আনন্দবাজারের মিথ্যাচার,হাসিনার দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ ও প্রণব মুখার্জির আশ্বাস
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on February 27, 2019
- Bangla বাংলা, বাংলাদেশ
- No Comments.
আনন্দবাজারের মিথ্যাচার
ঢাকায় তিন দিনের হরতাল চলছে। সারাদেশে যুদ্ধাবস্থা,পুলিশ ও র্যাব নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে। গুলিতে নিহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। সারা দেশে লাশ আর লাশ। হরতালের কারণে মানুষ আটকা পড়েছে নানা স্থানে।ঘৃণা ও ক্ষোভে সারা দেশ জ্বলে উঠেছে। চরম আক্রোশে বিক্ষুব্ধ মানুষ এমন কি পুলিশের গাড়িতে আগুন দিচেছ।হামলা হচ্ছে থানায় ও টিএনও অফিসে।জ্বলছে দূরপাল্লার ট্রেন। রাতে পুলিশও রাস্তায় নামতে ভয় পাচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলকলেজ,স্থগিত হয়ে গেছে বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষা। খোদ ঢাকাতে হাজার হাজার পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা সত্ত্বেও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ভেঙ্গে পড়েছে। এমন হরতাল দেশে পূর্বে কখনো হয়নি। আল –জাজিরাসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ছবি দেখাচ্ছে ঢাকার জনবিরল ফাঁকা রাস্তা ও বন্ধ দোকান-পাট। সড়কে পুলিশের সাঁজোয়া গাড়ি ছাড়া কোন গাড়ি চলছে না। একই রূপ চিত্র দেখাচ্ছে বহু দেশী টিভি চ্যানেল।
কিন্তু কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় বাংলাদেশের সে চিত্র প্রকাশ পায়নি।ঢাকার জীবনযাত্রা ও যানবাহন চলাচলে যে পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে সেটিও তাদের নজরে পড়েনি। দেশটিতে সব কিছুই যেন ঠিকঠাক। এমন একটি চিত্রই আনন্দবাজার পত্রিকা তুলে ধরেছে ভারতবাসী বিশেষ করে পশ্চিম বাংলার জনগণের সামনে। তেসরা মার্চের হরতাল নিয়ে ৪/৩/১৩ তারিখের দৈনিক আনন্দবাজার লিখেছে,“রাস্তায় গাড়ির স্রোত। দোকান পাট খোলা। শেয়ার বাজার আর ব্যাংকে লেনদেন চলছে আর পাঁচটা দিনের মতই। জামায়াতে ইসলামির ডাকা হরতালের ছবিটা এ রকমই।” বাংলাদেশের যারা খবর রাখেন তারা কি আনন্দবাজারের এ সংবাদের সাথে এক মত হতে পারেন? মিথ্যাচার আর কাকে বলে? সত্যগোপন আর মিথ্যা প্রকাশে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকাটি ঢাকার আওয়ামী ঘড়ানার জনকন্ঠ,সমকাল,কালের কন্ঠ,ভোরের কাগজ,প্রথম আলো,ডেইলি স্টারের ন্যায় পত্রিকাগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে।
দৈনিক আনন্দবাজার কোন তুচ্ছ দৈনিক নয়।শুধু পশ্চিম বাংলার নয়,এটি সমগ্র ভারতের প্রথম সারির পত্রিকা।কিন্তু এই কি পত্রিকার মান? বাংলাদেশ প্রসঙ্গে খবর দিতে গিয়ে পত্রিকাটি যে কতটা বিবেকশূণ্য ও পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়ে হরতাল নিয়ে উপরের খবরটি হলো তার নমুনা। তারা সাংবাদিকতার ন্যূনতম মান এবং খবর প্রকাশে সামান্যতম সততারও পরিচয় দেয়নি। খবরের সুস্থ্যতা হলো তার সত্যতা। অসত্য খবর প্রকাশের অর্থ দেশবাসীকে অন্ধকারে রাখা। সংবাদপত্রের উপর দেশবাসীর ন্যায্য পাওনা আছে,তেমনি অধিকারও কাছে। সেটি পত্রিকার পাতায় সঠিক খবর পাওয়ার। ভেজাল বা মিথ্যাদূষন সর্বক্ষেত্রেই দূষনীয়। বাঁচার স্বার্থে ভেজালমুক্ত খাবার ও ঔষধ যেমন অপরিহার্য,তেমনি ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে সঠিক মূল্যায়ান ও সিদ্ধান্তের জন্য তেমনি অপরিহার্য হলো সঠিক খবর ও সংবাদ। তাই মিথ্যাচার দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা সভ্যসমাজে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। হযরত আলী (রাঃ)বর্নীত নবীজী (সাঃ)র হাদীসঃ “মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় পাপ হলো মিথ্যা বলা”। সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে সে মিথ্যাটি হলো অসত্য খবর সংবাদ পরিবেশনা করা। জনগণের সাথে এভাবেই তারা গাদ্দারি তথা বিশ্বাসঘাতকতা করে। আওয়ামী ঘরানার পত্রিকাগুলোর ন্যায় আনন্দবাজারও তেমনি এক অপরাধ করেছে হরতাল নিয়ে ডাহা মিথ্যা খবর পরিবেশনা করে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আনন্দবাজারের নিজস্ব একটি পক্ষ আছে। সেটি বাংলাদেশের ইসলাম বিরোধী পক্ষ। তসলিমা নাসরিনের ন্যায় ব্যক্তিগণ ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বই লিখলে তাদের মনপ্রাণ আনন্দে ভরে উঠে। সেগুলি তারা ছাপিয়ে বিপুল ভাবে প্রকাশের দায়িত্ব নেয়। তসলিমা নাসরিনের বই ছেপেছে তাদেরই প্রকাশনি। আনন্দবাজার গ্রুফের পক্ষ থেকে তাকে পুরস্কারও দেয়া হয়েছে। মুসলমানদের উপর যেখানেই হামালা,ইসলামের বিরুদ্ধে যেখানেই কুৎসা সেখানেই আনন্দবাজার গোষ্ঠির পুলক। ফলে বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের ফাঁসি দেয়ার দাবী নিয়ে শাহবাগে যে আয়োজন হচ্ছে তাতে তাদের ফুর্তি দেখে কে? আনন্দে তারা ডুগডুগি বাজানো শুরু করেছিল। এতে শাহবাগের মোড়ে ইসলামের দুষমন মুরতাদদের সে উৎসবকেই তারা আসল বাংলাদেশ মনে করেছিল। কিন্তু সে আনন্দে প্রচন্ড বাঁধা পড়ে যখন মহান আল্লাহতায়ালা ও মহান রাসুলকে গালি দেয়া মুরতাদদের বিরুদ্ধে দেশের তা্ওহিদী জনতার জেগে উঠা দেখে। হতভম্ব হয়ে যায় জামায়াতের ডাকে দেশব্যাপী হরতাল হতে দেখে। সেটি তারা ভাবতেই পারিনি। আজও সেটি হরতালের সত্যতা তারা বিশ্বাস করতে পারছে না। কারণ ১৬ কোটি মানুষের দেশে হরতাল করা যা তা ব্যাপার নয়। এর আগে কোন দলই সেটি একক ভাবে পারেনি। অতীতে হরতাল হয়েছে নানা দলের জোটবদ্ধ হয়ে ডাকায়। হরতালের সফলতা নিয়ে আওয়ামী শিবিরেও দ্বিমত নাই। এমন কি তাদেরও অনেকে বিস্মিত হয়েছে এরূপ কঠোর হরতাল হতে দেখে। রাস্তায় গাড়ি ঘোড়া নেই,দুরপাল্লার কোন বাস চলছে না। স্কুল-কলেজ বন্ধ,দোকান-পাট বন্ধ,অফিসে খালি খালি ভাব সেটিই এসবের চিত্র। জামায়াতের এ হরতাল বন্ধে সরকার হাজার হাজার পুলিশ ও র্যাব নামিয়েছে। কোন কোন স্থানে সেনাবাহিনী নামিয়েছে। কিন্তু তাতেও হরতাল বন্ধ হয়নি। প্রশ্ন হলো, জনগণের সমর্থণ না থাকলে কি এরূপ হরতাল জামায়াতের একার পক্ষে হরতাল সম্ভব হতো?
আনন্দবাজারের ধৃষ্টতা
শুধু পক্ষপাতদুষ্টতাই নয়,বাংলাদেশের প্রতি কদর্যতাপূর্ণ প্রকাণ্ড ধৃষ্টতাও ফুটে উঠেছে আনন্দবাজার পত্রিকার পৃষ্ঠায়। পত্রিকাটি অতি বিক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশে সফররত ভারতীয় প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সাথে খালেদা জিয়ার সাক্ষাত বর্জনে। হরতাল যে ব্যর্থ হয়েছে, ঢাকার যানবাহন চলাচল ও জীবনযাত্রার উপর এ হরতাল কোন প্রভাবই ফেলেনি সে মিথ্যাকাহিনী রচনার পর আনন্দবাজার লিখেছে,“আর এ হরতালকে ঢাল করে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করে দিলেন বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া।” আনন্দবাজারের রিপোর্টটি পড়ে বুঝা যায় প্রণব মুখার্জির সাথে খালেদা জিদা সাক্ষাত না করায় তারা কতটা রেগেছে। তাদের সে রাগটি গোপন থাকেনি। রাগের মাথায় মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। ফলে তারা দেখতে পারেনি, এবং বুঝতেও পারিনি বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা। সে সাথে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অতি অশালীন অভদ্র কথাও লিখেছে। আনন্দ বাজার লিখেছে, খালেদা জিয়া নাকি একরকম ঝুলোঝুলি করেই গত নভেম্বরে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ আদায় করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রতি আনন্দবাজারের তাচ্ছিল্যতা যে কতটা প্রকট সেটি কি এর পরও গোপন থাকে? তারা ভূলে যায়,বাংলাদেশ সিকিম,ভূটান নয়,১৬ কোটি মানুষের একটি স্বাধীন দেশ। প্রণব মুখার্জি কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী? ভারতের রাজনীতিতে তিনি কি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী ব্যক্তি? বাংলাদেশে যেমন জিল্লুর রহমান,ভারতে তেমনি প্রণব মুখার্জি। প্রশ্ন হলো,বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং দুইবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দিল্লি সফলে গিয়ে প্রণবমুখার্জির মত একজন ক্ষমতাহীন পোষাকি রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতে ঝুলোঝুলি করতে হবে কেন? প্রণব মুখার্জির কি সামর্থ আছে কিছু দেয়ার? তিনি কি পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যাণার্জির চেয়েও শক্তিধর? তার মত ক্ষমতাহীন এক ব্যক্তি বাংলাদেশে সফরে আসলে খালেদা জিয়া বা অন্য কোন নেতাকে ছুটে যেতে হবে চরণধুলি নিতে, সেটিই বা কেমন কথা? অথচ আনন্দবাজার সেটিই চেয়েছিল। সেটি হয়নি দেখে তারা তেলে বেগুণে জ্বলে উঠেছে।
প্রণব মুখার্জির হাসিনাপ্রীতি
প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশের প্রতি ভালবাসার টানে বাংলাদেশে আসেননি। এসেছেন হাসিনার টানে। হাসিনার বর্তমান অবস্থা তার পিতার মতই। ভারত ও সোভিয়েত রাশিয়া ছাড়া শেখ মুজিবের কোন বন্ধু ছিল না। অধিকাংশ মুসলিম দেশ তাকে স্বাধীন শাসক রূপে বিশ্বাস করতো না,চীনও বিশ্বাস করেনি। ফলে তারা বাংলাদেশকেও স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে স্বীকৃতি দেয়নি। ইসলামপন্থিদের নির্মূলে নামায় হাসিনার বিরুদ্ধেও আজ শুধু বাংলাদেশে নয়,বিদেশেও মানুষ বিক্ষুব্ধ। পত্রপত্রিকা ও টিভির কারণে দুনিয়াটা অতি ছোট হয়ে গেছে। ঢাকায় মুসল্লিকে দাড়ি ধরে টানলে সেটি বিশ্বময় খবর হয়।বাংলাদেশ অলিম্পিকে বা ওয়ার্ল্ডকাপে সোনা জিতে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায়নি, কিন্তু বহুদেশে খবরের প্রথম সারিতে স্থান পেয়েছে মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে ফাঁসীর হুকুম শুনিয়ে। ফলে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে নেমেছে ইস্তাম্বুল,কায়রো,লন্ডন,প্যারিসসহ বিশ্বের নানা নগরে। এমনকি খোদ কলকাতাতেও বহু হাজার মানুষ প্রতিবাদে রাজপথে নেমে এসেছে। আনন্দবাজার কি সে খবর রাখে না? ফলে বাংলাদেশে হরতাল হবে,বিক্ষোভ হবে সেটি কি এতটাই অসম্ভব? পুরা বাংলাদেশ কি শাহবাগ চত্ত্বর? শাহবাগ চত্ত্বরে জমায়েত বিভ্রান্ত নাস্তিকেরাই বাংলাদেশের একমাত্র জনগণ নয়।বাংলাদেশ হাজার হাজার মসজিদ-মাদ্রাসা,লক্ষ লক্ষ আলেম-উলামা ও কোটি কোটি মুসল্লির দেশ। সেদেশে আলেমদের ফাঁসি হতে থাকবে এবং সাধারণ মানুষ সেটি নীরবে মেনে নেবে সেটি আনন্দবাজার বুঝলো কি করে?
প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশে এসেছে শুধু জিদের বশে নয়,গরজের টানেও। শুধু হাসিনাকে বাঁচানো নয়,ভারতের স্বার্থ বাঁচানোটি তাদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ।সে জন্যই তিনি ছুটে এসেছেন। তিনি জানতেন,বাংলাদেশ জ্বলছে।গ্রামে গঞ্জে অগণিত মানুষের লাশ পড়ছে।সরকার ব্যস্ত পরিকল্পিত একটি গণহত্যায়। যে বাড়িতে আগুণ লাগে সে বাড়ির মানুষের মেহমানদারির সময় থাকে না,তাতে তাদের রুচিও থাকে না। সেটি জেনে শুনেও কেন প্রণব বাবু বাংলাদেশে বেড়াতে আসলেন? বলা হচ্ছে,তিনি এ সফরে তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি নড়াইলেও যাবেন। কথা হলা এটি কি নায়ারে আসার সময়? দেশের বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নির্মূলে সরকার যেখানে জেলজুলুম,হত্যা,হামলা ও মামলার ন্যায় নৃশংস বর্বরতা নিয়ে এগুচ্ছে সেখানে কি বিরোধী দলীয় নেতাদের মেহমানদারিতে মন থাকে? অথচ প্রণব বাবু তারপরও এসেছেন। তবে কেন এসেছেন তারও ব্যাখা দিয়েছেন। বলেছেন,তিনি না আসলে মৌলবাদীরা বিজয়ী হতো। তাতে তাদের সাহস বেড়ে যেত। তার এমন কথার অর্থ দাঁড়ায়,তিনি বাংলাদেশে এসেছেন ইসলামপন্থিদের মনবল ভাঙ্গতে, সে সাথে সাহস দিতে হাসিনা সরকারকে। তাঁর এরূপ কথার মধ্যে অবশ্যই যুক্তি আছে। এটি যে তার মনের কথা, সেটিও মেনে নেয়া যায়। তার এ সফরে হাসিনা আর সাহস পেয়েছে সেটিও নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করা যায়। এ সফরের মারফতে বিশ্ববাসীর সামনে তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন,বাংলাদেশের পরিস্থিতি অতি স্বাভাবিক।এত হরতাল,এত যে মানুষ হত্যা,জনজীবন যে এতটা বিপন্ন –এসবই মিথ্যা। দৈনিক আনন্দবাজার তো সেটিই লিখেছে। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতবাসীকে এবং সে সাথে বিশ্ববাসীকে আনন্দবাজার তো এমন একটা ধারণাই দিতে চায়।
দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ ও জিহাদ
হাসিনার সাহস বাড়াতে গিয়ে প্রণব বাবু আরো বলেছেন,একাত্তরের ন্যায় এবারও ভারত তাঁর পাশে থাকবে। এর অর্থ সুস্পষ্ঠ। প্রণব বাবুর এ কথার অর্থ দাঁড়ায়,একাত্তরের ন্যায় একটি যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। একাত্তরে যেমন ভারতের সৈন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকেছিল,এবারও ঢুকবে। তবে তো ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ঠিকই বলেছেন। ১৯৭১য়ের যুদ্ধে ভারতের প্রধানতম শত্রু পাকিস্তান ভাঙ্গার কাজটি সমাধা হলেও তাতে বাংলাদেশ ভারতে মিশে যায়নি, ফলে অখণ্ড ভারত নির্মাণের লক্ষ্যটিও পূরণ হয়নি। তাই অসমাপ্ত রয়ে গেছে সে যুদ্ধ। ফলে বঙ্গীয় এ ভূ-খণ্ডে ভারতের জন্য আরো যুদ্ধ বাঁকি। সে কথাটাই স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার শ্রী সন্দীপ চক্রবর্তি। ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৯/১২/১২ তারিখে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের আয়োজিত এক সমাবেশে হুশিয়ারি দিয়ে তিনি ঘোষণা করে দিয়ে বলেছেন,“এখনও অনেক যুদ্ধ বাঁকি।” সে যুদ্ধে কাদের সাথে তাদের সহযোগিতা হবে এবং কাদের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ পরিচালিত হবে সেটিও তিনি উল্লেখ করেছেন। সে হুশিয়ারিটি বিশ্বাসযোগ্য করতে তিনি বলেছেন, এটা তাঁর নিজের কথা নয়, ভারতের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কথাও। -(সুত্রঃ দৈনিক আমার দেশ, ২০/১২/১২)।
ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে একাত্তরের প্রসঙ্গ টেনে এনে এবারের যুদ্ধে হাসিনার প্রতি সমর্থণ ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে কি প্রমাণিত হয় না,ভারতীয় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সন্দীপ চক্রবর্তি যা বলেছেন তা মিথ্যা বলেননি। সন্দীপ বাবু বলেছিলেন, বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের যুদ্ধ একাত্তরে শেষ হয়নি,আরো যুদ্ধ বাঁকি আছে। এদিকে হাসিনা দ্বিতীয় মুক্তিযু্দ্ধের ঘোষাণাও দিয়েছেন এবং সে যুদ্ধের প্রথম শহীদ নিহত ব্লগার রাজীব সে কথাও তিনি বলেছেন। তারা যে ইসলামের পক্ষের শক্তি তারা সে কথা কোন দিনও মুখে আনেননি। তারা তো সে সব লোক যারা সংবিধান থেকে আল্লাহর প্রতি আস্থার কথা সরিয়েছেন। তারা তো চান ইসলামের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে। তাদের লক্ষ্যটি তাই সুস্পষ্ট। ফলে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিরুদ্ধে হাসিনা ও তার মিত্রদের পক্ষ থেকে এটি এক গুরুতর ঘোষণা। কার্যতঃ যুদ্ধটি তারা রীতিমত শুরুও করে দিয়েছেন। পুলিশ, র্যাব, দলীয় ক্যাডারদের পাশে স্থানে স্থানে সেনাবাহিনীও নামানো হয়েছে। চারিদিকে অজস্র লাশ পরছে। এরপর আসছে এ যুদ্ধে ভারতী সাহায্যের প্রতিশ্রুতি। অতএব এ যেন এক ভয়ংকর রণপ্রস্তুতি। এ যুদ্ধটি কাদের বিরুদ্ধে সেটিও গোপন নাই। তারা চায় ইসলামের রাজনীতি ও ইসলামের পক্ষের শক্তির নির্মূল। অথচ ইসলামের রাজনীতিই তো মুসলমানের রাজনীতি। মুসলমানকে কি ইসলামের রাজনীতি থেকে আলাদা করা যায়? তার ধর্মকর্ম যেমন ইসলামের বিধান ছাড়া চলে না,রাজনীতিও চলে না। ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার অর্থ মুসলমানের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। মুসলমানের রাজনীতি তো স্রেফ ভোটদানের রাজনীতি নয়,সেটি তো আল্লাহর শরিয়ত প্রতিষ্ঠার পথে অর্থদান,শ্রমদান,সময়দান এমন কি প্রাণদানের জিহাদ। তাই প্রশ্ন হলো,হাসিনার দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ ও তাঁর মিত্র ভারতের হামলার মুখে বাংলাদেশের মানুষ কি নীরবে আঙ্গুল চুষতে থাকবে? হাসিনার সে আশা যে পূর্ণ হবার নয় সেটি বাংলাদেশের তৈহদী জনতা ইতিমধ্যেই শতাধিক সংখ্যায় শাহাদত পেশ করে প্রমাণ করেছে।
জেগে উঠেছে বাংলাদেশ
ফুঁসে উঠেছে বাংলাদেশের অতি দূরের গ্রাম-গঞ্জের মানুষ। কাফনের কাপড় পড়ে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। হাসিনার বিরুদ্ধে ঝাঁটা নিয়ে নেমেছে মহিলারা। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের নামে ইসলামপন্থিদের নির্মূলের যুদ্ধ শুরু হওয়ায় এখন ইসলামন্থিগণও বসে নাই। তাদের পক্ষ থেকেও জিহাদ শুরু হয়েছে। আগ্রাসী ভারত ও তার বাংলাদেশী চরেরা নিশ্চয়ই সেটি বুঝতে পেরেছে। এজন্যই বাংলাদেশের মাটিতে প্রণব বাবুরা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি নিয়ে দ্রুত ছুটে এসেছেন। তবে এটাও সত্য,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা সোভিয়েত রাশিয়ার চেয়ে ভারত শক্তিশালী নয়। আর বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষও আড়াই কোটি আফগানদের চেয়ে দুর্বল নয়।ফলে আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাশিয়া ও ন্যাটো বাহিনীর যা অবস্থা হয়েছে তার চেয়েও লজ্জাজনক অবস্থা অপেক্ষা করছে ভারতের জন্য। কারণ মুসলমান যখন নাস্তিক,মুনাফিক ও পৌত্তলিক কাফের তথা ইসলামের বিপক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদ শুরু করে তখন তারা একাকী জিহাদ করে না। তাদের সাথে থাকে মহান আল্লাহর অগণিত ফেরেশতারা। আর এটা ঈমানদারের মৌল বিশ্বাস। সে বিশ্বাসটুকু না থাকলে কি কাউকে মুসলমান বলা যায়? তাই আজকের বাংলাদেশের চেয়ে দ্বিগুণ বাংলাদেশ দখলে ইখতিয়ার মহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির ১৭ জনের বেশী সৈন্য লাগেনি। বাংলাদেশের ১৫ কোটি মুসলমানের সম্মিলিত শক্তি কি সে ১৭ জন সৈন্যের চেয়েও কম? ৫/৩/১৩
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018