বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপরাধীদের বিজয় এবং ভোট-ডাকাতিতে বিশ্বরেকর্ড
- Posted by Dr Firoz Mahboob Kamal
- Posted on March 9, 2019
- Bangla Articles, বাংলাদেশ
- No Comments.
চোর-ডাকাতেরাও যখন নেতা হয়!
প্রতি সমাজে যেমন ভাল মানুষ থাকে, তেমনি ভয়ানক চোর-ডাকাতও থাকে। তেমনি সত্য ধর্মমত যেমন থাকে, তেমনি মিথ্যা অপধর্মও থাকে। তাই শুধু বিষাক্ত কীট ও হিংস্র জন্তু-জানোয়ারদের চিনলে চলে না, সমাজের চোর-ডাকাতদেরও চিনতে হয়। থাকতে হয় মিথ্যা থেকে সত্যকে চেনার সামর্থ্য। মহান আল্লাহতায়ালা শুধু নামায-রোযার ন্যায় ইবাদত দেখেন না। দেখেন, ঈমানদারের মিথ্যার বিরুদ্ধে ও সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর সে সামর্থ্যটিও। সে সামর্থ্যের মধ্যেই প্রকাশ পায় ব্যক্তির সত্যিকারের ঈমান, তাকওয়া ও প্রজ্ঞা। সে সামর্থ্যটি না থাকলে দুনিয়ার জীবনে সত্যের পক্ষ নেয়া যেমন অসম্ভব, তেমনি অসম্ভব হলো আখেরাতে জান্নাতের ধারে-কাছে যাওয়া। এরাই যুগে যুগে স্বৈরাচারি দুর্বৃত্তদের সকল কুকর্মের সেপাহি হয়। হজ্ব-যাকাত এবং সারা জীবন নামায-রোযা আদায় সত্ত্বেও যারা ইসলামের শত্রুপক্ষের বিজয়ে ভোট দেয়, অর্থ দেয় ও যুদ্ধ করে পরকালে তাদের জন্য যে কতবড় বিপক্ষ অপেক্ষা করছে সেটি বুঝা কি এতই কঠিন। এটি তো মিথ্যার মাঝে সত্যকে চেনার ভয়ানক সামর্থ্যহীনতা। অথচ সে সামর্থ্যটুকু থাকার কারণে এমন অনেকেই জান্নাতে স্থান পাবে যারা জীবনে এক ওয়াক্ত নামায বা এক দিন রোযা আদায়ের সুযোগও পাননি। ফিরাউনের দরবারে হযরত মূসা (আঃ)র সাথে প্রতিদ্বন্দিতা দিতে এসে যে কয়েক জন যাদুকর মূসা (আঃ)র রবের উপর ঈমান এনে শহীদ হয়েছিলেন –তাদের উপর যে মহান আল্লাহতায়ালা কতটা খুশি হয়েছেন সেটি তো পবিত্র কোরআনে বার বার ঘোষিত হয়েছে। সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে তাঁরা ছিলেন নির্ভীক; প্রস্তুত ছিলেন প্রাণ দেয়ার জন্য। যাদের প্রস্তুতিটি জান্নাতের জন্য তাদের কোরবানি তো এরূপ হওয়াই স্বাভাবিক। মানব ইতিহাসের অতি শিক্ষণীয় সে অবিস্মরণীয় ঘটনাটির রিপোটিং করেছেন মহান আল্লাহতায়ালা খোদ নিজে এবং চিরস্থায়ী করেছেন পবিত্র কোরআনে –যাতে মানুষ যুগ যুগ তা থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
মিশরের ফিরাউন তো মরে গেছে বহু হাজার বছর আগে, কিন্তু ফিরাউনের আদর্শ নিয়ে বহু ফিরাউন আজও বহু দেশে বেঁচে আছে। ঈমানদারের দায়িত্ব হলো এসব ফিরাউনদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। এক্ষেত্রে কাপুরুষতা চলে না। তবে আজকের ফিরাউনগণ ক্ষমতায় আসে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে। তাই আধুনিক ফিরাউনদের পরাজিত করতে হলে দাঁড়াতে হয় তাদের ভোট-ডাকাতির বিরুদ্ধে। নইলে কষ্টে অর্জিত অর্থ যেমন ঘরে থাকে না, তেমনি ইজ্জত আবরু, মানবিক মূল্যবোধ এবং মৌলিক অধিকারটুকুও বাঁচে না। কারণ, ভোট ডাকাতদের টার্গেট শুধু রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে নেয়া নয় এবং অর্থলুটও নয়, বরং তাদের স্ট্রাটেজী ধর্মীয় মূল্যবোধ, নাগরিক অধিকার, সামাজিক সম্প্রীতি ও সুস্থ্য রাজনীতি বিনাশ। কারণ, নর্দমার কীটের নয় চোর-ডাকাতগণ শুধু কলুষিত মন নিয়ে বাঁচে না, বাঁচতে চায় কলুষিত মূল্যবোধ, সমাজ ও রাষ্ট্র নিয়েও। কারণ সমাজে সুস্থ্য মূল্যবোধ বাঁচলে তাদের ইজ্জত বাঁচে না। ফলে, যেদেশে চোর-ডাকাত ও ভোট ডাকাতদের সংখ্যা বাড়ে, সেদেশে শুধু চুরি-ডাকাতি ও নারীধর্ষণই বাড়ে না, বিপুল ভাবে বাড়ে মিথ্যার প্রচার, বাড়ে দুর্নীতি এবং প্রবলতর হয় মৌলিক অধিকার হননের রাজনীতি। এবং বিলুপ্ত হতে থাকে ধর্মীয় চেতনা।
রাষ্ট্রজুড়ে ডাকাতির বিশাল বিশাল ক্ষেত্র আবিস্কৃত হওয়ায় চোর-ডাকাতদের নীতিতেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। বড় বড় ডাকাতগণ এখন আর গ্রামগঞ্জে গিয়ে লোকদের ঘরে ঘরে হানা দেয় না। কারণ মানুষের ঘরে আর কত টাকা থাকে? তাদের তো চাই কোটি কোটি টাকা। আর সে বিশাল অংকের টাকা থাকে ব্যাংকে, শেয়ার মার্কেটে, এবং সরকারের তহবিলে। ফলে তাদের গভীর ক্ষুধা কেবল রাষ্ট্রীয় অর্থ ভাণ্ডারই মেটাতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ভাণ্ডারের উপর ডাকাতি করতে হলে তো হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চাই। ফলে ডাকাতগণ এখন আর ডাকাত দল গড়ে না, বরং রাজনৈতীক দলে যোগ দেয়। এবং সেটি সরকারি দলে। এরই ফল হলো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা সরকারি দলের নেতা-নেত্রী তাদের কেউই মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, নবাব সলিমুল্লাহ, শেরে বাংলা ফজলুল হক, শহীদ সহরোওয়ার্দী ও নবাব খাজা নাজিমুদ্দীনের ন্যায় পেশাদার আইনবিদ বা জমিদার না হয়েও বিপুল সম্পদের মালিক। রাজনীতিতে কিছু দেয়ার বদলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাদের নেয়ার অংকটি যে কতটা বিশাল তা তাদের ঘরবাড়ি ও সম্পদের দিকে নজর দিলেই বুঝা যায়। তাদের জন্য অভিজাত আবাসিক প্রকল্পের জমি জোগাতে ডাকাতি হয় শুধু ঢাকা শহরেই নয়, বরং দেশের অন্যান্য বড় শহরের আদিবাসিদের জমির উপর। অল্প মূল্যে জমি কেড়ে নিয়ে তাদের উদ্বাস্তু করা হয়। ১৯৭১ য়ে এদের হাতেই ডাকাতি হয়েছিল তিন-চার লাখ অবাঙালীর ব্যবসা-বাণিজ্য, ঘরবাড়ি ও সহায়-সম্পদের উপর। সে বিশাল ডাকাতির জন্য একজনেরও আদালতে উঠতে, কারো কোন শাস্তিও হয়নি। বাংলাদেশে ডাকাতদের পুরস্কৃত করা এভাবেই রাজনীতির সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
রাজনীতি স্বৈর-শাসন ও ভোট-ডাকাতির
স্বৈরাচার ও ভোট-ডাকাতির রাজনীতি সব সময়ই একত্রে চলে। কারণ, ভোট-ডাকাতির রাজনীতি ছাড়া কখনোই স্বৈরাচার বাঁচে না। ভোট-ডাকাতির রাজনীতি বাঁচাতে প্রতিটি স্বৈরাচারি শাসকই তাই সমাজের চোর-ডাকাতদের দলে টানে। তারা জানে, ভাল মানুষদের দলে টেনে ডাকাতির রাজনীতি বাঁচানো যায় না; কারণ, তারা কখনো তাদের দলের সৈনিক হয়না। বরং মানুষদের কারণে ডাকাতির খবর অন্যরা জেনে ফেলে। অপর দিকে সরকারি দলে যোগ দেয়ায় চোর-ডাকাতদের লাভটা বিশাল। বাজেটে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার যে বরাদ্দ দেয়া হয়, তাতে থাকে তাদেরও অংশ। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পালার চেয়ে এসব চোর-ডাকাত প্রতিপালন করাই স্বৈরাচারি সরকারে কাছে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই হলো স্বৈরাচারি শাসকদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য লড়াকু সেপাহি, রাজপথে এরাই সরকার-বিরোধীদের পেটাতে অস্ত্র হাতে খাড়া হয়। কারণ, এখানে স্বার্থ শুধু ভোট-ডাকাত সরকারের নয়, তাদেরও। কারণ, স্বৈরাচারি সরকার বাঁচলে সরকারি দলের চুরি-ডাকাতিতে তাদের প্রাপ্তির অংকটিও বাড়ে। এ জন্যই প্রতিটি সরকারি প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের মধ্যে থাকে এসব চোর-ডোকাত প্রতিপালনে কোটি কোটি টাকার অলিখিত অর্থ বরাদ্দ থাকে। প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে প্রতিটি ঠিকাদারদের দলের পক্ষ থেকে চিহ্নিত প্রাপককে তার প্রাপ্য অংকটি প্রথমে পরিশোধ করতে হয়। এভাবেই তাদের জুটে বিশাল অর্থপ্রাপ্তি। এ কারণেই কোন বড় চাকুরি বা বিশাল কোন ব্যবসা না করেও এসব রাজনৈতীক ডাকাতগণ বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাইরে বড় বড় বাড়ি, গাড়ি ও কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়। হাজার এরূপ চোর-ডাকাতদের নামে বিপুল অর্থ জমা হচ্ছে বিদেশী ব্যাংকে।
অথচ ডাকাতির এরূপ সুযোগ অরাজনৈতীক ডাকাতদের থাকে না। রাতের আঁধারে গ্রামগঞ্জে ডাকাতি করতে গিয়ে তাদের দীর্ঘ মাঠঘাট পাড়ি দিতে হয়। গ্রামবাসীর সম্মিলিত হামলায় অনেক ডাকাতের প্রাণও যায়। কিন্তু সরকারি দলের ডাকাতদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি ভিন্ন। সরকার দলীয় হওয়ায় খোদ পুলিশ, সরকারি প্রশাসনের কর্মচারি, সরকারি উকিল ও আদালেতর বিচারকগণও তাদের সমীহ করে চলে। ন্যায্য অর্থে বাড়ি নির্মাণ করেও অন্যদের যেখান আয়কর বিভাগের টার্গেট হতে হয়, সরকারি দলের চোর-ডাকাতদের সে ভয় থাকে না। এরূপ বিশাল অর্থপ্রাপ্তি ও সরকারি সুযোগ-সুবিধার কারণে বিপ্লব এসেছে চোর-ডাকাতদের জীবনে। ছিঁচকে চোরও পরিণত হয়েছে ভয়ংকর ডাকাতে। স্বৈরাচারি রাজনীতিতে অতি দ্রুত দুর্বৃত্তায়ন ঘটে তো একারণেই। মূলতঃ এ কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশকে হারিয়ে দুর্বৃত্তিতে পর পর ৫ বার প্রথম হতে পেরেছে। অথচ আজ থেকে শত বছর আগে বাঙালীর এমন নৈতীক পচন নিয়ে আশংকা করাও অসম্ভব ছিল। দেশে দেশে হাজার হাজার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মসজিদ-মাদ্রসা গড়েও এ নৈতীক পচন রোধ করা যাচ্ছে না। কারণ, রাজনীতির মধ্য দিয়ে দুর্বৃত্তায়নের যে সুনামী সৃষ্টি হয় সে রুখার সামর্থ্য কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থাকে? মানব ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহামম্দ (সাঃ) তাই রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে নিয়েছেন। দুর্বৃত্তেদর নির্মূলে ও সুনীতির প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের অবকাঠামোকে ব্যবহার করেছেন। অথচ আজকের মুসলিমগণ বেঁচে আছে নবীজীর সে মহান সুন্নতকে বাদ দিয়ে। রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ দুর্বৃত্ত ভোট-ডাকাতদের হাতে ছেড়ে দিয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছেন মসজিদের চার দেয়ালের মাঝে। এবং নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন আশেক রাসূল (সাঃ) রূপে! সিরাতুল মুস্তাকীম থেকে আজকের মুসলিমদের এ হলো সবচেয়ে বড় বিচ্যুতি।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়ার মাত্র দুটি উপায়ঃ হয় সামরিক শক্তি, নয় ভোটের শক্তি। সেনাবাহিনীর লোকেরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছিনতাই করতে ব্যবহার করে সামরিক শক্তি –যেমন সেনাপ্রধান এরশাদ করেছিল একটি নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদ করতে। ছিনিয়ে নেয়া ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে তাকে নামতে হয়েছিল লাগাতর ভোট ডাকাতিতে। এভাবে দীর্ঘ ১১ বছর সে ক্ষমতায় থাকে। তাতে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে যেমন সে নিজে, তেমনি তাঁর দুর্বৃত্ত সাঙ্গপাঙ্গগণ। তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভোট ডাকাতির শুরু স্বৈরাচারি এরশাদের হাতে হয়নি, হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবের হাতে। শেখ হাসিনা তাঁর পিতার সে নীতিকেই আরো শক্তিশালী করেছে। শেখ মুজিবের শাসনামলে তাঁর দলের বাইরে থেকে কারো পক্ষে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়াটা অসম্ভব ছিল। এমন কি ১৯৭০য়ের নির্বাচনেও তার দলীয় সন্ত্রাসীরা ঢাকার পল্টন ময়দানে অন্য কোন দলের কোন নির্বাচনি জনসভা করতে দেয়নি। বিরোধীদের জনসভা ভাঙ্গতে তার দলের কর্মীগণ নিরীহ মানুষ খুনও করেছে।
বহুদলীয় নির্বাচনে যেহেতু পরাজয়ের ঝুঁকি থেকেই যায়, সেটি ঝুঁকি বিলুপ্ত করতেই শেখ মুজিব সকল বিরোধী দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশালের জন্ম দেন। এভাবে উদ্যোগ নেন আজীবন ক্ষমতায় থাকার। পিতার সে পথ ধরেই এখন আজীবন ক্ষমতার থাকার স্বপ্ন দেখছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে আজীবন ক্ষমতা রাখার সে শখটি সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের জনৈক শীর্ষ নেতা। তবে শেখ হাসিনা তাঁর পিতার ন্যায় বিরোধী দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল প্রতিষ্ঠার পথ ধরেননি। তাঁর স্ট্রাটেজী ভিন্ন; তিনি দল নিষিদ্ধ না করে নিষিদ্ধ করছেন প্রধান বিরোধী দলের নেতাদের নির্বাচনে দাঁড়ানোকে। লক্ষ্যণীয় হলো, বাংলাদেশে যতবারই নির্দলীয় সরকারেরর অধীনে নির্বাচন হয়েছে আওয়ামী লীগ সেসব নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ৩৫% ভাগেরও কম। ফলে জোট বাঁধতে হয়েছে ডজনের বেশী দলের সাথে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের বিজয়ের যে নিশ্চয়তা নেই সেটি শুধু শেখ হাসিনা নয়, তার দলীয় নেতাগণও বুঝে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মেনে নেয়ার অর্থ শেখ হাসিনার বিজয়কে ঝুঁকিপূর্ণ করা। ফলে নিজের ক্ষমতায় থাকাটি নিশ্চিত করতে তার সামনে ভোট ডাকাতির নির্বাচন ছাড়া অন্য পথ নেই। তাছাড়া বিগত ৫ বছর হাসিনা ক্ষমতায় থাকলো কোনরূপ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করেই। স্বৈরাচারি এরশাদ থেকেছে ১১ বছর। ঔপনোবেশিক ব্রিটিশগণ থেকেছে ১৯০ বছর। ফলে তাদের মত স্বৈরাচারি হাসিনা আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখবে -সেটিই তো স্বাভাবিক!
রাজনীতি ভোট ডাকাতির
বাংলাদেশে ভোট-ডাকাতি এখন রাজনীতির শিল্পে (আর্ট) পরিণত হয়েছে। দেশের রাজনীতিতে এর প্রক্রিয়াটি যেমন বর্বর, তেমনি প্রতারণাপূর্ণ। ভোটের মালিক জনগণ। ভোটের মাধ্যমেই জনগণ নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষানীতি, প্রশাসন, প্রতিরক্ষা ও বিদেশনীতির উপর। নির্বাচনের মাধ্যমেই সংযোগ সৃষ্টি জনগণের নীতির সাথে সরাকারি নীতির। জনগণের নীতি বাদ দিয়ে সরকার যখন নিজের ইচ্ছামত চলে তখন সেটিকে বলে স্বৈরাচার। এটি হলো জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে সংঘটিত জঘন্য অপরাধ। ভোটের মাধ্যমেই এমন স্বৈরাচারি সরকারকে জনগণ শাস্তি দেয়; সেটি অপরাধী সরকারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে বহিস্কার করে। কিন্তু জনগণকে যদি ইচ্ছামত ভোট দানের সুযোগ দেয়া না হয় তবে সেটি হলো ভোটাধিকার ছিনতাই তথা ভোট-ডাকাতি। অপরাধী সরকার এভাবেই জনরোষ থেকে। বাংলাদেশে তো সেটিই হচ্ছে।
তাছাড়া নির্বাচনে যে ওয়াদা দিয়ে ভোট নেয়া হয় সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা না করাটিও হলো আরেক ভোট ডাকাতি। এখানে অপরাধটি হলো জনগণের সাথে চুক্তিভঙ্গের। কারণ, নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী পক্ষের সাথে ভোট দাতাদের যে চুক্তিটি হয় সেটি হলো নির্বাচনি ওয়াদা মেনে চলার। কিন্তু শেখ মুজিব সে চুক্তি মানেননি। বহু দলীয় গণতন্ত্রের নামে ভোট নিয়ে একদলীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম ঘটান ভোট ডাকাতির ঘটনা। জনগণের ইচ্ছার প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শেখ মুজিব প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন নিজের স্বেচ্ছাচারি ইচ্ছাকে। রাষ্ট্রের উপর এভাবেই নিয়ন্ত্রন বিলুপ্ত হয় জনগণের। তখন দেশ চলে স্বৈরাচারি শাসকের ইচ্ছামত। তাই দেশবাসী ভারত বিরোধী হলে কী হবে, সরকারের নীতি প্রবর্তিত হয় ভারতের পদসেবায়। দেশ পরিণত হয় বিদেশের গোলাম রাজ্যে। ভারতের সাথে ২৫ সালা দাস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল গণরায়ের সাথে তেমন এক নিষ্ঠুর গাদ্দারি নিয়ে। এজন্যই ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টে যখন শেখ মুজিবের স্বৈরাচারি শাসনের বিলুপ্তি ঘটে তখন হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় উৎসব মুখর হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যর্থতার বড় কারণ, শেখ মুজিব নিজে উৎখাত হয়ে সে শিক্ষা রেখে গেলেন তার রাজনৈতীক উত্তরসুরিরা তা থেকে কোন শিক্ষাই নেয়নি। ফলে যেখান থেকে শেখ মুজিবের শুরু তার ফিরে গেছেন সে স্থানটিতেই।
সুষ্ঠ নির্বাচন কোন একটি বিশেষ দিন, একটি বিশেষ মাস বা একটি বিশেষ বছরের বিচ্ছন্ন ঘটনা হয়। এটি শুধু ভোট দান বা ভোট গণনার ব্যাপারও নয়। এটি এক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য দেশ জুড়ে বছরের পর বছর থাকতে হয় মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা। থাকতে হয়, ইচ্ছামত রাজনৈতীক দল গড়া ও প্রকাশ্যে দলীয় জনসভা করার স্বাধীনতা। থাকতে হয়, অন্যান্য দলের নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারণের অবাধ সুযোগ, নির্বাচনি প্রচারের সম-অধিকার, এবং ভয়ভীতি ছাড়া ভোট দানের ব্যবস্থা। থাকতে হয়, ব্যালট বক্সের পূর্ণ নিরাপত্তা, সুষ্ঠ ভোট গণনা এবং সঠিক ফলাফল প্রকাশের নিশ্চয়তা। পানি ছাড়া যেমন জীবন বাঁচে না, তেমন এগুলি ছাড়া গণতন্ত্রও বাঁচে না। অথচ ভোট-ডাকাতদের হাতে দেশ অধিকৃত হলে সে সুযোগ থাকে না। ফলে মৃত্যু ঘটে গণতন্ত্রের। ডাকাতগণ যেমন পকেটে হাত দিয়ে অর্থ ছিনিয়ে নেয়, ভোট-ডাকাতগণ তেমনি ছিনিয়ে নেয় নির্বাচনি প্রচারের স্বাধীনতা, ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স ও ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশের নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া।
তাই জনগণ নিছক ভোট দিলেই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে -সে গ্যারান্টি মেলে না। ভোট দান একটি পর্ব মাত্র; বাঁকি পর্বগুলোর উপর ভোট-ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পেলে অসম্ভব হয় নিরপেক্ষ নির্বাচন। ভোট যাতে স্বৈরাচারি শাসকের পছন্দের লোকটি পায় সেটি নিশ্চিত করতেই স্বৈরাচারি সরকারের পক্ষ থেকে শক্তিশালী বিরোধীদলীয় প্রতিপক্ষকে প্রার্থী পদ থেকেই হটিয়ে দেয়া হয়। অথবা তার বিরুদ্ধে বানায়োট মামলা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে। যেমন মিশরের স্বৈর শাসক জেনারেল সিসি তার জনৈক সমর্থক ছাড়া আর কাউকেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে দেয়নি। লক্ষ্য এখানে যে কোন ভাবে নির্বাচনি বিজয়, জনগণ থেকে রায় নেয়া নয়। নির্বাচনি বিজয়কে নিশ্চিত করার স্বার্থে তারা জনগণ ভোটাধিকার দিলেও সে ভোট গণনার দায়িত্বটি তাদেরকে দেয় না। সেটি নিজ হাতে রাখে। কারণ, সেটি দিলে ভোটের ফলাফলে ইচ্ছামত হেরফের করা যায় না। ভোটের দিন সরকারি কর্মচারিদের হাতে থাকে হাজার হাজার অব্যবহৃত ব্যালট পেপার এবং সুযোগ থাকে সেগুলিতে সরকারি দলের প্রার্থীর অনুকুলে চিহ্ন দিয়ে ব্যালট বক্সে ঢুকানোর। পুরা ভোট প্রক্রিয়ার উপর দখলদারিটা থাকে ভোট-ডাকাত সরকার ও তার সেবাদাস কর্মচারিদের। ডাকাতদের হাতে পড়লে নিজ পকেটের অর্থের উপর যেমন প্রকৃত মালিকের দখলদারি থাকে না, তেমনি ভোট-ডাকাতদের দখলদারিতে ভোটের উপর অধিকার হারায় তার প্রকৃত মালিক। তাই স্বৈরাচারি এরশাদের শাসনামলে কে কতটা সিট পাবে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে নিজে। তাঁর মত ভোট-ডাকাতকে ক্ষমতায় রেখে এজন্যই তাকে নির্বাচনে হারানো সম্ভব হয়নি। বিষয়টি বাংলাদেশের বিবেকমান মানুষই বুঝতো। তাই তাকে পরাজিত করতে জনগণকে নির্বাচন ছেড়ে রাজপথে নামতে হয়েছে। এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হয়েছে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। মিশরেও তাই সেদেশের ভোট-ডাকাত হোসনী মোবারককে ক্ষমতায় রেখে তাকে কোন নির্বাচনেই হারানো সম্ভব হয়নি। তার পক্ষ থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচনি কমিশনারের কাজ ছিল ৯০% ভাগের বেশী ভোটে তাকে বিজয়ী দেখানো। ফলে হোসনী মোবারককেও সরতে হয়েছে রাজপথের বিদ্রোহে। কিন্তু জনগণের এ বিজয় সে দেশের স্বৈরাচারি শাসনের মূল ঘাঁটি সামরিক বাহিনী কখনোই মেনে নাই। ফলে অস্ত্রের জোরে সেদেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডক্টর মোরসীকে হটিয়ে সেনাবাহিনী জেনারেল আবুল ফাতাহ সিসির ন্যায় আরেক খুনি ও ভোট-ডাকাতকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। ভোট ডাকাতদের কাছে একটি অবাধ নির্বাচন যে কতটা অসহ্য, সেটি যেমন বাংলাদেশে বার বার প্রমাণিত হয়েছে, প্রমাণিত হলো মিশরেও।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যাতে ভোট-ডাকাতগণ পুণরায় ক্ষমতায় না আসতে পারে এবং নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি না হয় -সেটি নিশ্চিত করতেই স্বৈরাচারি এরশাদকে হটিয়ে দেশের সকল রাজনৈতীক দলগুলো মিলে সংবিধানে পরিবর্তন আনে এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা নেয়। সে পদ্ধতিতে কয়েকবার গ্রহণযোগ্য নির্বাচনও হয়েছিল। কিন্তু যারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায় তাদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনের নির্বাচন। ফলে তাদের দলীয় স্বার্থে সর্বদলীয় একটি রাজনৈতীক সিদ্ধান্তকে একজন সেবাদাস বিচারক কলমে খোঁচায় বাতিল করে। তবে এতে তার নিজের স্বার্থও সাধিত হয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বহু লক্ষ টাকার বিপুল অর্থপ্রাপ্তিতে। বাংলাদেশের পত্রিকাতে সে খবরও ছাপা হয়েছে। এভাবেই নিছক ব্যক্তি স্বার্থে ও দলীয় স্বার্থে ভোট–ডাকাত বিরোধী এক বিপুল গণ-অআন্দোলনের ফসলকে আবর্জনার স্তুপে ফেলা হয়। এভাবেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবার ফিরে আসে ভোট ডাকাতির নির্বাচন এবং তারই ভয়ানক চিত্রটি দেখা যায় ২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনে। নির্বাচন পরিণত হয় প্রচণ্ডে প্রহসনে। ২০১৩’য়ের ভোট-ডাকাতিতে সংসদের অর্ধেক সিটে কোনরূপ নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয়নি। যে আসনগুলিতে নির্বাচন হয় সেখানে শতকরা ৫ জনও ভোট দেয়নি। এভাবে ভোট ডাকাতিতে শেখ হাসিনা দুনিয়ার তাবত ভোট ডাকাতদের হার মানায়। সাধারণতঃ ভোট-ডাকাতদের প্রতি নির্বাচনি আসনের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ডাকাতি করতে হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের ভোট ডাকাতিতে শাসক দলকে সে কষ্টটুকুও করতে হয়নি। ভোট-ডাকাতির এ এক অভিনব প্রক্রিয়া। দিকে ২০১৮ সালে ভোট-ডাকাতি হয়েছে নতুন কৌশলে। সরকার ওয়াদা দিয়েছিল সুষ্ঠ বহুদলীয় নির্বাচনের। কিন্তু নির্বাচনের আগের রাতে সরকারি ভাণ্ডার থেকে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ডাকাতি হয়ে যায়। দলীয় ডাকাতগণ সে রাতে নিজেরাই ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে। জনগণকে আর নিজের ভোট নিজে দেয়ার সুযোগই দেয়নি। দুর্বৃত্তিতে পর পর ৫ বার প্রথম হওয়ার পর এ এক নতুন রেকর্ড।
ডাকাতদের বড় দৈন্যতাটি স্রেফ নৈতীকতার নয়, সেটি লজ্জা-শরমের। নইলে কি তারা ডাকাতির পরও জনসম্মুখে রাস্তায় নামতে পারে? এদিক দিয়ে বাংলাদেশের ভোট-ডাকাতগণ এতটাই লজ্জা-শরমহীন বেহায়া যে ভোটারহীন সে নির্বাচনের পরও নিজেদের জনগণের নির্বাচিত সরকার রূপে পরিচয় দেয়। দাবী করে সাংবিধানিক বৈধতার। এবং বড়াই করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার? এরূপ নিদারুন মিথ্যাচারও ভোট-ডাকাতদের কাছে রাজনৈতীক অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। কথা হলো, এ ভাবে কি বৈধতা মেলে? ঔপনিবেশিক ব্রিটিশগণ বাংলার বুকে ১৯০ বছর শাসন করেছে; কিন্তু একটি দিনের জন্যও কি শাসন বৈধতা পেয়েছে? ধর্ষিতা মহিলার জীবনে যেমন আমৃত্যু গভীর ঘৃণা থাকে ধর্ষকের বিরুদ্ধে, তেমনি ভারতীয় উপমহাদেশের প্রতিটি নাগরিকের মনে হাজার হাজার বছর বেঁচে থাকবে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের প্রতি সে গভীর ঘৃণা। এ নিয়ে কি সন্দেহ চলে? ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ এবং বাকশালী মুজিবের ন্যায় বাংলার ইতিহাসে শেখ হাসিনাও যুগ যুগ বেঁচে থাকবে; তবে সেটি স্বৈরাচারি, মিথ্যাচারি, খুনি ও ভোট-ডাকাত রূপেই। সভ্য সুশাসক রূপে নয়।
দুর্বৃত্ত নির্মূলে মহান আল্লাহতায়ালার নীতি
সমাজ কতটা সভ্য বা অসভ্য –মহান আল্লাহতায়ালা সে বিচারটি দেশের মসজিদ মাদ্রাসা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, কল-কারখানা, রাস্তাঘাট, বহুতল বিল্ডিং, নামাযী-রোযাদার ও টুপি-দাড়িওয়ালাদের সংখ্যা দিয়ে করেন না। মহাপ্রজ্ঞাময় মহান আল্লাহতায়ালার কাছে হিসাব-নিকাশের সে পদ্ধতিটি অতি সহজ। সে বিচারটি হয় দেশে কতটা দৃর্বৃত্তি নির্মূল হলো এবং প্রতিষ্ঠা পেল কতটা সুনীতি -তা দিয়ে। দৃর্বৃত্তির নির্মূলে এবং সুনীতির প্রতিষ্ঠায় যারা বিশ্বে প্রথম হয়, মহান আল্লাহতায়ালার কাছে তারাই মর্যাদার দিক দিয়ে প্রথম। সে ঘোষণাটি তাঁর পক্ষ থেকে অতি স্পষ্ট ভাব ঘোষিত হয়েছে পবিত্র কোরআনের সুরা আল-ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে । বলা হয়েছে, “তোমরাই (মুসলিমগণ) হচ্ছে সমগ্র মানব জাতির মাঝে শ্রেষ্ঠ, তোমাদের উত্থান ঘটানোর জন্য সমগ্র মানব জাতির জন্য। তোমরা প্রতিষ্ঠা করো ন্যায়ের এবং নির্মূল করো অন্যায়ের।” বিচারের এ মানদন্ডে সমগ্র বিশ্বকুলে মুসলিমগণই এককালে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিল। নিজের বাঁচা ও নিজের ধর্ম-পালনে তাদের মধ্যে কোন স্বার্থপরতা ছিল না। তারা বেঁচেছেন সমগ্র মানব জাতির জন্য। তাই মহান আল্লাহতায়ালা থেকে সিরাতুল মোস্তাকীম নিয়ে তারা মক্কা-মদিনায় বসে থাকেননি, জান্নাতের সে পথের সন্ধান দিতে পাহাড়-পর্বত, নদীনালা, বিজন মরুভূমি ও সাগর-মহাসাগর অতিক্রম করে নানা দেশের নানা ভাষার নানা ভাষার মানুষের কাছে পৌঁছেছেন। মানব জাতির এতবড় কল্যাণ আর কেউই করেনি। এভাবেই তাদের হাতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল সমগ্র মানব ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতার। তারা শুধু মুসলিম নাম ধারণ করে বাঁচেননি; তারা বেঁচেছিলেন উপরুক্ত আয়াতে সর্বশ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য মহান আল্লাহতায়ালা যে মিশনটি সুর্নিদিষ্ট করেছেন তা ধারণ করে। তাদের বাঁচার মধ্যে তাই পার্থিব স্বার্থ্যপ্রাপ্তি ছিল না। তারা ভাবতেন পরকালের বিশাল প্রাপ্তি নিয়ে। পরকালের সে প্রাপ্তির ভাবনাই তাদের মন থেকে পার্থিব স্বার্থের ভাবনাকে ভূলিয়ে দিয়েছিল। পরকালে জান্নাত পাওয়ার জন্যই তাদের জীবনের আমৃত্য মিশন হয়ে দাঁড়ায় “ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়ের নির্মূল”য়ে আমৃত্যু জিহাদ। সে জিহাদে তারা শুধু অর্থ, শ্রম ও মেধা দেননি, শতকরা ৭০ ভাগের সাহাবী শহীদও হয়েছেন। অথচ এক্ষেত্রে বাংলাদেশী মুসলিমদের আচরণ সম্পূর্ণ উল্টো। বাংলাদেশে কারা দুর্বৃত্ত সেটি কি কোন গোপন বিষয়? কারা ভোট-ডাকাত, কারা ব্যাংকে ও শেয়ার মার্কেট ডাকাতি করে, কারা ঘুষ খায় -সেটি কি অজানা? দুর্বৃত্তদের নির্মূলে জিহাদ দূরে থাক, দেশের শাসন ক্ষমতায় ভোট-ডাকাত দুর্বৃত্ত শাসকগণ তো বেঁচে থাকে তাদের রাজস্বের অর্থে। তাদের বিজয়ে এবং তাদেরকে ক্ষমতায় রাখতে বহু বাঙালী মুসলিম শুধু ভোটই দেয় না, তাদের পক্ষে কথা বলে, পত্রিকায় লেখে এবং লাঠি, বন্দুক ও ট্যাংক নিয়ে রাজপথেও নামে।
চোর-ডাকাত-সন্ত্রাসীদের নির্মূলে মহান আল্লাহতায়ালার নীতিটি ভিন্ন। তিনি জানেন, সম্পদ বাঁচাতে কোন মানুষই চোর-ডাকাতদের হাতে তার অমূল্য প্রাণ দিতে রাজী নয়। একই কারণে সশস্ত্র ডাকাত বা সন্ত্রাসীকে ধরতে বেতনভোগী পুলিশও প্রাণের ঝুকি নেয় না। কিন্তু এসব দুর্বৃত্তগণ নির্মূল না হলে মহান আল্লাহতায়ালার শরিয়তি বিধানেরও প্রতিষ্ঠা হয় না, ফলে সমাজে শান্তিও আসে না। তখন দেশ বসবাসের অযোগ্য হয় এবং দুর্বৃত্তিতে রেকর্ড গড়ে। তাই এ দুর্বৃত্তদের নির্মূলের এজেন্ডাটি খোদ মহান আল্লাহতায়ালার। সে কাজটি তিনি করেন তাঁর নিজ দলের সৈনিকদের দিয়ে। পবিত্র কোরআনে সে দলটি চিহ্নিত হয়েছে হিযবুল্লাহ বা আল্লাহতায়ালার দল রূপে। এবং মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডা পূরণে যারা ময়দানে নামে এবং দুর্বৃত্তদের নির্মূলে যারা নিজের প্রাণ বিলিয়ে দেয় তাদের জন্য তিনি শহীদের মর্যাদা রেখেছেন। রেখেছেন বিশেষ পুরস্কার। সে পুরস্কারটি শত কোটি বা শত বিলিয়ন বা শত ট্রিলিয়ন টাকার নয়। তার চেয়েও অধীক মূল্যের। সেটি অনন্ত অসীম কালের জন্য নিয়ামত-ভরা জান্নাত। পবিত্র কোরআনে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে, জান্নাতের সে পুরস্কার পৃথিবী-পূর্ণ সোনা দিয়েও কেউ কিনতে পারবে না। ঈমানদারের রাজনীতি তাই নিছক রাজনীতি নয়, এটি অন্যায়ের নির্মূল ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার পবিত্র জিহাদ। এটি জান্নাত হাসিলের লড়াই। মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশিত “ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়ের নির্মূল”এর ফরজটি নামায-রোযা ও হজ-যাকাতে সাধিত হয় না। সেটি ঘটে রাজনীতির ময়দানে। রাজনীতির ময়দানটি এজন্যই পবিত্র লড়াইয়ের। এখানের লড়াই তথা জিহাদ হয় ইসলামের দুষমনদের সাথে। এটিই ইসলামের শ্রেষ্ঠ ইবাদত। এ ইবাদত মসজিদের অঙ্গণে হয় না। ঘরের জায়নামাযেও হয় না। একমাত্র এ পবিত্র ইবাদতের মাধ্যমেই মহান আল্লাহতায়ালার দ্বীন রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা পায় এবং মুসলিমগণ নিরাপত্তা ও ইজ্জত পায়। এ শ্রেষ্ঠ ইবাদত পালনে মহান নবীজী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামদের তাই মসজিদের বাইরে রাজনীতির অঙ্গণে নামতে হয়েছিল এবং ইসলামের দুষমনদের হাত থেকে নেতৃত্ব ছিনিয়ে নিতে হয়েছিল। আর ইসলামের এ শ্রেষ্ঠ ইবাদতটি না হলে শাস্তিটিও ভয়ানক। তখন দেশ অধিকৃত হয় এমন সব দুর্বৃত্তদের হাতে যারা বনজঙ্গলের হিংস্র জন্তু জানোয়ারের চেয়েও হিংস্র। এরা কখনো আসে বিদেশী আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী রূপে, কখনো বা আসে ইসলাম-বিরোধী স্বদেশী ফ্যাসিস্ট রূপে। হিংস্র জন্তু জানোয়ারের হাতে গণহত্যা হয় না। নগর-বন্দর ধ্বংস হয় না। রাজপথে হাজার হাজার মানুষের লাশ পড়ে না। পশুর হাতে লাশ ময়লার গাড়িতে উঠে গায়েব হয় না। রিমান্ডের নামে কেউ নির্যাতিত হয় না। নারীরা ধর্ষিতা হয় না। ব্যাংক, শেয়ার মার্কেট ও সরকারি তহবিল লুন্ঠিত হয় না। কিন্তু এ নরপশুদের হাতে এরূপ সবকিছুই হয় অতি বীভৎস ভাবে।
শিক্ষণীয় হলো আর্মেনিয়া
যাদের রাজনীতিতে জিহাদ নেই কিন্তু চোর-ডাকাতদের হাত থেকে দেশ বাঁচানোর প্রবল আগ্রহ আছে -তারাও শিক্ষা নিতে পারে আর্মেনিয়ার মত একটি ক্ষুদ্র দেশের জনগণ থেকে। সে দেশটির জনসংখ্যা মাত্র তিন মিলিয়ন তথা ৩০ লাখ। আর্মেনিয়ার মোট জনসংখ্যার ৫ গুণের বেশী মানুষ বাস করে একমাত্র ঢাকা শহরে। নিজেদের অধিকার বাঁচানোর লড়াই’য়ে সে ক্ষুদ্র দেশের জনগণ সৃষ্টি করেছে এমন এক দৃষ্টান্ত যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য অতি শিক্ষণীয়। সারা দুনিয়ার মানুষ তাদের সে রাজপথের লড়াইটি দেখেছে টিভির পর্দায়। নেতৃত্ব দিয়েছে কোন দল বা জোট নয় বরং একজন মাত্র ব্যক্তি। তিনি হলেন নিকোল প্যাশিনিয়ান। পিঠে ঝুলানো একটি ব্যাগ নিয়ে সব সময় থেকেছেন জনগণের মাঝে। তিনি কোন রাজনৈতীক নেতা নন, বরং একজন দায়িত্ববান বুদ্ধিজীবী ও লেখক। তার ডাকে নিজেদের ব্যবসা-বানিজ্য ছেড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ নেমে আসে দেশটির রাজধানী ইয়েরিভানে। তাদের লক্ষ্য, কে হবে দেশের সরকার প্রধান এবং কি হবে তার নীতি -সেটি নির্ধারণের দায়িত্ব একমাত্র জনগণের। কোনরূপ ভোট ডাকাতি, ছল-চাতুরি বা সামরিক শক্তির জোরে জনগণের সে অধিকার লুণ্ঠিত হতে পারে না। তারা দিনের পর দিন অবরুদ্ধ করে রাখে রাজধানীর সমস্ত রাস্তাঘাট। কোন মন্ত্রী, এমপি বা সরকারি কর্মচারির সাধ্য ছিল না জনতার ঢলে অবরুদ্ধ মাইলের পর মাইল সে রাজপথ অতিক্রম করে নিজ নিজ দফতরে পৌঁছা। ফলে দুই সপ্তাহ সম্পূর্ণ অচল থাকে সরকারি অফিস-আদালত। পদত্যাগ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সামনে আর কোন উপায়ই ছিল না। সপ্তাহ খানেক শূণ্য থাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ। সরকারি দলের এমপিদের পক্ষেও অসম্ভব হয়ে পড়ে পার্লামেন্টে আবার একত্রে বসে নিজের মধ্য থেকে আরেক জনকে প্রধানমন্ত্রীকে রূপে বেছে নেয়া। অথচ শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এ আন্দোলনের নেতা নিকোল প্যাশিনিয়ানের সাথে কথা বলতেও রাজী হয়নি। লক্ষণীয় হলো, জনগণের এ বিজয়ে তাদেরকে একটি ঢিলও ছুড়তে হয়নি।
প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের মানুষের মাঝে নিজের অধিকার বাঁচানোর সে আগ্রহ কতটুকু? আছে কি ১৬ কোটি বাঙালীর মাঝে নিকোল প্যাশিনিয়ানের ন্যায় একজন সাহসী ও আপোষহীন বুদ্ধিজীবী? রাজধানীর গুটি কয়েক রাস্তায় ২০ হাজার, ৫০ হাজার বা এক লাখ মানুষ নামলে পুলিশ বা সেনা বাহিনী তাদের সরিয়ে দিয়ে স্বৈরাচারি শাসকের মন্ত্রী ও কর্মচারিদের জন্য রাস্তা পরিস্কার করতে পারে। কিন্তু যখন ১০ লাখ বা ২০ লাখ মানুষ রাজধানীর সমুদয় রাস্তা দিনের দিনের পর দিন অবরুদ্ধ করে রাখে তখন কি কোন সামরিক বাহনীর সামর্থ্য থাকে জনগণকে রাস্তা থেকে হঠানোর? তখন অচল হয় সমগ্র প্রশাসন। পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর লোকেরাও তখন পথে নেমে হাজার হাজার মানুষ খুনে ভয় পায়। কারণ, অবৈধ এক ফ্যাসিস্ট সরকার বাঁচাতে গিয়ে কোন পুলিশ বা সেপাহি কি চাইবে নিরীহ মানুষ খুনের আযাব সে জাহান্নামের আগুণে গিয়ে ভুগবে? তাছাড়া তাদের আপনজনদের বসবাস তো মন্ত্রীপাড়ায় নয়, বরং জনগণের মাঝে। স্বাভাবিক তো এটাই, জনতার সাথে তারাও যোগ দিবে জনসমুদ্রে। স্বৈরাচারি সরকারের সেনাবাহিনীও তাই জনসমুদ্রের উপর গুলি চালাতে ভয় পায়। তাই ইরানের শাহ, মিশরের হোসনী মোবারক এবং বাংলাদেশের এরশাদের ন্যায় স্বৈরাচারি সরকারগুলি কখনোই জনরোষ থেকে বাঁচেনি। প্রশ্ন হলো, শেখ হাসিনার সরকার কি তাদের চেয়েও শক্তিশালী?
যে ব্যর্থতা জনগণের
কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যেভাবে চোর-ডাকাতদের হাতে অধিকৃত তার কারণ জনগণ নিজে। গণতান্ত্রিক অধিকার কারো দান নয়, সেটি অর্জনের বিষয়। নিজের গরুছাগলকে চোরদের হাত থেকে বাঁচাতে হলে সারা রাত সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়। তেমনি অতন্দ্র পাহারাদার হতে হয় রাষ্ট্রের উপর জনগণের অধীকার বাঁচাতে। নইলে ফ্যাসিস্টদের ডাকাতি থেকে সে অধিকার বাঁচেনা। ইংল্যান্ডকে পাশ্চাত্য গণতন্ত্রের সূতিকাঘর বলা হয়। কিন্তু সেটি কোন রাজার দান নয়, সেটি দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল। গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সে লড়াইয়ে প্রায় ৪ শত বছর আগে ১৬৪৯ সালে তাদেরকে স্বৈরাচারি রাজার গলা কাটতে হয়েছে। যে জনপদে হিংস্র পশুর বসবাস, সেখানে পশু হামলা হয় বার বার। সেখানে বাঁচতে হয় প্রতিদিন সতর্ক দৃষ্টি রেখে। তেমনি গণতান্ত্রিক অধিকার বাঁচানোর বিষয়টিও। কারণ বাকশালী মুজিব বা স্বৈরাচারি এরশাদ যে দেশে জন্ম নেয়, সেদেশে স্বৈরাচারি চেতনা কখনো মরে না। বরং বেঁচে থাকে এবং বার বার হামলাও করে। এবং তাদের হাতে দেশ অধিকৃতও হয়। বাংলাদেশ তো তারই দৃষ্টান্ত। কিন্তু সে অপশক্তির হাত থেকে দেশ বাঁচাতে জনগণের মাঝে সে লড়াকু চেতনা কই?
ক্ষুদ্র আর্মেনিয়া থেকে শিক্ষা নেয়ার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তো এখানেই। রাষ্ট্র-বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তারা সৃষ্টি করেছে নতুন দৃষ্টান্ত। প্রশ্ন হলো, ৩০ লাখ লোকের একটি দেশের রাজধানীতে যে সংখ্যায় লোক রাস্তায় নেমে এসেছে তার অর্ধেক লোকও কি ১৬ কোটি মানুষের দেশে কখনো রাজধানীর রাস্তায় নেমেছে? ফলে ভোট-ডাকাত সরকার থেকে জনগণের মুক্তি মিলবে কীরূপে? কীভাবে তারা আশা করে সভ্য সরকারের সভ্য শাসন? গোয়াল থেকে ছুটে যাওয়া গরু-ছাগল ধরতেও মানুষ পিছু পিছু বহু পথ দৌড়ায়। ছিঁছকে চোর ধরতেও বহু পথ ধাওয়া করে। এগুলোই তো সভ্য জীবনের লড়াই। নইলে দুর্বৃত্তদের হাতে সভ্যতা বাঁচেনা। সভ্যতার বাঁচানোর সে লড়াইয়ে নবীজী (সাঃ)কে উঠের পিঠে মদিনা থেকে তাবুক ময়দানের ৬৭০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়েছিল। উঠের অভাবে অনেক সাহাবী সে পথ পায়ে হেঁটে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রের উপর ফ্যাসিস্টদের দখলাদারি বিলুপ্তিতে জনগণ যদি মাত্র এক বা দুই সপ্তাহের জন্যও নিজের ঘর থেকে যদি রাস্তায় নামতেই রাজী না হয় -তবে কি তাদের ইজ্জত থাকে? থাকে কি কোন নাগরিক অধিকার? তখন ব্যাংক থেকে লুণ্ঠিত হবে হাজার হাজার কোটি টাকা, শেয়ার বাজার থেকে লোপাট হবে বিনিয়োগকারিদের রক্ত পানি করা বহু হাজার কোটি এবং প্রকল্পে বরাদ্দের নামে ডাকাতদের পকেটে যাবে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্বের অর্থ -সেটিই কি স্বাভাবিক নয়?
পদ্মা সেতুর কাজ আজও শেষ হলো না, কেবল শুরু হয়েছে মাত্র। দিন দিন কেবল এ প্রকল্পে ব্যয়ই বেড়ে চলেছে। অথচ সরকারি দলের ডাকাতদের উৎপাতে বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্প থেকে হাত না গুটালে ৩/৪ বছর আগেই সেতুর কাজ শেষ হয়ে যেত এবং সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চলা শুরু হয়ে যেত। দুর্নীতির কারণে উন্নয়নের কাজ এভাবে থেমে আছে সর্বত্র। অর্থনীতিতে যা কিছু এখনো বেঁচে আছে তার কারণ ক্ষেতে-খামারে, কলকারখানায় ও বিদেশ বাণিজ্যে কিছু উদ্যোগী মানুষের নিজস্ব চেষ্টা। সরকারে হাতে প্রচণ্ডতা পেয়েছে কেবল চুরি-ডাকাতি। তাদের হামালায় বহু বিনিয়োগকারি নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে দেশ ছাড়তেও বাধ্য হচ্ছে। রডের বদলে সড়ক নির্মাণে বাঁশ দেয়ার ছবিও ছাপা হচ্ছে। ভোট ডাকাতদের নাশকতায় এভাবেই ব্যহত হচ্ছে দেশের অগ্রগতি। আগামী নির্বাচনে ভোট ডাকাতগণ আবারো ষড়যন্ত্র করছে ভোট ডাকাতির। একমাত্র ভোটের মাধ্যমেই জনগণ অপরাধী শাসকচক্রকে শাস্তি দেয়। কিন্তু জনগণের সে অধিকারটি আবারো ছিনতাই হতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কোন সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক কি নীরব থাকতে পারে? ৬/৫/২০১৮; নতুন সংস্করণ ৯/৩/২০১৯
ANNOUNCEMENT
ওয়েব সাইটটি এখন আপডেট করা হচ্ছে। আগের লেখাগুলো নতুন ওয়েব সাইটে পুরাপুরি আনতে কয়েকদিন সময় নিবে। ধন্যবাদ।
LATEST ARTICLES
- বাঙালি মুসলিমের স্বপ্নবিলুপ্তি ও সংকট
- বাঙালি মুসলিমের শক্তি এবং ভারতের বাংলাদেশ ভীতি
- রাষ্ট্র কিরূপে ফিতনা ও নাশকতার হাতিয়ার?
- সংবিধানে প্রতিটি ব্যক্তির রায়ের ইজ্জত সুনিশ্চিত করত হবে
- একাত্তর প্রসঙ্গ, কিছু আলেমের বিভ্রান্তি এবং মুসলিমের জিহাদে কবিরা
বাংলা বিভাগ
ENGLISH ARTICLES
RECENT COMMENTS
- Fazlul Aziz on The Israeli Crimes, the Western Complicity and the Muslims’ Silence
- Fazlul Aziz on India: A Huge Israel in South Asia
- Fazlul Aziz on ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণ এবং অনৈসালিমক রাষ্ট্রের অকল্যাণ
- Fazlul Aziz on বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়ন, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ
- Fazlul Aziz on Gaza: A Showcase of West-led War Crimes and the Ethnic Cleansing
ARCHIVES
- October 2024
- September 2024
- August 2024
- July 2024
- June 2024
- May 2024
- April 2024
- March 2024
- February 2024
- January 2024
- December 2023
- November 2023
- October 2023
- September 2023
- August 2023
- July 2023
- June 2023
- May 2023
- April 2023
- March 2023
- January 2023
- December 2022
- November 2022
- October 2022
- September 2022
- August 2022
- July 2022
- June 2022
- May 2022
- April 2022
- March 2022
- February 2022
- January 2022
- November 2021
- October 2021
- September 2021
- August 2021
- July 2021
- June 2021
- May 2021
- April 2021
- March 2021
- February 2021
- January 2021
- December 2020
- November 2020
- October 2020
- April 2020
- March 2020
- February 2020
- January 2020
- December 2019
- November 2019
- October 2019
- September 2019
- August 2019
- July 2019
- June 2019
- May 2019
- April 2019
- March 2019
- February 2019
- January 2019
- December 2018
- November 2018