপূজারী। তারা চায়, বাঙালি মুসলিমগণও রবীন্দ্র পূজায় অভ্যস্ত হোক। ১৯৭১’য়ের পর তাদের সে এজেন্ডাই বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে। অনেক বাঙালি মুসলিমও রবীন্দ্রনাথকে “কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ” বলে। কাজী নজরুল ইসলাম নিজে রবীন্দ্রকে পূজা দিত –সে কথা তিনি নিজেই বলেছেন। শেখ মুজিব নিজেও ছিলেন রবীন্দ্রপূজারী। মুজিব কোনদিন পবিত্র কুর’আন পড়েছেন কিনা -সে প্রমাণ কোথাও পাওয়া যায় না। কিন্তু তিনি যে নিয়মিত রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য পাঠ করতেন ও রবীন্দ্রসঙ্গীত যে তাঁর অতি প্রিয় সঙ্গীত ছিল -সে কাহিনী বহুল পরিচিত। বস্তুত বাঙালি মুসলিমদের শিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তিতে ইসলামকে সরিয়ে রবীন্দ্রনাথের পৌত্তলিত দর্শনের চাষাবাদের শুরু খোদ শেখ মুজিবের হাতে। সে দর্শনের বীজটি বপন করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রূপে রবীন্দ্রনাথের “আমার সোনার বাংলা”র ন্যায় একটি পৌত্তলিক গানকে প্রতিষ্ঠা দিয়ে।
ইসলামী চেতনার বিজয় রুখতে মিথ্যার শক্তি যেমন বিশাল, তেমনি বিশাল হলো গানের শক্তি। ধর্মের নামে বহু মিথ্যাচার যে এখনো কোটি কোটি মানুষের মাঝে বেঁচে আছে –এমন কি সাপ-শকুন-মুর্তি-পুরুষের লিঙ্গও যে পূজা পায়, তার কারণ তো মিথ্যার শক্তি। বাংলার বুকে মুসলিম শাসনের শুরুর পর হিন্দুদের মাঝে ইসলাম কবুলের জোয়ার এসেছিল। বাঙালি হিন্দুদের মুসলিম হওয়ার জোয়ার রুখতে সে সময় শ্রী চৈতন্য দেবকে ময়দানে নামানো হয়েছিল। তার মুখে ছিল ভাববাদী গান। চৈতন্য দেব ও তার সাথীরা বাংলার গ্রামে গ্রামে ঘুরে সে গান শোনাতো। এতেই হিন্দুদের মাঝে মুসলিম হওয়ার জোয়ার থেমে যায়। এখন মুসলিমদের ইসলাম থেকে দূরে সরানোর কাজে নামানো হচ্ছে রবীন্দ্রনাথকে। বাঙালি সেক্যুলারিষ্ঠদের এটিই হলো মূল স্ট্রাটেজী। তাই মুজিব আমল থেকেই স্কুল-কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়ানো হয় নানাবিধ রবীন্দ্র সাহিত্যের চর্চা। বাংলা এ্যাকাডেমীর কাজ হয় রবীন্দ্র সাহিত্যের জনপ্রিয়তা বাড়াতে বেশী বেশী বই প্রকাশ করা। বাঙালি মুসলিমের চেতনায় রবীন্দ্রনাথের বিজয় বাড়াতে হয় সিরাজগঞ্জে প্রতিষ্ঠা দেয়া হয় রবীন্দ্র বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়। এরূপ সরকারি উদ্যোগের ফলেই বাংলাদেশের বুকে বুদ্ধিবৃত্তির মূল ধারাটি আজ হিন্দু রেনেসাঁ আমলের রবীন্দ্র-বঙ্কিম-শরৎচন্দ্র কেন্দ্রীক কলকাতার বুদ্ধিবৃত্তিক ধারা। এখানে ইসলামের কোন স্থান নেই।
বাংলাদেশ শতকরা ৯১ ভাগ মুসলিমের হলে কি হবে, স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচীতে ইসলাম, কুর’আন, নবীজী (সা:)’র জীবনী পাঠের কোন স্থান নাই। কিন্তু রবীন্দ্র সাহিত্যের সাথে রবীন্দ্র-জীবনের খুঁটিনাটি পড়ানো হয়। স্কুলের পরীক্ষায় নবীজী (সা:)’র জীবনের উপর রচনা লিখতে বলা হয়না, কিন্তু বলা হয় রবীন্দ্রনাথের জীবনী ও তার সাহিত্যের উপর রচনা লিখতে। পাকিস্তান আমলে মাধ্যমিক স্কুলে “দ্বীনিয়াত” নামে যে বইটি পড়ানো হতো সেটিও শেখ মুজিব ক্ষমতায় বসার সাথে সাথে বিলুপ্ত করে দেয়। কারণ, ইসলামের চর্চা বাড়তে দিলে তো রবীন্দ্র চেতনাকে প্রতিষ্ঠা দেয়া যায় না। যে বইগুলি ইসলামের কথা বলে সেগুলি নিষিদ্ধ করাই হিন্দুত্ববাদী ভারত এবং ভারতসেবী বাঙালি ফ্যাসিস্টদের নীতি। এভাবে নিয়ন্ত্রিত করা হয় বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণে ইসলামী দর্শনের প্রবেশকে। বাঙালি মুসলিমের চেতনার অঙ্গণে এভাবেই প্রকটতর হয় ইসলামের শূণ্যতাটি। এখান থেকেই বাঙালি মুসলিমদের চেতনা রাজ্যে যেমন পচনের শুরু, তেমনি শুরু হয় দ্রুত নিচে নামা। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ভিক্ষার তলাহীন ঝুলি, দুর্বৃত্তিতে বিশ্বে পাঁচবার প্রথম, গণতন্ত্র হত্যা, ফ্যাসিবাদের নৃশংস ও অসভ্য তাণ্ডব, দেশজুড়ে ভোটডাকাতির বিশ্বরেকর্ড –এসবের মূল কারণ বাংলাদেশের জলবায়ু ও ভূ-প্রকৃতি নয়। অর্থনীতি বা কৃষিও নয়। বরং এরূপ নিরেট অসভ্যতার শুরুটি হয় শিক্ষাঙ্গণ থেকে ইসলামকে নির্বাসনে পাঠানোর পর। কারণ শিক্ষার সিলেবাস থেকে দ্বীনিয়াত বা কুর’আনের পাঠ বিলুপ্ত করার পরও ছাত্রদের বিবেক, নীতি-নৈতিকতা ও ঈমান সুস্থতা পাবে -সেটি কখনোই আশা করা যায়না। তখন বাড়বে দুর্বৃত্তি, লাম্পট্য ও বেঈমানি –সেটিই তো স্বাভাবিক। জাহিলিয়াত যুগের আরবগণ যে কারণে কন্যাদের জীবন্ত দাফন করতো এবং সন্ত্রাস, রাহাজানি, ব্যভিচারী, কলহ-বিবাদ ও গোত্রীয় যুদ্ধে ডুবে থাকতো –সেটির জন্যও আরবের আলো-বাতাস, জলবায়ু ও পানাহার দায়ী ছিল না। তার মূলে ছিল তাদের অসুস্থ ধর্মীয় দর্শন, দুষ্ট বুদ্ধিবৃত্তি এবং তা থেকে সৃষ্ট আত্মপচন ও মৃত বিবেক। এরূপ আত্মপচনের ফলেই আরবগণ নানারূপ নিষ্ঠুরতায় নেমেছিল। আত্মপচন নিয়ে বাঁচার মধ্যেও প্রবল নেশাগ্রস্ততা আছে। সে নেশাগ্রস্ততার কারণেই তারা নবীজী (সা:)’র আমলে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ইসলামের বিরুদ্ধে। সে আত্মপচনের মূলে ছিল আখেরাতের ভয়শূণ্য পৌত্তলিকতা। বাঙালি সেক্যুলারিস্টদের ঝোঁকও আজ রাবিন্দ্রীক পৌত্তলিকতার দিকেই। তাই মুর্তি এখন আর শুধু হিন্দুদের মন্দিরে শোভা পায় না, বাংলাদেশের রাস্তাঘাট, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও প্রতিষ্ঠানগুলিও ভরে উঠছে মুজিবসহ অন্যান্যদের মুর্তিতে। সেসব মুর্তির পায়ে ফুল দিয়ে পূজা-অর্চনাও হয়। এসবই একাত্তর-পরবর্তী চেতনা। এভাবেই বাংলার মুসলিম ভূমিতে দ্রুত প্রসার পাচ্ছে হিন্দুত্ববাদের। এবং তাদের লাগাতর যুদ্ধটিও ইসলামের বিরুদ্ধে।
সাহিত্যের শক্তি এবং চেতনায় মহামারি
মানুষের মাঝে দর্শনের মডেল ও চেতনার নির্মাণে সাহিত্যের শক্তি ও ভূমিকাটি বিশাল। কারণ সাহিত্যই দর্শনের বাহক। পানির পাইপ যেমন ঘরে ঘরে পানি পৌঁছায়, সাহিত্য তেমনি জনগণের চেতনায় দর্শন পৌঁছায়। সাহিত্য এভাবেই জনগণের চিন্তা, চরিত্র ও আচরণ পাল্টায়। তাই একটি দেশের মানুষ কি লেখে এবং কি পড়ে -তা থেকে জনগণের চেতনা, চরিত্র ও সংস্কৃতির পরিচয় মেলে। তাই যারা কুর’আন-হাদীস অধ্যয়ন করে এবং যারা রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গল্প ও গান পাঠ করে তাদের চেতনা কখনোই এক হয়না। তৎকালীন আরবের জনগণের বিবেক বিষাক্ত করা ও হত্যা করার কাজে কাজ করেছিল ইমরুল কায়েস ও তার সমগোত্রীয় কবিগণ। বাংলাদেশে সে অভিন্ন কাজটি করছে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর সমগোত্রীয় সাহিত্যিকেরা।
বাংলাদেশ এ চলতি শতাব্দীর শুরুর দশকে বিশ্ব মাঝে দুর্বৃত্তিতে পর পর ৫ বার প্রথম হয়েছিল। বিশ্বজুড়া এই কলংকের ইতিহাসের জন্য বাংলাদেশের আলো-বাতাস, জল-বায়ু, ভূ-গোল ও ভাত-মাছ দায়ী নয়। এতোটা নীচে নামতে হলে বিপুল সংখ্যক জনগণের চেতনা, চরিত্র বা বিবেকের অঙ্গণ মারাত্মক ভাবে অসুস্থ বা মৃত হতে হয়। দুর্বৃত্তি, লাম্পট্য, বজ্জাতি ও চরিত্রহীনতা স্রেফ পতিতালয়, জুয়ার আড্ডা, মদ্যশালা, চোরের গৃহ, ডাকাতপাড়া এবং ঘুষখোর-সূদখোর বজ্জাতদের বাড়িতে সীমিত থাকলেও সেরূপ রেকর্ড নির্মিত না। এজন্য সামরিক-বেসামরিক অফিস পাড়া, আদালত, পুলিশ দফতর, রাজনৈতিক দল, মিডিয়া, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলির মাঝেও সে দুর্বৃত্তি ও বজ্জাতির ব্যাপক চাষাবাদ লাগে। লাগে দেশবাসীর বিবেকে ভূমিতে প্রচণ্ড মহামারি। বাংলাদেশে তো সেটিই হয়েছে। এমন দেশেই গুম, খুন, অপহরণ, চুরিডাকাতি ও ধর্ষণের জোয়ার আসে। তখন সেঞ্চুরির উৎসব হয় ধর্ষণে। দেশ জুড়ে তখন মহা ধুম-ধামে ভোটডাকাতি হয়। এবং নির্মিত হয় ফ্যাসিবাদের নৃশংস রেকর্ড। দুষ্ট দর্শনের নাশকতা বিষাক্ত বিষের চেয়েও মারাত্মক। এজন্যই বিপুল সংখ্যক নর-নারীর বিবেক হত্যার ন্যায় নৃশংস নাশকতাটি ঘটে বিষাক্ত-দর্শন চর্চায়। বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গণে সে নাশকতা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের নীচে নামা এখনো থেমে যায়নি; বরং দিন দিন আরো বেগবান হচ্ছে।
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018